#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..11
আমি গোসল করে এসে দেখি অয়ন ঘুমিয়ে আছে, দেখে মনে হচ্ছে একদম কোনো বাচ্চা। আমি অয়নের কাছে গেলাম, আরেকটু কাছে যাতে ইচ্ছে করছে। তো আমি আরেটু কাছে গেলাম। মনের মধ্যে জানি কেমন লাগছে। জানি না কেনো মনে হচ্ছে আজ কিছু তো একটা হবে, যাই হবে ভালোই হবে।
হঠাৎ আমার চুলের এক ফোঁটা পানি অয়নের গালে গিয়ে পড়ে, অয়ন চোখ খুলে, আমি সরে যেতে নিয় অয়ন আমার মাথায় একহাত দিয়ে ধরে কাছে নিয়ে আসে।
ওনার চোখ খুলাতে আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে দিয়। অয়ন মারুকে দেখে মুশকি হেঁসে দুহাত দিয়ে ওর মাথায় হাত দিয়ে কাছে এনে কপালে কিস করে। অন্যদিকে ফিরে চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে।
আমি চোখ খুলে নিজের অজান্তেই হেঁসে দিয়। ওনাকে ঘুমাতে দিয়ে আমি চুল মুছতে মুছতে বাহিরে যায়, গিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছি, খুবি মনোরম একটা জায়গা, এই জায়গায় কোনো আন রোমান্টিক কেও আসলেও রোমান্টিক হয়ে যাবে নিশ্চিত, নিউ কাপালদের জন্য একদম পার্ফেট।
আমি সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছি, একদম হালকা ঢেউ, কিন্তু রোদটা প্রখর, তবে জোরে বাতাস বয়ে যাওয়ার কারনে রোদ এতোটা প্রভাব ফেলতে পারছে না। আমি এই এই ঢেউয়ের মধ্যেও অয়নের চেহেরা দেখতে পারছি৷ ওর কথায় ভাবছি, ভাবতে ভালো লাগছে।
তবে কি আমি অয়নকে ভালোবেসে ফেলেছি। এটা নিয়ে আমি অনেক কনফিউজড,, তবে এই কনফিউশান আমার ভালো লাগছে। এ সময় অয়ন আমাকে পিছন দিক থেকে জরিয়ে ধরে বলে,,,কি ব্যাপার কি এমন ভাবছো, যার কারনে তোমার মুখে এমন লজ্জা মাখা হাসি।
আমি কিছুটা অয়নের ছুঁয়ায় মগ্ন হয়ে বললাম,, জানি না। অয়ন আমাকে আরেকটু শক্ত করে ধরে কানের কাছে মুখ এনে বললো,, আমি জানি তোমার কি হয়েছে।
আমি একটু শান্ত ভাবে জিজ্ঞেস করলাম,,,, কি হয়েছে।
অয়ন আস্তে করে আমার কানে বললো,,, আমার ভালোবাসার ছোঁয়া লেগেছে তোমার, এটাকে প্রেমঘোর বলে। প্রেমের নেশায় আছো।
আমি চোখ বন্ধ করে আছি, সত্যি প্রেমঘোর এ চলে যাচ্ছি আমি। অদ্ভুত একটা শিহরন ছুঁয়ে যাচ্ছে আমার মন, শরীরে কম্পনের মতো হচ্ছে। অয়ন কিছুটা বুঝতে পেরে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলে,, তুমি রেডি হও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি, তারপর আমরা ঘুড়তে যাবো।
আমি শুধু হুমম বললাম। কিছু ক্ষন পর আমি প্যান্ট আর একটা লম্বা টপ পড়ি সাথে ওড়নাটাও প্যাচিয়ে নিয়। আমিও সাদা টপ পড়ি আর অয়ন ও সাদা শার্ট পড়ে।
আমরা দুজন বেরিয়ে পড়ি ঘুরতে। এদিকের চারদিক ফাঁকা তাই আমরা অন্য দিকে যাবো। আমরা বাইকে গেলাম। একটু দূরেই মানুষ দেখা যাচ্ছে। অয়ন যেখানে বাইক থামালো জায়গাটা অসম্ভব সুন্দর, একদম পার্কের মতো করে তুলেছে বিচটাকে।
বিচের কাছে গিয়ে মূহুর্তেই লজ্জায় আমি অয়নের দিকে তাকাতে পারছি না। কারন সেখানের মেয়েরা বিচে যা যা পড়ে আছে বলার মতো না। অয়নের দেখি সব স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছে, আর নিবে নাই বা কেনো, এতো দিন বিদেশে ছিলো এসব দেখে অবস্থ।
অয়ন সামনে তাকিয়ে বলছে,,, জায়গাটা অনেক সুন্দর তাই না, জায়গাটা আমার খুব ভালো লাগে।
আমি একটু মুখ বেকিয়ে বললাম,,,, হুমম,,ছেলেদের এই জায়গা তো খুব ভালো লাগবেই।
অয়ন আমার কথার কিছু না বুঝে বলে,,মানে।
,,, নাহহ মানে কিছু না।
অয়ন তার শার্ট খুলতে খুলতে বললো চলো ঐদিকে যায়। আমার হাত টেনে ঐদিকে নিয়ে যায়। কিছু মেয়েরা ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে, আমার রাগ হচ্ছে, তাই আমি বললাম,,, অয়ন আপনি শার্ট কেনো খুললেন, শার্টটা পড়ে নিন।
