#প্রেমের_উষ্ণ_ধোঁয়াতে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব___১৮
পরিবেশ শান্ত,নিরবতার মোহে আচ্ছন্ন। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত স্থানে এত নিশ্চুপতা নিশাতের অন্তঃকরণে ভয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সেই ক্ষণে তার মাথায় কিছু আসছিল না। বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল। ফলস্বরূপ মস্তিষ্কে যা এসেছে মুখে দিয়ে উগড়ে দিল ফটাফট। না জানি এই স্লোগান আজ ওর জন্য বৈশাখী ভয়ং””কর ঝড় বয়ে আনে! মনে মনে প্রবল আকুতি ঝড়ের মাত্রা তীব্র না হোক। চক্ষুকোলে ভয়ের হানা,কোণা দিয়ে প্রথমত পরখ করল প্রহরের মুখোভঙ্গি। থমথমে অবস্থা আদলের,ঠোঁটের কোণ ঈষৎ বাঁকানো,শানিত চাউনি। ওর অভ্যন্তরে অকস্মাৎ বজ্রপাত হলো আগত তুফানের পূর্বাভাস পেয়ে। কিন্তু ভেতরকার সত্তা কঠিন প্রতিবাদ করে উঠল,’ একদম ভয় পাবি না প্রহর ভাইকে। উনি সবসময় তোর অপ*মান করে। বেশ করেছিস স্লোগানের মাধ্যমে পাল্টা অপ*মান করে। এখন যদি এই লোক কিছু বলতে আসে আরো কথা শুনিয়ে দিবি। আর কত বেক্কল, গাধী পদবি নিয়ে ঘুরঘুর করবি তুই নিশু? লজ্জা লাগে না তোর? গ্রো আপ ল্যাডি। বি স্ট্রং। এটা মানুষ, তোর প্রহর ভাই, জল্লা*দ না। ‘
ক্ষনিকের নিমিত্তে জোগানো সাহস ঠুনকো প্রমাণিত হলো। ফোঁস করে উড়ে গেল, প্রহর সশব্দে চেয়ার সরিয়ে ওঠে দাঁড়াতেই। তনুজাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
‘ আমাকে যেতে হবে মিস তনুজা। একটা মিটিং আছে। পরে কথা হবে। ‘
তনুজা এতক্ষণ গালে হাত দিয়ে বসেছিল, নিস্তব্ধতাকে মুহূর্তে সঙ্গী বানিয়ে নিয়েছিল সে। শ্রবণপথে অল্প সময়ের পরিচিত কণ্ঠস্বর ভেসে আসা মাত্র অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। তাজ্জব বনে গেল নিশাত। তনুজার হাসিতে মনে হচ্ছে রেস্টুরেন্ট সহ কাঁপছে। কি বিদঘুটে হাসি! সুন্দরী নারীরও ত্রুটি থাকে। এই যে তনুজার হাসি শুনলে মানুষের অন্তরআত্মা কেঁপে উঠবে,মাথা ধরে যাবে তাৎক্ষণিক।
অতিরিক্ত হাসির কারণবশত তনুজার অক্ষিকোটরে জলের সঞ্চার। হাত দিয়ে প্রহরকে দাঁড়ানোর জন্য ইশারা করে। টেবিল থেকে পানির বোতল উঠিয়ে কয়েক ঢোক পান করেই ক্ষান্ত হলো সে। অতঃপর রয়েসয়ে, ধীর গলায় বলে উঠল,
