#নূর💔
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-31-32
#31
কটকটে অন্ধকারে বসে আছে আসলাম। দুই পাশে মেশিনগান নিয়ে বডিগার্ডরা তাকে ঘিরে রেখেছে।
আসলাম ভালো খবর শোনার জন্য অপেক্ষা করে আছে।আজকের জয়ের জন্য অপেক্ষায় ছিলো আসলাম।
আজ সেদিন হতে পারে,বিজয়ের দিন।
মোম শুধু তার।
.
অনেক টা পথ হেঁটেছে ওরা। ওরা বললে ভুল হবে। শুধু মেহেরাব। মোম কোলেই ছিলো। মেহেরাবের গলায় দুই হাত ঝুলিয়ে ধরে রেখেছে বাঁদরের মতো।
কনকনে হাওয়া বইছে। সেই সাথে কেঁপে কেঁপে উঠেছে মেহেরাবের বুক।
মোমের হৃদপিন্ডের স্পন্দন ক্রমশ বাড়ছে। যেন বুক থেকে বের হয়ে যাবে।
চাঁদের আলোয় মেহেরাবের মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। চিকচিক করছে মেহেরাবের নিষ্পাপ মুখখানি।
-কি দেখছো?
মোম চোখ নামিয়ে ফেললো ধরা পড়ে।
মেহেরাব মিটিমিটি হাসছে।
চাঁদের আলোয় পুলকিত হচ্ছে সেই হাসি। মোমের সাধ্য নেই সেই হাসিটা উপেক্ষা করার। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো শুধু ।
আচ্ছা এই বন, অন্ধকার রাস্তা, মায়াবী চাঁদের জোছনা, কনকনে হাওয়া, মনে অবধারিত ভয় আতঙ্ক নিয়ে মেহেরাবের কোলে করে পথ চলাটা সারাজীবন যদি চলতো! তাহলে কেমন হতো?
-আচ্ছা খুব কষ্ট হচ্ছে ?
-হোয়াই?
-এতোটা পথ কোলে করে নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে বিরামহীন ভাবে।
মেহেরাব প্রতি উওরে হাসলো।
-হাসির কি হলো?
-হাসার মতো কথা তাই হাসলাম।
-আপনি কি ক্লান্ত নন?
-হ্যাঁ ক্লান্ত।
মেহেরাব মোমের চোখে চোখ রেখে বলল- আমি ক্লান্ত তোমার একটু ভালোবাসার দৃষ্টির জন্য । আমি ক্লান্ত তোমার মনে একটু নিজের জন্য জায়গা করে নেওয়ার অপেক্ষায়।
মোমের বুকের হৃদপিন্ড আরও বাড়তে শুরু করেছে।
মেহেরাব একটু দাঁড়িয়ে পড়লো।
মোমের চোখের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল- সকল ক্লান্ত চলে যাবে তুমি যদি আমাকে শক্ত করে জরিয়ে চুমু দাও।
মোমের গাল নিমিষেই লাল হয়ে উঠলো। চোখে স্পষ্ট লজ্জার ছাপ।
মেহেরাব মিটিমিটি হেসে হাটা শুরু করলো।
না মোম আর থাকতে পাচ্ছেনা এভাবে ।
তার হৃদপিন্ড বের হয়ে যাবে এখুনি যদি কোল থেকে না নামে।
-আমি নামব।
প্লিজ নামিয়ে দিন।
প্লিজ লিভ মি।
মোম বলতে বলতে হালকা আর্তনাদ করে উঠলো।
যেকোনো সময় কাঁদতে পারে।
মেহেরাব নামিয়ে দিলো নিতান্ত অনিচ্ছায় ।
-অনিচ্ছায় নামিয়ে দিলাম। তবুও ফর গড সেক কেঁদে না।
কাঁদার মতো কিছু হয়নি। টেক ইট ইজি।
কাছে এসো চোখের পানি মুছে দিই।
মেহেরাব হাতের আঙুল দিয়ে মোমের চোখের পানি মুছে দিলো।
মোমের তাতে আরও বেশি কান্না পেলো। কিছু কিছু কান্না একান্ত হয়। কাউকে দেখানো যায়না। মেহেরাব কে চোখের পানি দেখাতে চাচ্ছিল না মোম।
মেহেরাবের কাছ থেকে কিছুই লুকানো যায়না। মোম কিছুই লুকাতে পারেনা তার কাছ থেকে। মেহেরাবের মনে মোমের জন্য যে জায়গায় তৈরি হচ্ছে সেটা নিশ্চিত মেহেরাব মোমের আগেই জেনেছে৷
মোম মেহেরাবের আগে আগে হাঁটা শুরু করলো। তার খুব কান্না পাচ্ছে । একান্তে কিছুটা কান্না করলে হালকা হওয়া যেত।
মেহেরাব যেভাবে সেঁটে রয়েছে তাতে মোমের হালকা হওয়ার উপায় নেই।
-কিসের আওয়াজ?
