তমিস্র প্রভা পর্ব -১১

পর্ব-১২
#তমিস্র_প্রভা🍁
#লেখিকা-লামিয়া_রহমান_মেঘালা
গভীর রাত,
আশেপাশে ঝিঁঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে
ছায়া পেটে হাত দিয়ে শুয়ে আছে,
হটাৎ ই দরজা খোলার শব্দ পেয়ে ছায়া পাশে তাকায়,
নির্ঝর কে দেখে ছায়ার মুখে হাসি ফুটে ওঠে,
বিছনা ছেড়ে অনেক কষ্ট করেই উঠে নির্ঝর কে জড়িয়ে ধরে,
–তুমি এসোছো আমার না ভীষণ কষ্ট হচ্ছে,
আমায় সাহায্য করো প্লিজ, ( দম নিয়ে নিয়ে)
ছায়া বেশ অবাক হয় কারন নির্ঝর তাকে নিজের দু হাতে জড়িয়ে ধরছে না,
আর ওর শরীর ফ্রিজের বরফের মতো ঠান্ডা,
ছায়া নির্ঝর কে ছেড়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে এক দানবের সাথে পরিচিত হয়,
ছায়ার চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়,
ছায়া পেছতে পেছতে খাটে পরে যায়,
–এবার কে বাঁচাবে তোমায় প্রিন্সেস ছায়া,
— নি নির্ঝর,
ছায়া চিৎকার দিয়েই সেন্স হারায়,
সব কিছু অন্ধকার চোখের সামনে,
,
,
অতিত ভবিষ্যৎ বর্তমান যেখানে এক হয়ে যায় সেখানে কঠিন সমস্যা সৃষ্টি হয়,
প্রকৃতি কে মেনে চলা মানুষ এর কাজ,
প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নিতে হয়,
প্রকৃতি কে অবমাননা করা উচিত নয়,
–কিন্তু মাস্টার জি তার পরে কি হয় ছায়ার?
–ছায়ার যে কি হয় তা আজ না পরে এক দিন জানতে পারবো,
–প্লিজ মাস্টার জি এই মুহুর্তে গল্পটা বন্ধ করবেন না,
–এটা গল্প নয় বাচ্চা এটা সত্যি,
–প্লিজ বলুন না কি হয় এর পরে কি হয় নির্ঝর কোথায় গেল,
–অরূপা ওই যে বললাম অতিত ভবিষ্যৎ বর্তমান কে কখনো এক রেখায় আনতে নেই,
–কিন্তু গল্পটা কেমন আজব আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না,
–পামেস্ট্রি একটা রহস্য অরূপা,
তোমায় এখনো অনেক শিখতে হবে,
–কিন্তু ছায়া যদি মারা যায় তাহলে গল্পটা অসম্পূর্ণ, আর নির্ঝর ও যদি না ভালো হয় তবে প্রকৃতির নিয়ম ত অবমাননা ই করা হলো,
–ঠিক তুমি ঠিক বলেছো অরূপা, কিন্তু জন্ম মৃত্যু যে দিয়েছে সে জানে কখন দিতে হবে আর সেই নিবে, সেই জানে কখন নিতে হবে
–কিন্তু মাস্টার জি,
–অরূপা আমার প্রতিটা কথায় খেলায় করো পামেস্ট্রি একটা রহস্য ভেদ করতে থাকো নিজের ভেতরের এই উৎসাহ টাকে নষ্ট হতে দিও না,
তুমি নিজেই সব উত্তর পেয়ে যাবে,
আমি এখন আসি,
সেখান থেকে অরূপার মাস্টার চলে গেলো,
–আহ,
সব সময় এটাই হয় আমার পেসেন্স চেক করে মাস্টার জি কি লাভ পায় আমি জানি না তবে আমায় আজকেই এই গল্পের শেষ জানতে হবে,
উনি বললেন পামেস্ট্রি একটা রহস্য,
ঠিক আছে৷
আমিও অরূপ চৌধুরী মতো এক জন গ্রেট আইকোন অফ পামেস্ট্রি হবো,
দেখবে সবাই আমাকে,
,
অরূপা চলে যায় নিজের রুমে,
বিশাল এক রাজপ্রাসাদ তার বাড়িটা,
সব সময় আলোতে ঝলমলে হয়ে থাকে,
–মা তুমি কই মা,
–ম্যাম বড়ো ম্যাম ত বাসায় নেই,
–বাসায় নেই মানে আমাকে না জানিয়ে কোথায় গেছে,
–ম্যাম উনি আসলে বললেন তুমি অরূপাকে বলো মাস্টার চলে গেলে যেন খেয়ে ঘুমিয়ে পরে,
উনি ২ দিনের জন্য বাইরে যাচ্ছেন,
–মানে কি মা কখনো এমন করে না আর, ধুর যাহ কথাই বলব না,
অরূপা নিজের রুমে চলে যায়,
নিজের বাবাকে ফোন করে,
কিছুক্ষণ পরে অরূপার বাবা ফোন ধরে,
–হ্যালো বাবা,
ওপাশ থেকে,
–হ্যাঁ মা বলো
–তুমি কই?
–অফিসে,
–মা,
–মা একটু কাজে গেছে মা,
–ওহ,
–আচ্ছা আম্মু আমায় কিছু বলে গেল না,
— তুমি ত ক্লাসে ছিলে আর তোমার আম্মুর তাড়া ছিল,
–তুমি কখন আসছো?
–আসব ত মা রাতে,
–ঠিক আছপ রাখছি,
অরূপা বসে ভাবতে থাকে তার মাস্টার এর কথা,
