#ক্ষণিকের_বসন্ত
#পাট:৪
#লেখিকা:Angel Frozen (Ñîşhì)
ভাল লাগছিল না তাই বাড়ির ভেতরে আসার সময় হঠাৎ করে পা পিছলে পড়ে যায় কিন্তু একা নয় সাথে কাউকে নিয়ে পড়ে।
বেচারি কার হাড্ডি গুড্ডি ভাঙ্গছে তা দেখে অবাক,,,
আরে এতো আমার খামারবাড়ির বন্ধু,,
তাই বলে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে বন্ধু তুমি ঠিক আছো তো??
ছেলেটা :এভাবে যদি কোনো হাতি কারো উপর পড়ে তাহলে কি বাঁচা যায় বলো।
ত্বায়িহা :এই মোটেই আমি হাতি না,,,
অযথা আমাকে রাগাবে না হুহ।
ছেলেটা :মেডাম আপনি একটু কষ্ট করে যদি আমার উপর থেকে উঠতেন তাহলে খুশি হতাম আর কতো সময় এভাবে আমার উপর থাকতে চান।
ত্বায়িহা :নিজেকে একবার দেখে,,
তাড়াতাড়ি উঠে বলে ওহ সরি বুঝতে পারি নাই।
ছেলেটা :হুম সমস্যা নাই।
ত্বায়িহা :তা তুমি এখানে কি করে এটা তো বড়লোকদের অনুষ্ঠান??
ছেলেটা :একটু কাজে আসছি,,, তা তুমি এখানে কেন??
ত্বায়িহা :আমি এখানে না থাকলে কই থাকবো বলো??
ছেলেটা :মানে তুমি এখানে থাকো,?
ত্বায়িহা :আরে না,,আমিও তোমার মতো এখানে কাজে আসছি।(মিথ্যা কথা আমি এ বাড়ির বড় বউ তোমাকে বলা যাবে না,,
কেন বলবো সিমপ্যাথি চায় না কারো মনে মনে)
ছেলেটা :তাই,,কিন্তু তোমাকে দেখে তা মনে হচ্ছে না,, মনে হচ্ছে তুমি এদের এক জন।
ত্বায়িহা :কেন আমার গাঁয়ে কি সিল দেওয়া আছে যে আমি এবাড়ির কেউ???
ছেলেটা :আরে নাহ,,এতো দামী ড্রেস পড়ছো তো তাই,,,বলছি আর কি!!
ত্বায়িহা :বড়লোকদের বাড়ির অনুষ্ঠানে কি যে কোনো ড্রেস পড়ে আসা যায়,,,তাই বান্ধবীর ড্রেস ধার করে পড়ে আসছি। (ডাহামিথ্যে কইছি সরি)
ছেলেটা :হুম ভাল,, এই ড্রেসে তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
ত্বায়িহা :হুম ধন্যবাদ,,, তোমাকে কিন্তু সেই রকম লাগছে,,রাজকুমার রাজকুমার,,, রাজকুমারী খুঁজতে আসছো না কি??