-হুঁশ। কথা বলোনা।
মোম চুপচাপ দাড়িয়ে আছে মেহেরাবের হাত ধরে।পাশের ঝোপে আওয়াজ হচ্ছে। নড়েচড়ে এদিকে কিছু একটা এগিয়ে আসছে।
-কোন জন্তু জানোয়ার হতে পারে।
-মেবি।
চোখ বন্ধ করে থাক। আমি আছি।
কোন ভয় নেই ।
মোমের হাত শক্ত করে ধরে রাখলো মেহেরাব। মোমও যতটা পারে ততটা শক্ত করে মেহেরাবকে জরিয়ে ধরলো পেছন থেকে।
মেহেরাবের পিঠে মাথা গুজে চোখ বন্ধ করে রইলো।
মেহেরাব ফিসফিস করে বলল-ভালো করে শোন সুইটহার্ট।
সামনে কতটা বিপদ জানিনা। আমি একা থাকলে সামলে নিতে পারতাম। কিন্তু তুমি থাকাতে আমাকে সবকিছু বিচার বিবেচনা করে করতে হবে।
আমার যা কিছুই হোক তুমি স্থান ত্যাগ করবে আমি যখন বলব। নিরাপদ জায়গায় চলে যাবে, আমি তোমাকে নিরাপদে পৌঁছানোর রাস্তা করে দেব।
বুঝতে পেরেছো?
-আমি যাব না।
-জানতাম। তুমি তর্ক করতে প্রস্তুত থাক অলওয়েজ ।
-আর আপনি অলওয়েজ নিজের ক্ষতি করার চেষ্টায় থাকেন।
-এটা তর্কের সময় নয় সুইটহার্ট।
আমার কথা শোন।
আমার কিছুই হবে না। তুমি নিরাপদ আছো এটাই আমার বেঁচে থাকার শক্তি জোগাবে।
-কিন্তু?
-নো। নো এক্সকিউজ ।
তোমার স্বামীর আদেশ।
মোম কথা বাড়ালো না। হতাশা চাপা রেখে মাথা নাড়ালো।
সব সময় স্বামীর আদেশ বলে মোম কে চুপ করানো হয়। আচ্ছা স্ত্রীর আদেশ বলে কি কিছু নেই? আদেশ যদি না থাকে তবে নির্দেশ আছে তো।
প্রকৃতি থমথমে। মোম আল্লাহর নাম নিচ্ছে বার বার। বিপদ থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করছে।
জোড়ালো ভাবে আওয়াজ গুলো শোনা যাচ্ছে। আওয়াজ গুলো খুব কাছে এসে পড়েছে। মেহেরাব একটা ছুরি ব্যাগ থেকে বের করে হাতে লুকালো। মোম কে নিজের পেছনে আড়াল করে দৃষ্টি স্থির করলো।মহান আল্লাহর নাম নিয়ে সমস্ত ইন্দ্রিয় সজাগ রাখলো। তার সাথে আছে তার ভালোবাসা । একসাথে জন্মমৃত্যুর ওয়াদা তাদের। একসাথে বাঁচার ওয়াদা।
ভালোবাসার শক্তির কাছে সকল শক্তি পরাজিত।
আসলাম নিজেই খুঁজতে বের হয়েছে ওদের। মেহেরাব কে বাঘে আনা সম্ভব না খুব একটা। আসলাম কে কাজ টা করতে হবে। মেহেরাব আসলামের কলিজায় হাত দিয়েছে। মেহেরাব কে সে যথেষ্ট বুঝিয়ে কিন্তু আর নয়। মেহেরাব বেঁচে থাকলে মোম কখনো ওর হবেনা। কাজেই মেহেরাব কে উপরে পাঠাতে হবে।
আসলামের সামনে ভয়ংকর একটা প্রাণী আসতেই সে স্যুট করে মাথার খুলি উড়িয়ে দিলো প্রাণীটার।
প্রাণীটার রক্তে আসলামের শরীর ভিজে গেলো। আসলাম মোমের কথা মনে করে তৃপ্তির হাসি দিলো।
বনের মধ্যে হাসিটা জোড়ালো শোনালো এবং খুব হিংস্র ।
মেহেরাব মোম কে বুঝিয়েছে প্রাণপণে ।
মোম কিছুতেই বুঝতে পাচ্ছেনা।
মোমের ধারণা মানুষ মাত্রই ভালো।
আল্লাহ তায়ালা তাদের সাহায্যের জন্য সামনে থাকা মানুষ গুলো কে পাঠিয়েছেন।
-সবাই কে সন্দেহ করা বন্ধ করুন।
সবাই অতোটা খারাপ না। আমরা উনাদের ক্ষতি করিনি তো আমাদের ক্ষতি কেন করবে? সবাই কে সন্দেহ করা আপনার একটা রোগ।
শিগগিরই ডক্টর দেখান।
-সুইটহার্ট । ভয়ংকর একটা বিপদে পড়তে যাচ্ছি আমরা। তুমি নিজে ডেকে এনোছো বিপদ।
এখনো সময় আছে চলো আমরা লোক গুলোর চোখ ফাঁকি দিয়ে দৌড়ে লুকিয়ে যাই।
-আপনি দৌড়ান। আমি উনাদের সাথে যাব এবং এই ভয়াবহ বন থেকে বের হবো।
-আমি আমার জন্য ভয়ে দৌড়াবো?
