#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_০৭
Wohad Mahmud
যদি সাবনাজ বাদে অন্য কেউ হয় তাহলে তো চোর জামাই নাম পড়ে যাবে। আর সাবনাজ দেখলেও আমাকে চোর জামাই বলে ডাকবে। হাইরে মাহমুদ কেন যে খাবার চুরি করতে আইলি। কোনো রকম ক্ষুধা কন্ট্রোল করে রাখতে পারলি না পেটুক। সকালেই তো ভালো মতো জামাই আদর পাইতি। পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি সবানাজের আব্বা মানে আমার শ্বশুর আব্বা।
আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিছুক্ষণ ধরে আমি ও তাকিয়ে আছি কিন্তু কিছু বলছে না কেন শ্বশুর আমাকে? আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চোর বলে মাইর না দিলে হয় আল্লাহ বাঁচাও। আমার দিকে আগিয়ে আসছে আমি পিছনে সরে যাচ্ছি। তারপর রান্না ঘরে এসে এদিকে ওদিকে হেঁটে আবার রুমে চায় যায়।
আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। কিছু বলল না কেন? এখন গিয়ে নিশ্চয়ই শ্বাশুড়ি কে বলবে তারপর এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে। আর বাড়ির চোর জামাই হয়ে গেলাম। আমি ভাবলাম যায় হোক কাল দেখা যাবে। আমি খাবারের প্লেট টা নিয়ে ঘরে চলে গেলাম। এখানে বসে খাওয়া যাবে না। আবার কে চলে আসে বলা যায় না। তখন আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে। রুমে খাবার নিয়ে এসে দেখি সাবনাজ বসে আছে।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি সাবনাজ ও উঠে বসে আছে। খাবারের প্লেট টা টেবিলে রেখে বললাম তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসলাম। তুমি তো রাতে ঠিক মতো খাবার খাওনি তাই নিয়ে আসলাম। আসো মুখ ধুয়ে নাও আমি হাতে করে তোমাকে খাইয়ে দিব।
সাবনাজ তখন বলে খাবার আমার জন্য নিয়ে আসলে না কী তোমার জন্য?
আমি মনে মনে ভাবলাম এই রে বুঝে গিয়েছে মনে হচ্ছে। আমি একটু ঢং ধরে বললাম ছিঃ ছিঃ এটা বলতে পারলে সাবনাজ তুমি। তোমার জন্য নিয়ে আসলাম আমি, আমার জন্য হলে তো ডাইনিং থেকে খেয়ে আসতাম। একটু এক্টিং করলাম তারপর রাগ করে ঘুমিয়ে যেতে লাগলাম।
ঠিক তখনি সাবনাজ বলে স্যরি স্যরি আমি তো মজা করে বললাম। আসলে আমারও ক্ষুধা লাগছিল অনেক। তই উঠে পড়েছি।
আমি মনে মনে হাসতে লাগলাম। যাক একটু ঢং করে কাজে লাগছে। এক ঢিলে দুই পাখি শ্বশুর আব্বা অথবা বাকি কেউ কিছু বললে আমি অত্যন্ত বলতে পারব আমার জন্য না সাবনাজের জন্য খাবার আনতে গেছিলাম। আর এখন তো সাবনাজ একা খাবে না আমাকেও খাইতে বলবে। খাইতে বললে আমি একবার না করব। কারণ প্রথম বারে খেয়ে নিলে বুঝে যাবে। শ্বশুর কে কিছু বুঝতে দিব না আর সাবনাজ ও কিছু বুঝতে পারবে না। আহ মাহমুদ আহ কত বুদ্ধি তোর মাথায়। এতো বুদ্ধি নিয়ে তুই রাতে ঘুমাস কেমন করে ভাই। পরক্ষণেই মনে পড়ল ধুর আমি তো এখন জেগে আছি বুদ্ধির জোরে ঘুমাতে পারছি না।
