তোর_প্রেমেতে_অন্ধ_হলাম পর্ব ২৩

#তোর_প্রেমেতে_অন্ধ_হলাম
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ২৩

রাতের বেলা দুই কানে হ্যাডফোন গুজে দিয়ে বইয়ের দিকে নজর দিয়ে রেখেছে সিয়া। আজ তো কলেজ থেকে পালিয়ে এসেছে৷ টেস্টও দেয় নি। না জানি আগামীকাল কলেজে গেলে কি হয়। যদি ক্লাস টিচার ধরে তাহলে তো শেষ। কিন্তু এইসব চিন্তা মাথা থেকে বের করে এখন পুরোই চিল মুডে আছে৷ তখনই সিয়ার মা আসে। বেশ কয়েক বার ডাক দেয় কিন্তু সিয়া শুনে না। উপায় না পেয়ে দোলা গিয়ে সিয়ার কান থেকে হ্যাডফোন টা খুলে ফেলে।

দোলা;; কিরে কখন থেকে ডাকছি!

সিয়া;; হ্যাঁ বলো।

দোলা;; অর্নীলের নাম্বার দে।

সিয়া;; কি?

দোলা;; দে।

সিয়া;; না মানে, আচ্ছা তুমি কি বলবা ওকে?

দোলা;; ওইটা তোর শুনে কাজ নেই। দিতে বলছি দে।

সিয়া;; দেখো আমার কিন্তু অনেক টেনশন লাগতাছে।

দোলা;; দিবি তুই?

সিয়া;; নাও নাও।

দোলা সিয়ার কাছ থেকে অর্নীলের নাম্বার নিয়ে চলে যায়। আর সিয়া দোলার পেছনে কিছুটা উঁকি ঝুকি মারে। চিন্তায় হাতের নখ কাটতে লাগে, না জানি দোলা আবার অর্নীল কে কি বলে। এবার সিয়া একটু সিরিয়াস হয়ে যায়। দোলা আবার অর্নীল কে সিয়ার থেকে আলাদা হয়ে যেতে বলবে না তো। যাই হোক সিয়া বইয়ের দিকে নজর দেয়। দোলা সিয়ার রুম থেকে যাওয়ার পর থেকে আর আসে নি। সিয়াও আর নিচে যায় নি। তবে রাত যখন বেশ ভারি হয়ে গিয়েছিলো তখন সিয়া আর থাকতে না পেরে অর্নীল কে ফোন দিয়ে বসে।

সিয়া;; হ্যালো, হ্যালো অর্নীল!

অর্নীল;; হুমমম।

সিয়া;; আপনি, আপনি ঘুমাচ্ছেন?

অর্নীল;; হুমমম

সিয়া;; রাত বাজে দুইটা, এখন আপনি ঘুমাচ্ছেন? সিরিয়াসলি। আপনি তো বলতে গেলে জেগেই থাকেন।

অর্নীল;; কেনো আমাকে কি পেঁচা মনে হয়!

সিয়া;; তার থেকে আর কম কিসে। না তবে, আচ্ছা যাই হোক আম্মু কি আপনাকে ফোন করেছিলো?

অর্নীল;; না তো৷ আন্টি আমাকে কেনো ফোন করতে যাবে।

সিয়া;; সত্যি?

অর্নীল;; সিয়া, এতো রাতে কি আমি ফাইজলামি করবো নাকি? সত্যি, আন্টি আমাকে কোন ফোন করে নি।

সিয়া;; যাক বাবা বেঁচে গেলাম।

অর্নীল;; আচ্ছা আমি ঘুমাই।

সিয়া;; আরে কিন্তু….

অর্নীল;; গুড নাইট।

সিয়া;; অর্নীল…

সিয়ার কিছু বলার আগেই অর্নীল টুটুটু করে ফোন কেটে দেয়। কিন্তু সিয়া বেশ ভালো করেই জানে যে অর্নীল এই সময়ে কখনোই ঘুমায় না। তবে সে যে আবার মিথ্যে কথা বলবে তেমনও না। কি আর করার সিয়া ফোন টা রেখে দিয়ে ঘুমিয়ে পরে।

পরেরদিন সকালে সিয়ার ঘুম ভাঙে দোলার কর্কশ আওয়াজে। রুমে এসে সব জিনিসপত্র গোছাচ্ছে। আর তার কি আওয়াজ রে বাবা, পুরাই কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার উপক্রম। সিয়া চোখ-মুখ কুচকে আড়মোড়া ভেঙে উঠতে উঠতে বলে….

সিয়া;; মা কি করছ এই গুলো?

