#প্রণয়ের_পরিণতি
#পর্ব_১৭
#writer_sadia_afrin_nishi
ধরফরিয়ে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠল তৃপ্তি।সারা শরীর ঘেমে একাকার অবস্থা কাল রাতে কফি খেতে খেতে রুমে এসে ঘুমিয়ে পরেছিল।তারপর সারা রাত ভালোই ঘুমিয়েছে কিন্তু ভোরবেলা একটা দুঃস্বপ্ন দেখে তার এখন এই অবস্থা।পাশের বেড টেবিল থেকে পানির গ্লাস নিয়ে ঢগঢগ করে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিল তৃপ্তি। তবু্ও শরীরের কাঁপুনি এখনো কমছে না।আস্তে আস্তে নেমে বেলকনিতে চলে গেল তৃপ্তি। ভোরের হালকা আলো ফুটেছে। এখনো সূর্য ওঠেনি।পরিবেশটা ঠান্ডা কিন্তু তৃপ্তির খুবই গরম লাগছে। সে কী যেন ভেবে তাড়াতাড়ি রুমে চলে এলো।তারপর ফোন করল তনয়ার ফোনে।ফোনটা অনেকক্ষণ ধরে বাজতে লাগল তারপর ফোন রিসিভ হতেই এপাশ থেকে একটা পুরুশালী গলা শোনা গেল।তৃপ্তির কন্ঠটা শোনার সাথে সাথে বুকের মধ্যে ধুকপুক শুরু হয়ে গেল। তার অসস্তি আরও বাড়তে লাগল।ওপাশের ছেলেটি বারবার হ্যালো,হ্যালো, কে বলছেন,বলেই চলেছে। তৃপ্তি আর সামলাতে না পেরে ফোনটা কেটে দিল।রিশি বিরক্ত হয়ে ফোনের স্ক্রিনে তাকাল।দেখল তৃপু নাম লেখা। সে মনে মনে ভাবল কে এই তৃপু? ভাবির সাথে কী সম্পর্ক তার?আর সে কথা কেন বলল না?আর কেনই বা ফোন কেটে দিল?এটা তো বিদেশী নম্বর। ভাবিকে বিদেশ থেকে কে ফোন করল।রিশি ফোনটা সাথে করে নিয়ে যায়। এদিকে তৃপ্তি ফোনটা বিছানায় ছুড়ে মেরে হাঁপাতে লাগল।এটা কী করে হতে পারে? তার আপুর ফোনটা কার কাছে?সেই একই ভয়েস।কে এই ছেলে?কেন আমার বারবার তার কথা মনে পরছে?সে কী করে হতে পারে? আর আপুই বা কোথায়?তৃপ্তি আর কিছু ভাবতে পারছে না। তার মাথাটা ঘুরে আসছে। সে দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার ওয়ান করে দিল।এবার আস্তে আস্তে মাথাটা চেপে ধরে শাওয়ারের নিচে বসে রইল।
__________
তনয়া ছুটতে ছুটতে প্রায় অর্ধেক রাস্তা চলে এসেছে। এরই মধ্যে তনয়ার সামনে একটি গাড়ি এসে দাড়াল।তনয়া ভালো করে দেখল না গাড়িটি।পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চাইল।তখনই কেউ তার হাত ধরে বসল।তনয়া পেছনে তাকিয়ে দেখল রিশান দাড়িয়ে আছে তার হাত ধরে। তনয়া কিছু না বলে হাতটা ছাড়িয়ে নিতে চাইল।কিন্তু রিশান ছাড়ল না। সে তনয়াকে টেনে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে নিজে গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগল।
