#ধর্ষিতা_বউ
#৩য়_পর্ব
———–
প্রাপ্তি প্যাকেটটা খুলে দেখে একটা মলম।ও বুঝে নিলো এটা হাতে লাগানোর জন্য সায়ান আনিয়েছে।প্রাপ্তি ঔষধ লাগিয়ে নিলো হাতে তারপর শুয়ে পড়লো!মলমটা খুব ঠান্ডা।জ্বালাপোড়া খুব কমে গেছে। কিছুটা আরামদায়ক লাগছে।
সকালে উঠে দেখে ব্যথা অনেকটাই কমে গেছে।
প্রাপ্তি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানিয়ে নিলো।তারপর সায়ানের রুমের দিকে গেলো।গিয়ে দেখে সায়ান ঘুমাচ্ছে এখনো!কিছুক্ষন প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে দেখলো সায়ানের দিকে আর রাতের কথা ভাবছিলো।যতটা খারাপ ভেবেছি ওতটা খারাপ না সায়ান।হঠাৎ করেই সায়ানের ঘুম ভেঙে গেলো।প্রাপ্তি চোখ নামিয়ে ফেলল।সায়ান বলল
-কিরে এখানে কি করিস?
-না মানে কিছু না।
-কয়টা বাজে?
-৮:২০ বাজে এখন।
-ডেকে দিলি না কেনো আমাকে?আমার কাজ আছে আজকে।
-আমি কি জানতাম নাকি?!!
-আমার কাপড়গুলা আয়রন করে রাখ আমি শাওয়ারে যাচ্ছি।
প্রাপ্তি কাপড়গুলো আয়রন করে রাখলো।তারপর সায়ান নাস্তা করে অফিসে চলে গেলো।সায়ান বাসায় আসলেই মেয়েদের সাথে ফোন এ কথা বলে।আর প্রয়োজন হলে প্রাপ্তিকে বিছানার সঙ্গী বানায়।
পুরনো কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে প্রাপ্তির চোখ লেগে গেলো টেরই পেলো না।
হঠাৎ করে কলিং বেল বেজে উঠলো।প্রাপ্তি দরজা খুলে দেখে সায়ান দাঁড়িয়ে আছে।সায়ান ঘরে ঢুকেই বলল
-যাও শাড়ি পরে আসো।আমরা আজকে আকাশ দেখবো।
প্রাপ্তি তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না।ও দাঁড়িয়ে রইলো সায়ানের সামনে।সায়ান বলে,
-শুনতে পাও নি কি বলেছি,জলদি যাও,আজকের চাঁদটা খুব সুন্দর আলো ছড়িয়েছে।ছাদে গয়ে জোছনা দেখবী একসাথে।তুমি একটু সেজেগুজে আসো।
প্রাপ্তি নীল শাড়ী আর লাল চুড়ি পরে নিলো।চুল খুলে চিরুনি দিয়ে আচড়াচ্ছিলো।এমন সময় সায়ান এসে বলল
-চুলে খোপা করো।
-কেনো?খোলা চুলেই তো ভালো লাগে আমার কাছে।
-আরে করো না।
তারপর প্রাপ্তি চুলে খোপা করে নিলো সুন্দর করে পেছন থেকে সায়ান এসে ওর খোপায় কাঠবেলি ফুল গুজে দিলো।আর প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে বলল,
-বড্ড ভালোবাসি তোমায়।
বলে সায়ান প্রাপ্তির কপালে চুমো খেতে নিলো এমন সময়
-প্রাপ্তি….প্রাপ্তি.. এই প্রাপ্তি…..
সায়ানের ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো প্রাপ্তির।উফফ স্বপ্ন ছিলো এটা!!ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১:২৫ বাজে।এতো রাতে সায়ান ডাকছে কেনো!!
যাক গে প্রাপ্তি সায়ানের রুমে গেলো।
-কিরে এতক্ষন ধরে ডাকছি শুনতে পাস না?কানে তুলো দিয়ে রাখিস নাকি?
-না আসলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
-হ্যাঁ সারাদিন ঘুম,খাওয়া ছাড়া আর কিছু কাজ নাই তোর?
-এতো রাতে আমি কি করবো আর না ঘুমিয়ে?
-রিয়াকে একটা ড্রেস দে।ওর ড্রেসটাতে পানি পড়ে ভিজে গেছে।
-বাবু আমি এসব ক্ষ্যাত ড্রেস পরবোনা।(রিয়া)
-তাহলে কি করবে এখন?(সায়ান)
-তোমার শার্ট দাও পরে নিবো।(রিয়া)
-আচ্ছা ঠিক আছে(সায়ান)।
-এই শুন আমার ড্রেসটা ওয়াশ করে দে।সকালে আমার যেতে হবে বাসায়।(রিয়া)
-আচ্ছা(প্রাপ্তি)
প্রাপ্তি এসে রিয়ার ড্রেসটা ধুয়ে শুকাতে দিলো।বাড়ি কথা খুব মনে পড়ছে। সেই কবে মায়ের সাথে দেখা করে এসেছি আর যাওয়া হয়নি।সকালে সায়ানকে বলবো বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে যাবো।
সকালে নাস্তা বানিয়ে দিলো।রিয়া আর সায়ান নাস্তা করে নিলো।রিয়া চলে গেলো নাস্তা করেই।যাওয়ার সময় বলে গেলো
-আমার সায়ানের দিকে একদম বাজে নজর দিবিনা।ওর আশে পাশে কম যাবি।
প্রাপ্তি রিয়ার কথায় কান দেয়নি।রিয়ে চলে যাওয়ার পরে প্রাপ্তি সায়ানকে বলল
-অনেকদিন বাসায় যাইনা।যদি আপনি অনুমোতি দেন তাহলে আমি একবার বাবা মায়ের সাথে দেখা করে আসতে চাই।
-আমার খাওয়া দাওয়া দেখবে কে?না খেয়ে থাকবো?
