#প্রণয়ে_তুমি
#পর্ব_১১
#writer_nahida_islam
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না, ইফাজ আমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি একটা হাসি দিলো,এই হাসি দিয়েছে মানে মনে মনে শয়তানি বুদ্ধি আটছে।
-কি বদরানি সকালে আমার মুখে লবণ দেওয়ার কথা মনে আছে,
কথাটা বলে ই আমার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।
– আর এক পা এগিয়ে আসলে এমন জোরে চিৎকার করবো সবাই ভেতরে চলে আসতে বাধ্য হবে।
-আমি জানি এটা তোমার গলা না, মাইক। যদি কখনো মাইক না আবিষ্কার হতো তাহলে তোমাকে দিয়ে ই মাইকের কাজ চালানো হতো।
আমি ইফাজের দিকে তাকাতে ই ইফাজ বাহিরে চলে গেলো। আস্তে আস্তে দরজা আটকিয়ে বাহিরে বের হতে ই দেখতে পেলাম ইফাজ বাইক স্টার্ট দিয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি গিয়ে বসতে ই এতো স্পিডে গাড়ি চালাতে শুরু করলো যে চোখ মেলে ভালো করে তাকাতে পারছি না। এতো করে বললাম যে গাড়ি আস্তে চালানো জন্য কিন্তু বদ লোকটা শুনলো ই নাই।
শপিং মলের সামনে সবাই আমাদের জন্য দাড়িয়ে আছে। ইফাজ বাইকটা পার্কিং-এ রেখে আমার সাথে হাটতে থাকে,
-কেমন লাগলো…
-যাওয়ার সময় আপনার সাথে আমি যাবো না।
-তুমি না যেতে চাইলে ও আলগা প্রেম দেখিয়ে তোমাকে আমি নিয়ে ই যাবো।
-আপনার সুমিকে নিয়ে যান।
-সে সময় হলে নিয়ে ই যাবো তোমাকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে না।
আমি পাশ কাটিয়ে অন্তু আপুর হাত ধরে হাটতে থাকলাম।
-ইফাজ কিছু বলেছে।
-আপু আমি আপনাদের সাথে বাসায় ফিরবো। এতো জোরে বাইক চালিয়ে নিয়ে এসেছে যে আমি আসার সময় চোখ খুলতে পারিনি।
অন্তু আপু মুচকি হেসে বললো, পাঁজিটা এই জন্য ই তোমাকে একা নিয়ে এসেছে। যাই হক দেখো কী পছন্দ হয়।
🍁🍁
শপিং শেষ হতে হতে বেশ রাত হয়ে যায়। আমি যখন আব্বুর গাড়িতে উঠতে যাবে ঠিক তখন ই ইফাজ এসে হাত ধরে ফেললো,
-তুমি আমার সাথে এসেছো আমার সাথে যাবে।
-না, আমি আপনার সাথে যাবো না।
-এই গাড়িতে এতো মানুষ জায়গা হবে না।
অন্তু আপু এসে বললো,
-চল তোর সাথে আমি যাবো।
আমি দ্রুত গিয়ে গাড়িতে উঠে বসি।
বাসায় আসতে ই আমি ফ্রেশ হয়ে ই বড্ড ক্লান্ত লাগছে তাই বিছানায় একটু বসলাম। আস্তে আস্তে বেশ ঘুম পেতে শুরু করলো না চাইতে ও চোখ লেগে গেলো।
ইফাজ রুমে ডুকতে ই দেখলো অতসী ঘুমিয়ে আছে। ইফাজ সাথে সাথে অতসীর হাত ধরে টেনে ফ্লোরে নামিয়ে বললো,
-ভেবছো কী কালকে যে বললাম সব ভুলে গেলে। অবশ্য তোমার মতো মেয়ের থেকে এর থেকে বেশি কী আশা করা যায়।
আমার ইফাজের বলা কথাগুলো সব মাথার উপর দিয়ে গেলো। ঘুমের রেশ কাটতে ই বুঝতে পারলাম তার বিছানায় শুয়াতে এমন নিকৃষ্ট ব্যবহার। কোনো রকম উঠে বললাম,
-ইচ্ছে করে আপনার বিছানয়া ঘুমাতে চাই মিস্টার ইফাজ। মানুষকে মানুষ মনে করতে শিখুন, এমন জানোয়ার মতো ব্যবহার পরিহার করুন।
সাথে সাথে ইফাজ আমাকে একটা থাপ্পড় মারতে আসলে আমি হাতটা ধরে ফেলি। হাতটা আমার থেকে ছাড়িয়ে বললো,
