ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড পর্ব ২০

#ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড

#লেখিকা_তামান্না

#বোনাস_পর্ব

ফায়যান গার্ডস এর চারপাশ ঘুরে তাদেরকে কড়া গলায় বলে।

—“আজ রাত পার্টি হবে বিশাল আয়োজন করা হবে। তোদের অবশ্যই হার্ড চেক দিতে হবে। যদি কোনো ধরনের মিসটেক পায় তাহলে একটাও জমিনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবি না।

গার্ডস মাথা নাড়িয়ে স্যালুট করে ফায়যানকে। তারা সম্মতি দিয়ে যার যার মত কাজে লেগে পড়ে।

ফায়যান কথা শেষে জারার দিকে তাকায়। জারা চোখ সরু করে কোমরে হাত রেখে তার দিকে রুড নজরে তাকিয়ে আছে। ফায়যান দেখেও না দেখার ভান করে হাতের ঘড়ি নাড়িয়ে ঠিক করতে করতে জারার পাশ কেটে রুমে চলে যায় অফিসে যাওয়ার জন্যে রেডি হতে।

জারা স্বাভাবিকভাবে ঠাই মেরে দাঁড়িয়ে রইল। ফায়যানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বলে।

—“এমন কি আছে ইনার মধ্যে যে এভাবে আমাকে বলছে না? আমাকে বললে কি মহা ভারত সৃষ্টি হবে নাকি! উহ তুমিও যেমন বলবে না আমিও বলব না আজাইরা পোলাপাইন। আরো কি বলে আজ রাত তোমার জন্যে খুব সুন্দর সারপ্রাইজ আছে। না জানে আজাইরা ভিলেন কি না কি গিফ্ট দে। উনার সব গিফ্ট ত এক একটা ডেঞ্জারাস । ভেংচি মেরে জারা গাডেন এর দিকে গেল।

ফায়যান ফ্রেশ হয়ে রুমে দেখল জারা নেই। সে বাঁকা হেসে তাওয়াল দিয়ে মাথা মুছে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ায়। নিজেকে আয়নার মধ্যে দেখে বলে।

—“খুব শীগ্রই তোমার সামনে সব সত্য চলে আসবে জারা। তারপর থেকে কোনো ধরনের কষ্ট আর থাকবে না। কিন্তু যা হবে তার শাস্তিও তোমায় পেতে হবে। কিছুটা কড়া নজরে নিজেকে দেখে জোরে আয়নায় হ
আঘাত করে।

নিজের মাথা আয়নার সাথে ঠেকে বিরবিরিয়ে বলে।

—“আইম সরি মাই লাভ সারাজীবনের জন্যে এক সাথে থাকব এই দৃঢ় প্রচেষ্টার জন্যেই আজ তোমায় শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু বিশ্বাস করো তোমায় শাস্তি দিয়ে আমি নিজেও ঠিক থাকব না। তোমায় যেমন শাস্তি দিবো ঠিক তার দ্বিগুণ শাস্তি নিজেকে দেবো।
তাও আমি তাদেরকে ছাড়ব না। ব্যস আজ রাতের অপেক্ষা।

জারা ফুলের বাগানে বেখেয়ালি ভাবে ফুলগাছে পানি ঢালছে। সেখানের মালি ভাইয়া জারাকে অনেকবার বারণ করেছে। কিন্তু জারা ফুলের সুবাস সেখানের সৌন্দর্য নিজেই উপভোগ করতে চাইছে। তাই সে নিজেই পানি প্রচ্ছাস দিচ্ছে।

ফায়যান বেড থেকে ফোন নিয়ে জেহানকে কল দে।

—“হ্যালো জেহান কই তুই?

—“দোস্ত কান্ড হয়ছে!

—“কেমন?

—“তোর শালিকাকে রেপ করতে চাইছে এক পোলা!

ফায়যান কথাটা শুনা মাএ মাথা গরম ভ্রু কুঁচকে কড়া কন্ঠে বলে।

—“কোন শালার সাহস হয়ছে এমন করার?

—“ঐত ভাবির বোনের ছেলে ফ্রেন্ড যেটা ছিল সে।

—“সাহেল এর কথা বলছস?

—“আরে হ তুই কিভাবে চিনস?

—“বাকিটা ইতিহাস। গোডাউনে আন আমি এখনই আসছি।

সে কল কেটে রাহুল কে কল দিল।

—“ইয়েস বস আইম হাজির।

—“গুড শোন ইনভেটিশন পাঠিয়ে দিছস?

—“ইয়াপ এতোক্ষণে হয়ত খুশিতে লুঙ্গি ডান্স দিচ্ছে।

—“হুম ওর লুঙ্গি ডান্সের ডাসিয়া না উড়ালে আমার নাম ফায়যান না।

—“ওরেএ বস ইউ আর দ্যা বেস্ট।

—“উহ শুন তাড়াতাড়ি গোডাউনে আয়। বেশ দুইটা জরুরি কাজ আছে। জেহানও আসতেছে।

—“ওকে বস।

ফায়যান কল কেটে বেলকনিতে আসে। বেলকনির দরজা খুলে সে আশপাশে তাকিয়ে দেখে জারা কোথায় আছে? জারা কই গেল? বিরবিরিয়ে বলে সে পাশের সাইডে সুইমিং পুলের দিকে বাগানের মধ্যে জারাকে পানি ঢালতে দেখে মুচকি হাসি দে।

