তুই শুধু আমার ভালোবাসা পর্ব -১৫+১৬

#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব১৫

বর্ষণ বর্ষাকে বললো তোর পছন্দের জায়গা কোথায় বল নিয়ে যাবো সেখানে।

বর্ষাঃআমার পছন্দের জায়গায় যেতে চাইলে তো নিয়ে যাবেনা, উল্টে আমায় বলবে আমি নাকি বাচ্চাদের পছন্দের জায়গায় যাই। আমার পছন্দ আর বাচ্চাদের পছন্দের মধ্যে নাকি কোনো তফাৎ নেই হুহ্ 😏।

বর্ষণঃ ঠিক আছে ঠিক আছে আর বলতে হবে না আমি বুঝে গেছি এবার থাম। পার্কিং জোনে গাড়ি পার্ক করে বর্ষণ গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়িয়ে বর্ষাকেও নামতে বলে।

বর্ষাঃ গাড়ি থেকে নেমে তো পুরোই অবাক! বললো ভাইয়া আমি তো তোমায় জায়গার নাম বলিনি তাহলে তুমি কি করে বুঝলে আমি পার্কের কথা বলছি !

বর্ষণঃ তোকে আমি কি আজ নতুন চিনি? এইটুকু থেকে তোকে দেখে আসছি। তোর পছন্দ অপছন্দ ভালোলাগা মন্দ লাগা বুঝবোনা তাই কি হয়?! তা এখন এসব ভাববি নাকি সামনে এগুবি।

বর্ষা আর কিছু না বলে এক হাতে শাড়ির কোঁচা ধরে সামনের দিকে এগিয়ে গেলো সাথে বর্ষণও এগুলো।

বর্ষা পার্কে এসে খুব খুশি এখানে ওখানে ঘুরছে হাসছে কথা বলছে আর বর্ষণ সেই মুহুর্ত গুলো ক্যামেরা বন্দী করছে তবে সেটা বর্ষাকে লুকিয়ে।
বর্ষা জানেওনা যে তার এই পাগলামি, তার এই ভালোলাগার মুহুর্তটা কেউ একজন লুকিয়ে ক্যামেরাবন্দী করছে।

হাঁটতে হাঁটতে বর্ষা আর বর্ষণ নাগরদোলার পাশে চলে আসে।নাগরদোলার পাশে এসে বর্ষা দাঁড়িয়ে যায়।বর্ষণ ও ওর পাশে দাঁড়িয়ে বলে কি হলো এনি প্রবলেম?

বর্ষা একবার নাগরদোলার দিকে তাকিয়ে আবার বর্ষণের দিকে তাকাতেই বর্ষণের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে পাগলিটা কি বলতে চাইছে।

বর্ষণ বর্ষাকে বলে অন্য কোন আবদার থাকলে বল এটা পূরণ করা সম্ভব নয়।

বর্ষা জিদ ধরে নাগর দোলায় ওঠার জন্য।টিকিট কাউন্টারে কথা বলে বর্ষণ। বাধ্য হয়ে নাগর দোলায় টিকিট কেটে দুজনে উঠে বসে। শুধু দুজনের জন্য টিকিট কাটেনি বর্ষণ। পুরো নাগরদোলার বুকিং দিয়েছে সে।

নাগর দোলা ধিরে ধিরে চলতে আরম্ভ করে। নিচেরদিক থেকে উপরে উঠছে। বর্ষা বললো ভাইয়া তুমি উঠাতে চাইলেনা কেনো। আমার তো খুব ভালো লাগ….

কথাটা পুরো না করতেই বর্ষা ভয়ে হাত পা শক্ত করে বসে বর্ষণের দিকে চেপে যায়।কারণ দোলনাটা তখন উপর থেকে নিচের দিকে নামছে।

বর্ষণঃ বর্ষাকে বললো কি হলো বর্ষা! ভয় লাগছে? নেমে যাবি? নাগর দোলা থামাতে বলবো?