-তুই জানোয়ার কাকে বলছোস, তোর সাথে ভালো ব্যবহার করি তাই কী খুব পাখনা গজিয়ে গেছে।
-আপনার মতো লোকের সাথে কথা বলার রুচি নাই।
নিচে বিছানা করে শুয়ে পড়লাম, এতো ঘুম পাচ্ছে কেনো তা কিছুতে ই বুঝতে পারছি না।
সকালে ঘুম থেকে আগে আগে উঠে, আমি ই নাস্তাটা বানিয়ে ফেললাম। মাকে এমন কাজ কারতে দেখলে আমার বড্ড খারাপ লাগে। নাস্তা টেবিলে সুন্দর করে সাজিয়ে, গোসল করতে চলে গেলাম।
সাড়ে রেডি হয়ে নিচে নামতে ই মা ডেকে বললে,
-তুই কেনো এতো নাস্তা বানাতে গেলি। আমার একটু শরির খারাপ লাগছিলো তাই শুয়ে ছিলাম। আর তুই সব কাজ সেরে ফেললি
আমি মুচকি হেসে বললাম, লেইট হয়ে যাচ্ছে মা আসি।
-শুন আসার সময় একা আসিস না ইফাজকে বলবো তোকে যেনো নিয়ে আসে।
গুটগুটি পায়ে হেটে যখন কলেজ ক্যাম্পাসে ডুকলাম ঠিক তখন ই সুমি এসে বললো,
-কালকে তো খুব তেজ নিয়ে কথা বলেছিলি। আর ইফাজের সাথে কি প্রেম করতে চাস নাকি, কাল কথা বলার সাথে বার বার ওর দিকে তাকাচ্ছিলি।
আমার কোনো মুড নাই আপনার সাথে কথা বলার পথ ছেড়ে দাড়ান।
আমি চলে যেতে নিলে সুমি আবার আমাকে আটকানোর চেষ্টা করে। বেশ বিরক্ত লাগছে ব্যাপার গুলো এই মেয়ে কেনো আমার সাথে এমন করে আর ইফজ আসুক এর একটা বিহিত করতে হবে।
কাল রাত থেকে মনটা বেশ খারাপ ইফাজের ব্যবহার বার বার আমাকে ভাবাচ্ছে।
ক্লাসে গিয়ে কোনো কথা বললাম না চুপচাপ ক্লাস করে বেরিয়ে গেলাম। ইফাজকে দূরে দেখে ইফাজের সামনে গিয়ে দাড়ালাম, সুমি ও সেখানে ছিলো।
-আপনার আর আমার সম্পর্কটা সবার সামনে বলুন। মানুষের এসব কথা আমি আর শুনতে পারবো না।
-এই মেয়ে এখন কী ইফাজকে ফাসানোর চেষ্টা করছো না। ইফাজ কিন্তু আমাকে ভালোবাসে তাই না ইফাজ।
-ইফাজ আপনাকে ভালোবাসে নাকি আপনাদের বাচ্চা আছে ঐটা আমার কোনো সমস্যা নাই।
-এখান থেকে দূরে সরো ইফাজের সাথে তোমার কি সম্পর্ক থাকবে কথাটা বলে ই আমাকে একটা ধাক্কা মারে সুমি।
আমি নিজের জায়গা থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলাম। ইফাজকে উদ্দেশ্য করে শুধু এটা বললাম,
-আপনি কি কিছু বলবেন না।
-কী বলবো।
-ইফাজের সাথে কথা না বলে আমার সাথে কথা বলো।
অতসী আর কোনো কথা বললো না, চলে আসতে নিলে ই ইফাজ পেছন থেকে কয়েকবার ডাকলো। বাইকে নিয়ে দ্রুত ইফাজ অতসীর সামনে আসে,
-মা বলেছে তোমাকে নিয়ে যেতে।
-কোন অধিকারে আমাকে নিয়ে যেতে এসেছেন।
-জানি না।
-তাহলে আমি ও আপনার সাথে যাবো না।
-রাস্তার সব মানুষ দেখছে।
-তো আমি কি করবো।
-অতসী জেদ করোনা প্লিজ।
-আপনি আর আমার সামনে আসবেন না।
কথাটা বলে ই অতসী রাস্তা ক্রস করতে নিলে একটা ট্রাক এসে ধাক্কা মারতে ই অতসী ছিটকে গিয়ে অন্য অনেকটা দূরে গিয়ে পড়ে।
ইফাজ কয়েকটা মুহুর্তে জন্য থমকে যায়, চোখের সামনে অতসীর এক্সিডেন থেকে কিছুক্ষনের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ইফাজ দৌড়ে গিয়ে অতসী কোলে নেয়, রক্তে পুরো জামাকাপড় ভরে যায় ইফাজের। মুখে এতো রক্ত মাখা ছিলো যে মুখটা ভালোভাবে বুঝা যাচ্ছিলো না।
চলবে,
[ভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]