বৈধ সম্পর্ক সিজন ২ পর্ব ১৬

#বৈধ_সম্পর্ক
#সিজন_২
#পর্ব_১৬
#Saji_Afroz
.
.
.
কিডনি পাচারকারীর সাথে যুক্ত আতিক। কাল রাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সে স্বীকারও করেছে তার অন্যায়!
এমন একটা খবর শুনে সায়নী যেনো বিস্ময়ের শেষ পর্যায়ে চলে গেলো।
আতিকের মা একজন আদর্শ শিক্ষিকা। আর তার সন্তান হয়ে আতিক কিনা রোগীদের নিয়ে ব্যবসা করে চলেছিলো!
নিজের রুমে এসে ফোন হাতে নিয়ে আতিকের মায়ের নাম্বারে ডায়েল করলো সায়নী।
বেশ কয়েকবার রিং হবার পরে, একপর্যায়ে রিসিভ করে ওপাশ থেকে কান্নাজড়িত কন্ঠে আতিকের মা বললেন-
আমি জানি আপনি কেনো ফোন দিয়েছেন।
-পত্রিকা তে আতিক কে নিয়ে যা দেখছি তা কি ঠিক? নাকি কোনো ভুল বুঝাবুঝি বা আতিক কে কেউ ফাসাচ্ছে?
-এমনটা হলে আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউ হতোনা। আজীবন সৎ পথে চলেছি কিন্তু ছেলেটা যে এমন জঘন্য পথে চলে যাবে ভাবতে পারিনি।
-আতিক নির্দোশও হতে পারে।
-কাল বাসায় পুলিশ আসার পরে সে নিজেও তাদের বলছিলো, সে কোনো অন্যায় করেনি। কিন্তু আমি যখন ওর হাতটা আমার মাথায় রেখে কসম করে সত্য কথা বলতে বলি তখন সে আর মিথ্যে বলতে পারেনি।
.
সায়নী তার কথা শুনে চুপ হয়ে গেলো।
আতিকের মা আবার বললেন-
বড় আশা করে ছেলেটাকে ডাক্তার বানিয়েছিলাম, মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবে বলে। আর সে কিনা…..
কেনো সে আমার গর্ভেই জন্ম নিয়েছে!
.
আতিকের মা কে শান্তনা দেয়ার ভাষা নেই সায়নীর। তবুও তাকে শান্ত হতে বলে ফোনের লাইন কেটে বিছানার উপরে বসে পড়লো সে।
আফরান এতক্ষণ সায়নীর পাশেই ছিলো। সায়নীর দিকে তাকিয়ে সে জিজ্ঞাসা করলো-
সবটা সত্যি?
-হ্যাঁ।
বিশ্বাস করতে যদিও কষ্ট হচ্ছে কিন্তু সবটা সত্যি।
.
আফরানও সায়নীর পাশে বসে শান্ত ভঙ্গিতে বললো-
মিশিকারা ডাক্তার ছেলে পেয়েছে বলে কতোই না খুশি ছিলো।
.
ছলছল নয়নে আফরানের দিকে তাকিয়ে সায়নী বললো-
এখন কি জবাব দিবো আমি! অনেক আগে আমি পাবেল কে আশা দিয়ে ঠকিয়েছিলাম আর আজ তার মেয়েকে! পাবেল আমাকে ক্ষমা করতে পারবে?
-তখন তুমি পরিস্থিতির শিকার ছিলে আর আজ যা হয়েছে তাতে তোমার কোনো ভুল নেই। আতিকের মা-ই যেখানে নিজের ছেলেকে চিনতে পারেনি, তুমি কি করে চিনবে!
-যদি ভুল বুঝে আমাকে! ভয় করছে আফরান।
.
সায়নীর একটা হাত নিজের হাতের মুঠোয় মুষ্টিবদ্ধ করে আফরান বললো-
নির্ভয়ে তাদের সবটা জানাও। কিচ্ছু হবেনা।
.
