আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৩+১৪

#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..13

,,,,,, হ্যালো,, যা বলছি মন দিয়ে শুনবে, যার ছবি দিয়েছি, সে যেনো কাল কোনো ভাবেই বাঁচতে না পারে, ওরা সেখানেই আছে, যতো টাকা লাগবে পেয়ে যাবে, শুধু কাজটা সুন্দর ভাবে হওয়া চাই। আর হ্যাঁ বেশি কষ্ট দিয়ে মারার কথা ভাববে না।

,,,, ওকে স্যার, আই আন্ডারস্ট্যান্ড।

,,,,,,, আর শুন বেশি কষ্ট দিয়ে মারলে আমি তোর জান নিয়ে নিবো। এমন ভাবে মারবি যেনো কোনো ব্যাথা না পায় বুঝলি।

,,,,,স্যার তাহলে গুলি করে মরে ফেলি।

লোকটা পাগলের মতো চিৎকার করে রেগে বলে,,,,, নাআআ একদম না, গুলি খেয়ে দেখছিলি কেমন লাগে, গুলি করলে মানুষ ছটফট করতে করতে মারা যায়, তখন তার না জানি কতো কষ্ট হয়। গুলি, ছুরি এসব ব্যবহার করা যাবে না। রক্ত দেখলে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়, রক্ত বের হওয়া যাবে না।

,,,,, (I think, he is mentally sick) [আমার মনে হয়, সে মানসিক ভাবে অসুস্থ ] ওকে স্যার কোনো রক্ত বের হবে না, আপনি চিন্তা করবেন না, আমি সব সামলে নিবো।

,,,,ওকে।
,,,,,,

ঘুম ঘুম ভাব চোখে, সূর্যের আলো হালকা চোখে চোখে বাঝছে, অন্য দিকে ফিরে ঘুমানোর চেষ্টা করতে থাকি। অনুভব করলাম আমার হাত যেনো কারো খালি গায়ে আছে। আমি চোখ বন্ধ করেই হাত দিয়ে ঘুরিয়ে বুঝার চেষ্টা করছি যে, আমি কি স্পর্শ করছি। চোখ খুলতে একদম ইচ্ছে করছে না।

অনুভব করলাম কেও আমার হাতটা নিয়ে তার নরম ঠোঁটের স্পর্শ দিলো। আমি মৃদু মৃদু করে তাকাকাম, আমার চোখের সামনে অয়নের চেহেরা ভেসে উঠলো, তার চেহেরা দেখে আমার ঠোঁটে হাসি চলে আসলেও সেটা আর বেশি ক্ষন স্থায়ী থাকে না।

অয়নের খালি গা, খালি বলতে কমোর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে খালি। হঠাৎ করেই আমার পাশে অয়নকে এভাবে দেখে কিছুটা চমকে গিয়ে উঠে বলতে থাকি,,, লজ্জা করে না, একটা মেয়ের সামনে এভাবে থাকতে, আমি আপনাকে কতো বার বলেছি এভাবে খালি গায়ে আসবেন না আমার সামনে, নিজের তো লজ্জা নেয়, অন্যদের ও বেশরম ভাবে।

আমি অয়নের দিকে তাকালাম, কারন আমি এতো কিছু বলছি কিন্তু অয়ন একটা কথাও বলছে না। আমি তার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করি। সে মুশকি হেঁসে তার চোখ দুটি আমার বডির দিকে ইশারা করে। আমি কপাল কুঁচকিয়ে আমার দিকে তাকায়।

তাকানো মাত্র এক চিৎকার দিয়ে চাদরটা টান দিয়ে নিজেকে প্যাচিয়ে বলি,,,, আমার এই অবস্থা কেনো, কি করেছেন আমার সাথে। কিভাবে করতে পারলেন আমার সাথে এটা।

অয়ন সোজা হয়ে নিজের বডির দিকে ইশারা করে বলে,,,,, শুধু আমি করেছি তুমি কিছু করো নি।

আমি তাকিয়ে দেখি অয়নের সাদা বুকে, গলায় পেটে বিভিন্ন জায়গায় লিপস্টিক এর দাগ,আমি কিছু বুঝতে না পেরে কাঁদো কাঁদো ভাবে বললাম,,,,, আপনার গায়ে লিপস্টিক কেনো, কোন মেয়ের সাথে আবার কি করেছেন।

অয়ন আমার আর তার দিকে ইশারা করে বললো,,, লাইক সিরিয়াসলি,, এই অবস্থায় আমাদের দেখেও বলছো আমি অন্য মেয়ের সাথে ছিলাম।

,,, সেটাই তো, আমাদের এ অবস্থা কেনো।

অয়ন দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,,,, সেটা তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করছো, কোনো তোমার মনে নেয়, নাকি আবার মনে করিয়ে দিতে হবে।

অয়নের কথায় আমি একটু চিন্তা করতে লাগলাম, যেহেতু আমার একটু হলেও হুশ ছিলো তাই সব মনে পড়ে লেগো। সব মনে পড়তেই মনে চাচ্ছে মাটি ফাঁক করে ঢুকে পড়ি। আমি আর অয়নের মুখের দিকে তাকালাম না, সোজা চাদরের ভিতরে ঢুকে গেছি।