আমি তোমার কথা ভাবছি। আর তুমি বুঝতেই চেষ্টা করছো না।
লোক গুলো ক্ষতি করবে সুযোগ বুঝে।
এই বনে ডাকাতের উৎপাত রয়েছে ।
রাতের অন্ধকারে এই বনের হিংস্র প্রাণীদের সাথে ভয়ংকর লোকেরাও ঘুরে বেড়ায়।
মোম মেহেরাব কে উপেক্ষা করে লোক গুলোর কাছে গেলো সাহায্য চাইতে।
লোক গুলো রাজি হয়ে গেলো।
প্রায় ১৫ জন লোক ঝোপঝাড় থেকে বের হয়েছিল। তারাও নাকি ট্যুরে এসেছিল। দলের একজন বনের গভীরে এসে পড়েছিল। তাকে খুঁজে বের করতে করতে রাত নেমে আসে ধরনীর বুকে।
সবচেয়ে বড় কথা তারা অন্ধকারেও রাস্তা চেনে। মোমদের সাহায্য করতে রাজি হয়েছে অনায়াসে ।
সারিবদ্ধ ভাবে সবাই হাঁটছে । হাজার পাওয়ারের হ্যাজাক লাইট জ্বলছে। সবার ছায়া পড়ছে মাঠিতে। অন্ধকারে আলো ছায়ায় ছায়া গুলো প্রকট হয়ে উঠেছে। মাঝখানে মোম আর মেহেরাব।
বনের গভীর থেকে হিংস্র প্রাণীরা গর্জন করছে। বেশ রোমাঞ্চকর একটা পরিবেশ।
মোম মোটামুটি নিশ্চিন্ত মনে হাঁটছে।
মেহেরাবের মনে অজানা আতঙ্ক । সে রাস্তা না চিনলেও মনে হচ্ছে তারা বনের আরও গভীরে পৌঁছাচ্ছে।
মোমের হাসিমাখা মুখখানি দেখে মেহেরাব নিজেকে শান্ত রেখেছে।
মোম তার কথা না শুনে খুব বড় ভুল করেছে।
মেহেরাব এতো গুলো রাইফেলদারী লোকদের উপেক্ষা করে মোম কে জোর করে নিয়ে যেতে পারেনা। এতে সরাসরি গন্ডগোল হতে পারে।
আসলামের বাহিনী বনের ভেতর প্রকান্ড আলোর রশ্মি দেখে দলবল নিয়ে অনুসরণ করতে লাগলো।
মেহেরাব মোমের দিকে লক্ষ্য রাখছে। মোম একটা গাছের গুড়িতে বসে রয়েছে । লোক গুলো বনের কাঠ দিয়ে আগুন ধরিয়ে বনের মোরগ জ্বলসাচ্ছে।
-তোমার কি ক্ষিদে পেয়েছে?
-না। আমি তো জীব না। জড় পদার্থ ।
জড় পদার্থের নিশ্চয় ক্ষিদে লাগেনা?
মেহেরাব মোম কে তখন ধমকিয়ে ছিল, মোম কে সাপোর্ট করেনি তাই এমন কাটাকাটা কথা বলছে।
-যাইহোক,অনেকদিন পর তোমার কাটাকাটা কথা শোনার ভাগ্য হলো।
মেহেরাব খানিকটা মোরগের জ্বলসানোর গোশত ছুরি দিয়ে কেটে গাছের প্রকান্ড পাতায় পরিবেশন করলো পাশে থাকা ঝর্ণার পানি দিয়ে।
মোম গপগপ করে খাচ্ছে।
-ধীরে ধীরে খাও।
-খুব ক্ষিদে পেয়েছে। মোরগের রান্নাটা খুব মজা হয়েছে ।
আপনি খাচ্ছেন না কেন?
