তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায় পর্ব ২৯+৩০

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২৯
..সাঁঝ এর কেবিনে বসে আছে বেলা। চোখ মুখ পুরো রাগে লাল হয়ে আছে। এতক্ষণ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখলেও এখন আর রাগ টা ধরে রাখতে পারছে না। দিশার বলা প্রত্যেকটা কথা যেনো এখনও গায়ে কাঁটার মত ফুটে যাচ্ছে। আর তার সাথে দিশার ইন্টেনশন বুঝতে আর বাকি নেই। আর এখন তার কাছেও পরিষ্কার হয়ে গেছে এর আগে তার কাছে কে সাঁঝ এর সাথে দিশার ক্লোজ ছবি গুলো তাকে পাঠিয়ে ছিল। এগুলো ভাবতেই মাথা ফেটে যাচ্ছে রাগে। সকাল থেকে ফুরফুরে থাকা মন মেজাজ টা পুরো বিগড়ে গেছে।
.
. সাঁঝ তাড়াতাড়ি মিটিং শেষ করে তার কেবিন এর দিকে আসতে থাকে। সে জানত বেলা আসছে তার কাছে। সে অফিসে আসলেও তার নজর ছিল ল্যাপটপ স্ক্রিন এর ওপর যেটা পুরো বাড়ির ফুটেজ ভেসে ওঠে। তাই সকালে তার বেরোনোর পর থেকে বেলার প্রতিটা মুভমেন্ট দেখে গেছে। আর এখন সামনে থেকে বেলা কে দেখে তার চোখের তৃষ্ণা মেটাতে চাইছে তাই সময় যেনো আর কাটতে চাইছে না। কেবিনে ঢুকতে সরাসরি চোখ যায় সামনে সোফায় বসে থাকা বেলার ওপর। আর সাথে সাথে সাঁঝ এর চোখ মুখ কুঁচকে যায়। কারণ বেলার চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে আছে। মনে হচ্ছে প্রচুর রেগে আছে। কিন্তু কেনো? হল টা কি? তার আসতে দেরি হয়েছে তাই কি? সাঁঝ নিজের মনে ভাবতে ভাবতে বেলার দিকে এগিয়ে যেতে লাগে।
.
. বেলার পাশে গা ঘেঁষে আসতে করে বসে মুখ ঝুকিয়ে বেলা কে দেখতে থাকে সাঁঝ। বেলা বুঝতে পারে যে সাঁঝ এসেছে তাও কোনো প্রতিক্রিয়া না করে চুপচাপ বসে থাকে গুম হয়ে। সাঁঝ আরো একটু সরে এসে বেলা কে টেনে নিজের কোলের ওপর টেনে এনে বসায়। এবারে বেলা আগুনে চোখে তাকায় সাঁঝ দিকে মনে হচ্ছে এখুনি এই চোখ দিয়ে ভষ্ম করে দেবে। সাঁঝ ও অবাক হয়ে যাওয়ার ভান করে ভয় পাওয়ার চেষ্টা করে। তারপরেই মুচকি হেসে বেলার থুতনি ধরে একটু উঁচু করে তোলে। তার পরেই টুপ করে বেলার থুতনিতে থাকা তিল এর ওপরে হালকা একটা বাইট বসিয়ে দেয়। বেলা হাত দিয়ে সাঁঝ কে সরিয়ে দেয়। কোলে থেকে উঠে যেতে নিলে সাঁঝ আরো জোরে চেপে বসিয়ে রাখে। ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন চোখে তাকায় বেলার দিকে।
.
–“ছাড়ো আমাকে বাড়ি যাব। বেলা অভিমান নিয়ে বলে ওঠে।
.
–” কেনো? হুম? বেলা কে নিজের সাথে আরো একটু মিশিয়ে নিয়ে বলে ওঠে।
.
–“না আসলে আমি তোমার কাজের মাঝে এসে ব্যাঘাত ঘটিয়েছি। আমি জানতাম যে তুমি আমাকে এখানে আশা পছন্দ করবে না। তাই আর তোমার সময় নষ্ট করতে চাই না। বলেই বেলা নিজেকে ছাড়াতে যায়।
.
. এতক্ষন এর জমে থাকা রাগ টা পুরো পুরি অভিমান হয়ে সাঁঝ এর ওপরে ঝড়ে ঝড়ে পড়ছে।
.
–” মানে? এইসব ভুল ভাল কথা কোথায় পেয়েছ তুমি? হুঁ? তুমি জানো না আমি পারলে তোমাকে আমার বুকের মাঝে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তোমাকে ফটো ফ্রেম এর মত সব জায়গায় আমার সামনে সাজিয়ে বসিয়ে রাখি। তাহলে তুমি এমন কথা বলছো কেনো হঠাৎ করে। সাঁঝ কিছুটা জোরে তীক্ষ্ণ ভাবে বলে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে নিজের মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে রেখেছে। সে জানে সাঁঝ তাকে কতটা ভালোবাসে। তার প্রতিটা কথার সত্যতা। সে জানে যদি সম্ভব হতো তাহলে সাঁঝ এর বলা প্রতিটা কথা সাঁঝ করে দেখাতো। তার পরেও দিশার বলা কথা গুলো তার কানে বাজে। আর চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই পুরোনো দিনের ছবি গুলো। আর এগুলো দেখেই যেনো রাগ জেদ অভিমান সব কিছু এক সাথে মাথায় চাড়া দিয়ে ওঠে।
.