ফায়যান সিম্পল গেটআপ করে ব্লেজার গায়ে দিয়ে চুলগুলো স্পাইক করে নিচে নেমে জারার কাছে আসে।
জারা পানি ঢেলে ফুলের সুবাস নিতে হালকা ঝুঁকে। সে হরেক রকমের ফুলের মধ্যে ডালিয়া ফুলগুলির মধ্যে একটা ফুল হাতে নিয়ে দোলনায় বসে দুলতে লাগে।

ফায়যান দূর থেকে জারার হাসিমার্কা চেহারা দেখে মুগ্ধ হচ্ছে। কিন্তু মনের মধ্যে নিজেকেই কুঁচতেছে। কিন্তু সে যে বাধ্য কাজটা করতে।

—“কোনো চিন্তা নেই কাজটা যতই জটিল হোক না কেন! এর ফলাফল ভালো ত আসবেই। একটু খানি তোমার মুখের হাসির জন্যে নিজের জীবন দিতেও দ্বিধাবোধ করব না মেরি জান।
ফায়যান ভেবে ধীরপায়ে তার দিকে আসে।

জারা ফায়যানকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকে। ফায়যান হালকা কেশে বলে।

—“কেউ কি আমার সাথে রাগ করেছে?

—“উহ।

—“মনে হয় করেছে! তাতে আমার কি আরেকটা মেয়েকে পটিয়ে বিয়ে করে ফেলব?
দাঁত কেলিয়ে দুষ্টুমি হাসি দে।

—“কিইইই? জারা রেগে ফায়যানের দিকে চিল্লিয়ে উঠে।

—” আরে আরে আস্তে চিল্লাও। পাশের বাড়ির মানুষ ভাববে আমি তোমার সাথে বাহিরেই শুরু করে দিসি। ব্লাশিং ফেস করে মাথার চুল নাড়তে শুরু করে।

জারা ফায়যানের কথার ভেবাচ্যাকা খেয়ে যায়। সে আহ্লাদী কন্ঠে বলে।

—“এ্যাহ বাহিরে কি শুরু হবে কে কি ভাববে মানে?

—“কিছু না তোমার এসব না জানলেও চলবে। চোখ ঘুরিয়ে নিজেকে শান্ত্বনা স্বরুপ বলে।

—“এক্সকিউজ মি আমি সব বুঝি ওকে হাহ? এটিটিউট ভাব করে বলে।

—“আচ্ছা তাহলে জামাই বউ বাসররাতে কি করে? চোখজোড়া সরু করে ঠোঁট বাঁকিয়ে দুষ্টুমির ফেস করে তাকায়।

—“আয় হায় এখন কি বলব বেশি ভাব নিলে যা হয়।মনে মনে বলে। আ….আ…আমি ত আপনার না অফিস আছে যান যান? কথা ঘুরানোর চেষ্টা করে বলে।

—“এখন তো আর বলতে পারবে না আমার লজ্জাবতী লতাপাতা। রেডি হয়ে থেকো রাতে। কারণ বেশ বড় সারপ্রাইজ হবে তোমার জন্যে। হতে পারে সারপ্রাইজটা তোমার কলিজাও টেনে নে।
জারার কানে ফিসফিসিয়ে বলে।

—“নাটকের মত ডায়লগ কেন মারছেন? আমি কি হিরুইন যে রাতে আমার সাথে ঘটনা ঘটাবে ভিলেন মার্কা মাইনষে?

—“উহ হতে পারে যাস্ট ওয়েট এন্ড সি বেব। জারার কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে যায়।

জারা ফায়যানের কথা শুনে মনে মনে ভয় পেতে থাকে।

—“উনি এমন কেন বললেন? কোনো অঘটন ঘটবে কি? রাতে কিছু কি হতে চলেছে ! সত্যি যদি আমার ধারণার মত খারাপ কিছু……….না না আমি উনাকে হারাতে চাই না। দেখি উনার কথা মত নিজেকে তৈরি রাখব। যদি আজ রাত শেষ দিন হয় তাহলে আজিই আমি অতীত সম্পর্কে বলে দেবো।
জারা নিজের জ্যাকেটটা ভালোভাবে গায়ে জড়িয়ে রেখে বাসায় ঢুকে পড়ে।

ফায়যান গাড়ি নিয়ে গোডাউনে চলে আসে। সে গাড়ি পার্ক করে হলে প্রবেশ করতে দেখতে পেল। জেহান আর রাহুল কথা বলছে আর সাহেল চেয়ারে বাঁধা।

—“শুন প্রিয়া কোথায়?
জেহানের দিকে তাকিয়ে ফায়যান জিগ্গেস করল।

—“প্রিয়াকে ওয়ার্ড রুমে ট্রিটমেন্টের জন্যে রাখা হয়ছে। ট্রিটমেন্ট চলছে।

—“গুড তাহলে আমার শালিকার সাথে এই মানুষটা অমানুষি করতে চাইল তাই না? গালে হাত দিয়ে জেহানের দিকে তাকায়। জেহান দুই হাত তুলে বলে –“ইয়াপ। একদম ঠিক!”