-তুমি খাও।
মেহেরাব আরও জ্বলসানো মোরগের গোশত ছুরি দিয়ে কেটে মোম কে দিলো।
নিজে কিছুই খাচ্ছে না। অজানা আতঙ্কে গলা দিয়ে তার খাবার নামছে না।
মোম খাওয়া শেষে মেহেরাবের কোলে নিশ্চিন্তে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।
মোমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে মেহেরাব একটি হাদিস বয়ান করলো-
চারটি কাজ করতে পারলে নারী জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
================
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন, ‘নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করে, রমাযানের সিয়াম পালন করে, লজ্জাস্থানের হিফাযত করে ও স্বামীর আনুগত্য করে, তখন সে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে’। (হিলইয়া, মিশকাতঃ ৩২৫৪, হাদীস হাসান)
অত্র হাদীসে মহিলাদের জান্নাতে যাওয়ার চারটি গুণ বর্ণিত হয়েছে। যে মহিলার মধ্যে উক্ত চারটি গুণ বিদ্যমান থাকবে সে তার ইচ্ছানুযায়ী জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। গুণগুলি হচ্ছে-
১. রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সুন্নাত অনুযায়ী দিনে-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করা।
২. রমাযান মাসের সিয়াম পালন করা।
৩. লজ্জাস্থানের হিফাযত করা। অর্থাৎ অবৈধ যৌন মিলনে লিপ্ত না হওয়া।
৪. স্বামীর আনুগত্য করা। অর্থাৎ স্বামীর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা এবং স্বামী অসন্তুষ্ট হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা। স্বামীর সন্তুষ্টিতে তুষ্ট থাকা। উক্ত গুণাবলী অর্জনের জন্য সচেষ্ট থাকা প্রত্যেক মু’মিনা মহিলার জন্য জরুরী।
বইঃ আদর্শ নারী
লেখকঃ শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ।
মোম কোল থেকে মাথা সরিয়ে কিছুটা অনুতপ্ত হয়ে তাকালো মেহেরাবের দিকে। মেহেরাব তার স্বামী অথচ কখনো সে স্বামীর কথা শুনে না, তাকে মেনে চলেনা।
মেহেরাব মোমের অনুতপ্ত বুঝতে পেরে মোম কে আশ্বস্ত করলো।
-তুমি একদিন ঠিক বুঝতে পারবে তোমার আসল ভালোবাসা কে। সেদিন থেকে তোমার স্বামীর কথা শুনে চলবে। আমি জানি।
মেহেরাব মোমের মাথা আবার নিজের কোলে রেখে গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । মশা তাড়াচ্ছে। বনে মাছি টাইপ মশা ভরপুর।
ওদের থেকে খানিকটা দূরে ট্যুরের লোকেরা জ্বলসানো মোরগ খাচ্ছে।
আর মেহেরাবদের দেখছে।
মেহেরাব যতটা পারে ততটা মোম কে সবার নজর থেকে আড়াল করে রাখলো। মোম মগ্ন হয়ে ঘুমুচ্ছো। সে জানে তাকে শক্ত বাহুদ্বয় জরিয়ে রেখেছে নিজের সাথে । রক্ষা করছে তাকে বাহুদ্বয় ।
মেহেরাবের চোখ লেগে এসেছে।
রাত গভীর । সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাতটা বনে কাটিয়ে ভোরে রওনা হবে। রাতের অন্ধকারে হাঁটা বিপদ।
হঠাৎ বিকট আওয়াজে মেহেরাবের ঘুম ভাঙলো।
মনে হচ্ছে যুদ্ধ বেঁধেছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। চারদিকে অসংখ্য মানুষের চিৎকার ।
গুলির শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে । মুহুর্তেই মেহেরাবের মাথায় বিস্ফোরণ হলো। মোম তার কোলে নেই।
মেহেরাব উঠে দাঁড়ালো ।
সে নির্ভয়ে যুদ্ধের মাঠে মাঝখানে চলে গেলো।
সোজা দাড়িয়ে সে মোম কে খুঁজছে ।
মোমের চিন্তা এখন বড় চিন্তা।
মেহেরাব মোম কে খুঁজে বের করবে নিজের জীবন দিয়ে হলেও।
মেহেরাবের পাশ দিয়ে সাঁই সাঁই করে গুলি চলাচল করছে। কানে পাশ দিয়ে শিষ দিয়ে বিস্ফোরণ ছুটে যাচ্ছে।
পুরো বন কেঁপে উঠেছে বিস্ফোরণের শব্দে। বন্যপশুরা ভয়ে ছোটাছুটি করছে।
মেশিনগানদারী আর রাইফেল গানদারী লোকজনেরা একে অপরের দিকে গুলিছু ছুড়ছে।
মোম আসলামের সামনে দাড়িয়ে আছে।
আসলাম সানগ্লাস খুলে বলল-আসসালামু আলাইকুম প্রিয়তমা কেমন আছো?
