#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_৯
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
দ্বিতীয় ছেলেটা রেগে বলে উঠলো,”তোর এত বড় সাহস, তুই জানিস তুই কার গায়ে হাত তুলেছিস। আমাদের ক্ষমতা সম্পর্কে তোর ধারণা আছে!!।বলেই ওড়না ধরে সম্পূর্ণ টান দিবে তার আগে নূর ছেলেটার নাক বরাবর একটা ঘুসি দিলো।সাথে সাথেই ছেলেটা নাকে হাত দিয়ে দেখে, নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। সে অবাক হয়ে সামনের মেয়েটির দিকে তাকালো। একটা মেয়ের ঘুসিতে এতো শক্তি থাকে যে রক্ত চলে এসেছে।
নূর ছেলেটার সামনে এসে নিজের চুল গুলো খোলে দিলো। সাথে সাথে চুল গুলো সারা পিঠ জোরে ছড়িয়ে পরলো।কিছু চুল সামনে এনে ওড়নার মতো গায়ে জড়িয়ে নিলো। তারপর ওড়নাটা খোলে নিয়ে ছেলেটার শরীরে পড়িয়ে দিয়ে বললো।এবার ঠিক আছে। খুব সুন্দর লাগছে।তারপর আবার বলে উঠলো, ” বুঝলাম না একটা ওড়না নিয়ে কেনো দু’জন টানাটানি করছেন।আগে বললে বাসা থেকে দুইটা এনে দিতাম। আপনাদের ওড়না লাগবে বললেই পারতেন।
নূরের কথাগুলো বলার ভঙ্গি দেখে ইরিন শব্দ করে হেসে দিলো।
প্রথম ছেলেটা রেগে নূরের দিকে আবার তেরে আসতে নিলে, ইরিন পা বাড়িয়ে দেয়। ছেলেটা পায়ের সাথে উষ্ঠা খেয়ে গিয়ে নূরের পায়ের কাছে পড়ে।
দ্বিতীয় ছেলেটা আসলে নূর তাকে মারতে শুরু করে।
প্রথম ছেলেটা আসলে ইরিন আবার ওই ছেলেটার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ছেলেটা ইরিনের দিকে আসতে নিলে ইরিন পা দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটার অন্ডকোষ বরাবর লাথি বসিয়ে দিলো।। সাথে সাথে ছেলেটা শুয়ে ব্যথায় গোঙ্গানো শুরু করে।
আশেপাশের সব মানুষরা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখতে থাকে। দুই মেয়ের হাতে এদের এভাবে মার খেতে দেখে কিছু ছেলে মেয়ে ভিডিও করছে।এয়তো বেশি সময় লাগবে না এটা নেটে ছেড়ে দেওয়া হবে। ক্যাপশনে হয়তো নানা ধরনের কথা লেখা হবে।
ছেলে দুটো ছাড়া পেয়ে পা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে চলে যায়।তবে যাওয়ার আগে স্পষ্ট ভাবে নূরে আর ইরিনের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলে যায়।আমি আবার আসবো!!…তদের এমন অবস্থা করবো রাস্তার কুকুর ও তোদের দিকে তাকাতে ভয় পাবে।
——
মাহি ক্যান্টিনে বসে আছে।দেখেই বুঝা যাচ্ছে ও খুব রেগে আছে।আদিবা গিয়ে ওকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
আদিবাঃ জান্স…..
মাহিঃ এই সর! একদম ধরবি না তুই আমাকে।(আদিবাকে নিজের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে)
আদিবাঃ কেনো জান্স!! কি হইছে? তুমি রেগে আছো কেনো?
মাহিঃ নেকা সাজবি না একদম। জানোস না কি হইছে?
আদিবাঃ না বললে জানবো কি ভাবে আগে বল!!
মাহিঃফোন কই? কয়টা কল দিছি আমি!!
আদিবা মাথা নিচু করে আছে।
মাহি আবার বললো,” কি হয়েছে এভাবে মাথা নিচু করে আছিস কেনো? দেখি আমার দিকে তাকা..
আদিবা মাহির দিকে তাকাতেই মাহির বুক কেঁপে উঠল।
মাহি উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো, ” একি তোর গালে দাগ কিসের!!?”
আদিবা হাসার চেষ্টা করে বলে উঠলো, ” আরে এ কিছু না।গালে হাত রেখে ঘুমিয়ে গিয়ে ছিলাম তাই দাগ পড়ে গেছে।”
মাহিঃ আবার!! আবারো তুই মিথ্যা বলছিস আমার সাথে।ওই ডাইনী মহিলা না! ওই ডাইনী মহিলা আবারো তোর গায়ে হাত তুলেছে!! কতো বড় সাহস আমি ওই মহিলার হাত ভেঙে দিবো! আমি এতো বার ওয়ার্নিং দেওয়ার পরেও কিভাবে হাত তুললো আবার।আমি খুন করবো এই মহিলাকে।জেলের ভাত যদি না খাইয়েছি আমার নাম ও মাহি না!!….