অয়ন হেঁসে চাদরের উপর দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে বলে,,,, এই লজ্জা কাল কোথায় ছিলো, এখন লজ্জা পেয়ে লাভ নেয়। কারন এখন থেকে সকালে উঠে নিজেকে এভাবে দেখার অভ্যাস করে নাও।

,,, মানে।

,,,,, মানে হলো,, এখন আর তোমার থেকে দূরে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। সো বেবি আর লজ্জা পেয়ো না। তোমার এই লজ্জা আমাকে তোমার প্রতি আরো বেশি এট্রাক করে।

আমি চাদরের ভিতর থেকে মোচরা মোচরি করে অয়নকে সরিয়ে নিজের মাথাটা অল্প একটু বের করে কাঁদো কাঁদো গলায় বললাম,,,আপনি অনেক খারাপ, কথা নাই আপনার সাথে।

,,,, ঠিক আছে বুঝলাম আমি অনেক খারাপ, সো এখন গোসল করতে কে আগে যাবে আমি না আপনি, নাকি,,

অয়ন তাই নাকি বলে থেমে আমার দিকে অন্য রকম ভাবে তাকিয়ে আছে। আমিও ব্রু কুঁচকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,,,, নাকি কি?

ওনার মুখটা একটু কাছে এনে আস্তে করে বললো,,, নাকি এক সাথে যাবে।

আমি সোজা চাদর নিয়ে দাড়িয়ে গেলাম, বিছানা থেকে তাড়াতাড়ি নেমে সোজা ওয়াশ রুমে চলে গেলাম,, অয়ন হাসতে হাসতে বলছে,,, আরে চাদরটাতো রেখে যাও।
,,,,,,
গোসলটা সেরে কোনো মতো পা টিপে টিপে বের হলাম, দেখলাম কেও নেয়,যাক বাচা গেলো। আমি আরামছে গুন গুন করে চুল আঁচড়াচ্ছি। হঠাৎ করেই কেও আমাকে পিছন দিক থেকে জরিয়ে ধরে, স্পর্শটা অনেক চিনা, যদিও এই স্পর্শটা কালকেই প্রথম পেলাম, তাও অনেক চিনা লাগে।

অয়ন তার ভিজা মাথা আমার ঘাড়ের উপরে রাখে, ওনার স্পর্শে আলাদা একটা অনুভুতি আছে। নিজেকে সামলে নিয়ে আমি অয়নকে ছাড়িয়ে বললাম,,, কি করছেনটা কি।

অয়ন হেঁসে বললো,,,ভালোবাসছি।

ইশশ এই হাসিতে আমি হাজার বার মরে যাবো। আমি তাও মুখ বেকিয়ে বললাম,,,, হঠাৎ কি হলো, এগে তো এমন করতেন না,হঠাৎ এতো ভালোবাসা।

অয়ন মুশকি হেঁসে বললো,,, ভালোবাসা তো কোনো দিনও কম ছিলো না, আর তুমি হঠাৎ দেখলে, তোমার কাছে আসতাম না তার মানে এই না যে, আমি তোমায় ভালোবাসতাম না। আমি শুধু অপেক্ষায় ছিলাম।

,,,, কিসের অপেক্ষা।

,,,, অপেক্ষা করছিলাম তোমার ভালোবাসার, যে দিন তুমি আমাকে নিজের ইচ্ছায় আপন করে নিবে। আমাকে ভালোবাসি বলবে।

,,,ইশশ ঐটা তো আমি নেশায় ছিলাম, আর ভালোবাসি কখন বললাম।

,,,, নেশায় ছিলে কিন্তু এতোটাও না, আর কাল নিজের মনের ইচ্ছেটা পূরণ করেছো, আর ভালোবাসি এটা কাল হাজার বার বলেছো। আর এগুলো যে আপনার মনের কথা ছিলো সেটা আপনার চোখ বলে দিছে।

আমি লজ্জায় লাল হয়ে বলি,, আপনি একটু বেশিই বুঝেন। এমন কিছুই ছিলো না ওকে।

,,,ইশশ এখনো এতো লজ্জা কাল লজ্জা ভাঙ্গেনি বুঝি। ঠিক আছে আজ ভাঙিয়ে দিবে রাতে, ওকে।

,,,, ইশশ চুপ,,, আপনি গোসল কোথয় করলেন, ওয়াশ রুমে তো আমি ছিলাম।

,,,৷ মেম এখানে আরো রুম আছে সো ওয়াশ রুমও আছে। আপনি কথা ঘুরাবেন না।

,,আমি কোথায় কথা ঘুরালাম,, আচ্ছা আজকে কোথাও নিয়ে যাবেন না।

,,,,হুমম,, আজ আমরা এই শহরটা ঘুরে তারপর বিকেলে যাবো ডলফিন দেখতে।

আমি এক্সাইটেড হয়ে বললাম,,, ওয়াও,, সত্যি, আমার তো আর সহ্য হচ্ছে না, কবে দেখতে পাবো।

,,,,আজি পারবে,, এখন চলো খাবে।
,,,,,,,,,,

সায়ন এর খুব জ্বর, তাই প্রহর তাড়াতাড়ি ডক্টরকে ফোন করে। সবাই সায়ন এর রুমেই আছে।