মোম তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো আসলামের দিকে।
-এভাবে তাকিও না। আবার তোমার প্রেমে পড়ে যাব।
আচ্ছা তুমি ভয় পেয়ো না। চলো আমার সাথে । এইরকম যুদ্ধে তোমার না থাকাই বেটার। আমাদের এখানে কাজ নেই থেকে।
ওরা ওদের কাজ করুক।
-আমি যাব না
আমার স্বামী কে ছেড়ে।
– কি বললে?
আবার বলো?
আমি শুনতে পাইনি।
তোমার স্বামী তাইনা?
একটু পর সে তোমার কেউ থাকবে না। কারণ তার মৃত্যুর পরেই আমি আবার তোমাকে বিয়ে করব।
তুমি রাস্কেল টা কে ছেড়ে আসতে চাচ্ছিলে না। তাই ওকে মরতে হবে।
তখন তো তোমার কোন বাঁধা রইলো না। কোন পাপও হলো না। যা পাপ তা সব আমার হবে।
-না। এমন টা হবেনা।
উনি আমাকে রেখে যেতে পারেন না কোথাও। ওয়াদা করেছেন উনি আমার সাথে থাকার।
আসলাম হেসে বলল-ওয়াদা আমিও করেছি তোমার সাথে থাকার।
আসলাম মোমের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকলো।
মোম চিৎকার করে যাচ্ছে।
আল্লাহ কে ডাকছে।
মেহেরাব কে খুঁজছে তার অশ্রুসিক্ত চোখ।
-কোন লাভ নেই প্রিয়তমা। এখানে কেউ তোমাকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যেতে পারবে না।
-ওর হাত ছাড়।
মেহেরাব আসলামের হাতের উপর হাত রাখলো।
আসলাম দেখতে পেলো আগুন গোলা চোখে মেহেরাব তার দিকে তাকিয়ে আছে।
-হাত ছাড় বলছি।
আসলাম হেঁসে উঠলো।
মেহেরাবও হেঁসে উঠলো।
দু’জন দু’জনকে দেখছে আর শার্টের হাতা ফোল্ড করছে। আজ খেলা হবে। ফাইনাল খেলা হবে আজ।
মোম কে তারা দু’জন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়াতে চায়না। একটু দূরে নিরাপদ জায়গায় দাড়িয়ে রাখা হয়েছে তাকে।
মোম মেহেরাব কে মিনতি করছে আসলামের সাথে লড়াই না করার জন্য ।
মেহেরাব হেঁসে দুই আঙুল ঠোঁটে ছুঁইয়ে ইশারা করলো মোমের দিকে।
-একটু ওয়েট করো। বাজে মশাটা কে ধ্বংস করে আসি। লাভ ইউ সুইটহার্ট ।
.
.
❤আল কুরআনের ৮১টি উপদেশবাণীর ১টি বাণীঃ
৩১। অনাথদের সম্পদ আত্মসাৎ করো না। [সূরা নিসা ৪১০]
.
চলবে……💔💔💔
.
.
#নূর💔
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-32
মেহেরাব আর আসলাম উল্কার বেগে একে অপরের উপর ঝাপিয়ে পড়লো। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বেঁধে গেলো মোমের চোখের পলকে। পুরো বন যেন হিংস্র হয়ে উঠলো ভালোবাসার লড়াইয়ে । বনের হিংস্র প্রাণীরা ছোটাছুটি করছে ওদের হিংস্র লড়াইয়ে তোপে। মোম স্তব্ধ। বাঁধা দিতে পাচ্ছে না কাউকে।
এখন কেউ মোমের আহাজারি, মিনতি শুনবে না। যুদ্ধ শেষ ।
দুজন লড়াই করে গেলো শরীরে শেষ এক ফোঁটা শক্তি দিয়ে।
দু-জনেই পড়ে আছে দুইদিকে । রক্তাক্ত অবস্থায় । কেউ কারও থেকে কম নয়। দু-জনেই চায় মোম কে।
মোম মাঝখানে দাড়িয়ে আছে। নিরব দর্শক।
আসলাম একটা হাত বাড়িয়ে দিলো মোমের দিকে।
– আমার প্রিয়তমা। আমি তোমার জন্য শরীরের সবটুকু রক্ত নিঃশেষ করে দিতে রাজি আছি। শুধু তুমি আমার হাত টা ধরো প্রিয়তমা।
মোম আসলামের দিকে তাকিয়ে আছে। পুরো শরীর রক্তাক্ত।
আসলামের অসহায় চাহনি যে কারও বুক কাঁপিয়ে তুলবে।
