#ওঁ_ফিরে_এসেছে (পর্বঃ ২)
#Written_by_M.H (Dp)
আলিশা……..??
আলিশার চেহারা দেখে ড.শামীম ভীষণ ঘাবড়ে যায়।। মনের মধ্যে এক ধরনের ভয় জেগে উঠে..!! ভয়ে আতঙ্কে হার্টবিট বেড়েই চলছে…একদম হার্ট এটাক করার উপক্রম…।।
দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে এক দৃষ্টতে তাকিয়ে আছে মাইশার অভয়ক চেহারাই দিকে…!!
শরীরে এতো টুকু শক্তি নেই যে ড.শামীম সে কেবিন থেকে ফিরে আসবে….কেউ মনে হয় তার শরীরের সমস্ত শক্তি কেড়ে নিয়েছে,, তাকে একদম স্ট্যাচু মতো ধার করিয়ে রেখেছে……!!
“” আমি ফিরে এসেছি,,চারবো না কাউ কে মেরে ফেলবো “”…বলেই ভয়ানক ভাবে হাসতে লাগলো….!!
হঠাৎ হাসি থেমে যায় অদৃশ্য হয়ে যায় আলিশা ভয়ংকর অস্তিত্ব…..মুহূর্তে ই ড.শামীম অনুভব করে কাঁধে শীতল হাতের ছোঁয়া…!!
ঘাড় ঘুরাতেই আলিশার রক্তাক্ত মুখমাখা,কুঁচকুঁচে কালো চোঁখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পরছে,,গালের মাংস গুলো কষে পরছে… মুখের এমন ব্রিচ্ছিরি দেখে ড.শামীম জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে..!!
কেউ পাশে থাকলে নিশ্চিত, তার এমন বিকট চিৎকারে নাক কান দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসতো…!!
ড.শামীম চিৎকার দিয়ে এক মুহূর্তে দাড়ালেন না,,
ভীষণ ভয় পেয়ে দ্রুত দৌড়ে হসপিটাল ত্যাগ করেন….।।
ড.শামীমের এমন অদ্ভুত আচরণে হসপিটালে সবাই হতভম্ব।।
গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরেন বাসার উদ্দেশ্যে ড.শামীম,,, বিড়বিড় করেন বলে উঠে… এ কি করে সম্ভব,আলিশা কি করে ফিরে আসতে পারে..??তাকে তো আমরা নিজ হাতে মেরে মাটিতে ফুতে ফেলেছি..!!
তাহলে সে আসবে কি করে…..?? চোঁখের সামনে আলিশা কে দেখা এটা মিথ্যে ছিল, নাকি এটা একটা শুধু দুঃস্বপ্ন মাএ….??
তাহলে যে হাসঁতে হাসঁতে বলে, সেঁ ফিরে এসেছে… তাহলে কি এটা আলিশার আত্মা ছিল….??
এরকম অদ্ভুত কথাবার্তা বিড়বিড় করে বলতে বলতে বাসায় পৌঁছে যায় ড.শামীম।।
জ্ঞান ফিরে নিজেকে হসপিটালে বেডে শুয়ে তাকতে দেখে হতভম্ব হয়ে যায় ড.ফারজানা।।
ঘাড় পিছনে ঘুরে ফিরতেই আতকে উঠে সেই নার্স কে দেখে।। ভয়ংকর বিকৃতরূপ চেহারা আবার মনে ভীষন ভয় জেগে উঠে ফারজানার…।।
কাঁপাকাঁপা ভয়ের স্বরে বলে উঠে “” কে তুমি “”
ফারজানার এমন অদ্ভুত কথা শুনে নার্স মুচকি হেসে জবাব দেয় “” আমি নার্স ম্যাডাম,, আমার ড্রেস দেখে চিনতে পারচ্ছেন না…??
