#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ২৯
মিহি অভ্রকে এমন অবস্থা দেখে সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যায়। অভ্র মীরাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে দ্রুত এসে মিহিকে ধরে। মিহিকে এভাবে অজ্ঞান হারাতে দেখে অভ্র ভয় পেয়ে যায়।কোলে তিলে নেয়, ড্রাইভারকে ডাকে। অভ্র মিহিকে নিয়ে গাড়ির পেছনে বসে। বোতল থেকে পানি নিয়ে মুখে ছিটিয়ে দেয়।মিহিকে অনেক ডাকে। কিন্তু কোনো কিছুতে ই কোনো কাজ হয়নি।
অভ্রের গাড়ির পেছনে মীরা ও গাড়ি নিয়ে আসছে। অভ্রকে মেয়েটার সাথে দেখে জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে মীরা। মীরা এইটুকু বেশ ভালো ই বুঝেছে মেয়েটা অভ্রের বউ। বউ হক আর যা ই হক অভ্রকে মীরা ভালোবাসে। রাগের বশে যা ই বলুক দিন শেষে মীরার সব ভালোবাসা অভ্রের জন্য ই।
একটা হসপিটালের সামনে অভ্র গাড়ি থামাতে বললো, মিহিকে নিয়ে সোজা ইমারজেন্সি কক্ষে চলে গেলো। অভ্র এতোটা উত্তেজিত হয়ে ডাক্তারদের ডাকতে যায়, সব নার্সরা চলে আসে। সাথে ডাক্তার ও আসে।
মীরা পেছনে দাড়িয়ে আছে। মিহির জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু কোনো কথা বলছে না।হঠাৎ মেন্টালি শকড থেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলো।
— মিস্টার অভ্র আপনি একটু আমার কেবিনে আসুন।
অভ্র মিহির হাত ছেড়ে ডক্টরের সাথে যেতে লাগলো। কিন্তু মীরা যে এই কক্ষে ছিলো তা দেখেনি। অভ্রের চার পাশে কী হচ্ছে তা মাথায় ডুকছে না। শুধু একটা ই টেনশন মিহি কী ভুল বুঝলো।
অভ্র চলে যাওয়ার সাথে সাথে মীরা মিহির পাশে গিয়ে বসে। অভ্রের দিকে হাত বাড়ালে হাত ভেঙ্গে দিবো।অভ্র আমার ছিলো, আমার আছে আর আমার ই থাকবে। আর যদি অভ্রের সাথে বেশি মেলামেশা করার চেষ্টা করো তাহলে তোমাকে কিছু করবো না সোজা অভ্রকে মেরে ফেলবো। আমি অভ্রকে পাবো না তো কেউ পাবে না। তুমি বলতে পারোএটা কেমন ভালোবাসা। আমার ভালোবাসা এমন ই। তোমাদের বাড়িতে আমার লোক আছে যে তোমাকে সর্বক্ষণ চোখে চোখে রাখবে। তাই অভ্রর থেকে দূরে থাকবা। ফোন থেকে অভ্র আর মীরার কয়েকটা পিক দেখলো। যেগুলোতে পাশাপাশি বসা ছিলো অভ্র মীরা।
মিহি কোনো কথা বলছে না। শুধু চোখ থেকে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়ছে। ভালোবাসার মানুষের সাথে অন্য মেয়েকে কথা বলতে দেখলে ই সহ্য হয় না। আর মিহি পাশাপাশি বাসা ছবি দেখেছে। তারউপর একটু আগে এভাবে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় দেখছে। খুব বিশ্বাস করতো অভ্রকে। সব বিশ্বাস ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে।৫৬