.
.
বাড়ির সকল কে ড্রয়িংরুমে ডেকে আতিকের ব্যাপারে সবটা জানালো সায়নী।
সে তার মাথাটা নিচু করে সকলের উদ্দেশ্যে বললো-
আমি আসলে জানতাম না আতিক এমন হবে। আমার জন্য আগেও..
.
কথাটি বলেই থেমে গেলো সায়নী।
মিশিকা তার দিকে এগিয়ে এসে গম্ভীর গলায় বললো-
তোর জন্য কি? পাবেলের মন ভেঙেছে?
.
সায়নীর সাথে সকলেই নিশ্চুপ থাকলেও পাবেল বললো-
মিশিকা এসব কেনো তুলছো!
.
মিশিকা ফিক করে হেসে বললো-
আরে সায়নীর মুখটা দেখো কেমন হয়েছে!
.
সায়নীর হাত ধরে মিশিকা বললো-
তোর জন্যই কিন্তু আমি পাবেল কে পেয়েছি আর পাবেল আমাকে। আমরা অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি দুজনে। হুম, পাবেল প্রথমদিকে একটু দূরে দূরে থাকলেও এক সময় সবটা ঠিক হয়ে যায়। একে অপরকে ভালোবেসেছি আমরা। তবে কি জানিস? পাবেল কখনো তোকে দোষারোপ করেনি, তোর জন্য আফসোসও করেনি। তোর অবস্থাটা বুঝেছে আগে আর পরে তোর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলো। কেনো বল তো?
.
মৃদু হেসে সায়নী বললো-
তোকে যে সে পেয়েছে।
-হ্যাঁ।
-কিন্তু মিশিকা? মেহেনুবা তো আতিক কে পছন্দ করেছিলো।
-তাই বলে ওই খারাপ ছেলের সাথেই ওর থাকতে হবে! বিয়ের আগে সবটা ক্লিয়ার হয়েছি এটাই যথেষ্ট নয় কি!
-আমি সেটা বোঝাচ্ছি না। মেহেনুবা যদি আতিক কে ভালোবেসে থাকে, তবে সে তার সত্যিটা জেনে কষ্ট পাচ্ছে।
.
মেহেনুবা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে তাসু ও আরাফের মাঝখানে।
তার সামনে এসে মিশিকা বললো-
তোর জন্য ছেলের অভাব হবেনা মেহেনুবা। ওই ছেলেকে ভুলে যা তুই। ভালোবাসিস বলে এতবড় অন্যায় কে প্রশ্রয় দেয়ার মানে হয়না।
.
শান্ত গলায় মেহেনুবা বললো-
আমি আতিক কে পছন্দ করতাম, ভালোবাসতাম না আম্মু। বিয়ের পরেও ভালোবাসা যায় এটা তো তোমাদের দেখেই শেখা। আর আমি ভাগ্য বিশ্বাস করি। তাই বিয়ের আগেই এসব প্রেম বা ভালোবাসার মায়ায় জড়াতে চাইনি। আজ তার ফল পেলাম। আতিক কে ভালোবাসলে হয়তো কষ্ট পেতাম আমি। এখন পাচ্ছিনা।
.
সায়নীর দিকে তাকিয়ে মেহেনুবা বললো-
আন্টি আপনি একেবারেই মন ছোট করবেন না। আপনি তো আমার ভালোর জন্যই ডাক্তার ছেলে ঠিক করেছিলেন। তবে সময় থাকতেই যে সব সত্যি প্রকাশ পেয়েছে এটাই অনেক।
.
সায়নী মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে বললো-
হুম। তবে তুমি ভালো ছেলে পাবে। ভালো ডিসার্ব করো বলেই আতিকের সত্যিটা প্রকাশ হয়ে গেলো।
.