আদিবা কিছুক্ষন মাহির দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,” আন্টি আঙ্কেল কেমন আছে?
মাহি রাগে কটমট করে তাকিয়ে বলে উঠলো, ” সব সময় কথা এরিয়ে যাস কেনো? আর এখন চল..
আদিবাঃ কোথায়?
মাহিনঃ থানায়!!
আদিবাঃ কি!! তুই পাগল হইছোস!..
মাহিঃ আমাকে দেখে কি পাগল মনে হয়?
আদিবাঃ তাহলে থানায় কেনো?
মাহিঃ আবির ভাইয়ার কাছে যাবো।মেঝো আম্মু ভাইয়ার জন্য খাবার দিয়ে দিছে।দিয়ে আসবো।থানা তো বেশি দূর না। এখান থেকে তিন-চার মিনিট হাটলেই পৌঁছে যাবো।
মাহি খেয়াল করলো আদিবার চোখগুলো খুশিতে চিকচিক করে উঠলো।
আদিবাঃ আচ্ছা চল..
মাহিঃ ভাইয়াকে প্রপোজ করছিস কবে?
আদিবা মাহির কথা শুনে থতমত খেয়ে গেলো।
আদিবাঃ মানে!!?
মাহিঃ দেখ লুকিয়ে কোনো লাভ নেই। আমি জানি তিন বছর ধরে তুই আবির ভাইকে ভালোবাসিস। তাহলে ভাইকে বলতে সমস্যা কোথায়?..
আদিবাঃ আহা জান্স তুমি যে কিভাবে আমার মনের কথা বুঝে যাও।
মাহিঃ এভাবে মনের কথা মনে ঝুলিয়ে রাখলে।একদিন ভাই উড়াল দিবে তারপর আর হাজার খুঁজেও পাবি না।
আদিবাঃ কোথায় যাবে উনি?
মাহিঃ গাঁধি তোর জন্য কি ভাই সারা জীবন বসে বসে আধবুড়ো হবে।
আদিবাঃ হুম তাও ঠিক,কিন্তু এতিমরা কাউকে ভালোবাসলে তা প্রকাশ করা যে নিষেধ।
——
রুদ্র হসপিটালে আজকে নতুন জয়েন করেছে। প্রথম দিন বলে বেশি কাজের চাপ নেই। নিজের কেবিনে বসে আছে। ফোন বেজে উঠলো, ” হ্যালো”
~ওই শালা কই তুই?
রুদ্রঃ আমি আমার কোন বোন বিয়ে দিছি তোর কাছে? যে আমি তোর শালা!!…
~কই তুই আগে বল?
রুদ্রঃ আজকে হসপিটালে প্রথম দিন। নিজের কেবিনে বসে আছি।
~দুস্ত আজ আমারো কলেজে প্রথম দিন। প্রথম দিনেই কি হয়েছে জানোস?
রুদ্রঃ না বললে জানবো কিভাবে?
~দুস্ত যখন আমি কলেজের ভিতর গাড়ি নিয়ে ঢুকবো।তখন দেখলাম গেইটে মানুষের ভিড়।তাই কৌতুহলের বসে নেমে সামনে গেলাম। গিয়ে যা দেখলাম মেয়েতো না পুরাই আগুন!!!
রুদ্রঃ ফায়াজ তোর আর এই লুচ্চা নজর ঠিক হলো না।কলেজের টিচার হইছোস ভালো কথা। সব মেয়েদের নিজের মেয়ের মতো দেখবি!..
~দেখ আমাকে একদম লুচ্চা বলবি না।তোর মতে নিরামিষ হয়ে থাকবো নাকি। আগে যখন ভার্সিটির গেইট দিয়ে ঢুকতাম কতো মেয়ে প্রেমময় নজরে তাকিয়ে থাকতো।কতো প্রপোজাল পেয়েছি আর তুই আমাকে এভাবে বলতে পারলি। এটা আসা করিনি আমি।আর সব মেয়েদের নিজের মেয়ের নজরে দেখবো মানে? শালা এখনো বিয়ে টাই করলাম না আর তুই হাজার হাজার মেয়ের বাবা বানিয়ে দিলি।তকে বলাটাই ভুল হইছে।
রুদ্রঃ আচ্ছা কি হইছে বল এবার?
~না থাক বলবো না।
রুদ্রঃ এইসব নেকামি মেয়েদের সাথে করিস।আমি মেয়ে না যে তোর রাগ ভাঙ্গাবো।এখন বল?
~প্রতি কথায় কথায় মেয়েদের মতো খুঁটা দেস কেনো? তুই কি জেলাস নাকি। আমার এতো এতো গার্লফ্রেন্ড তোর একটাও নেই বলে!..
