আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৫+১৬

#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..15

প্রহর,,,,,, হুমম সেম টাইম,, পরে কি হয়েছিলো মনে আছে।

অয়ন,,,,, হুমম,,থাকবে না কেনো,ঐ দিনটা আমি কোনো দিন ভুলবো না।

প্রহর মৃদু হেঁসে বলে,,,, আমিও ভুলবো না। আচ্ছা যা, গিয়ে ঘুমা,রাত অনেক হয়েছে।

,,,, হুমম তুই ও ঘুমা,, কতোটা যার্নি করে এসেছিস।

,,,,, হুমমম।

প্রহর আর অয়ন উঠে দুজনকে গুড নাইট জানিয়ে চলে যায়। দুজনে গিয়ে শুয়ে পড়ে, চোখে ঘুম না আসলেও পুরোনো স্মৃতি মনে করে মুখে ঠিকি এক ঝলক হাসি আছে।

সকালে আমি চোখ খুলতেই সব মনে পড়ে যায় আর আমি চিৎকার দিয়ে উঠে বসি, আমি এখনো ঐ কল্পনায় আছি, উঠে চোখ বন্ধ করে চিৎকার করতে থাকি।

অয়ন তাড়াতাড়ি উঠে, নীর নীর বলে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। আমি চিৎকার করেই যাচ্ছি। অয়ন দুহাত দিয়ে ঝাঁকি দিয়ে জোরে বলে,,, নীররর চোখ খুলে দেখো আমি তোমার সাথেই আছি।

জোরে জোরে ঝাঁকি দেওয়ায় আমি ধরফরিয়ে চোখ খুলি, সামনে অয়নকে বসা দেখে, আমি অয়ন বলে কান্না করে দিয়ে তাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরি। অয়ন ও আমাকে জরিয়ে ধরে শান্ত করার চেষ্টা করে। আমি হিচকি তুলে তুলে কান্না করতে থাকি। অয়ন আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে বলতে থাকে,,,,, নীর চুপ করো, তোমার কিছু হবে না, আমি আছি তো, ডোন্ট ওয়ায়ি সব ঠিক আছে।

আমি একটু ঠান্ডা হতেই প্রহর তাড়াহুড়ো করে এসে জিজ্ঞেস করতে থাকে,,,,, কি হয়েছে, কি হয়ছে। মারু এমন কান্না করছে কেনো।

আমি অয়নকে ছেড়ে নাক টানতে টানতে বললাম,,,,, প্রহর আপনি এখানে, আমি কি দেশে ফিরে এসেছি।

প্রহর একটু এগিয়ে এসে বলে,,,,, জ্বি না মেম, আমিই এখানে এসেছি, এখন আপনি কেনো কান্না করছেন সেটা বলেন।

আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম,,,,,, আমাকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে, আমি তো সাঁতার ও পারি না, বাঁচবো কিভাবে৷

অয়ন আমার দুই বাহুতে ধরে বলে,,,, তোমার কিছু হবে না, তুমি ঠিক আছো, আশেপাশে তাকিয়ে দেখো, এটা সমুদ্র না এটা রিসোর্ট এর রুম।

আমি ভালো করে আশেপাশে তাকিয়ে দেখি। দেখে একটু সস্থির নিশ্বাস নেয়। অয়ন আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে,, আর কিছু হবে না তোমার,আমরা আছি তোহ,,,

আমি প্রহরের দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,,আপনি হঠাৎ করে কিভাবে আসলেন, নাকি আমি অনেক দিন ধরে অজ্ঞান হয়ে ছিলাম, আল্লাহ আমার কিছু মনে নেয়।

প্রহর,,,,,, কুল কুল,,, অয়ন মারুকে সব বল না হলে এই মেয়ে ভাবতে ভাবতেই পাগল হয়ে যাবে।

অয়ন আমাকে সব বলে,, আমি প্রহরের দিকে তাকিয়ে তাকে ধন্যবাদ জানায়৷ প্রহর আমার দিকে উষ্ণ ভাবে তাকিয়ে বলে,,,,, ধন্যবাদ জানানোর কি আছে, আমি কি পর নাকি যে আমাকে তোমার ধন্যবাদ জানানো লাগবে৷ নাকি আমাকে পর ভাবো কোনটা৷

আমি তাড়াহুড়ো করেই বললাম,,,, আরে না, পর কেনো ভাববো। আপনার কারনেই তো আজ আমি এখানে সুস্থ, আল্লাহ যদি আপনাকে না পাঠাতো তাহলে।

প্রহর মুশকি হেঁসে বলে,,,,, আমি না আসলেও অয়ন তোমাকে ঠিক বাঁচিয়ে নিতো। আচ্ছা অনেক হয়েছে কথা এবার ফ্রেশ হয়ে সবাই খেতে চলে এসো।

অয়ন,,,, হুমম,,তুই ও ফ্রেশ হয়ে আয়।

প্রহর চলে যাওয়ার পরেই অয়ন আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে। সাথে সাথে আমিও অয়নের বুকে শক্ত করে জরিয়ে থাকি। অয়ন কষ্টে ভরা কন্ঠে বলে,,,, ভালোবাসি তোমায় অনেক বেশি, জানি না কে আমার থেকে বার বার তোমাকে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে, কি তার কারন হতে পারে। তাকে আমি ছাড়বো না। তার সাহস কি করে হয় এই অয়নের বুক থেকে তার নীরকে কেঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