বর্ষাঃ ভয় পেলেও মুখে তা প্রকাশ করলোনা। বললো না না ; থামাতে হবেনা আমি ঠিক আছি।

দ্বিতীয় বার উপরে উঠে গেছে দোলনা এখন আগের তুলনায় একটু জোরে ঘুরছে। উপর থেকে নিচে নামতেই বর্ষা চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে চিৎকার দিয়ে বর্ষণকে জরিয়ে ধরে।

বর্ষণ একহাতে বর্ষাকে জরিয়ে ধরে অন্য হাতে ইশারা করে নাগর দোলা বন্ধ করতে বলে। সাথে সাথে নাগর দোলা বন্ধ করে দেয়। বর্ষণ বর্ষার গালে হাত দিয়ে বর্ষাকে ডাকছে –

বর্ষা, এই বর্ষা ঠিক আছিস!খুব বেশি ভয় লাগছে! কি হলো চুপ করে আছিস কেনো? কথা বল বর্ষা!

এদিকে বর্ষা বর্ষণকে ছেড়ে সোজা হয়ে বসে স্বভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু বর্ষার হাত পা কাঁপছে এখনো।
নাগর দোলা থেকে বর্ষাকে ধরে নেমে আসে বর্ষণ।

বর্ষাকে নিয়ে একটা বেঞ্চে বসায়। বর্ষণ তার পরীর এমন অবস্থা দেখে খুব ভয় পেয়ে যায়। কারণ বর্ষা যখন পাঁচ বছরের তখন এক শুক্রবার দুই ফ্যামেলি মিলে (বর্ষা আর বর্ষণের পরিবার) পার্কে ঘুরতে আসে।তখন বর্ষা বায়না করেছিলো নাগরদোলায় ওঠার জন্য।

নাগর দোলায় উঠে যখন নিচের দিকে নামবে তখন বর্ষা ভয়ে সেন্সলেস হয়ে যায়। তখন ডক্টর বলেছিলো খুব বেশি ভয় থেকে এমন হয়েছে। তাই বর্ষার বাবা মা সবসময় বর্ষাকে এসব থেকে দুরে রাখতো।

বর্ষণ ও চায়নি বর্ষা নাগরদোলায় উঠুক আর সেই অবস্থার পুনরাবৃত্তি ঘটুক। এই জন্যে বর্ষার আবাদার মেটাতে পুরো নাগরদোলা বুকিং দিয়েছিলো যেনো যখন তখন নেমে আসতে পারে। আর কাউন্টারে তখন বর্ষণ এই কথাটাই বলছিল।

বর্ষা এখন একদম ফিট।চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসছে। বর্ষাঃ ভাইয়া এখন বাসায় চলো আমি ঠিক আছি। বলেই গাড়ির দিকে হাঁটা ধরে।

বর্ষণ গাড়ি ড্রাইভ করছে আর বর্ষা বসে কিছু একটা ভাবছে।

বর্ষণ কিছুক্ষণ ড্রাইভ করে গাড়ি থামায়। বর্ষা মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে এটা তো বাসা নয়।

বর্ষাঃ কোথায় আনলে ভাইয়া এটা তো বাসা নয়!
বর্ষণঃ এটা যে বাসা নয় সেটা আমিও জানি। এখন কথা না বলে নাম গাড়ি থেকে।বর্ষা গাড়ি থেকে নেমে তো মহা খুশি সামনে চটপটি🥰
বর্ষার খুশি দেখে বর্ষণ বললো এই যে ম্যাম – যাই করেন ঝালটা কিন্তু কম ওকে!?

বর্ষাঃ ঘার বাকিয়ে সায় দিলো। একমনে চটপটি খাচ্ছে বর্ষা।

গাড়িতে হেলান দিয়ে এক পা উঠিয়ে দুই হাত বুকে গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে বর্ষণ। তাকিয়ে বর্ষার চটপটি খাওয়া দেখছে।

বর্ষা চটপটি খেতে খেতে এসে বর্ষণকে বললো ভাইয়া তুমি খাবেনা?
বর্ষণ খাবে না বলার সময়টাও পেলোনা বর্ষা চটপটি তুলে বর্ষণের মুখে দেয়। দুজনেই চটপটি খাচ্ছে আর ঝগড়া করছে।

বর্ষণঃ আমি তো এখানে এসেছি তুই চটপটি খাবি বলে। আমি খেতে আসিনি। তোকে খাওয়াতে এনেছি।

বর্ষাঃ বর্ষণের মুখে চটপটি তুলে দিতে দিতে বলে,ইশশ! বললেই হলো? তুমি না খেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছো এতে আমার পেট খারাপ করবেনা!