মেহেরাব একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে মোমের দিকে। একটা পলকও ফেলছে না ভয়ে, পলক ফেললে যদি সেই পলকের মধ্যে মোম ওর দিকে তাকায়। মেহেরাব মিস করতে চায়না মোমের তাকানো।
মোম এক পা এগিয়ে গেলো আসলামের দিকে।
আসলামের ঠোঁটের বিশ্বজয়ের হাসি। পেড়েছে সে নিজের ভালোবাসা কে জয় করে নিতে।
মেহেরাব তাকিয়ে আছো তো তাকিয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত সে দেখবে কি হয়।
মোম এক পা এগিয়ে দুই পা পিছিয়ে গেলো।
আসলাম আর্তনাদ করে উঠলো।
-না না। প্রিয়তমা। তুমি এটা করতে পারও না।
মোম পিছনে ঘুরে তাকালো মেহেরাবের দিকে।
-প্রিয়তমা। ফিরে এসো। না না। এমন করো না।
আমাকে মাফ করো।
মোম দৌড়ে মেহেরাবের কাছে ছুটে চলেছে।
আসলাম আর্তনাদ করে উঠলো। চিৎকার করে উঠলো।
-আমি তোমার প্রথম ভালোবাসা প্রিয়তমা।
মোম মেহেরাবের রক্তাক্ত দুই হাত স্পর্শ করলো।
-আপনি আমার আসল ভালোবাসা ।
মেহেরাব চোখ বন্ধ করে ফেললো।
আনন্দের চোখের পানি সে মোম কে দেখাতে চায়না। পৃথিবীর কাউকে দেখাতে চায় না।
নিজের জন্য রাখা সত্যিকারের ভালোবাসা গুলো যত দূরেই থাকুক, যত বাঁধায় আসুক, সত্যিকারের ভালোবাসাকে ফিরে আসতেই হবে একদিন।
মোম মেহেরাবের দুই হাত নিজের গালে চেপে ধরলো।
রক্তাক্ত হাত গুলোর রক্তে কালো স্কার্ফ লাল স্কার্ফে পরিণত হলো। ভালোবাসার লাল রক্ত । মেহেরাব মোমের কাজলদিঘীর কাজল কালো কান্নারত চোখের দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে। পৃথিবীর সকল ভালোবাসা আজ তার হাতে।
-জানেন আমি কতটা ভয় পেয়ে ছিলাম?
মেহেরাব অস্পষ্ট স্বরে বলল,
-মাফ করে দাও। তুমি ভয় পাবে এমন কাজ আর কখনো করব না। কথা দিচ্ছি ।
-খুব কষ্ট হচ্ছে ?
মেহেরাব হাসি দিলো।
মেহেরাবের ঠোঁটে আঙুল দিলো মোম কিছুটা অনুযোগের স্পর্শে, অভিযোগের স্পর্শে, অভিমানের স্পর্শে।
-আমার কথা অনেক ভেবেছেন। এখন নিজের কথা ভাবুন। নিজের দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন।
-আমি শুধু তোমার কথা ভাবাবো , তোমার দিকে তাকিয়ে থাকব।
দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ ।
মোম মেহেরাব কে জড়িয়ে ধরলো।মেহেরাবও নিজের ভালোবাসাকে জড়িয়ে ধরলো।
আসলামের বুক হাহাকার ভরে উঠলো।
মেহেরাব মোমের আসল ভালোবাসা ! মোমের বলা কথাটা বার বার আসলামের কানে বেজে চলেছে অনবরত ।বেজে চলা কথাটা সইতে পাচ্ছে না আসলাম।
সইতে পাচ্ছে না ওদের একে অপরের ভালোবাসায় জরিয়ে ধরা। দেখতে পাচ্ছে না, শুনতে পাচ্ছে না আর আসলাম।
দুই হাত দিয়ে কান বন্ধ করে, চোখ বন্ধ করে রাখলো আসলাম।
মোম মেডিক্যালের করিডরে দাড়িয়ে আছে।
মেহেরাব ভেতরে আছে। পুরো শরীরে ফ্যাকচার।
এই শরীর নিয়েই মেহেরাব বার বার বলছিল, আমি ঠিক আছি, আই এম অলরাইট। মেডিক্যালে যেতে হবে না। অযথা টেনশন করো না ডিয়ার।
মেহেরাবের সেন্স নেই। যতক্ষণ সেন্স ছিলো ততক্ষণ মোমের হাত ধরে ছিলো, তাকিয়ে ছিলো।
অনেক কথা বলতে ইচ্ছে করছিলো মোম কে।
ধীরে ধীরে শরীর এতোটা নিস্তেজ হচ্ছিল যে ইচ্ছে থাকলেও ঠোঁট নাড়িয়ে একটা কথাও বলতে পাচ্ছিলো না মোম কে।
মোমের হাত এতোটা শক্ত করেই ধরে ছিলো যেন মোম পালিয়ে যাবে হাত ছেড়ে দিলেই।