মারু,,,,আসলেও কার এতো সাহস বুঝছি না,, আমি তার কিই বা ক্ষতি করেছি।

অয়ন মুশকি হেঁসে বলে,,, তার মানে মেনে নিয়েছো যে তুমি আমার নীর।

আমি অয়নের বুক থেকে সরে গিয়ে বললাম,,, জ্বী না,, কে বলেছে আমি মেনে নিয়েছি।

,,, তোমার কথায় বুঝা গেলো।

আমি খাটের উপরেই উঠে দাঁড়িয়ে বলি, জ্বি না,, বলে চলে যেতে নেয় আর পরে চাদরে পা বেঝে অয়নের কোলেই পড়ে যায়, অয়ন ও ধরে ফেলে। আমার দিকে মুখ এগিয়ে বলে,,আমার কাছে আসার এতো শখ তাহলে বললেই পারো, এভাবে পরে যাওয়ার নাটক করার কি দরকার ছিলে।

,,,, আমি নাটক করিনি বুঝলেন, সত্যি পরে গেছি, ছাড়েন আমাকে।

,,,,,, তাহলে এতো জায়গা থাকতে আমার কাছেই কেনো এসে পড়লা। সাইডেও তো পড়তে পারতা।

,,,,, আচ্ছা আগের বার যখন পড়তে নিবো তখন জায়গা দেখে পড়বো, ঠিক আছে ছাড়েন আমাকে এবার।

,,,,,হুমমম,,বাট ইচ্ছে তো করছে না।

,,,,, তো কি ইচ্ছে করছে আপনার।

অয়ন হঠাৎ করেই তার মুখটা আমার কাছে এনে বলে,,, কি ইচ্ছে করছে বলবো নাকি করে দেখাবো।

আমিও তার দিকে তাকিয়ে আস্তে করে বলি,,,, মানে।

,,,,মানে হলো,,, বলে অয়ন আমার ঠোঁট জোরার দিকেই এগুচ্ছে।

ওনার গরম নিশ্বাস আমার মুখমন্ডলে পড়ায় আমি মনহোশ হয়ে আমার চোখ বন্ধ করে দিয়। মনে মনে ওনার ঠোঁটে স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা। কিন্তু অনেক ক্ষন ধরে কোনো স্পর্শ না পেয়ে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি অয়ন বেকা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে।

মনে মনে একটু রাগ হলো, অয়নকে ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ায়৷ অয়ন দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,,,,, কি চুমু দেয়নি বলে আমার বউটা রাগ করেছে নাকি।

আমি একটু মুখ বেকিয়ে বললাম,,,,,, রাগ কেনো করবো অদ্ভুত, আপনি দিলে আমি রাগ করতাম।

,,,, আচ্ছা সিউর।

,,আপনার সিউর আপনার কাছে রাখেন। ,, বলে ওয়াশ রুমে যাচ্ছি। অয়ন উঠে দাঁড়িয়ে বলে,,,, আরে একা একা যেওনা আবার মাথা ঘুরে পড়ে গেলে তখন, চলো এক সাথে গোসল করতে যায়,এতে পানি আর টাইম দুটোই বাচবে।

আমি চুপচাপ জোরে দরজা বন্ধ করে দিয়। অয়ন দাঁড়িয়ে হাসতে থাকে। ওয়াশ রুমে গিয়ে নিজের চেহারা দেখে কান্না করতে ইচ্ছে করছে, কেমন মরা মানুষের মতো দেখা যায়। মানুষ বিয়ের পরে সুন্দর হয়ে যায় আর আমি কালো হচ্ছি।

গোসল করে বের হয়ে দেখে অয়ন নেয়, মনে হয় অন্য ওয়াশ রুমে গেছে, আমি চুল মুছতে মুছতে বারান্দায় যায়, সেখানে গোলাপ ফুল দিয়ে, আই লাভ ইউ নীর লেখা চোখে পড়তেই ঠোঁটে হাসি চলে আসে। নিশ্চয়ই কালকে সারপ্রাইজ দিবে ভেবেছিলো। সেখানে একটা নীল চিরকুটে লিখা,,পিল্জ নীর তুমি আমার আর আমার হয়েই থেকো। অনেক বেশি থেকেও বেশি ভালোবাসি।

চিরকুটটা নিয়ে আমি আমার বেগে রেখে দিয়। আর বিছানায় শুয়ে নিজের অজান্তেই হাসছি,ভালোবাসায় জরিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। বিছানায় গড়াগড়ি করছি, এমন সময় অয়ন এসে বলে

,এমন ভাবে মোচরা মোচরি করবেন না, মনের ভিতরে তুফান উঠে।

আমি তাড়াতাড়ি উঠে বসি। কেনো জানি না, অয়নকে দেখে আমার লজ্জা লাগছে, ঠোঁট থেকে হাসি যাচ্ছেই না। অয়ন আমার পাশে বসে বলে,,,,, কি হয়েছে, ঠিক আছো তো, এমন ভাবে কেনো দেখছো।

আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম,, কিছু না।

অয়ন তার চেহেরা আমার আরেকটু কাছে এনে বললো,, কিছু তো হয়েছে, তাড়াতাড়ি বলো কি।

আমি অয়নের চোখের দিকে তাকিয়ে আছি, নিজেকে আর সামলে রাখতে না পেরে, অয়নের কর্লার ধরে সোজা ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে দেয়। অয়ন বরাবরই চমকে যায়। অয়ন কিছু বুঝে উঠার আগেই ওনাকে ছেড়ে দৌড় দিয়, সোজা রুমের বাহিরে।