রুদ্রঃ এই রুদ্র কারো প্রতি জেলাস হয় না!! আমার এক ঈশারায় কতো মেয়ে বউ হওয়ার জন্য পাগল হয়ে যাবে আর তুই গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ভাব নেছ!!..
~রুদ্র ক্লাসের টাইম হয়ে গেছে।আজ সন্ধ্যায় চাচার দোকানের পাশে দেখা করিস..
——
ক্লাস শুরু হওয়ার কিছু সময় আগেই। ক্লাসে পিন্সিপাল স্যারের আগমন।
সবাই একসাথে উঠে স্যারকে সালাম দিলো..
স্যার সালামের উওর দিয়ে বলে উঠলো, “প্লিজ.. Sit Down..সবাই কেমন আছো?
সবাই একসাথেঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো.. স্যার আপনি?
পিন্সিপাল স্যারঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।তোমরা তো জানো আজকে তোমাদের নতুন ইংরেজি টিচার আসবে..ইনি হলো ফায়াজ আহমেদ। তোমাদের নতুন ইংরেজি টিচার।
নূর নাম শুনে চমকে দরজার দিকে তাকালো। তারপর আবার নিজে নিজেই বললো, “থুর আমি তো আর মুখ দেখিনি নাম শুনেই চিনবো কিভাবে। আইডিয়া মোবাইল আছে কিসের জন্য। একটা তো পিক তোলাই যায়। বাসায় গিয়ে আপুকে দেখাবো। আহা নূর তুই তো দেখি দিন দিন চালাক হয়ে যাচ্ছিস।বলে নিজের প্রসংশা নিজেই করা শুরু করলো।
ইরিন নূরকে ধাক্কা মেরে বললো,সামনে তাকা।
নূর সামনে তাকিয়ে দেখে স্যুট বুট পড়ে এক সুদর্শন পুরুষ এগিয়ে আসছে।
ইরিনঃ দুস্ত রে আমি তো ক্রাশ খেয়ে ফেলছি স্যারনা যেনো মাকাল ফল।
নূরঃ চুপ থাক।আমার রুদ্র ভাইকে দেখলে তো। তুই শুধু ক্রাশ না এর উপরে কিছু থাকলে সেটা খাবি।
ইরিনঃ তাই তো একদিন ও বাসায় নিস নাই, এবার বুঝলাম।তুই আসলেই কিপটা, তুই কি জানোস না বান্ধবীর সুদর্শন ভাই মানেই জামাই।আর তুই এতো দিন সেই জামাই থেকে আমাকে দূরে রাখছোস।
নূরঃ তোর এই শাকঁচুন্নি মার্কা চেহারার যেনো নজর আমার ভাইদের উপর না পড়ে তাই নেইনি।
ইরিনঃ এভাবে বলতে পারলি। তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড নাকি শত্রু ফ্রেন্ড।
ফায়াজ ক্লাসে এসে সবার সাথে পরিচিত হয়ে গেছে। পিন্সিপাল স্যার ও চলে গেছে। কিন্তু এদিকে আমাদের মেধাবী দুই ছাত্রীর সেই দিকে কোনো খেয়ালি নেই।ওরা আছে ভাইনিয়ে ঝগড়ায়।
হঠাৎ একটা ডাকে ওরা চুপ হয়ে গেলো।ফায়াজ সামনে থেকে ওদেরকে দাঁড়াতে বললো।
ভয়ে ভয়ে দু’জন দাঁড়িয়ে গেলো।
ফায়াজঃ আপনাদের যদি ক্লাসে ভালো না লাগে।ক্লাস থেকে বের হয়ে যান।
ইরিনঃ সরি স্যার! আর এমন হবে না।
ফায়াজঃ আজ প্রথম দিন তাই বেশি কিছু বলবো না কিন্তু পরবর্তীতে খেয়াল রাখবেন বসেন।
নূরঃ বাপ রে বাপ!! যা ভাবছিলাম! তুই ওই ছেলে হইলে নিজের বোনের সাথে বিয়ে দিমু।কিন্তু এখন মত পাল্টায় ফেললাম। জীবনেও তোর কাছে বোন বিয়া দিমু না হুহ্….
