#নরীর_সতীত্ব
#পর্ব_০৩
Wohad Mahmud
যেই হাতের আঙ্গুল কেটে রুমালে রক্ত মাখিয়েছিলাম সেই আঙ্গুলে ব্যথা পেয়ে রক্ত বাহির হচ্ছে। মা বলছে কি হয়েছে। আমি বললাম কিছু না ব্লেডে কেটে গিয়েছে। আর ভাবি আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে আছে। আমি তাকানোর সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নেই ভাবি। আমি সম্পূর্ণ না হলেও কিছুটা বুঝতে পারলাম ভাবি হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার হাত কাটার কারণ।
রুমে আসার সাথে সাথে সাবনাজ বলে উঠলো আপনি সবার সামনে মিথ্যা কথা কেন বললেন মায়ের সাথে?
আমি মুখে হাত নিয়ে ভাবতে ভাবতে বললাম মিথ্যা কখন বললাম আবার মায়ের সাথে।
মায়ের সাথে যদি মিথ্যা না বলেন তাহলে নিশ্চয়ই আমার সাথে মিথ্যা বলেছেন।
আরে বাবা আমি কারোর সাথে মিথ্যা বলি নাই। কি হয়েছে খুলে বলো তো আমাকে একটু। আমার তো মনে হচ্ছে না মিথ্যা বললাম।
সন্ধ্যায় যখন আপনি রুমে আসলেন তখন আপনার আঙ্গুল দিয়ে রক্ত পড়ছিল। আমি জানতে চাইলে বললেন দরজায় আঙ্গুল চাপ লেগে কেটে গিয়েছে। আর মায়ের কাছে বললেন ব্লেডে কেটে গিয়েছে। তাহলে তো এটা মিথ্যা কথা হলো তাই না?
আমি দাঁতের সাথে দাঁত চেপে বললাম। আমি কি মায়ের সাথে ব্লেডে কাটার কথা বলেছি। মনে হয় ভুল করে বলেছি। আচ্ছা বাদ দাও অনেক রাত হয়েছে এখন ঘুমাও। কাল সকালে অনেক কাজ আছে। তোমাদের বাসা থেকে মানুষ আসবে আমাদের নিতে। এটা বলে কোনো রকমে কেটে গেলাম। আর এমন ভুল করা যাবে না।
এটা বলে খাট থেকে বিছানা নিয়ে আর একটা বালিশ নিয়ে নিচে ঘুমানোর সময় সাবনাজ বলে। আজ থেকে আর নিচে ঘুমাতে হবে না উপরে ঘুমাবেন।
আমি বললাম না থাক তোমার সমস্যা হবে তো। আমি নিচে থাকছি আমার কোনো সমস্যা হবে না।
সাবনাজ আমার হাত ধরে বলে আমার সমস্যা হবে না। আপনি তো আমার স্বামী। আমাদের সারাজীবন একসাথে থাকতে হবে। সব আস্তে আস্তে মানিয়ে নিতে নিতে পারব আমি, বাবা, মা আছে। আমি চুপচাপ বাধ্য ছেলের মতো খাটের উপর উঠে ঘুমিয়ে পড়লাম।
তখনি তারপর সাবনাজ বলল এবার লাইট টা অফ করে দিন।
আমি বললাম থাক লাইট অফ করছি না। তোমার রাতে ঘুমাতে সমস্যা হবে ভয় পাবে।
সাবনাজ বলে সমস্যা হবে না আপনি পাশে থাকলে আমার কিছু হবে না। আর আপনার লাইট জ্বালিয়ে ঘুমাতে সমস্যা হয় আমি দেখেছি সারারাত মুখের উপর কাঁথা দিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন লাইট জ্বালানো ছিল বলে। আর কোনো উপায় না আমি বাধ্য ছেলের মতো লাইট অফ করে ঘুমিয়ে গেলাম।
