#আমার_একটাই_যে_তুই,❤️
#সিজন-২
#সুরাইয়া_সাত্তার_ঊর্মি
১১
রাত গভীর। বাহিরে ঝুম ঝুম বৃষ্টি এখনো পড়চ্ছে। ঠান্ডা ঠান্ডা একটি রোমাঞ্চকর রাত। সকলেই ঘুমিয়ে তলিয়ে গেছে। ঘুম নেই ইউসুফের চোখে। সে বসে আছে কুহুর বাম পাশে। মাথায় জলপট্টি দিচ্ছে একটু পর পর। কুহু গা কাঁফিয়ে জ্বর এসেছে। হুহু করে এখনো কাঁপচ্ছে। জ্বড় যেন মাথায় উঠে গেছে। ইউসুফ কুহু হাত পায় তেল মালিশ করছে। তার বাবুইবউে এ হাল বুকে ঝড় তুলছে। নিঝুমকে খুন করতে চাইছে এ মুহূর্তে।
সন্ধ্যার সেই ঘটনাটি কুহু উপর বেশ ভালোই প্রভাব ফেলেছে। বাসায় আসতেই কুহু জ্ঞান হারায়। ইউসুফ চিন্তা দিশেহারা। ডাক্তার ডাকা হয়। ডাক্তার ঔষধ দিয়ে চলে যায়। তখন থেকেই কুহুর সেবা করছে ইউসুফ। পড়নের ভেজা কাপড় গায়েই শুকিয়ে গেছে।
কুহুর জ্বর কোনো মতেই কমচ্ছে না। উল্টো জ্বরের ঘরে বিড়বিড় করে যাচ্ছে। ইউসুফ কান পেতে শুনার জন্য ঝুঁকলো। কুহু বলল,,
—” ইউসুফ ভাই আসবেন। আ- আমাকে বাঁচাবেন! ”
বাক্যটুকু শুনেই ইউসুফের বুক হুহু করে উঠলো। কত কষ্টই পেয়েছে তার বাবুইপাখিটা৷ ইউসুফ আবেগি হয়ে গেলো। কুহুকে ঝাপটে ধরে শুয়ে রইলো। কিছু মুহূর্ত তার ক্লান্ত চোখ জোড়ায় ঘুম নেমে এলো।
সকালের নরম আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভাঙ্গে কুহুর। পিটপিট করে চোখ মেলতেই ইউসুফের মুখখানা ভেসে উঠে রোদের চিকচিক আলোতে ইউসুফের চুল গুলো লাল লাল লাগচ্ছে। কুহুর ইচ্ছে জাগলো। ইউসুফের চুল গুলো ছুঁয়ে তিতে। সে তাই করলো। একটুপর মনে বলল,,
—” দেখ কুহু বেচারার কত সুন্দর ঘুমুচ্ছে। তার কঁপাল চুমু খেতে মন চাইছে!”
কুহুর আবেগি মনের ডাকে কুহু হকচকিয়ে গেল। পরক্ষনেই তার বিবেক তাকে শাশালো,,
—” এক ঘুমন্ত ব্যক্তিকে দেখে এভাবে ফায়দা নেয়া বেড ম্যানার্স কুহু!”
কুহু হতাশ হলো আবেগ আর বিবেক তাদের তর্ক চালিয়ে যেতেই লাগলো। কুহু মনে মনেই চিৎকার করে থামিয়ে দিলো দুজন কেই। দুজন চুপসে দু ধারে চলে গেলো। কুহু এবার ইউসুফের দিকে তাকালো। শুষ্ক লাল ঠোঁট জোড়া টানতে লাগলো খুব করে। কুহু কোনো কিছু না ভেবেই টুপ করে চুমু খেয়ে বসলো তার ঠোঁটে। তখন সেই আবেগ আর বিবেক এসে উপস্থিত। আবেগ বলল,,
—” বাহ্ কুহু বাহ্ তুই তো আমার থেকেও আগে!”
বিবেক বলল তখন,,
—” এত নির্লজ্জ, বেহায়া কেন তুই কুহু ঘুমুন্ত মানুষের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছিস? ছিঃ কুহু ছিঃ?”
