#গ্যাংস্টার
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ১০
..
রানি এখন কি করবে বা রাজ কে কি বলে সান্ত্বনা দিবে তা তার জানা নেই।
সে শুধু স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু বুকের ভেতর খুব ব্যথা লাগছে। রাজ কে সে নিজের দুই হাতে আকঁড়েও ধরছে না। শান্ত ভাবে শুধু দাঁড়িয়ে আছে।
রাজ রানি কে আরো শক্তে বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে কান্না করে বলতে লাগল,
“প্লিজ ডোন্ট লিভ মি। আমি মরে যাবো। প্লিজ রানি প্লিজ ডোন্ট লিভ।”
রাজের এমন কাতর সর রানির মন কে ব্যাকুল করে দিচ্ছিল।
রানি নরম হাতে আস্তে করে রাজ কে নিজের হাতে আবদ্ধ করে নেয়। রাজ রানি কে খুব শক্তে জড়িয়ে ঘাড়ে মুখ গুঁজে দিয়ে কান্না করছে তো করছেই।
রানির নরম মন মুহূর্তে মুহূর্তে কেঁদে উঠছে। চোখের কোণায় পানি ঝিকঝিক করছে।
“জানো ছোট বেলায় মা চলে গেছে আমায় ছেড়ে। বাবাও একা করে চলে গেল। আমার বলতে এখন শুধু তুমি আছো। আর কেউ নেই। দুনিয়াতে আমার আর কিচ্ছু নেই। প্লিজ রানি আমায় ছেড়ে যেও না। প্লিজ ডোন্ট লিভ মি। বিশ্বাস করো আমি মরে যাবো।”
রাজের প্রতিটা কথায় রানি কেঁপে কেঁপে উঠছে।
রাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলতে লাগল,
“শান্ত হোন। যাবো না। কোথাও যাচ্ছি না আমি।”
রাজ রানি কে বুক থেকে তুলে গালের দুই পাশে হাত রাখে।
“সত্যিই যাবে না তো? প্রোমিজ করো যাবে না আমায় ছেড়ে।”
রানি মাথা নেড়ে “হুম” জবাব দেয়।
রাজ রানির নরম ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। নিজের আষ্টেপৃষ্ঠে ঠোঁটযোগল জড়িয়ে নিয়েছে। রানি চোখ বড় বড় করে আছে। রাজ চোখ বন্ধ করে নিজের কাজে ব্যস্ত।
রাজের এমন মায়াময় মুখ দেখে রানির ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। রাজ কে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।
রাজ বেশ সময় পর রানি কে কোলে করে বিছানায় নিয়ে যায়। দুজন এই দুনিয়ার বাহিরের জগতে বিরাজ করছে। দুনিয়ার কোনো খেয়াল এখন আর কাজ করছে না তাদের মাঝে। তারা তো দুজন দুজনের ঘোরে সময় কাটিয়ে দিচ্ছে। রানি কে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে রাজ নিজের সাদা শার্ট গা থেকে সরিয়ে শরীর উন্মুক্ত করে নেয়। রানির দিকে অগ্রসর হয়। রানির দুই ঠোঁটের মধ্যখানে নিজের ঠোঁট জায়গা দেয়। রানির হাতের মাঝে নিজের হাত রাখে। আঙ্গুলের মাঝে মাঝে আঙ্গুল দিয়ে হাতে হাত জড়িয়ে নেয়।
রানির গলায় নিজের মুখ ডুবায়। ক্রমশ রানির সারা অঙ্গে নিজেকে স্থাপন করে নেয় রাজ। রানি কে আজ পরিপূর্ণ এক অন্যরকম ভালোবাসার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে রাজ।
রানি কে নিয়ে ভালোবাসার চূড়ান্ত পর্যায় উপনীত হতে লাগে রাজ। ভালোবাসার অতল সাগের রানি কে নিয়ে রাজ ডুবে যাচ্ছে।
রানিও যেন পরম সুখে রাজের উন্মুক্ত পিঠ নখ দিয়ে আঁকড়ে ধরছে। সুখের এক ভিন্নরকম ঠিকানায় দুজন পারি দেয়।
সকালের সোনালি রোদ যখন রানির চোখ স্পর্শ করে রানি তখন মিটমিটিয়ে উঠে।
সামনেই তাকিয়ে দেখে ধবধবে সাদা শরীরের অধিকারী রাজ তাকে জড়িয়ে নিয়ে শুয়ে আছে। গায়ে নেই কোনো সুতা। উন্মুক্ত বুকের দিকে রানি তাকিয়ে ঘনঘন চোখের পাতা নাড়ছে। রাজের চুল গুলি কপালে এসে পড়ছে। চিকন জাম কালো ঠোঁটের মাঝে কি রাজ্যের শান্তির আভাস।