অয়ন তাশকি খেয়ে বসে আছে। আমি সোজা প্রহরের সাথে ধাক্কা খেতে খেতে বেঁচে যায়। প্রহর হঠাৎ করেই দাঁড়িয়ে বলে,,, আরে আস্তে আস্তে, এখনি পড়ে যেতে,, এভাবে দৌড় কেনো দিচ্ছো। পিছনে ভুত পড়েছে নাকি।

পিছনে অয়ন ও দৌড়ে আসে, সে প্রহরকে দেখে ব্রেক লাগায়৷ প্রহর একবার আমার দিকে তাকায় একবার অয়নের দিকে। প্রহর একটু অসস্থি বোধ করে জিজ্ঞেস করে,,,,, কি হয়েছে। তোরা এভাবে লাফালাফি করছিস কেনো।

অয়ন,,,,, আরে ভাই আজ তো মেজিক হয়ে গেছে, দাড়া এক মিনিট দেখে নিয় সূর্য আজ কোন দিক থেকে উঠেছে৷

প্রহর,,,,, কেনো আজ এমন কি হয়েছে।

অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হাসি দিয়ে প্রহরের দিকে তাকায়, অয়ন কিছু বলার আগেই আমি তাড়াতাড়ি বলি,,, আরে আমার বাহিরে যেতে ইচ্ছে করছিলো, অয়ন যেতে দিচ্ছিলো না, তাই দৌড়ে বাহিরে যেতে চেয়েছিলাম।

প্রহর,,,,,,, ওহহ আচ্ছা,, তাহলে এক কাজ করো নাস্তা করে নাও, তিনজনে এক সাথে বের হবো।

অয়ন,,,,, বাট, আজকে তো আমরা চলে যাবো।

মারু,,,,,,, চলে যাবো মানে, এতো তাড়াতাড়ি কেনো।

অয়ন,,,,, এখানে থাকা বেশি ঠিক হবে না তোমার জন্য।

প্রহর,,,,,,অয়ন ঠিক কথা বলেছে,এখানে থাকা বিপদ জনক তোমার জন্য।

আমি মন খারাপ করে বলি,,,, ওও

অয়ন হেঁসে আমার কাঁধে হাত রেখে বলে,,,, এই জামেলাটা শেষ হোক, আমরা আবার আসবো এখানে, দরকার হলে সবাইকে নিয়ে আসবো, ঠিক আছে।

,,,প্রমিজ।

প্রহর,,,,, আরে অয়ন না নিয়ে আসলেও আমি নিয়ে আসবো, এবার খুশি।

আমি খুশি হয়ে বললাম,,,, হুমম,,তাহলে আমাদের ফ্লাইট কখন।

,,,, ১ টা ২০ এ

,,,,,এ্যা এখনো কিছু গোছানো হয়নি।

অয়ন,,,,আরে হয়ে যাবে,, এখন মাত্র ৭ টা বাঝে, আমি সাহায্য করছি তোমাকে, গোছিয়ে আমরা কিছু ক্ষন ঘুরে ইয়ার পোর্টে চলে যাবো, ওকে।

,,,হুমম,,ঠিক আছে,,আমি তাড়াতাড়ি যায় গোছাতে হবে, তুমিও চলো।

,,,ঠিক আছে।

প্রহর কফি খেতে থাকে, আর আমরা গল্প করতে করতে সব গুছিয়ে ফেলি, পরে নাস্তা করে, বেরিয়ে যায়। দুজনেই থ্রি কোর্টার প্যান্ট আর শার্ট পড়ে, বডি দেখানের জন্য দুটে বোতাম খুলাও রেখেছে আবার। আমি তো লোং টপ পরেছি।

তিনজনে আমরা অনেক মজা করছি, সমুদ্রের কিনারে দৌড়াচ্ছি, সমুদ্রের ভিতরের যাওয়ার সাহস কেনো জানি পাচ্ছি না, মনে ভিতরে একটা ভয় ডুকে গেছে হয়তো।

অয়ন আমার এই ভয় দেখে আমাকে কোলে উঠিয়ে নেয়, হাটু পর্যন্ত পানিতে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিবো ছেড়ে দিবো করছে। ঢেউ আসছে বড়ো বড়। আমিও না না করছি। পিছন থেকে প্রহর এসে দুজনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পানি খাওয়ার আগেই উঠে পড়ি।

অয়ন,,,,,, শালা,, দাঁড়া তুই।

অয়ন প্রহরকে দৌড়াচ্ছে, দুজন দুজনকে আকড়ে ধরে আছে, কেও কাওকে ফেলতে পারছে না, তখন আমি গিয়ে ধাক্কা দিয় কিন্তু পরে না, দুজন আমার দিকে যেভাবে তাকায়, তখন আমি তাদের আরো জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দৌড় দিয়৷

দুজনে ধরতে এলে শুধু একটু বালু ঢিলা দিছিলাম, আর সেটা দুজনের প্রায় মুখে লাগে। এটুকুর জন্য দুজন মিলে আমাকে অর্ধেক বালিতে পুতে রেখেছে। কতো কষ্ট করে উঠে আসি।

এভাবেই মজা করে আমরা সাওয়ার নিয়ে এয়ারপোর্টে আসি, বলতে গেলে দৌড়ে আসি, লেইট হয়ে গেছিলো।
আমরা এখন ফ্লাইটে। আর আমি অয়নকে ধরে ঘুম,,ফ্লাইটে উঠলেই আমার ঘুম ধরে।
,,,,,