কুহু অসহায় মুখে তাকিয়ে রইলো দুজনের দিক। তখনি নড়ে উঠলো ইউসুফ। কুহু সাথে সাথে চোখ বুঝে ফেললো। ইউসুফ উঠে প্রথমেই কুহুর জ্বর আছে কিনা চেক করলো। তারপর শরীরে কাথা চেনে ওয়াশরুমে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর বের হলো গোসল করে। পড়নে তার সাদা তয়লা। খালি গা আর তার শরীরে ফোঁটা ফোঁটা পানি। কুহুর পিটপিট করে ইউসুফকে দেখতে লাগলো খুটিয়ে খুটিয়ে। তার গলা শুকিয়ে কাঠ। ইশশ! এই হ্যান্ডস্যাম ছেলেটি নাকি তার বর? উফ? হায়! তার বরটা এত সুন্দর কেন? কুহু হার্ট মিস হওয়ার উপক্রম।
ঠিক সেই মুহূর্তে কুহুকে চমকিয়ে ইউসুফ তার মিষ্টি হাসিতে ঘেয়েল করলো কুহুকে বলল,,
—” এখন কেমন লাগছে তোর? জ্বর তো নেই। শরীর দূর্বল তোর অনেক। তুই কাঁপছিস কেন? আচ্ছা শোন বাবুইপাখি আমার খুব ইম্পোর্টেন্ট একটি মিটিং আছে। তাই বের হচ্ছে বেড থেকে নামবি না। যা লাগবে মাকে বলবি। আসি। নিজের খেয়াল রাখবি কিন্তু!”
জড়িয়ে ধরে চলে গেলো ইউসুফ।কুহু তাকিয়ে রইলো ইউসুফ যাওয়ার দিক। পড়নে তার সাদা পাঞ্জাবি আর পায়জামা। তাতেই যেন সৌন্দর্যতা তার দাম্ভিক মুখ খানায় ঝিলিক দিচ্ছে। কুহু এখনো কাঁপচ্ছে! আজ কেন জানি ইউসুফের স্পর্শ কাঁপিয়ে তুলছে দেহ খানি। কুহুর লজ্জা লাগছে ভিষণ কিন্তু কেন? তাহলে কি প্রেমের শুরু টা এভাবেই হচ্ছে?
কুহু বালিশে মুখ গুজলো নিজের দিক তাকাতেও লজ্জা লাগচ্ছে। যেন এক খেলা চলছে লুকোচুরির খেলা। ভালবাসা-বাসির খেলা।
এই মোমেন্টটি মানিয়েই যেন দূর থেকে কেউ একটি গান বাজালো,,
—“Sansoon Mein Badi Bekarari
Aankhoon Mein Kehi Rat Jage
Kanbhi Kanhi Lag Jaye Dil To
Kanhi Phir Dil Na Lagey
Apna Dil Main Zara Tham Loon
Jaadu Ka Main Ise Naam Doon
Jaadu Kar Raha Hai
Jaadu Kar Raha Hai
Asar Chupke Chupke
Do Dil Mil Rahe hain
Magar Chupke Chupke
———-
দুপুরে ইউসুফ বাসায় এলো না। কুহু বেলকনিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। কেন আসচ্ছে না ইউসুফ।ভেবেই পায়চারি করছে। আবার নিজের এই বেহায়াপনাও যেন লজ্জা পাচ্ছে আবার ভালোও লাগচ্ছে। ইশশ কি মিষ্টি এ ফিলিংস! কই? আশিকের বেলায় তো এমন লাগেনি। আশিকের কথা মনে হতেই মনটি ভিষণ খারাপ হলো। আশিক কেমন উধাও হয়ে গেলো যেন। একটি বারো কি তার কুহুর কথা মনে পড়ে না? তাদের ভালোবাসাটা কি এতই ঠুনকো ছিলো? কুহুর বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো।
পিপ পিপ ওয়াজ তুলে প্রবেশ করলো ইউসুফের গাড়ি। হর্ণের আওয়াজ শুনে এক ছুটে নিচে নেমে গেলো কুহু। দরজার কাছে এসে হাপাতে লাগলো। গলা শুকিয়ে কাঠ এতো তৃষ্ণা কেন পাচ্ছে? আচ্ছা তৃষ্ণা পানি খেলে মিটবে? কখনোই না। এ যে চোখে তৃষ্ণা সকাল থেকে লোকটি না দেখা মনে হচ্ছে কত বছর দেখেনি কুহু। কুহু অধির আগ্রহ নিয়ে চেয়ে রইলো গাড়ির দিক। ইউসুফ নেমে এলো। কুহুর হাসি চওড়া হলো। কিন্তু তা গায়েব হতে বেশি সময় লাগলো না। গাড়ির ওপাশ থেকে আরেকজন নামতেই কুহুর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। মনে মনে প্রশ্ন জাগলো ইউসুফ কি তার স্বপ্নই থেকে যাবে? নাকি বাস্তবেও তার দেখা মিলবে?? মিলবে তো??