—“ওহ তাহলে তো মেহমানের কাতিরদারি করানোর দরকার। কি বলিস? রাহুল এর দিকে বাঁকা হেসে তাকাল।

রাহুল তো এক হাত তুলে বলে —“আজ্ঞে ফায়যান ভাই বিশ্বাস করেন আমি এই কাজে রাজি আছি।

ফায়যান ভ্রু কুঁচকে বলে—“তাহলে ত আরো ভালো যাহ আজ সাহেল নামক ছেলেটা তোর শিকার। যা শিকার কইরা লও।

রাহুল খুশিতে লাফ দিয়ে উঠে। সাহেলের মুখ বাঁধা ছিল। সে নিজের মাথা ডানে-বামে করে নাড়িয়ে না না করছে। কিন্তু রাহুল তো খুশিতে শয়তানি নজরে দুই হাত কাচুমাচু করে গরম করে করে তার দিকে এগিয়ে যায়।

ফায়যান একবার ওয়ার্ড রুমে প্রিয়াকে দেখে ডক্টর এর দিকে জিজ্ঞাসা স্বরুপ ভঙ্গিতে তাকায়।
তিনি ফায়যানের মনের কথা বুঝতে পেরে বলেন।

—“চিন্তার কোনো বিষয় নেই সে এখন সুস্থ আছে উনার হার্টে প্রব্লেম হয়ছিল। জোরে বা উচ্চ আওয়াজে কথা বলার কারণে শব্দটা গিয়ে উনার হার্টে লাগে। উনি খুব দূর্বল পেসেন্ট হার্টের দিক থেকে। উনাকে কিপ কুয়াইট করার মত করে চলার চেষ্টা করবেন।

ফায়যান শুনে নিজের মাথা নাড়াল। জেহান দরজার বাহিরে ছিল। সে প্রিয়াকে এরকম দেখে বুকের মধ্যে কেনো জানে ব্যথা অনুভব করল। সে দুই চার না ভেবে ডক্টরকে বাহিরে পৌঁছে প্রিয়ার ওয়ার্ড রুমে আসে। ফায়যানও তখন বের হয়। জেহানকে দেখে সে তাকে নিয়ে আড়ালে যায়।

—“আহহহ ফায়যান স্যার প্লিজ দোয়া করুন আমার উপর আপনার ভাইয়াকে থামতে বলুন। প্লিজজ আহহহ আহ………সাহেল চিৎকার করে হেল্পের জন্যে ফায়যানকে ডাকছে।

ফায়যান শুনেও না শুনার জন্যে কানে আঙুল দিয়ে কুঁচলাতে লাগে। কুঁচলিয়ে নিজের হাত ধুয়ে হাই মারে। জেহান ফায়যানের কান্ড দেখে বলে।

—“ভাবি এসে গেল তাও শুধরাবি নাহ?

—“তোর ভাবির জন্যে শুধরায় তো গেছি বহু আগে কিন্তু অন্যায়কারীদের জন্যে আমি আজও ফায়যান দ্যা মাফিয়া লিডার ছিলাম আছি আর থাকব।

—“বেস্ট অফ লাক। জেহান বলে মুচকি হাসি দিল। কিছুক্ষণ পর সাহেল এর রুম থেকে আওয়াজ আসা বন্ধ হয়ে গেল। রাহুল তার রক্তাক্ত হাত ওয়াশরুমে গিয়ে ধুয়ে তাদের কাছে আছে। আসার সময় গার্ডসকে বলে সাহেলকে নিয়ে গিয়ে ট্রিটমেন্ট দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিতে। এমনেই যে মারা মারল জীবনে আর রেপ করার চিন্তা করবে না।।

—“বাহ বডিবিল্ডারের আজ খুব পরিশ্রম হলো? ফায়যান রাহুলের হাত মোছা দেখে পাম দিল।

—“হ ভাই দেখতে হবে না কার ভাই? ভাব মেরে নিজের কলার ঠিক করে।

জেহান আর ফায়যান হাসল। এবার ফায়যান রাহুলের দিকে তাকিয়ে বলে।

—“শুন আজ রাত তুই বাহিরে গার্ডের সাথে দাঁড়িয়ে থাকবি গার্ডস এর স্টাইলে তোকে যেনো কেউ না চিনে।
“ওকে বস” রাহুল নিজের মাথা নাড়িয়ে বলে।
“জেহান তুই ওয়েটার হয়ে সার্ভ করবি কিন্তু আমি যাকে যাকে সার্ভ করতে বলব তাদের জন্যে স্পেশাল সার্ভিস আনবি। বুঝছস কোন সার্ভিস এর কথা বললাম? এমন কি সার্ভিসটা আমাকেও দিস নইতো খেলায় মজা পাব না।
“ওকে মেরে সের” ফায়যানের পিঠে বারি দিয়ে জেহান বলে।

রাত ১০:৩০মিনিটে……

জারা বেডের দিকে তাকিয়ে আছে কোন ড্রেসটা চয়েজ করবে ভাবতেছে কিন্তু এখনো তার কোনো ড্রেসই পছন্দ হচ্ছে না।
ফায়যান তো আগে থেকে ফ্রেশ হয়ে নিজের ফেভারিট চকলেট কালার শার্ট,ব্লেক প্যান্ট, ব্লেক ব্লেজার পরে নিজের চুলে হালকা তেল লাগিয়ে স্প্রে করে নে, হাতে ব্লেক কালার স্টপ ওয়াশ, চকলেট কালার টাই পরল, চিরুনি নিয়ে সামনের খানিকটা অংশের চুল সামনে হেলিয়ে দিয়ে পিছের চুলগুলো স্পাইক করে নে, ব্লেজারের উপর দিয়ে আতর লাগিয়ে সুগন্ধীময় করল।

সে রুমে জারাকে নিতে এসে দেখে জারা এখনো ফর্মাল গেটআপেই আছে।
ফায়যান বুঝতে পারল জারা কি পরবে বুঝছে না! সে দরজায় হেলান দিয়ে বলে।

—“মহারাণী জারা ম্যাম আপনি কবে রেডি হবেন? কিছুক্ষণ পর পার্টি শুরু হয়ে যাবে।

—“উফফ চেঁতাইও না তো এমনেই ড্রেস চয়েজ করতে পারছি না। সেখান থেকে তোমার আজাইরা কথা!