বর্ষণঃ চোখ বড় বড় করে বললো কি বললি আমি তাকালে তোর পেট খারাপ করবে? আর আমি যে তোর দিকে তাকিয়ে ছিলাম সেটা তোকে কে বললো শুনি?

বর্ষাঃ কে আবার বলবে আমি কি অন্ধ দেখতে পাইনা নাকি!

বর্ষণঃ তারমানে তুইও আমায় লুকিয়েছে লুকিয়ে দেখছিলি?

বর্ষাঃ হু দেখছিলাম ই…… কই না তো আমি তো তাকাইনি তোমার দিকে। ম মা মানে মনে হলো তাই আর কি।

বর্ষণঃ হয়েছে আর বলতে হবেনা। আপনার খাওয়া শেষ হলে এবার গাড়িতে উঠুন।

বর্ষা দুই প্লেট চটপটি প্যাক করে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। চটপটির দাম মিটিয়ে বর্ষণও গাড়িতে উঠে বসে।

বর্ষা আর বর্ষণ কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসে। গাড়ি পার্ক করে রেখে দুজনে একসাথে ভেতরে যায়।

রমা বেগম দুজনকেই একসাথে ভেতরে ঢুকতে দেখে হেসে বলে দুজনেই ফ্রেশ হয়ে এসো কথা আছে তোমাদের সাথে।

বর্ষা চটপটি নিপুর হাতে দিয়ে উপরে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে বসে বর্ষা।

রমা বেগম আর নিপু চটপটি খেতে খেতে বর্ষাকে জিজ্ঞেস করলো কোথায় কোথায় ঘুরলো কেমন মজা হলো।

বর্ষা তো খুশি মনে সবাইকে বলেই যাচ্ছে কোথায় কোথায় ঘুরেছে কি খেয়েছে কেমন মজা হয়েছে।রমা বেগম আর নিপু মন দিয়ে তা শুনছে। এর মধ্যেই বর্ষণ এসে বর্ষার পাশে বসেছে বর্ষা তা টেরই পায়নি।টের পাবে কি করে সে তো গল্প বলতে ব্যাস্ত।বর্ষণকে দেখে নিপু আর রমা বেগম মিটিমিটি হাসছে। কিন্তু বর্ষা তা বুঝতে পারলো না।

একটু পরে বর্ষণ বললো ওহ্ আচ্ছা এতো মজা হলো বুঝি?

বর্ষাঃ হুম খু….. বলেই বর্ষণকে দেখে থেমে যায়।

বর্ষণ মুখটা বর্ষার কানের কাছে নিয়ে বললো কি করছিস আর একটু হলেই তো ফুচকায় ঝাল খাওয়ার কথাটাও বলে দিচ্ছিলি।পাগল হয়ে গেছিস?

বর্ষা বর্ষণের কথা শুনে বাস্তবে ফেরে। সত্যি তো! সে এসব কি বলতে যাচ্ছিল🤭

বর্ষণ বর্ষার দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে বলে, তা আর কি কি মজা হলো?

বর্ষা কিছু না বলে লজ্জা পেয়ে নড়েচড়ে সোজা হয়ে বসে। নিপু আর রমা বেগম ওদের দুজনের এমন কান্ড দেখে হাসতে হাসতে শেষ।

বর্ষণঃ মম তুমি কি বলবে বলছিলে তখন।
রমা বেগম বললো হুম তোর খালামনি ফোন করেছিলো।
বর্ষণঃ কি বললো খালামনি।

রমাঃ বিয়ের কথাটা ফাইনাল করবে আগামীকাল সেটাই জানালো।
#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব১৬

বর্ষণঃ কি বলছো মম।পাকা দেখা দেখি সব কমপ্লিট? আর আমি কিছু জানতেই পারলামনা?