ছেলেটা :আমার পোড়া কপাল কোনো রাজকুমারী আমাকে পছন্দ করবে না।
ত্বায়িহা :আরে তোমার মতন ছেলেকে যে মেয়ে রিজেক্ট করবে,,সে মেয়েকে আমার কাছে নিয়ে আসবে এমন ধুলাই দিবো না তোমাকে রিজেক্ট করার সাধ মিটে যাবে।
ছেলেটা :এই থামো থামো এতো মারামারি করতে হবে না,,,এখানে দুজনে কাজে আসছি,, তাই কাজ করাটাই ভাল।সো তুমি তোমার কাজে যাও।
সেখান থেকে বিদায় নিয়ে ত্বায়িহা নিজের রুমে চলে যায়।
‘
‘
‘
এদিকে অনুষ্ঠানের মাঝ পথে একটা অ্যানাউন্সমেন্ট করা হয় যাতে সবাই অবাক হয়ে যায়।
সৈয়দ জাবিন চৌধুরী :আজ আপনাদের সকলের মাঝে আমার ছেলে সৈয়দ জুরাইন চৌধুরী উপস্থিত আছে,,,,
তাকে স্টেজে আসার জন্য আহবান জানো হচ্ছে ,,, জুরাইন প্লিজ স্টেজে আসো।
এদিকে হঠাৎ জুরাইনের নাম শুনে মীরজাফরের কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে,,,
সামনে এতো মিডিয়া,,
এতো সাংবাদিক তাদের হাজার প্রশ্নে না নিজের রেপুটেশন আজ খারাপ করে দেয় এ ছেলে।
জুরাইন :স্টেজের দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে,,,
হাজার হাজার মিয়ার ক্যামেরা,,
ফটোগ্রাফার সবাই ওর ছবি তুলতে চায়,,
কিন্তু ওর বড় চাচাজির নিষেধ থাকায় কেউ ছবি তোলে না
জুরাইন স্টেজে গিয়ে বলে,,জানি আপনাদের মনে হাজারো প্রশ্ন,,
আমি এখানে কি ভাবে,,
আগে কেনো আসি নাই,,
এসব প্রশ্নের উওর আমার চাচাজি সব থেকে ভাল দিতে পারবে তাই না চাচাজি,,
একটা ভ্রু কুঁচকে বলে।
মীরজাফর :জুরাইন এসব কি হচ্ছে,,
আমি কি ভাবে এসবের উওর দিবো,,,
আস্তে করে বলে।
জুরাইন :চাচাজির কানের কাছে এসে বলে,,,
আপনার থেকে ভাল কে উওর দিবে,,
আপনি তো জানেন খুঁনি আমি কি না,,
সো উওর দাও নয়তো নিজের সম্মান হারাও সাথে অপজিট পার্টির রাজনীতিবিদ দের সুবিধা করে দাও চুপ থেকে।
চাচাজি :সবার উদ্দেশ্য করে বলে জানি আপনাদের অনেকের অনেক প্রশ্ন সব প্রশ্নে উওর তো দিতে পারবো না,,
কিছু উওর দিবো।তাই আপনারা প্রশ্ন করুণ!!
প্রথম প্রশ্ন :আপনার ভাতিজা জেল থেকে বাহিরে আসলো কি ভাবে???
মীরজাফর :তাকে জামিনে ছাড়িয়ে আনা হয়ছে।
দ্বিতীয় প্রশ্ন :জামিনে যখন ছাড়িয়ে আনছেন তখন দু বছর আগে কেনো ছাড়িয়ে আনেন নি??
মীরজাফর :দেখুন সব সময় সব ধরনের সুযোগ হয় না তাই।তখন ছিল না এখন হয়ছে।
তৃতীয় প্রশ্ন :সুযোগ ছিলো না,,না কি আপনি চান নি তাই??
মীরজাফর :এসব কোন ধরনের কথা,,নিজের কলিজার টুকরাকে কেউ জেলে রাখে??
চতুর্থ :আপনি কি সে সময় ভোট পাবার জন্য নিজের ভাতিজাকে তুরুপের এক্কা হিসাবে ব্যবহার করতে জেলে রাখার প্লানিং??