তারপর আমি হাত ধুয়ে এসে আর এক গ্লাস পানি নিয়ে আসলাম। সাবনাজ কে খাইয়ে দিচ্ছি। কিন্তু আমাকে খাইতে বলছে না সাবনাজ। খাইয়ে দিতে দিতে অর্ধেক খাবার শেষ কিন্তু তাও বলছে না তুমি একটু খাও।
তারপর হঠাৎ সাবনাজ বলল তুমি বাকি অর্ধেক খেয়ে নাও। আমি এমনিতেই বললাম না থাক খাচ্ছি না তুমি খাও, কিন্তু ক্ষুধা তে আমার পেটের মধ্যে মনে হচ্ছে ইঁদুর দৌড়ে।
কিন্তু এটা কি হলো একবার মানা করলাম বলে কি পরের বার খাওয়ার কথা বলবে না। আমি তো এমনিতেই প্রথম বার মানা করলাম। বাড়ির নতুন জামাই একবার মানা করলাম পরের বার তো বলা দরকার ছিল না? কিন্তু তা না করে সব খাইয়ে নিল সাবনাজ। আমার ভাগ্যে আর খাবার জুটল না। সারারাত না খেয়ে থাকলাম।জীবনটা বেদনা, কুত্তা ভাগ্য আমার, মনে হচ্ছে মুলার জু্স খেয়ে ঠাস করে পড়ি যাই। কথায় আছে না অতি বুদ্ধিমানের গলায় দড়ি। আজ ঠিক এমনটাই হয়েছে আমার সাথে।
আর কোনো উপায় না পেয়ে না খেয়ে পেটে পাথর বেঁধে ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে গেলাম। আর মনে মনে শান্তনা দিলাম মাহমুদ ঘুমিয়ে যা, ঘুমালে ক্ষুধা লাগে না। আর কোনো উপায় না পেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। তারপর দেখছি সাবনাজ ডাকছে। ঘুম থেকে উঠেন খাবার রেডি প্রায় নিচে খেতে যেতে হবে। আমি এক লাফে উঠে উঠে পড়লাম। আমার এমন ভাবে উঠতে দেখে সাবনাজ ভয় পেয়ে যায়।
সাবনাজ বলে কি হলো এমন করে উঠলে কেন? মনে হচ্ছে ভুত দেখলে।
আমি হাসতে হাসতে বললাম একটু পরিক্ষা করে দেখলাম কত জোরে উঠতে পারি। আর তোমাকে ভয় দেখালাম। কিন্তু মনে মনে বলছি খাবারের কথা শুনে মন আর শরীর স্থির রাখতে পারি নাই পেট শুধু খাবার খাবার করছে। তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে তারপর নিচে খেতে গেলাম আমি আর সাবনাজ।
নিচে গিয়ে দেখি সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। গিয়ে খাবার টেবিলে বসলাম। শ্বশুর আব্বা আমার দিকে তাকিয়ে বলে জামাই বাবার তাড়াতাড়ি ভালো করে খেতে দাও না হলে আবার পরে ক্ষুধা লেগে যেতে পারে।
আমি মনে মনে বললাম এটা কেমন শ্বশুর রাতে রান্না ঘরে খাবার খাইতে গেছিলাম বলে কি এমন করে বলতে হবে। টিটকারি মারছে। আর খাবার তো আমি খাইনি খাইছে আপনার মেয়ে সাবনাজ।
ঠিক তখনি শ্বাশুড়ি আম্মা এসে শ্বশুর আব্বাকে বলে__
কালকে রাতে তুমি ঔষধ খাওনি কেন?