আলো সায়নকে চেকাপ করতে আসে, চেকাপ করে বলে,,,, হুমম, আপনি আগের থেকে ভালো আছেন, তবে আপনাকে কিছু টেস্ট করাতে হবে।

,,,, কিন্তু কেনো,,আমি তো ঠিকি আছি, তাছাড়া আজ অয়ন ভাইয়া চলে আসছে, ভাইয়া দেখে নিবে।

এই কথা শুনে আলো চিন্তিত হয়ে ভাবে,, (তাহলে এই টেস্ট গুলো তো করানো যাবে না, আমাকে অন্য কিছু ভাবতে হবে) আচ্ছা সায়ন আপনি আমার সাথে ঘুরতে যাবেন।

,,,,, কোন খুশিতে।

,,,,,, আরে এমনি,, আমরা ডেটিং এ যাবো না, শুধু একটু ঘুরতে যাবো, আজ তো পারবেন না কাল যাবো ওকে।

,,,, নো,, দেখেন আমার গার্লফ্রেন্ড আছে ওকে।

এই কথা শুনে আলো কিছুটা মন খারাপ করে,কিন্তু মুখে হাসি নিয়ে বলে,,,, তোহহ কি হয়ছে, আমি কি আপনার সাথে প্রেম করতে যাবো নাকি।

,,,তোমার কথা শুনে তো এমনি লাগে।

,,,, আরে নাহহ,,আমার বন্ধু বানাতে অনেক ভালো লাগে, সো আমরা ফ্রেন্ড তো হতেই পারি। নাকি তোমার গার্লফ্রেন্ড আবার না করবে। এমন নাকি তোমার গার্লফ্রেন্ড।

,,,, আরে না আমার গার্লফ্রেন্ড অনেক ভালো। ওর মতো ভালো কেও হতেই পারে না।

,,,,,ওর মতো ভালো আরেকজন আছে তো।

,,,,,কে।

,,,,,আমি।

বলে দুজনে হেঁসে দেয়। আলো সায়নের বেন্ডেজ করে দিতে দিতে বলে,,, আচ্ছা তোমরা ঠিক কতো ক্ষন কথা বলো।

,,,,, অনেক ক্ষন,, যখনি সময় পায়।

,,,,এতো কি কথা বলো।

সায়ন ব্রু কুঁচকিয়ে আলোর দিকে তাকায়। আলো হেসে বলে,,, আমি কোনো দিন প্রেম করি নাই তো, তাই জানি না, তাই জানতে ইচ্ছে করছে, বলো না।

,,, কি আর কথা হবে, আমি সারা দিন কি কি করছি এই গুলাই, কিন্তু এখন জানি আমার গার্লফ্রেন্ড কেমন হয়ে যাচ্ছে।

,,,,, কেনো।

,,,,বেশি কথায় বলে না, শুধু আমিই বলি, দিয়াও বলে কিন্তু আগের মতো এতো বেশি না।

,,,এমনটা কতো দিন ধরে মনে হচ্ছে।

,,,,কিছু দিন ধরে।

আলে হেঁসে দিয়ে বলে,,,,প্রতি দিন এতো কথা বললে কথা তো শেষ হয়েই যাবে, এক কাজ করবে অনেক ক্ষন পর পর কথা বলবে তাহলেই অনেক কথা বের হবে।

,,,,,হুমম,,বাট কথা না বলে থাকতে পারি না।

,,,, ট্রাই করলেই পারবে।

,,, হুমম চেষ্টা করবো।

দুজনে প্রায় অনেক ক্ষন কথা বলে। তারপর যাওয়ার সময় আলো হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে,,,, তার মানে আমরা ফ্রেন্ড আজ থেকে।

সায়ন কিছু একটা ভেবে, হাত মিলিয়ে বলে,,, ঠিক আছে।

আলো হেঁসে দিয়ে বলে,,,, তাহলে আমরা কালকে ঘুরতে যাবো, ওকে।

সায়ন হেঁসে বলে,,,, ডান।

আলো চলে যায়,সায়ন শুয়ে রেস্ট করতে থাকে। অয়ন মারু প্রহর রাত ৮ টাই এসে নামে। অয়ন মারুকে ঘুম থেকে জাগায়।

তিনজনে গাড়িতে আসতে থাকে, অয়ন বলে,,,, এতো কে ঘুমায়।

আমি হামি নিতে নিতে বলি,,, আমি ঘুমায়।

প্রহর হাসতে থাকে। এতে হাসার কি হলো আমি সেটাই বুঝতে পারছি না।

তিনজনে বাড়িতে ফিরতেই সায়ন দৌড়ে এসে দুজনকে জরিয়ে ধরে।

প্রহর,,,,, এখন ঠিক আছিস তো।

অয়ন,,,, কেনো ওর কি হয়েছে।

সায়ন,,,, তেমন কিছু না, একটু জ্বর এসেছিলো।

,,,জ্বর মানে এখন কেমন আছিস।

,,,কুল ভাই, এখন ঠিক আছি, ভাবী কেমন আছো, প্রহর ভাইয়া সব কিছু বলেছে আমাকে। ঠিক আছো তো।

