#নিশ্বাস
#পর্ব_১৫
#লেখক_Mohammad_Asad
ছাদিক এবং নিশাত দুজনে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ছাদিক ভেবেছিলো আম্মু হয়তো একটু রাগ করে বলেছিলো
“তুই যদি নিশাতের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাস। তোকে কোনোদিন বাড়িতে ঢুকতে দিবো না।””ছাদিক বুঝতে পারেনি আম্মু সত্যি সত্যি এমনটা করবে।
.
.
ছাদিক তার বন্ধুর বাড়িতে উঠে, কালকে আবার একটা বাসা ভাড়া ঠিক করতে হবে। কারণ আমার বন্ধু যতই ভালো হকনা কেন তার একটা পরিবার আছে, আমার জন্য তাদের সমস্যা হতেই পারে।
আজকে রাতটা শুধু বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে ছাদিক। এইসময় বন্ধু ছারা কার বা কাছে যাবে ছাদিক নিশাতকে নিয়ে।
রাতের খাবার খেয়ে গেস্ট রুমে সুয়ে আছে ছাদিক, নিশাত জানালার পার্শে দাঁড়িয়ে আছে।
-নিশাত,
-“নিশ্চুপ”
-জানালার পার্শে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
-শহরটা দেখছি,
-আমার পাগলীটা,
-হুম
-হইছে এবার এসো, ঘুমিয়ে পরবে। অনেক রাত হয়েছে তো।
“নিশাত জানালার পার্শে দাঁড়িয়ে আছে জানালার গ্রিল গুলো ধরে। কি যেন ভাবছে নিশাত। ছাদিক বিছানা থেকে উঠে, নিশাতের কাছে যায়। নিশাতের পার্শে দাঁড়িয়ে কোমড়ে হাত দেয়, পিছন থেকে জরীয়ে ধরে আল্ত ছোঁয়ায়।
-এই কি করছেনটা কি?
-কিছু না।
-এভাবে জরীয়ে ধরলেন কেন?
-কেন আমার টুকটুকে বউটাকে জরীয়ে ধরতে পারবো না নাকি?
-নাহ্ তা না।
-তাহলে কি হুম।
“নিশাত ছাদিকের দিকে তাকিয়ে মুখটা ছোট করে বলে”
-আমার জন্য আপনার এমন হয়েছে!
-কি হয়েছে টুকটুকে পাখি।
-আমার জন্য আম্মা আপনাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
“ছাদিক মিস্টি হেঁসে নিশাতের চোখের দিকে তাকায়”
-পাগলীটা, তোমার জন্য এইসব হতে যাবে কেন? আম্মু একটু বুড়ো হচ্ছে তাই এমন করছে।
-আগের মতো সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে তাই না বলেন!
-হুম সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, আগের মতোন।
“নিশাত ছাদিকের দিকে তাকিয়ে মিস্টি হেঁসে বলে”
-আপনি না কেমন যেন!
-কেমন আমি?
-আপনার মাঝে একটুও চিন্তার ছাপ নেই।
-বাহরে, আমি কেন চিন্তা করতে যাবো? আমার বউটা তো আছে।
-ইসস
-কি ইসস হুম,
-কিছু না আপনি একটা পাগল। সবসময় এভাবে হ্যাঁসি খুশি থাকেন কেমন করে?
ছাদিক নিশাতের নাকটা টেনে দিয়ে বলে,
-এই তুমি যেমন একটুতেই কান্না করতে পারো। তেমনি আমি সবসময় হ্যাঁশিখুশি থাকতে পচ্ছন্দ করি। তাছাড়া আমি নিশাতের কাছে কি গোমড়া মুখ করে থাকতে পারি বলো।
-হিহিহিহি
-আমি যদি গোমড়া মুখ করে তোমার সঙ্গে কথা বলি। তাহলে তুমি বলবে আমার জামাইটা গোমড়া মুখো। আমার জামাইটা হ্যাঁসতেই যানে না।
-হিহিহিহি আপনি না পারেনও বটে।
-কি পারি আমি?
-মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতে।
-তাই
-হুম তাই,
-তুমি যানো আমি মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে অনেক মেয়েকে পটাতে পারি। অবশ্য একটা মেয়েকে পটিয়েছি।
-এইইই মানে?
-আরে তুমি রেগে যাচ্ছো কেন?