রানি কে আকঁড়ে শুয়ে আছে। রাজ কে এমন অবস্থায় দেখে রানির বুকের ভেতর ধুকবুক শুয়ে হয়ে যায়।
টুক করে রাজের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বুলিয়ে দেয়। রাজ একটু নড়েচড়ে উঠলে তাড়াতাড়ি করে নিজের জায়গায় শুয়ে পড়ে রানি। রাজ আরো শক্তে নিজের বাহুডোরে তুলে নেয় রানি কে।
রানি আস্তে আস্তে খেয়াল করল তার শরীর ঠিক নেই। মুহূর্তে সব মনে পরতে লাগল তার।
নিজের মাথায় নিজেই একটা চর দিয়ে বিড়বিড় করতে লাগল,
“ইসস কি করলাম আমি? কি হয়ে গিয়ে ছিল আমায়? আল্লাহ। তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে নিতে হবে। না হলে ডেভিল রাক্ষস আবার না জানি কি করে বসে।”
রানি উঠতে গেলে রাজ তাকে টেনে আবার শুয়িয়ে দেয়।
রানি শুকনো ডুক গিলে চোখ বন্ধ করে নেয়। রাজ মিটমিট করে তাকিয়ে রানি কে দেখে একটা মুচকি হাসি মারে।
সামনের চুল গুলি কানের পাশে গুঁজে দিয়ে মুচকি হাসি হাসতে থাকে। রানির লাল ঠোঁটে আলতো করে একটা কিস দেয়। রানি সাথে সাথে চোখ খুলে তাকায় রাজের দিকে।
রাজ এক গালে জগৎ জয়ের একটা হাসি দেয়।
রানি রাজ কে ঠেলে দিয়ে চাদর জড়িয়ে নেয় শরীরে। তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
“একদম আমার কাছে আসবেন না আপনি।”
রানির কথায় রাজ জবাব না দিয়ে অন্য দিকে ফিরে মুচকি হাসতে লাগে।
রানি কিছু না বলে ওয়াশরুমের দিকে চলে যায়।
“ওয়েট। ফ্রেশ হয়ে এসে পড়বে টা কি? নাকি আমার মাথা আরো বিগড়ে দেওয়ার চিন্তায় আছো?”
রাজ কথাটা শেষ করে জোরে হাসি দেয়।
রানি ভ্রু ঠোঁট কুঁচকে রাজের দিকে তাকায়। কিছু বলতে গিয়েও বলে না। ভাবতে থাকে “আসলেই তো আমি বাসা থেকে কিছুই আনি নি পড়ব টা কি? এখন কি.. ছিঃ ছিঃ।”
রানির এমন মুখ দেখে রাজের খুব হাসি পায়।
মুখে দুই আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁট টিপে টিপে হাসতে থাকে।
রানি মন খারাপ করে সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে।
“আলমারি তে দেখো এক সাইডে তোমার যা যা লাগার সব আছে। ওখান থেকে যেটা মন চায় সেটা নিয়ে ওয়াশরুমে যাও।”
রাজের কথায় রানির বেশ অবাক লাগে। লোক টা নজর কেমন। সব দিকে নজর রাখে গ্যাংস্টার টা। হয়তো কাল কেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল। এই সব তো রাজ চৌধুরীর কোনো ব্যপারই না।
রানি আলমারি থেকে তাড়াতাড়ি হাতের সামনে যা পেয়েছে তা নিয়েই ওয়াশরুমে দৌড়।
রানির এমন দৌড় দেখে রাজের খুব হাসি পায়। খুব করে হাসেও।
রানি কালো একটা শাড়ী পড়ে বের হয়েছে। সাথে লাল গোলাপির একটা ব্লাউজ। লম্বা চুল দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। সাদা মুখ টা বেশ শুভ্র লাগছে।
রানি সামনে এগিয়ে গিয়ে পর্দা সরিয়ে দেয়। কাঁচের ও পাশ থেকে রাজের লাগানো সবুজ এত বড় বড় গাছ দেখা যাচ্ছে। শুধু সবুজ আর সবুজ। রোদের দেখা দিচ্ছে। রানি এমন দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়। তারপর চুলের টুপটুপ করে পানি টাওয়াল দিয়ে মুচতে থাকে।
রাজের চোখ যেন রানির দিকেই আটকে আছে। শাড়ী তে রানি কে বেশ লাগছে।
মোহ ভরা চোখ নিয়ে রাজ বিছানা ছাড়ে।