প্রহর,,,,, হঠাৎ করে এতো জ্বর বাদালি কি করে।

সায়ন কোনো রকমে বলে,,,, সেটাই তো বুঝতে পারছি না।

ডক্টর আলো তাড়াতাড়ি আসে, এসে সায়নকে এভাবে দেখে অস্থির হয়ে যায়। আলো তাড়াতাড়ি এসে সায়ন এর মাথায় হাত দিয়ে দেখে অনেক জ্বর। সে তাড়াতাড়ি সায়নের জ্বর মাপে আর এমনি চেকাপ করে বলে,,,,, অনেকটা কেটে গেছে তো তাই জ্বর এসেছে, ঔষধ দিয়ে দিচ্ছি ঠিক হয়ে যাবে।

সায়ন কাঁপতে কাঁপতে বলে,,,,, আজকে আবার ইনজেকশন দিবেন না।

আলো মুশকি হেঁসে বলে,,, ওকে দিবো না। সবার উদ্দেশ্য করে বলে,,,আপনারা ঘরটা খালি করলে ভালো হতো।

সবাই চলে যায়, আলো টেবিলে খাবার দেখে রাগ দেখিয়ে বলে,, একি আপনি খাবারটা খাননি কেনো। আর নিশ্চয়ই কাল ঔষধ খাননি তাই জ্বর এসেছে। কাল মনে করিয়ে দেওয়ার পরেও এই অবস্থা। কি বলবো কি আপনাকে, নিজের কোনো খেয়াল না করেন অন্তত যারা আপনাকে ভালোবাসে তাদের কথা ভেবে তো নিজের খেয়াল রাখতে পারেন নাকি। এখন যদি আপনাকে হসপিটালে ভর্তি করিয়ে দিয় তাহলে কি খুব ভালো হবে।

সায়ন,,, সুসস,,, বলে আলোকে চুপ করিয়ে দিয়ে বলে,,, এতো কথা কিভাবে বলেন মিস্ আলো, আমি অসুস্থ এতে আপনার এতো রাগের কি হলো। সবার সাথেই এমন করেন নাকি।

আলো মুখ ফুলিয়ে বললো,,, বয়েই গেছে আমার, সবার সাথে রাগ দেখাতে। আচ্ছা রাগ করবো না, খবারটা খেয়ে ঔষধটা খেয়ে পরে ঘুমাবেন।

,,,,আপনি যান আমি খেয়ে নিবো।

,,,, কোনো কথা হবে না, আপনি না খাওয়া পর্যন্ত আমি এখান থেকে যানো না।

,,, আরে বুঝার চেষ্টা করেন, আপনি না গেলে প্রবলেম আছে।

,,,,, কি প্রবলেম হুমম,,আপনার প্রবলেম আপনার কাছে রাখুন। আপনি যদি না খান তাহলে আমি যাবো না।

,,,, অদ্ভুত জ্বালা তো।

,,,হুমম।

,,,,আচ্ছা,,, কোথায় দিন খাবার।

আলো সায়নকে ধরে বসায়, পড়ে এক চামচ সুপ এগিয়ে নিয়ে দেয় সায়নের মুখের সামনে, সায়ন একবার চামচ এর দিকে তাকিয়ে আরেক বার আলোর দিকে তাকায়, পরে সায়ন সুপের বাটি আর চামচ আলোর হাত থেকে নিয়ে বলে,,, আমি একায় খেতে পারবো।

সায়ন সুপ খাচ্ছে আর এদিক সেদিক বার বার তাকাচ্ছে, আর মন খারাপ করে আছে, আলো সায়নকে ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। একটু পর সায়ন বাটিটা এগিয়ে দিয়ে বলে,,,, হয়েছে আমি আর খেতে পারবো না, আর খেলে বমি হয়ে যাবে।

আলো বাটিটা নিয়ে বললো,, ঠিক আছে আর খাওয়া লাগবে না, এই ঔষধ গুলো এবার খেয়ে ফেলেন তো দেখি।

আলো পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়, ঔষধ খায়িয়ে দেয়। সায়ন ভালো হয়ে শুয়ে বলে,,,এবার আপনি যান না হলে আমার ঘুম আসবে না।

,,, আসবে আসবে, আমি থাকলেই আসবে।

,,,, বললাম তো আপনি থাকলে আসবে না। যান তো এখান থেকে।

,,,, আপনি এতো জান জান করবেন না তো, আমার লজ্জা করে না।

,,,, আরে,, কিসের সাথে কি মিলাচ্ছে। পিল্জ এখান থেকে জান না।

,,, ইশশ সুসসস,, আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি, আপনি ঘুমান।

,,, লাগবে না আমার।

আলো কথা না বারিয়ে সায়নের মাথায় হাত বুলাতে থাকে। আর গুন গুন করতে থাকে। সায়ন আর কিছু বলে না, আলো গান মনোযোগ দিয়ে শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ে।

আলো কিছু ক্ষন সায়নের দিকে তাকিয়ে থাকে, তারপর বাহিরে গিয়ে দেখে কেও আছে নাকি, ওরে সায়নের পুরো রুমে কিছু একটা খুঁজতে থাকে। আরো অনেক কিছু ছবি তুলে নিয়ে যায়।
,,,,,
স্নেহা প্রহরকে ফোন করে,, হ্যালো প্রহর আমি কখন আসবো।

,,,আজ আসতে হবে না, আজ আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে তাই আমি কোনো জায়গা যেতে পারবো না।