কালকের মতো আজকেও নামাজের সময় ডেকে দেয় নামাজ পড়ার জন্য। আর যাই হোক এমন স্ত্রী পেয়ে অনেক খুশি। এখন থেকে নিয়মিত নামাজ পড়ছি। এমন স্ত্রী সবাই চায়।
নামজ পড়ে আমি ঘুমাচ্ছিলাম আর সাবনাজ কোরআন শরীফ পড়ছিল। কিছুক্ষণ পরে ঘুম থেকে উঠে দেখি সবাই সবার কাজ করছে ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং এ গেলাম, গিয়ে দেখি মা, ভাবি আর সাবনাজ কাজ করছে।
আমি হাসতে হাসতে মাকে উদ্দেশ্য করে বললাম নতুন বউ দিয়ে এতো কাজ করাও এখনি। বাড়ির গিয়ে কিন্তু মা বাবার কাছে বদনাম করবে। বলবে আমার শ্বাশুড়ি আমাকে দিয়ে অনেক কাজ করাচ্ছে।
মা বলে তোর বউ কে মানা করছি শুনে নাই। বদনাম তোর হবে আমার না। লোকে বলবে আজ বিয়ে হতে না হতেই বউ দিয়ে কাজ করাই। মায়ের কথা শুনে আমি জোরে জোরে হাসতে থাকলাম আর সবনাজ কিছু টা লজ্জা পেয়ে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রুমে চলে যায়।
ভাবি তখন আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে। বাসার বউ বাড়িতে কাজ করবে নাতো কোথায় কাজ করবে। এভাবে বললে তো আশঙ্কার পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠে যাবে। আমি আর কিছু বললাম না। কুকুরের লেজ সোজা হবে না বাঁকা থেকে যাবে। ভাগ্যিস এখন সাবনাজ এখানে নেই। থাকলে এই কথা শুনলে কী মনে করত!
মা তখন মুচকি হেসে বলে সাইমা(বড় ভাবি) তোমার যখন নতুন বিয়ে হয় তুমি এক সপ্তাহ ঘর থেকেই বাহিরে হও নাই । কয়েকটা দিন যাক সব ঠিক হয়ে যাবে আস্তে আস্তে। আর তুমি তো আছোই সমস্যা হবে না আমার। তোমার প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস আছে।
মায়ের কথা শুনে আমি তখন মনে মনে হাসতে থাকি আর বলি আমার মা জানে কীভাবে সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করতে হয়। ভাবিকে একটু সুনাম করল আর ভাবি গলে গেল। কারণ আমার মা একটু হলেও জানে ভাবি কেমন প্রকৃতির লোক।
প্রায় দুপুর হয়ে যাচ্ছে সাবনাজের বাসার লোকজন চলে আসবে। সাবনাজের বোন, দুলাভাই আর আর একটা ছোট ভাই আসবে। সাবনাজ রুমে শুয়ে আছে আমি বললাম যাও গোসল করে গুছিয়ে নাও চলে আসবে কিছুক্ষণ পরে সবাই।
তারপর আমি আর সাবনাজ ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসলাম। ভাইয়া আর বাবা সবাই নেই। আমি মা, ভাবি, সাবনাজ আর আমার বোন বাইরে ডাইনিং এ বসে অপেক্ষা করছি আত্মীয়ের।