,,, আরে গরম লাগছে, প্রবলেম কি।
আমি রাগে বললাম,,, গরম আমারো লাগছে। আর তাছাড়া এতো বাতাসে গরম লাগে।
,,আরে দেখো কারো গায়ে শার্ট নেয়, এখনে সব ছেলেরাই শর্ট পড়ে আছে।
আমিও রেগে বললাম,,,,, এখানে সব মেয়েরাও প্রায় খালি গায়ে আছে আমিও জামা কাপড় খুলে ফেলবো নাকি।
এই কথা শুনে অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে আছে, ওর তাকানো দেখে আমি বুঝতে পারলাম যে আমি কি বলছি। রাগে হুশ না থাকলে যা হয় আরকি। এখন তো নিজেকে নিজে পিটাতে মন চাইছে। অয়ন চুপচাপ শুধু আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
একটু পর অয়ন শার্ট পড়তে পড়তে বললো,,,, এমন কথা আর যেনো তোমার মুখে না শুনি।
আমি অন্য দিকে তাকিয়ে বলি,,,,ভুলে মুখ থেকে বেরিয়ে গেছে। সরি আর বলবো না।
,,,হুমম।
,,,,, আর আপনিও ঐ মেয়েদের দিকে তাকাবেন না।
অয়ন হেঁসে দিয়ে বলে,,,,কেনো জেলেসি ফিল হয় নাকি।
,,,জানি না।
,,,,, জেলেসি ফিল করার কোনো দরকার নেয়, এমনিতেও এদের দেখে আমার কিছু ফিল হয়না।
,,,,,কেনো।
,,,, কারন এদের আমার মেয়ে মনে হয়না। মেয়ের পরিচয় তার লজ্জা আর চরিত্রে ফুটে উঠে। তোমার শরীর দেখার জন্য আমার তোমাকে বিয়ে করা লাগবে। আর ওরা এমনি সবাইকে দেখিয়ে দিচ্ছে। তাই ওদের শরীরের কোনো মূল্য নেয় বুঝলে,, এখন চলো তোমাকে অন্য দিকে নিয়ে যায়, যেখনে বেশি মানুষ থাকার কথা না।
অয়ন আমাকে অন্য সাইডে নিয়ে যায়, যেখানে আসলেও বেশি মানুষ নেয়। আমি আর অয়ন হালকা পানিতে যায়, আমি অয়নকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে দৌড় দিয়। অয়ন উঠে আমাকে দৌড়ে ধরার চেষ্টা করতে থাকে। একটু পড়েই ধরে কোলে উঠিয়ে সমুদ্রের দিকে যেতে থাকে। আমি হাত পা ছুটোছুটি করে বলছি,,, সরি সরি আর করবো না, আমাকে আর পানিতে নিয়ে যাবেন না৷ আমি সাঁতার পানি না।
অয়ন কোনো কথা না শুনে হাঁটু পর্যন্ত পানিতে নিয়ে গিয়ে আমাকে ফেলে দেয়। আমি উঠতে নিয় ঢেউের ধাক্কায় আবার আমি পড়ে যায়। অয়ন হাসতে থাকে। আমি উঠে অয়নকে ধাক্কা দিয় কিন্তু সে পড়ে না।
অয়ন হাসতে হাসতে বলে,,,, পারবে না গো আমাকে ফেলতে।
,,,, এখন আমি আপনাকে পানিতে ফেলবো না , দাঁড়ান আপনি।
বলে পানির নিচ থেকে বালি নিয়ে অয়নের গায়ে মারি। অয়ন হা করে আছে, আমি হাসতে হাসতে আরো কয়েকবার ভিজা বালু ছুঁড়ে মারি। অয়ন এসে আমাকে কাঁধ উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ঐ ছাড়েন ছাড়েন করছি।
অয়ন পাড়ে নিয়ে গিয়ে আমাকে বালির মধ্যে গড়াগড়ি করাচ্ছে। আমিও বালি নিয়ে অয়নকে মাখাচ্ছি। যেনো আমরা পানি না বালি দিয়ে খেলতে আসছি। একটু পড়ে দুজন দুজনকে দেখে বসে বসে হাসছি। দুজনে পুরো বালু দিয়ে মাখামাখি।
অয়ন,,,,, বালি দিয়ে খেলা হলে এবার পানি দিয়ে খেলা যাক। আবার দুজনে পানির মধ্যে লাফালাফি করতে থাকি৷
,,,,
প্রহর রেডি হয়ে আসে। এসে দেখে মিস্ স্নেহা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের মুখের বিভিন্ন অঙ্গী ভঙ্গি করছে৷ এটা দেখে প্রহর হেঁসে দেয়, নিজের হাসিটাকে কন্ট্রোল করে বলে,,,,, কি করছেন এসব৷
স্নেহা ঠিক হয়ে দাঁড়িয়ে বলে,,,,,, টাইম পাস করছিলাম।
,,,,,এভাবে।
,,,হুমমম।
,,,, আচ্ছা চলেন।
,,,, কোথায় যাবো আমরা।
,,,সেটা গেলেই দেখতে পারবেন।
,,,,আপনি এতো গম্ভুস কেনো।
,,, মানে।
,,,এই যে, মানে সবসময় মুখটাকে অফ করে রাখবে, একটু হাসলে আপনাকে আরো সুন্দর লাগবে।
,,,আপনার কথা হয়ে গেলে এখন আমরা বের হয়।
,,,হুমম ঠিক আছে।
গাড়িতে বসে স্নেহা একটার পরে একটা কথা বলতেই থাকে। প্রহর অতিষ্ঠ হয়ে বলে,,,,, একটা কথা বলো তো তুমি কি সত্যি লেখক হতে চাও।