শ্বশুর বলে কই খেয়েছিলাম তো।
যদি খেয়ে থাকো তাহলে যে কয়টি ঔষধ ছিল সবগুলো তো আছে।
শ্বশুর আব্বা দাঁতে কামড় মেরে বলে তাহলে মনে হয় ঔষধ খেতে মনে নেই।
হুমম এখন ঔষধ খেতে মনে তো থাকবেই না। ঔষধ খেতে যখন মনে নেই তাহলে নিশ্চয়ই রাতে ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন মনে করে সম্পূর্ণ বাড়ি হেঁটেছেন। একবার তো স্বপ্ন মনে করে ঘুমের মধ্যে গেট খুলে বাড়ি থেকেই চলে গিয়েছিলে। এখন থেকে প্রতিদিন ঔষধ খাবে। কাল ব্যস্ততার কারণে আমি নিজ হাতে ঔষধ দেয়নি বলে তুমি খাওনি। কোনো কাজ নিজে করতে পারো না।
আমি মনে মনে হাসছি আর বলছি এটা কী হলো? মানমে লাড্ডু ফোঁটা। বাহ মাহমুদ বাহ তুই তো ভাগ্যবান। তোর শ্বশুর কালকে তোরে দেখে নাই। সে তো ঘুমের মধ্যে হাঁটছিল তাহলে আর দেখবে কেমনে।আমি এতোক্ষণ হুদাই চিন্তা করছিলাম। শ্বশুর আব্বা রাতে খাবার চুরি করা দেখে ফেলছে কী একটা লজ্জার বিষয়। কিন্তু এখানে কাহিনী তো অন্যকিছু। আমার হাসি আর বন্ধ হয় না। অনেক কষ্টে খাবার টেবিলে হাসি চেপে রাখলাম। তারপর খাওয়া শেষে জোরে হেটে সোজা ছাদে চলে গেলাম। এতোক্ষণ যতগুলো হাসি চেপে ধরে রেখেছিলাম সব হাসি বাহির করে দিলাম। জোরে জোরে মন খুলে হাসতে থাকলাম।
কিন্তু আর এক বিপদ হঠাৎ পাশ ফিরে দেখি সাবনাজের ছোট ভাই সিয়াম ফোনে কথা বলছে। আর আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। নিজে মনে মনে বললাম আহ মাথা মোটা মাহমুদ আহ এক বিপদ কেটে উঠতে না উঠতেই আরেক বিপদ। এভাবে হাসতে দেখে মনে হয় আমাকে পাগল ভাবছে সিয়াম।
আমাকে দেখে সিয়াম বলে কী ব্যপারে দুলাভাই এতো হাসছেন কেন? মনে হচ্ছে অনেক খুশির বিষয়।
আমি কী বলব বুঝে পারছি না। কোনো উপায় না পেয়ে বললাম হ্যাঁ সিয়াম অনেক খুশির বিষয় আমার চাকরির প্রমোশন পেয়েছি। তাই এতো জোরে জোরে হাসছি। খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছি আমি।
তো দুলাভাই প্রমোশন তো পেয়েছেন এবার মিষ্টি মুখ করাবেন না?
হ্যাঁ অবশ্যই করাবো তো কাল দেখা করিও। এখন থাকো সিয়াম, একটু বাইরে যাব। কাল থেকে রুমের মধ্যে আছি একটু বাইরে থেকে ফ্রেশ হাওয়া খেয়ে আসি।
চলেন আমিও যাই আপনার সাথে। আপনি তো সবকিছু চিনেন না। আমি চিনিয়ে দিব। অনেক জায়গায় ঘুরিয়ে নিয়ে আসব। ভালো লাগবে দুলাভাই আপনার।
আমি হেসে বললাম না ভাই থাক তোমার কষ্ট করতে হবে না।আমি বেশি দূরে যাব না। এমনিতেই নিচে গিয়ে একটু হেঁটে আবার চলে আসব। তারপর কোনো রকম ছাদ থেকে রুমে আসলাম।
কালকে মায়ের ফোনে কল দিলাম কিন্তু মা ফোন রিসিভ করল না। পরে ফোন ব্যাক করল না। বুঝছি না মা আমার সাথে এমন করছে কেন?