‘ নিশির স্লোগান টা অনেক সুন্দর ছিল। আপনার কাজিন খুব ট্যালেন্টেড প্রহর সাহেব। আরেকটু হলে শিউর স্ট্রোক হয়ে যেত আমার। ভাবছি সমীরণ ভাইয়ার জন্য একে হায়ার করব। আমার ভাইয়ারও ইলেকশনের জন্য এরকম একজন ট্যালেন্টেড ব্যক্তি প্রয়োজন। আমি চাই সমীরণ ভাইয়া মুহূর্তে মুহূর্তে হার্ট অ্যাটাক করুক। নিশি আমার ভাইয়ার স্লোগানিস্ট হবে? ‘
এহেন প্রস্তাবে নিশাত ঘাবড়ে গেল,অপ্রতিভ হলো তক্ষুনি। তনুজা কি মজার ছলে বলছে! নাকি সিরিয়াস! দ্বিধাদ্বন্দ্বের পাঠ তনুজা চুকিয়ে দিল। বলল পুনশ্চঃ
‘ হেই,আমি কিন্তু সিরিয়াস। তোমার ট্যালেন্ট টা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আরেকটু প্র্যাক্টিস করলে খুব ভালো ভালো স্লোগান লিখতে পারবে। প্লিজ,বিকাম মাই ব্রাদারস স্লোগানিস্ট। ‘
অনুরোধসূচক বাক্যটা উচ্চারণ করে নিঃশ্বাস পর্যন্ত ফেলতে পারল না সে। প্রহরের ঝাঁঝালো কণ্ঠ শুনে ভড়কে গেল। দাঁতে দাঁত চেপে গর্জন করে প্রহর,
‘ নো,শি ইজ অনলি মাইন। তাকে কখনও অন্য কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না। স্লোগান কেন? কোনো কিছুতেই না। প্রিয় মানুষ, প্রিয় জিনিসের ভাগাভাগি করি না আমি। ‘
তনুজার শ্বেত বর্ণ চেহারায় মলিনতার স্পর্শ লেগে গেল। প্রহরের এমনতর ব্যবহার ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করে নি সে। নিষ্প্রভ স্বরে নিজেকে বুঝ দিতেই বলে উঠল,
‘ ওহ,বুঝেছি। ভাইয়ার সাথে আপনার শ*ত্রুতা বলে শেয়ার করবেন না। ইট’স ওকে। আমি মজা করছিলাম। বাই দ্যা ওয়ে শি ইজ সো কিউট। আর ছোট ছোট কাজিনগুলো সবসময় বেশ প্রিয় হয়,আলাদা মায়া কাজ করে তাদের প্রতি। বোনের জন্য ভাইয়ের মায়া কাজ করবে না তো কার করবে? তাছাড়া প্রতিপক্ষের ফেভারে বোনকে ব্যবহার করা যায় না। ‘
‘ কাজিন উচ্চারণ করেছি,একবারও কি “বোন” শব্দটা ব্যবহার করেছি?’
দৃঢ়, ভারী গলা শুনল নিশাত ও তনুজা। তনুজার মস্তিষ্কের নিউরন সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। খানিক পূর্বের প্রহরের সঙ্গে বর্তমান প্রহরকে মিলাতে পারছে না। মনোমধ্যে রচিত করল সমীরণের সাথে পরিচিতির পথ প্রচন্ড কাঁটাযুক্ত বলেই তার নাম শুনে মেজাজ চড়ে গিয়েছে প্রহরের। বুঝানোর ভঙ্গিতে বলতে লাগল,
‘ আপনি কিছু মনে করবেন না, প্লিজ। এখনই চলে যাবেন? একটু থাকলে হয় না? ‘
‘ আপনি কি জানেন না আমার অর্ধাঙ্গিনী হলে আপনাকে এই অল্প সময়েই স্যাটিসফাইড হতে হবে?’
