ধর্ষিতা বউ পর্ব ২

#ধর্ষিতা_বউ
#২য়_পর্ব
__________

সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে প্রাপ্তি রান্না ঘরে গেলো। দেখলো তার ফুফু নাস্তা বানাচ্ছে।প্রাপ্তি বলল,
-ফুফু কোনো কাজ থাকলে বলেন আমি করে দিচ্ছি।
-কিরে এখনো আমাকে ফুফু বলেই ডাকবি?এখন তো আমি তো মা।
-এতোদিন ফুফু বলে এসেছি এখনন হঠাৎ করে মা ডাকতে পারবো??
-অন্য কোথাও বিয়ে হলে তো ডাকতে হতো আমাকেই ডাকলি না হয় মা বলে।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
দুইজনে মিলে নাস্তা বানালো!
সায়ান ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিলো। বাইরে যাওয়ার যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হচ্ছিলো।তখন তার মা বলল
-কালকেই বিয়ে করলি,আর আজকে সকালেই তোর বাইরে যেতে হবে?কয়দিন না গেলে কি হয়?
-ফালতু বকো না তো মা।ঘরে বসে থেকে কি করবো এখন।
-কি করবি মানে?বিয়ে করেছিস,ঘরে বউ রেখে এখন কি কাজে বাইরে যাবি তুই?
-ওও তার মানে আমি ঘরে বসে বসে তোমার ভাইঝি কে দেখবো এখন??
-ও এখন তোর বউ সায়ান।কথাটা মাথায় রাখিস।
-মা আমি তোমার কথায় ওকে বিয়ে করেছি।নাহলে ওর মতো মেয়ের দিকে সায়ান চোখ তুলেও তাকায় না।
-চুপ কর সায়ান। এসব কি কথা বলছিস তুই??
-আমাকে এসব কথা বলে আমার মাথা খারাপ করো না মা।আমি যাচ্ছি।
প্রাপ্তির কিছুই বলার ছিলোনা।ও চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখে গেলো।দুপুরের রান্নার সময় সালেহা খাতুন প্রাপ্তিকে বলল,
-কিরে মা তোর মন খারাপ?
-না তো মা কিছু না।
-আমি বুঝতে পারছি তোর মনটা খুব খারাপ।একমাত্র তুই-ই পারিস সায়ানকে ঠিক করতে,মেয়েদের নেশা,মদ সিগারেটের নেশা কাটাতে।যদিও ও কখনো আমাকে বুঝতে দেয়না যে ও মেয়েদের সাথে মেলামেশা করে।
-আমি কিভাবে করবো মা?
-একটা ছেলের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হচ্ছে এক্তা সুন্দরী মেয়ে।তুই তো কোনো দিক থেকে কম না রে মা।আল্লাহ্‌ সবদিক দিয়ে তোকে সুন্দর করে বানিয়েছেন।তাই চাইলেই তুই পারবি ওকে তোর আয়ত্বে এনে ওর জীবনটা সুন্দর শৃঙ্খল করে তুলতে।আমরা আর কয়টা দিনই আছি এখানে।সায়েরার (সায়ানের ছোট বোন) কাছে চলে যাবো আমরা কয়দিন পরে।
-আচ্ছা মা আমি চেষ্টা করবো আমার পুরোটা দিয়েই।
সারাদিন কথাগুলো প্রাপ্তির মাথায় ঘুরপাক খেয়ে গেলো।কিভাবে কি করবে বুঝে উঠতে পারছিলো না প্রাপ্তি।
যা-ই হোক এইভাবেই তাদের দিনকাল চলতে থাকলো।বাবা মা যতদিন ছিলেন ততদিন প্রাপ্তি সায়ানের রুমেই ঘুমাতো কিন্তু মেঝেতে। শুধুমাত্র সায়ানের মনে ক্ষুধা মেটানোর সময়টাতে প্রাপ্তির জায়গা হতো বেডে।প্রতিদিন সায়ান কোনো না কোনো মেয়ের সাথে ফোন এ কথা বলে,জান,বাবু এসব বলে সম্বোধন করে।প্রাপ্তি নীরবে শোনে আর চোখের জল ফেলে।
কিছুদিন পরে সায়ানের বাবা মা চলে গেলো।
বাবা মা চলে যাওয়ার পর থেকে সায়ান প্রতিদিন কোনো না কোনো মেয়েকে নিয়ে বাসায় আসে,সারাদিন সিগারেট, মদ আর মেয়ের নেশায় পরে থাকে সে।তার ঘরে যে একটা বউ আছে তার দিকে সায়ানের কোনো খেয়ালই নেই। খাবার সময় আর রাতের ক্ষুধা নিবারনের সময় শুধু প্রাপ্তি সায়ানের সঙ্গী।সারাদিন বাসায় বসে থাকে আর এগুলোই করে।
একদিন প্রাপ্তি রান্না করছিলো সকালে।সবে কড়াইয়ে তেল দিলো।প্রায় গরম হয়ে আসছে।এমন সময় সায়ান ডাক দিলো।তাড়াতাড়ি যেতে হবে নাহলে আবার গালাগালি শুরু করবে।তাই তাড়াহুড়ো করে কড়াই নামাতে গিয়ে হাতের উপরে পড়ে গেলো সবগুলা তেল।মুহুর্তে মনে হচ্ছিলো যেনো ওর প্রানটা বের হয়ে গেলো!
-কিরে প্রাপ্তি তোর কত সময় লাগে।জলদি আয়।
কোনমতে হাত ওড়নার আচলে লুকিয়ে গেলো সায়ানের রুমে।
-ছোট লোকের বাচ্চা এতো সময় লাগে তোর এখানে আসতে!!কি করিস সারাদিন!!আমার কাপড়গুলো আয়রন করে রাখ।আমি শাওয়ারে যাচ্ছি।
অনেক কষ্ট করে প্রাপ্তি সায়ানের কাপড়গুলো আয়রন করে নিলো।
তারপর নিচে গিয়ে নাস্তা রেডি করে নিলো!!হাতটা মনে হচ্ছে যেনো জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।সায়ান যখন নাস্তার টেবিলে আসলো তখন প্রাপ্তি জিজ্ঞেস করলো
-বাসায় কোনো মলম আছে?
-কি করবি মলম দিয়?
-হাত পুড়ে গেছে লাগাবো!
-First Aid box এ আছে দেখে নিস।
নাস্তা করে সায়ান চলে গেলো।প্রাপ্তি অনেক খুজলো কিন্তু কোথাও First Aid Box খুজে পেলো না।এদিকে ব্যথা যন্ত্রণায় হাত পুড়ে যাচ্ছে।কোনো উপায় না দেখে প্রাপ্তি পোড়া জায়গায় টুথপেস্ট লাগিয়ে দিলো কিছু।অনেক কষ্ট করে রান্না বান্না করে নিলো দুপুরে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লো ড্রইং রুমের সোফায়।শরীরটা মনে হচ্ছে যেনো আগুনের মতো পুড়ে যাচ্ছে। জ্বর এসে পড়েছে।চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে।বিকালে ঘুম ভাংলো।উঠে দেখে হাতের পোড়া জায়গাটা ফোস্কা পড়ে গেছে।ভেতরে পানি জমে গেছে।উফফ কি যে ব্যথা হচ্ছে।ফ্রিজ থেকে বরফ বের করে কিছুক্ষন লাগালো।যতক্ষন লাগালো ততক্ষন শান্তি লাগে।সন্ধ্যায় সায়ান বাসায় ফিরে এলো।এসেই রুমে চলে গেলো।রাতে খাওয়া দাওয়ার পর সায়ান প্রাপ্তিকে বলল রুমে যাওয়ার জন্য।প্রাপ্তি বলল,
-আমার শরীরটা ভালো লাগছে না।আজকে..
-চুপচাপ যা বলেছি তা করবি।মুখে মুখে কথা বলবিনা।
রাতে সব কাজ শেষ করে প্রাপ্তি কাঁপতে কাঁপতে রুমে গেলো।জ্বরে পুরো শরীর পুড়ে যাচ্ছে।হাতের ব্যথায় ইচ্ছা করছে মরে যেতে।
এই অবস্থায় সায়ান প্রাপ্তির উপরে যৌন নির্যাতন চালালো।প্রাপ্তির শরীরে বিন্দু পরিমান শক্তি নেই।সায়ান যখন প্রাপ্তির হাত চেপে ধরেছিলো তখন প্রাপ্তির হাতের ঠোসা ফুটে গেলো।চামড়া উঠে যাওয়ায় হাতের যন্ত্রনা আরো তীব্রতর হয়ে গেলো।ও চেয়েও চিৎকার করে কাঁদতে পারছেনা।সায়ান এতোটাই নিষ্ঠুর যে এই অবস্থা দেখেও প্রাপ্তিকে ছাড়ে নি।