——
ভার্সিটি থেকে বের হয়ে একটা রিক্সা নিলো মাহি।কিছু দূর আসতেই রিক্সা আর চলে না।জিজ্ঞেস করাতে রিক্সা ওয়ালা বললো,” আফা আফনে বাকিডা হাইটা চইলা জান। আমার রিক্সা মেকানিকের কাছে নিতে হইবো”
মাহি রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে হাঁটা ধরলো।কিছু দূরে আসতেই পিচ্ছিল খেয়ে কাঁদার মধ্যে পড়লো।মাহি ভেবে ছিলো সিনেমার হিরোদের মতো না হলেও ভিলেন এর মতো কেউ এসে ওকে ধরবে কিন্তু না কেউ এসে ধরলো না।কিন্তু পিছন থেকে ঠিকি হাসির শব্দ পাচ্ছে। পিছন ফিরলো হাসি দেওয়া গাধা মানুষটিকে দেখতে। যে কিনা একটা মেয়ে পড়ে গেছে সাহায্য না করে বোকা দের মতো হাসছে।
পিছন ফিরে দেখে কালকের সেই ছেলেটা।মাহি কালকের উপকারের জন্য কৃতজ্ঞ থাকলেও এখন এই পড়ে যাওয়া নিয়ে হাসার কারনে ফায়াজ ছেলেটির উপর খুব রেগে যায়।কিছু বলতে যাবে তার আগেই ছেলেটি বলে উঠলো, ” এই যে মিস!! আপনার কি যেখানে সেখানে পড়ে যাওয়ার রোগ আছে নাকি। কাল গাড়ির সামনে আজ আবার কাঁদার উপর বলে আবার হাসা শুরু করলো।
মাহিঃ আপনি তো বললেন একটা মানুষের বিপদে যদি আরেকটা মানুষ এগিয়ে না আসে। সে কেমন মানুষ। আর আজকে আপনি নিজেই একটা অসহায় মেয়ের বিপদ দেখে সাহায্য না করে হাসছেন।
ফায়াজ হাত বারিয়ে দিয়ে বললো, ” উঠে আসুন ”
মাহি ফায়াজের হাত ধরে উঠার পরিবর্তে হাত ধরে উল্টো টান দিয়ে কাঁদায় ফেলে দিলো আর নিজে উঠে গেলো।
মাহিঃ এবার কেমন লাগছে? হাসেন বেশি করে হাসেন!!
কি হলো বুঝতে ফায়াজের একটু সময় লাগলো। মাহি এতো দ্রুত কাজটা করলো যে ফায়াজ বেআক্কেল হয়ে গেলো। যখন বুঝলো তখন খুব রেগে গেলো।সে তো সাহায্যের হাত বারিয়ে দিয়ে ছিলো। আর মেয়েটা কিনা তাকেই ফেলে দিলো।বেয়াদব মেয়ে!!
——
টিপটিপ বৃষ্টি ঝরছে অবিরত। সন্ধ্যে নামার ঠিক আগ মূহুর্তে ফকফকা আকাশটা কালো মেঘে ছেয়ে গেলো।
এখন বৃষ্টি থেমে গেছে।তবে শাঁ শাঁ করে বাতাস বইছে। এখনো বেশ মেঘলা,আবার বৃষ্টি আসতে পারে। ছাঁদের রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছে নূর।মেঘলা আকাশের মতো। তার মনেও আজ মেঘ জমেছে।
আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছে,”ভালোবাসা বুঝি এমন, যখন আসে একদম টের পাওয়া যায় না।আর যখন চলে যায়, মনটা ভেঙে ক্ষতবিক্ষত করে জানান দিয়ে যায়। ছলনাময় পুরুষরা মনে ভালোবাসার রং লাগাতে সময় লাগে না।আবার তেমনি মন ভেঙে চুরমার করতেও সময় লাগে না।যেদিন প্রথম আদি নূরের দিকে প্রেমিকের নজরে তাকিয়ে ছিলো। সেদিন নূরের কিশোরী মনে এক আকাশ খুশির ঝড় তুলে ছিলো।আসলে সহযে পেয়ে যাওয়া জিনিসের মূল্য থাকে না।
নূর অনুভব করলো ওর পাশে কারো উপস্থিতি। তাকিয়ে রুদ্রকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।
নূরঃ আপনি?
রুদ্রঃ হুম আমি.. #এই_অবেলায়_তুমি এখানে কি করছো।
নূরঃ আকাশ দেখি।
রুদ্রঃ আকাশে দেখার মতো তো আমি কিছু দেখছি না।
নূরঃএই যে দুপুরের দিকেও আকাশ কতো ফকফকে পরিস্কার ছিলো।বিকেলের দিকে সেই আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেলো। ঝরঝর করে বৃষ্টির স্রোত নামলো।এখন আবার সব কিছু শান্ত। মানুষের মন আর আকাশের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।কখন কার মন পাল্টে যাবে কেউ বলতে পারে না। তাই ভাবছি।
রুদ্রঃ মানুষ বলতেই পরিবর্তনশীল আর আকাশ তার তো কাজই ক্ষনে ক্ষনে নিজের রূপ পাল্টানো।
নূরঃ আপনি কখনো কাউকে ভালোবেসে ছেন?
চলবে…..