নার্সের কথা শুনে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে জবাব দেয় “” আমি ড.শামীমের চেম্বারে ছিলাম,তাহলে একানে আমি কি করে এলাম?? “”
নার্স – সেটা তো বলতে পারবো না ম্যাডাম। আমি তো মাএই এলাম হসপিটালে।।
নার্সের কথা শুনে হকচকিয়ে উঠে ফারজানা… এভার ভয়ে শরীর কাঁপতে শুরু করে……
ফারজানা – মাএ এসেছি মানে…? আমার স্পষ্ট মনে আছে তুমি ড.শামীমের চেম্বারে এসে বলছিলে ২০৫ নম্বর কেবিনে রোগী সম্পুর্ণ সুস্থ,,, তোমার ভয়ংকর চেহারা দেখেই তো আমি চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ছিলাম।।
আর তুমি বলছো এসব কিছুই জানোনা… সত্যি করে বলো…তুমি কে??(ধমকের স্বরে)
নার্স – ম্যাডাম, আপনি এসব কি বলছেন.. চেহারা ভয় আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না…?
সত্যি বলছি ম্যাডাম আমি মাএই হসপিটালে এসেছি,, এসেই তো এই কেবিনে আপনাকেই শুয়ে তাকতে দেখলাম।।(করুণা স্বরে)
নার্সের কথা শুনে মাথা চিনচিন করে ব্যথা শুরু হয়ে চিন্তায়, আর কিছুই ভাবতে পারছে না, কি হচ্ছে তার সাথে..? কিন্তু বারবার সেই ভয়ানক চেহারা তাকে ঘ্রাশ করছে….. অনেক খিদে পেয়েছে সকালে কিছু খাওয়া হয়নি।।
ফারজানা কথা না বারিয়ে বেড থেকে উঠে ড.শামীম কে খুঁজতে লাগলো।। না ফেয়ে একজন নার্স থেকে জানতে পারে ড.শামীম বাসায় চলে গেছে। শুনে হতভম্ব ফারজানা..যে একটা দিনেও তাকে একা রেখে জায়নি, সে কিনা আজ তাকে না বলে একাই চলে গেল??
আর কিছু চিন্তা করতে পারছে না মাথাটা পুরো ব্যথা করছে…..
একটা বার ভেবে ছিল ২০৫ নম্বর কেবিন থেকে ঘুরে আসবে ব্যাপারটা কি আদো সত্যি নাকি মিথ্যা কিন্তু মুহূর্তে ই শরীরের দূর্বলতা দেখে আর না গিয়ে বাসায় চলে যায় ড.ফারজানা…..!!
এদিকে ড.শামীম ফ্রেশ হয়ে তার বন্ধু নাবিল (ফারজানার হ্যাসবেন্ড), আবির (বিজনেসম্যান), অনিক (ল-ইয়ার).. সবাই কে ফোন করে জানায় তার সাথে অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যাওয়ার কথা বলে,,,
কিন্তু শামীমের কথা সবাই হাস্যকর মনে করে উড়িয়ে দেয়,, এতে শামীম রেগে গিয়ে অনেক কথা শুনিয়ে দেয়। পরে সবাই সহমত হয় সন্ধ্যায় সবাই রেস্টুরেন্টে দেখা করবে….!!
কথা বলে ফোন কেটে দিয়ে হঠাৎ পিছনে ঘুরে শামীম তার স্ত্রীকে দেখে চমকিয়ে উঠে,,, লাল হয়ে উঠা বড় বড় চোঁখ দুটি দেখে ভয়ে বিষম খেয়ে যায়।।
এভাবে তাকিয়ে তাকতে দেখে.. ধমক দিয়ে বলে উঠে…..
– এভাবে তাকিয়ে আছো কেন, যাও গিয়ে খাবার দাও।।
– ধ্যাততেরি… মনে করে ছিলাম হঠাৎ আমাকে এভাবে দেখে ভয় পাবে কিন্তু তুমি তো ভয়েই পেলে না। উল্টো আমাকে ধমকাচ্ছো ধুর..। (মুখ ঘুমড়ো করে দাঁড়িয়ে তাকে)
– (বিড়বিড় করে) এমনি তেই ভয়ে জান ধরফর করে বেরিয়ে যাচ্ছে তার উপর ভয় দেখানোর ঢং,, যত্তোসব।।
– আসো খাবার দিচ্ছি…!!
বলেই রুম থেকে চলে যায়। শামীম ও আর চিন্তা ভাবনা না করে চলে যায় ডাইনিং টেবিলে।।
খাওয়ার এক পর্যায়ে পঁচা মাংসের গন্ধ নাকে লাগে শামীমের। পঁচা মাংসের দূর গন্ধে বমি আসতে উপ ক্রম। স্ত্রী ব্যাপারটা লক্ষ্য করে বলে….