মারু,,,,, আমি একদম ঠিক আছি।।

সায়ন,,,ঐ গুন্ডাদের ও পুলিশে দিয়ে দিয়েছো নাকি।

অয়ন,,,, না মেরে ফেলেছি।

সায়ন লাফ দিয়ে হাই ফাইফ দিয়ে বলে,,, একদম ঠিক করেছো।

আমি আর প্রহর অভাক হয়ে বলি,,,,,মেরে ফেলেছো মানে কি।

অয়ন,,, ওরা নাকি আসল কিলারের নাম জানে না, চর তারা নীরকে মেরে ফেলতে চেষ্টা করেছে, কিভাবে ছারি।

প্রহর,,,, তাই বলে মেরে ফেলবি।

অয়ন,,,ওদের বেঁচে থাকার অধিকার নেয়,ওরা এমন অনেক মার্ডার করেছে, বেঁচে থাকলে আরো করতো, তাই মনে হয়না আমি কোনো পাপ করেছি।

সায়ন,,,, ঠিক করেছো ভাইয়া,,, আমার বউকে কেও মারতে এলে তো আমি ওদের নিজ হাতে মারতাম,,ঠিক করেছো।

অয়ন,,,, হুমম,,তুই রেস্ট কর, আমরা ফ্রেশ হয়ে আসি।
#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..16

সায়ন,,,, ঠিক করেছো ভাইয়া,,, আমার বউকে কেও মারতে এলে তো আমি ওদের নিজ হাতে মারতাম,,ঠিক করেছো।

অয়ন,,,, হুমম,,তুই রেস্ট কর, আমরা ফ্রেশ হয়ে আসি।

সবাই ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে। খাবার খেতে বসে। সায়ন অয়নের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,, তো কেমন মজা করলা সেখানে।

অয়ন খেতে খেতে বলে,,,,,, হুমম প্রথম প্রথম তো ভালো লাগছিলো পরে তো যা হলো তার জন্য মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে।

সায়ন,,,, আচ্ছা ভাবী তোমার কি কারো সাথে কোনো শত্রুতা আছে।

আমি গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে বললাম,,,, এমন তো কিছু মনে পড়ছে না।

প্রহর,,,,,,, ভেবে দেখো, হয়তো কোনো আপন জন।

আমি প্লেটে চামচ ঘুরাতে ঘুরাতে বললাম,,,,,, এমন কিছু মনে পড়ছে না, হতে পারে আমার অতীতের কোনো শত্রু।

অয়ন আমার দিকে কপাল কুঁচকিয়ে বললো,,,, অতীতের মানে, আর সেমন কিছু হলে তো তোমার মনে থাকার কথা।

আমি একটা আফসোসের নিশ্বাস ছেড়ে বললাম,,,,, আমার অতীত খুবি অগোছালো আমার কাছে।

প্রহর,,,,, মানে কি বলতে চাও।

,,আমি শুধু জানি আমার একটা এক্সিডেন্টে কিছুদিনের বা অনেক দিনের স্মৃতি মুছে গেছে আমার জীবন থেকে। হয়তো মুছে যাওয়া দিন গুলিতে এমন কেও ছিলো।

অয়ন,,,, তুমি এটা জানতে যে, তোমার কিছু স্মৃতি চলে গেছে।

,,,,,অনেক অপরিচিত মানুষ আমাকে এসে বলতো, আমি নাকি তার এটা লাগি, সেটা লাগি, একদিন অতিষ্ট
হয়ে আমি বাবাকে জিজ্ঞেস করায় ওনি আমাকে বলেন। অয়ন যখন আমাকে জোর করে বিয়ে করে, তখন ভেবেছিলাম ও আমার অতীতের কোনো শত্রু তাই চুপ করে ছিলাম।

এটা শুনে সায়ন আর প্রহর ফিস করে একটু হেঁসে দেয়।

অয়ন চোখ ছোট করে মুখ বেকিয়ে খাবার খেতে খেতে বলে,,,,, অতীতের শত্রু,, আর কিছু ভাবতে পারলে না,,, চুপ করে তো একদমি ছিলে না।

সায়ন আমার দিকে একদম সিরিয়াস লুক দিয়ে বলে,,, আচ্ছা তুমি অতীতে কাওকে ভালোবাসতে না তো আবার, হয়তো তোমার কোনো প্রেমিক ছিলো, যে তোমাকে ভালোবাসতো আর তুমি তাকে।

আমি গভীর চিন্তার পরে বলি,,, না,, এমন হলে তো অনেক আগেই সে আমার সাথে দেখা করার চেষ্টা করতো, আমাকে এসে বলতো।

সায়ন,,,,,, হয়তো কোনো কারনে বলতে পারেনি।

আমার মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে, মনে করার চেষ্টা করছি কিন্তু সবি যে গুলাটে, তবে আমারো এমন হয় যে, কাওকে তো আমি ভালোবাসতাম হয়তো।

আমাকে এমন চিন্তিত দেখে অয়ন সায়নকে ইশারা দিয়ে না করে কিছু বলতে। প্রহর প্লেটে শব্দ করে আমার আর্কষণ পাওয়ার জন্য,আমিও তার দিকে তাকায়,প্রহর আমাকে বলে,,, এসব নিয়ে এখন চিন্তা করে কোনো লাভ নেয়, বুঝলেন মেম। এসব কিছু হলে তো এতো দিনে ঠিক যেনে যেতে।

আমি চিন্তিত হয়ে বললাম,,,,,,, অফফ এসব ভাবতে গেলে আমার মাথা ব্যাথা করে।

অয়ন অস্থির হয়ে বললো,,,, এসব ভাবার তোমার কোনো দরকার নেয় নীর, এ সব ফালতু কথা সায়ন মজা করে বলেছে।