পরদিন সকালে কোনোমতে প্রাপ্তি উঠে গোসল করে নিলো।গোসল করে ড্রইং রুমে এসে শুয়ে ছিলো।একদম ভালো লাগছিলো না।নাস্তা বানায় নি।সায়ান উঠেই চিল্লাচিল্লি শুরু করলো-এখন আমি না খেয়ে বাইরে যাবো!!তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবেনা।সারাদিন ঘুম আর ঘুম।এছাড়া আর কোনো কাজ নেই।
তারপর বাইরে চলে গেলো।তারপর এক ঘন্টা পরে ফিরে আসলো মদ আর সিগারেট নিয়ে।এসেই রুমে চলে গেলো।
শফিক বাজার করে দিয়ে গেলো।
প্রাপ্তি সেগুলো কোনোরকম কেটেকুটে রান্না করে আবার শুয়ে রইলো।শরীরটা এতোটাই খারাপ লাগছিলো যে কি করবে বুঝে উঠতে পারছিলো না।রাতে খাবার টেবিলে সায়ানের চোখ পড়লো প্রাপ্তির হাতের উপরে।বলল,
-হাতে কিছু লাগাস নি??
-টুথপেস্ট লাগিয়েছিলাম।
-তোকে না বলেছি First Aid Box এ মলম আছে??
-খুজে পাইনি।
-তো বলিস নি কেনো আমাকে?
প্রাপ্তি আর কিছু বলে না চুপ করে থাকে।ও বুঝে উঠতে পারছিলো না হঠাৎ করে সায়ান এমন ভালোভাবে কথা বলছে কেনো!!!
রাতে কলিং বেল এর শব্দ শুনে প্রাপ্তি দরজা খুলল। দেখে শফিক।শফিক তার হাতে একটা প্যাকেট দিয়ে বলল -সায়ান সাহেব কইলো এইটা আপনারে দিতে।
প্রাপ্তি বুঝতে পেরে একটা মুচকী হাসি দিয়ে গেট লাগিয়ে দিলো!

চলবে*****

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here