সাবনাজ আমাকে বলে তোমার ফোন টা একটু দিবে বাসায় কথা বলব। তারপর আমার ফোনটা সাবনাজ কে দিই। সাবনাজ ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে যায়।
সাবনাজের দিকে তাকিয়ে থাকে ভাবি আর বলে ফোন নিয়ে দূরে যাওয়ার কী দরকার এখানেই তো কথা বলা যায়। এখানে কথা বললে কি হতো। সবার সামনেই তো কথা বলা যায়।
বোন তখন বলে হয়তো পার্সোনাল কথা থাকতে পারে ভাবি সে জন্যই গিয়েছে।
মুখ ভাঙিয়ে ভাবি বলে নতুন নতুন এমন পার্সোনাল কথা বলা ঠিক না। আমার কিছু বলার আগের চেয়ার থাকে অন্য রুমে চলে যায়।
আমি ফোনের দিকে তাকি ফেসবুকিং করছিলাম ডাইনিং এ মা আর বোন ব্যস্ত খাবার পরিবেশনে ব্যস্ত। ভাবি কখন যে চুপিচুপি বারান্দায় গিয়ে সাবনাজ এর ফোন কল শুনছে কেউ বলতে পারবে না।
একটু পরে ভাবি সাবনাজ এর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে আসে আমাদের সামনে। আমি, মা আর বোন এসব দেখে অবাক। আমি ভাবির হাত থেকে সাবনাজ কে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম এসব কি হচ্ছে ভাবি। পাগল হয়ে গিয়েছেন আপনি। এমন শক্ত করে হাত ধরেছে হাতের যেখানে ধরেছে সেখানে লাল হয়ে গেছে।
আমাকে কথা না শুনিয়ে তোমার বউ কে শুনাও মাহমুদ। তোমার পরকিয়া বউ।
আমার মেজাজ গরম হয়ে গিয়েছে। ভাবি না হয়ে অন্য কেউ হলে সত্যি থাপ্পড় মেরে দিতাম। আমি বললাম কেন কি করছে আমার বউ যে তাকে কথা শুনাতে হবে। আর পরকিয়া বউ মানে এসব আজেবাজে কথা বলছেন কেন?
তোমার বউ মায়ের সাথে কথা বলার নাম করে কার সাথে বলছিল জিজ্ঞাসা করো। বাবু সোনা বলে ডাকছিল। আবার বলছে একবার এখান থেকে চলে গেলে তোমাকে ছেড়ে আর আসব না। আজকেই চলে যাবো। এসব কথা কাকে বলছিল জিজ্ঞাসা করো। মায়ের সাথে কথা বলার নাম করে ছাদে , বারান্দায় গিয়ে কার সাথে কথা বলে শুনো। মনে হয় পুরাতন কোনো বয়ফ্রেন্ড হবে।
আমি সাবনাজ কে জিজ্ঞেসা করলাম ভাবি এসব কি বলছে সাবনাজ তোমাকে। সত্যি বলছে কি? কার সাথে কথা বলছিলা তুমি?
আমার কথার উত্তর না দিয়ে অনবরত কান্না করতে থাকে সাবনাজ।
চলবে,,,,,,
বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। আগের পর্ব কমেন্ট বক্সে।
নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_০৪
Wohad Mahmud
মায়ের সাথে কথা বলার নাম করে ছাদে , বারান্দায় গিয়ে কার সাথে কথা বলে শুনো। মনে হয় পুরাতন কোনো বয়ফ্রেন্ড হবে।
আমি সাবনাজ কে জিজ্ঞেসা করলাম ভাবি এসব কি বলছে সাবনাজ তোমাকে। সত্যি বলছে কি? কার সাথে কথা বলছিলা তুমি?