মায়ের কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখি আমার ছোট বোন মাহমুদার কল,,,,
#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_০৮
Wohad Mahmud
কালকে মায়ের ফোনে কল দিলাম কিন্তু মা ফোন রিসিভ করল না। পরে ফোন ব্যাক করল না। বুঝছি না, মা আমার সাথে এমন করছে কেন? আমি না হয় মানলাম যখন ফোন দিয়েছিলাম ফোনের কাছে ছিল না কিন্তু পরে তো দেখেছে তখন তো ফোন ব্যাক করতে পারে।
সব সমস্যার মূল হলো আমার বড় ভাবি। আমাকে আর সাবনাজ কে মায়ের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। মায়ের চোখে খারাপ বানানোর চেষ্টা করছে। কতটা নিচু মনের মানুষ হলে এমনটা করতে পারে। আমি ভেবে অবাক হয়ে যাই এমনটা কীভাবে করতে পারে একটা মেয়ে। লজ্জা শরম বলতে কিছু নেই।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখি আমার ছোট বোন মাহমুদার কল এসেছে। আমি তাড়াতাড়ি করে রিসিভ করলাম। ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে বলে এতক্ষণ কোথায় ছিলি তুই। সেই কখন থেকে ফোন দিয়ে যাচ্ছি তোকে, কিন্তু ফোন রিসিভ করিস না কেন?
আমি বললাম ফোনের কাছে আমি ছিলাম না বোন। একটু খাওয়া দাওয়া করে ছাদে গিয়েছিলাম তখন মনে হয় তুই ফোন দিয়েছিস। কী হয়েছে এবার বল অনেক জরুরী মনে হচ্ছে।
বাবা এক্সিডেন্ট করছে। হাতে পায়ে অনেক ব্যথা পেয়েছে। পায়ের হাড় সরে গিয়েছে মনে হয়। তুই কালকে চলে আই। এসে বাবাকে দেখে যা। আর আসার সময় সাবনাজ ভাবিকে নিয়ে আসবি।
আমি বললাম না থাক। মাত্র দুই দিন এখানে এসেছি। আমি কাল না, আজকে বাসায় চলে আসছি। সাবনাজ কে নিয়ে যাচ্ছি না। আমি কয়েকদিন পরে এসে আবার সাবনাজ কে নিয়ে যাব।
মাহমুদা বলে তুই পাগল আছিস এখনো। ভাবি কে নিয়ে আই।তুই তো জানিস বড় ভাবি কেমন মানুষ। তুই যদি ছোট ভাবি কে সাথে না নিয়ে আসিস তাহলে আবার বড় ভাবি মায়ের কাছে গিয়ে তাল লাগাবে। তার থেকে ভালো হয় ভাবিকে সাথে করে নিয়ে আই।
আমি বললাম এখন কী আবার বড় ভাবির ভয়ে ভয়ে চলতে হবে আমাকে। কাউকে দেখে ভয় পাই না আমি। আচ্ছা দাঁড়া ঠিক আছে আমি সাবনাজ কে গিয়ে বলছি যদি আসতে চায় তাহলে আজ দুপুরের পরে আমি সাথে করে নিয়ে আসব। না আসলে আমি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে নিয়ে আসতে পারব না।
আচ্ছা ঠিক আছে ভাবিকে বলে দেখ। বাবার অসুস্থতার কথা শুনলে ভাবি না করবে না। দেখবি তোর সাথেই আজকে চলে আসবে বাবা কে দেখতে।
আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই। যদি আসে তাহলে নিয়ে আসব। নতুন নতুন বুঝতেই তো পারছিস জোর করতে পারছি না। সব সময় সবকিছুর সিদ্ধান্ত একা নিতে গেলে হয় না। অপর পক্ষের ও অনুমতি নিতে হয়। আচ্ছা তাহলে থাক আজ বিকালে বাসায় আসছি। এটা বলেই ফোন কেটে দিলাম। তারপর কল হিস্ট্রি দেখি দশ বার ফোন দিয়েছে আগে। আমি তখন খুব সম্ভবত খাওয়া দাওয়া করছিলাম। সাবনাজ ও রুমে ছিল না। নিচে ছিল খাওয়া দাওয়া করার জন্য।
তারপর রুম থেকে নিচে নেমে গেলাম। রুমের মধ্যে আর ভালো লাগছে না তাই ফ্রেশ হাওয়া খেতে গেলাম। সাবনাজ কে না বলে বেরিয়ে গেলাম। হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূর চলে আসলাম। তারপর মাহমুদার ফোনে একশত টাকা ফ্লাক্সিলোড করে দিলাম। আমি ছাড়া ওর অভাব পূরণ করার মতো কেউ নেই। বড় ভাই তো খোঁজ নিয়েও দেখে না বোনের কিছু লাগবে কী। সব কিছু শালির পিছনে খরচ করতে হয়। যে জল্লাদ একট বউ না করেও উপায় নেই।
কিছুক্ষণ পরে সাবনাজের ফোন আসে। তারপর ফোন রিসিভ করলাম।
হ্যালো মাহমুদ, তুমি কোথায় আছো সারা বাড়িতে তোমাকে খুঁজে খুঁজে পেলাম।
এইতো আমি একটু বাইরে আছি। কেন কী হয়েছে! মনে হচ্ছে খুব জরুরি।
হ্যাঁ অনেক জরুরী তাড়াতাড়ি বাসায় আসো। তারপর বাড়ির পথে হাঁটা দিলাম। কিন্তু হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে এসেছি। হাঁটতে হাঁটতে গেলে অন্তত আধা ঘন্টা তো লাগবেই কম হলেও। তাই একটা রিকশা নিয়ে শ্বশুর বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
বাসায় এসে দেখি অনেক আয়োজন চলছে। রুম সাজানো হচ্ছে। আমি সাবনাজ কে ডেকে বললাম। বাসায় এতো আয়োজন কিসের? বাসায় নতুন জামাই এসেছে বলে কি এতো বড় আয়োজন করতে হবে। ঘর সাজানোর কী দরকার ছিল এভাবে।
সাবনাজ বলল আরে তোমার জন্য না। তোমার জন্য এসব করলে তো আগেই করত।
আমি মনে মনে বললাম হাইরে, আমি তো নিজেকে অপমান বোধ করছি এখন। কী দরকার ছিল বলার যে এসব আমার জন্য করছে। না বললেই তো ভালো হতো। সরাসরি বলে দিতাম এসব কিসের জন্য করছে। তারপর আমি বললাম এসব কিসের জন্য?
সবনাজ বলল আজ আমার ভাবির মেয়ের জন্মদিন। সেই জন্যই এতো আয়োজন। আজ ৫ম জন্মবার্ষিকী।
আমি মনে মনে ভাবলাম সাবনাজ কে বলব কী আজ আমাদের যেতে হবে বাবা অসুস্থ। না কী বলব না। যদী বলি তাহলে আমাকে মানা করতে পারবে না। কিন্তু বাসায় এতো বড় আয়োজন এই বিপদের সময় আমি আর ওকে নিয়ে যেতে চাচ্ছি না। আমি ভাবলাম তাও একবার অন্যভাবে বলে দেখি যেতে পারবে কী! এই আয়োজন আমাদের বাড়িতে যেতে পারে কী। আমি ঘুরিয়ে বললাম। আরে এসব আয়োজন বাদ দাও তো চলো আজ রাতে আমরা দুজন অন্য কোথাও থেকে ঘুরে আসি।
সাবনাজ বলল পাগল হয়ছো তুমি মাহমুদ। ভাবির মেয়ে কান্না করবে আমি না থাকলে। তোমাদের বাড়িতে ছিলাম তাই অনেক কান্না করেছিল। আমাকে ছাড়া একদম থাকতে চায় না। সব আয়োজন আমাকে নিজে হাতে করতে হবে। আজ না প্লিজ অন্য কোনদিন যাব। আজ আমি কোথাও যেতে পারব না এসব রেখে।