– হঠাৎ খাবার রেখে দাড়িয়ে হাত দিয়ে মুখ চেপে আছো যে,,, কিছু হয়েছে তোমার..?
– (মুখ থেকে হাত সরিয়ে) পঁচা মাংসের গন্ধ পাচ্ছো। গন্ধে পেট ফুলে যাচ্ছে… বলেই হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে।
– না,, আমি তো কোনো পঁচা মাংসের গন্ধ পাচ্ছি না (অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে)
কথা শুনে বিষম খেয়ে যায় ড.শামীম । আমি গন্ধ পাচ্ছি অথচ সে কোনো পচা গন্ধ পাচ্ছে না… এটা কি করে সম্ভব..?
গন্ধে পেট ফুলে যাচ্ছে চোঁখ লাল বর্ণ ধারণ হচ্ছে আর দাঁড়িয়ে না তাকতে পেরে বেসিনে গিয়ে গর গর করে বমি করে দেয়।।
যেটুকু খেয়ে ছিল সব টুকু বমি করে দেয়। মাইশার ট্রিটমেন্ট করার পর থেকে তার সাথে অদ্ভূত ঘটনা ঘটছে, তাহলে কি মাইশার সাথে আলিশার কোনো যোগ সূএ আছে..?
বেসিনের আয়না সামনে দাঁড়িয়ে এমটা চিন্তা করছিল।
শরীর দূর্বল দেখে তার স্ত্রী তার জন্য স্যুপ করে আনে,তা খেয়ে পএিকা হাতে নিয়ে বিছানায় ঘা এলিয়ে দেয় ড.শামীম।
পএিকা পড়তে পড়তে হঠাৎ পএিকার উপর টপটপ করে রক্ত পরতে দেখে ভয়ে আতকে উঠে হাত থেকে পএিকা ছুরে ফেলেদেয় মেঝেতে।
স্পষ্ট ভয়ার্ত চোঁখে দেখে রক্তে পুরা পএিকা ভিজে জ্যাবজ্যাব হয়ে গেছে।
আবার হঠাৎ করে রুমের দরজা জানালা ঠাস ঠাস করে শব্দ হচ্ছে শন শন করে তীব্র ঝড়ো বাতাস বয়তে শুরু করছে রুমে। রুমের সবকিছু ভেঙে চুরমার করে ফেলেছে মুহূর্তে মধ্যে।।
হঠাৎ সব কিছু নিরব স্তব্ধ হয়ে যায় মুহূর্তে। রুমের বাল্ব গুলো নিভু নিভু করে জ্বলছে।
শামীম ভয়ে শরীর কাঁপছে, ভয়ে কলিজা শুকিয়ে গেছে। ভীষণ পানি পিপাশা পেয়েছে, দৌড়ে দরজা খুলতে গেলে দেখে দরজা লক করা বাহিরে থেকে। ভয়ে জোরে জোরে ডাকতে থাকেন তার স্ত্রীকে কিন্তু স্ত্রীর কোনো সারা শব্দ পাচ্ছে না।
হঠাৎ রুমে কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে গলার স্বর নিমিষেই উদাও। ধুরুধুরু বুকে, ভয় আতঙ্কে পিছনে ঘুরে দেখে জানালার পর্দার পিছে একটা ছাঁয়া। সে কান থেকে মেয়েলি কন্ঠে কন্নার আওয়াজ আসছে।
ধীরে ধীরে পা টিপে টিপে এগিয়ে যাচ্ছে পর্দার কাছে। বুকের হৃদস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে, শরীর টি শার্টটি ভিজে একা কার।
পর্দায় একবার হাত দেয় আবার ভয়ে সরিয়ে আনে। ভয়ে পা কাঁপছে.. মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না,,কান্নার আওয়াজ বেরেই চলছে কোনো ভাবে থামছে না সে কান্না।
হঠাৎ করে পর্দা সরিয়ে দেয়ে একটা মেয়ে সাধা কাপড় পরা, চুল গুলো লম্বা কোমড় বরাবর শুধু পিছনের ফেইচ টা দেখা যাচ্ছে। অদ্ভুত ব্যাপার সেই পঁচা মাংসের গন্ধটা এর থেকে আসছে।