-আমি রান্না করে দিয়ে সকালে যাবো।আবার বিকালেই চলে আসবো।থাকবো না।আপনি তো ওই সময়টা অফিসেই থাকেন।বা অন্য কাজে বাইরে থাকেন।আপনি বাসায় আসার আগেই আমি চলে আসবো।
-আচ্ছা আমি অফিসে যাওয়ার সময় তোকে নামিয়ে দিয়ে আসবো।কিন্তু আমি বাসায় এসে যেনো তোকে পাই।
-পাবেন।আমি ওয়াদা করছি আমি আপনার ফেরার আগেই বাসায় চলে আসবো।থাকবো না।
পরে দুইজনেই খাওয়া দাওয়া শেষ করে রেডি হয়ে নিলো।
প্রাপ্তি নীল রঙের একটা শাড়ী,হাত ভর্তি লাল রেশমী চুড়ি পরে নিলো,একটা স্টোনের ছোট্ট টিপ পড়লো,চোখে গাঢ় করে কাজল,ঠোটে হালকা গোলাপি রঙের লিপস্টিক লাগালো,আর চুলগুলো খোপা করে নিলো।ওর ফর্সা শরীরে এই সাজে ওকে দারুন লাগছিলো।
প্রাপ্তি গতকালের ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না।সায়ান ফোন এ কথা বলে মেয়েদের সাথে,ফ্লার্ট করে,ড্রিংক করে,সিগারেট খায় সব মেনে নিয়েছিলো কিন্তু রিয়ার সাথে এইভাবে শারীরিক সম্পর্ক ও কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না।তাই ও সিদ্ধান্ত নিলো যে করেই হোক সায়ানকে ওর প্রতি টেনে আনবেই আর এটা হলো তার শুরু।
প্রাপ্তি রেডি হয়ে যখন সায়ানের সামনে আসলো তখন সায়ান অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো।তারপর বলল
-এতক্ষন লাগে তোর রেডি হতে?
-মাফ করবেন দেরি হয়ে গেছে।আর ২ টা মিনিট দিন।আমি বোরকা পরে নেই প্লিজ।
-আবার বোরকা পরবি কেনো?আমার গাড়িতে করেই তো যাবি।বোরকা পরতে হবে না।
-আচ্ছা চলুন তাহলে।
-আর শুন,চুল খুলে রাখ।তাতেই বেশি ভালো লাগবে।
প্তাপ্রি মনে মনে খুশি হচ্ছিলো সায়ানের ব্যাবহার দেখে।ভাবছে-আমি আবার স্বপ্ন দেখছি না তো!!
তাই নিজের হাতে একটা চিমটি কেটে দেখলো।নাহ সত্যি।স্বপ্ন না।
তারপর তারা গাড়িতে উঠলো। যাওয়ার পথে হঠাৎ করেই সায়ানের চোখ পড়লো প্রাপ্তির হাতের পোড়া দাগের উপরে।অনেকটা পুড়েছে মেয়েটার।সায়ান বলল
-তোর হাত দেখি অনেকটাই পুড়ে গেছে। সেদিন শফিক মলম দিয়ে যায়নি?
-দিয়েছিলো।আমি লাগিয়েছিলামও।কিন্তু সেদিন রাতে অনেক জোরে ঘষা লেগে চামড়া উঠে যাওয়ার কারনে দাগটা পড়ে গেছে।
-ওহ বুঝেছি।বাসায় ভিনেগার আছে।লাগিয়ে নিস।দাগ চলে যাবে।
-আচ্ছা।
প্রাপ্তি তার কানকে বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না।এটা কি সত্যি সেই সায়ান যে কিনা কাল রাতেও একটা মেয়ের সাথে যৌন লালসায় লিপ্ত ছিলো!!যা কিনা আমাকে এক ফোটাও তোয়াক্কা করতো না।তারমানে মা ঠিকই বলেছে।ছেলেদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা একটা মেয়ে।যে সহজেই একটা ছেলেকে বশে নিয়ে আসতে পারে।
প্রাপ্তির বাসা এসে পড়েছে।সায়ান প্রাপ্তিকে নামিয়ে দিলো।প্রাপ্তি যাওয়ার সময় সায়ান পেছন থেকে ডাক দিয়ে বলল
-প্রাপ্তি এইদিকে আয় তো একটু।
প্রাপ্তি তাড়াতাড়ি আসলো।
-কিছু বলবেন?
সায়ান প্রাপ্তির হাতে একটা স্মার্ট ফোন দিয়ে বলল
-এই ফোন এ দুইটা সিম লাগানো আছে।আজকে থেকে এই ফোন টা তুই ইউজ করবি।এখানে দুটো সিমেই টাকা লোড করা আছে।
এইটুকু বলেই সায়ান অফিসে চলে গেলো!প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে রইলো অবাক হয়ে সায়ানের গাড়ির দিকে।গাড়িটি অদৃশ্য হওয়ার পরে প্রাপ্তি বাসার ঢুকে গেলো।
To bo continue………