‘ জানি। রাজনীতিবিদের বউয়ের জন্য সময় কম হবে,এটা স্বাভাবিক ধরে নিলাম আমি৷ পরে দেখা হবে তাহলে। ওহ হ্যাঁ, আরেকটা কথা। পরশু দিন আপনাদের সবার দাওয়াত আমাদের বাড়িতে। তুমিও এসো নিশি। ‘
প্রহর কোনোরকম বাক্য বিনিময় করল না। যেই পথে নিশাতকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে এসেছিল সেই পথে ওর কোমল কব্জি চেপে ধরে চলল ফের। যাওয়ার সময় বিল চুকিয়ে গেল। নিশাত একবার ফিরে তাকিয়েছিল তনুজার দিকে,মায়া হয় নি। বরং তনুজার অপ্রস্তুত, বিষন্ন চেহারা দেখে বেশ শান্তি পেয়েছে ভেতরে ভেতরে। প্রহরের অলক্ষ্যে, অগোচরে নিঃশব্দে হেসেছে। মাথায় শুধু একটা শব্দ কিলবিল করছে অনেকক্ষণ যাবত সে তার প্রহর ভাইয়ের প্রিয়, অতীব প্রিয় মানুষ। নিজ চক্ষে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে ঘটনাটা, ভুল শুনেছে যেন কান দুটো। বারংবার মনে পড়ছে,অদ্ভুত সুখ সুখ অনুভূতিপ্রবণ মুহূর্তটা স্মৃতি হয়ে রবে চিরকাল।
গাড়ির কাছে এসে প্রহর ওকে পুনর্বার বাহিরে দাঁড় করিয়ে পাঞ্জাবি পাল্টে নিল। পূর্বের সফেদ পাঞ্জাবিটা জড়ালো সৌষ্ঠবপূর্ণ দেহে। নিশাত হতবিহ্বল, নির্বাক। এটা যখন পড়বেই তাহলে শ্যাওলা কালার পড়ে যাওয়ার কী দরকার ছিল! তিনি কি জানেন? শুভ্র পাঞ্জাবিতে নারীর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া থমকে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। প্রবল আগ্রহ থেকে জিজ্ঞেস করে বসল,
‘ আপনি এটা পড়ে যান নি কেন?’
প্রহর তীক্ষ্ণ নজর নিক্ষেপ করল। গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করে পাল্টা,
‘ কেন? তোর কোনো সমস্যা? ‘
নিশাত সাফাই গাইতে লাগল,
‘ না,না। এমনি জানতে চাইলাম আরকি। ‘
‘ তনুজা আমায় সামনাসামনি সাদা পাঞ্জাবি পড়া দেখলে যদি অতিরিক্ত ক্রাশ খেয়ে বেহুঁশ হয়ে যেত? সেজন্য পড়ি নি। কারণ আমি জানি আমি কতটা সুন্দর। তোর কু দৃষ্টিও কিন্তু দেখি আমার ওপর। এভাবে তাকিয়ে আমাকে বেসামাল করিস না। আমি বেসামাল হলে,পরে মামু জান মাম*লা দিবে আমার নামে ঠিক আগের মতো। ‘
নিশাত লজ্জায় কুঁকড়ে গেল। সে নাহয় তাকায় প্রহরের দিক,কিন্তু কু দৃষ্টিতে নয়। বরঞ্চ সুন্দরের চক্ষে। শেষের কথাটা ঠিকঠাক বুঝে নি ও। প্রহর ভাইয়ের কিছু কিছু কথা তার মাথার উপর দিয়ে অতিক্রম করে,স্থায়ী হয় না মস্তিষ্কে। গাড়ি এসে ব্রেক কষে পিংকির শ্বশুর বাড়ির সম্মুখে। ও নেমে দাঁড়াতেই প্রহর যাওয়ার রাস্তায় বাঁধা হলো। লহু কণ্ঠে স্পষ্ট বলল,
‘ রাস্তায় আসন পেতে বস। ‘
নিশাত স্তব্ধ। গলা শুকিয়ে যায়। বিচলিত হয়ে উঠল,
‘ কেন প্রহর ভাই? ‘
প্রহর হাসল মৃদু। হাসিটা প্রচন্ড পৈশা*চিক মনে হলো ওর। ঝড় কি তবে আগমন ঘটিয়েছে! অন্দরমহলে চিন্তাদের মেলা বসলেও বাহ্যিকভাবে শক্ত থাকল। ভয় পেলে ভয় আরও জেঁকে ধরে। নিশাত পণ করেছে ভয় প্রকাশ করবে না আর।
‘ তুই মারা*ত্মক একটা স্লোগান দিয়ে বাজিমাত করেছিস। আমার তখনই তোকে একটা নোবেল দিতে ইচ্ছে জেগেছিল। যেহেতু রাস্তায় রাস্তায় কাঁথা দিলে বড় মন্ত্রী হতে পারব,তাই শুরুটা তোকে দিয়েই করা হোক। বসে পড়। ‘
ঠাঁই দাঁড়িয়ে নিশাত। দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ফেলে বিড়বিড় করল, ‘ বসব না। ‘
প্রহর হিসহিসিয়ে উঠল। রোষপূর্ণ চাহনি ছুঁড়ে মা*রল। কাঠিন্য মেশানো গলায় বলল,
‘ তাহলে সারারাত এখানে দাঁড়িয়ে থেকে পা ব্যথা বানিয়ে ফেল। ‘
ফুঁপিয়ে ওঠে নিশাত। অসহ্য লাগছে ওর প্রহরকে। এত কঠোরতা, অপ*মান সহ্য হয় না। স্বরনালি কেঁপে কেঁপে ওঠে,
‘ আপনি আমার সাথে এমন করেন কেন?’