,,,,, আপনার চসা লাগবে না, আমিই এসে পড়ি।

৷,,,, আপনি আসলে আমার কাজে ডিস্টার্ব হবে, আপনার আসার কোনো দরকার নেয়।

,,,,, আমি একটা কথাও বলবো না প্রমিজ।

,,,,,, নো মিনস্ নো,, কাল দেখা হবে আমাদের কিন্তু আজকে পারবো না, আমাকে আমার লেখার দিকে ফোকাস করতে হবে।

,,,,, আপনার সাথে কথা না বলে, আমার দিন কাটবে কি করে।

,,,,, আগে যেভাবে কাটাতে।

,,,,,,, আগের দিনের মতো পরিস্থিতি তো এখন নেয়, আচ্ছা আপনার একটা ভালো বইয়ের নাম বলেন আজ এটা পরেই দিন কাটিয়ে দিবো। আর হ্যা লাভ স্টোরি হতে হবে কিন্তু।

,,,,, নিশি রাত পরো।

,,, না, সেড এন্ডিং এটা।

,,,,,,সেই তুমি।

,,,,, না এটাতো অনেক কষ্ট।

,,,,,,এক বিন্দু ভালোবাসা পড়ো তাহলে।

,,,, আরে দূরর সব পড়া বইয়ের নাম বলছেন কেনো।

,,,,, তুমি সব পড়ে থাকলে আমি কি করবো।

,,,,,সব পড়া হয়নি,, স্নেহময় ভালোবাসা পড়া হয়নি।

,,,, তাহলে এটা পড়ো, শুধু শুধু আমাকে বিরক্ত করার মানে কি।

,,,, এটাই, আপনার সাথে বেশি কথা বলতে পারলাম।

,,, আচ্ছা আপনার এই বইয়ে কিন্তু আমার নাম আছে, খেয়াল করেছেন আপনি।

,,,হুমম করলাম তো, এখন রাখি।

,,,,,একদিন আপনার মুখ থেকে আপনার গল্প শুনবো।

,,,, আমি গল্প লিখতে ভালোবাসি শুনাতে না।

,,,,,আমার এই মনের আশা একদিন ঠিক পূরণ হবে, এটা আমার মন বলে।

,,,,,,, আচ্ছা, রাখি এখন।

বলে রেখে দিয়ে বলে,,,,,সবার সব ইচ্ছে পূরণ হয়না, কিছু ইচ্ছে মনের মধ্যেই বাসা বেঁধে রয়ে যায় আজীবন।
,,,

অয়ন আর আমি শহরটা ঘুরে দেখলাম, বিকেল হয়ে গেছে। দুজনে বোর্ডে করে বেরিয়ে পড়ি ডলফিন দেখার জন্য। সূর্যের তেজ বেশি নেয়, তাও নীল সমুদ্র ঝকঝক করছে আলোতে। বোর্ড অনেক স্পিটে চলায় বাতাস সো জোরে এসে লাগছে মুখে। চুলের অবস্থা ভালো না। বাতাসে হাতেই আসছে না।

অয়ন পিছনে দাঁড়িয়ে আমার চুল জুটি করে দিয়ে একটা কেপ পড়িয়ে যায়। আমি অয়নের বাহু জরিয়ে ধরে সমুদ্রের ঢেউ দেখছি, বুক কাপানো ঢেউ, তার মধ্যে সাঁতার ও পারি না।

অয়ন মুশকি হেসে বলে,,,,, কি ভয় করছে।

,,,, এতো বেশি না, আপনি আছেন না।

,,,,, আচ্ছা নীর

,,,,হুমম

অয়ন শান্ত হয়ে বলে,,, না কিছু না।

আমি মুশকি হেঁসে বললাম,,,, একি, অয়ন মানে আগুন সমুদ্রে এসে শান্ত হয়ে গেছে।

অয়ন এই সমুদ্রের স্পর্শে না, এই নীরের স্পর্শে শান্ত হয়ে গেছে।

দুজনেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছি, কিছু ক্ষন পরে বোর্ড থেমে যায়, মানে আমরা এসে গেছি, আমি তো অনেক এক্সাইটেড। একটু পরেই শত শত ডলফিন আমাদের পাশ দিয়ে যেতে থাকে। ডলফিনের মতো আমিও লাফাতে থাকি।

আমার দেখা বেস্ট সিন এটা। আমি জোরে জোরে বলতে থাকি,,, অয়ন দেখো দেখো কতো গুলো, কতো সুন্দর।

ডলফিনের জন্য সমুদ্রের পানি ভালো করে দেখা যাচ্ছে না। আমার মনে যাচ্ছে, আমি এই ডলফিনদের সাথে চলে যায়,অয়ন কিছু ছবি আর ভিডিও করে নেয়, স্মৃতি হিসেবে।

বেশ অনেক ক্ষন দেখার পর, ডলফিনরা সব চলে যায়, সাথে সাথে আবার শুরু হয়ে যায় বোর্ড। আমরা তীরে চলে আসি।

কিছু ক্ষন আমরা তীরে হাঁটা হাঁটি করছিলাম, এর একটু পড়েই আমরা একটা ছোট রেস্টুরেন্টে যায়,সেখানে সবাই আনন্দ করছে, নাচ গান হচ্ছে। অয়ন আমাকে ভালো করে বলে দেয়, যাতে উল্টাপাল্টা কিছু না খায়।

