#অবৈধ_সম্পর্ক
#লেখাঃ_নুসরাত_জাহান(ফারিয়া_আলম_মিম)
#সিজনঃ_২
#পর্বঃ_৫
রিপা দুহাত দিয়ে চোখ মুছে ওয়াশরুমে ঢুকলো।
হাত পা মেলে দিয়ে শাওয়ারের নিচে বসল রিপা।
প্রায় ঘন্টা খানেক ভিজলো রিপা। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে । কিছুতেই পানি পড়া থামছেনা।
শাওয়ার নিয়ে শাড়ী পড়ে বেরিয়ে আসলো রিপা।
টাওয়ালটা খুলে চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে ফ্যানের বাতাসে বসলো। মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে আজ।
বসা ছেড়ে উঠে মোবাইলটা হাতে নিলো মাকে কল দেওয়ার জন্য। হঠ্যাৎ মোবাইলটা বেজে উঠলো।
স্কীনের দিকে তাকিয়ে অনেকটা চমকে উঠলো।
রাহাতের নাম্বারটা ভেসে উঠছে। সেদিন সেইভ করে রেখেছিলো নাম্বারটা।
রাহাতের নামটা দেখে না চাইতে ও মুখের কোণে আচমকাই হাসি ফুটে উঠলো। মনে হচ্ছে রিপা তার কলেরই অপেক্ষা করছে।
কলটা রিসিভ করে বললো,,
-“হ্যালো আসসালামু আলাইকুম।
-“ওয়ালাইলুম আসসালাম। কেমন আছো রিপা??
-“আলহামদুলিল্লাহ। আপনি??
-“আমি এতদিন ভালো ছিলাম না। কিন্তু এখন তোমার কথাশুনে ভালো হয়ে গেলাম। তোমাকে এতদিন খুব মিস করেছি। আমি যে কীভাবে এতদিন বেঁচে ছিলাম আল্লাহই জানে। মনটা মানছিলো না তবুও অনেক কষ্টে শান্ত করেছি। আজ আর পারিনি তাই তো বাধ্য হয়ে তোমাকে কল দিলাম।
-“তাই! কিন্তু কেনো???
-“কী কারনে আমি সেটা নিজেই জানিনা। তবে তোমার কথা সব সময় মনে পড়েছে। তোমাকে দেখার পর থেকে আমার চোখের ঘুম হারিয়ে গেছে। বিশ্বাস করবে কিনা জানিনা??? তোমাকে প্রথম দেখায় আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
-“ছিঃ ছিঃ আপনি এসব কী বলছেন?? আমি বিবাহিত। তার উপরে আপনার বন্ধুর স্ত্রী। এসব কথা বলতে আপনার বিবেকে আটকালো না।
-‘না রিপা। কারন ভালোবাসা কখন ও কিছু দেখে আসেনা। তোমাকে প্রথম দেখেই ভালোবেসে ফেলেছি এছাড়া আর কিছু জানিনা। আমার মন বলছে তুমি ইমরানের কাছে সুখি নও।
রাহাতের এমন কথা শুনে রিপা বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো।
এদিকে রাহাত কথা বলেই যাচ্ছে। রিপার কোন রেসপন্স না পেয়ে হ্যালো হ্যালো করতে ছিলো।
কিছুক্ষণ পর রিপা বললো,,,প্লিজ এসব কথা বলবেনা না চুপ করেন।
-“আমার কথা শুনতে তোমার খারাপ লাগছে??
তাহলে বলো আমি আর কখন ও তোমার কাছে কল দিবোনা।
-‘খারাপ ভালো আমি কিছু জানিনা। আমি শুধু জানি আমি ইমরানের বউ। আর আপনি আমাকে ভুলে জান। একটা বিবাহিত মেয়েকে ভালোবেসেছেন এটা কেমন ভালোবাসা আপনার??
-“না রিপা এই কথাটা বলোনা আমি সহ্য করতে পারবোনা।
-“আচ্ছা আমি বিবাহিত এটা জেনে শুনে ও আপনি এসব বলছেন?? আমার তো মনে হয় আপনার মাথায় সমস্যা আছে।
-“আমার মাথায় কোন সমস্যা নেই রিপা। আমাকে তুমি ভুল বুঝোনা প্লিজ।
-“আচ্ছা আপনি কী করেন?? আর এমন করছেন কেনো??