রানির পেছনে হাত পেঁচিয়ে তাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। ভেজা চুলে মুখ ডুবায়। রাজের ছুঁয়ায় রানি শিউরে উঠছে। শরীর কেঁপে জ্বর আসলে যেমন হয় তারো তেমনি হচ্ছে। উষ্ণ রক্ত যেন আরো গরম হতে থাকে।
রাজ কে কোনো রকম ছাড়িয়ে রানি চলে যেতে নিলে রাজ সেখানেই দাঁড়িয়ে তার হাত ধরে আটকায়। হেঁচকা টানে নিজের বুকের উপর আনে।
রাজের উন্মুক্ত বুকের দিকে রানি ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে আছে।
রাজ বুঝতে পেরে মুচকি হাসে। রাজ সামনের চুল গুলি রানির কানের পাশে গুঁজে দিয়ে রানির দিকে মুখ বাড়ালে রানির হুশ ফিরে। রাজের হাতের ফাঁক দিয়ে রানি নিচে বসে পড়ে। যার ফলে রাজের আশা বিফলে যায়। চোখ মেলে রানি কে না দেখতে পেয়ে সামনে তাকায়।
রানি তার থেকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে চুল মুচ্ছে। রাজ আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে এলে সে পেছনে যেতে থাকে।
যেতে যেতে একদম ধপ করে রানি সিঙ্গেল সোফায় বসে পড়ে। রাজ সোফার হাতলে হাত দিয়ে তার দিকে ঝুঁকে যায়। রানি ভয়ে শুষ্ক ঢুক নেয়। চোখ মিট মিট করে।
রাজ বেশ কিছু সময় এই ভাবেই রানি কে দেখে।
“ভয় পেলে না তোমায় দারুণ লাগে। লাল লাল গাল লাল ঠোঁট আরো যেন রঙ্গিম হয়ে যায়। বিশেষ করে নাক টা যেন টুকটুকে গোলাপ ফুল হয়ে উঠে। আর চোখ মিটমিট করা ঘন চোখের পাতা ফেলা জাস্ট মনোমুগ্ধকর লাগে।”
রাজ রানির দিকে আরো ঝুঁকে ফিসফিস করে বলে,
“এই যে বুকের বা পাশ টা দেখছো এখানে রক্ত টগবগ টগবগ করে। তোলপাড় শুরু হয়ে যায় তোমার ওমন রূপ দেখলে। ইচ্ছে করে মনে গহীনে ডুকিয়ে রাখি তোমায়। ভিন্ন দেশে চলে যেতে ইচ্ছে হয় তখন।”
রাজ এটা বলেই মুচকি হাসি দেয়।
তারপর রানির হাত থেকে টাওয়াল টা ছু মেরে নিয়ে ওয়াশরুমে যায়।
ওয়াশরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে ঠোঁটের ইশারায় কিস দেয়। আবার মুচকি হেসে ভেতরে চলে যায়।
রানি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে ঘনঘন চোখের পাঁপড়ি ফেলে।
…
“পিচ্চি পাকনামি করতে হবে না। চুপচাপ থাকবে। আমি ব্রেকফাস্ট করে দিয়ে গেলাম। খেয়ে নিবে। আর একটু পর আমেনা আন্টি আসবে যা খাবে বলে দিবে উনি তোমায় রান্না করবে দিবে। অসুবিধা হলে জানাবে আমায়। সাবধানে থেকো আসছি।”
রাজ কথা গুলি শেষ করে রানির দিকে ঝুঁকে পড়ে। ফলে রানির মাথা একটু হেলিয়ে দেয়।
রাজ মুচকি হেসে রানির ঘাড়ের পেছনে হাত দিয়ে নিজের দিকে টেনে নেয়। কপালে চুমু দিয়ে রাজ সোজা রানির ঠোঁটে চুম্বন করে বসে।
রানি বেচারা চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে।
রাজ উঠে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসে। তারপর চলে যায়।
“ডেভিল রাক্ষস এমন কেন? উনি আস্তো পঁচা। না হলে আমায় এমন ভাবে ঠকাতে পারল? কি করে করল এমন টা? আরেক টা বিয়ে করে দিব্যি আমায় বিয়ে করে নিল। তাহলে ওই মেয়ে টার জীবন কেন নষ্ট করল? না বিষয়টা একটু দেখতে হবে।”
রানি নিচের দিকে যায়। বড় টেবিলের উপর খাবার দেখতে পায়। তাড়াতাড়ি করে সেখানে বসে গপগপ করে খাবার খেতে থাকে।
রাজ রানির এমন খাওয়ার ভাব দেখে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।
তার বাসা পুরো টা সিসি ক্যামেরায় আবদ্ধ। রানি কে দেখছে আর মুচকি হাসছে রাজ।
একটু পর আমেনা চলে এলো। রানি কে দেখে তো তিনি অবাক।
“মা তুমি?”