মীরা মিহির কাছ থেকে চলে আসার কিছুক্ষনের মধ্যে ই অভ্র ওষুধ নিয়ে প্রবেশ করলো, অভ্রকে দেখে মিহির চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে। এখন যদি মরে যেতো পারতো তাহলে সব থেকে খুশি হতো মিহি। কষ্ট মাত্রাটা এতো ই বেশি যে নিজের মৃত্যু কামানা করতে ও দুবার ভাবছে না মিহি।
–টিয়াপাখি কষ্ট হচ্ছে খুব।
মিহি কান্না বন্ধ করে অন্য দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো, আমার সামনে এতো নাটক না করলে ও পারেন। আমি তো সব জেনে ই গিয়েছি।
মিহি অভ্রকে মুখফুটে কিছু বললো না। টিয়াপাখি অন্যদিন ডাকটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করতো। আর আজকে ঘৃনা হচ্ছে।
অভ্র মিহিকে এতো ভাবতে দেখে কোলে তোলে নিলো। কোলে নেওয়ার সাথে সাথে মিহি বললো,
–আমি হেটে যেতে পারবো।
–তুমি অসুস্থ
–আমি অসুস্থ তা আমি বুঝে নিবো। আপনাকে বুঝতে হবে না।
–ভুল বুঝো না টিয়াপাখি। বিশ্বাস রাখো আমার উপর।
–আমাকে নামান, আমি হেটে যাবো।
–একদম চুপ, আমার বউ আমি যা ইচ্ছে করবো।
মিহি আর কিছু বলো না জানে এখন হাজার বললে ও অভ্র কথা শোনবে না।
গাড়িতে বসে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে মিহি। চারদিকে এতো সুন্দর তাও মিহির অসহ্য লাগছে। এই সময়টা খুব ভালো কাটতো যদি ঐ মেয়েটার সাথে দেখা না হতো।
অভ্র কয়েকবার মিহিকে ডাকছে কিন্তু মিহি কোনো সাড়া দেয়নি। শুধু একবার বলেছে আমাকে একা থাকতে দেন। অভ্র ও চাচ্ছে মিহিকে মীরার ব্যাপারে সব বলতে , অনেক সময় লাগবে তাই বাসায় গিয়ে সব বুঝিয়ে বলবে। কিন্তু মিহি তো কোনো কথা ই বলতে চাচ্ছে না। মিহি যতটা অভ্রকে ভালোবাসে তার থেকে বেশি অভ্র মিহিকে ভালোবাসে। কখনো চায়নি কষ্ট দিতে, কিন্তু আজকে মীরার জন্য মিহি কষ্ট পেলো। মীরা অতীত কিন্তু মিহি বর্তমান। বর্তমানকে ই আকড়ে ধরে অভ্র ভবিষ্যত পাড়ি দিতে চায়।
__________________
বিছানায় শুয়ে আছে, বাসায় আসার পর অবশ্য সবাই এসে দেখে গেছে। কারো কোনো কথা ই মিহির কানে যাচ্ছে না। শুধু বার বার মেয়েটার কথা কানে বাজতেছে। অভ্রর সাথে মেলামেশা করলে অভ্রকে মেরে ফেলবে। অভ্রের সাথে মেয়েটার সম্পর্ক ছিলো যার প্রমাণ ঐ ছবিগুলো। তাহলে কী এই জন্য ই বিয়েটা ছয়মাসের জন্য। হে হতে পারে বিয়েটা ছয় মাসের। অভ্র তো বলে ই দিয়েছিলো ছয় মাস পর ডিভোর্স। এই কয়েকদিনে মিহি অভ্রের প্রতি যে অনুভূতিগুলো মনের কোনে উকি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিহি দোষ।
মিহি যেমন অভ্রকে ভালোবাসে হয়তো ঐ মেয়েটা ও অভ্রকে তার চেয়ে বেশি ভালোবাসে।
হঠাৎ অভ্র রুমে ডুকলো, এতোক্ষণ অভ্র বাহিরে ছিলো।
–টিয়াপাখি খাবারটা খেয়ে নেও।
–খাবো না।
–না খেলে আবার শরীর খারাপ করবে।
–আমাকে নিয়ে আপনার না ভাবলে ও চলবে।
— আমার বউ আমি ভাববো না তো কে ভাববে।
–ঐটা আপনার টেনশন করতে হবে না। আপনার ভাবনার মানুষ তো আছে ই তাকে নিয়ে আপনি ভাবনায় ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন।