—“কি? তোমার থেকে আমার কথা আজাইরা লাগে? রাগি নজরে তাকিয়ে বলে।

—“হ লাগে তো? তুমি শুধু নামের জামাই কাজের বেলায় আন্ডা।

—“বেব আজ তোমার জামাই এমন কাজ করবে যা দেখে তোমার হুঁশ উড়ে যাবে।

জারা ঘাবড়ে গিয়ে ভয়ার্ত নজরে ফায়যানের দিকে তাকায়। সে জারার ঘাবড়াহাট দেখে বাঁকা হেসে বলে।
—“এখনো সারপ্রাইজ দিলামই কই বেব। মাএ পাবে!

জট করে জারার হাতে একটা জরজেট চকলেট কালারের শাড়ি ধরিয়ে দিয়ে বলে। জারা এতোক্ষণ অন্যমনস্ক কথা নিয়ে ভাবছিল। যখন দেখল ফায়যান শাড়ি তার হাতে দিল তখন শ্বাস ফেল। কিন্তু ফায়যান তার কথায় অন্যকিছুই বুঝিয়ে ছিল।

ফায়যান জারাকে রেডি হতে বলে নিচে চলে আসে এরেঞ্জমেন্ট দেখতে। জারা ফ্রেশ হয়ে শাড়িটা পড়ে ড্রেসিং টেবিলে এসে টুল টেনে বসে। হালকা মেকআপ,ঠোঁটে পিংক লিপস্টিক,নাকে নাকটিপ,কানে গলায় অনামেন্টস রাখা ছিল সেখান থেকে নিয়ে গোল্ডের অনামেন্ট পড়ল, হাতে ব্রাউন কালারের কাঁচের চুড়ি পড়ে রিং পড়ে নিল। চুলে স্প্রে তেল দিয়ে খোঁপা করে ক্লিপ দিয়ে চুল আটঁকে নিল। অল্প করে পারফিউম মেরে সে নিজেকে তৈরি করে পার্টির জন্যে নিচে নামে।

ফায়যানকে খুঁজতে লাগে। তখন দেখতে পেল ফায়যান এক লোকের সাথে কথা বলছে কিন্তু যার সাথে কথা বলছে তার ফেস দেখা যাচ্ছে না। জারা দূরে দাঁড়িয়ে থেকে ফায়যানকে ডাক দে।
সে আড়চোখে জারাকে দেখেও না দেখার ভান করে মানুষটাকে জিগ্গেস করে।

—“ওহ তাহলে তার নাম ফারিজা ছিল?

—“হ্যাঁ কিন্তু দুভাগ্যের বিষয় কি জানেন?

—“কি?

—“আপনার বাসায় পার্টিতে আসলাম। অবশ্যই আপনি আমার কোনো দিক থেকেও কিছু লাগেন না। কথাটা ফায়যানের গায়ের লাগার মত শুনায়। কিন্তু ফায়যান নরমাল ভাবে বাঁকা হাসি দিল। এতো বড় ক্ষতি যে করেছিলে তার প্রতিশোধ এখনো ভুলিনি। মনে মনে বলে আবরার রাগে দাঁত কটমট করে।

(আবরার যে কার্ডটা দেখে খুশি হয়ছিল সেটা ছিল ফায়যানের পাঠানো একটা ছবি সাথে এড্রেসের কার্ড। কিন্তু কার্ডে জারার নাম ফায়যান ইচ্ছা করে মিসেস না দিয়ে মিস দিল। আবরার কার্ডটা হঠাৎ তার বাসায় কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে পেয়ে খুশিতে নেচে উঠে। কার্ডের মধ্যে তার ফ্যামিলিকে ইনভাইট করা হলো রাতের দিকে আসতে। আবরার তার মম-ড্যাড এর সাথে চলে আসে। আসার সময় রাহুল গার্ডস সেজে ছিল তাদের দেখতেই ফায়যানকে জানায়। তখন জেহানও ওয়েটার সেজে রেডি থাকে)

—“আহ ব্রো তুমি পার্টিতে আসলে এবার মজার জন্যে প্রস্তুতও হয়ে যাও। জারা ও জারা আমি এখানে! হাত দেখিয়ে জারাকে আসতে বলল।
জারা সাড়া পেয়ে আসতে লাগে । আবরার ভ্রু কুঁচকে সেদিকে তাকায়।

জারা এসে ফায়যানের ঘাড়ে হাত রেখে দাড়ায়।ফায়যান তার কোমর চেপে ধরে। আবরারের গা জ্বলছে যাচ্ছে। জারা এতোক্ষণ সামনের মানুষটাকে দেখে নি। যখনই চোখ সামনের দিকে করল তখনই আবরারকে দেখে চোখজোড়া বড় করে ফেলে।
ভয়ে ঘৃণায় তার অতীতের কথা সব মনে পড়ে যায়। ফায়যান একবার জারা আরেকবার আবরারের দিকে থাকায়। সে ঠিক বুঝতে পারছে জারা আবরারকে দেখে ভয় পাচ্ছে।