হঠাৎ করে মেয়েটার ফেইচ টা দেখে মুখ ফুচকে অস্ফুটভাবে বেরিয়ে আসে “”আলিশা””। মুহূর্তে উচ্চ স্বরে ভয়ংকর ভাবে হেসে উঠে… ড.শামীম ভয়ানক ব্রিচ্ছিরি চেহারা দেখে ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠে… মুহূর্তে শামীমের বুকে হাতের এয়া বড় নোকের আঁচড় দিয়ে বুকটা কে ক্ষতো বিক্ষতো করে দেয় “”অতৃপ্ত আত্মা আলিশা””
শামীমের দেহটা ছিটকে মেঝেতে পরে ধরফর করে নাঁচতে তাকে,গলা দিয়ে বেরিয়ে আসে চিৎকারের আর্তনাধ……..””ভয়ঙ্কর রুপ ধরণ করে আলিশা””……………….।
এদিকে মাইশা সম্পুর্ণ সুস্থ। কিন্ত অদ্ভুত ব্যাপার মাইশার শরীরে কোনো আঁচড় বা ক্ষতের চিহ্ন টুকু নেই.. অবাক বিস্ময় চোঁখে দেখছে তার বাবা মা ও ডক্টর রা।।।
সম্পুর্ণ সুস্থ তাকাই ডক্টর মাইশাকে রিলিজ করে দেয়। বাসায় ফিরে আসে মাইশা ও তার মা বাবা।
মাইশার বাবা, মাইশাকে জিঙ্গাস করেন মাঝ রাএে এমন কি হয়েছিল যা এমন বিবস্ত্র ক্ষতো বিক্ষতো হয়ে মেঝেতে পরে ছিল…??
বাবার কথার কোনো উওর না দিয়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে বিছানায় ঘা এলিয়ে দেয়ে….গত রাতের কথা ভাবতেই ঘা শরীরের লুম কাটা দিয়ে উঠে।।
হঠাৎ চোঁখ যাই বা হতে আঙ্গুলে আংটি দিকে..!!
যেটা গতকাল বান্ধুবী দের সাথে পিকনিক থেকে ফেরার পথে জঙ্গলের রাস্তায় পেয়েছিল…এটা আঙ্গুলে দেওয়ার পর থেকেই তার সাথে অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে…!!
সে ইচ্ছে করলেও এর থেকে সোনার বা হিরার আংটি কিন্তে পারে, কারণ সে দেশের বিখ্যাত বিজনেসম্যান দের মধ্যে একজন হল তার বাবা।।
আংটির অদ্ভুত আকর্ষণ ডিজাইন দেখে পাওয়া জিনিসটা ফেলে দিতে ইচ্ছে করছে না… কেমন একটা মায়া জন্মাচ্ছে আংটি টার উপর…মুহূর্তে মনে আসে রাতে ঘটে যাওয়া অদ্ভুত ঘটনার সাথে এই আংটির কোনো কানেক্টিভ নেই তো………….?
এদিকে ফারজানা বাসায় এসে দেখে নাবিল ফোনে কার সাথে হেসেঁ হেসেঁ কথা বলছে। অথচ তাকে একটা বার সকালে ফোন করে বলেনি বাসায় আসতে এতো দেরি হচ্ছে কেন। বিয়ের এক মাস যেতে না যেতেই নাবিলের পরিবর্তন গুলো চোখে পরছে…ফোনে কার সাথে কথা বলে.. জিঙ্গাস করলে বলে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলি।
আজ রুমে ডোকে চুপিচুপি বেলকুনির দরজার পাশে কান পেতে যা শুনলো… তা শুনে পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল ফারজানার……………??
চলবে……..
নোটিশ //অতৃপ্ত আলিশার হত্যার রহস্য জানতে পারবেন আগামী পর্বের পর থেকে…….????
★ নতুন আইডি তাই গল্প গুলো রিপিট করছি//
অন্য group যারা এই গল্প ৪ পর্ব পর্যন্ত পড়েছেন
,তারা একটু ধৈর্য্য ধরুণ next পর্ব পেয়ে যাবেন যথা সময়ে…. ধন্যবাদ।
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)