অয়ন আমাদের জন্য খাবার আনতে যায়, এসে দেখে মারু কোথাও নেয়, অয়ন চারপাশে খুঁজে ও পায় না, অয়ন অস্থির হয়ে খুঁজতে থাকে।

খবর নিয়ে দেখে মারুকে কারা সমুদ্রের দিকে নিয়ে গেছে।

,,, নীর সাঁতার পারেনা তার মধ্যে রাত সমুদ্রের যদি কেও না না।

বলে অয়ন পাগলের মত দৌড়াতে থাকে সমুদ্রের দিকে।

মারুকে অনেক ধরে নিয়ে যায় সমুদ্রের দিকে, মারুর মুখ বেধে নিয়ে যায়। একটা একটা বোর্ডে করে মারুকে সমুদ্রের কিছুটা গভীরে নিয়ে যায়,মারু ছুটোছুটি করছে কিন্তু কোনো লাব হচ্ছে না, মনে মনে শুধু অয়নকে ডাকছে। সমুদ্রে নিয়ে গিয়ে মারুকে পানিতে ফেলে দেয়।
#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..14

মারুকে অনেক ধরে নিয়ে যায় সমুদ্রের দিকে, মারুর মুখ বেধে নিয়ে যায়। একটা একটা বোর্ডে করে মারুকে সমুদ্রের কিছুটা গভীরে নিয়ে যায়,মারু ছুটোছুটি করছে কিন্তু কোনো লাব হচ্ছে না, মনে মনে শুধু অয়নকে ডাকছে। সমুদ্রে নিয়ে গিয়ে মারুকে পানিতে ফেলে দেয়।

মারুর মুখ বাঁধা তাই কিছু বলতে পারছে না, হাত পা ছুটোছুটি করছে। এক পর্যায় শরীর নিস্তব্ধ হয়ে যেতে থাকে, দম বন্ধ হয়ে যেতে থাকে, হাত পা আর নড়ছে না। মারু ডুবে যেতে থাকে, ঠিক সে সময় একজন অন্য বোর্ড থেকে লাফ দিয়ে মারুকে ধরে।

লোকটি মারুকে নিয়ে উপরে উঠে কিন্তু বেশি কিছু দেখা যাচ্ছে না। ঠিক ঐ সময় অয়ন আরেকটা বোর্ড নিয়ে এসে আলো জ্বালিয়ে এদিক সেদিকে খুঁজতে থাকে, তখন অয়নের চোখে তাদের দুজনকে পরে।

অয়ন দুজনকে উঠায়। লোকটির অবস্থাও ভালো না। অয়ন মারুকে কোলে নিয়ে নীর নীর করছে। পাশে থাকা লোকটিও জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে আর কাশছে।

অয়ন লোকটির দিকে তাকিয়ে অভাক হয়ে বলে,,,,,, প্রহর তুই। তুই এখানে কিভাবে আসলি।

প্রহর,,,,,,, এই বিষয় নিয়ে পড়ে কথা হবে আগে মারুকে দেখ।

অয়ন মারুকে নিচে শুয়িয়ে ওর পালস চেক করে, মারুর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। অয়ন বার বার বুকে চাপ দিয়ে সিপিআর দিচ্ছে। একটু পর মারুর শ্বাস চালু হয় কিন্তু জ্ঞান এখনো ফিরে নি। বোর্ডটা তাড়াতাড়ি পাড়ে নিয়ে যেতে চাই কিন্তু পারে না।

ঐ গুন্ডারা ওদের বোর্ডে উঠে আসে। প্রহর ধরে মারা শুরু করে, অয়ন ও মারুকে এক পাশে রেখে মারা শুরু করে। দুজনে ইচ্ছে মতো মারতে থাকে। সাথে অয়ন এর বডিগার্ডরাও আছে, তারাও মারছে। প্রহর আর অয়ন তাদের সমুদ্রের ফেলে দিয়ে বোর্ড নিয়ে চলে যায়।

পাড়ে এসে বডিগার্ডদের বলে যায় যে তারা যদি বেঁচে পাড়ে ফিরে আসে তাহলে তাদের ধরে আনতে। বলে অয়ন পাশে থাকা হসপিটালে নিয়ে যায়। অয়ন তার পরিচয় দিয়ে ডক্টরদের সাথে চিকিৎসা করতে থাকে।

একটু পর অয়ন বেরিয়ে আসে, প্রহর দৌড়ে আসে। এসে বলে,,, মারু কেমন আছে।

অয়ন একটা সস্থির নিশ্বাস ফেলে বলে,,,,, নীর এখন ঠিক আছে। ও এখন ঘুমের মধ্যে আছে, ডোন্ট ওয়ারি কালকের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।

অয়ন প্রহরকে ভালোভাবে খেয়াল করে বলে,,,, তুই এখনো ভিজা অবস্থায় কেনো আছি, পরে তুই আবার অসুস্থ হয়ে যাবি। চল আমরা রিসোর্ট এ ফিরে যায়, তুি এখানে কি করিস সেটাও তো শুনতে হবে নাকি।

প্রহর নিশ্চুপ হয়ে শুধু হুম বলে। অয়ন মারুকে গাড়িতে বসায়, তারা রিসোর্ট এ ফিরে যায়। প্রহর গাড়ি থেকে বের হয়, সাথে অয়নও বের হয়ে মারুকে কোলে করে ভিতরে যেতে থাকে। প্রহর ও অয়নের পিছনে পিছনে যেতে থাকে। খুব সুন্দর করে সাজানো রিসোর্টটা, চারপাশে ছোট ছোট লাইট আর ফুল দিয়ে সাজানো। অয়ন তাদের বেড রুমে যায় গিয়ে মারুকে শুয়িয়ে দেয়।