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_১০
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
মাহি নিজের রুমে শুয়ে আছে। আর বিকেলের কথা মনে করে খিলখিল করে হেসে উঠছে। ছেলেটা আসলেই পাগল, বোকাও বটে।( ফায়াজ পড়ে গিয়ে রাগী চোখে মাহির দিকে তাকিয়ে থাকে।তখনি মাথার উপর দিয়ে একটা কাক কা কা করে উড়ে যাওয়ার সময় হাগু করে দেয়, ঠিক সেই সময় ফায়াজ ও উপরের দিকে তাকায়।আর হাগু এসে পড়ে ফায়াজের কপালে।বেচারা ফায়াজ তো ভেবাচেকা খেয়ে যায়।আসলে ওর সাথে হচ্ছে টা কি?
এদিকে মাহি হাসতে হাসতে রাস্তার কিনারায় বসে পরে। ওকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে। সেই লেভেলের বিনোদন পেয়েছে।
ফায়াজের মন চাচ্ছে নিজের গালে নিজেই দুইটা থাপ্পড় বসাতে।কেনো এই বেয়াদব মেয়েটাকে দেখে গাড়ি থেকে নেমে এসে ছিলো।
হঠাৎ ফায়াজের চোখ আঁটকে গেলো মাহির মুখের মধ্যে। মেয়েটা হাসলে গালের মাঝ খানে গর্ত হয়ে যায়।তখন খুব কিউট লাগে দেখতে। এই যে খিলখিল করে হাসছে প্রতিটি হাসির শব্দ ফায়াজের হার্টবিট বাড়িয়ে দিচ্ছে।
কিন্তু বেশিক্ষন আর সেই মুগ্ধতা থাকলো না।
ফায়াজ চারপাশে তাকিয়ে দেখলো রাস্তা দিয়ে কিছু লোক আসা যাওয়া করছে।তারা কি অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে যাচ্ছে। ফায়াজ নিজের দিকে তাকিয়ে ভাবলো,” বাহ্ ফায়াজ বাহ্।আজ একটা মেয়ে তোকে সার্কাসের জোঁকার বানিয়ে দিলো দেখ রাস্তা দিয়ে যারা যাচ্ছে কি অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে যাচ্ছে। যেনো আমি মানুষ না এলিয়েন নেমে এসেছি। এখন আমাকে কেউ দেখলে নিশ্চয়ই টিচার না টোকাই ভাববে।
মাহিঃ এই যে,আপনি কি আজ এখানে থাকবেন বলে মনস্থির করে নিয়েছেন নাকি? উঠছেন না কেনো!?
ফায়াজঃ তুমি তো বারি অসভ্য মেয়ে!! আমি তোমার এতো বার উপকার করলাম আর তুমি কি না আমাকে হাসির পাত্র বানিয়ে দিলে।
মাহির এবার সত্যি মায়া হলো।
ও সিনেমার জনদরদী শাবেনা কে দেখেছিলো জসিমের মাথা দিয়ে রক্ত বের হওয়ার সময় নিজের আঁচলের কাপড় ছিঁড়ে মাথায় বেঁধে দিতে।
কিন্তু মাহি তো কাপড় পড়েনি। ওড়নার কোনা ধরে টানাটানি শুরু করলো কিন্তু না এতো ছিঁড়ছে না।
ফায়াজ চোখ ছোটো ছোটো করে এতোক্ষন মাহির কর্মকাণ্ড দেখছিলো।এবার বলে উঠলো, ” এই মেয়ে তুমি ওড়না নিয়ে টানাটানি করছো কেনো?
মাহিঃ আপনার কপালের হাগুটা তো পরিস্কার করতে হবে৷ নাকি এই অবস্থায় নিজের বাসায় যাবেন?
ফায়াজঃ আমার কাছে তো রুমাল আছে!…
মাহি রেগে বলে উঠলো, ” রুমাল থাকলে হা করে আমার দিকে কি দেখছেন? নিজের কপাল পরিস্কার করেন।নাকি এটার ঘ্রাণ ভালো লাগছে?
ফায়াজ রেগে বলে উঠলো, ” তুমি তো অকৃতজ্ঞ, বেয়াদব মেয়ে!!…
মাহি রেগে কিছু বলতে গিয়েও বললো না। চুপচাপ পিছনে ফিরে হাঁটা শুরু করলো। ।একবারও পিছন ফিরে তাকায়নি।)
——
নূর আর রুদ্র দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার আকাশ দেখছে।
নূর বলে উঠলো, ” আপনি কাউকে কোনো দিন ভালোবেসে ছেন?