আবরার ফায়যানের কাছে জারাকে এত কাছাকাছি দেখে থেমে থাকতে পারছে না। সে কিছু বলার চেষ্টা করতে গিয়েও পারল না।

ফায়যান গান চালাতে বলল। ডিজে প্লেয়ার বৃদ্ধাঙুল দেখিয়ে গান প্লে করে। ফায়যান জারার এক হাত ধরে গানের সাথে ডান্স করতে ফ্লোরের মাঝখানে আসে। তাদের সাথে আরো কয়েক কাপল আছে।

ফায়যান ডান্স ফ্লোরে এসে জেহান আর রাহুল এর দিকে তাকিয়ে ইশারা করে আরমান আর মিসেস ফিহার দিকে নজর দিতে।

🎶 Pehli.nazar mein
Kaisa jadu kar diya😍

Tera ban baita hai mera jiya

জারা ফায়যানের কাধে হাত রেখে পরম আভেশে ডান্সে মনযোগ দে। ফায়যান তার কোমর চেপে ধরে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নে।
গানের তালে একে অপরের সাথে হাতে হাত পেতে ফায়যান জারার এক হাত ধরে দূরে ঠেলে আবার নিজের কাছে নিয়ে আসে।

jaane keya hooga
Kya hoga kya pata

Is pal ko milke aa jee le zara

জারা একবারও আবরার এর দিকে তাকাচ্ছে না। ফায়যান তো আরো মজা নিচ্ছে আবরারের। সে আড়চোখে ইশারা করে জেহানকে। তার হাতে থাকা ড্রিংক কে ড্রাগ মেশানোর। জেহান ওয়েটার সেজেছিল সে একটা চশমা লাগিয়ে নিজের চেহারা অচেনার মত করে ফেলে। ফায়যানের ইশারা বুঝতে পেরে সে আবরার পাশ দিয়ে যেতে লাগে। আবরার তার তো এমনেই মাথা গরম সে ওয়েটার কে ডাক দে। জেহান তার দিকে ঘুরে এসে ড্রিংক দে। আবরার জারার দিকে তাকিয়ে থেকেই ড্রিংক করতে শুরু করে।

Main hoon yahan tu hain yahaan
Meri bahan mein aa, aa bhi jaa

O jaan ja jaan dono jahan
Meri bahon mein aa, bhool ja aa

ফায়যান জারাকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে করে নিচে ঝুকিয়ে তার কোমর চেপে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। জারা এতোক্ষণ ফায়যানের মধ্যে খুশির পলক দেখলেও হঠাৎ এখন তার চোখজোড়া কেমন জানি অন্যরকম দেখাছে। যেই চোখজোড়া আহবান করছে কোনো সংকেতের।

ঠিংংংং……..করে গ্লাস ভাঙ্গার শব্দের সাথে লাইটস অফ হয়ে যায়। পার্টিতে উপস্থিত সদস্যরা চিৎকার চেচাঁমেচি শুরু করে দে। অনেক সদস্য বাংলো থেকে বের হয়ে যায়। গার্ডস বুঝার চেষ্টা করছে তারা লাইটস অন করতে এক এক দিকে ছড়াছড়ি করে। জারাকে এককোণায় মুখ চেপে ধরে………
#ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড

#লেখিকা_তামান্না

#পর্ব_২০ (ধামাকা💥)

—“তুই আমার কিছুই করতে পারবি না অমানুষ কোথাকার। তোর মত জানোয়ারকে জীবনেও নিজের সঙ্গী বানাব না।

—“হাহাহাহা কাকে ধমকাচ্ছো আমাকে? আবরার সাদি দ্যা বেস্ট ওয়ান কে তুই ধমকাচ্ছিস। আরে গাদি তোর মত কত হাজার মেয়েকে আমি ইয়ু ইয়ু হাতের তুড়ি বাজানোর মত মাটিতে পুঁতে ফেলি। খেয়ে দি সেখানে তুই ত সামান্য এক পুতুল। তোরে খেয়ে ফেলে দেওয়া তো কোনো ব্যাপারই নাহ।

আবরার কথা বলে বলে জারার চারপাশ ঘুরছে। জারার ক্লান্তি হয়ে দড়ির সাথে ঝুলে আছে। তাকে আবরার দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। পার্টি শেষ হতে না হতেই লাইটস অফ হয়ে যায়। তখন ফায়যান জারাকে এক কোণায় দাঁড়াতে বলে। নিজে এর কারণ খুঁজতে লেগে পড়ে। আবরার হালকা জ্যাপসা আলোতে জারার মত শাড়ি পরা কাউকে কোণায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। সে ধীরপায়ে এগিয়ে দেখে এই তো সত্যি তেই ফারিজা!
আবরার জারার মুখ চেপে ধরে। আরমান আর ফিহার সাথে বাংলো থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে নির্জন এক জায়গায় জারাকে নিয়ে আছে।

তারা চলে যেতেই বাংলো আলোকিত হয়ে যায়। লাইটস অন হয়ে যায়। ফায়যান এর মাথায় জারার খেয়াল আসতেই সাথে সাথে জারাকে দাঁড় করিয়ে রেখে যাওয়া জায়গার মধ্যে দেখতে আসে।