–প্লিজ টিয়াপাখি আমাকে ভুল বুঝো না। আমি তোমাকে সব বলতে চাই ঐ সুযোগটা আমাকে দেও।
–আর কী সুযোগ দিবো আমি সব বুঝে ফেলেছি।৩৬
এর মধ্যে ই দাদিমা রুমে ডুকে যায়। তাই দুজন ই কথা বলা অফ করে দিয়ে সামনে তাকায়,
–তোরা কী আবার ঝগড়া শুরু করেছিস। তাহলে কিন্তু তোদের আবার আলাদা করে দিবো।
–দাদিমা আমি আপনার সাথে ই ঘুমাবো। এতোদিন আপনি আলাদা করে দিয়েছিলেন এখন আমি নিজে আলাদা হতে চাচ্ছি।
দাদিমা হেসে উওর দিলল স্বামীর সাথে অভিমান করে বুঝি এই কথা। স্বামী স্ত্রী মধ্যে মান অভিমান, রাগারাগি যা ই বলিস তা রাতের ঘুমের আগে শেষ করে ফেলতে হয়। তাই তোদেরকে সময় দিচ্ছি তোরা দুজন ঠিক হয়ে নেয়।
দাদিমা রুম থেকে চলে যায়।
–অভ্র মিহির কাছে গিয়ে মুখ চেপে ধরে।
–এই কী বলিস তুই কান খুলে শোনে রাখ, আমি তোকে ভালোবাসি। আর আমাকে তুই ভুল বুঝবি না একদম।
মিহি অভ্রকে সরিয়ে বললো,
–নিজের চোখে দেখার পর ও বিশ্বাস করতে নিষেধ করছে।
–সব সময় নিজের চোখের দেখা ঠিক হয়না মিহি।
–প্রতিদিন অফিসে মনে হয় এগুলো ই করেন তাই তো।
এবার মিহিকে সজোড়ে একটা থাপ্পড় মারে অভ্র।
থাপ্পড় মেরে জড়িয়ে ধরে অভ্র। মিহির চোখের পানি মুছে দিয়ে। কপালে চুমু খায়।
–প্লিজ টিয়াপাখি ভুল বুঝো না। অনেক ভালোবাসি তোমাকো এটা বিশ্বাস করো। আমি চাইনা তুমি কষ্ট পাও।
মিহি সামনে তাকাতে ই দেখে দরজায় কারো ছায়া দেখে যাচ্ছে।
তাহলে কী সত্যি ই ঐ মেয়েটার লোক এই বাড়িতে আছে যে আমাকে চোখে চোখে রাখে। মিহি অভ্রকে ধাক্কা দিয়ে বেড থেকে নেমে দরজার দিকে যাচ্ছে, দেখতে হবে মানুষটা কে। কার ছায়া দেখতে পেলাম….
#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ৩০
মিহি রুম থেকে বের হয়ে কাউকে ই পায়নি। চারদিকে খুজলো কিন্তু কোনো কিছু ই খুজে পেলো না। মিহিকে এভাবে চলে আসতে দেখে অভ্র ও পিছনে পিছন আসতে থাকে।
–কী খুজতেছো।
–তা আপনার জানার প্রয়োজন না বলে ই আমি মনে করি।
–মিহি তোমার সাথে আমার কথা আছে প্লিজ একটু শোনো।
–না, আমি আপনার মুখ থেকে কোনো কথা ই শোনতে চাইনা।
বলে ই মিহি নিচে চলে গেলো। কিন্তু নিচে কাউকে ই পেলো না। সবাই সবার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়েছে। শরীরটা বেশ খারাপ লাগছে তারউপর এতো টেনশন নিতে পারছে না মিহি। অভ্রের পাশে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো মিহি। কান্না করতে করতে মাথা প্রচন্ড ব্যাথা করছে দুচোখ যদি কথা বলতে পারতো তাহলে হয়তো চিৎকার করে বলতো এবার আমাদের একটু বিশ্রাম দেও।
বেলকনিতে গিয়ে বাহিরে তাকাতে ই দেখলো আকাশে অনেক মেঘ জমেছে। আজকে আর চাঁদ নাই। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। ঠিক মিহির মনের আকাশের মতো
মিহির মনের আকাশে ও বড্ড মেঘ জমেছে, সুযোগ পেলে ই বৃষ্টি নামে।