#আমার_একটাই_যে_তুই❤️
#সিজন_২
#সুরাইয়া_সাত্তার_ঊর্মি
১২
খাটের কার্নিষ ঘেঁষে বসে আছে কুহু “দ” ভঙ্গিমায়। মনেটা খুব হাসফাস করছে। ইউসুফ সোফায় বসে। লম্বা সুন্দর পা দুটো সটান করে উঠিয়ে রেখেছে সামনের টি-টেবিলে। বড্ড অবহেলায় কোলের উপর রাখা ল্যাপটপে ঝুঁকি কি যেন করছে। কুহু সেদিকেই দৃষ্টিপাত করে আছে। ইউসুফের পরণে থ্রি কোয়ার্টার কালো প্যান্ট, গায়ে লেমন কালার টি শার্ট। কাপলের উপর তার ঘন ব্রাউন চুল গুলো পড়ে আছে। মৃদু বাতাসে তা নড়াচড়া করছে। এ মুহূর্তে মাত্রাতিরিক্ত সুন্দর লাগচ্ছে। কুহুর বড্ড আফসোস হলো এ নিখুঁত ব্যক্তিটির একটি খুঁতো না থাকা বড্ড অপরাধ! তার এই সৌন্দর্যের জন্য জেলে ভড়া উচিত। না জানি কত মেয়ে এর জন্য জান দিয়েছে। তাকে এ শহরে নিষিদ্ধ করা উচিত। শুধু এক মাত্র কুহুর মনের শহরেই হবে প্রযোজ্য ইউসুফ নামক সুদর্শন যুবুকের। কুহু ছোট শ্বাস ফেললো। তখনি মনের মাঝে উঁকি মারলো দুপরের ঘটনা টি। মনের মাঝে এবার দুঃখ দুঃখ পেল। ইউসুফের পাশের সিট থেকে পৃথাকে নামতে দেখে কুহুর মাথায় আকাশ যেন ভেঙ্গে পড়লো। পৃথা ইউসুফের দূরের সম্পর্কের চাচাতো বোন হলে তার মনের মাঝে ইউসুফের জন্য ফিলিংসের অভাব ছিলো না। একি সাথে পড়াশোনা করতো তারা। ভার্সিটিতে ইউসুফ ভাইয়ের সাথে নির্লজ্জের মতো লেপ্টে থাকত যা চোখ এরিয়ে যায়নি কুহুর।সেদিন হিংসে না হলেও আজ হয়েছে। বড্ড হিংসে। যখন গাড়ি থেকে নেমেই ইউসুফের হাতে তার হাত ঢুকিয়ে নিজের সাথে লেপ্টে ধরে তখন কুহুর মনের কোনে তীব্র থেকে তীব্রতর ব্যথা হচ্ছিলো। অসহায় মুখে চেয়েছিল পাশে থাকা মনিশার দিকে। মনিশাও হতবাক। সে কুহুকে ইশরা করলো। যার অর্থ তেমন কিছু না তারা শুধু বন্ধু৷ কিন্তু কুহুর আবেগী মন কি মানতে চায় তা?? কুহু গোমড়া মুখে চেয়ে রইলো তাদের দিক। পৃথা তখন হাসি হাসি মুখে শুধালো,,
—” আরে কুহু যে? কবে এলে? তোমাকে দেখতে পাবো বলে আশা করিনি! ভালই হয়ে এবার আড্ডা জমিয়ে হবে! তাই না ইউসুফ!”
“তাই না ইউসুফ ” কথাটি বলে চিমটি কাঁটলো পৃথা ইউসুফের হাতে। ইউসুফ “আহ” করে উঠে চেঁচিয়ে বলল,,
—” রাক্ষসী? খামচি দিচ্ছিস কেন? এই বদ অভ্যস কবে যাবে তোর?”