মনে মনে দুটি তিনটি বাক্যই বলে যাচ্ছিল সে। ডিয়ার ক্যান্ডল তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না। তোমার হাত শক্ত করে ধরে ব্যথা দেওয়ার জন্য দুঃখী , তুমি তো জানে তো আমার শরীরের থেকেও মনে কতটা ব্যথা। তোমাকে ভালোবাসি ! তোমাকে ভালোবাসি ! তোমাকে ভালোবাসি বলতে বলতে মেহেরাব সেন্স হারালো।
মোম মেহেরাবের হাত টা নিজের গালের সাথে চেপে ধরেছিলো। সেন্স না থাকার পরও মোমের হাত খুব শক্ত করে ধরে রেখেছিল মোম। ডক্টররা অতি কষ্টে হাত ছাড়াতে পেড়েছিল।
মেহেরাবের জন্য দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট ডক্টর, সার্জন কে আনানো হয়েছে। সবাই ছোটাছুটি করছে। অতি ব্যস্ত। সবার মুখেই আতংকের ছাপ। মেহেরাব সাধারণ কেউ নয়।
মেহেরাবের বাবা খবর শুনেই সমস্ত মিটিং ক্যান্সেল করে তৎক্ষনাৎ ফ্লাইটে চড়ে বসেছে। এই এলো বলে।
মোম এই প্রথম কিছুটা বিব্রত বোধ করছে। মোম কিভাবে শশুর সাহেব কে অভ্যর্থনা জানাবে সেটা মাথায় আসছে। মেহেরাব থাকলে সামলে নিতো।
চোখে সানগ্লাস পড়া মেহেরাবের বাবা করিডর ধরে আসছে। পিছনে অজস্র লোকজন ।
মোম কি সালাম দেবে শশুর সাহেব কে? মেহেরাব আস্তিক হলেও উনি তো নাস্তিক।
মোম শশুরের সামনে এক পা এগিয়ে গেলো
Hello বলে।
শশুর সাহেব একবারও না তাকিয়ে নিজের মতে করে ছেলের ক্যাবিনের দিকে এগিয়ে গেলো।
মোমও এগিয়ে গেলো।
ডক্টর রা উনাকে আশার বাণী শুনাচ্ছে।
উনি হুংকার দিয়ে বলল-আমি আশার বাণী শুনতে আসিনি। আমি আমার ছেলেকে একেবারে ফিট দেখতে এসেছি।
-অফকোর্স। সময়ের সাথে সাথে ফিট হয়ে যাবেন তিনি।
– কি বললে তুমি?
আমি এক ঘন্টা সময় দিলাম তোমাদের।
এক ঘন্টার মধ্যে আমি আমার ছেলে কে সুস্থ দেখতে চাই। এট এনি কস্ট। ডলার যা লাগে তা পাবে। আমার একমাত্র ছেলে।
মেহেরাবের বাবা কে কোনভাবেই বোঝানো যাচ্ছেনা ।
উনি ডলারের উত্তাপে অবুঝ হয়ে গিয়েছেন।
– বয়সের সাথে সাথে মানুষ যেমন বড় হয় তেমনি ছোটও হয়ে যায়। অবুঝ হয়ে যায়।
মোমের কথা শুনে মোমের দিকে তাকালো মেহেরাবের বাবা।
কিছুক্ষণ তাকিয়ে স্থান ত্যাগ করলেন তিনি।
অনেকটা সময় কেটেছে। মেহেরাব অবজারভেশনে আছে এখনো। মেহেরাবের বাবা পাশের ক্যাবিনে আস্তানা গেঁড়েছেন। ছেলে সুস্থ হলে তবেই তিনি আস্তানা ছাড়াবেন।
একদিকে একমাত্র পুত্রবধূর সাথে এখনো তিনি আলাপ করেন নি, পরিচিত হন নি। যদিও তিনি ছেলের বউ সম্পর্কে সকল তথ্য জানেন। মোমের আগের স্বামী আসলাম কে তিনি ভালো মতো চেনেন। মেহেরাবের বাবার সমকক্ষ একমাত্র আসলাম। আসলামের ক্ষমতা সম্পর্কে তিনি অবগত।
মেহেরাবের জন্য দোয়া করে যাচ্ছে মোম। মেহেরাবের মুখে নিজের নাম শুনতে ইচ্ছে করছে খুব।
কালো পোশাক পড়া এক গার্ড এসে জানালো পাশের ক্যাবিনে যেতে। মেহেরাবের বাবা স্বরণ করেছে মোম কে।
মোম দাঁড়িয়ে আছে শশুর সাহেবের সামনে।
এই প্রথম সানগ্লাস খুললেন তিনি।
নীল সমুদ্রের পানির মতো স্বচ্ছ চোখ। কি মনোমুগ্ধকর ।
-দাড়িয়ে কেন? বসো।
কালো গার্ড একটা চেয়ার মেহেরাবের বাবার সামনে রাখলো।
মোম বসলো।
-কেমন আছো ক্যান্ডল ?