আমি মনে মনে ভাবলাম থাক তাহলে আর জোর করছি না। আমার কথা ফেলতে পারবে না। কিন্তু এভাবে আমি তার মনের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারি না আমি। এখন যদি বাবার এক্সিডেন্টের কথা বলি তাহলে আমার সাথে চলে যাবে এই আয়োজন ফেলে, তার মন খারাপ হবে এখান থেকে চলে গেলে আর সাবনাজের বোনের মেয়েও কান্না করবে। সব মিলিয়ে এতো সুন্দর একটা আয়োজন নষ্ট হয়ে যাবে। আবার যদি সাবনাজ কে না বলি তাহলে পরে জানতে পারলে রাগ করবে আমার উপর। আবার না নিয়ে গেলে ওইদিকে ভাবি আছে মায়ের সাথে গিয়ে কাটি মারবে। এমনিতেই আমার আর সাবনাজের উপরে রেগে আছে মা।
তবে আমার কাছে যেটা সঠিক মনে হবে আমি সেটাই করব। সঠিক ভুল বিচারের সময়, কে বউ, কে মা আর কে ভাবি সেটা দেখতে গেলে চলবে না।
আমি সবকিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললাম। যা হয় হবেই আমি একা যাব। সাবনাজ কে কিছু বলব না। আমি তাকে এসব সমস্যার মধ্যে নিতে চাই না। আর বাকি রইলো মা আর ভাবির কথা। তারা যা মনে করে করুক যা বলে বলুক আমি একাই বাড়িতে যাব আজকে।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে রুমে এসে সাবনাজ কে বললাম আমাকে আজ একটু বাড়তি যেতে হবে। পরশুদিন আবার চলে আসব।
সাবনাজ বলে কী বলছ মাহমুদ তুমি এসব। মাত্র দুই, তিন দিন হলো আমরা এখানে এসেছি। আর আজকে তুমি চলে যাবে। এক সপ্তাহ থেকে তো যাবে। তারপর এখানে তেমন আসবে না তুমি, আমারো আসা হবে না। তারপর নিজের সংসারে ব্যস্ত থাকব।
আমি সাবনাজের গালে হাত দিয়ে বললাম চিন্তা করো না। তোমার স্বামী হারিয়ে যাচ্ছে না। পরশুদিন আবার তোমার স্বামী তোমার কাছে ঠিক মতো ফিরে আসবে। তুমি থাকো আমি যাব আর আসব।
সাবনাজ বলল আমি তোমার সাথে যায়। আমি বললাম না না যেতে হবে না। তুমি এখানে জন্মদিন উদযাপন করো। তোমাকে যেতে হবে না। বাবা একটু জরুরি ডেকেছে। তারপর তোমার স্বামী তোমার বুকে ফিরে আসবে। সাবনাজ কে অনেক বুঝিয়ে ওর পরিবার কে বুঝিয়ে এক রকম মন খারাপ করে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম আমি।
দুই ঘন্টা জার্নির পরে আমি বাড়িতে পৌঁছে কলিং বেল বাজালাম। কিছুক্ষণ পরে দরজা খুলে দেয়। দরজা টা আর কেউ না ভাবি খুলে দিচ্ছে। বুঝলাম না আজ অন্যরকম কেন হলো। ভাবি আজ প্রায় দুই বছর আমাদের এখানে আছে কোন দিন দেখলাম না গেট খুলে দিতে আজ হঠাৎ গেট খুলে দিচ্ছে বুঝলাম না। দরজায় দাঁড়িয়ে আমার পিছনে কি যেন খুঁজছে ট্যারা চোখে। আমি বললাম,,,,
চলবে,,,,,