,,,চাও মানে কি, আমি এই মূহুর্তেও একজন লেখিকা,একজন আটিস।
,,,, আর্টিস্টরা এতো কথা বলে হুমম।
,,,, কেনো তাদের মুখে কি কসটেপ লাগানো থাকে নাকি। নাকি কোনো নিয়ম এ আছে যে আর্টিস হলে কথা বলা নিষিদ্ধ।
,,, তোমার সাথে কথায় কেও পাড়বে না।
,,,,, আমার বাবাও এটা বলে।
একটু পরে তারা একটা জায়গায় থামে। স্নেহা একটা লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে বলে,,,,, ওয়াও,,, হোয়াট এ বিউটিফুল প্লেস,,, আই লাভ দেট।
প্রহর ও বের হয়। হয়ে বলে এই জায়গাটা অনেক শান্ত আর নিরিবিলি, সুন্দর তো আছেই।
,,,হুমম এই জায়গায় বসে যে কেও একটা কবিতা লিখে ফেলতে পারবে। ছবি আকার জন্য দারুন জায়গা।
,,,হুমম লিখার আগে জায়গাটা ফিল করতে হবে। চোখ বন্ধ করে আশেপাশে থাকা পাখির আওয়াজ গুলো মন দিয়ে শুনো, জায়গাটার গ্রান নাও, বয়ে যাওয়া বাতাস অনুভব করো, তাহলে দেখবে মনের ভিতরে থাকা ভাবনা গুলো বেরিয়ে আসবে।
প্রহর স্নেহার দিকে তাকিয়ে দেখে স্নেহা চোখ বন্ধ করে আছে। প্রহর আস্তে জিজ্ঞেস করে,,,, কি ফিল করতে পারছো, কি করতে ইচ্ছে করতে।
স্নেহা চোখ বন্ধ করে উওর দেয়,,,, আমার ঘুম পাচ্ছে, ঘুমাতে ইচ্ছে করছে। এমন জায়গায় শুলে একমিনিটে ঘুম এসে যাবে।
,,,,,হোয়াট।
স্নেহা তাকিয়ে বলে,,, হুমম,,
প্রহর রেগে গিয়ে বলে,,, এমন জায়গায় নিজের ভালোবাসাকে অনুভব হয়, নিজের মনের খুব কাছের কাওকে মনে পড়ে৷ আর তার জন্য কিছু লিখতে ইচ্ছে করে।
,,,,হুমম কিন্তু আমার তো এমন কেও নেয়। তো আমি কি করবো, আচ্ছা ভালোবাসা কি, এটা হলে বুঝবো কিভাবে।
,,,, কিহহ তুমি ভালোবাসা কি এটাই বুঝো না। এই জন্যই তোমার লেখা এতোটা ফুটে উঠে না।
,,,, হুমমম তাই তো আপনার কাছে আসলাম শিখার জন্য। বলেন না।
,,,,,,এটা বলার না অনুভব করার জিনিস, আর এটা আমি কিভাবে শিখাবো।
,,,, আপনি বলেন আমি ঠিক শিখে যাবো।
,,,,, অন্য দিন বলবো, আজ না।
,,,, তাহলে আজ কি করবো।
,,,, ঐ যে তুমি বললে, ছবি আঁকবে, গাড়িতে দেখে ছবি আকার সব কিছু পেয়ে যাবে।
,,,,হুমম,,আমার তো ঐ গাছের নিচে সবুজ ঘাসে শুয়ে ঘুমাতে ইচ্ছে করছে।
,,,এতো ঘুমঘুম করছ কেন রাতে কি ঘুমাওনি নাকি।
,,,,,এক টানা সাতদিন ধরে ঘুমালেও আমি ঘুমের জন্য পাগল থাকবো। ঘুম তো ঘুমি। ঘুমের সাথে কি কিছুর তুলনা হয় নাকি।
,,,,আল্লাহ, তাহলে তুমি ঘুম রেখে এখানে আসলে কেনো।
,,,,,আপনার সাথে সময় কাটাতে।
,,,,,, চুপচাপ রং তুলি গাড়ি থেকে বের করে ছবি আঁকো।
,,,,হুমম,,
স্নেহা গাড়ি থেকে রং তুলি বের করতে করতে বলে,,,,আচ্ছা আপনি কি কাওকে ভালোবাসেন।
স্নেহার কথা শুনে প্রহর ওর দিকে ব্রু কুঁচকিয়ে জিজ্ঞেস করে,, মানে।
,,মানে হলো, আপনার কথা শুনের মনে হলো ভালোবাসা ছাড়া ভালো লেখক হওয়া যায় না, তাই বললাম কাওকে ভালোবাসেন কিনা, কারন আপনার লেখায় অনেক ভালোবাসা ফুটে উঠে।
প্রহর সরাসরি উত্তর দিলো,,,, কাওকে ভালোবাসি নাকি বাসি না যেটা যেনে তোমার লাভ নেয়।
,,,, যানেন আমার কি মনে হয়।
,,,, কি মনে হয়।
,,, আমার মনে হয় আপনার মধ্যে কাওকে না পাওয়ার কষ্ট লুকিয়ে আছে।
প্রহর কিছু ক্ষন চুপ থেকে বলে,,,, এমন কিছুই না, এসব তোমার মাথার সব ভুল ধারণা, চুপচাপ ছবি আঁকো।
,,,হুমম।
দুজনে ছবি আকা শুরু করে। প্রহর মন দিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখছে আর আঁকছে, স্নেহার দুচোখ শুধু প্রহরকে দেখছে আর কাগজে সেই চিত্র ফুটে তুলছে।
,,,,,,,,
আলো সায়নের বাসায় গিয়ে সোজা সায়নের রুমের দিকে গিয়ে টুকা দিতে থাকে। দরজা খুলে সয়ন আলোকে দেখে অভাক হয়ে বলে,,,, আপনি এখানে।
,,,হুমম আমি এখানে।
,,,,মানে কেনো, আপনি এখানে আসলেন কেনো।