প্রহরের আলস্যহীন জবাব,’ শান্তি পাই তাই।’
নিশাত দমল না। নড়ল ওষ্ঠযুগল ঈষৎ,
‘ শান্তি? ‘
‘ হু। ‘
বডিগার্ডদের মধ্য হতে একজন একটা কাঁথা নিয়ে হাজির হয়। নকশিকাঁথা। সুন্দর ফুল করা তাতে। প্রহর কাঁথাটা হাতে নিয়ে ছেলেটাকে লক্ষ্য করে আদেশ করল,
‘ তোমরা গাড়ি নিয়ে গলির মোড়ে থাকো,আমি আসছি। ‘
‘ ওকে স্যার। ‘
নিশাত নত মস্তকে দাঁড়িয়ে রইল। পরক্ষণেই চমকে গেল ও। বিস্ফোরিত নয়নে তাকাল নিম্ন তলে। ওর সামনে এক হাঁটু গেড়ে বসেছে প্রহর। ইশারা করছে মুখোমুখি বসবার,চোখভর্তি মুগ্ধতা। উপেক্ষা করতে পারল না ও সেই ইশারা। দ্রুত বেগে বসে পড়ে সামনে। তাড়াহুড়োয় ব্যথাও পেল একটু। প্রহর ব্যতিব্যস্ত গলায় অনবিরত জিজ্ঞেস করে,
‘ কোথায় ব্যথা পেয়েছিস?’
নিশাত বিস্ময়কর দৃষ্টিতে চাইল এক পলক। প্রহর ভাই চিন্তা করছে ওর জন্য? এটা সত্যি? প্রহর ভাইকে একটা চিমটি মে*রে দেখতে হবে স্বপ্ন কি-না! মনগড়া ইচ্ছে বাস্তবায়ন করে ফেলল মুহূর্তেই। গোপনে হাত বাড়িয়ে আস্তে একটা চিমটি কা-টল সুপুষ্ট বা হাতের বাহুতে। প্রহর ব্যথা পেয়েছে বলে মনে হয় নি,উল্টো ধমকে উঠে,
‘ এত আস্তে চিমটি কা*টলি, মনে হচ্ছে তোর শরীরে মশা মা-রারও শক্তি নেই। পরের বার জোরে দিবি যেন বদলে তোকে সুদে-আসলে ফিরিয়ে দেওয়ার মতো ইচ্ছে জাগে। এখন কাঁথাটা নিয়ে সোজা বাসায় ঢুকবি৷ সাবধান, ওই পাখিওয়ালার সাথে কথা বলবি না। নয়ত একদিন দেখবি তোকে পাখি বানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। বুঝেছিস?’
