গল্প :- বড্ড ভালোবাসি
পর্ব :- ০৪
লেখা :- Labiba Islam Roja
:
:
:
:
এই মেয়ে তোমার সাহস তো কম না।কলেজে ঢুকতে না ঢুকতেই সিনিয়রদের হুমকি দিয়ে কথা বলছো।তুমি জানো কার সম্পর্কে কি বলছো।
.
হুম জানি আমি একটা রাক্ষুসের সমন্ধে কথা বলছি।আর আমার সাহসটা বরাবরই একটু বেশি।যবে থেকে আমি কলেজে পা রেখেছি তবে থেকে আমার পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করে যাচ্ছে।ছেলেরাও যে এত ঝগড়া করতে জানে উনাকে না দেখলে আমি জানতেই পারতাম না।(একবারে বলে দিলাম।?)
.
কি বললে তুমি।কাকে রাক্ষুস বলছো
.
তিশা ফিসফিস করে বলল _দেখ রোজ এই লিনা কিন্তু খুব ডেঞ্জারাস। ওর সাথে লাগতে যাস না।ও তোর সাথে কি করবে তা তুই ভাবতেও পারছিস না।চল এখানে থেকে চলে যাই।
.
না আমি কিছুতেই যাব না।তোর যাওয়ার হলে তুই যা।আমি আজ এর শেষ দেখেই যাবো।
.
আবিরঃলিনা বি কুল।ও বাচ্চা মেয়ে বুঝতে পারে নি।
.
লিনাঃদেখতে বাচ্চা হলে কি হবে কথা তো বলে শাকঁচুন্নির মতো।দেখ রিহান সমন্ধে কি বলল।
.
(কেন শুনতে পাস নি।রিহান কি তোর জামাই লাগে যে তোর এত ফাটছে যাকে বলছি কই সে তো কিছু বলছে না। চুপচাপ দাড়িয়ে আছে আর তুই নেচে মরছিস রাক্ষসী)
কি বললেন আমি শাকঁচুন্নি।আমি না আপনি শাকঁচুন্নি,রাক্ষসী ও বলা যায় ।ভাববেন না সিনিয়র বলে কি জুনিয়রদের সাথে যা ইচ্ছে তাই করবেন।
.
মেয়েটাকে থামিয়ে আবির ভাইয়া বলে উঠলেন_
.
আবিরঃআচ্ছা ছেড়ে দে বুঝতে পারে নি।নতুন কলেজে এসেছে তাই ওর সম্পর্কে কিছু জানে না।না জেনে বলে ফেলছে।
.
নাহ ওকে এভাবে ছেড়ে দিলে চলবে না।পরে মাথায় উঠে নাচবে।এর জন্য তো ওকে শাস্তি পেতেই হবে।
.
যাক বাবা আমি আরো কলেজে নাচার রুম খুজঁচ্ছিলাম।আমার চিন্তা শেষ হলো এবার পেয়ে গেছি। এখন থেকে তোমার মাথায় উঠে নাচবো আর রাগ করো না।(মুচকি হেসে)
.
লিনাঃঅসভ্য,বেয়াদব মেয়ে।চুপ একদম চুপ।এক্ষুণি রিহান কে সরি বলো।
.
হোয়াট!আমি বলবো সরি নো ওয়ে।দোষ উনি করেছেন তাই যদি কাউকে সরি বলতেই হয় তাহলে উনাকেই বলতে হবে।
.
লিনাঃআই সে সরি(চিৎকার করে)
.
(এহহ কত যেন আমি তোর চিৎকারের দার দারি।)নো ওয়ে।বলবো না বলবো না।
.
সত্যি মেয়েটাকে ঝগড়া করার সময়ও কি দারুণ লাগে।ওর দিক থেকে চোখই সরাতে পারছি না।
.
আবিরের কথায় ধ্যান ভাঙলো।
আচ্ছা রোজ তোমরা যাও কাউকে সরি বলতে হবে না।
.
লিনাঃতুই এসব কি বলছিস?এভাবে ওকে ছেড়ে দিবি?
.
রিহানঃকে বলল এই পেত্নীকে এভাবে ছাড়বো। এই পেত্নী দাড়াও। তবে শুধু সরিতে আমার হবে না।আমি ওকে দিয়ে আরো কিছু করাতে চাই।
.
উনার কথায় দাড়িয়ে পড়লাম।চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।
.
আবিরঃকি করতে চাইছিস তুই?কেন ওর সাথে এমন করছিস। বাড়াবাড়ি কিছু করিস না।
.
রিহানঃ(ফিসফিস করে)আর কেউ কিছু জানুক আর নাই বা জানুক তুই তো সবটা জানিস।ওকে রাগলে আরো সুইট লাগে আচ্ছা ও কি সেটা জানে।দেখ রাগে গাল গুলো কেমন লাল হয়ে আছে।একদম টমেটোর মতো।দেখলেই খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে।
.
(ওই রাক্ষস টা আবির ভাইয়ার সাথে কি এত কথা বলছে।যা বজ্জাত ছেলে কে জানে কি ফন্দি আটছে।)
.