,,,,, আরে আপনার ভাইয়া বলে দিয়েছে, এসে যেনো ডেসিন করে আপনার অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করে পরে যায়।
,,,, কোনো দরকার নেয়, আমি ঠিক আছি।
,,,,, আপনি ঠিক আছেন কি আছেন না সেটা আমি ঠিক করবো আপনি না।
বলে সোজা রুমের ভিতরে চলে যায়। সায়ন শুধু আরে আরে করতে থাকে।
আলো সোফায় বসে বলে,, চলুন এখানে বসেন, আমি ডেসিন করিয়ে দিচ্ছি।
,,,, লাগবে না।
,,,ঠিক আছে যতো ক্ষন না ডেসিন করাবেন আমি এখানেই থাকবো, আর আপনি আমাকে বের করতে পারবেন না।
,,,এই আপনি সোজা আমার রুমে আসলেন কিভাবে।
,,,,আপনার আম্মু দেখিয়ে দিয়েছে আমাকে।
,,,,, আপনি অনেক জেদি জানেন।
,,,,হুমম যানি, আমার বাবাও তাই বলে। এখন আপনি কি বসবেন নাকি বসবেন না।
সায়ন বিরক্তি ভাব নিয়ে বসে বলে,,,হুমম যা করার করেন।
আলো হাসি দিয়ে সায়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,, আমার যা ইচ্ছে করবো।
সায়ন আলো দিকে তাকিয়ে বলে,,, শুধু ডেসিন করে দিন।
আলো সযত্নে ব্যান্ডেস খুলে জায়গাটা পরিষ্কার করছে, সায়ন ব্যাথায় মুখ দিয়ে একটু শব্দ করে। আলো মেডিসিন লাগাচ্ছে আর সায়ন এস হাতে ফু দিচ্ছে। সায়ন আলোর দিকে তাকাতেই ওর চোখ আঁটকে যায়। আলো ফু দিতে দিতে সায়নের দিকে তাকাতেই সায়ন চোখ ফিরিয়ে নেয়।
আলো মুশকি হেঁসে ডেসিন করে দেয়,আর সায়নকে চেক করে ইনজেকশন দিতে যাবে ওমনি সায়ন সরে যায়। গিয়ে বলে,,, আরে আজব আপনার কাছে আসলেই ইনজেকশন দেন।
,,,,, তো আর কি চাই আপনার।
,,, আমার কিছু চাই না।
,,, আরে এই ইনজেকশনটা দিলে আপনি তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবেন।
,,,,লাগবে না আমার তাড়াতাড়ি ভালো হওয়া।
,,,,,আরে আপনি এতো কেনো ভয় পান।
,,,,এক্সকিউজ মি, আমি ভয় পাই না। দিন ইনজেকশন।
সায়ন অন্য দিকে তাকিয়ে আছে, আলো ইনজেকশন দিয়ে সায়নকে বলে,,,, হুমম হয়ে গেছে।
সায়ন,,,,, হুমম বাঁচা গেলো, এখন আপনার হয়ে থাকলে, আপনি আসতে পারেন।
,,,,, আসতে পারেন মানে, মেহমানকে কেও এভাবে বলে,, যান আমার জন্য কফি নিয়ে আসেন।
,,,আপনি ড্রয়িং রুমে যান, সেখানে আপনাকে সব কিছু দেওয়া হবে।
আলো মন খারাপ করে বলে,,মেহমানের সাথে কেও এমন করে বুঝি। এক কাপ কফিই তো খেতে চেয়েছি।
সায়ন,, হুমম হয়েছে, এনে দিচ্ছি।
সায়ন ফোন করে বলে দেয়, একজন কফি নিয়ে আসে। তো সায়ন কফিটা নিয়ে আলোকে দেয়, আলো একটা হাসি দেয়। কফি খেতে খেতে বলে,,, সামনে রাখা গিটারটা কার।
,,,,রুমটা আমার তার মানে এখানে রাখা জিনিস গুলোই আমারি হবে।
,,,এটা জরুরি না, আমার বোনের জিনিস আমার রুমে থাকে আবার আমার জিনিস ওর রুমে থাকে। আচ্ছা যাি হোক, এটা কি বাঝাতে পারেন নাকি এমনি রাখছেন।
,,,,,, অনেক ভালো করে বাঝাতে পারি।
,,,,, তাহলে বাজিয়ে দেখান।
,,,, পারবো না।
,,,,, পারেন না এটা বলেন।
,,,,,, পারিনা মানে
,,,,তাহলে বাজিয়ে দেখান।
,,,এখনি দেখাচ্ছি।
সায়ন বসে গিটার নিয়ে সুর তুলে, আলো কফির কাপে একটা চুমুক দিয়ে চোখ বন্ধ করে গুন গুন করতে থাকে। সায়ন আলোর দিকে তাকিয়ে তার গুন গুনের আওয়াজের সাথে তাল মিলিয়ে সুর তুলতে থাকে। একটু পর আলে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সায়ন তার দিকেই চেয়ে আছে, ওর দিকেই তাকিয়ে গিটার বাঝাচ্ছে।এটা দেখে আলো চুপ হয়ে যায়, সায়ন ও গিটার বাঝানো বন্ধ করে দেয়।
আলো উঠে দাঁড়িয়ে বলে,,,, এখন আমি আসি, পরে আবার কথা হবে।
বলে আলো চলে যায়, সায়ন আলোর যাওয়ার পরেও আবার সুর তুলতে থাকে।
,,,,,,
সারাদিন অয়ন আর আমি আনেক মজা করি, আমরা বিচের পার্টিতেও অনেক মজা করে, সব মিলিয়ে একদম অসাধারণ। অনেক শপিং ও করি। সন্ধ্যার দিকে আমরা সেখানে বিচে হওয়া একটা পার্টিতে যায়। যেখানে সবাই বোন ফায়ার জ্বালিয়ে গান বাঝনা করছে।