-‘আমি ডাক্তারি পাশ করলাম কয়েক মাস হলো। এখন প্রাকটিস করছি।
-“ওহ্ আচ্ছা। তাহলে তো নিশ্চয়ই ভদ্র পরিবারের ছেলে তাই না??
-“ভালো জামা কাপড় পড়লেই কী বড়লোক ঘরের সন্তান হয় রিপা???
-“তা হয়তো নয়। তবে যাদের টাকা পয়সা বেশি আছে তারাই ভালো পোশাক পড়ে। আর টাকা না থাকলে তো ডাক্তারি পড়তে পারতেন না।
-“তোমার ধারণাটা ভুল। কথায় আছেনা খালি কলস কিন্তু বাজে বেশি সেটা কী তুমি জানো??
-“হুম।
-“তাহলে আর কী?? তবে একটা কথা আমার পরিবারের সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই। আমি এখানে একা থাকি। নিজের চেষ্টায় বড় হয়েছি।
-“সম্পর্ক নেই কেনো???
-“সে অনেক কথা। যদি সামনাসামনি হই তখন বলবো।
-“আচ্ছা।
-“আচ্ছা এখন তাহলে রাখি রিপা। আবার সময় করে কল দিবো।
.
কলটা রাখার পরে রিপা মোবাইলটা বিছানায় রেখে রান্না ঘরে ঢুকলো। ফ্রিজে কোন তরকারী না থাকায় ডিম আর ডাল রান্না করলো।
দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেলো। বেলকুনিতে রাখা ইজি চেয়ারের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলো। মনে মনে রাহাতের কথাগুলো ভাবছে। রাহাত কী করতে চাচ্ছে কিছুই তো বুঝতে পারছিনা। তবু ও রাহাতের কথাই মনে পড়ছে।
রাত ১০ টা……
রিপা ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছে। এমন সময় দরজা খোলার শব্দে রিপা আঁটসাঁট হয়ে বসলো।
ইমরান রুমে ঢুকলো। রিপা ইমরানের দিকে তাকায়। ওর হাতে পাঁচ সাতটা শপিং ব্যাগ। মনে হচ্ছে আমার জন্য শপিং করে এনেছে।
রিপা মুচকি হাসি দিয়ে খুশির ঠেলায় ইমরানের কাছে গিয়ে ব্যাগ ধরতে নিলো।
ইমরান হাত জাগিয়ে বলল,
-কী করছো রিপা?? এগুলো তোমার না??
রিপা শকড হয়ে তাকিয়ে থেকে বললো,,,তাহলে কার??
-“আরে বলোনা। কালকে লন্ডন থেকে আমার ছোটবেলার বান্ধবী আসবে। আর ওর জন্যই এসব কেনা।
-“তাই।
-“হুম। আর ওহ্ কয়েকদিন আমাদের বাসায় থাকবে।
-“আমাদের বাসায় কোথায় থাকবে ইমরান??
-“কেনো গেস্ট রুমে।
-“মা তো বাসায় নেই। আর তিনি এসে দেখলে তো রাগারাগি করবে।
-“তুমি কোন চিন্তা করোনা। আমি সামলে নিবো সবকিছু। তুমি কালকে ওর জন্য রান্না করে রাখবে কেমন।
-“গলার স্বরটা নিচু করে বললো,,,,আচ্ছা।
অনেক ক্ষিদে পেয়েছে আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি তুমি টেবিলে খাবার রেডী করো।
.
কিছুক্ষণ পরে ইমরান ডাইনিং টেবিলে এসে বসলো।
তারপরে দুজনে ডিনার করলো।
ইমরান হাত ধুয়ে বললো,,,রিপা তাড়াতাড়ি রুমে আসো।
রিপা হতভম্ব হয়ে গেলো ইমরানের কথায়।
এখনই রুমে ডাকছে কেনো??