সায়ন,,,,আরে হ্যাঁ আমরা তো জাস্ট মজা করছিলাম। সরি ফর দ্যাট।

,,,, ইট’স ওকে,, সরি বলার দরকার নেয়।

অয়ন আমার কাঁধে হাত রেখে বলে,,,, অতীতের শত্রু হোক বা কাছের তাকে খুঁজে বের করে মেরে ফেলবো, তোমার কিছু হতে দিবো না।

আমি হালকা হেঁসে বললাম,,,,,, আমি জানি।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই রুমে গেলাম, আমার কিছু ভালো লাগছে না, মাথায় শুধু ঐসব কথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি, কিন্তু আমার চোখ আকাশ দেখছে না, আমার চোখ অতীত দেখার চেষ্টা করছে।

হঠাৎই কারো স্পর্শে বাস্তবে ফিরে এলাম। অয়ন আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরেছে। জরিয়ে ধরে আমার ঘাড়ে একটা কিস করলো, আমি চমকে গিয়ে বললাম,,,, কি করছেনটা কি।

অয়ন নেশা ভরা কন্ঠে বললো,,, তোমাকে ভালোবাসার চেষ্টা করছি।

আমি মুখটা বেকিয়ে বললাম,,,,, এতো ক্ষন ফ্লাইটে থেকে আপনি টায়াট হয়ে গেছেন না।

অয়ন আমার ঘাড়ে তার নাক ঘষতে ঘষতে বললো,,,, হুমম অনেক টায়াট হয়ে গেছি। এখন তুমি ভালোবাসা দিলে, আমার ভালো লাগবে।

,,,,আরে আপনি রেস্ট করলে ঠিক হয়ে যাবেন।

,,,,, না, তোমাকে ভালোবাসলে ঠিক হয়ে যাবো।

আমি অয়নকে ছাড়িয়ে কোমরে দু হাত রেখে বললাম,,, যান চুপচাপ ঘুমাতে জান।

অয়ন আমার দিকে এগিয়ে এসে বলে,,,, আমি অনেক তৃষ্ণার্ত নীর, আই ওয়ান্ট ইউ।

বলে আমাকে কোলে করে বিছানায় শুয়িয়ে দেয়। ওনি আমাকে কিস করতে নেয়, আমি আমার মুখে হাত রেখে বলি,,, আমাকে স্পর্শ করবেন না, বলে দিলাম।

ওনার চেহেরাটা আমার কানের কাছে এনে নেশা ভরা কন্ঠে বলে,,, সত্যি করে বলবে, আমার স্পর্শ তোমার ভালো লাগে না, কাছে পেতে ইচ্ছে করে না তোমার, হুম

এটা বলে আমার দিকে যেভাবে নেশায় তাকিয়ে আছে, তাতেই আমি দিশেহারা, আর বলবো কি। অয়ন মুশকি হেঁসে বলে,,, আমি জবাব পেয়ে গেছি।

এটা বলে মুখ থেকে আমার হাত সরিয়ে, নিজের দু ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় আমার ঠোঁটে।
,,,,,,

প্রহর তার মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে স্নেহার অনেক গুলো মিসকল। প্রহর শুধু একটা ছোট মেসেজ লিখে পাঠিয়ে দেয় যে, কাল দেখা হবে। এটা লেখার পর নিজের মোবাইল অফফ করে শুয়ে পড়ে।

বেলকোনির দরজা খুলা তাই, সেখান দিয়ে জোরে বাতাস আসায় মারুর ছবি থেকে পর্দাটা পড়ে যায়,যেটা প্রহর এঁকেছিলো। প্রহর মারুর ছবির দিকে তাকিয়ে অতীতে ফিরে যায়।

অতীত,,,,,,

মারু তাদের কাল ঘুরাতে নিয়ে যাবে এটা বলে, দুজনে তাদের বাসায় ফিরে যায়। যেতেই তাদের মামা রিফান খান বলে,,,, তোরা কোথায় গেছিলি, এখানের কিছু চিনিস, যদি হারিয়ে যেতি তখন।

অয়ন,,,,আরে মামা,তোমাকে এখানে কে না চিনে চেয়ারম্যান বলে কথা,তোমার নাম বললেই বাসায় এনে পৌঁছে দিতো। তাছাড়া মোবাইল ফোন তো আছেই, শুধু শুধু চিন্তা করে লাভ নেয়। প্রহরের কাঁধে হাত রেখে বলে,,, চল প্রহর ছাদে যায়।

প্রহর তার কাঁধ থেকে অয়নের হাতটা সরিয়ে বলে,,,এই গরমে আর প্রখর রোদে তুই যা ছাদে, আমি তো সাওয়ার নিতে গেলাম। ছাদে যাওয়ার মজা তো যখন রোদ থাকবে না, মিষ্টি বাতাস থাকবে, তখনি ভালো লাগে।

,,,,কথাটা অবশ্য ঠিক, সাওয়ার তো আমিও নিবো ভাবছি।

বলে প্রহরের দিকে তাকায়, প্রহর অয়নের তাকানো দেখে দেয় দৌড়, পিছনে পিছনে অয়নও দৌড় দেয়।কারন দুজনে একি রুমে থাকে সো ওয়াশ রুম ও একটা। প্রহার তাড়াতাড়ি দৌড়ে ওয়াশ রুমে ডুকে অয়নকে ধাক্কা দিয়ে দরজা বন্ধ করে ফেলে।