দোলা;; কি করছি মানে! দেখছিস না ঘর গোছাচ্ছি।

সিয়া;; না তা ঠিক আছে তবে সবার আগে আমার রুমই কেনো। আগে তোমার রুম গোছাও, নানুর রুম গোছাও তারপর আমারটা ধরো। কি এই সাজ সকাল বেলা এসে ঘুমের বারো টা বাজাচ্ছো।

দোলা;; আট টা বাজে আর কতো ঘুমাবি। উঠ

সিয়া;; উঠছি।

সিয়ার এই স্বভাব সে ঘুম থেকে উঠবে বলেও আরো ১০-১৫ মিনিট বিছানাতে থুম মেরে বসে থাকে বা শুয়ে থাকে। কিন্তু এখন যেই না শুতে যাবে তখনই দোলা এসে সিয়ার গায়ের ওপর থেকে এক টানে চাদর টা সরিয়ে ফেলে।

সিয়া;; আরে কেনো আমার পেছনে লেগে আছো মা আরো একটু শুই না।

দোলা;; জুতার বারি খাবি।

সিয়া উঠে পরে। ওয়াসরুমে গিয়ে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়। প্রচুর ঘুম পাচ্ছে। সিয়া এক প্রকার ব্রাশ করছে আর ঝিমুচ্ছে। অত:পর প্রায় চল্লিশ পয়তাল্লিশ মিনিট সময় লাগিয়ে ফ্রেশ হয়ে সিয়া এসে পরে। এসেই দেখে রুম একদম ঝকঝক করছে।

সিয়া;; আরে ওয়াহ আম্মু তো হেব্বি ফাস্ট,, সুন্দর সাজিয়েছে রুম টা।

সিয়া তার ব্যাগ টা গুছিয়ে নিজে রেডি হয়ে নিচে নেমে পরে।

দোলা;; খেতে বোস।

সিয়া খাবার টেবিলে বসে খাবারের প্লেটে তাকায়। আর তখনই যেনো তার ৪৪০° জ্বর এসে পরে৷ খাবারে করলার তরকারি, করলা ভাজি, ঝিঙা, পটল, লাউ এগুলো। সিয়া একবার তার মায়ের দিকে তাকায় আরেকবার তার খাবারের প্লেটের দিকে। দোলা বেশ ভালো করেই জানে যে সিয়া এইসব কিছু খায় না তবুও এগুলোই দিয়েছে খেতে। এগুলো দেখে সিয়া নাক কুচকায়।

দোলা;; মুখের এমন ১০১ টা অঙ্গি ভঙ্গি করে লাভ নেই। যা দিয়েছি খেয়ে ফেল।

সিয়া;; নায়ায়ায়ায়া আমি খামু না। তুমি জানো যে এগুলা আমি খাই না তাও এগুলাই দিয়েছো। আমার ভালো লাগে না।