লিনাঃহ্যাঁ রিহান বল এই শয়তান মেয়েটার সাথে আর কি করতে চাস?
.
রিহানঃআনমনেই বলে উঠলাম কিস।সবাই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।না মানে আমি অনেক্ষণ এখানে দাড়িয়ে আছি।আর তার জন্য এখন আমার পা খুব ব্যাথা করছে।যেহেতু পেত্নীর জন্য আমার পা ব্যাথা স্টার্ট হয়েছে সেহেতু এই পেত্নী এক ঘন্টা আমার পা টিপে দেবে।বুঝতে পেরেছো পেত্নী।এবার কাজে লেগে পরো
।
.
নো ওয়ে।আমি পারবো না।আমি আপনাকে নাতো আসতে বলেছি আর না তো দাড়িয়ে থাকতে বলেছি।আপনি নিজের ইচ্ছায় এখানে এসেছেন।তাই আপনার পা আপনি রাখবেন নাকি করলে কেটে ফেলে দিবেন সেটা আপনি বুঝে নিন।তবে আমি একটা টিপস দিতে পারি বেশি প্রবলেম করলে পা টা কেটে ফেলতে পারেন।কি আইডিয়া টা ভালো না।অবশ্য এই রোজের আইডিয়া কখনও খারাপ হতেই পারে না। এতে আপনার ভালোই হবে(দুষ্টমি করে)
.
রিহানঃএই পেত্নী মুখ কম চালাও আর হাতকে কাজে লাগাও।হ্যারি আপ। (আমার দিকে এগুতে এগুতে)
.
(ও আল্লাহ আমাকে বাচাঁও এই রাক্ষুস টার হাত থেকে।পেছাতে পেছাতে দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেলাম)দ..দেখুন আমার ক্লাসের লেইট হচ্ছে।আমাকে যেতে দিন।
.
রিহানঃতো যাও না কে আটকে রেখেছে।লক্ষী মেয়ের মতো কাজটা কমপ্লিট করো আর চলে যাও।যতক্ষণ কাজটা কমপ্লিট না করছো ততক্ষণ কিছুতেই যেতে পারবে না।(একদম আমার কাছে এসে দুহাত দেয়ালের উপর রেখে)
.
(ওরে হারামজাদা তুই আটকে রেখে আবার বলছিস কে আটকে রেখেছে।আমি তো যাবই আর তুই আর তোর রাম ছাগল টিম কিছুই করতে পারবে না। সোজা পথে কথা না শুনলে অন্যভাবে কাজটা করবো।)ভয়ে ভয়ে যেতে দিন না প্লিজ।
.
রিহানঃ(এখন তোমার সাথে ভয়ঙ্কর কিছু করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু) আমিও তো চাই তোমাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু তুমিই যদি দেরি করো তাহলে আমি আর কি করবো।(বাকাঁ হেসে)
তাড়াতাড়ি করো(ধমক দিয়ে)
.
মাথা ঘুরে উনার উপর ঢলে পড়লাম।আর উনি নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে আমাকে ধরলেন।এবার উনি কিছু বুঝে উঠার আগেই দিলাম উনার বুকে কামড় বসিয়ে।আহহ বলে উঠে আমাকে ছাড়তেই দিলাম এক দৌড়।এবার আর আমার দৌড় আর দেখে কে।
.
আমার পেছন পেছন তিশাও চলে এলো।পেছনে তাকিয়ে দেখি রাক্ষুস টা দাঁতে দাতঁ চেপে আমার দিকে তাকাচ্ছে। তুই যা ইচ্ছে তাই কর।বাবা আজকে জোর বাচাঁ বেচেঁ গেছি।
.
লিনাঃকি হয়েছে রিহান এভাবে চেচাঁলি কেন?আর ও এভাবে চলে গেল কিছু বললি না।
.
রিহানঃচিন্তা করিস না ওকে আমি পরে দেখে নেব।(আবিরকে ইশারা দিয়ে ওদের যেতে বললাম
)
.
আবিরঃওকে তোরা ক্লাসে যা আমি আর রিহান একটু আসছি।
লিনা সবাইকে নিয়ে চলে গেলো।
.
আবির হাসতে হাসতে বলল কি দস্যু মেয়ে।আমি তো ভাবতেই পারছি না ও এমন কিছু করতে পারে। সিরিয়াসলি বলছি ভাই এটা মেয়ে নাকি সত্যি পেত্নী।তোর কাছ থেকে বাচাঁর জন্য কি অভিনয় টাই না করলো।খুব লেগেছে নিশ্চয়ই।
.
না রে লাগে নি।আজ ওকে আমার খুব ছুতে ইচ্ছে করছিলো।জানিস যখন ওর সামনে ছিলাম নিজেকে কনট্রোল করতে পারছিলাম না।অনেক কষ্টে নিজেকে আটকে রেখেছি।ও আমাকে কামড় হোক আর যাই হোক
সেচ্ছায় আমাকে প্রথম স্পর্শ করলো।এটা আমার কাছে আমার ভালোবাসার প্রথম স্পর্শ।যা আমি কখনও চাইলেও ভুলতে পারবো না।(মুচকি হেসে)
.
.
চলবে……
.