প্রহর ও যায় ভিতরে। পুরো রুম ফুল দিয়ে সাজানো, বিছানায় ফ্লোরে লালা পোলাপের পাপড়ি বিছানো। নিচে ফ্লোরপ আবার লাল লাভ সেভ বেলুন রাখা।এগুলো দেখে প্রহর একবর অয়ন আর মারুর দিকে তাকায়,অয়ন অনেক যত্নে মারুর চুল গুলো সরিয়ে দিচ্ছে।

সে চোখ ফিরিয়ে বারান্দায় যায়,বারান্দায় নিচে লাল গোলাপ আর ছোট লাইট দিয়ে সাজানো, আই লাভ ইউ নীর লেখা।

প্রহরের মুখে না কষ্ট, না রাগ, না খুশি দেখা যাচ্ছে, একদম সাধারণ হয়েই দাঁড়িয়ে আছে। এমন কিছু না হলে হয়তো আজ মারু আর অয়নের জন্য এই রাতটা স্পেশাল হতো। অয়ন প্রহরকে ডাক দেয়। প্রহর ভিতরে যায়, গিয়ে বলে,, হুমম বল।

অয়ন ওর শার্ট প্যান্ট বের করে প্রহরকে দিয়ে বলে,,,, তুই অন্য রুমে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে নে, আমি নীরেরটা পাল্টে দিচ্ছি। প্রহর কিছু বলতে গিয়েও বললো না, সে চুপচাপ বেরিয়ে যায় রুম থেকে। অয়ন দরজা বন্ধ করে দেয়। প্রহর কিছু ক্ষন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে চলে যায়৷

অয়ন মারুর ড্রেস নিয়ে এসে, মারুর পাশে বসে বলে,,,, জানো আজ এই সব কিছু আমি তোমার জন্য করেছি, ভেবেছিলাম আজ আমার মনের কথাটা তোমাকে অন্য ভাবে বলবো, ঠিক কতো বছর ধরে তোমাকে ভালোবাসি সেটা বলবো।

কিন্তু এটা হয়তো উপর আল্লাহ ও চায় না। তাই তো ওনি আমাকে বার বার তোমাকে হাড়ানোর যন্ত্রণা দেয়। ওনাকেই বা কি করে দোষ দিবো, ওনিই তো আবার তোমাকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেয়।

অয়ন মারুর ড্রেস চেঞ্জ করে দেয়। মারুর কপালে একটা গভীর চুমু দেয়। দিয়ে বের হয়ে আসে। অন্য রুমে প্রহরকে খুঁজে কিন্তু পায় না। তাই বাহিরে খুঁজতে যায়, গিয়ে দেখে প্রহর বসে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। অয়ন ও প্রহরের সাথে গিয়ে বসে, প্রহরের কাঁধে হাত রাখে। প্রহর একটু চমকে গিয়ে অয়নের দিকে তাকায়।

অয়ন একটু হেঁসে বলে,,,কিরে চমকে গেলি নাকি।

প্রহর সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,, মনে তো হয়।

,,,, এতো গভীর ভাবে সমুদ্রের দিকে কি দেখছিস।

,,,,,,, বুঝার চেষ্টা করছি সমুদ্রটা এতো অশান্ত তাও এটাকে দেখে সবার মনে প্রশান্তি কেনো নেমে আসে। নাজানি এই অশান্ত সমুদ্রে কতো গভীর রহস্য লুকিয়ে আছে।

,,,,,,,, তুই আর তোর কথা। তোরা লেখকরা সোজা কথা বলতেই পারিস না তাই না।

প্রহর মুশকি হেঁসে বলে,,,,, আমরা বলা থেকে বেশি বুঝাতে বিশ্বাস করি। আর কিছু কথা না জানায় ভালো।

,,,আচ্ছা এখন এটা তো বল তুই এখানে কেনো।

,,,,,, একটা জরুরি মিটিং চলে এসেছিলো এখানে, তাই তাড়াহুড়ো করে আসতে হলো। কাজ শেষে তোদের কথা খুব মনে পড়ছিলো তাই ভাবলাম একবার দেখা করে যায়। তাই তোর লোকেশন বের করে চলে আসি, এসে দেখে কিছু লোক একটা মেয়েকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, ভালো করে দেখায় মারুর মতো লাগলো। আমিও তাদের পিছনে পিছনে বোর্ড নিয়ে যায়। বাকিটা তো জানায় আছে।

,,,,,হুমম,, কালকে তোর সাথে সাথে আমরাও চলে যাবো ভাবছি।

,,,,, কেনো তোরা তো সাত দিন থাকবি বলেছিলি।

,,,,,, হুমম, কিন্তু এখন আমার মন মানছে না, এখানে থাকতে। মনে হচ্ছে আমার অজান্তে কিছু তো হচ্ছে।