দোলা;; খাইলে খা নইলে যা।

সিয়া;; 🙂

দোলা;; আরে আজব সমস্যা কি। এগুলা কি মানুষ খায় না নাকি।

সিয়া;; না

দোলা;; হ্যাঁ গরু ছাগলে খায়। সবকিছুই খেতে হয় চুপচাপ খেয়ে নে।

সিয়া;; না আমার দ্বারা হবে না আমি গেলাম। কলেজের কেন্টিনে কিছু খেয়ে নিবো।

দোলা;; এই দাড়া।

সিয়া;; আমি গেলাম।

সিয়া নিজের ব্যাগ টা নিয়ে সোজা বাড়ির বাইরে। রিকশা দিয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে পরে৷ তবে যখন আসছিলো তখনও অর্নীল কে ফোন দেয় কিন্তু রিসিভ করে না। সিয়া বেশ কয়েক বার ট্রাই করে কিন্তু ফোন ধরার নাম নেই। এবার যেনো সিয়ার রাগই লাগছে। দেখতে দেখতে এক সময় কলেজ গেইটের কাছে নেমে পরে। ভাড়া মিটিয়ে কলেজের ভেতরে চলে যায়। সবাই কে পেয়ে তখন যেনো ভালো লাগে। হাসি-খুশির মাঝেই কলেজ সময় টুকু পার হয়ে যায়। কলেজ শেষে সিয়ার আবার অর্নীলের কথা মনে পরে। সে অর্নীল কে মেসেজ দেয় বাট রিপ্লাই তো দূর দেখেও নি। কমপক্ষে ২০ বার কল করেছে। সিয়া রাগে যেনো ফেটে যাচ্ছে। এই ছেলে শুরু টা করেছে কি তার সাথে। সিয়া আর থাকতে না পেরে অর্নীলের অফিসে যাবে বলে ঠিক করে। যেই ভাবা সেই কাজ, সিয়া চলে যায় তার অফিসে। যেতেও প্রায় ত্রিশ মিনিট সময় লাগে। অফিসের সামনে নেমে। দ্রুত পা ফেলে অফিসের ভেতরে যায়। বড়ো কাচের গ্লাস টা ঠেলে ভেতরের দিকে যেতেই অর্নীল কে দেখতে পায়। সে একটা ডেস্কের সাথে কিছুটা হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর আরেক হাতে একটা কলম ঘোড়াচ্ছে। মেনেজারও তার সাথেই কথা বলছে। আর তাদের সামনে বেশ অনেক গুলো স্টাফ কাজ করছে একসাথে। সিয়ার অফিসে ঢুকতেই অর্নীল সিয়া কে দেখে। সিয়া নিজের চোখ দুটো সরু করে তার দিকে তাকায়। অর্নীল সোজা হয়ে দাঁড়ায়। সে জানে যে সিয়া তাকে অনেক বার ফোন করেছে আর সে ধরে নি। কিন্তু সে এটা বুঝে নি যে তাকে সিয়া ফোনে না পেয়ে সোজা এখানে অফিসে চলে আসবে। অর্নীল এগিয়ে যায় সিয়ার দিকে। সিয়াকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই সিয়া অর্নীলের হাত খপ করে ধরে অর্নীলের কেবিনের দিকে যেতে ধরে। এমন টা দেখে সব ইমপ্লোয়ি গুলো হা করে তাকিয়ে ছিলো অর্নীল তা খেয়াল করে থেমে যায়। সবার দিকে চোখ গুলো গরম করে তাকায়…….

অর্নীল;; হুয়াট!? (কিছুটা জোরে)

অর্নীলের ধমক শুনতেই সবাই আবার যার যার কাজে মনোযোগ দেয়। সিয়া অর্নীল কে তার কেবিনে এনে নিজের সামনে দাড় করিয়ে দেয়।

অর্নীল;; তুমি এখানে কি করো?

সিয়া;; ওই, ওই ওই আমি কি করি মানে? আপনি জানেন না? কতো বার ফোন দিয়েছি কতো বার হ্যাঁ? ধরেন নি কেনো। মানে আমি একটু ফোন রিসিভ করতে লেইট করলে বা না ধরলেই আমাকে তো পারেন না মেরে ফেলতে আর আমি সেই সকাল থেকে একের পর এক ফোন করেই যাচ্ছি। কি হয়েছে অর্নীল? আপনি এমন করছেন কেনো?

অর্নীল;; সিয়াজান তেমন না আমি কাজে একটু ব্যাস্ত ছিলাম।

সিয়া;; ওকে ফাইন, ঠিক আছে মানলাম আপনি ব্যাস্ত ছিলেন। বাট একটা বার ফোন ধরে অন্ততপক্ষে বলা তো উচিত ছিলো যে সিয়া আমি ব্যাস্ত পরে কথা বলি। কিন্তু না, আপনি তো পণ করে রেখেছেন যে কলের এন্সার দিবেন না।

অর্নীল;; চিল্লাচ্ছো কেনো, কুল কুল।

সিয়া;; আরে ধুর। আচ্ছা শুনুন না..

অর্নীল;; বললে তো শুনবো।

সিয়া;; কাল রাতে কি আম্মু আপনাকে ফোন করেছিলো?

অর্নীল;; আরে বাবা না

সিয়া;; সত্যি তো?

অর্নীল;; তিন সত্যি।

সিয়া;; আচ্ছা তাহলে এবার চলুন।

অর্নীল;; আরে কোথায়?

সিয়া;; ঘুরতে যাবো। আর আজ আপনি আমার কলেজ টাইম শেষে কলেজেও যান নি। (অভিমান করে)

অর্নীল;; প্রতিদিনই তো যাই তাহলে আজ না হয় না গেলাম।

সিয়া;; মানে কি? আচ্ছা ছাড়ুন এইসব। এখন চলুন আমার সাথে।

সিয়া অর্নীলের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগে। তবে অর্নীল কয়েক কদম হেটেই আবার থেমে যায়।

অর্নীল;; স সিয়া সিয়া, ওয়েট।

সিয়া;; হুমম

অর্নীল;; আমার কাজ আছে আজ।

সিয়া;; ওহ আচ্ছা।

সিয়া তার মুখ টা কালো করেই অর্নীলের হাত ছেড়ে দেয়। অর্নীল সিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। সিয়া তার চোখ দুটো নিচে নামিয়ে রেখেছে।