–“আমার মনে হয় তোমার কোথাও যাওয়ার প্রোগ্রাম ছিল। তাই আমার চলে যাওয়া উচিত। আমার কারণে তোমাকে এখানে এখনও বসে থাকতে হচ্ছে। তাই আমি চলে যাচ্ছি তুমি বরং তোমার প্রোগ্রাম এর দিকে যাও। বেলা বলে ওঠে।
.
–” এই? এদিকে তাকিয়ে বল দেখি। আমি তোমাকে একবারও বলেছি আমি কোনো প্রোগ্রামে যাব? বা আমার কোনো প্রোগ্রাম আছে? তাহলে কথা উঠছে কেনো? সাঁঝ জিজ্ঞেস করে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা বলে না চুপচাপ মাথা ঘুরিয়ে বসে আছে। দাঁত দিয়ে ঠোঁট দুটো কে পিষে যাচ্ছে। সাঁঝ বেলার কান্ড দেখে এবার কিছুটা জোরে বেলা কে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
.
–“কি হল কথা বলছো না কেনো এখন? বল আমি বলেছি তোমায়? সাঁঝ কিছুটা ধমক দিয়ে বলে ওঠে।
.
–” আর তুমি আমার জিনিসের ওপরে অত্যাচার করছো কেনো শুনি? চোখ রাঙিয়ে বেলার ঠোঁটে আঙুল বুলিয়ে বলে ওঠে।
.
–“এক সপ্তাহ বাড়িতে ছিলে হয়তো বিরক্ত হয়ে গেছ। এখন রিফ্রেসমেন্ট এর দরকার তাই বাইরে যেতে পারো। কোথাও কোনো প্রোগ্রাম থাকতে পারে। বেলা এবার সাঁঝ এর চোখের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
. যেখানে বেলা আসতে আসতে দেখতে পায় নীল গভীর চোখ জোড়া কেমন লাল হতে শুরু করেছে। কপালের রগ গুলো ফুলে ফুলে উঠতে শুরু করেছে। সাঁঝ এতক্ষণ ধরে বেলার এই সব আজগুবি কথায় বিরক্ত হচ্ছিলো আর এই কথা শুনে রাগে আগুন হতে শুরু করে আর রাগ টা কে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারছে না। তার সামনে এখন অন্য কেউ থাকলে এতক্ষণ তার মুখের জিওগ্রাফী পাল্টে দিত কিন্তু আফসোস এটা বেলা তাই এই চিন্তা আনা ও পাপ। সাঁঝ নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে এক হাত বেলার কোমরে শক্ত করে চেপে ধরে আর একহাত মাথার পিছনে চুল টেনে ধরে নিজের মুখের সমান করে। নিজের ঠোঁট দিয়ে বেলার ঠোঁটে ডুবে দেয়। প্রথমে জোরে জোরে শুরু করে কামড় দিতে থাকে নিজের রাগ কমাতে। বেলা নিজের হাত একটা সাঁঝ মাথায় আর গলায় রাখে। এদিকে সাঁঝ বেলার স্পর্শ পেয়ে আসতে আসতে নিজের রাগ কন্ট্রোল হয়ে আসে। আসতে আসতে এবার কামড় চুমু তে পরিনত হয়ে যায়। শুষে নিতে থাকে বেলার ওয়াইন কালার ঠোঁটের রস। মেতে ওঠে বেলা কে নিয়ে। সকালে যখন বেলা রেডি হচ্ছিলো তখন সামনে থাকা ফাইল ফেলে রেখে বেলা কে দেখ ছিল। ঠোঁটে লিপস্টিক লাগাতে দেখেই সাঁঝ এর মনের মধ্যে ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছিলো। কখন বেলা কে পাবে আর কখন ডুব দেবে বেলার ওই ঠোঁটের মাঝেই। এমনিতেই বেলা কে দেখলে নিজেকে সামলাতে পারে না। আর তার ওপরে যদি বেলার ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানো দেখে তখন তো আর শ্বাস নিতে পারে না দম আটকে আসে পুরো নেশায় আসক্ত হয়ে যায় সাঁঝ।
.
. ওদের এই অবস্থায় দেখে বাইরে থেকে দিশা রাগে ফুসছে। শক্ত করে নিজের হাতে নিজের অন্য হাতের নখ বসিয়ে দিয়েছে। চোখ মুখ কেমন যেনো হিংস্র হয়ে উঠেছে। পারলে মনে হয় এক্ষুনি বেলা কে মেরে ফেলবে। দিশা এসেছিল আবার ও বেলার মনে বিষ ঢালার জন্য। কিন্তু এসেই এই দৃশ্য দেখেই তার মাথায় যেনো আগুন ধরে গেছে। নিজেই নিজেকে আঘাত করে যাচ্ছে নিজের রাগ কমাতে।

—————-
রেস্টুরেন্টে চেয়ারে বসে আছে রুহি। আর তার সামনে বসে আছে সারিফ ।যে এখন নিজের খাওয়াতে মন দিয়েছে। আর রুহি আগুন চোখে তাকে দেখে যাচ্ছে। কিন্তু সে দিকে সারিফ এর কোনো হেলদোল নেই সে নিজের মত করে খেয়ে যাচ্ছে। সারিফ অফিসে এসেছে। এতদিন সাঁঝ অফিসে না যাওয়ার জন্য তাকে প্রচুর চাপ নিতে হয়েছিল। আজ সাঁঝ অফিসে এসেছে তাই একটু ফাঁকা পেয়েছে। আর তাই ফোন করে রুহি কে আর্জেন্ট ডেকে এনেছে। কিন্তু রুহি এসে দেখে কেউ নেই। বসে বসে আধা ঘন্টা পার হয়ে যাওয়ার পর সারিফ আসে। কোনো কথা না বলেই অর্ডার করে খেতে থাকে। এদিকে চিন্তায় রুহির এতক্ষণ মাথা ফেটে যাচ্ছিলো। হটাৎ করে এমন আর্জেন্ট ডাকার জন্য।
.