হঠাৎ ডাকার শব্দ পায় মিহি, বাহির থেকে অভ্র ডাকছে। অভ্রের ডাকে সাড়া না দিয়ে বাহিরের দিকে আবার দৃষ্টি দিলো। দুমিনিট পর দরজায় কেউ ভেঙ্গে ফেলছে এমন মনে হতে ই মিহি দৌড়ে গিয় দরজা খুলে দেয়।
–রুমে আসো।
–আমি আপনার সাথে থাকতে চাই না।
–মিহি আমার কথা শোনো। তারপর তুমি যে শাস্তি দিবা আমি মাথা পেতে নিবো।
–ঠিক তো। সব শাস্তি মাথা পেতে নিবেন
–হে,
–তাহলে বলেন।
–ঠান্ডা মাথায় শোনো।
অভ্র প্রথম থেকে মীরার সম্পর্কে সব বললো। সব কিছু শোনে মিহি অভ্রের দিকে শুধু তাকিয়ে আছে কিছু বলছে না। অভ্র আবার বললো,
–মিহি যা হয়েছে আমি ভুলে গিয়েছি। আমি তোমাতে এতোটা আসক্ত হবো তা ভাবতে পারিনি।তোমাকে ছেড়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না।আমি তোমাতে আসক্ত মিহি অন্য কারো কাছে নাহ্।
মিহি ও অভ্রকে অনেক ভালোবাসে। অতীত সম্পর্কে ছেড়ে যদি চলে যায় তাহলে মিহির ভালোবাসাটা টা ভালোবাসা ছিলো না ক্ষনিকের মোহ ছিলো। আর অতীত ভুলে যখন মিহিকে অভ্র মন থেকে মেনে নিয়েছে তাই মিহি ও অভ্রের অতীত ভুলে যেতে চায়।
মিহি কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো,
–মীরা আমাকে বলেছে, আপনার সাথে বেশি মেলামেশা করলে আপনাকে মেরে ফেলবে।
–মীরার এসব কথায় তুমি ভয় পাচ্ছো।
–এমন কথা বললে কী ভয় পাবো না নাকি।
—এসব নিয়ে ভয় পেতে হবে না, অনেক হয়েছে এখন ঘুমাবে চলো।
অভ্র মিহিকে বেডে বসিয়ে, খাবার খাইয়ে দিলো, ওষুধ খাওয়ানো শেষে হলে মিহির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। মিহি ঘুৃমের রাজ্যে ডুবে যায়।
——————————
সকালে মিহির ঘুম ভাঙ্গতে ই চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে অভ্র মিহির দিকে একদৃষ্টি তাকিয়ে আছে। হালকা বাতাসে অবাধ্য চুলগুলো মুখে এসে পড়লে অভ্র চুলগুলো সরিয়ে আবার আগের মতো দৃষ্টি স্থাপন করে। অভ্রকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মিহি কাথা টেনে মুখ ডেকে নেয়। অভ্র সাথে সাথে কাঁথা সরিয়ে নেয়। মিহি আবার কাঁথা টেনে মুখে দেয়। অভ্র এবার মিহির উপর থেকে কাঁথা নিচে ফেলে দেয়। হালকা শীত অনুভব হতে ই মিহি অভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
–আবার ঘুমাবে নাকি।দশটা বাজে।
–কিহ্
মিহি বিছানা ছেড়ে দৌড়ে ওয়াশরুম চলে যায়। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে এসে অভ্রকে বলে,
–আপনি আমাকে আগে ডাকেননি কেনো।
–আমি যে আমার ঘুমন্ত টিয়াপখিটাকে মন ভরে দেখছিলাম। ঐ মায়ায় পরিপূর্ণ মুখখানা দেখে আর ডাকতে ইচ্ছে করেনি।
–এখন নিচে গেলে সবাই কী ভাববে। আর আপনি অফিসে যাননি কেনো।
–সবাই জানে আমার টিয়াপাখি অসুস্থ তাই কেউ কিছু মনে করবে না। আর অফিসে যাবো তোমাকে নিয়ে।
–আমাকে কেনো নিয়ে যাবেন।