সিয়া;; আব…তো আম আমি তাহলে যাই এখন। আপনি কাজ করুন।

অর্নীল;; হুমম।

সিয়া;; বায়…

সিয়া এই বলেই মাথা নুইয়ে বের হয়ে পরে। অর্নীল নিজের পকেটে দুই হাত গুজে সিয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। সে জানে যে সিয়া কিছুটা হলেও হার্ট হয়েছে। সিয়ার যেতেই অর্নীল বাকা হাসে। আর কাকে যেনো ফোন দেয়।


সিয়া এদিকে নিজের দুই ঠোঁট উল্টিয়ে দিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে পরে। হয়তো কান্না আসছে কিন্তু ঠোঁট গুলো উল্টিয়ে দিয়ে কান্না থামাচ্ছে। নাকের ডগা লাল হয়ে গেছে। সিয়া এক রিকশা ডাক দেয়।

সিয়া;; এই খালি রিকশা!

তবে সিয়ার গলা যেনো চিকার মতো হয়ে গেছে। ওইতো কান্না আটকাচ্ছে তো তাই গলার স্বর চিকন হয়ে বের হয়ে গিয়েছে। সিয়া তার গলা টা খাকাড়ি দিয়ে আবার ডাক দেয়। তারপর রিকশা তে ওঠে চলে যায়। কতোক্ষন পর বাসায় আসে। দোলা আর শিউলি নিজেদের মাঝে কি যেনো কথা বলছিলো আর হাসছিলো কিন্তু যেই না দেখলো যে সিয়া ভেতরের দিকে আসছে ওমনি চুপ। গোমড়া মুখ করে নিয়ে বসে পরলো। এমন একটা ভাব যেনো কিছুই জানে না। শিউলি সুপারি কাটতে লাগে আর দোলা টিভি দেখতে লাগে। সিয়া টকটক শব্দ তুলে ভেতরে আসে।

শিউলি;; কিরে এসেছিস?

সিয়া;; হ্যাঁ, খিদে লেগেছে আমার।

দোলা;; করলা, ঝিঙা, পটল, লাউ।

সিয়া;; মায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া

দোলা;; কষা মাংস করেছি আয় খাবি আয়।

সিয়া চলে গেলো খেতে, এভাবেই বেলা টাও চলে যায়। বিকেলের দিকে রুমে আর ভালো লাগছিলো না বিধায় সিয়া রুম থেকে বের হয়ে বাগানের দিকে চলে যায়। হাতে ফোন টা রয়েছেই। সিয়া আস্তে আস্তে হাটছে, সামনে ছোট ছোট ফুলের কিছু টব রয়েছে। সবুজের মাঝে লাল, হলুদ, গোলাপি নানা রঙের ফুল ফুটে আছে। সেগুলো হাত দিয়ে কিছুটা ছুইয়ে দেয়। তখনই ফোনটা বেজে ওঠে। সিয়া ভাবে হয়তো অর্নীল। তবে ফোনে তাকিয়ে দেখে আদিবা। এতেও সিয়া বেশ খুশিই হয়।

সিয়া;; হ্যালো।

আদিবা;; বোনুয়ায়ায়ায়ায়া!

সিয়া;; আরে আস্তে, কেমন আছিস?

আদিবা;; অনেক ভালো।

সিয়া;; বাসায় সবাই কেমন আছে?

আদিবা;; অনেক ভালো। তুই কেমন আছিস আর জেঠিমা নানু কেমন আছে?

সিয়া;; আলহামদুলিল্লাহ সবাই ভালো।

আদিবা;; হুমম, কি করিস?

সিয়া;; বাগানে আছি। রুমে আর ভালো লাগছে না।

আদিবা;; কি হয়েছে মন খারাপ?

সিয়া;; আরে না রে এমনি। তুই কি করিস?

আদিবা;; প্ল্যান করি।

সিয়া;; কিসের প্ল্যান?

আদিবা;; বিয়েতে কি কি করবো তাই!

সিয়া;; বিয়ে? কার বিয়ে?

আদিবা;; না না মানে না কিছু না। আরে বিয়ে না রে এমনি।

সিয়া;; হুমম। আচ্ছা আয় না ঘুড়ে যা এখান থেকে।

আদিবা;; হুম হুম যাবো যাবো। অবশ্যই যাবো। যেতেই হবে। আমি না গেলে হবে নাকি।

সিয়া;; হুমম তো কবে আসছিস?