হসপিটালে পৌঁছে তনয়া পুরো স্তব্ধ হয়ে রইল।একদিকে মায়ের প্রাণহীন দেহ আর একদিকে বোনের অচেতন দেহ পরে রয়েছে বেডে।সে দুই বেডের মাঝে হাঁটু ভেঙে বসে পরল।মাথাটা দু হাতে শক্ত করে চেপে ধরল। কিছুই যেন তার মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না। সে যেন কাঁদতে, হাসতে, কথা বলতেও ভুলে গেল।এভাবে বসে রইল অনেকক্ষণ। রিশান এই অবস্থা দেখে কাব্যকে ফোন করল।কাব্য সাথে সাথে চলে এলো।রিশানের বাবা,মা,রিশি ওরাও এলো।কেউ তনয়ার কাছে যাওয়ার সাহস পেল না। ওই যে কথায় আছে না চুপ থাকা ঝড়ের পূর্বাভাস। সবাই এটারই ভয় পাচ্ছে। কাউকে কিছু না বলে রিশি তনয়ার দিকে এগিয়ে গেল।সবাই মানা করেছিল কিন্তু রিশি কারো কথা শুনল না। রিশি আস্তে আস্তে তনয়ার পেছনে দাঁড়িয়ে কাঁধে হাত দিয়ে কাঁপা-কাঁপা গলায় ভাবি ভাবি বলে ডাকতে লাগল।তনয়া তবুও সেভাবেই বসে রইল।তারপর রিশি জোরে জোরে তনয়াকে ভাবি ভাবি বলে ঝাকাতে লাগল।এবার তনয়া নাহহহহহহহহহহহহ বলে এক বিকট চিৎকার করে উঠল।সবাই কিছুটা দুরে সরে গেল। রিশি এবার তনয়াকে ডাকার সাথে সাথে তনয়া রিশিকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল এলোমেলো ভাবে। রিশি তনয়াকে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু তনয়া থামছে না। শুধু বলে যাচ্ছে, ভাইরে আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব? আমার মাআআআ,আমার মাআআ যে আর নেই। আমার এতো বড় আত্ম বলিদান আমি কার জন্য দিয়েছি?এই মানুষটার জন্যই তো। সে কী করে আমাকে ফেলে চলে গেল?একটি বার আমাকে বলেও গেল না? আমি এখন কী করবো?কীভাবে সামলাবো তনি, তৃপুকে?কীভাবে কীভাবে কীভাবে? তনয়ার আহাজারিতে সবার আত্মা কেঁদে উঠল। হাসপাতালের নার্সদেরও চোখে জল চলে এল।সবাই নিরবে চোখের জল ফেলল।তনয়ার আত্ম বলিদান বলার কারণটা কেউ বুঝল না,শুধু বুঝল রিশান। সে অনেক দুরে দাড়িয়ে রইল।তনয়ার সামনে আসতে ইচ্ছে করল না তার।বিয়েটা যেভাবেই হোক তনয়া এখন তার অর্ধাঙ্গিনী। অর্ধাঙ্গিনীর এমন করুণ রুপ কারোই কাম্য নয়।রিশান তাই দুরে দাড়িয়ে রইল। তার চোখ হয়ে উঠল লাল টকটকে।তবে এটা রাগের জন্য নয়,এই দৃষ্টির পেছনে আছে অজস্র অনুতাপ,শাশুড়ীকে একটিবার সালাম করে দোয়া না নিতে পারার কষ্ট, বউয়ের সাথে করা নিজের অন্যায়ের অনুশোচনা।সে কিছু না বলে ওখান থেকে চুপিচুপি বেড়িয়ে গেল বাহিরে। এক প্রকার পালিয়ে যাবার মতো।
_________
শাওয়ার নিয়ে তৃপ্তির কিছুটা ভালো লাগছে। কিন্তু মনের মধ্যে থাকা অশান্তিটা কিছুতেই কমছে না। সে এবার বেড়িয়ে পড়ল কলেজের উদ্দেশ্যে।সবার সাথে দেখা করলে যদি মনটা ভালো হয় তাই।তৃপ্তি ওখানে একটা মেডিকেল কলেজে পরে। এই বছরটা শেষ হলে সে মেডিকেলে ড্রিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসবে।
_________
তনয়া এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। রিশি পকেট থেকে ফোনটা বের করে তনয়ার কাছে দিয়ে বললো ভাবি বিদেশ থেকে কেউ ফোন করেছিল। তনয়া ফোনটা নিয়ে নিল।তৃপ্তির নম্বরে সাথে সাথে ফোন করল।তৃপ্তিও দুইবার রিন হওয়ার সাথে সাথে ফোনটা রিসিভ করল। তনয়া নিজেকে অনেকটা স্বাভাবিক করে নিল।তারপর তৃপ্তির সাথে টুকিটাকি কথা বললো।তৃপ্তির মনে হতে লাগল তার বোন হয়তো ঠিক নেই।