রুদ্র কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো,” না” (তবে এখন প্রতি নিয়ত তোমার উপর মুগ্ধ হচ্ছি। এই যে খোলা চুলে তোমাকে এলোকেশী কন্যা লাগছে।বার বার মৃদু বাতাসে চুল উড়ে এসে বার বার মুখের উপর পড়ছে আর তুমি বিরক্ত হয়ে হাত দিয়ে পিছনে সরিয়ে দিচ্ছে। আর আমি সন্ধ্যার আলোতে মুগ্ধ হয়ে তা দেখছি,মনের কথা মনেই রয়ে গেলো।)
নূরঃ আপনার তো আজকে প্রথম দিন ছিলো হসপিটালে এতো তারাতারি চলে আসলেন যে?
রুদ্র কিছু বললো না। চুপচাপ চোখ বন্ধ করে রেলিংয়ে দুই হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
নূর পিছন ফিরে রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।বৃষ্টি হওয়ার কারনে ছাঁদ পিচ্ছিল হয়ে আছে।নূর পা বাড়াতেই পিচ্ছল খেয়ে পড়ে যেতে নিলেই রুদ্র নূরের কোমর জড়িয়ে ধরলো।
ভয়ে নূর চোখ বন্ধ করে নিয়েছে।যখন মনে হলো সে পড়েনি।আসতে আসতে চোখ খুলে তাকালো।
নূর চোখ খুলে তাকাতেই রুদ্র বললো,”কেয়ারফুললি চলো।সব সময় আমি থাকবো না বাঁচানোর জন্য। আজ দু দু’বার আমি তোমাকে পড়ে কোমর ভাঙা থেকে বাঁচিয়েছি।বলে নূরকে সুজা করে দাঁড় করিয়ে ছেড়ে দিলো।
নূর লজ্জায় কিছুই বললো না। ছি!ছি!ছি দু দুবার উনার সামনেই পড়তে হলো।নূর তোর আর মান সম্মান রইলো না। সব শেষ, এখন উনি নিশ্চয়ই ভাবছেন আমার বার বার পড়ে যাওয়ার রোগ আছে!!…
——
রুহি আজকে জেদ ধরে আছে আদির হাতে খাবে।আদি না খাইয়ে দিলে ও নাকি খাবে না।
বাধ্য হয়ে আদি রুহিকে খাইয়ে দিচ্ছে।
তখনি ড্রয়িং রুমে আগমন ঘটলো নূর,মিম, শুভ্রতা ভাবি আর মাহির।
নূর কে দেখে রুহি নেকামি শুরু করলো।
নূর সে দিকে পাত্তা না দিয়ে, মিম কে বললো রিমোট টা দিতে। ওরা চারজন আজ প্লেন করেছে ভূতের মুভি দেখবে।হঠাৎ নূরের ফায়াজ স্যারের কথা মনে পড়লো।ওদের কাছে রিমোট দিয়ে দৌড়ে উপরে নিজের খুপরি ঘরটার দিকে গেলো মোবাইল খুপরি ঘরে।
মোবাইল নিয়ে আসার সময় রুদ্রের দরজার সামনে এসে থেমে গেলো।দরজা ফাঁকা আসতে করে ঘরে উঁকি দিলো
পুরো ঘরে চোখ বোলালো না রুমে কেউ নেই।আসতে করে রুমে ঢুকে গেলো।
মনে মনে বলে উঠলো, ” সকালে আমাকে অপমান করে ছিলেন, যেনো আপনার ঘরের সামনে না আসি। এক জগ পানি নিয়ে খাটের মাঝ খানে ঢেলে দিলো। এবার একটা বিজয়ী হাসি দিয়ে , চারদিকে তাকিয়ে দেখলো রুদ্রকে কোথাও দেখা যায় কি না। কিন্তু না রুদ্র কোথাও নেই। খুশিতে নাচতে নাচতে নিচে নেমে গেলো।
রুহি ভ্রু কুঁচকে নূরের দিকে তাকিয়ে রইলো।
রুহি বুঝে পায় না।একটা মেয়ে এতটা স্ট্রং হয় কিভাবে। চোখের সামনে একমাস না দুইমাস না তিন তিনটা বছরের প্রেমিক কে দেখেও সে ভেঙে পরছে না। কতো সুন্দর হাসি তামাশার মধ্যে নিজেকে ভেস্ত রাখছে।কেউ দেখলে বুঝবেই না এই মেয়ের মন ভেঙেছে কয়েক দিন আগে।কিন্তু রুহিও ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী না।যেভাবেই হোক সে নূরকে ভেঙে চুরমার হয়ে যেতে দেখতে চায়।যেদিন নূরকে কাঁদতে দেখবে ওই দিন রুহি নিজেকে সার্থক মনে করবে।
সবাই মিলে বসে “THE NUN” মুভিটা দেখছিলো।ভয়ে মিম একদম জমে গেছে।রুহিও খুব ভয় পেয়েছে মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। শুভ্রতা ভবি এমনিতেই খুব ভীতু আর এখন তো মিম কে জড়িয়ে ধরে আছে কিন্তু নূর আর মাহি ঠিক আগের মতোই আছে।মুভি অর্ধেক চলছে এমন সময় কে যেনো টিভি বন্ধ করে দিলো।
সবাই পিছনে ফিরে দেখলো রুদ্র রেগে বোম হয়ে আছে।
মিম বলে উঠলো, ” কি হয়েছে ভাইয়া? কিছু লাগবে?”