“আ আপনি?”
“রাজ বাবা আমার কথা কিছু বলেনি তোমায়?”
রানি মনে মনে ভাবে এটাই হয়তো আমেনা আন্টি।
“আপনি আন্টি না?”
“হ্যাঁ মা রাজ বাবা আমায় আমেনা আন্টি বলেই ডাকে।”
“ও।”
“হুম। নাস্তা করেছো?”
“জ্বি।”
“আরো কিছু খাবে?”
“না আন্টি আমার লাগলে আমি বলে দিব।”
“ঠিক আছে।”
আমেনা আন্টি ভেতরে গেলে। রানি বসে বসে টিভি তে কার্টুন দেখছে।
হঠাৎ তার মনে হলে আমেনা আন্টি কে জিজ্ঞাস করলে অনেক কিছু পাওয়া যাবে। তাই তাড়াতাড়ি সে রান্নাঘরে যায়।
“আন্টি আন্টি।”
“হ্যাঁ মা কিছু লাগবে?”
“না। আচ্ছা আন্টি আপনি এখানে আছেন কত দিন?”
“অনেক বছর সেই রাজ বাবা ছোটকাল থেকেই আছি।”
“তাহলে আপনি অনেক কিছুই জানবেন উনার সম্পর্কে।”
“….
“না মানে আচ্ছা বাদ দিন। আন্টি উনার কি আগে বিয়ে হয়েছিল?”
“কি বলো এই সব তুমি? রাজ বাবা তোমায় খুব ভালোবাসে। অন্য বড়লোক ছেলেদের মতো রাজ বাবা আজ পর্যন্ত তুমি ছাড়া কাউকেই বাসায় আনেনি।”
“….
“কি ভাবছো তুমি?”
“ন না আন্টি কিছু না।”
রানি তাড়াতাড়ি করে সেখান থেকে চলে আসল।
মনে মনে বলতে থাকে,
“তাহলে? উনি কি সত্যিই বিয়ে করে নি? নাকি আন্টি জানে না? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। কি হচ্ছে এই সব? সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে আমার।”
রানি ভাবতে ভাবতে সকাল পার করে দুপুর গড়িয়ে দিল।
কলিংবেল বাজচ্ছে আমেনা রান্নাঘরে। তাই রানি ভাবতে ভাবতে গিয়ে দরজা খুলে দিল। সামনে তাকিয়ে দেখে রাজ হাতে এত্তগুলি আইসক্রিম নিয়ে এসেছে।
রাজ কে পাত্তা না দিয়ে রানি এক লাফ দিয়ে সেই গুলি নিয়ে সোফার দিকে দৌড়ে যায়।
রাজ ঠোঁট উল্টিয়ে হেসে দরজা লক করে বাসার ভেতরে যায়।
রানি কিছু না বলে বা না ভেবেই আইসক্রিম খাওয়া শুরু করে। পাশে বসে রাজ গালে হাত দিয়ে হা করে দেখছে।
রানির সেই দিকে কোনো নজর নেই। সে বাচ্চাদের মতো আইসক্রিম খাওয়াতেই ব্যস্ত।
তার সামনে যে একজন সুদর্শনে পুরুষ যে কি না তার হাজবেন্ট। সে বসে আছে তাকে দেখছে সে দিকে তার নেই ভ্রুক্ষেপ। সব সময় সে যেভাবে আইসক্রিম খায় সেই ভাবে খাচ্ছে।
রাজ হঠাৎ রানির ঘাড়ের পেছনে হাত দিয়ে মুখ এগিয়ে আনে।
ঠোঁটের পাশে লেগে থাকা আইসক্রিম টা সে জিহ্ব দিয়েই চুষে নেয়। তারপর রানি কে ছেড়ে দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।