–কখনো যেনো কোনো সন্দেহ না করতে পারো তাই সাথে সাথে রাখবো। সন্দেহ জিনিসটা খুব খারাপ। যে সম্পর্কে সন্দেহ থাকে তা ক্ষনস্থায়ী হয়। সন্দেহ মনের অসুখ যা কোনো ওষুধ ধারা ই সুস্থ করা সম্ভব না।
মিহি মেকি হাসি দিয়ে নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো তখন ই অভ্র পেছন থেকে ডাকলো,
–টিয়াপাখি
মিহি ঘুরে তাকাতে ই একটা শপিং ব্যাগ দিয়ে বললো,
–এইখানে শাড়ি জুয়েলারি আছে, দাদিমার কাছ থেকে পড়ে আসো।
মিহি ব্যাগটা দাদিমার রুমে নিয়ে রেখে দিয়ে নিচে চলে গেলো। নিচে যেতে ই অপু বললো,
–কী ভাবি এখন কেমন আছেন।
–জ্বি দুলাভাই আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
–আমি দেবর আপনার, দুলাভাই নাহ্।
–তাহলে আমি ও শালিকা আপনার ভাবি না।
–সে কী আমার ভাইয়ের বউকে ভাবি ডাকবো না নাকি।
–তাহলে আমার বোনের বিয়ে করা জামাইকে দুলাভাই ডাকবো না নাকি।
রেনু বেগম খাবার নিয়ে এসেছে, মিহির মুখে খাবার পুরে দিয়ে রেনু বেগম কথাটা বললো,
–তোরা কী বাচ্চা নাকি এভাবে ঝগড়া করছিস যে।
অভ্র নিচে নামতে নামতে বললো,
–আমাকে কবে খাইয়ে দিয়েছো তা ভুলে গিয়েছি, ছেলের বউকে তো দেখছি প্রতি বার ই মুখল তুলে খাইয়ে দিচ্ছো।
–অপু ওরা আমার ছেলের বউ না। মিহি, মিনতি আমার মেয়ে।আর মিহি এ বাসার সবার ছোট , মিহি আদর করবো না তো তোদের মতো দামড়া(ষাড়) গুলোকে আদর করবো নাকি।
মিহি হাসতে হাসতে শেষ। মিহির হাসি দেখে অপু রেগে বলে,
–ছোট বলে তো মিহিকে, বিয়ে তো হয়েছি ই সামনের বছর ই দেখবা কোলে বাচ্চা নিয়ে বসে আছে।
রেনু রাগান্বিত কন্ঠ বললো,
–থাপ্পড় খাবি অপু। মিহি এখন ও খুব ছোট যতই অভ্র বড় হতে পারে, মিহি এখন ও ছোট। আগে মিনতি আর তোর ঘর আলো করে আমার নাতিনাতনি আসবে তারপর মিহি, অভ্রের ঘরে।
মিহি বাচ্চার কথা শুনে লজ্জা পেয়ে দাদিমার রুমে শাড়ি পড়তে চলে গেলো।
দাদিমা শাড়ি পড়ানো শেষে বললো,
–মান অভিমান মিটেছে।
মিহি হেসে মাথা নাড়ালো।
–তোরা দুজন কী নিয়ে যে এতো অভিমান করিস তা ই বুঝতে পারি না।
–আমি করি নাকি আপনার নাতি করে।
–হে এখন করলে ও আমার দোষ হবে, না করলে ও আমার দোষ হবে। নারির ক্ষমতায়ন তো।
অভ্রকে দেখে মিহি রাগ দেখিয়ে বললো,
–আমি যেখানে যাই সেখানে ই আপনার যেতে হবে।
–তোমাকে ছাড়া একমুহূর্ত ও আমার চলে না টিয়াপাখি।
–কী হচ্ছে কী। গুরুজনদের সম্মান দিতে শিখেন।
অভ্র হাসি দিয়ে বললো,
–দাদিমা তুমি কিছু শুনেছো।
–নাহ্ তো।
–হে যেমন নাতি, তেমন দাদিমা।
–হে এখন চলো অনেক আর সময় নষ্ট না করা ই শ্রেয়।
মিহি অভ্র দুজনে ই রেডি হয়ে নিচে নেমে বের হয়ে দরজার সামনে যেতে ই দেখলো মীরা।
মীরাকে দেখে মিহি চমকে যায়। আবার কী অশান্তিময় বার্তা নিয়ে এসেছো…..
চলবে,
[ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]
চলবে,
[ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, ধৈর্য সহকারে পড়ুন]