অয়ন বাহিরে দাঁড়িয়ে থেকে একটা বিরক্তি নিশ্বাস ফেলে বলে,,,, দূররর,এখন কি করবো।

প্রহর দরজাটা একটু ফাঁক করে মাথাটা বের করে বলে,,, যা ছাদে গিয়ে রোদ পোহা, না হলে মামার অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে তাদের সাথে আড্ডা দে। দেখ গিয়ে হয়তো তোর ড্রিম গার্ল পেয়ে যেতে পারিস।

বলে প্রহর দরজা বন্ধ করে দেয়,অয়ন বিছানায় শুয়ে ভাবতে থাকে, ড্রিম গার্ল তো মনে হয় পেয়ে গেছি, এখন মনে হয়না অন্য কোনো দিকে মন যাবে। লাভ ইন ফাস্ট সাইট,,,, নোট বেড [খারাপ না]

দুজনে সাওয়ার নিয়ে খেতে আসে, দুজনের জন্য অনেক কিছু রান্না করা হয়। একদম পঞ্চম ভোগ। এতো কিছু দেখে অভাক হয়ে প্রহর বলে,,, মামা পুরো গ্রাম দাওয়াত দিছো নাকি। এতো কিছু খেলে আর উঠে দাঁড়ানো যাবে না।

রিফান খান,,,,, এই তো কয়েকটা খাবার, আরো কতো কিছু রান্না করা রয়ে গেছে, সে পড়ে হবে নে,, আমার ভাগ্নেরা আসবে আর তাদের জন্য এটুকু করবো না, সারা জীবন ঐ বিদেশের ঘাস পুস খেয়ে দেশের স্বাদ ভুলে গেছিস, এখন খেয়ে আবার মনে কর।

অয়ন,,,,,, মামা তোমার ভাষন শুনা থেকে ভালো আমরা খাওয়া শুরু করে দিয়।

দুজনে খাওয়া দাওয়া শেষ করে পেট ধরে বসে বলে,,, খাবার গুলো জোস ছিলো, কিন্তু সমস্যা হলো বেশি খেয়ে ফেলেছি, এখন উঠতে পারছি না।

প্রহর,,,,অয়ন আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যা।

অয়ন,,,, তাহলে আমাকে উঠাবে কে।

দুজনে কষ্ট করে গিয়ে বিছানায় গা ছেড়ে দেয়। অয়ন পেটে হাত দিয়ে বলে,,,,, আমার ডায়েট এর বারোটা বেঝে গেলো।

প্রহর,,,,,, সেম, অয়ন আমি ভাবছিলাম কি, কালকে না গেলে হতো না, আরো কয়েকদিন থাকি এই জায়গায়, কতো দিন পরে আসলাম মামার বাড়ি।

অয়ন,,,,, আমিও তাই ভাবছিলাম,,তাছাড়া জায়গাটা তো খারাপ না। আরো তিন চারদিন থাকায় যায়।

প্রহর,,,,,, হুমম আমিও তাই ভাবছিলাম।

কাল সকালে দুজনে উঠে রেডি হয়ে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়ে, মারুর বাসার সামনে এসে দাঁড়ায় কিন্তু কথা হচ্ছে, মারুকে ডাকবে কিভাবে। দুজনে একটা বুদ্ধি করে পানি খাওয়ার বাহানায় দুজনে ভিতরে যায়, সেখানে মারু বারান্দায় বসে পা ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে পেয়ারা খাচ্ছিলো।

দুজনকে দেখে পেয়ারা গলায় আটকে গেলো মনে হলো। দুজনে ইশারা দিয়ে বাহিরে আসতে বললো। তারপর তারা পানি খেয়ে বাহিরে এসে অপেক্ষা করতে থাকে, মারু বান্ধবীর বাসায় যাবে বলে বের হয়।

এসে কোমরে ধরে বলে,,,,, এতো সকাল সকাল কে আসে।

প্রহর হাসি দিয়ে বলে,,,,, আমরা আসি।

মারু ব্রু কুঁচকিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,,, আপনাদের কোনো উল্টা পাল্টা নিয়ত নেয় তো আবার, শুনেন আমাকে গ্রামের অশিক্ষিত মেয়ে মনে করবেন না, আমার সাথে কিছু করতে এলে দুজনকে জানে মেরে ফেলবো বলে দিলাম, আমাকে আপনারা চিনেন না।

অয়ন,,,, তো চিনাও, আমি মানে আমরা চিনতে চাই তোমাকে।

প্রহর,,,,, আমাদের দেখে তোমার কি কোনো বাজে ছেলে মনে হয়৷

,,,,মনে হওয়াতে কি এসে যায়।

অয়ন,,,,,ঠিক আছে, বেশি কথা না বলে,, ঘুরাতে নিয়ে যান।

,,, ঠিক আছে, চলেন কোথায় যাবেন।

প্রহর,,,,যেখানে আপনি নিয়ে যাবেন।

মারু একটা বিরক্তি ভাব নিয়ে, নদীর পাড়ে নিয়ে যায় ঘুরাতে। কাশ ফুটে একাকার হয়ে আছে। আমি কয়েকটা কাশ ফুল নিয়ে দুজনের হাতে ধরিয়ে দিয়, আর একটা আমি নিয়ে হাঁটছি।