আদিবা;; হুট করেই একদিন চলে আসবো।

সিয়া;; আচ্ছা।

মাগরিবের আজান দিয়ে দিলে সিয়া বাড়ির ভেতরে এসে পরে। কলেজে গিয়েছিলো বেশ পড়া দিয়ে দিয়েছে। সেগুলোই কমপ্লিট করছিলো তখনই দোলা আসে। সিয়া একবার তাকায় তারপর আবার বইয়ের দিকে চোখ দেয়। দোলা কিছুক্ষন পর আবার আসে, তবে এবার আর একা আসে নি হাতে বড়ো বড়ো বেশ কিছু ডালা রয়েছে। দোলা সিয়ার পেছন দিয়ে এসে ধপ করে বিছানার ওপর ডালা গুলো রেখে দেয়। সিয়া কিছুটা চমকে গিয়েই পেছনে তাকায়। দোলা সেগুলো বিছানার ওপর রেখে দিয়ে দুই হাত সামান্য ঝেড়ে দাঁড়ায়। সিয়া কপাল কুচকে ডালা গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে। দোলার দিকে তাকালে দোলা আবার চলে যায়। সিয়া কিছু না বুঝে সব কিছুই এক এক করে দেখছে। কয়েক মিনিট পর দোলা আরো একটা বিশাল আকাড়ের ডালা নিয়ে রুমে এসে রেখে দেয়। সিয়া এবার বলেই ফেললো…..

সিয়া;; মা কি এগুলো? আর এতো কেনো? কে দিলো? কি করবে? কার জন্য?

দোলা;; আরে বাবা দম নে একটু।

সিয়া;; না মানে এগুলো হুট করেই?

দোলা;; আস্তে আস্তে সব বুঝবি এখন এগুলো ছেড়ে দিয়ে পড়।

সিয়া;; হুম আচ্ছা।

দোলা সিয়ার রুমেই ছিলো, তবে এবার সিয়া ফোন টা হাতে নিয়ে উঠে গিয়ে করিডরে চলে যায়। অর্নীল কে ফোন করে। তবে ফোন এবার ব্যাস্ত দেখাচ্ছে। সিয়া ফোন কান থেকে নামিয়ে কপাল কুচকে তাকায়। এই পোলা এই সময়ে কার সাথে কথা বলে৷ সিয়া আবার ফোন করে সে এবার ফোন ধরে।

অর্নীল;; হ্যালো!

সিয়া;; কার সাথে কথা বলেন আপনি?

অর্নীল;; ওইতো অফিসের একটা ক্লাইন্ট ছিলো।

সিয়া;; হুম বুঝলাম। আচ্ছা কালকে আমরা দেখা করি। মানে কলেজ টাইম শেষে?

অর্নীল;; যদি আমি ফ্রি থাকি তাহলে করবো।

সিয়া;; হুয়াট ডু ইউ মিন বায় যদি আমি ফ্রি থাকি তাহলে!? কাজকে মারি গুল্লি আপনি দেখা করবেন আমার সাথে। আমি বলেছি দেখা করতে আপনি দেখা করবেন ব্যাস, দুনিয়া উলটে গেলেও আপনি দেখা করবেন করবেন করবেন।

দোলা;; এই কার সাথে চিল্লাপাল্লা করিস?

সিয়া;; অর্নীল সব আপনার দোষ।

অর্নীল;; আচ্ছা দেখা করবো।

সিয়া;; মনে থাকে যেনো, বাদর একটা।

অর্নীল;; ওই কি বললা?

সিয়া;; কিছু না৷

এই বলেই সিয়া ফোন টা রেখে দেয়। রুমে এসে দেখে তার নানুও এখন সেখানে বসে আছে।

দোলা;; সিয়া মা এখানে আয় দেখি।

সিয়া;; আসলাম।

দোলা;; এখানে বোস।

দোলা সিয়াকে নিজের সামনে এনে বসিয়ে দেয়। দোলা একবার তার মায়ের দিকে তাকায়। সিয়া এগুলোর কিছুই বুঝতে পারছে না। সিয়া কিছুটা হেসে দিয়েই বলে ওঠে….

সিয়া;; মা, মানে কিছু কি বলবে?

দোলা;; হ্যাঁ আসলে বলছিলাম যে……

দোলা সিয়াকে একটা সময় সবকিছু ক্লিয়ার করে বলেই দেয় আর তা শুনে সিয়ার পুরো দুনিয়া ঘুড়ে যায়৷ এটাও সম্ভব! সিয়া বর্তমানে অবাকের এমন চরম পর্যায়ে আছে যে তার মুখ দিয়ে কিছুই বের হচ্ছে না। সে নীরব শ্রোতা হয়ে সবকিছু শুধু শুনেই গেলো।





চলবে~~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here