অয়ন কিছুটা নিস্তব্ধ হয়ে শান্ত গলায় বলে,,,, এখনো ভালোবাসিস নীরকে তাই না।

প্রহর মুশকি হেঁসে বলে,,,,, জানি না।

অয়ন প্রহরের কাঁধে হাত রেখে বলে,,,, তোর চোখ বলে দিচ্ছে, তোর বলা জানি নার মধ্যে ঠিক কতোটুকু ভালোবাসা লুকিয়ে আছে৷ আমি যতোটুকু তোকে চিনি, তোর কিছু লাগলে সেটা যে কোনো ভাবে নিজের করে নিস। তাহলে এবার কি হলো।

প্রহর মুশকি হেঁসে অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,,, অনেক বছর আগে যদি মারু তোকে না ভালোবেসে আমাকে ভালোবাসতো তাহলে তুই কি করতি, ছিনিয়ে নিতি।

অয়ন হালকা হেঁসে বলে,,,, তোর কি মনে হয়।

,,,জানি পারতি না, একবার আমার জন্য তুই তোর ভালোবাসা কুরবানী দিতে চাইছিলি।

,,,,,, তুই হতে দিলে কই।

,,,,,,কারন ঐ ভালোবাসাটা তোর থেকে বেশি হতে পারিনি কি করবো বল। সব কিছু ছাড়া থাকতে পারবো কিন্তু তোকে ছাড়া কিভাবে থাকবো বল।

অয়ন দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,,,,,ছিঃ প্রহর তুই আমাকে কোন নজরে দেখিস হুমম,, কি কথা বলছে এসব ছিইই

প্রহর ও হেঁসে দিয়ে বলে,,,,, শালা তুই মেয়ে হলি না কেনো, তাহলেই তো তোকে বিয়ে করে নিতাম।

অয়ন প্রহরের দিকে তাকিয়ে বলে,,,, জানিস কোরিয়ান দেশে ছেলে ছেলে বিয়ে করে।

প্রহর অয়নের দিকে শান্ত ভাবে তাকিয়ে বলে,,,,,এটা এই মূহুর্তে বলার মানেটা কি,,, বিয়ে করবি নাকি তুই আমাকে, না ভাই আমি গে না।

বলে দুজনে হাসতে থাকে, পিছনে তাকিয়ে দেখে একজন লোক খাবার নিয়ে, দাঁড়িয়ে তাদের দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে।

প্রহর আর অয়ন ঠিক হয়ে বসে বলে,,,,, কি হয়েছে।

,,,,, স্যার আপনাদের খাবার।

অয়ন,,,,,, হুমম এখানে রাখো।

লোকটি খাবারের ট্রেটা নিচে তাদের পাশে রেখে তাদের দিকে কেমন অদ্ভুত ভাবে তাকায় প্রহর প্রহর একটা চোখ টিপ দেয়, লেকটি তাড়াতাড়ি করে চলে যায়। লোকটি চলে যাওয়ার পর দুজনে লোকটির অবস্থা দেখে হাসতে থাকে।

অয়ন,,,, অনেক হয়েছে হাসি ঠাট্টা, নে এবার খেয়ে নে।

,,,,, হুমম তুই ও খা।

দুজনে হাসি ঠাট্টা করে খেতে থাকে। প্রহর হাসতে হাসতে বলে,,,, মনে আছে অয়ন আমরা যখন পরীক্ষা শেষ করে আমেরিকা থেকে বাংলা দেশে এসে মামার বাড়িতে ময়মনসিংহ বেড়াতে গিয়েছিলাম।

,, হুমম মনে থাকবে না আবার। সেখানে আমরা বিকেল বেলা রাজ বাড়িতে গুড়তে গিয়েছিলাম। আর সেখানে ভুতের পোশাখ পড়ে নীর সবাইকে ভয় দেখাচ্ছিলো।

,,, তুই কিন্তু ভয় পেয়েছিলি অয়ন।

,,,,, আমি ভয় পায়নি জাস্ট চমকে গেছিলাম।

অতীত,,,,,,,
সবাই মারুর ভয়ে পালাতে থাকে। প্রহর সাহস দেখিয়ে বলে,,, চল তো ভিতরে গিয়ে দেখি সবাই এতো কেনো ভয় পাচ্ছে।

অয়ন একটু নার্ভাস হয়ে বলে,,,, দেখছিস না কেমন আওয়াজ আসছে, আর বাংলোটাও কেমন ভূতুড়ে।

,,,,,, ডোন্ট ছে দেট,,যে তুই এসবে বিশ্বাস করিস।

,,,,,আরে কোরান শরীফে জ্বীনে কথা উল্লেখ করা আছে, সেটা বিশ্বাস না করে থাকি কিভাবে। তবে জ্বীন দেখার আমারো অনেক ইচ্ছে।

,,,,,তাহলে চল একটু দেখে আসি।

দুজনে আগে পিছে করে যেতে থাকে। মারু ওদের দেখে হঠাৎ করেই ওদের সামনে এসে ওওওও করতে থাকে।মারুর গা সাদা চাদর দিয়ে ডাকা, চুল গুলো সামনে থাকার কারনে চেহেরা দেখা যায় না। হঠাৎ করে আসায় অয়ন আর প্রহর দুজনেই ভয়ে সিপ্ত হয়ে যায়। দুজনে চিৎকার দেয়নি দেখে মারু দৌড় দেয়,মনে করে ওরা ভয় পায়নি।