রুদ্র শান্ত ভাবে জিজ্ঞেস করলো,” আমার রুমে কে গিয়েছে? ”
কেউ কিছু বলার আগেই রুহি বলে উঠলো, ” আমি দেখেছি কে গিয়েছে!! বলেই নূরের মুখের দিকে তাকালো। (নূর যখন তারাহুরো করে উপরে খুপরি ঘরের দিকে যায়।রুহি ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো। আর রুহি যেখানে বসে আছে এখান থেকে স্পষ্ট রুদ্রের রুমের দরজা দেখা যায়।)
নূর ভয় পেয়ে গেলো।ও তো খেয়াল করেনি এখান থেকে যে রুদ্রের রুম দেখা যায়। এখন কি করবে?
রুদ্র গম্ভীর কন্ঠ বলে উঠলো, ” কাকে দেখেছেন ভাবি?(বয়সে ছোটো হলে কি হবে রুহি তো সম্পর্কে বড়।তাই রুদ্র ভাবি বলেই ডাকে)
রুহি নূরের মুখ দেখে ভেতরে ভেতরে খুশিতে কয়েক বার নাগিন ডান্স দিয়ে নিলো।বেচারি নিশ্চয়ই কিছু করেছে মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে প্রচুর ভয় পেয়ে আছে।রুহি ও সুযোগ পেয়েছে এই সুযোগ কি আর হাত ছাড়া করা যায় ঝটপট বলে দিলো,ভাইয়া আমি নূরকে দেখেছি তোমার রুম থেকে বের হতে।”
সাথে সাথে নূরের মুখটা পাংশুটে হয়ে গেলো।
সবাই চোখ ছোটো ছোটো করে নূরের দিকে তাকালো।
মাহি বলে উঠলো,” তো কি হয়েছে ভাইয়ের রুমে বোন যেতেই পারে!!”
রুদ্রঃ অবশ্যই যেতে পারে কিন্তু কেনো গিয়ে ছিলে নূর?
নূরঃ আসলে ভাইয়া, আসলে…
রুদ্রঃ কি আসলে,আসলে করছো? সত্যিটা বলো?
নূরঃ হাঁ মনে পড়েছে,মনে পড়েছে!! আসলে কি ভাইয়া আমার না একটা সাবজেক্ট বুঝতে ছিলাম না। এখন তো আবির ভাইয়া ও বাসায় নেই যে বুঝিয়ে দিবে। তাই আপনার কাছে গিয়ে ছিলাম কিন্তু আপনিতো রুমেই ছিলেন না।
রুদ্র নিঃশব্দে হেসে দিলো। মেয়েটার কথা শুনলে যে কেউ বিশ্বাস করতে বাধ্য যে সে সত্যি বলছে।
রুদ্রঃ আচ্ছা তাহলে বই নিয়ে আমার রুমে চলে আসো।
নূরঃ না ভাইয়া এখন আর দরকার নেই আমি মাহি আপুর থেকে বুঝে নেবো।
রুদ্রঃ বেশি কথা আমার পছন্দ না। চুপচাপ বই নিয়ে আমার রুমে আসো!!
মাহিঃ রুদ্র ভাইয়া আমারো একটা সাবজেক্টে সমস্যা ছিলো যদি একটু বুঝিয়ে দিতেন!!
রুদ্র কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো,” মাহি তুমি যেই সাবজেক্ট নিয়ে পড়ছো এটার বিষয় আবির খুব ভালো বুঝাতে পারে। তুমি ওর কাছে বুঝে নিও।আর নূর তারাতাড়ি বই নিয়ে আমার রুমে আসো….
রুহির মুখটা ফাটা বেলুনের মতো চুপসে গেলো। সে তো ভেবে ছিলো নূর সবার সামনে রুদ্রের থেকে বকা শুনবে।আর ও সেই একটা ফিল নিবে। কিন্তু প্রতি বারের মতো এবারো ওর আশায় এক বালতি জল ঢেলে দিলো।
——
থুর ভাল্লাগে না এই পড়াশোনা। কোন পাগলে ধরছিলো, কেনো যে বলতে গেছলাম পড়াশোনা কথা।অন্য কথাও তো বলতে পারতাম। আমার এই বা দোষ কি ওই সময় ভয়ে যেটা মনে আসছে বলে দিছি। তাই বলে আধাঘন্টা ধরে বইয়ের সামনে বসায় রাখবো। যা আমি তোরে অভিশাপ দিলাম, তোর কোনো দিন বিয়া হইবো না।বিয়া হইলে ও বউ একটা ডাইনী পরবো।
রুদ্র এতোক্ষন খাটে বসে নূরের দিকেই তাকিয়ে ছিলো।সেই কখন থেকে দেখছে নূর বিরবির করে কি যেনো বলছে।
রুদ্রঃ আমার খাটে পানি কেনো ফেলেছো?