সবাই যার যার আনন্দে মগ্ন। সেখানে আমি আর অয়ন ও ডান্স করি।
অয়ন,,,, তুমি এখানে দাঁড়াও আমি ওয়াশ রুম থেকে আসছি।
,,, হুমম ঠিক আছে।
অয়ন কিছু ক্ষন পরে এসে দেখে মারু নেই, অয়ন নীর নীর করে ডাকছে কিন্তু কোথাও পাচ্ছে না। আরেকটু এগিয়ে দেখে মারু দাড়িয়ে আছে, অয়ন গিয়ে মারুর পিছনে হাত রাখতেই মারু অয়নের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে সোজা ধরে অয়নের ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে দেয়।
অয়ন অভাক হয়ে যায়, মারু তাকে কিস করতে থাকে, অয়ন মারু থেকে সরে গিয়ে বলে,,,, কি করছো নীর।
মারু একটু মাতালের মতো হাসি দিয়ে বলে একটা কাপেলকে দেখিয়ে বলে,,,, ওরা যা করছে তাই করছি।
অয়ন তাকিয়ে দেখে ওরা কিস করছে। অয়ন মারুর দিকে তাকিয়ে বলে,,,,, নীর আর ইউ ড্রাংক।
#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..12
মারু একটু মাতালের মতো হাসি দিয়ে বলে একটা কাপেলকে দেখিয়ে বলে,,,, ওরা যা করছে তাই করছি।
অয়ন তাকিয়ে দেখে ওরা কিস করছে। অয়ন মারুর দিকে তাকিয়ে বলে,,,,, নীর আর ইউ ড্রাংক।
মারু বড় একটা হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে না বললো। অয়ন মারুকে ধরে জিজ্ঞেস করছে,,,, কি খেয়েছো তুমি।
মারু মাতালের মতো বললো একটা নীল রঙের জুস খেয়েছি, অনেক ভালো ছিলো খেতে, কিন্তু বেশি খেতে পারিনি টেস্টটা অনেক স্ট্রংক ছিলো।
অয়ন কপালে হাত দিয়ে বলে,,, আল্লাহ এই মেয়ে বোটকা খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু মনে হয়না পুরোপুরি নেশায় আছে, বেশি খেতে পায়নি মনে হয়। চলো আমার সাথে।
আমি অয়নের দিকে মিটমিট করে তাকিয়ে বললাম,,, কোথায়।
,,,,, বাসায়,, তোমাকে নিয়ে আর এখানে থাকা যাবে না।
আমি অয়নের বুকে মাথা রেখে বললাম,,, কেনোওও
অয়ন আমাকে ছাড়িয়ে বললো,,,, এখন যেমন করছো সেই কারনে,, চলে যাওয়াটাই ঠিক হবে এখান থেকে।
অয়ন আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে চাই, আমি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। অয়ন পিছনে ফিরে আমাকে জিজ্ঞেস করে,,,,,, কি হলো দাঁড়িয়ে গেলে কেনো।
,,আগে আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিন তাহলে যাবো, আর না হলে নাই।
অয়ন কপাল কুঁচকিয়ে বললো,,,, কি প্রশ্ন।
আমি সামনে দেখিয়ে বললাম,,,,, ওরা কি করে।
অয়ন তাকিয়ে দেখে ওরা কিস করছে, অয়ন তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে কি বলবে সেটাই ভাবছে,, আমি অয়নের কলার ধরে আবার বললাম,,, বলেন না কি করে ওরা সবাই। আচ্ছা আপনাকে বলতে হবে না আমিই বলে দিয়, ওরা সবাই কিস করছে।
,,,জানো তো জিজ্ঞেস করছো কেনো।
,,,, আরে এটা তো আমি জানি,, কিন্তু কথা হচ্ছে ওরা কিসটা করছে কেনো।
অয়ন না পেরে বলে,,, ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে তাই কিস করছে।
,,,ওহহ তাই,,মুখটা অয়নের দিকে এগিয়ে বলি,, আপনি ও তোহ আমাকে ভালোবাসেন তাহলে আমাকে কিস করেন উম্মম।
অয়ন মারুর দিকে তাকিয়ে একটা ডোগ গিলে বলে,,, সময় আর জায়গা কোনোটাই ঠিক না।
অয়ন আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে যেতে নেই আমি আবার শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। অয়ন আবার জিজ্ঞেস করে,,, কি হলো আবার।
আমি একটু কান্না কান্না ভাব নিয়ে বলি,,, আমি ওদেরে মতো সুন্দর দেখতে না বলে আমাকে কিস করবেন না আপনি।
অয়ন মুশকি হেসেহেঁসে আমাকে জোর করে গাড়িতে বসিয়ে বাসায় নিয়ে আসে। অয়ন আর আমি সেখানের রুমের সাজ দেখে অভাক হয়ে যায়। মোমবাতি জ্বালানো, ডিম লাইট, সাদা বিছানায় লাল গোলাপের পাপড়ি, আর ফ্লোরেও ফুলের পাপড়ি বিছানো।