প্রহর,,,,,, জায়গাটা অনেক সুন্দর, এখানে বসে অনায়সে একটা কবিতা লিখা যায়।

,,,আপনি কি লেখক নাকি।

,,,,,, হুমম,, এমনি কিছু একটা।

,,,,শুনেছি লেখকরা নাকি বোরিং হয়।

প্রহর একটু হাসি দিয়ে বলে,,,, আমার তো তা মনে হয়না, তবে আপনার মনে হলে আপনি আমাকে চান্স দিয়ে দেখতে পারেন, মানে বন্ধুত্ব করে, এক মূহুর্তের জন্যও বোর হলে কথা বলা বন্ধ করে দিবো।

,,,হুমম বেশ ইন্টারেস্টিং,,

অয়ন,,,,,, আচ্ছা ডক্টরদের কি মনে হয়।

,,,শুনেছি ওরা নাকি একটু লুচু টাইপের হয়।

প্রহর ফিক করে হেঁসে দেয়, আমি একটু চোখ ছোট করে তাকিয়ে বললাম,,,,, কেনো আপনি ডক্টর নাকি।

অয়ন মুখ বেকিয়ে বললো,,,,, এক বছর পরে হয়ে যাবো,, আর ডক্টরা মোটেও লুচু হয়না, এমন ফালতু কথা কোথায় থেকে শুনেছেন।

,,, যেখান থেকেই শুনেছি কিন্তু শুনেছি। আচ্ছা আপনাদের নামটা কি সেটাই তো জানা হলো না।

প্রহর বলে,,, আমার নাম প্রহর আর ওর নাম অয়ন।

আমি একটু হেঁসে দিয়ে বললাম,,,,, অয়ন আবার কেমন নাম,, নয়ন শুনেছে কিন্তু অয়ন শুনিনি।

বলে হাসতে থাকে, অয়ন রাগে বলে,,,, শুনোনি তো এখন শুনে নাও। অয়ন মানে কি যানো।

,,, না, কি মানে।

অয়ন,,,, বাংলা দেশে থেকেও বাংলা ভাষার জ্ঞানের খুব অভাব দেখা যায়, তোমার মনে।

আমি রাগে বললাম,,,আপনি তো জানেন তো বলেন শুনি কি এমন হাতি ঘোড়া অর্থ।

অয়ন,,,, হাতি ঘোড়া না,, অয়ন মানে হলো অগ্নি আগুন।

,,, ওহহ তাই তো আগুনের মতো মাথাটাও গরম।

প্রহর,,,, আচ্ছা আমার নামটা কেমন সেটা বললে না।

,,,আপনার নামটা আমার ভালো লেগেছে।

অয়ন মুখ ফুলিয়ে ফুলিয়ে হাঁটছে, লুচু বলাতে মনে হয় মন না মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। একটু পরে আমি নদীর মাঝখান দিয়ে বাঁশের সেতু। তো আমি এটা দেখিয়ে বললাম,, আমরা এর উপর দিয়ে যাবো।

প্রহর,,,,, কিন্তু এটা তো নিরাপদ মনে হচ্ছে না, মাত্র একটা বাঁশে পা রাখার জন্য আরেকটাতে ধরার জন্য আছে।

আমি একটু হেঁসে বললাম,,,,, কেনো ভয় পেলেন নাকি, চিন্তা করেন না ডুববেন না,গলা সমান পানি, আর আপনারা যে লম্বা।

অয়ন,,,, আমরা সাঁতার পারি,,ওই চল এখন গলা সমান পানি থাকুক বা মাথ সমান, যাবো মানে যাবো।

,,,আস্তে আস্তে কিন্তু যাবেন,পড়ে টরে যাবেন না তো আবার।

অয়ন,,,এখন মাঝখানে গিয়ে হাত উঠিয়ে দেখাবো, চল তো।

প্রহর ও অয়নের পিছনে পিছনে যায়। আমি সাইডে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছি। দুজনে মাঝখানে গিয়ে হাত উঠিয়ে একটা ভাব নিয়ে দেখাচ্ছে,মনে মনে যে ভয় পাচ্ছে এটা বুঝা যাচ্ছে।

আমি একটা ডেবিল মার্কা দিয়ে সেতুর বাঁশ ধরে নাড়াতে থাকি, দুজনে চিল্লিয়ে বলতে থাকে,,আরে পরে যাবো, কি করছেনটা কি।

প্রহর,,,,,, আরে পড়ে যাবো, আমাদের কি এখানে ফেলার জন্য এনেছেন নাকি।

দুজনে শক্ত করে ধরে থাকে, আমিও নাছোড় বান্দা, আমার কিছু বান্ধবীদের আগেই এখানে লুকিয়ে রেখেছিলাম, তাদের ডাকি, তারাও এসে জোরে জোরে নড়াতে থাকে, আর তারা নদীতে পড়ে যায়, আমরা হাসতে থাকি।

আমি জোরে বললাম,,,, ঘুরার স্বাদ মিটেছে, নাকি আরো বাকি আছে।

অয়ন,,,, ছাড়বো না তোমাকে, বলে দিলাম।

,,,, আপনার মাথা একটু বেশিই গরম তাই ঠান্ডা করতে সাহায্য করেছি বুঝলেন, দুজন এখানে সুইমিং করুন আমরা যায়।

বলে হাসতে হাসতে চলে যায়। এই কথা মনে করাতেই প্রহর হাসতে হাসতে অতীত থেকে ফিরে আসে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here