পৃথা ইউসুফের কাছে ঘেঁষে ফিসফিস করে বলল,,
—” তোমাকে বিয়ে করার পর!”
ইউসুফের দাম্ভিক মুখখানায় তখন নেমে এলো আধার। সে থমথমে কন্ঠে বললো,,
—” আমি বিয়ে করে নিয়েছি পৃথা।”
পৃথা তখন মাছি তাড়ানোর মতো হাত নাড়িয়ে বলল,,
—” মজা করো না তো! সব সময় দুষ্টমি। ”
ইউসুফ তখন সিঁড়ি দিয়ে উপরে যেতে যেতে বলল,,
—” আমি বিয়ে করে নিয়েছি পৃথা কুহু আমার বউ। আর আমি মজা মোটেও করছি না!”
ইউসুফ উপরে চলে গেলো।পৃথা মাথায় যেন গোটা আকাশটা উল্টে পাল্টে পড়লো। পৃথা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইলো ইউসুফের দিক। মনের স্বপ্ন সব ভেঙ্গে রাশভারি মনটা নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো হা করে। সে আজ এসেছিল ইউসুফকে তাদের বিয়ের কথা বলবে বলে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য। পৃথার বাবা মুহিত কাল দেশে ফিরেই সোজা আসবেন এখানে। কিন্তু এখানে এসে সে নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গেলো। কিন্তু পৃথা? সে কি থেমে যাওয়ার পাত্রী? মোটেও না। এত বছর ভালবেসে এবার সে ফাঁকা হাতে ফিরবে? না না একদম না। পৃথা কুহুর দিক তাকালো ক্রুদ্ধ চোখে তাকিয়ে ঝাঁঝালো কন্ঠে বলল,,
—” এ বিয়ে মানি না আমি।”
কুহু তখন মিষ্টি হেসে বলল,,
—” আপু মানো বা না মানো! ইউসুফ ভাই আমার অর্ধাঙ্গ আর আমি তার অর্ধাঙ্গীনি। ”
পৃথা কিড়মিড় করতে লাগলো। বিড়বিড় করে বলল,,
—” আমিও দেখবো কতদিন টিকে এই ঠুনকো বিয়ে!”
—” কি এতো ভাবছিস?
ইউসুফের ঝংকার তুলা চমৎকার কন্ঠে কুহু ভাবনার পাখি উড়াল দিলো। এতোখন কাটের চাদুরে নতজানু হয়ে পায়ের আঙুল দিয়ে খুটছিলো। এবার ইউসুফের দিক তাকালো। ইউসুফ ভ্রু কুচকে কুহুর পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষন করে বলল,,
—” শরীর খারাপ লাগচ্ছে কি আবার?”
কুহু দু পাশে মাথা নাড়লো। যার অর্থ, না!” ইউসুফ আবার বলল,
—” তাহলে? এভাবে চুপ করে বসে আছিস কেন?”
কুহু কিছু বলল না। ইউসুফ ইশরা করে বলল,,
—” কাছে আয়?”
কুহুর উদাস মনে ধীরে পায়ে হেঁটে গেলো ইউসুফের দিক। ইউসুফ ওকে ঝুঁকতে বলে। কুহু ঝুঁকতেই ইউসুফ তখন তার হাতে উল্টো-পাশ কঁপালে হাত ঠেকাতেই কুহুর শরীর ছন্দ তুলে কেঁপে উঠলো। কুহু খিঁচিয়ে চোখ দুটি বুঝে নিলো। ইউসুফ বলল,,
—-” জ্বর তো নেই একেবারে! ঔষধ খেয়েছিলি?”
কুহুর ছোট উত্তর “হে” খানিক চুপ থেকে আবার মুখ খুলতেই ভেসে এলো পৃথার কন্ঠ। সে ইসু ইসু বলে চেঁচিয়ে এদিকেই আসচ্ছে। ঠিক তখনি কুহুর কি হলো সে এক অভাবনীয় কাজ করে বসলো। ইউসুফের কোল থেকে ল্যাপটপ সরিয়ে দ্রুত তার কোলে বসে পড়লো। আর তখনি আগমন ঘটে পৃথার। কুহু পৃথা সেই স্থান নাই করে দিয়ে ইউসুফের গলায় চুমু খেলো। আকস্মিক এমন ঘটনায় ইউসুফ বিস্ময় কিংকর্তব্যবিমূঢ়।সে কুহুর দিক বিস্ফোরিত চোখর চেয়ে।
পৃথার চোখের সামনে এমন একটি ঘটনা ঘটতে দেখে বিব্রত বোধ করলো।আড় চোখে আবার চেয়ে দেখলো। কুহু এখনো ইউসুফের কোলের উপর বসা। সরছেই না। উল্টো তার দিক তাকিয়ে আছে নির্বিকার ভাবে। পৃথা দু হাত কঁচালে বলে উঠলো,,
—” আম সরি বুঝতে পারিনি এমন কিছু..”