–“কি হল তুমি না খেয়ে অমন করে তাকিয়ে আছো কেনো? সারিফ মাথা তলে রুহি কে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে ওঠে।
.
–” তোমার খাওয়া হলে তোমাকে খাবো তাই। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে ওঠে রুহি।
.
. এমন কথাই হঠাৎ করে অবাক হয়ে গেছে সারিফ। প্রথমে খুশি হলেও রুহির চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে অনেক রেগে গেছে কিন্তু কেনো?
.
–” ওহ আমাকে খাবে বললেই হয়। আমি কি না করছি ।নাও খাও আমি পুরোটাই তোমার। হাসার চেষ্টা করে বলে ওঠে সারিফ।
.
. রুহি কোনো কথা না বলে চেয়ার টেনে একদম গা ঘেঁষে বসে এক হাত এগিয়ে নিয়ে সারিফ এর কলার টেনে এনে গলায় জোরে কামড় বসিয়ে দেয় রুহি। এদিকে এত জোরে কামড় এর ফলে সারিফ এর জান যায় যায় অবস্থা। মৃদু চিৎকার করে ওঠে মুখ দিয়ে। হটাৎ এমন আক্রমণ এর জন্য প্রস্তুত ছিল না সে মোটেও। চারিদিকে একবার তাকিয়ে দেখে। অনেকেই তাদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে মুচকি হাসছে। রুহি সরে বসতেই সারিফ হাফ ছেড়ে বাঁচে। নিজের গলায় যেখানে রুহি কামড়ে নিয়েছে সেখানেই হাত বুলাতে বুলাতে বলে ওঠে।
.
–“এটা কেনো? হটাৎ কামড় কেনো? সারিফ অসহায় মুখ করে বলে ওঠে।
.
–” কেনো চুমু খেতে পারিস আর কামড় খেটে পারবি না? কেনো? চুমু খেতে তো অনেক মজা লাগে তো কামড় খেয়ে মজা লাগে না? রেগে জোরে বলে ওঠে রুহি।
.
. এদিকে সারিফ এর তো পুরো হাওয়া টাইট হয়ে গেছে। রুহির মত লাজুক লতা হঠাৎ করে এমন বাঘিনী হয়ে গেলো কি করে। যে কাল পর্যন্ত তাকে দেখে লজ্জা পেতো আজ সে ভরা রেস্টুরেন্টে তার গলায় কামড় বসালো। ভাবতেই অবাক লাগছে তার ওপরে এখন তুই তুকারি করছে তাকে। অবাক হয়ে দেখছে চোখ বড় বড় করে রুহি কে।
.
–“কি হয়েছে তোমার? হঠাৎ করে এমন করছো কেনো? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে সারিফ।
.
–” তোর মাথা হয়েছে। তুই এখানে খেতে এসেছিস শুধু? কেনোরে তোর পেটে কি দশ বারোটা বাচ্চা আছে যে এসেই খেতে শুরু করেছিস? নাকি বছর বছর না খেয়ে আছিস? যখন খেতে এসেছিস তো আমাকে কেনো ডাকলি এখানে। রুহি চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–” কি সব বলছো? আর এটা কি ভাবে কথা বলছো তুমি? সারিফ চোখ বড় বড় করে বলে ওঠে।
.
–” কেনো রে আমি কি উর্দু ভাষায় কথা বলছি নাকি যে বুঝতে পারছিস না। রুহি দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।
.
–“তুই এসেই খেতে শুরু করেছিস। আমাকে কি তোর চোখে পড়েনি? আমাকে বসিয়ে রেখে খেয়েই যাচ্ছিস? আরে যখন খাবি তখন আমাকে বসিয়ে রাখার কি দরকার। একা একা খেতে পারিস তো নাকি? আমি এদিকে চিন্তা করে যাচ্ছি ওকে নিয়ে যে কি হল হঠাৎ এমন করে কেনো ডাকে? আর এদিকে ও গিলে যাচ্ছে। শালা সব ছেলে এক রকম বাল। প্রথম প্রথম সোনা বেবি আর কিছুদিন পর থেকে তো চোখেই দেখবে না। রাগে দাঁত পিষে বলে ওঠে রুহি।
.
. এতক্ষণ পর সব কিছু পরিষ্কার হলো সবটা সারিফ এর কাছে। রুহি এর এমন ব্যবহার দেখে পুরো অবাক হয়ে গেছে। প্রথমে লজ্জা ছেড়ে সবার সামনে তাকে কামড় দিলো তারপর তুইতুকারি। আর এখন শেষে গালাগালি করছে। হায়রে একি মেয়েরা বাবা এত পুরো বিষ মেয়ে পুরোই মিছরির ছুরি। সারিফ এক হাত বাড়িয়ে রুহি কে জড়িয়ে নেয়। মুখ টা নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে ঠোঁটের ওপরে আলতো করে নিজের ঠোঁট দিয়ে চুমু খায়। আর এতক্ষণ রাগে ফুলতে থাকা রুহি পুরো বেলুন এর মত চুপসে গেছে হটাৎ এমন করাতে। সারিফ এর দিকে তাকাতে দেখতে পায় তার দিকে কেমন দুষ্টু হেসে তাকিয়ে আছে। রুহির গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন সব রাগ হওয়া হয়ে গেছে। মুখে এখন যতো রাজ্যের লজ্জা এসে জমা হয়েছে। সারিফ দুষ্টু হেসে পানির গ্লাস এগিয়ে দেয় রুহির দিকে। এদিকে এক নিশ্বাসে পুরো শেষ করে ফেলে।
.