জারাকে না পেয়ে সে উওেজিত হয়ে তার গার্ডসকে পুরো এলাকা খুঁজার জন্যে পাঠায়।

আবরার জারার কোমরের দিকে তাকিয়ে একের পর এক ড্রিংক করছে। নিজেকে নেশাক্ত করছে। জারার হাঁফাচ্ছে তারা তাকে দাঁড় করিয়ে বেহাল অবস্থা করে রাখে। আবরার ড্রিংক এর গ্লাস নিয়ে জারার কাছে আছে।
জারা নিজের মুখ ঘুরিয়ে নে। কিন্তু এতে আবরার এর কিছু আছে যায় না। সে জারার কোমরে নিজের হাতের স্পর্শ দে। জারার তৎক্ষণাৎ চিৎকার দিয়ে উঠে।

আবরার তাও তার কোমর চেপে ধরে আছে। একদম স্বাভাবিক ভাবে বিহেভ করছে কারণ ফায়যান নামক মানুষটা তার আশেপাশে কোথাও নেই যে নিজের বউকে রেপ হতে রক্ষা করবে।

—“চেঁচাচ্ছিস কেন তোর ফিউচার জামাই তোকে টার্চ করতেছে তাতে শরম পাবার কি হলো?

—“ছিঃ তোকে আর জামাই? তোর মত কুওাকে তো নালায় গিয়ে ডুবে মরা উচিত। শালা জানোয়ারের বাচ্চা। এক তো আমাকে কিডনাপ করেছিস তার উপর দাদাগিরি দেখাস। আরে আমার ফায়যানের সামনে তোর এসব দাদাগিরি কিছুই না।

আবরারের রাগ উঠে যায় ফায়যানের নাম শুনে সে জোরে জারার গাল চেপে তার কাছে আছে। জারার গাল ব্যথায় কাতড়ানো শুরু করে।

—“কি বললি তুই হুমম? ঐ ফায়যানের বাচ্চা আমার চেয়ে মারাত্মক এটা তুই ভাবতেও পারলি কিভাবে? আরে ঐ জারজ সন্তান কার না কার সন্তান,পরিচয় নাই কিছু নাই। শুধু নামকরা বিজনেসম্যান বলেই তার পাওয়ার আছে? আরে আমাকে দেখ,,, আমাকে! আমার পরিবার আছে। ঐ ঐ……জারার চুলের মুঠি জোরে টান দিয়ে…..আহহহ আহহহ চিৎকার করল চুলে টান পড়ায়। আবরার মিস্টার আরমান আর মিসেস ফিহার আঙুল দেখিয়ে ইশারা করে দেখায়। আমার ড্যাড আর মম। দেখলি পরিবার আছে। আর তোর ঐ সো কলড কুওা জামাইয়ের আছেই বা কি শুধু বড় বড় লেকচার দেওয়া ছাড়া।

—“হাহ এটা পরিবার না পুরোটা পরিবার নরকের বাসস্থান তোরা। এক একটা জাহান্নামের অংশীদার। তোদের সবকটার খারাপ সময় আসতেছে। সময় এর উল্টা গুণনা শুরু কে দে। সে আসতে দেরি নেই।

—“কে আসবে? কেউ কি আসবে ড্যাড? মিস্টার আরমানের দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে বলে।

—“নো মাই সান তোর মতো তুই এ্যাশ কর। কেউ কিছু করতে পারবে না। আমাদের কাজ হয় গেছে একদম এক তীরে দুই দিক শিকার করছি।

—“ওহ সেটা কি কি ড্যাড? অবাক হয়ে আরমানের দিকে তাকিয়ে আবরার জিগ্গেস করল।
জারাও চোখ পাকিয়ে আরমানের দিকে তাকায়।

—“এক তুই তোর ফারিজা পেলি দুই আমি আমাদের ক্ষতির লাভ এর ফাইল ফায়যানের বাংলো থেকে উঠায় নিছি। চিয়াসস।

আরমান এর কথা শুনে আবরার আর মিসেস ফিহাও চিয়াস করে। কিন্তু জারা সব কথা শুনে শুকনো হাসি দিয়ে বলে।

—“তোমাদের মৃত্যুর টাইম খুব কাছে।

আবরার এবার রাগে জারার শাড়ির আঁচল গায়ে থেকে টান মেরে ফেলে দে। জারা চেঁচানি ছড়াছড়ি করতে লাগে। আবরারকে সরাতে জারা তাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে সরে পালাতে চাইলেই আবরার তার হাত ধরে হিচকে টান দিয়ে বেডে ফেলে দে। সে জারার হাত চেপে ধরতে গেলে জারা জোরে কামড় বসিয়ে দে। এতে প্রচন্ড রাগ উঠে যায় আবরারের। সে কষে এক চড় দিল জারার গালে।

জারার ব্যথায় হাত পা চলছে না। আবরার তার সাথে জবরদস্তি করতে গিয়ে তার হাত দিয়ে পেন্টের বেল্ট খুলে জারার হাত শক্ত করে বাঁধতে লাগে।

হঠাৎ দরজায় নক পড়ে আবরার জারাকে বেঁধে দরজা খুলতেই সজোরে তার বুকের মধ্যে লাথি মারে ফায়যান। লাথিটা এতোই জোরে ছিল যে আবরার পড়ে বেডের কোণায় লেগে মাথা ফেটে গেল। ফায়যানকে দেখে জারার কলিজায় পানি আসল। এতোক্ষণে তো তার কলিজা শুকিয়ে ফেটে যাবার উপক্রম ধরছিল।

ফায়যান জারার গায়ে শাড়ির আঁচল না দেখে বুঝে গেল আবরার তার সাথে কি করতে যাচ্ছিল। তার রাগ মাথায় চড়ে বসছিল। রাগে মাথার রগ ফুলে উঠছে যা বডিওয়ালার মুখে ভাবে বাহুডোরায় স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।