কিছু একটা হয়েছে। তৃপ্তি তনয়াকে জিজ্ঞেস করেই ফেলল,আপু তোমার কী কিছু হয়েছে? ওখানে সবকিছু ঠিক ঠাক আছে তো?তনয়া আমতা আমতা করে বলল, হ্যাঁ সবটা ঠিক আছে। তৃপ্তির মন ভরল না বোনের উত্তরে। সে একটার পর একটা প্রশ্ন করেই গেল।তনয়া খুব সাবধানে তৃপ্তির প্রশ্নগুলো সাজিয়ে সাজিয়ে মিথ্যে উত্তর দিয়ে দিল।সেই বা কী করবে বোনটা এতদূর দেশে একা আছে। মায়ের এই খবর জানলে কী করবে তার ঠিক নেই। তারচেয়ে বরং একবারে দেশে এলে জানাবে তাকে।তারপর তৃপ্তিকে কোনো রকম শান্ত করে তনয়া ফোন কেটে দিল। তৃপ্তি কিছুটা বিশ্বাস করলেও পুরোপুরি পারল না। তার বোন তার থেকে কিছু তো একটা লুকোচ্ছেই।
_________
তনিমাকে এখন স্যালাইন দিয়ে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে। এই কয়দিন ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া না করায় তার শরীর খুবই দুর্বল। তাই স্যালাইনের প্রয়োজন হয়েছে।কাব্যই সবকিছুর ব্যবস্থা করেছে।কেন যেন তনিমাকে এভাবে দেখতে তার একটুও ভালো লাগছে না। মেয়েটা চঞ্চলতায় ভালো মানায়।তনিমা যত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে কাব্যর জন্য ততই মঙ্গল।
বিকেলে লাশ দাফনের সমস্ত ব্যবস্থা করা হলো।তনিমা এবার আর শুয়ে থাকতে পারল না। তনয়া আর তনিমা মা কে জড়িয়ে অনেক কান্না করল।কিছুতেই মা কে ছাড়তে চাইছে না। বাবা তো থেকেও নেই মা ও এবার চিরকালের মতো চলে গেল এটা তারা কিছুতেই মানতে পারছে না। কাল দাফনের কাজ সম্পন্ন করা হল।তনয়ার সাথে তনিমাকেও নিয়ে গেল রিশানদের বাড়িতে। আপাতত তনিমা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে এখান থেকে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিল রিশানের মা। তনয়া আর তনিমাকে সে মেয়ের মতোই ভালোবাসে।তনয়া রিশানের বউ হওয়াতে সে খুব খুশি হয়েছে কিন্তু আবার গুপ্ত রহস্যের জালে অন্ধকারে ছেঁয়ে যাচ্ছে তার মন।
(তনয়ার মা বেশ কয়েক মাস ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। আগে তার প্রায়ই মাথা ব্যথা হতো।কিন্তু সে কাউকে কিছু বলত না। মাঝে মাঝে মাথা ব্যথা বেশি হলে তখন খুব কষ্ট পেত। তখন আর চেপে রাখতে পারত না। মেয়েরা জিজ্ঞেস করলে বলত এমনি মাইগ্রেনের সমস্যা হয়তো।মেয়েরাও তখন আর তেমন গুরুত্ব দেয়নি এই বিষয় নিয়ে। তাদের মায়ের যে কোনো বড় রোগ হতে পারে এটা তাদের মাথায়ই আসতো না কখনো।তারপর হঠাৎ করে মাস খানেক আগে ওদের মা মাথা যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে অজ্ঞান হয় যায়।তনয়া, তনিমা দু বোনই তখন বাসায় ছিল। তারা তাড়াতাড়ি মা কে হসপিটালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে জানতে পারে তার মায়ের ব্রেন টিউমার হয়েছে। অপারেশন করলে হয়তো বাঁচতে পারে। কিন্তু অপারেশন করাটা খুবই রিস্কি।