–“স্যরি । এখন ঠিক আছে। চোখ টিপে বলে ওঠে সারিফ।
.
. রুহি লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। আর সারিফ অপলক দেখতে থাকে রুহির লজ্জা মাখা মুখটা। এটাই তো চাই প্রতিটা সম্পর্কের মাঝে ভুল যার হোক না কেনো একটা স্যরি প্রিয় মানুষ কে মুহূর্তে খুশি করে দিতে পারে। সম্পর্ক টাকে ভেঙে যাওয়া বা ঝগড়া থেকে বিরত রাখে।

——————-

–“চলো ঘুরে আসি। আজ আর কোনো কাজ নয়। তোমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াব আজকে। না থাকবে কোনো বাধা আর না থাকবে কোনো হাই লেভেল পরিচয়। আজ আমরা আমাদের মত করে ঘুরে বেড়াব। পুরো উল্টো না কোনো বাঁধা মানব আর না কোনো নিয়ম। আজ শুধু আমরাই আমাদের মর্জির মালিক। মন যা চায় তাই করব। সাঁঝ হেসে বলে ওঠে বেলার কোলে শুয়ে শুয়ে।
.
.সাঁঝ তার কেবিনে সোফায় বেলার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে দু হাতে কোমর জড়িয়ে রেখে। আর বেলা হাত দিয়ে সাঁঝ এর সিল্কি চুল গুলোর মাঝে নিজের আঙুল চালিয়ে খেলা করে যাচ্ছে। হটাৎ সাঁঝ এর এমন কথায় হকচকিয়ে যায়।
.
–“হঠাৎ আজকে নিয়মের মানুষ নিয়ম এর বাইরে যেতে চাচ্ছে কি ব্যাপার? বেলা ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।
.
–“আজ বড্ড ইচ্ছে করছে তোমাকে নিয়ে অজানার উদ্দেশে ঘুরে বেড়াতে। মন চাইছে বড্ড বেসামাল হতে। আজ কোনো নিয়ম মানতে ইচ্ছে করছে না। আজ সব কিছুর উর্ধে গিয়ে তোমাকে নিয়ে প্রেমের জুয়ারে ভাসতে ইচ্ছে করছে। সাঁঝ বলে ওঠে বেলার পেটে নাক ঘসে।
.
. সাঁঝ এর এমন করায় বেলা কেঁপে ওঠে সাঁঝ এর মাথায় থাকা হাত টা শক্ত করে চেপে বসে। সাঁঝ চোখ খুলে মুখ ঘুরিয়ে বেলার দিকে তাকায় দেখে চোখ বন্ধ করে বসে আছে। হটাৎ সাঁঝ উঠে বসে যায়। নিজে উঠে দাঁড়িয়ে বেলার হাত ধরে দাঁড় করিয়ে দেয়। বেলার কাছে এগিয়ে গিয়ে বেলার ঘেঁটে যাওয়া চুল ঠিক করে দেয়। আর ড্রেস টা ও গুছিয় দেয়।
.
–“চলো। বলে সাঁঝ বেলার হাত টেনে নিয়ে যেতে থাকে।
.
. এদিকে বেলা পুরো অবাক বনে যায়। এতক্ষণ মনে হচ্ছিলো এমনি এমনি বলছে এখন তো দেখে এর মাথায় এখন বেসামাল হওয়ার ভূত চেপে বসেছে। কি করতে চাইছে বুঝতে পারছে না বেলা। চুপচাপ দেখে যাচ্ছে আর ভেবে যাচ্ছে এই মানুষ কি করতে চলেছে। সাঁঝ বেলা কে এনে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।গাড়ি স্টার্ট দিয়ে গাড়ির রুফ খুলে দেয়। টান দিয়ে বেরিয়ে যায় বেলা কে নিয়ে সাঁঝ। কোথায় যে নিয়ে যাচ্ছে তাকে সাঁঝ সেটাই বুঝতে পারছে না বেলা।
.
.
–“যতো ইচ্ছা এখন আনন্দ করে নাও তোমার খুশি আমি খুব তাড়াতাড়ি কেড়ে নিতে চলেছি। তারপর দেখব কোথায় থাকে তোর মুখের ওই হাসি। বিশ্বাস টা যে খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে গুটিয়ে যেতে চলেছে। তৈরী থাক। দাঁতে দাঁত চেপে বাঁকা হেসে বলে ওঠে দিশা। এতক্ষণ ওপরে থেকে কাঁচের বাইরে থেকে পুরোটাই লক্ষ করেছে আরে নিজের মধ্যে রাগে জ্বলে পুড়ে।
.
.
. #তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_৩০
.