মোম একটু চমকে উউলো।
উনি বললেন,
-এই পরিস্থিতিতে কোন বাবা নিশ্চয়ই তার ছেলে বউ কে এমন প্রশ্ন করেনা।
আচ্ছা তোমার বাবা কে জানিয়েছো তোমাদের বিয়ের কথা?
-না।
– কখন জানাবে ঠিক করেছো?
মোম মাথা নিচু করে রইলো।
-আমার ছেলে কে আস্তিক বানিয়েছে নাস্তিক থেকে। তোমার এলেম আছে। ইমপ্রেস । গুড, ভেরি গুড ।
টি-টেবিলে খাবার সাজিয়ে দিলো কালো গার্ড।
-আমি যেকোনো সিচুয়েশনে হোক, যতটা ডেঞ্জারাস সিচুয়েশনে আসুক না কেন, না খেয়ে থাকতে পারিনা। তুমি নিশ্চয়ই আমার আচরণে বিবর্ত হচ্ছো?
মোম মাথা নাড়ালো না সূচক।
-তুমি তো কাল থেকে কিছুই খাওনি।
এখন খেয়ে নিতো পারও।
-নো থ্যাংকস ।
-হাসবেন্ডের প্রতি ভালোবাসা । হা! হা!হা!।
শোন আগুন যদি জানতে পারে তুমি না খেয়ে আছো তাহলে কষ্ট পাবে। আমার ছেলের অবর্তমানে তোমার দেখাশোনা করার দায়িত্ব আমার।
মোম খাবারগুলো দেখছে, আরেকবার শশুর সাহেব কে দেখছে। কি চলছে উনার মাথায়?
-কিছু মনে করো না।
আমি একটা কাজ করব এখন।
-ইয়েস প্লিজ।
কালো গার্ড ড্রিংকের বোতল এনে রাখলো টেবিলে।
গ্লাস সাজানো হচ্ছে । বরফ কুঁচি ঢেলে সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে ড্রিংক । মোমের জন্য একটা গ্লাস সাজানো হলো।
মেহেরাবের জন্যও সাজানো হলো।
তিনটা গ্লাস মোমের সামনে।
মোমের শশুর একটা গ্লাস উঠিয়ে বাকি দুটো গ্লাসে গ্লাস দিয়ে টোকা দিয়ে বললো- ফায়া এন্ড ক্যান্ডলের প্রেমের জন্য এই গ্লাসটি আমি নিজের উপর উৎসর্গ করলাম। চিয়ার্স।
ড্রিংক খেতে খেতে তিনি বললেন-তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো। মেহেরাবের সেন্স ফেরার আগেই সেটা সেরে ফেলা দরকার । কি বলো?
মোম মাথা নাড়ালো।
.
মেহেরাবের সেন্স ফিরেছে।
আধশোয়া হয়ে আছে সে। হাতে স্যালাইনের সূচ।
মেহেরাবের বাবা ছেলের সামনে বসে আছে।
মেহেরাব চুপচাপ ।
-তুমি কষ্ট পেওনা ডিয়ার লিটল প্রিন্স। তোমার জন্য বিশ্ব সুন্দরীদের লাইন লাগানো রয়েছে । তারা তোমাকে চায়।
মেহেরাব চাদরের নিচে স্যালাইনের সূচ লাগানো স্থানে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চেপে ধরে আছে। বিশ্ব সুন্দরী নয় তার মোম কে চায়
মোম নিজের দেশ বাংলাদেশে এসেছে আজ কতদিন পর।
নিজের দেশ, নিজের গ্রাম, নিজের বাড়ির বিশালা দিঘির সিঁড়ি ঘাটে পানিতে পা ঝুলিয়ে বসে আছে। স্বচ্ছ পানিতে মোমের মুখখানা দেখা যাচ্ছে। মলিন মুখ।
.
.
❤আল কুরআনের ৮২টি উপদেশবাণীর ১টি বাণী ঃ
৩২। যাদের সাথে রক্তের সম্পর্ক তাদের বিবাহ করো না। [সূরা নিসা ৪:২৩]
.
চলবে…..💔💔💔