রমাঃ আরে বাবা সব এতো তারাতারি হয়ে গেছে যে সেভাবে আয়োজন করতে পারেনি তবে তোর খালামনি ফোনে সব বলেছিল আমায়। তোর পাপাকে তো ডেকেছিল কিন্তু কাজের চাপে যেতে পারেনি।বলেছে বউমাকে এক্কেবারে বিয়ের দিনেই দেখবে। আগে থেকে দেখলে পুরাতন হয়ে যাবে। কিন্তু এখন এমন ভাবে জোরাজোরি করছে যে না গেলেই নয়।

বর্ষণঃ বউমাকে আগেই দেখলে বুঝি পুরাতন হয়ে যায়! বলেই বাঁকা হাসে।

রমা বেগম বুঝতে পেরে বলে ওরে ফাজিল খুব পাকা হয়েছিস তাইনা?

বর্ষা আর নিপু কিছু বুঝতে পারছেনা তাই একজন আর একজনের দিকে তাকিয়ে আছে।

রমাঃ একচুয়েলি রাফসান এ মাসের শেষে কানাডা যাবে অফিসের কাজের জন্য, সেখানে তিন মাস থাকতে হবে। তাই বিয়েটাও তারাতারি ই করানো হচ্ছে। নতুন বউকে নিয়ে যাবে অফিসের কাজ শেষ করে হানিমুন করে দেশে ফিরবে।

বর্ষণঃ হুম বুঝলাম এক ঢিলে দুই পাখি 😊

রমাঃ হুম শুধু এটাই না আরও একটা আছে।

বর্ষণঃ কি?
রমাঃ পাখি।
বর্ষণঃ মানে?
রমাঃ মানে আগামীকাল ডেট ফিক্সড করে আগামীকাল ই এঙ্গেজড করে রাখবে।তাই তো আমাদের সবাইকে যেতে বলেছে।

এতোক্ষণে নিপু আর বর্ষা বুঝতে পারলো এতোক্ষণ ধরে বর্ষণের খালাতো ভাই রাফসানের বিয়ের কথা চলছিলো।

বর্ষণঃ আগামীকাল আমার একটু কাজ আছে তাই আমি যেতে পারবোনা। তুমি নিপুকে নিয়ে পাপার সাথে চলে যেও।

রমাঃ ওয়েট ওয়েট! তোর কাজ আছে তাই যাবিনা বুঝলাম কিন্তু বর্ষা? ওর যেতে কি প্রবলেম। রাফসান বার বার করে বলে দিয়েছে সবাইকে নিয়ে যেতে।

বর্ষাঃ প্রথমে খুব খুশি হলেও সেটা বেশি সময় স্থায়ী হলোনা। তাকে নেওয়া হবে না শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো।মন খারাপ করে একপাশে বসে আছে বর্ষা।

বর্ষণঃ মম! ওর আগামীকাল যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আর শনিবার ওর ক্লাস আছে। এমনিতেই বিয়েতে গেলে ক্লাস মিস হবে। তুমি রাফসানকে বলে দিও আমরা ওর বিয়েতে একসপ্তাহ থাকবো ওদের বাসায়। আর এখন গেলে বিয়েতে দুদিনের বেশি থাকতে পারবো না তাই যাইনি। দেখবে রাফসান মন খারাপ করবেনা।

রমাঃ হুম বুঝতে পেরেছি আর বলতে হবে না। আমি ঠিক ম্যানেজ করে নিবো।

থ্যাঙ্কস মম বলেই বর্ষণ ওর মমকে জরিয়ে ধরে।

সকাল…..

আজ একটু বেশি সকালেই ব্রেকফাস্ট করছে সবাই।রাফসানদের বাসায় একটু তারাতারিই পৌঁছোতে হবে। সেখান থেকে আবার রাফসানের হবু শ্বশুর বাড়ি যেতে হবে। সেখানেই ডেট ফিক্সড করে এঙ্গেজড এর ব্যাবস্থা করা হয়েছে।

ব্রেকফাস্ট সেরে নিপু রেডি হতে চলে গেলো রমা বেগমও চলে গেলেন তবে নিজে রেডি হতে না, তার সাহেবকে সব কিছু গুছিয়ে দিতে। তা না হলে তিনি তো আবার নিজে নিজে কিছু খুঁজে পাননা। রমা বেগম রাতেই ব্যাগপত্র সব গুছিয়ে রেখেছে যেনো সকালে দেরি না হয়ে যায়।