অয়ন আমার দিকে তাকায় আমি একটা দুষ্টু হাসি দিয়, অয়ন তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে লাইট জ্বালিয়ে, রিসোর্ট এর মেনেজারকে কল দিয়ে বলে,,, এসব কি, আমাদের বেডরুম এভাবে কেনো সাজিয়েছেন।
,,, স্যার আপনারা তো হানিমুনে এসেছেন, আর এখানে যারাই আসে তাদের বেডরুম এভাবে সাজানো হয়,নতুন বিয়ে হয় তো তাই আরকি। কেনো স্যার কোনো প্রবলেম হয়েছে।
,,, নো ইটস ওকে।
অয়ন তাকিয়ে দেখে মারু বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করে আছে, অয়ন এটা দেখে বলে,,, অফফ বাঁচা গেছে নীর ঘুমাচ্ছে, না হলে যে কি হয়ে যেতো কে জানে।
বলে অয়ন সাওয়ার নিতে চলে যায়। প্রতিদিন রাতে সাওয়ার নেওয়া একটা অভ্যাস হয়ে গেছে অয়ন এর। কিছু ক্ষন পর অয়ন বের হয়।
বের হয়ে দেখে লাইট নিভানো, ডিমলাইট জ্বলছে আর মোমবাতির আলো। লাইট কে অফ করলো এটা ভাবতে ভাবতে অয়ন তাকিয়ে দেখে বিছানায় মারু নেয়। অয়ন তাড়াতাড়ি আশেপাশে দেখে কেওকে না দেখে। অয়ন চিন্তিত হয়ে খোঁজার জন্য বাহিরে বের হতে নেয় অমনি,,
মারু দরজার সামনে এসে হাজির, অয়ন মারুকে দেখে থমকে যায়,এক পলকে তাকিয়ে আছে। কারন মারু একটা লাল নাইট ড্রেস পড়ে। যেটা অনেকটা শর্ট, আর হাতা একদম চিকন ফিতার মতো, আর নাইটির গলাটাও অনেক নিচে ছিলো।
মারু দরজায় দুহাত রেখে দাঁড়িয়ে অয়নের দিকে নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে আছে। অয়ন কয়েকটা ডোগ গিলে অন্য দিকে তাকিয়ে বলে,,, ক কি পড়েছো এ এটা।
আমি হালকা নেশায় উওর দিলাম,,, কেনো ভালো লাগছে না,, এখন তো জায়গাও ঠিক আছে আর সময় ও।
,,,মানে।
মারু অয়নের সামনে গিয়ে, ওর দুই হাত দিয়ে অয়নের কাঁধে ধরে শরীরটা অয়নের গায়ে ছেড়ে দিয়ে বলে,,, মানে কিস করেন আমাকে, এখন সব ঠিক আছে, আপনি তো ভালোবাসেন আমায় তাহলে কিস করেন।
,,,, দুজন দুজনকে ভালোবাসলে কিস করে, একজন বাসলে আরেক জন না ভাসলে হয় না। আর তুমি পিল্জ দূরে যাও না হলে কালকে সকালে উঠে মহা পচতাবে৷
,,,,, আপনি না করেন, আমি করবো কিস আপনাকে,, আপনাকে কিস করে না, আমার অনেক ভালো লেগেছিলো, তাই আবার করবো।
যাও একটু দূরত্ব ছিলো দুজনের মাঝখানে, মারু সেটাও গুচিয়ে অয়নের একদম কাছে চলে আসে। অয়নের নিশ্বাস দ্রুত গতিতে চলছে, অয়ন নিজের হাতটাকে শক্ত করে মুঠ করে, নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে বলে,,, নীর নিজেকে কন্ট্রোল করা অনেক কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে, জান আমার এমন করে না, চুপচাপ শুয়ে পড়ো পিল্জ।
মারু মাথা নাড়িয়ে বলে,, নাহহ।
বলে অয়নের ঠোঁটের দিকে এগোতেই অয়ন মুখ অন্য দিকে ফিরে বলে,,,, ভয়ানক কিছু ঘটে যাবে নীর, আমার অবস্থাটা বুঝার চেষ্টা করো পিল্জ।
অয়ন অন্য দিক ফিরে আছে, মারুর নজর চলে গেছে অয়নের অ্যাডমাস আপেলের দিকে, অয়ন বার বার ডোগ গিলায় এটা বার বার উঠানামা করছে। মারু একটা ডোগ গিলে অয়নের অ্যাডমাস আপেলে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। আর সেখানে কিস করতে থাকে।
অয়ন তার কনট্রোল হারিয়ে বলে,,, সরি নীর নিজেকে আটকে রাখা আর সম্ভব না।
বলে মারুকে আঁকড়ে ধরে তার ঠোঁটে কিস করতে থাকে, মারুও চোখ বন্ধ করে কিস করতে থাকে। অয়ন মারুকে কোলে তুলে বিছানায় শুয়িয়ে ঠোঁটে গলায় পাগলের মতো কিস করতে থাকে। অয়নের গভীর ছুঁয়ায় মারু বুঝতে পারে যে, তার সত্যি অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে।
এটা বুঝতে পেরে মারু অয়নকে আটকিয়ে উঠে বসে যায়, অয়ন বসে মারুকে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে মারুর জামার পিছনের চেইন খুলতে খুলতে বলে,,,, জান এখন অনেক লেইট হয়ে গেছে, এখন তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবে না।