আমার কথার উত্তর না দিয়ে অনবরত কান্না করতে থাকে সাবনাজ। আমি জোর দিয়ে বললাম কী হলো তুমি যদি নির্দোষ হয়ে থাকো থাকো তাহলে কথার জবাব কেন দিচ্ছ না। তাহলে ভাবি যা বলছে সেটা কি ঠিক? তুমি যদি নির্দোষ হয়ে থাকো তাহলে তোমার কিছুই হবে না। যে তোমার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে তার শাস্তি হবে আর যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে আমি কিছু বলব না। তোমার ভালোবাসার মিলন ঘটিয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব।
সাবনাজ তখন চোখের পানি মুছতে মুছতে বলে ওটা আমার ভাবির মেয়ে ছিল। মাত্র পাঁচ বছর বয়স। আমি যখন বাড়িতে ছিলাম তখন সব সময় আমার কাছে থাকতো। আমি চলে আসার পর শুধু আমার খোঁজ করে আর কান্না করে। সে জন্যই আমি বলেছিলাম বাবু আমি আজকেই এখান থেকে তোমরা কাছে চলে আসব। এখানে আর থাকবো না। যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে আজকে যারা আসবে জিজ্ঞেসা করে নিয়েন। আর ভাবি সম্পূর্ণ না শুনে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। বিশ্বাস করেন আমার কোনো ছেলের সাথে সম্পর্ক নেই।
ভাবি তখন মুখ ভাঙিয়ে বলে ঢং দেখে আর বাঁচি না। বাঘ যখন খাঁচায় বন্দী হয় তখন এমন লাফালাফি করে। সব মিথ্যা কথা বলছে এখন সব কথা ফাঁস হয়ে গিয়েছে সে জন্যই এমন নাটক করছে।
ভাবির কথা শুনে আরো জোরে জোরে কান্না করতে থাকে সাবনাজ।
তৎক্ষণাৎ আমার মনে পড়ে আমার ফোনে সব কল তো রেকর্ড হয়। তাহলে এতো কথা বলার কী আছে কল রেকর্ড শুনলে তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমি তখন বললাম চিন্তা করার দরকার নেই ভাবি আমার ফোনের সব কথা রেকর্ড হয়ে থাকে ভাবি। ফোন কলের রেকর্ড শুনলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। কে মিথ্যা বলছে আর কে অন্যের সংসারে আগুন জ্বালাতে চায়।
কল রেকর্ড এর কথা শুনে ভাবির মুখ হাসি থেকে ভয়ে রুপান্তরিত হয়। তারপর আমি কল রেকর্ড প্লে করলাম। স্পস্ট শোনা যাচ্ছে সাবনাজ প্রথমে তার মায়ের সাথে কথা বলছে ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করছে। তারপর ভাবির সাথে কথা বলছে। ভাবির সাথে বলে আপনার মেয়ে কই ভাবি। ভাবি বলে তোমার জন্য কান্না করছে শুধু। সাবনাজ বলে কই দেখি আমি একটু কথা বলি, সাবনাজ তখন বলে বাবু আমি আজকেই এখান থেকে তোমরা কাছে চলে আসব। এখানে আর থাকবো না।
এটা শোনার পরে মাথায় কাজ করছে না আমার। ভাবির দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। কাছে আগিয়ে গিয়ে বললাম আপনার কুদৃষ্টি আমার পরিবার থেকে সরিয়ে নেন। মানুষের মাঝে মনমালিন্য সৃষ্টি করা বাদ দেন। সাবনাজ বাসায় আসছে আজ মাত্র তিন দিন হয়েছে। এখনি আপনি সাবনাজের সাথে যা করছেন না জানি এর পরে আপনি কী করবেন। এরপর যদি যদি আমার পরিবারের দিকে কুদৃষ্টি দিয়ে তাকিয়েছেন তাহলে আমি আপনার চোখ তুলে নিব। এখন ভাবি বলে কিছু করলাম না। কিন্তু এর পরবর্তীতে ভাবি বলে মানব না, কথাটা মনে রাখবেন।