ওখানে একটা কথা ছিল,
তিন আলোর মিশ্রণ যেখানে সেখানে না যেতে
,
–পেয়েছি হয়ত এবার আমি সঠিক সন্ধান পাবো
অরূপা জলদি রেডি হয়ে বেরিয়ে আসে,
–ম্যাম কই যাচ্ছেন?
— পাহাড়ে,
–কিন্তু ম্যাম আপনাকে ত মান করেছিল,
–ত কি হয়েছে,
–ম্যাম এটা ডেঞ্জারাস,
–নো কিছুই ডেঞ্জারাস নয়,
আমি আসছি বাবা আসার আগে চলে আসব৷,
অরূপা বেরিয়ে পরে,
উঁচু পাহাড়ি রাস্তায় ড্রাইভ করছে অরূপা,
পাহাড়ের চুড়ায় একটা ঝরনা আছে যেখানে আলো পানিতে পরে প্রতিফলিত হয়,
আর সেখানেই তিন আলো এক সাথে মিলিত হয়,
অরূপা সেখানে গিয়ে ঝরনার পাশে বসে,
পরিষ্কার পানিতে মাছ গুলো দেখা যাচ্ছে
জায়গা টা সুন্দর,
অরূপা সময়ের থেকে আগে দেখতে পারে,
কোন কিছু ছুলে তার ভবিষ্যৎ দেখতে পারে অরূপা৷
কিন্তু এই গুনটা তার মাঝে কিভাবে এলো সে জানে না
আরূপার সব সময় ভালো লাগে নতুন কিছুর সাথে পরিচিত হতে
যে গল্পটা অরূপা শুনছিল সেটাকে অরূপার ভীষণ কাছের মনে হয়,
যেন তারি সামনে সব কিছু ঘটে যাচ্ছে
যেন সে ওই গল্পের কোন এক অংশে ছিল বা আছে৷,
গল্পটা বড়োই অদ্ভুত
এ যেন এক রহস্য জ্বাল,
অরূপা চোখ বন্ধ করে পা ভেজায় পানিতে,
তখনি তার কাঁধে একটা মিষ্টি হলুদ রঙের পাখি এসে বসে,
অরূপা হেসে দেয়,
–হেই মিষ্টি পাখি
–আম সরি বাট এটা আমার পাখি ও কি আপনাকে বিরক্ত করেছে?
হটাৎ ই একটা ছেলে পেছন থেকে কথা বলে ওঠে,
অরূপা পেছনে ফিরে ছেলেটার দিকে তাকায়,
এক দম গল্পের সেই নির্ঝর এর মতো দেখতে,কিন্তু তার মুখটা কালো মাস্ক এ আবৃত
অরূপা মনে মনেই নির্ঝর এর চিত্র একে নিয়েছিল,
আর কিছুটা তার বাবার মতো দেখতে,
— কে আপনি?
— আমি রিফাত,
তুমি?
–আমি অরূপা তুমি এই নিরিবিলি প্রাকৃতিতে কি করো?
–ঘুরতে এসেছিলাম,
–ওহ
–বাই দ্যা ওয়ে তুমি কি করো?
–আমিও ঘুরতে এসেছিলাম,
–হেই অরূপা আই থিংক আমি তোমায় কোথাও দেখেছি,
–কোথায়,
–তুমি Astrologer অরূপা না?
–হ্যাঁ, একটু একটু,
–এই বয়সে অনেকটাই এগিয়ে গেছ তুমি।
–হ্যাঁ এটা কিছুটা বংশগত পাওয়া,
–বংশগত পাওয়া!
–হ্যাঁ,
–কে ছিল?
–আমার ঠিক জানা নেই তবে আমার মনে হয় এটা আমার ভেতর অন্য কারোর থেকে এসেছে,
–আচ্ছা তুমি ত সময়ের আগে দেখো,
সবাইকে পড়ে ফেলতে পারো
আমার হাতটা পড়বা? ,
–আপনি চান আমি আপনার হাতটা পড়ি?
–হ্যা আমি চাই,
–ঠিক আছে দিন,
ছেলেটা অরূপর দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়,
অরূপা সেটার দিকে তাকায়,
–হাতের রেখায় তারার মেলা প্রথম দেখছি আমি,
আপনি কে? আপনার মাস্ক সরান,
–সরি
আমি পারবো না,
–আপনি,
–আমার সময় শেষ অরূপা এই নেও এই বই তে তোমার গল্পের শেষ টুকু পেয়ে যাবে,
–আরে,
ছেলেটা অরূপাকে একটা রহস্যময় বই দিয়ে চলে গেল,
অরূপা সেটাকে রোদে মেলতে বইটা খুলে যায়, বই এর অক্ষর গুলো সব আবছা হয়ে উঠে আসে সামনে,
অরূপার চোখ তারার মতো জ্বল জ্বল করে ওঠে,
সামনে থাকা অক্ষর গুলো যেন খুব পরিচিত মনে হয়,
সব কিছুই অদ্ভুত রকমের কাছে টানা অনুভব হয়
শুরু হয় গল্পের পরের অংশ টুকু,

★★★★★

চোখ খুলতে নিজেকে অন্ধকার রুমে নিজেকে আবিষ্কার করে ছায়া,
মাথাটা ভার ভার লাগছে,
অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে,
–নির্ঝর ( চোখ বন্ধ করে)
–নো প্রিন্সেস আপনি নির্ঝর এর নাম নিবেন না,
আপনি এখন আমাদের কাছে নির্ঝর এর নাম নিবেন না,
–কারা আপনারা,
কেন এখানে নিয়ে এসেছেন
ছায়ার কথায় লোকটা অট্টহাসিতে মেতে উঠে,
ছায়া ভয় পেয়ে যায়,
–কি বলছেন আপনি এগুলো
আমায় ছেড়ে দিন প্লিজ,
চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here