মারু কিছু বলার আগের অয়ন মারুর মুখ তার ঠোঁট দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
,,,,,,,,,,,
প্রহর নিজের ছবি আকা শেষ করে স্নেহাকে বলে,,,আমার হয়ে গেছে, তোমার হয়েছে নাকি।
,,,হুমম হয়ে গেছে।
,,,,, কোথায় দেখি।
,,,,,, না দেখাবো না, লজ্জা করছে।
,,,,, পেন্টিং দেখাতে আবার কিসের লজ্জা, আর তোমার পেন্টিং তো আমি দেখেছি এতোটাও খারাপ আঁকো না।
,,,,আচ্ছা, আমার বিষয়ে এতো ভাবেন যে, কষ্ট করে ইন্টারনেট থেকে খুঁজে আমার পেন্টিং দেখেছেন।
প্রহর সব গুছাতে গুছাতে বলে,,, তুমি যেমন ভাবছো এটা তেমন কিছু না। যাকে শিখাবো তার বিষয়ে একটু জ্ঞান থাকা দরকার তাই আরকি।
,,,, হুমম,, ওকে তো এই জন্য।
প্রহর স্নেহার সাথে দাঁড়ায়, তার পেন্ডিং দেখার জন্য, সেখানে নিজের ছবি দেখে অভাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,,,, তুমি আমার ড্রয়িং বানালে কেনো।
,,, আরে আপনিই তো বলেছে, এখনে যে জিনিস সবচেয়ে বেশি ভালো লাগবে তার পেন্টিং বানাতে, তাহলে বেশি সুন্দর হবে, তাই তো আমি আপনার পেন্টিং করলাম। কেনো ভালো হয়নি।
প্রহর কিছু ক্ষন পেন্টিং এর দিকে তাকিয়ে থেকে বলে,,,,, সব কিছুই ঠিক আছে, তবে এই দেখো এই লাইনটা আরেকটু সোজা হলে ভালো হতো, আর এই হলুদ কালেরর জায়গা কমলা দিলে আরো ভালো হতো, তোমার আরো শিখার দরকার আছে।
বলে নিজের পেন্ডিং নিয়ে গাড়ির দিকে যায়, আর মুশকি হাসতে থাকে। স্নেহা ঐদিকে মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রহর গাড়িতে ছবি রাখতে রাখতে বলে,, তাড়াতাড়ি সব কিছু গুছিয়ে গাড়ির ভিতরে রাখো, এখান থেকে যেতে হবে তোহহ নাকি।
,,,, হুহহহ যাবো না আমি।
,,,, ঠিক আছে তাহলে থাকো এই জায়গায়, আমার তো অনেক ক্ষুধা লেগেছে তাই আমি যাচ্ছি রেস্টুরেন্টে এ, তোমার লাগেনি বুঝি।
স্নেহা পেটে হাত দিয়ে প্রহরের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রহর মুশকি হেঁসে বলে,,, চলো গাড়িতে উঠো।
স্নেহা চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসে। প্রহর একটা রেস্টুরেন্টে যায়, সেখানে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে। তারা লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ে। দুজনে এর উপর অনেক আলোচনা ও করে।
রাতে স্নেহা গাড়িতে বসে আছে, প্রহর ড্রাইভ করছে। হঠাৎ করেই স্নেহা তাড়াতাড়ি গাড়ি থামাতে বলে, প্রহর তাড়াতাড়ি গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,, কি হয়েছে।
,,,,,, আইসক্রিম খাবো, খেতে ইচ্ছে করছে।
,,,তো এটা নরমালি বলতে পারতে, এভাবে কেও বলে, আমি মনে করেছি কি না কি হয়েছে।
,,,,,আচ্ছা এখন তো জানতে পেরেছেন নাকি, তাহলে এখন এনেদিন।
,,,অফফ,, ঠিক আছে।
প্রহর গাড়ি থেকে বের আইসক্রিম এনে দেখে স্নেহাও গাড়ি থেকে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রহর স্নেহার হাতে আইসক্রিমটা দিয়ে বলে,,, তুমি বের হতে গেলে কেনো, আমি তো নিয়েই আসছিলাম।
,,,আপনার জন্য আনলেন না।
,,, না আমি এসব খাই না।
,,, পরে আমারটার দিকে নজর দিবেন না।
,,,, হুমম,,উঠেন এবার গাড়িতে।
,,, আরে চলেন না কিছু ক্ষন হাঁটি, চাঁদনী রাত, ভালোই তো লাগছে, হাঁটলে আরো ভালো লাগবে।
,,,, হুমম, তো আসল কথা হলো এটা, আইসক্রিম তো বাহানা ছিলো তাই তো।
,,, বুঝেই যখন গেছেন তখন চলেন, আর আপনার বাসায় কোনো কাজ আছে।
,,,, না।
,,,, কেও আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
প্রহর একটা লম্বা নিশ্বাস ফেলে বলে,,,, অপেক্ষা করার মতো কেও নেয়।
,,,, তাহলে বাসায় গিয়ে কি আপনি কাওকে দেখতে চান।