সাবনাজ কান্না করতে করতে রুমে চলে যায়। আমি এখন কী মুখ নিয়ে সাবনাজের সামনে যাবো। আমারো দোষ কম না। ভাবির কথায় এসে একটু ধমক দিয়ে কথা বলেছি সাবনাজ এর সাথে। আমিই যদি আমার স্ত্রীকে বিশ্বাস করতে না পারি তাহলে অন্য কেউ কীভাবে করবে। এখন আমি কোনমতে সাবনাজ এর সামনে যেতে পারব না। তাই ছোট বোন (মাহমুদা) কে ডেকে বললাম। বোন একটা কাজ করতে পারবি।
কি কাজ বল ভাইয়া।
আমি বললাম যা হয়েছে তুই তো সব দেখছিস। আমি ও সাবনাজ এর সাথে একটু ধমক দিয়ে কথা বলেছি। কান্না করছে সাবনাজ অনেক। প্লিজ বোন আমার, তুই গিয়ে একটু দেখবি কী করছে। পাশে গিয়ে একটু বস সাবনাজের।
এভাবে বলিস কেন তুই, প্লিজ বলার কী আছে। আমি ভাবির কাছেই যাচ্ছিলাম আজকের বিষয় টা অনেক খারাপ হয়েছে। যা হয়েছে সব তোর জন্য হয়েছে। ভাবির অপরাধ গুলো সব তুই বাবা মায়ের কাছে থেকে লুকিয়ে রাখিস সেই জন্যই এতো সাহস হয়েছে।
আচ্ছা আমার ভুল হয়েছে বোন এখন থেকে আর কারো অপরাধ লুকিয়ে রাখব না। সরাসরি প্রতিবাদ করব। এবার তোর ছোট ভাবির কাছে গিয়ে দেখ প্লিজ।
আচ্ছা যাচ্ছি সাইড দে এবার তুই।
তারপর মাহমুদা চলে যায় সাবনাজের কাছে। মাহমুদার নাম আমার সাথে মিলিয়ে রেখেছিল মা। আর আমার বোনটা একদম আমার মতো হয়েছে। আমাকে অনেক ভালোবাসে।আমিও অনেক ভালোবাসি। এমন একটা বোন পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। বোন তো অনেকেই পেয়ে থাকে তবে তাকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে হয়।
কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ কলিং বেল এর শব্দ শুনতে পেলাম। মনে মনে ভাবলাম হয়তো সাবনাজ এর বাসা থেকে লোক এসেছে। আমি ভয় পেয়ে আছি এই ভয় হলো আত্মসম্মানবোধ এর ভয়। যদি এসব কিছু তারা জানতে পারে বা ভাবি কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে তাহলে আমার আর আমার পরিবারের মান সম্মান সব নষ্ট হয়ে যাবে। কীভাবে আমি তাদের সাথে তাদের বাসায় যাবো। আর গেলে চোখ তুলে তাদের সামনে তাকানোর সাহস আমার হবে না। নতুন নতুন যদি এমন হয় তাহলে পরে কী হবে। আমার অনেক বিশ্বাস আছে সাবনাজ এর প্রতি সাবনাজ কিছু বলবে না। ভয় করছি ভাবি কে নিয়ে, যদি কোনো গন্ডগল সৃষ্টি করে। অনেক কথা চিন্তা করতে করতে গেট খুলে দিলাম। তারপর সালাম বিনিময় করে ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করে রেস্ট নিতে বললাম।
তারপর মাহমুদা, আমার স্ত্রী সবনাজ কে নিয়ে নিচে নেমে আসে। কিছুক্ষণ আগেও অনেক কান্নাকাটি করছিল। এখন নিজের বাসা থেকে মানুষ আসার কথা শুনে হাসিমুখে নিয়ে নিচে নেমে আসে।
সাবনাজ এর ছোট ভাই বলে আপু তোর চোখ লাল কেন কী হয়েছে? তখন কান্না করেছিল তাই সাবনাজ এর চোখ লাল হয়েছে। কিন্তু সাবনাজ এসব উপেক্ষা করে বলে বাবা-মা তোদের জন্য অনেক খারাপ লাগছিল তাই কান্না করেছিলাম সে জন্যই মনে হয় চোখ লাল হয়েছে।আমি তখন মনে মনে ভাবতে থাকলাম নিজের সংসার ঠিক রাখতে নিজের পরিবার কে খুশি রাখতে হাসিমুখে মিথ্যা কথা বলতে পারে। কিন্তু সবাই না আমার ভাবির মতো কিছু অমানুষ আছে তারা অন্যের সংসার ধ্বংস করার জন্য সবকিছু করতে পারে।