আর অপারেশন করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তৃপ্তিকে বিদেশে পাঠানোর পর তনয়ার কাছে এখন অতো টাকা নেই যে সে ওই টাকা দিয়ে মায়ের চিকিৎসা করবে।তনয়াকে মন খারাপ করে থাকতে দেখে রিশান একদিন খুব জোর করে তনয়ার কাছ থেকে সবটা শুনলো।রিশান মনে মনে একটা প্ল্যান করে নিল।তাতে করে তনয়ার মা কেও বাঁচানো যাবে আর রিশানও আসন্ন বিপদের হাত থেকে রক্ষা পাবে।তখন সে তনয়াকে বললো যত টাকা লাগে সে দিবে কিন্তু রিশানকে তনয়ার বিয়ে করতে হবে। এই কথা শুনে তনয়া প্রথমে না করে দেয়। সে কিছুতেই কোনো বড় লোকদের বিয়ে করতে পারবে না। বড় লোকদের সে ঘৃণা করে। কিন্তু পরক্ষনে রিশানের যৌক্তিক বাণী শুনে সে রিশানের শর্তে রাজি হয়ে যায়।কিন্তু রিশানের এমন শর্ত দেওয়ার কারণ এখনো তনয়ার অজানা।মা কে বাঁচাতে তনয়া রিশানকে বিয়ে করে নেয়।তবে রিশান আর তনয়ার বিয়েটা হচ্ছে কন্টাক্ট ম্যারেজ। রিশান তনয়াকে বলেছে এক বছর পর তারা আবার আলাদা হয়ে যাবে।তনয়াও এই শর্তে রাজি হয়ে যায়। কারণ সে এমনিতেও কোনো বড় লোক ছেলেকে বিয়ে করত না। তাই সে এই শর্তে অমত করে নিক।তাদের এই শর্তের ব্যাপারে শুধু তারা দুজন আর কাব্য জানে তাছাড়া আর কেউ জানে না।আর আজ তনয়া রিশানের সব শর্ত মেনে তাকে বিয়ে করেছে। আর রিশান তনয়ার মার অপারেশনের সমস্ত ব্যবস্থা করে দিয়েছে। কিন্তু শেষ মুহুর্তে এসে কোনোই লাভ হলো না। অপারেশন সাকসেসফুল হলেও তনয়ার মা বয়স বেশি থাকায় সে এতোটা স্ট্রেস নিতে পারে নি।অপারেশনের পর তার শরীর প্রচুর উইক ছিল
ডক্টররা তবুও কিঞ্চিৎ আশা করেছিল।কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না।মাঝ রাতে তার প্রচন্ড খিঁচুনি ওঠে তার সাথে বমি শুরু হয়। তারপর আস্তে আস্তে শ্বাস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। যাবার আগে সে তনয়াকে খুঁজেছিল অনেক কিন্তু পেলনা। সে তো আর জানত না তার মেয়ে তার জন্য কত বড় ত্যাগ স্বীকার করে নিয়েছে)
_________
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে রিশি।তার আজ মনটা কেমন জানি করছে।তখন ওই বিদেশি নম্বরটা দেখার পর থেকেই শুধু তৃপ্তির কথা মনে পরছে। তৃপ্তি কবে দেশে ফিরবে তাও রিশির অজানা।তৃপ্তি চলে যাওয়ার কিছুদিন পর সে গিয়েছিল আবার তৃপ্তিদের বাড়ি।কিন্তু গিয়ে জানতে পারে তৃপ্তির ফ্যামিলি ওই বাসা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গেছে। আগের দারওয়ানটাও নেই। নতুন দারওয়ান রাখা হয়েছে। তাই সে আর কোনো খবরই পেল না তৃপ্তির। প্রতিদিন রাতে এখানে দাঁড়িয়ে সিগারেটে টান দিতে দিতে তৃপ্তিকে নিয়ে ভাবাটা তার রোজকারের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সিগারেটে টান দিতে দিতে তৃপ্তির কথা ভাবে আবার সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে উড়িয়ে দেয় মনের সকল যন্ত্রণা। এভাবেই রিশির দিন চলছে।