বিবাহিত বর পর্ব ৩

#বিবাহিত_বর
#৩য়_পর্ব
#অনন্য_শফিক



জুয়েল এবার বিপদেই পড়ে গেল।না বলে উপায় নেই দেখে সে এবার মুখ খুললো।সে বললো,’আমার আগের স্ত্রীর নাম জবা।জবা ছিল আমার ছোট ফুপির মেয়ে।তার সাথে আমার সংসার জীবন ছিল সাড়ে চার বছরের।
এই সাড়ে চার বছর সে শুধুমাত্র কাগজের বউই ছিল আমার। বাস্তবে সে আমার বউ ছিল না।
জবাকে আমি বিয়ে করতে নারাজ ছিলাম।সেও নারাজ ছিল আমায় বিয়ে করতে। কারণ তার একটি ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।আর সেই ছেলের চাকরি বাকরি করে নিজ পায়ে দাঁড়াতে অনেকটা সময়ের প্রয়োজন ছিল।তাই সে আগে থেকেই আমায় জানিয়েছিল বিষয়টা। কিন্তু আম্মা আর ফুপির জন্য পারিনি।আম্মা তার ননদের মেয়েকেই আমার জন্য বিয়ে করিয়ে আনবেন।আর ফুপিও তার মেয়েকে আমার কাছেই বিয়ে দিবেন।’
‘তারপর।’
জবা এবার তার মা বাবার কাছে হাত পা ধরে খুব কান্নাকাটি করতে লাগলো। কিছুতেই সে আমায় বিয়ে করবে না। কারণ ছোট থেকেই সে আমায় ভাইয়ের মতো দেখে এসেছে।
ফুপি ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন। তিনি এবার বললেন,’আচ্ছা ঠিক আছে। সমস্যা নাই। জুয়েলকে বিয়ে না করার ইচ্ছে হলে করবি না।অন্য ছেলেকে করবি।আমি আরো দশটা ছেলে দেখে তোকে বিয়ে দিবো।
জবা তো এবার আরো বড়ো বিপদে পড়লো। তাকে যে করেই হোক ফুপি বিয়ে দিয়েই দিবেন। এবং তার বেকার প্রেমিকের হাতে কিছুতেই মেয়েকে তুলে দিবেন না।
পরিস্থিতি ভালো না দেখে জবা হঠাৎ রাজি হয়ে গেল আমায় বিয়ে করতে। অবশেষে আমাদের বিয়ে হলো খুব ধুমধামে।’
জুয়েলের মুখ থেকে ওর প্রথম বিয়ের গল্পটা শুনতে বেশ ভালো লাগছিলো।তাই আমি আগ্রহ ভরা গলায় বললাম,’তারপর।’
জুয়েল আমার চোখের উপর তাকালো। তারপর আবার চোখ নীচ দিকে নামিয়ে নিয়ে সে আবার বলতে শুরু করলো।সে বললো
,’সেদিন ছিল আমাদের বাসর।আজকের চেয়ে বেশি সজ্জিত ছিল সেই বাসর ঘর। ফুলের গন্ধে মুখর হয়ে ছিল হাওয়া।মরিচ বাতির আলোয় আমি আর জবা বসেছিলাম খাটের উপর। তারপর যখন জবার হাতটা ধরতে যাবো ঠিক তখন জবা আমার পা শক্ত করে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।
আমি ভয়ার্ত গলায় বললাম,’জবা কী হয়েছে? শব্দ করে কাঁদলে লোকে কী বলবে?’
জবা তখন চুপ হয়ে গেল। তারপর ফিসফিস করে সে আমার পা ধরে রেখেই বললো,’জুয়েল ভাই,আমি আপনাকে কোনদিন স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবো না।প্লিজ আপনি আমার সাথে স্বামীর অধিকার ফলাতে চাইবেন না! আপনি আমার ভাই। আপনি আমায় বাঁচান। আপনি যদি আমার কথা না রাখেন তবে কিন্তু আমি মরে যাবো।বিঁষ খেয়ে মরে যাবো।’
কথাগুলো বলে চাপা গলায় কাঁদতে শুরু করলো জবা।আমি ওর হাতটা আমার পা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ওর হাত দুটো শক্ত করে ধরলাম।
জবা কাঁপছে। ভয়ে কাঁপছে।
আমি বললাম,’জবা, কোন ভয় নেই তোর।কী হলো তোর বলতো!আমায় বিয়ে করেছিস তুই খুশি মনে। কিন্তু এখন এমন করছিস কেন?’
জবা কান্নামাখা গলায় বললো,’আমি যে ছেলেটাকে ভালোবাসি তার নাম উল্লাস। উল্লাসকে ছাড়া আমি আর কাউকে গ্রহণ করতে পারবো না। শুধু মৃত্যুই পারবে উল্লাসের থেকে আমায় আলাদা করতে!’
‘কিন্তু তোর তো বিয়ে হয়ে গেছে এখন।উল্লাস কী তোকে মেনে নিবে?’
জবা বললো,’একশোবার মেনে নিবে।তার সাথে পরামর্শ করেই আমি আপনাকে বিয়ে করেছি।’
‘কিন্তু বিয়ে করে লাভ কী হলো তোর?’
জবা বললো——

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here