মারুর দৌড় দেখে দুজনের সন্দেহ হয়, দুজনেও মারুর পিছনে দৌড় দেয়। অয়ন দৌড়ে মারুর সামনে যায়, প্রহর সাদা চাদর ধরে টান দেওয়ায়, চাদর খুলে প্রহরের হাতে চলে আসে আর মারু গিয়ে অয়নের বুকে পড়ে।

অয়ন শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে যায়, মারু চোখ তুলে অয়নের দিকে তাকায়। দুজনের চোখে চোখ পড়ে, কাজল কালো দুটি চোখের মায়ায় পড়ে যায়, অয়ন। মারু তাড়াতাড়ি করে সরে যায়, নিজের চুলে একটা ঝাকি দিয়ে প্রহরের হাত থেকে চাদরটা নিয়ে মারু দৌড় দেয়।

চাদর নেওয়ার সময় প্রহরের মনও নিয়ে চলে যায়। মারু দৌড়ে যেতে যেতে আবার পিছনের দিকে ফিরে তাকায়। দুজনেই চুপচাপ তাকিয়ে আছে, মারু চলে যায়।

অয়ন সামনের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,দোস্ত এটা জ্বীন ছিলো নাকি পরী নাকি মানুষ।

প্রহর ও সামনের দিকে তাকিয়ে বলে,,,, পরীর খোলস থাকে না কিন্তু এর তো ছিলো তার মানে এটা মানুষ।

,,,,,, আমারো তাই মনে, মানুষ কিন্তু পেত্নী।

,,,,,, তোর কথার মানে আমি বুঝছি না।

,,,,, আমিও না। আচ্ছা চল, এখান থেকে যায়। রাজবাড়ী আমার দেখা আমার হয়ে গেছে।

,,,,,, হুমম আমারো।

দুজনে গ্রামটা ঘুরে দেখতে থাকে, কিন্তু দুজনের মন দুজনের কাছে নেয়। দুজনে গ্রামের পথ দিয়ে হাঁটছে, তাদের পথ আটকে দাঁড়ায় মারু।

প্রহর খুশি হয়ে বলে,,,, আরে আপনি।

অয়ন একটু বেশিই এক্সসাইটেড হয়ে বলে,,,,,,, পেত্নীর কথা ভাবছিলাম আর পেত্নী এসে হাজির।

মারু রাগে বলে,,,,, কি আমি পেত্নী, ওই মিয়া কোন দিক থেকে আমাকে পেত্নী লাগে, নিজেদের দেখছেন কখনো, বিদেশি বিড়ালের মতো লাগে।

অয়ন,,,,,, কি আমাদের বিড়ালের মতো লাগে।

প্রহর অয়নের কাঁধে হাত দিয়ে বলে,,, আরে বিড়াল তো অনেক কিউট হয়, তার মানে আমরা কিউট।

,,,,ওহহ তাহলে ঠিক আছে।

মারু,,,, কচু ঠিক আছে,, ঐ আপনারা কোথা থেকে এসেছেন আর এখানে কি করেন।।

অয়ন,,,, সেটা আপনাকে বলবো কেনো।

,,, আমাকে বলবেন না তো আর কাকে বলবেন,, আমি জানি আপনারা এখানে আমার নামে বিচার দিতে এসেছেন তাই তো।

প্রহর,,,,, না না, আপনি ভুল

অয়ন প্রহরকে থামিয়ে দিয়ে বলে,,, ঠিক আমরা আপনার নামে বিচার দিতে এসেছি। আপনি যেটা করেছেন সেটা মেনে নেওয়া যায় না।

মারু,,, আপনাকে কে বলেছে যে এখানে আমার বাসা।

অয়ন একটা বাসা দেখিয়ে বলে,, ঐটাই তো তাই না।

মারু,,,হুমম,,দেখুন, আমরা ট্রুথ এন্ড ডিয়ার খেলছিলাম, আর ডিয়ারে সবাই আমাকে এটা করতে বলেছিলো, আর তাই করতে হয়েছে। আমার বাবাকে বলবেন না পিল্জ তাহলে প্রচুর বকবে আমাকে।

প্রহর,,,,,ডোন্ট ওয়ারি,,আমরা বলবো না।

অয়ন,,,, কিন্তু একটা শর্তে।

,,,, কি শর্ত।

,,,,,,,কালকে আমাদের এই গ্রামটা ঘুরিয়ে দেখাতে হবে।

,,,,,কিহহহ,,চিনি না জানি না, আপনাদের সাথে আমি কেনো যাবো আজব।

,,,ঠিক আছে তাহলে আমি তোমার বাবার কাছে বিচারটা দিয়ে আসি।

অয়ন যেতে নেয়, মারু তাড়াতাড়ি বলে,,, ঠিক, ঠিক আছে।

,,,, কিন্তু আমি তো আপনাদের চিনা না।

,,,,চিনে যাবে,, আমরা কাল এখানেই অপেক্ষা করবো।

বলে দুজনে চলে যায়, মারু মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
৷,,,,,,,,
বর্তমান,,,,
অয়ন আর প্রহর হাসতে থাকে।

অয়ন,,,,, তুই ও কি সেই দিনি প্রেমে পড়েছিলি নাকি।

প্রহর,,,,,, হুমম সেম টাইম,, পরে কি হয়েছিলো মনে আছে।

অয়ন,,,,, হুমম,,থাকবে না কেনো,ঐ দিনটা আমি কোনো দিন ভুলবো না।

চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here