কুহু কথার মাঝে কথা কেড়ে নিয়ে বলল,,
—” আপু না বুঝার কি আছে? একজন দম্পতির ঘরে তাদের পার্মিশন ছাড়া ঢুকা ব্যাড ম্যানার্স জানেন না বুঝি? যদি না যেনে থাকে যেনে নিন তবে! আপনার বন্ধু এখন বিবাহিত হুটহাট করে তার ঘরে আসা শোভা পায় না!”
কুহুর প্রতিটি কথা ধারালো তরোয়ালের মতো আঘাত করতে লাগলো। রাগে, দুঃখে কেঁদে ফেললো সে। ইউসুফের দিক আরেক বার তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হুড়মুড় করে বেড়িয়ে গেলো সে।
কুহুর ঠোঁটে তখন বিশ্বজয়ের হাসি। ইউসুফের কোল থেকে সে উঠতে নিতেই বুঝতে পারে কারো শক্তপোক্ত পাতে বাঁধা। কুহু শুকনো ঢুক গিললো। তার গলা শুকিয়ে কাঠ। সে মৃদু কাঁপচ্ছে। আড় চোখে ইউসুফকে দেখে উঠতে চাইলো কুহু। কিন্তু ব্যর্থ। ইউসুফ তখন কেমন করে যেন চেয়ে হাসচ্ছে কুহু ভয়ে ভয়ে তাকে দেখছে। ইউসুফের মসৃণ গালের টোল পড়া বাঁকা হাসিতে কুহুর বুক দ্রীম দ্রীম করে তবলা বাজাচ্ছে। সে সইতে পাড়ছে না এই মিষ্টি অসহ্যতা। কুহুর শ্ব্স এবার ঘন হতে লাগলো। মিন মিন করে বলে উঠলো,,
—” ছাঁড়ুন ইউসুফ ভাই!”
ইউসুফ তখন আরো চেপে কাছে নিয়ে এলো কুহুকে। কুহুর মতোই কুহুর কঁপালে, গালে, ঘাড়ে তার পর গলায় তার ঠোঁটে বিচরণ করলো। কুহুর শ্বাস এবার গাড়ো হতে লাগলো। ঘন ঘন শ্বাস ছাড়ছে। ইউসুফ তখন কুহুর কানের কাছে তার ঠোঁট এগিয়ে নিলো। কুহু খিঁচিয়ে চোখ বন্ধ করে আবার। ইউসুফের তা দেখে হাসি পেলো খুব। কিন্তু হাসিটুকু এবার গিলে সে ফিস ফিস করে বলল,,
—” আমি কারো ধার রাখি না। কেউ আমায় কিছু দিলে তার চার গুন ফিরত দেই!”
কুহু তখন স্তব্ধ। চকিতে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলো ইউসুফকে। সে আয়েসি ভঙ্গিতে মাথা হেলে চেয়ে দেখছে কুহুকে। কুহু জিব কাঁটলো নিজের পাতা জালে মুখ থুবড়ে পড়লো। ইউসুফের দিক আড় চোখে আরেক বার তাকিয়ে লাজুক হেসে ছু মন্তর হয়ে গেলো মুহূর্তেই।
ইউসুফ কুহু যাওয়ার পানে তাকিয়ে হাসলো। বিড়বিড় করে বলল,,
—” পাখি এবার নিজেই খাঁচায় বন্দি হতে চায়!”
চলবে,
চলবে,,
ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। আমি একটু ঝামেলায় আছি তাই গল্প দিতে দেড়ি হচ্ছে। আর হে রেসপন্স আপনাদের এমন দেখে খুব কষ্ট লাগচ্ছে। মনে হচ্ছে লিখার উন্নতি না অবনতি হচ্ছে। ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিতো।🙃