রিশি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে সেদিন নীলকে বিশ্বাস করে সে কত বড় ভুল করেছিল।সেদিন নীল,নিশা আর সামির প্ল্যান করে সবটা করেছিল।নীল তৃপ্তিকে শুরু থেকেই ভালবাসত কিন্তু কখনো বলতে পারে নি।রিশি আর তৃপ্তি যে এক অপরকে ভালবাসে এটাও নীল বুঝতে। তাই সে রিশিকে তৃপ্তির জীবন থেকে সরাতে চাইত।তারপর রিশি যখন নীলকে সবটা বলে তখন সে সুন্দর মতো গুটি সাজিয়ে নেয়।নীল তখন নিশা আর সামিরের সাথে যোগ দেয়।নীল জানত না যে সামিরের মনে কী আছে। কিন্তু নিশা যে রিশিকে ভালবাসত সেটা নীল জানত। তাই নীল নিশাকে সবটা জানায় আর নিশাই সামিরকে ওদের সাথে নেয়।নিশা আর সামির কাজিন।কিন্তু এটা রিশি জানত না। রিশি জানলে কখনোই নিশার সাথে ফ্রেন্ডশীপ রাখত না।তারপর প্ল্যান মতো রিশিকে চোখে বেঁধে প্রপোজ করতে বলে নীল।আর রিশিও তাতে রাজি হয়ে যায়।তারপর রিশি যখন চোখ বাঁধা অবস্থায় প্রপোজ করে ওখানে তখন নিশা এসে রিশির সামনে দাড়ায়। আর সেই মুহুর্তে তৃপ্তি চলে আসে নীলের ফোন পেয়ে। নীল দুর থেকে তৃপ্তিকে সবটা দেখায়।তৃপ্তি শুধু রিশির প্রপোজ করা দেখতে পাচ্ছিল কিন্তু রিশির বলা কথা সে কিছুই শুনতে পায় নি।কারণ নীল তাকে অনেকটা দুর থেকে সবটা দেখাচ্ছিল।তৃপ্তি যদি আরও কাছে গিয়ে সবটা শুনত তাহলে হয়তো সে বুঝতে পারত রিশি নিশাকে নয় তাকে চায়।কিন্তু তৃপ্তি তো তাকে ভুল বুঝে বহু দুরে হারিয়ে গেল।তৃপ্তি চলে যাওয়ার পর রিশি নীলকে খুঁজে বের করে সবকিছু জানতে পেরেছে। নীল অবশ্য শুরুতে মুখ খুলেনি রিশি নীলকে ইচ্ছে মতো মারার পর নীল সবটা স্বীকার করেছে। সামিরের কর্মের কোনো ক্লু না থাকায় রিশি সামিরকে কিছু বলতে পারে নি। আর নিশা মেয়ে বলে রিশি চেয়েও নিশাকে কিছু বলতে পারে নি।তারপর থেকে নীল আর এই কলেজে পা রাখেনি।হয়তো গ্রামে ফিরে গেছে। আর নিশা আর সামিরকে বেশি দেখা যায় না। দেখা গেলেও রিশিকে দেখলে তারা পালিয়ে পালিয়ে বেড়াত। আর এখন তো রিশি কলেজ লাইফ শেষ করে বিজনেসের কাজে নিযুক্ত।এসব ভাবনা ভাবতে ভাবতে রিশি এক প্যাকেট সিগারেট শেষ করে ফেলেছে। তারপর খালি প্যাকেটটা ফেলে দিয়ে ঘরে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে অফিসের কিছু কাজ করতে বসে।
__________
তনিমা এখন অনেকটা সুস্থ। সে ঠিক করেছে এবার বাড়ি ফিরে যাবে।কিন্তু কেউ তাকে যেতে দিতে চাইছে না।একা মেয়ে একটা বাড়িতে কী করে থাকবে।সবাই চাইছে তনিমা এখানেই থেকে যাক।কিন্তু তনিমা কিছুতেই শুনল না কারোও কথা। বোনের শ্বশুর বাড়িতে থাকাটা তার একদমই পছন্দ হচ্ছে না। তাই সে তনয়াকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করিয়েছে। কাল তনিমা চলে যাবে তাদের বাড়িতে। তনয়ার খুব চিন্তা হচ্ছে। বোনটা একা একা কী করে থাকবে ওই বাড়িতে? মন খারাপ করে তনয়া চুপচাপ খাটের কোণে বসে রইল
চলবে,