রাহুল আর জেহানও বাহিরে আবরারের পালিত কুওাদের ঘেউ ঘেউ করা বন্ধ করছে। মানে আবরারের পালিত কুওাদের সঙ্গে মারামারি করছে। ফায়যান নিজের কোট জারার বুকের উপর গুঁজে তাকে এক সাইডে বসিয়ে আবরারের কলার ধরে টেনে টেনে ফ্লোরে ছুঁড়ে মারে। সেখানেই তাকে ধরে মুখে ঘুষি মারতে থাকে। তাও ফায়যানের রাগ কমে নি। সে আশেপাশে কোনো লাঠি আছে কিনা দেখে একটা লাঠি নিয়ে আবরারের পায়ে বেধারাম পিঠাতে থাকে।

—“কুওার বাচ্চা তোর এত বড় সাহস আমার কলিজার শরীরে টার্চ করার। আজ তোর কলিজাই ছিঁড়ে ফেলব।
রাগে ফায়যান মেরে আবরারের ঠোঁট জোড়া ফাটিয়ে ফেলে।
ফিহা সবার আড়ালে হয়ে জারার মাথায় গান ট্রেগ করে।

ফিহার অহোন কান্ডে আবরার আধমরা করা থেকে থেমে যায় ফায়যান। ফিহা ধমকি দিয়ে।

—“সবাই গানর্স আমার পায়ের পাশে এসে রাখো।

সবাই চুপ হয়ে যায়। গার্নস ফেলে দিতে লাগে। ফায়যান মুচকি হেসে বলে।

—“আপনি লেডি হয়ে আরেক লেডির সাথে এমন করতে পারবেন?

—“হ্যা পারব।

—“আচ্ছা কেন?

—“কারণ তোমরা স্বার্থপর তুমি আর তোমার বউ বিয়ে করে আমাদের সম্পত্তি নিজেদের নামে করে ফেলবে তা আমি ভালোই জানি।

—“জ্বী আচ্ছা করব আমাদের নামে তাও আপনাদের সবাইকে মারার পর। এখন মারেন জারাকে সমস্যা নেই।

—-“কি বললে? মিসেস ফিহা ভেবাচ্যাকা খেয়ে যায় ফায়যানের কথা শুনে।

—“হুম মারেন। এক দুইপা এগিয়ে আসতে আসতে বলে।

—“দেখো ফায়যান একদম কাছে আসবে না বলে দিচ্ছি নইতো আমি সত্যিতে তোমার বউকে মেরে ফেলব।

ফায়যান তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে মিসেস ফিহার দিকে তাকায়। তখনই এক গার্ড ফিহার মাথার পিছে বারি দে।

জারা ফায়যানকে জড়িয়ে ধরে। ফায়যানও তাকে শক্ত করে চেপে ধরে বলে।

—“হুশ জান আমি আছি একদম কাঁদবে না।

—“তু….তুই আমার ব…ব্যাপারে কিভাবে জানস? আবরার হাটু ভর করে রক্তাক্ত গালে জিগ্গেস করে।

ফায়যান রহস্যময় এক হাসি দিয়ে বলে।

—“ওহ আজ বলে দেওয়া দরকার। কি বলো জারা? ওপস সরি ফারিজা। জারার চোখের দিকে কিছুটা ঝুঁকে। জারা নিজের মাথা নেড়ে হ্যা জানায়। ফায়যান গার্ডসকে আরমান সাদি এর হাত পা চেপে ধরে চেয়ারে বাঁধতে বলে। আর আবরারকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলাতে বলে।
তো শুনো কাহিনি কিভাবে আমরা একে অপরকে চিনি। ওহ তুই তো তোর বাপের মতই হাবলা। সারাক্ষণ ভাবতি আমি জানতাম না তোর ব্যাপারে যে তুই আরমান সাদির ছেলে। যেদিন আরমান সাদির কোম্পানিতে ব্লেক রেট পরে সেদিন আমার লোক তার পিছু নে। ঐদিন তারা এই বুইড়ারে এক হ্যান্ডসাম পোলার সাথে দেখে। যা শুধু তারা নয় আমিও দেখছি ভিডিও কলের মাধ্যমে। আরমান অফিসে তোর সাথে যা যা কথা বলল। সব আমার লোকে ভিডিওর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছালো। তাও তুই….. আবরার এর কাছে এসে তার তলপেটে জোরে লাথি দিয়ে বলে। তুই আমাকে দাবা খেলার সেনা মনে করছিস । আয় রে ফায়যান গেইম খেলে কিন্তু গেইম খাই না। তোর ব্যাপারে ডিটেলস বের করতে বলি। তখন সোনিয়ার কথা জানতে পারি। কারণ সে ছিল জেহানের গফ। তার গফের মুখে যখন জারার কোনো এক অতীত এর কথা শুনি তখন না…….আমিও কিছুক্ষণের জন্যে ভয় পেয়ে গিয়ে ছিলাম। পরে জেহান সোনিয়ার বাসায় একটা ডায়েরি পায়। যা আমাকে দে। সেখানে যখন পড়লাম ফারিজা আগে তোকে রিজেক্ট করেছিল পরে প্রেম করে তোর জালে বন্দি হয়ে গিয়ে ছিল তখন তুই রেপ করতে লোক পাঠাস জারাকে ধরে আনতে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে জারা নদীতে পড়ে হারিয়ে যায়। সেখান থেকে আমার কাছে চলে আসে। কিন্তু পরে তুই না জানে কই থেকে আইসা আমাদের হেপ্পি ম্যারেড লাইফে উদয় হলি? একদম আজব লাগছে খবর নাই কিছু নাই হুট হাট করে আমার বউ এর পিছে লাগছিস। তারপর সব ডিটেলস পেলে আমি পার্টির আয়োজন করি। যাতে তুই নিজেই নিজের জালে ধরা দিস তোর বাসায় ফারিজার এড্রেস আমিই পাঠিয়ে ছিলাম। তুইও গাধার মত পড়ে খাইতে চলে আসলি। আয় রে দুনিয়া তোদের কে মাটিতে পুঁতে ফেলা উচিত। পার্টিতে তুই কি ভাবছিলি তুই জারাকে কিডনাপ করে নিয়ে এসেছিস। হাহাহাহাহাহা। ফায়যান হাসতে লাগল। আরে বেকুব ওইটা আমিই চাইছিলাম যাতে তুই জারাকে কিডনাপ করে তোর স্পেশাল জায়গায় আনিস। যাতে আমিও জারার কানে লাগানো মেপসকোম এর ফলে সেখানে আসতে পারি। আর দেখ আমি তোর সামনে। তোর কি লাগে তুই গেইম বাজায় দিলি। কুওা আমি কি জিনিস আজও বুঝলি নাহ? আমি ফায়যান……..ফায়যান দ্যা মাফিয়া লিডার। অন্ধকার মহলে গেইমকে গেইম খাওয়ান শুধু আমিই করি। সেখানে তোর দাবার গুটি তো কিছুই নাহ।আমি তো সেই দাবার পুরো রাজা। যাকে মার্ক দেওয়া তোর মত তুচ্ছ প্রাণীর একদমই সম্ভব না। অনেকক্ষণ আমার কলিজায় তুই নিজের নিয়ার্তন চালালি এবার আসল নিযার্তন যন্ত্রণা কেমন? তা দেখবি।