. গাড়ি চলছে রাস্তা দিয়ে। বেলা উঠে দাঁড়িয়েছে গাড়ির সিটে। রুফ খোলা। হাওয়ার জন্য বেলার চুল গুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। বেলা দু দিকে হাত ছাড়িয়ে আকাশের দিকে মুখ করে। চোখ বন্ধ করে বেলা নিজেকে এই হাওয়ার সাথে মিশে যেতে চাচ্ছে। সাঁঝ মুচকি হাসি দিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করতে আছে। চোখে গ্লাস। আর মুখে পাগল করা হাসি। চারিদিকে থেকে সবাই ওদের দেখে যাচ্ছে। যখন তাদের গাড়ি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। সবার মুখ পুরো হা হয়ে আছে সবার। তারা প্রথমবার এই ভাবে তাদের গভর্নমেন্ট লিডার কে দেখছে। আর তার সাথে কোনো মেয়ে কে হ্যাঁ তারা এই মেয়ে কে দেখেছিলো চার বছর আগে আর কয়েকদিন আগে। এখনও বেলা আর সাঁঝ এর বিয়েটা পাবলিক হয়নি তাই কেউ এখনও জানে না। কয়েকজন কাছের লোক ছাড়া। তাই তাদের লিডার এর সাথে কোনো মেয়েকে দেখে চমকানোতো আবশ্যিক লাগে। সাঁঝ রাস্তার একদিকে গাড়ি দাঁড় করিয়ে বেলার মুখের দিকে তাকায়। যে এখন গাড়ি থেমে যাওয়ার জন্য মুখ নামিয়ে সাঁঝ এর দিকে দেখছে । সাঁঝ মুখে হাসি রেখে বেলার হাত ধরে নিচে নামিয়ে আনে। ইশারায় গাড়ি থেকে নামতে বলে নিজে নেমে যায়। গাড়ি থেকে নেমে সাঁঝ নিজের কোট খুলে ছুড়ে ফেলে গাড়ির মধ্যে টাই খুলে দেয়। বেলা পাশে এসে দাঁড়াতে মুচকি হেসে হত ধরে এগিয়ে যায়।
.
. 🎶 উড়ে দিল বেফিকরে~
উড়ে দিল বেফিকরে~
আঙ্গারো মে নিখরে
উড়ে দিল বেফিকরে~

উড়ে দিল বেফিকরে~
উড়ে দিল বেফিকরে~
আঙ্গারো মে নিখরে
উড়ে দিল বেফিকরে~

রাত ভার ঝুমেঙ্গে আসমা ঝুমে্ঙ্গে~
চান্দ এ চুমেঙ্গে তারো কে মারেঙ্গে ফিরে~
উড়ে দিল বেফিকরে~
উড়ে দিল বেফিকরে~
আঙ্গারো মে নিখরে
উড়ে দিল বেফিকরে~🎶
.
. সাঁঝ বেলার হাত ধরে ছুটে চলেছে রাস্তার মাঝ দিয়ে। রাস্তার ধারে থাকা ফুচকা স্টলের দিকে। সাঁঝ এর মুখে আছে মন কাড়া হাসি। যেনো সে আকাশে উড়ে বেড়ানো পাখিদের মত মুক্ত তাদের মত সে ডানা মেলে উড়তে লেগেছে। আর বেলা সে তো আবারো অনেক দিন না না অনেক বছর পর আবারও তার পাগলামি ফিরে পেয়েছে। চার বছর আগের মত সে ও আবার পাগলামি শুরু করেছে। মাঝে কয়েকদিন সে খাঁচায় বন্দি হয়েছিলো। কিন্তু এখন সে মুক্ত তাই ডানা মেলে উড়ে বেড়াতে লেগেছে। বেলাতো নিজের পাগলামির ব্যাপারে জানে কিন্তু সে আজকে তার সাথে সাথে সাঁঝ এর আরো একটা দিক দেখতে পেলো। একদম বাচ্চা লাগছে এখন সাঁঝ কে দেখতে যে এই মুহূর্তে সব নিয়ম কানুন এর বাইরে।
.
. দুজনই একসাথে গিয়ে হামলে পড়েছে ফুচকা দোকানের ওপর। কে কত খেতে পারে এখন তাদের মধ্যে চলছে এই নিয়ে লড়াই। বেলা খেতে খেতে মাঝে ফুচকা নিয়ে সাঁঝ এর মুখের সামনে রাখে ধরে। আর সাঁঝ যেই খেতে যাবে অমনি টেনে নিয়ে নিজের গালে পুড়ে নেয়। আর সাঁঝ তো আহাম্মক বনে গেছে। বেলা পরের ফুচকা গালের মধ্যে অর্ধেক দিতে না দিতেই সাঁঝ মুখ নিচু করে সবার সামনে বেলার মুখের বাইরে থাকা অর্ধেক ফুচকা খেয়ে নেয় আর সাথে ছুয়ে যায় সাঁঝ এর ঠোঁট বেলার ঠোঁট এর সাথে। আর ফুচকা কাকু তো ওদের দুজনের খুনশুটি দেখে মুচকি মুচকি হাসছে। পাশে থাকা আরও সবাই ওদের ভালোবাসা দেখছে আর ভিডিও করছে। কিন্তু এই দুজনের আজকে এই নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই।
.
. 🎶 দানদানা ঝানঝানা সানসানা জায়ে সাঁসে
জাগমাগা জায়ে আঁখে
মিলতে মিলতে মিলতে হি
ডাগমাগা খানখানা হাড়বাড়া জায়ে সাঁসে
তাড়পাড়া জায়ে বাঁহে
মিলতে মিলতে মিলতে হি
আগ কে রেলে হে বারফ কে ঢেলে হে
বাজি পে খেলে হে
থোড়ে থোড়ে দিল কে টুকরে

উড়ে দিল বেফিকরে~
উড়ে দিল বেফিকরে~
আঙ্গারো মে নিখরে
উড়ে দিল বেফিকরে~🎶
.