নূরের বুক ভয়ে ধুকধুক করা শুরু হলো।যেটার ভয় পেয়েছিলো সেটাই হলো।
নূরঃ কি!! কিসের পানি ভাইয়া? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
রুদ্রঃ পাক্কা অভিনেত্রী। এক কাজ করো কাল থেকে শুটিং করা শুরু করো। খুব ভালো অভিনয় করতে পারো তুমি।সে যাই হোক আমার বিছানা তোমার কি ক্ষতি করেছে শুনি?( রুদ্র যতই রেগে যাওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু পারছে না। প্রথম যখন বিছানার মধ্যে পানি দেখে ছিলো। খুব রেগে গিয়ে ছিলো। যেখানে ওর রুমে। ওর অনুপস্থিতিতে আসা নিষেধ। সেখানে কেউ এসে বিছানায় পানি ঢেলে গেছে।খুব রেগে গিয়ে ছিলো। কিন্তু যখন জানলো এটা নূরের কাজ হঠাৎ রাগটা হাওয়া হয়ে গেলো।এই যে এখনো রাগ করে কয়টা কড়া কথা শুনাতে চাচ্ছে, কিন্তু না তার তো রাগ হচ্ছে না। কিন্তু সে এমনি এমনি ছেড়ে দিবে না ।)
যেখানে নূর পাঁচ মিনিট ভালো করে পড়ায় বসে না। সেই মেয়ে একঘন্টা ধরে বইয়ের সামনে বসে আছে!!
নূরঃ ভাইয়া খুব খিদে পেয়েছে!!
রুদ্র নূরের মুখের দিকে তাকালো। ও ভাবলো সত্যি মনে হয় খিদে পেয়েছে। নূরের মুখের দিকে তাকিয়ে খুব মায়া হলো। ভেবে ছিলে দু’ঘন্টার আগে ছাড়বে না।কিন্তু আজ প্রথম দিন তাই ছেড়ে দিলো।
রুদ্রঃ কালকে ঠিক একি টাইমে। বই নিয়ে আমার রুমে চলে আসবে।
নূরঃ কিইইইইই!! আবার কালকে ও? আমি তো সব পাড়ি।
রুদ্রঃ ওওওহ আচ্ছা তুমি সব পারো?
নূরঃ জ্বি!!…..
রুদ্রঃ ঠিক আছে বই বের করো….
নূরঃ ভাইয়া বলছি কি। কালকে ঠিক টাইমে আপনার রুমে বই নিয়ে চলে আসবো..
রুদ্রঃ এই তো গুড গার্ল….
নূর বিরবির করে বললো,”তোর মাথা সাদা হনুমান।”
——
🎶” আমার ভিনদেশী তারা
একা রাতেরই আকাশে
তুমি বাজালে একতারা
আমার চিলেকোঠার পাশে
ঠিক সন্ধ্যে নামার মুখে
তোমার নাম ধরে কেউ ডাকে
মুখ লুকিয়ে কার বুকে
তোমার গল্প বলবো কাকে🎶
আজ সাথে গিটার নেই। অদ্ভুত এক অনূভুতি কাজ করে রাতের আকাশ দেখার মাঝে।রাতের শীতল বাতাস মনকে ফুরফুরে করে তুলে।আকাশে হাজারো তারার মেলা। মনে হচ্ছে, এই তারাগুলো প্রতিদিন নতুন ভাবে সাজিয়ে তুলে আকাশটা কে।দূর থেকে কুকুরের আওয়াজ বেসে আসছে। মূহুর্তটা যদি এখানেই থমকে যেতো।
কিরে পেত্নীর রানী প্রতিরাতে ছাঁদে এসে বেসুরে গলায় গান না গেলে বুঝি ঘুম আসে না।কোনদিন না জানি তোর এই গান শুনে এখান দিয়ে যাওয়া ভূত গুলো এই গানের মালিকের প্রেমে পড়ে যায়। তখন কি হবে ভূতে ভূতে ঝগড়া লেগে যাবে একজন কে নিয়ে।
নূর পিছনে না ফিরেই শব্দ করে হেসে উঠলো। সে কন্ঠ শুনেই বুঝতে পেরেছে।
লোকটি আবার মিনমিনিয়ে বললো,” প্লিজ এভাবে হাসিস না। ঠিক বুকের বাম পাশে গিয়ে চিনচিন ব্যথা করে”
চলবে….
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।