মীরজাফর :দেখুন তখন একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়ছে তাই,, সে সময় পারি নাই এখন পারছি বাহিরে আনছি।
পঞ্চম :আপনি তো ব্যবসায়ীর সাথে সাথে রাজনীতিবিদ তাহলে নিজের পরিবারের জন্য নিজের পাওয়ার কাজে না লাগিয়ে ভাতিজা কে জেলে রাখছেন,,
তার উপর সে মাডার কেসের আসামি,,তাকে এখন বাড়িতে রাখবেন।
মীরজাফর :আপনার যেমন ভাবছেন তেমন নয়,,
আমার পরিবার জানে আমি জুরাইন কে নিজের থেকে বেশী ভালবাসি,,, তাই বলে বুকের বামপাশে হাত দিয়ে নিচে বসে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,,, তাকে তাড়াতাড়ি বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়।
তার পারিবারিক ডাক্তার তাকে চেকআপ করে বলে অতিরিক্ত টেনশনের জন্য সে মাইনার স্টোক করছে সো তাকে রেস্ট করতে দিতে হবে।।
তারপর ডাক্তার এসে বলে মিস্টার জাবিন পার্টি টা এখানে সমাপ্তি করেন।
বাহিরে গিয়ে জাবিন চৌধুরী সবার উদ্দেশ্য করে বলে আমার বড় ভাই জান হঠাৎ অসুস্থ হবার কারণে আজকে অনুষ্ঠান এখানেই সমাপ্তি।
সবাই কে ধন্যবাদ এখানে আসার জন্য।
সবাই যে যার মতো চলে যায়,,,
এদিকে ত্বায়িহা তার চাচাজি শ্বশুর অসুস্থ হবার কথা শুনে তাকে কে দেখে নিজের ঘরে চলে যায়,,
কিন্তু বেচারি জানে না তার বর আসছে।সে এ খবরে অবগত ছিল না।।
তার জন্য এটাই হয়তো অনুষ্ঠানের সারপ্রাইজ ছিলো,,তা সে জানতো না।
তারপর সে নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে যায় গভীর ঘুমে।
এদিকে জাবিন,, জিরান,, জুরাইন সবাই
মীরজাফরের ঘরের বাহিরে অপেক্ষা করছে।
তার জ্ঞান ফিরে আসার জন্য।
ডাক্তার এসে বলে সে এখন গুমাবে তাকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়ছে সো,,
আপনারা সবাই রাত না জেগে ঘুমিয়ে পড়ুন।
সবাই যে যার রুমে চলে যায়,,
জুরাইন একবার মীরজাফরের রুমে গিয়ে তার পাশে বসে। তারপর বলে চাচাজি আজ রাতটা শান্তি মতন ঘুমিয়ে নাও।
কাল থেকে তোমার রাতের ঘুম আমি হারাম করে দিবো।আমার সাথে তোমার কিসের এতো লড়াই তাও আমি জেনেই ছাড়বো,,
তোমাকে আমার সাথে করা,,
তোমার সব অন্যায়ের শাস্তি আমি দিবো।
‘
‘
‘
জুরাইন নিজের রুমে চলে আসে,,,
সোজা এসে আলমারি থেকে নিজের ড্রেস নিয়ে বাথরুম হতে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে তার বিছানায় ওরনা দিয়ে মুখ ঢেকে একটি মেয়ে ঘুমিয়ে আছে।।।
চিৎকার করবে তার আগে ত্বায়িহার মুখের উপর থেকে ওড়না টা সরে যায়।
ত্বায়িহার চেহারা দেখে ওর বুকের মাঝে সেত করে ওঠে।।
এই সে মেয়ে যার সাথে।তার নামের বিয়ে হয়ছে,,,
ত্বায়িহার পাশে বসে বলে,,
কেউ কোনোদিন জীবনে অন্ধকার নিয়ে সুখী হয় না,,
আমার জীবনের অন্ধকার খুব বেশী কালো,, তাতে চায় না তোমার মতো নিষ্পাপ কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাক।
আমার জীবনে জড়ালে কোনোদিন তুমি সুখী হতে পারবে না।।
আমি যে #ক্ষণিকের_বসন্ত যাকে তুমি চায়লেও সারাজীবন পাশে হয়তো পাবে না।
কি হবে বলো ক্ষণিকের জন্য এমন একটা সম্পর্ক্যের মায়াজালে জড়িয়ে। তার থেকে
তুমি তোমার মতো ভাল থাকো।
আমার এই ক্ষণিকের জীবনে কোনো বসন্ত নেই,,
তাই তোমাকে জড়াব না এই #ক্ষণিকের_বসন্তনের বাধনে,,,তোমাকে মুক্তি দিয়ে দিবো এ সম্পর্কের দায় থেকে ।।
তাই বলে সে তার রুম থেকে বাহির হয়ে পাশের রুমে গিয়ে ঘুমায়।
পরেরদিন সকালে মীরজাফর…..
(পরেরদিন হয়তো কারো সর্বনাশের শুরু আর নয়তো কারো বসন্তের শুরু জানি নাহ)
‘
‘
‘
‘
চলবে…