. রাস্তার মাঝে হাত পা ছাড়িয়ে বসে আছে বেলা। মুখের চারিদিকে লেগে আছে আইসক্রিম। হাতের থেকে নিয়ে চেটে চেটে জিভ উল্টো করে খাচ্ছে। আর তার থেকে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আছে সাঁঝ. হাতে ফোন নিয়ে বেলার এই অবস্থার ছবি তুলে যাচ্ছে। বেলার আইসক্রিম খাওয়া হয়ে গেলে বেলা দু হাত বাড়িয়ে দেয় সাঁঝ এর দিকে একদম বাচ্চা ভাব। সাঁঝ ফোন পকেটে রেখে বেলার কাছে এগিয়ে এসে পিছন ফিরে ঝুঁকে যায়। আর সাথে সাথে বেলা ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁঝ এর পিঠের ওপরে। ওই অবস্থায় বেলা কে জড়িয়ে নিয়ে সাঁঝ মুখ ঘুরিয়ে বেলার মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে বেলার মুখের থাকা আইসক্রিম গুলো চেটে নেয়। আর বেলার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। সাথে সাথে। চারিদিকে চোখ বড় বড় করে দেখে সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে কেউ কেউ হাতে ফোন নিয়ে তাদের ছবি তুলছে ভিডিও বানিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ যেতে যেতে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে তাদের দেখে। তাদের দেখা দেখি আবার কিছু কাপল ও রোমান্টিক মুড চলে গেছে। সাঁঝ বেলা কে পিঠে চড়িয়ে নিয়ে হেঁটে চলেছে। আর বেলা সে এক হাত দিয়ে সাঁঝ এর গলা জড়িয়ে আছে আরেক হাতে বাড়িয়ে এদিকে ওদিকে করছে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যে দোকান পারছে তার থেকে কিছু জিনিস তুলে নিচ্ছে।
.
. বেলা কে নিয়ে শপিংমলে ঢোকে দুজন একসাথে গিয়ে ড্রেস নিয়ে চেঞ্জ করতে যায়। বিভিন্ন রকমের আজীব আজীব ড্রেস পরে দুজন দুজন কে দেখছে আর এক সাথে সেলফি নিয়ে আবার ও চেঞ্জ করতে যাচ্ছে। ওখানে থাকা বাকি কাস্টমার গুলো ওদের দেখছে শুধু। শেষে সাঁঝ বেরিয়ে আসে। হোয়াইট শর্টস প্যান্ট আর ইয়োলো শার্ট ইন করে পরা। চোখে ব্ল্যাক গ্লাস। এক হাত পকেটে রেখে পা হেলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পায়ে গ্রে স্নিকার্স। বুকের কাছে শার্ট এর দুটো বোতাম খোলা। যার বুকের পেশী গুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। বুকে কোনো লোম না থাকায় গায়ের রং আর শার্ট এর রং মিশে যাচ্ছে যেনো। আর বুকে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘাম যেনো আরো আকর্ষণীয় লাগছে। শর্টস এর জন্য হাঁটু থেকে পা পুরো উদাম। বুকের সাথে সাথে পায়ের দিকে তাকালে ও চোখ ফেরানো যায় না। ফর্সা পায়ে হালকা বাদামী লোম গুলো যেনো আরো নজর কাড়া লাগছে। চোখ ধাধানো সুন্দর। কারোর পা ও যে এত সুন্দর আর আকর্ষণ করতে পারে জানা ছিল না। এদিকে বেলা বেরোয় হলুদ প্রিন্ট স্কির্ট ও হলুদ ক্রপ টপ। কানে হোপ ইয়ারিং চুল গুলো কে সামনে থেকে স্টাইল করে বাঁধা আর পিছনের চুল গুলো কার্ল করা। পায়ে হোয়াইট স্নিকার্স। হাতে হোয়াইট স্টোন এর ঘড়ি। দুজন দুজন এর দিকে এগিয়ে যায়। সাঁঝ বেলার কাছে এসে বেলার উন্মুক্ত পেটের ওপর হাত রেখে নিজের দিকে টেনে নেয়। এক হাত দিয়ে বেলার মুখ ঘুরিয়ে বেলার এক গালে চুমু খায়। বেলা কে এক হাতে জড়িয়ে রেখে দুজন বেরিয়ে যায়।
.
. 🎶 রোকনা টোকনা থামনা না মানে
তেইর না এ জানে
দারিয়া দারিয়া দারিয়া মে
জিত না হার না ছিননা না জানে
ডুব না এ জানে
দারিয়া দারিয়া দারিয়া মে
দারদ মে এ নিখরে
হাথ মে জো পাকড়ে
বান কে রুয়ি বিখরে
আরমা হে রুহ কে নাখরে
উড়ে দিল বেফিকরে~
উড়ে দিল বেফিকরে~
আঙ্গারো মে নিখরে
উড়ে দিল বেফিকরে~🎶
.