বর্ষণ ব্রেকফাস্ট করে উপরে চলে যায়। আর বর্ষা নিপুর কাছে যায়। নিপুকে হেল্প করতে।

বর্ষা নিপুর রুমে গিয়ে তো হা হয়ে নিপুকে কি অসাধারণ দেখতে লাগছে।

চুড়ি হাতার আকাশি কালারের লং কামিজ, সাদা চুড়িদারি, সাদা আর আকাশি মিশ্রনের ওড়নাটা একপাশে দিয়েছে অন্য পাশে তার লম্বা চুল কিছু পেছনে আর কিছু সামনে দিয়ে রাখা।

দুধে আলতা গায়ের রং না হলেও। ফর্সা নিপুকে অনেক সুন্দর দেখতে লাগছে।

রায়হান খানঃরমা বেগম আর নিপুকে নিয়ে বেরিয়ে পরে।

রমা বেগম যাওয়ার আগে সার্ভেন্টদের সব কিছু বুঝিয়ে বলে গেছে যেনো বর্ষণ, বর্ষার কোনো প্রকার সমস্যা না হয়। যখন যেটা লাগবে যেনো পৌঁছে দেয়। ইনফ্যাক্ট কি কি রান্না হবে সব কিছু বলে দিয়েছে।

এদিকে রায়হান খান পৌঁছে গেছে রাফসানদের বাসায়। গেট দিয়ে ঢুকতেই রাফসানদের বাসার সবাই এসে গেটে হাজির।
তারা খুব খুশি হয়েছে অনেকদিন পরে আবার সবাই একসাথে হবে বলে।

গাড়ি পার্ক করে রায়হান খান নামলো গাড়ি থেকে। এক এক করে রমা বেগম আর নিপুও নেমে আসে।
ঋতু এখনো উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে গাড়ির দিকে। হয়তো কাউকে খুঁজছে।

রমাঃ কিরে ঋতু কি হলো কাউকে খুঁজছিস?
ঋতুঃ খালামনি তুমি আর নিপু নামলে, বর্ষণ বর্ষাকে তো দেখছিনা! ওরা কি আলাদা গাড়ি করে আসছে? বলেই পেছনে উঁকি দেয় ঋতু।

রমাঃ যে এসেছে তার কোনো কদর নেই, যারা আসেনি তাদের জন্য যতো মাথা ব্যাথা তাইনা?

আসেনি মানে!! ঋতু, রোহিত, রাফসান একসাথে বলে কথাটা।

রমাঃ বলছি বলছি আগে ভেতরে তো যেতে দিবি নাকি এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই সব বলবো।

ঋতুঃ আরে না না খালামনি ” এসো ভেতরে এসো।তা নিপু তুমি কেমন আছো? ভালো তো? তোমাকে তো দারুণ লাগছে!

নিপুঃ জ্বি আপু আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

কথা বলতে বলতে সবাই ভেতরে চলে আসে।

রাফসানের মাঃ ছুটু( রমা বেগমকে) তোরা উপরে গিয়ে আগে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নে তার পর গাড়িতে বসে যতো খুশি গল্প করিস। কিচেন থেকেই কথাটি বললো রাহেলা বেগম।

ওরা ফ্রেশ হতে হতে চলুন এবার পরিচয়টা করিয়ে দেই।

ঋতু হলো রাফসানের বড় বোন। রাফসানরা এক ভাই এক বোন। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। রোহিত হলো রাফসানের বেচারা দুলাভাই যে বরাবরই বউয়ের ভক্ত। ঋতু যেটা হ্যা বলবে সেটা না করার সাধ্য রোহিতের নেই।সুন্দরী বউয়ের উপর দিয়ে কথা বলতে মন সায় দেয় না তার।

রাফসানের বাবা এনামুল সাহেব, মা রাহেলা বেগম। এনামুল সাহেব নিজের বিজনেস দেখাশোনা করেন।রাহেলা বেগম গৃহিণী। রাফসান ও বাবার সাথে তাদের বিজনেস দেখাশোনা করে। বিশেষ করে রাফসান তাদের কোম্পানির বিদেশী ব্রাঞ্চ দেখাশোনা করে।

রমা বেগম, নিপু, রায়হান খান ফ্রেশ হয়ে এলো।
সবাই একসাথে বসে নাস্তা করে বেরিয়ে পরে রাফসানের হবু শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে।বেশি দুরের পথ নয় মাত্র আধাঘন্টা সময় লাগে।

