গল্পঃ #বাজে_ছেলে
লেখিকাঃ #তৃধা_আনিকা
২য় পর্ব
এর মধ্যে অাবিদের জন্মদিন চলে এলো।ব্যাচের সবাই ওর বাসায় দাওয়াত পেলো।সন্ধ্যার পর দেখে, অামার যাওয়া হলো না।অামি তেহজীবের হাত দিয়ে গিফট পাঠালাম, হুমায়ুন অাহমেদ স্যারের বই, কুটু মিয়া।বইয়ের উৎসর্গ পৃষ্ঠায় লিখে দিলাম, তেহজীবকে দেখিয়েই লিখলাম,
“অাবিদ ভাইয়া, অামার বিনুনিকে লেজ বলবানা।ইট’স নট মাই লেজ, ইটস মাই ইমেজ ”
শুভ জন্মদিন। ”
পরেরদিন ক্লাসে…
—তেলিবতী, তুমি কই ছিলা কালকে????
—অামার জ্বর ছিলো।
—দাম দেখাও।দাম দেখাবা না।তোমার দাম ১০ টাকাও না অামার কাছে।
অামার মাথায় রক্ত চড়ে গেলো।অামি ওর বইয়ের ব্যাগ টেবিল থেকে ফেলে দিলাম।ও অামার সামনের বেঞ্চ ফেলে দিলো।সবাই ধমকাধমকী করে থামালো। রাগে অামার মনে হচ্ছিলো, ওর কলার ছিড়ে ফেলি।
অাবিদ সবাইকে ক্লাস শেষে থাকতে বলল।
সবাই থাকলো।সে অামার দেওয়া বইটা সবাইকে দেখিয়ে বলল,
–গতকাল অামার জন্মদিনে এইটা এক মাথা খারাপ অহংকারী মেয়ে উপহার দিছে।তাঁর ধারণা অামি বইয়ের কাঙাল।সে গিফট দিয়ে অামাকে উদ্ধার করেছে!এই বইটা অামি এখন জ্বালিয়ে ফেলবো।
সব ছেলেরা এতে যেনো ভীষণ মজা পেলো।
–কে দিছে কে দিছে বলে, বই টানা হেঁচরা করে ছিড়ে ফেললো।
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
অাবিদ নাম ধাম কিছু বললো না।তেহজীব জানতো, ও অাবিদকে থামাতে না পেরে, অামাকে নিয়ে চলে অাসতে চাইলো।
অামি অাসলাম না।
সবার সামনে অাবিদ বইটা পুড়িয়ে ফেললো।
অামি স্তব্ধ হয়ে ঠায় দাড়িয়ে থাকলাম।লজ্জায় অার রাগে অামি পাথর হয়ে গেলাম।
অামার কান্না পাচ্ছিলো, গাঁ কাপছিলো।
কোনোমতে বের হয়ে এলাম।
পরের দুই ক্লাসে গেলাম না। ব্যাচ বদলে ফেললাম।
এক সপ্তাহ পর মনে হলো,অাবিদ থেকে বাঁচা গেলো।কিন্তু না, সে অামার কেমিস্ট্রি ব্যাচে এসে ভর্তি হয়ে গেলো।তেহজীব নেই! সে পুরাই স্বাধীন।অামি দেখেও না দেখার ভান করলাম।
একদিন ক্লাস শেষে অামি রিক্সায় উঠামাত্র অাবিদ অামার ব্যাগ ধরে টান দিলো।অামি রিক্সা থেকে পরে গিয়ে হাটু ছিলে ফেললাম।
সবাই তাজ্জব বনে গেলো।ও সবাইকে বুঝালো ও এটা না দেখেই করেছে।
সবার সামনে সরি টরি বললো।
কেমিস্ট্রি ব্যচে সে অামার নাম তেলিবতী প্রচার করে ফেললো।
রাগে একদিন সিড়িতে ওর গেঞ্জি ধরে টান দিলাম।ও পড়ে গেলো, উঠে এসে টেনে অামার স্কার্ফ খুলে ফেললো। অামি ভয় পেয়ে গেলাম।
চলে এলাম। সারারাত ঘুম হলো না। ওরা ওখানে স্থানীয় ধনী, প্রভাবশালী, অামরা ভাড়াটে।
পরেরদিন অামি নিজ থেকে সরি বললাম।
–তুমার ২টাকার সরি অামার দরকার নেই।
স্টুপিড মেয়ে।
—তুমি তো অামার পেছনে লাগতেই এখানে এসেছো! তেহজীব জানে?
–অামি কি কাউরে ডরাই??
–না ডরাইলে তেহজীবকে সাথে নিয়ে অাসতা।
কাপুরুষের কাপুরুষ!
—–কামহিলার কামহিলা।
অামি হেসে ফেললাম। ব্যস সেই থেকে লাগালাগি কমলো।
একদিন অাবিদ অামার সাথে রিক্সায় উঠে পড়লো।হুড তুলে দিয়ে, অামার কোমড় জড়িয়ে ধরলো।অামি হাত সরিয়ে দিলাম
—তেলিবতী, হাত সরালা ক্যান??
—প্লিজ অাবিদ অামি তেহজীব না।
অাবিদ রিক্সা থেকে নেমে গেলো।অামার অস্বস্তি হচ্ছিলো কেনো জানি।
এর মাঝে বাবা বদলি হয়ে গেলেন। অামারও বোর্ড মইগ্রেশন করে চলে অাসতে হলো।
চলে অাসার কথা কাউকে বললাম না।শুধু স্যারদের বললাম।
অাবিদ জেনে গেলো কিভাবে যেনো,
অামার হাতে র্যাপিং পেপারে মুড়ানো একটা বই দিয়ে বললো,
—ভেতরে একটা মেয়েদের খারাপ ছবিঅলা বই দিছি।
—-ছিঃ অাবিদ।
—অারে বাঁচতে হলে, জানতে হবে।
—-ওকে।অাামি হেসে ফেললাম।
—তুমি অনেক খারাপ তেলিবতী!!
— সেইম টু ইউ অাবিদ।
–তেলিবতী, বইটা পড়ো কিন্তু।
অামি বাসায় চলে অাসলাম!!
(চলবে)
.
#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।