. বেলা গাড়ির বনেটের ওপর এক পায়ের ওপর পা রেখে পিছনের দিকে হেলান দিয়ে বসে আছে। আর সাঁঝ গাড়ি ড্রাইভ করছে। কিছুটা যেতে না যেতেই বেলা গাড়ির ওপর থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে। সাথে উল্টো করে পিছনের দিকে যেতে যেতে সাঁঝ কে বাইরে বেরিয়ে আসতে ইশারা করে। এদিকে সাঁঝ গাড়ি থামিয়ে সে ও ভিতর দিয়ে লাফিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। প্রথমে জামার কলার ঠিক করতে করতে সামনে এগিয়ে গেলে ও একবার বেলার দিকে তাকিয়ে হুট করে দৌড় দেয় বেলার দিকে। আর বেলা ও দৌড় দেয়। দুজন এখন দৌড় দৌড় খেলছে। সাঁঝ একটু এগিয়ে গিয়ে বেলা কে কোমরে ধরে উঁচু করে তুলে নিয়ে ঘুরতে থাকে চর্কির মত করে। আর বেলা ও হাত পা ছুড়ে ছুড়ে ঘুরতে থাকে আর খিল খিল করে হাসতে থাকে। সাঁঝ শুধু তার কোমর টা টাইট করে ধরে আছে আর মুগ্ধ হয়ে বেলা কে দেখে যাচ্ছে । হটাৎ করেই ব্যাঙ্গালোর এর বিন বুলায়ে মেহমান এর মত বিন বুলায়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। আর সাথে সাথে বেলার খুশি দ্বিগুণ হয়ে যায়। সাঁঝ এর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে ভিজতে থাকে। বেলার গায়ে ড্রেস পুরো ভিজে যাওয়ার জন্য আরো চেপে বসে বেলার গায়ে। সাঁঝ এর নেশা লেগে যাচ্ছে। সাঁঝ চারিদিকে তাকিয়ে দেখে আশে পাশে কেউ নেই শুধু মাঝে মাঝে কয়েকটা গাড়ি সা সা করে বেরিয়ে যাচ্ছে তাদের পাস কেটে। তারা গাড়ি নিয়ে শহর থেকে একটু দূরের দিকে এসে পড়েছে। চারিদিকে এখন অন্ধকার। শুধু রাস্তার স্ট্রিট লাইট গুলো জ্বলছে। সাঁঝ গাড়ির দিকে এগিয়ে গিয়ে নিজের কোট নিয়ে এসে বেলার গায়ে চাপিয়ে দেয়। সাঁঝ পিছনে ফিরে চলে যেতে নিলেই। বেলা হাত ধরে আটকে দেয়। বেলা ঘোর লাগা চোখে সাঁঝ কে দেখতে থাকে। হলুদ জামা হওয়ার জন্য সাঁঝ শরীরে প্রতিটা অ্যাবস স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে মাথার থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। ভেজা ঠোঁট গুলো আরো আকর্ষণীয় লাগছে বেলার কাছে। বেলা মন্ত্র মুগ্ধের সাঁঝ এর দিকে এগিয়ে যায়। এদিকে সাঁঝ ও লক্ষ করেছে বেলার এই ঘোর লাগা দৃষ্টি। বেলা যে তাঁকে মোহনীয় দৃষ্টি দিয়ে দেখছিল সেটা বুঝে সাঁঝ শরীরে রক্ত চলাচল যেনো আরো দ্রুত গতিতে ছুটতে শুরু করেছে। বেলা পা উঁচু করে হাত দিয়ে সাঁঝ এর গলা জড়িয়ে ধরে মুখ এগিয়ে নিয়ে সাঁঝ এর দিকে। সাঁঝ হাত বাড়িয়ে বেলার কোমরে ধরে নিজের শরীরের সাথে মিশিয়ে নেয়। এক হাত উঠিয়ে বেলার গায়ের ওপরে থাকা কোট টা নিয়ে নিজেদের মাথার ওপর চড়িয়ে দেয়। বেলা কে নিজের সমান করে বেলার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। বৃষ্টির পানির সাথে সাথে একে অপরের ঠোঁটের নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে। গাড়ির হেড লাইট জ্বলছে আর আলোর ফোকাস এসে পড়ছে দুজনের গায়ে। পাশ দিয়ে গাড়ি চলে যাচ্ছে। আর দুজন মেতে আছে দুজনের মাঝে। তারা আজ বিফকর তাদের কোনো নিয়ম এর মাঝে নেই তারা। নিজেদের কে মুক্ত আকাশে নিজেদের গা ভাসিয়ে দিয়েছে। আর ব্যাক গ্রাউন্ডে এখনও বেজে যাচ্ছে।
.
. 🎶 উড়ে দিল বেফিকরে~
উড়ে দিল বেফিকরে~
আঙ্গারো মে নিখরে
উড়ে দিল বেফিকরে~
~বেফিকরে~
~বেফিকরে~
~বেফিকরে~
~বেফিকরে~ 🎶

—————-

এদিকে ও চলেছে প্রেম কাহিনী বিস্তর। ছাদের দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে শান্তা আর তার ঠিক সামনে নিশান নিজের চুল উল্টাতে উল্টাতে এগিয়ে আসছে তার দিকে। দুজনেই পুরো ভিজে যুবুথুবু হয়ে আছে। শান্তার মাথা থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। চুল থেকে টুপ টুপ করে পানি পড়ছে গলায়। নিশানা তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে দেখছে। ঠোঁটের ওপর থেকে পানি গড়িয়ে আসতে আসতে গলা বেয়ে নেমে যাচ্ছে অতল গহ্বরে। নিশান এর মাথার থেকে ও পানি গড়িয়ে পড়ছে। যেটা ও শান্তা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছে।
.