সে বাধ্য মেয়ের ন্যায় প্রতুত্তরে জানায়,’ জি। ‘
গেইট অব্দি গিয়ে ঘাড় বাঁকিয়ে চাইল নিশাত। প্রহর তখন গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। হাতে জ্বলন্ত একটা সিগা*রেট যোগ হয়েছে। আচ্ছা কাল দেখা পাবে সে এই মানুষটার? গ্রামে আর কবে যাবে? মন কুঠুরিতে দশ থেকে বিশ খানেক প্রশ্ন সমেত নিজের প্রস্থান ঘটায় ও।
———————————————-
সময়টা হেমন্তকাল। মেঘের ভেলা চলছে বিশালাকার অন্তরিক্ষে। চারিধারে সাদা মেঘের উপস্থিতি। নিশাত স্কুল থেকে ফিরে এসে রান্নাঘরে উঁকি দিল। রোকেয়া,ছোট ফুপি,পিংকির আম্মা ব্যস্ত হাতে পিঠা বানাচ্ছেন। বিকেলে পিংকির শ্বশুর বাড়ির লোক আসবে। সেই যে বৌভাতের পর এলো, আর আসে নি গত এক মাসেও। এই এক মাসে ওর সতেরো বছরের জীবনে এক অপ্রত্যাশিত, অদ্ভুত ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এক মাস যাবত সে অপ্রিয় হতে প্রিয় হওয়া একটা মানুষের সাক্ষাৎ পাচ্ছে না। সেদিন পিংকির বৌভাতে দেখে নি ও মানুষটাকে। নিজের অনুভূতি দমিয়ে না রাখতে পেরে হাজার হাজার বার মোবাইল চেইক করেছে ফোন,মেসেজ এলো কিনা। টুনিকে অসংখ্য বার জিজ্ঞেস করা হয়ে গিয়েছে ওর নামে কোনো বেনামী চিঠি এলো কিনা সেদিনের ন্যায়। বাকি থাকল শুধু শিমুল। কয়েকদিন ধরে সে স্কুলে আসছে না। একটাবার ফোন দিয়ে স্কুলে না আসার কারণ জিজ্ঞেস করার বাহানায় সেই ব্যক্তির খোঁজ নিলে মন্দ হয় না। রুমে এসে ড্রেস চেঞ্জ না করেই বুকের উচাটন নিয়ে কল দিল। রিসিভ হওয়া মাত্র ব্যগ্র গলায় বলে উঠল,
‘ স্কুলে আসছিস না কেন?’
‘ ভালো লাগছিল না। কাল থেকে যাব। তুই হঠাৎ ফোন দিলি?’
‘ না,এমনি। ‘
‘ আচ্ছা কাল এসে কথা বলব। ‘
নিশাত অস্থির হয়ে গেল। অনেক কষ্টে গুটি তিনেক শব্দ মিলিয়ে একটা বাক্য আওড়ালো ‘ একটা কথা ছিল। ‘
‘বল। ‘
কীভাবে জিজ্ঞেস করবে ও বুঝতে পারছে না। কিন্তু মনকেও আর মানাতে পারছে না। ব্যক্ত করেই ছাড়ল,
‘ প্রহর ভাই গ্রামে আসেন না?’
শিমুল সঙ্গে সঙ্গেই গলা উঁচিয়ে বলল,
‘ সূর্য আজ কোন দিকে উঠেছে? নিশু জিজ্ঞেস করছে প্রহর ভাইয়ের কথা! যেটা এতবছরে প্রথম হলো। ভাইয়ার তিলবতী কি ভাইয়াকে মিস করছে?’
নিশাত নিজেকে আঁটকে রাখতে ব্যর্থ হলো। তড়তড় করে বলে ওঠে,
‘ প্রহর ভাইকে ছাড়া হঠাৎ আমার এত কষ্ট হচ্ছে কেন শিমুল? ঘুমাতে পারছি না,খেতে গেলে বমি আসে। ওনার দেওয়া কাঁথাটা গায়ে দিয়ে ঘুমালে মনে হয় আমার দেহে তাঁর সুবাস লেগে আছে। উনি কেন আসেন না গ্রামে? আমার মতো উনি আমাকে মিস করেন না বলে? আমি ভুলে গিয়েছিলাম তাঁর তো তনুজা আছে। ‘
শিমুল আফসোসের সুর তুলল,’ আগে বলতি ভেবে দেখতাম। এখন তো ভাবী ঠিক হয়ে গেছে। এ মাসেই ভাইয়ার এনগেজমেন্ট, দাওয়াত দিতে আসবে বোধহয় মামার বাড়িতে। ‘
#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)