—“গার্ডসসসস তিনজনকে পানিতে ফেলে দে রাইট নাউ!

গার্ডস —“ইয়েস স্যার।

গার্ডস তাদেরকে নিয়ে কোবরার কাছে যায় আর সেখানে সুইমিং পুলে ফেলে দে।

ফায়যান এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে জারার দিকে ঘুরে তাকায়। তাকে দেখে সে কষ্ট পেতে থাকে। কারণ জারার চোখে জল টলমল করছে। সে তার কাছে এসে হাটু গেড়ে বসে পড়ে। জারা অবাক হয়ে যায় তার কান্ডে।

—“আই লাভ ইউ জারা। আমি জানি আমার কারণে তোমার খুব অত্যাচার সহ্য করতে হয়ছি কিন্তু বিশ্বাস করো যত কষ্ট তুমি সহ্য করলে তার চেয়ে হাজার গুণ কষ্ট আমি নিজের হৃদয়ে পেলাম। তোমাকে হারানোর ভয়ে কিছু বলতে পারতাম না। কিন্তু মনে মনে ঠিক করে রেখে ছিলাম একদিন সময় হলে তোমাকে সব বলব। এই আরমান আমার নিজের চাচা। বাবাকে খুন করে ছিল আমার নিজের চাচা এ। খুন করে তারা পালিয়ে যায়। আমাকে বড় করে এক ডন। তার কাছে পড়াশুনা কাজ সব শিখে অন্ধকার জগতে পা দেই। কিন্তু আমার কাজ ছিল শুধু অন্যায়ের প্রতিরোধ করা ব্যস খারাপ উদ্দেশ্য একদমই ছিল না। কান্নামিশ্রিত কন্ঠে ফায়যান জারার কোমর চেপে ধরে।

জারা মুচকি হেসে সেও হাটুগেড়ে বসে ফায়যানের কপাল ঠেকে নিজের কপালের সাথে। আর বলে।

—“আমি খুশি যে আপনি আমাকে বুঝলেন আমার সাথ দিলেন আমি ত ভাবতাম যদি আমার অতীতের এই জানোয়ারের কথা জানেন তাহলে কি করতেন আমার সাথে। আলহামদুলিল্লাহ এখন সব ঠিক আছে।

ফায়যানও মুচকি হেসে শুকরিয়া আদায় করে সে জট করে দাড়িয়ে জারাকে কোলে উঠায়। রাহুল জেহান হালকা কাশি দে।

জারা হকচকিয়ে যায়। কিন্তু ফায়যান ঠাই সেভাবে দাঁড়িয়ে থাকে।

—-“কি করেন ছাড়েন আপনার বন্ধুরা আছে! ছাড়েন নামান আমাকে।

—“উহুম নাহ এভাবে ওদের সামনে রোমান্স করব।

—“বাহ মিয়া আজকাল রোমিও হয়ে গেছিস যেখানে সেখানে প্রেম করবি। জেহান গাল ফুলিয়ে বলে।

—“তাতে তোর কি যায়? যাহ বিয়ে করে ফেল প্রিয়াকে।

—“কিই জেহান দেবরজী প্রিয়াকে ভালোবাসে? জারা চোখ গোল করে ফায়যানকে বলে।

ফায়যান মুচকি হেসে মাথা নাড়ে। জেহান কিছুটা লজ্জাবোধ করে চলে যেতে লাগে। রাহুলও সব ঠিক করে বেরিয়ে যায়। ফায়যান গাড়িতে জারাকে বসিয়ে বাংলোর দিকে রওনা দে।

……………চলবে…………..

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here