রানি শুকনো ঢুক গিলে। লজ্জায় আইসক্রিম গুলি নিয়ে সেখান থেকে উঠতে গেলে রাজ তার হাত ধরে বসিয়ে দেয়।
রানি রাজ কে পিছন করে বসে। রাজ রানির সামনে গিয়ে বসে তাকে দেখছে।
রানি আবার উল্টো হলে রাজ তার সামনে যাচ্ছে। তিন চার বার এমন করার পর রাজ নিজের এক হাত দিয়ে রানি কে টেনে তার গায়ের সাথে মিশিয়ে বসায়।
“চুপ করে খাও।”
রানি কিছু না বলেই খাওয়া নিয়ে পড়ে যায়।
“তুমি কি ভরাসিয়াস। কি পেটুক। আমি সামনে আছি তবুও আমাকে বলছো না ”
রাজ অন্য দিকে মুখ গুরায়। রানি তার দিকে তাকায়।
“আপনি খাবেন?”
“….
রাজ আড় চোখে তাকে দেখছে রানি অন্য একটা আইসক্রিম নিতে গেলে রাজ তার হাতে থাকে মুখ লাগানো আইসক্রিম নিয়ে নেয়।
তারপর রানির ঠোঁট লাগানো সেই আইসক্রিম খাওয়ায় মেতে উঠে।
দুজন এক সাথে বসে সব গুলি আইসক্রিম খেয়ে নেয়।
রাজ রানির দিকে তাকালে দেখে রানি চোখ বন্ধ করে নিজের আঙ্গুল চুষছে।
রাজ রানির দিকে এগিয়ে গিয়ে পুনর্বার রানির ঠোঁটে লেগে থাকা আইসক্রিম খেয়ে নেয়। মিটমিট করে হেসে রাজ উপরের দিকে চলে।
রানি ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে বাহিরের আবহাওয়া দেখছিল।
রাজ গিয়ে তাকে কোলে তুলে নেয়।
রানি হাত পা ছুড়াছুড়ি করছে। আর ভাবছে না জানি রাজ কি করে বসে এখন।
রাজ তাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে একটা চেয়ার টেনে নিজে বসে। ট্রে থেকে প্লেট টেনে রানির মুখের সামনে খাবার ধরে।
“হা করে।”
“….
“কি হলো? হা করো।”
আগের কথা মনে করে রানি মুখ গোমরা করে অন্য দিকে মুখ ফিরায়।
“না খাবো না আমি।”
“খাবে না?”
“না।”
“না তো?”
“নাআআ।”
রাজ সুযোগ বুঝে রানির মুখে খাবার তুলে দেয়।
খাবার মুখে নিয়েই অস্পষ্ট সুরে রানি বলে,
“আমি বললাম না..”
“শুহহ একটাও কথা নয়। চুপ করে খেয়ে নাও।”
অজ্ঞাত রানি চুপ করে রাজের হাতে খেয়ে নেয়। পানি খায়িয়ে দিয়ে রাজ মুখ মুছে দেয় তার।
ট্রে নিয়ে যাওয়ার আগে একটু ঝুঁকে রানির কপালে ভালেবাসার পরশ দিয়ে চলে যায়। রানি অবাক হয়ে রাজের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে,
“আমি কোনো ভুল ধারণা নিচ্ছি না তো? মানুষ টা কে আমি কষ্ট দিচ্ছি না তো? সত্যিই কি এই ভালোবাসার মাঝে কোনো খাঁদ থাকতে পাড়ে? সত্যিই উনি আমার সাথে এমন করতে পাড়ে কি?”
চলবে….