-রেগে যাচ্ছি মানে, আপনার ধান্দা তো অনেক খারাপ দেখছি।
-ইসস রে আমার বউটা দেখছি ভিষণ রেগে গেছে।
নিশাত রেগে বড় বড় চোখে ছাদিকের দিকে তাকিয়ে আছে। ছাদিক মিষ্টি হেঁসে বলে।
-আরে এতো রেগে যাচ্ছো কেন? যেই মেয়েটাকে পটিয়েছি সেই মেয়েটি হচ্ছে নিশাত।
-মানে,
-হ্যাঁ তুমি,
-আপনি না খুব খারাপ।
-ইসস তাই।
-হুম তাই, আপনি অনেক খারাপ, অনেক অনেক খারাপ।
-হইছে হইছে আমি যানি, আমি অনেক অনেক অনেক খারাপ।
-এইই স্যরি,
-স্যরি কেন?
-আপনি অনেক ভালো একটা ছেলে। এমনি বললাম খারাপ।
-ইসস আমার বউটা, এবার চলো ঘুমতে হবে। রাত ১২;৪৫ বেজেছে।
-উঁহু না, আমার ঘুম আসছে না।
-তাহলে কি করবে?
-আপনার সঙ্গে এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো।
-তাই
-হুঁ
-আমার অনেক ঘুম পেয়েছে নিশাত তুমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকো।
-এই না,
-কেন?
-আপনিও আমার সঙ্গে থাকেন।
-এভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে চলো তোমাকে একটু……।
-এইই না,
-কি না হুম,
-আপনি সত্যি অনেক খারাপ।
-এখানে খারাপের কি আছে শুনি।
-আমার চিন্তায় মাথা ধরে এসেছে, আর আপনি পরে আছেন দুষ্টুমি নিয়ে।
-তাই,
-জ্বি হ্যাঁ তাই, কতটা চিন্তা হচ্ছে আমার, যানেন আপনি?
“ছাদিক মুচকি হেঁসে বলে,
-কতটা চিন্তা হচ্ছে শুনি।
-এই আপনি হ্যাঁসলেন কেন?
-কই কখন হ্যাঁসলাম।
-আম্মা আপনাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমি যানি আম্মা অনেক কষ্ট পেয়েছে।
-হুঁ
-শুধু শুধু আমাকে নিয়ে গেলেন বাইরে।
-আবার শুরু করছো,
-কি শুরু করলাম আবার?
-তোমার এই ঘেন ঘেন আমার ভালো লাগে না। আম্মু আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে এতে আমার একটুও কষ্ট হচ্ছে না। তুমি এইসব ফালতু কথাবার্তা বলো কেন বলো তো?
-আমি কখন ফালতু কথা বললাম।
-তুমি বারবার বলছো কেন? যে শুধু শুধু বাইরে নিয়ে গেলেন আপনি আমাকে। আচ্ছা তোমাকে ওইসময় বাড়ির বাইরে না নিয়ে গেলে কি হতো যানো তুমি?
-“নিশ্চুপ”
-আমার বিয়ে ঠিক করতো আম্মু অন্য একটা মেয়ের সঙ্গে। আর বিয়েটা বাদ্ধ হয়ে করতে হতো আমাকে। তখন তিলে তিলে মরতে তুমি।
ছাদিকের কথাগুলো শুনে নিশাত কান্না করে দেয়।
-এই দেখছো আমার বউটা কান্না করে দিয়েছে।
-হুঁ
ছাদিক নিশাতের চোখের জলগুলো মুছে, পাজোকলা করে কোলে তুলে নেয়। বিছানায় সুয়ে দিয়ে বলে ছাদিক,
-অনেক রাত হয়ে গেছে। এবার তুমি চুপটি করে সুয়ে পরো। কালকে আবার বাসা ভাড়া করতে হবে।
-এইই কেন?
-তাছাড়া থাকবে কোথায়?
-কেন আমাদের বাড়িতে!
-আমাদের বাড়িতে গেলে ঢুকতে দিবে আম্মু, মনে হয় তোমার?
-“নিশ্চুপ”
-যেই পযন্তু আম্মু নিজের ভুল বুঝতে না পারবে সে পযন্তু আমরা বাড়িতে ফিরবো না।
-এটা কি ঠিক হচ্ছে।
ছাদিক রুমের লাইটটা ওফ করে দেয়, ড্রিম লাইটটা জালিয়ে দিয়ে নিশাতের কপালে ছোট্ট করে চুমু এঁকিয়ে দিয়ে বলে।
-বেশি চিন্তা করো না। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, শুধু সময়ের অপেক্ষা।
-হুম
-তোমার ঘুম আসছে না তাই না।
-হুঁ
-আমার বুকে মাথা দেও ঠিক ঘুম চলে আসবে।
-ভালোবাসি,
-হুম অনেক ভালোবাসি।
নিশাত ছাদিকের বুকের মাঝখানে লুকিয়ে পরে। ছাদিক মিষ্টি হেঁসে মেয়েটাকে জরীয়ে ধরে দুই হাত দিয়ে।
“চলবে?”