রিপা কাজ শেষ করে ইচ্ছা করেই দেরীতে রুমে গেলো।
ইমরান লাইট অফ করে বিছানায় শুয়ে আছে।
-“রুমের লাইট অন করলো রিপা।
-“এত দেরী হলো কেনো রিপা?? আমার কাছে এসো।
-“রিপা ভয়ে ভয়ে বিছানার কাছে এগিয়ে গেলো।
রিপার হাত টান দিতেই রিপা ইমরানের বুকের উপরে ধাপ করে পড়লো।
ইমরান রিপার চুলগুলো সরিয়ে কপালে চুমো একে দিলো। রিপার একদম ভালো লাগছিলো না।
রিপাকে শুইয়ে দিয়ে ইমরান ওর উপরে উঠে চুমো খেতে লাগলো। রিপা ইমরানকে সরিয়ে দিতে চাইলো কিন্তু কিছুতেই পেরে উঠছে না।
একটু পরে ইমরান জিজ্ঞাস করলো রিপা পিল খেয়েছিলে???
-“ই…..য়ে মানে।
-খাওনি??
-“না।
-“বেবী কনসেপ্ট হলে আমার কোন দায়ভার থাকবেনা। তুমি এর্বোশন করিয়ে ফেলবে। কথাগুলো বলেই ইমরান হাসছে। কিছুক্ষণ অতিবাহিত হওয়ার পরে ইমরানের চাহিদা মিটে গেলে রিপাকে ছেড়ে দিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
রিপার শরীরে উঠে বসার একবিন্দু ও কোন শক্তি ছিলোনা। ইমরান নিজের চাহিদা মিটিয়ে ঘুমুচ্ছে।
রিপার যে কষ্ট হচ্ছিলো তার দিকে কোন খেয়াল ছিলোনা। শুধুমাত্র তার চাহিদা মেটানোতে ব্যস্ত ছিলো সে।
প্রায় আধা ঘন্টা পরে একটু সুস্থ হলে ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এসে ফ্লোরে শুয়ে পড়লো।
সকালে,,,,,
পাখির ডাকে ঘুম ভাঙল রিপার।
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানিয়ে ইমরানকে ডাকলো।
ইমরান উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডী হচ্ছিলো। গায়ে পারফিউম লাগিয়ে আয়নায় নিজেকে বারে বারে দেখছে।
রিপা এসে বললো,,কোথায় যাচ্ছো??
-“তোমাকে কাল রাতে কী বলেছিলাম মনে নেই।
-“ওহ্।
-“আমি গিয়ে ড্রাইভার কে দিয়ে বাজার পাঠিয়ে দিবো।
আর তুমি ভালো করে রান্না করবে। কোথাও যেনো কোন কমতি না থাকে।
-“আচ্ছা।
দুপুর ২.১০ বাজে,,,,,
ইমরান আগে ঘরে ঢুকলো। ওর পিছনে একটি মেয়ে দাঁড়ানো। মেয়েটির পড়নে ছিলো,,টপস,,জিন্স চুলগুলো ছাড়া দেওয়া। গায়ে কোন ওড়না নেই।
রিপার দেখেই মনে চাচ্ছিলো ঠাস্ করে একটা থাপ্পর মারি। তবুও নিজেকে সামলে কিছু বলেনি।
-“রিপা এই হচ্ছে আমার বান্ধবি মাহি।
-“হ্যালো।
-“আসসালমু আলাইকুম।
-“ওয়ালাইকুম আসসালাম।
ইমরান মাহিকে নিয়ে গেস্ট রুমে ঢুকলো।
রিপা টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে। সাজানো হয়ে গেলে গেস্ট রুমের দিকে গেলো ওদের ডাকতে।
গেস্ট রুমের দরজাটা খুলতেই রিপা তো বাকরদ্ধ হয়ে গেলো।
ইমরান মাহিকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে চুমো দিলো।
চুমোচুমি শেষ হলে ইমরানের চোখ রিপার দিকে পড়তেই চমকে উঠলো।
রিপা এক দৌড়ে গিয়ে নিজের রুমে ঢুকে দরজাটা আটকে দিলো।
ইমরান ও পিছনে পিছনে গিয়ে দরজা টাকাচ্ছে কিন্তু রিপা দরজা কিছুতেই খুলছে না।
চলবে……………..