বড়রা (বর্ষার মা বাবা,রাফসানের মা বাবা, আর রাফসানের চাচা) যাচ্ছে রায়হান খানের গাড়িতে।রায়হান খান নিজে ড্রাইভ করছে পাশে বসেছে এনামুল সাহেব। দুই বোন পেছনে বসে গল্পের ঝুড়ি খুলে বসেছে।

আর ছোটরা( নিপু,ঋতু,রোহিত,আর রাফসান) যাচ্ছে অন্য গাড়ি নিয়ে যেটা ড্রাইভ করছে রোহিত আর পাশে বসেছে রাফসান। পেছনে বসেছে নিপু আর ঋতু। ওরা ওদের মতো গল্পে মেতে আছে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই ঈশিতাদের বাসায়পৌঁছে যায় সবাই। ঈশিতা হলো সেই মেয়ে যার সাথে রাফসানের বআজ এঙ্গেজড।

রাফসানদের গাড়ি থেকে নামতে দেখে বড়রা এগিয়ে এসে সবাইকে ভেতরে নিয়ে যায়।
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে কনে দেখে তো সবাই খুশি দেখতে মাশাআল্লাহ। তার থেকে বড় কথা হলো ব্যাবহার টা খুবই ভালো অল্প সময়ে সবাইকে আপন করে নিতে পারে।

ওজু করে ছেলেমানুষ জুমআর নামাজ পড়তে যায়। নামাজ শেষে খাওয়া দাওয়া করে কথা বলবে সবাই।

…………..
বর্ষণ নামাজ পড়ে এসে বর্ষাকে সাথে নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নেয়।
দুপুরে খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে বর্ষা বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই বর্ষণ নক করে।
বর্ষা উঠে বসে বলে ভেতরে এসো ভাইয়া।

বর্ষণঃ মমের সাথে যেতে পারিসনি বলে মন খারাপ?
বর্ষাঃ একটু হাসি দিয়ে বলে না ভাইয়া। তবে হ্যা ঐ সময় মনটা একটু খারাপ হয়েছিল বাট এখন ঠিক আছি।

বর্ষণঃ রাতে বাইরে যাবি ডিনার করতে? তোর পছন্দের কোন রেস্টুরেন্টে।

বর্ষাঃ না ভাইয়া আজ আর বের হবোনা । তার থেকে ভালো আজ আমি তোমায় রান্না করে খাওয়াবো।

বর্ষণঃ কিহ্! তুই আর রান্না? একদম না। একদম পাকামি নয় ঠিক আছে?

বর্ষা মনে মনে ভাবছে শুধু শুধু কেনো যে বর্ষণ কে কথাটা বলতে গেলো। না বললে তো আর নিষেধ করতো না।ভেবে মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো।

বর্ষণঃ কি হলো মুখ এমন করে রাখলি কেনো। আমার কথাটা বুঝি ভালো লাগেনি? ওকে রান্না করবি।

বর্ষাঃ তো মহা খুশি। সে নিজে হাতে রান্না করবে আর তার পারমিশন দিয়েছে বর্ষণ নিজে।

বর্ষণঃ ওয়েট ওয়েট! আমার কথা এখনো শেষ হয়নি।
তুই রান্না করবি ঠিকই তবে আমার এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করবি। মেইন শেপ এই শ্রাবণ আহমেদ বর্ষণ। বলেই বর্ষণ হাসতে হাসতে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা ধপাস করে বসে পরে। তার সব আশায় বালি চাপা দিয়ে দিয়েছে বর্ষণ।

………

দুুপুরের খাবার খেয়ে সবাই ঈশিতাদের ড্রইং রুমে কথা বলছে।একচুয়েলি সবাই বসে ডেট ফিক্সড করেছে এঙ্গেজড ও হয়ে গেছে।
সবাই কথা বলছে তখন ঋতু উঠে বলে তোমরা বড়রা কথা বলো আমরা বরং ঈশিতার রুমে গিয়ে আড্ডা দেই বলে ঋতু,রোহিত,নিপু রাফসান আর ঈশিতা উঠে যায়।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here