. নিশান এগিয়ে এসে একদম শান্তার গায়ের সাথে লেগে দাঁড়িয়েছে শান্তা বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে তার সাথে রয়েছে বুকের ওঠানামা। নিশান শান্তার কোমরে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে নেয়। মুখ নামিয়ে আনে। শান্তার গলায়। আসতে আসতে ঠোঁট দিয়ে শুষে নিতে থাকে গায়ের পানি। নিশান এর স্পর্শে বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে। তার জন্য নিশান আরো জোরে চেপে রেখে আরো নেশা সিক্ত হয়ে যাচ্ছে শান্তার গলায় ঘাড়ে আসতে আসতে বেড়ে চলেছে নিশান এর ঠোঁটের বিচরণ। দ্রুত থেকে দ্রুত হচ্ছে। নিশান এর ঠোঁটের স্পর্শ আর জিভ এর লেহনের জন্য শান্তা নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে ক্রমশঃ হারিয়ে যাচ্ছে নিশান এর আদরের মাঝে। নিশান শান্তা কে কোলে তুলে নেয়। শান্তা নিশান এক পা দিয়ে নিশান এর কোমর জড়িয়ে রাখে। আর এক হাত মাথায় আর এক হাত গলায় রাখা।
.
. দুজন বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে ভিজে যাচ্ছে। শান্তা চোখ খুলে নেশা ভরা চোখে তাকায় নিশান এর দিকে। নিশান এর চোখে তাকিয়ে এবার আরো গভীর ভাবে ডুবে যাচ্ছে। একে একে এগিয়ে যাচ্ছে একে অপরের ঠোঁটের দিকে। একে অপরের ঠোঁটের মাঝে ডুবে যায় দুজন মেতে থাকে দুজনের ঠোঁটের মজা নিতে।

——————

ড্রইং রুমে বসে আছে আকাশ। আর তার সামনে ঠিক জড়ো সড়ো হয়ে বসে আছে আলিয়া। আকাশ এক দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছে তার সামনে বসে থাকা আলিয়া কে যে এই মুহূর্তে মুখ নিচু করে বসে আছে কখনও নিজের গায়ের ওড়না ঠিক করছে তো কখনো ওড়নার কানা নিজের আঙুলের সাথে পেচিয়ে নিচ্ছে। আর মাঝে মাঝে কোনা চোখে সামনে বসে থাকা আকাশ কে দেখে নিচ্ছে। যে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর মাঝে মাঝে মুচকি মুচকি হাসছে।
.
. আকাশ এসেছিল সাঁঝ এর কাছে। তাড়াতাড়ি অফিসে থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য দরকারী কিছু ফাইল নিয়ে বাড়ি এসেছিল। আর এখানে এসেই দেখা হয় আলিয়ার সাথে। যাকে দেখে আকাশের চোখ দাঁড়িয়ে যায়। কোনো কথা বলতে পারেনা। চুপচাপ দেখে যায়। সাঁঝ এখনও বাড়িতে নেই জেনেও শুধু আলিয়া কে দেখার জন্য বসে যায়। বাহনা বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে তাই। এদিকে আশে পাশে কেউ নেই তাই আলিয়া ও উঠে যেতে পারছে না। অপ্রস্তুত হয়ে তাই বসে আছে আকাশের সামনে যে এখনও তাকে হ্যাংলার মত পা থেকে মাথা পর্যন্ত স্ক্যান করে যাচ্ছে।
.
. অন্য দিকে মিউজিক রুমের দরজার আড়ালে থেকে বেদ তার পর সারা তারপরে জাকিয়া আর তার ওপরে ওম মাথা বের করে আকাশ আর আলিয়ার অবস্থা দেখছে। ওম একবার করে সামনে তাকিয়ে আকাশ এর অবস্থা দেখে মুখে চুকচুক করে আওয়াজ করছে আর জাকিয়ার গালে চকাস করে চুমু খাচ্ছে। এদিকে বেদ সব থেকে নিচেই থাকার জন্য সে শুধু সামনের দৃশ্য আর ওম এর চুমু খাওয়ার শব্দ শুনে যাচ্ছে। আহারে বেচারা। বেদের ঘাড়ের ওপরে হাত রেখে সারা ফোনে ভিডিও বানাচ্ছে তার মিষ্টি ভাবি কে দেখানোর জন্য। বেদ এর অসহায় মুখ দেখে একবার কোনা চোখে তার ওপরে দৃশ্য ওম এর চুমু খাওয়া দেখে নিয়ে নিজের মুখ বাড়িয়ে বেদ এর গালে চকাস করে চুমু খায়। যার জন্য বেদ পড়তে গিয়ে ও পড়ে না। আর মুখে ফুটে ওঠে এক চিলতে হাসি বেদ ও মুখ ঘুরিয়ে সারা এর ঠোঁটে আলতো করে চুমু খেয়ে নেয়। আর এক হাত তুলে ওম এর দিকে থামস আপ দেখায়। বেদ সারা ওম জাকিয়া শেষে আলিয়া আর আকাশের প্রেমের ঘন্টা বাজতে দেখে তারা দূরে কেটে পড়েছে আর দূর থেকে ওদের ওপরে নজর রাখছে আর মুচকি মুচকি হাসছে আলিয়া বিব্রত মুখ দেখে।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে…
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন ।সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন। 😊 😊 😊

(আচ্ছা গল্পটা কি খুব পেচিয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে?মানে কোনো ভাবে স্টার জলসার সিরিয়াল মনে হচ্ছে কি আপনাদের কাছে? খুব কি বোরিং লাগছে। একটু বলবেন প্লিজ। তাহলে আমি এটা এখানেই শেষ করে দেবো। আর বেশি টানবো না।)

#
. 💝💝💝
.
. চলবে….
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন । সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন। 😊 😊 😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here