সাবনাজ এর ছোট ভাই বলে কান্না কেন করবি? এতো সুন্দর একটা পরিবার অর্জন করেছিস তুই। মাহমুদ ভাইয়ের মতো একটা স্বামী, মাহমুদ ভাইয়ের বাবা মায়ের মতো শ্বশুর শ্বাশুড়ি। একদম তোর বাবা মায়ের মতো। তোকে কোনো কষ্ট পেতে হবে না। আর আমি তো আছিই মাঝে মাঝে এসে দেখে যাবো। আর হাসতে হাসতে বলে যদি বেশি কান্না করিস তাহলে বল দুলাভাই কে সাথে নিয়ে গিয়ে ঘর জামাই রেখে দিই। বাকি যারা ছিল সবাই হাসতে থাকে।
আমিও মনে মনে হাসলাম আর ভাবলাম আর যায় হোক সাবনাজ এর ভাই ভালোই বুঝে। সবকিছু ঠিকঠাক হ্যান্ডেল করে নিতে পারে। মনে মনে হাসলাম আর বললাম বুদ্ধিমান একটা শালা পাইছি।
ঠিক তখনি সাবনাজ এর ভাই বলে কি দুলাভাই ঠিক বললাম তো। পারবেন না ঘর জামাই থাকতে। আমিও হাসতে হাসতে বললাম হ্যাঁ পারবো আমার তো আরো ভালো হয় বসে বসে খেতে পারবো। কোনো কাজ করা লাগবে না।
সাবনাজ আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি করে হাসছে। আমি সাথে সাথে সাবনাজ এর দিকে থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম সত্যি অনেক লজ্জা পাচ্ছে আমার। সাবনাজ এর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছি না। কিছুক্ষণ আগে যা হয়েছে এটা যদি সাবনাজ এর ভাই জানতে পারতো তাহলে পরিস্থিতি এমন হতো না অন্যরকম হতো। কিন্তু সাবনাজ সবকিছু ঠিক করে নিয়েছে হাসিমুখে।
সবাই খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই রেস্ট নিচ্ছে তখন আমি আস্তে আস্তে সাবনাজ এর কাছে যাই। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে সাবনাজ। লজ্জা দৃষ্টিতে সাবনাজের দিকে তাকিয়ে হাত ধরে বললাম প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও অনেক ভুল হয়েছে আমার। আমি তখন সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতে পারি নাই তোমাকে। আর তোমাকে ধমক দিয়েছিলাম। আর কখনো এমন হবে না। তুমি যা বলবে আমি তাই করব। দরকার হয় তোমার পা ধরে মাফ চাইবো আমি। এই যে কান ধরে উঠ বস করছি, এক,দুই , তিন,
ঠিক তখনি সাবনাজ আমার হাত ধরে বলে কী করছো তুমি মাহমুদ এটা, থামো তো এবার। পাগল হয়ে গেলে না কী তুমি। এমন করতে হয় না। তুমি আমার স্বামী, তোমার উপর কেন রাগ করব বলো। তোমার জায়গায় তুমি ঠিক ছিলে সম্পূর্ণ ভাবে। আমার খারাপ লাগছে ভাবি আমাকে সন্দেহ করে আর আমার সাথে এমন করছে।
আরে বাদ দাও তার কথা। এমনিই মানুষের দোষ খোঁজ করা তার কাজ। আর এতো কিছুর মধ্যে একটা কাজ কিন্তু ভালো হয়েছে।
কী ভালো কাজ হলো আবার?
ওই যে তোমার অল্প একটু হলেও লজ্জা ভেঙে গিয়েছে। আমাকে তুমি করে বলছো এখন, আর আমার হাত ধরে আছো সারাজীবন এভাবে থাকবে। আমার কথা শুনে কিছু টা লজ্জা পেয়ে আমার হাত ছেড়ে দৌড়ে চলে যায় আর বলে আমি মাহমুদার কাছে যাচ্ছি।
চলবে,,,,,
বি.দ্র: আমাকে অনেকেই কমেন্ট বক্সে, ইনবক্সে, আপু বলে ডাকছে। ছেলে হয়েও আজ মেয়ে হয়ে গেলাম 😁। ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। আগের পর্ব কমেন্টে বক্সে। কাল বলেছিলেন ছোট হয়েছে তাই আজ একটু বড় করে দিয়েছি, প্রায় ১৩০০ শব্দ।