প্রহর গভীর চিন্তায় বলে,,,,, এখন তো সেও নেয়।
,,,, নেয় যখন চলেন।
বলে প্রহরের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। প্রহর তার হাত ছুটিয়ে বলে,,,,, হুমম চলো।
দুজনে হাঁটছে, স্নেহা একটার পর একটা কথা বলে যাচ্ছে প্রহর তা শুনে যাচ্ছে। একটা জায়গা দেখে তারা বসে, কিছু ক্ষন গল্প করার পর প্রহর বলে,,,, চলো এখন ফিরে যায়, রাত তো কম হলো না।
,,,হুমম চলেন,, আপনার তো আমার থেকে পিছা ছুটাতে পারলে বাঁচেন।
প্রহর স্নেহাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে নিজেও বাড়ির দিকে রওনা দেয়।
,,,,,
সায়ন বারান্দায় দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে, আকাশের দিকে তাকিয়ে গিটার বাজাচ্ছে আর গান গাচ্ছে। এি সময় একটা ফোন আসে, সায়ন গান থামিয়ে বিরক্তর সাথে কলটা রিসিভ করে বলে,,, হ্যালো কে।
,,,,আরে আমি।
,,,, কে মিস্ আলো।
,,,, আরে বাহহহ আমার আওয়াজ শুনেই দেখা যায় চিনে ফেলেছেন একে বলে মনের টান।
,,,, আপনি কি এতো রাতে এসব ফালতু কথা বলার জন্য কল করেছেন।
,,,,এটা ফালতু কথা হলো, আচ্ছা আমি যেটার জন্য ফোন করেছিলাম, আপনি কি ওষুধ খেয়েছেন।
,,,, মানে।
,,,,জানতাম আপনি খাননি, খাননি কেনো, সুস্থ হওয়ার ইচ্ছে নেয় নাকি।
,,,,আরে আজকে কেও মনে করিয়ে দেয়নি, প্রতিদিন তো দি,,,বলে চুপ হয়ে যায়।
,,, কি বলেন।
,,,আপনি আগে এটা বলেন, আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথা থেকে।
,,,,,আরে নাম্বার বের করা আমার বা হাতের কাজ। আচ্ছা আপনি তাড়াতাড়ি ঔষধ খেয়ে আসুন।
,,,,,, মিস্ আলো আপনাকে এতো চিন্তা করতে হবে না, আমি ঠিক খেয়ে নিবো।
,,,,,সত্যি।
,,,,, হুমম,,এখন ফোন রাখি।
,,,,আরে দাঁড়ান, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা।
,,,,, কি।
,,,,আপনি ভালো আছেন।
,,,, হেহহ,,,হুমম আমি ভালো আছি। এবার রাখেন।
,,,আরে জিজ্ঞেস করবেন না আমি কেমন আছি।
,,,, আচ্ছা আপনি কেমন আছেন।
,,,,জ্বী আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি,,
,,, এবার রাখি।
,,,,,, আরে আরেকটা জরুরি কথা।
,,,,,, আবার কি।
,,,,গুড নাইট।
,,,, গুড নাইট
বলে ফোন রেখে দেয়, সায়ন ফোন রেখে বলে,,, পাগল মেয়ে একটা। নাকি আমাকে পাগল ভেবেছে কোনটা।
সায়ন আবার গানে মনোযোগ দেয়। কিছু ক্ষন পর সায়নের কাঁধে হাত রাখে প্রহর। সায়ন তার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে দাঁড়ায়।
প্রহর,,,, এতো গভীর মনোযোগ দিয়ে কি দেখছিস আকাশে।
,,,, কিছু না ভাই, চাঁদ দেখছি।
প্রহর মুশকি হেঁসে বলে,,, কিন্তু চাঁদ তো নেয়। যানিস যখন কেও কাওকে অনেক মিস করে তখন সে এভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। দিয়ার কথা মনে পড়ছে নাকি।
সায়ন প্রহরের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,, না, হয়তো হ্যাঁ।
প্রহর,,,,জানিস তোর আর আমার কাহিনি অনেকটা এক।
সায়ন,,,,না ভাইয়া, তোমার চর আমার কাহিনি কখনোই এক হতে পারে না। আচ্ছা যাক এসব কথা বলে লাভ নেয়।
প্রহর,,,, হুমম অয়ন ফোন করেছিলো।
সায়ন,,,,, করেছিলো একবার,,ভাইয়া তো এখন মজায় আছে, এখন আর আমাদের কল করার টািম আছে নাকি।
প্রহর,,,, হুমম ভালেবাসার মানুষ কাছে থাকলে কারো দরকার হয় না। আচ্ছা যা রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়।
দুজনেই দুজনের রুমের দিকে চলে যায়।
,,,,,, হ্যালো,, যা বলছি মন দিয়ে শুনবে, যার ছবি দিয়েছি, সে যেনো কাল কোনো ভাবেই বাঁচতে না পারে, ওরা সেখানেই আছে, যতো টাকা লাগবে পেয়ে যাবে, শুধু কাজটা সুন্দর ভাবে হওয়া চাই। আর হ্যাঁ বেশি কষ্ট দিয়ে মারার কথা ভাববে না।
,,,, ওকে স্যার, আই আন্ডারস্ট্যান্ড।
চলবে,,,,,,,,,