তাসু দুষ্টু একটা হাসি দিয়ে বললো-
আমার কিন্তু ওই আতিক ব্যাটারে পছন্দ ছিলোনা। ভালোই হলো যা হয়েছে। তার ছবি দেখে কোনো ক্রাশ ক্রাশ ভাব আসেনি।
.
তাসুর কথা শুনে আরাফ হেসে বললো-
সে এতোবড় একটা ক্রাইম করেছে আর তুমি আছো ক্রাশ ভাব নিয়ে?
-হু! ক্রাশ ভাবটা থাকলে অন্তত মায়া হলেও লাগতো।
-মায়া লাগার জন্য ক্রাশ!
.
উচ্চশব্দে হেসে উঠলো আরাফ। তার সাথে যোগ দিলো উপস্থিত সকলেই।
.
.
.
-আচ্ছা আরাফ? তোমার কেমন মেয়ে পছন্দ?
.
উপমার কথা শুনে আরাফ জবাব দিলো-
তোমার সাথে যেহেতু প্রেম করছি তোমাকেই পছন্দ।
-তার মানে আমার মতো মেয়ে পছন্দ?
-হু।
-আমার কোন জিনিসটা তোমার খুব ভালো লাগে?
-এই যে তুমি আমার পাশে কাউকে সহ্য করতে পারোনা। ধমক দাও। এটাই ভালো লাগে।
-কিন্তু অন্য কোনো ছেলে হলে এটাকে প্যারা মনে করতো।
-আমি মনে করছি এটা ভালোবাসা। স্রেফ ভালোবাসা।
-আর যে ধমক গুলো দিই এটাও ভালোবাসা?
-হু। আদর মিশ্রিত ভালোবাসা।
.
আরাফের হাতটা শক্ত করে ধরে উপমা বললো-
ভালোবাসি তোমাকে অনেক বেশি।
.
.
আগের কথা ভেবে বুক চিরে দীর্ঘ একটা শ্বাস বেরিয়ে আসলো আরাফের।
মুখে ভালোবাসি বললেই যে ভালোবাসা হয়না এটা আজ সে হারে হারে উপলব্ধি করতে পারছে।
তবুও যেনো মন মানেনা! ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে সেই উপমার কাছেই। কেননা তার ভালোবাসা তো আর মুখের ভালোবাসা, মিথ্যে অভিনয় বা কোনো মোহ ছিলোনা। মন থেকেই ভালোবেসেছিলো সে উপমাকে। আর সে কিনা….
দাঁড়িয়ে পড়লো আরাফ।
হাটতে লাগলো সারারুমে। কি করলে উপমার কথা তার আর মনে পড়বেনা!
.
-আসবো আরাফ?
.
মুনিরার ডাকে তার দিকে তাকিয়ে আরাফ বললো-
হুম ছোট আম্মু আসো।
.
আরাফের পাশে এসে মুনিরা বললো-
মেহেনুবা যতো যাই বলুক। তার মন টা যে ছোট হয়ে আছে এটা আমি বুঝতে পারছি।
-ওহ।
-ওরা দেশে এসেছে আজ কতোদিন! অথচ তুই ওদের নিয়ে কোথাও ঘুরতে বের হলিনা। এটা কি ঠিক হচ্ছে?
-আমি কেনো?
-বারেহ! তোর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কিন্তু এটা। তোর বড় আম্মুর মেহমান তারা। তাদের দেখভাল করলে বড় আম্মু কতোটা খুশি হবে ভেবে দেখেছিস? তাছাড়া মেহেনুবার মনটাও হালকা হবে।
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে আরাফ বললো-
ওদের তৈরী হতে বলো। একটু পরেই বেরিয়ে যাবো। দুপুরের খাবারও বাইরে খাবো।
-ঠিক আছে।
.
.
.
রান্নাঘরে সায়নীর কাছে এসে মুনিরা বললো-
বাচ্চারা আজকে বাইরে দুপুরের খাবার খেয়ে আসবে।
-কোন বাচ্চারা?
-আরাফ, মেহেনুবা, তাসু।
.
অবাক চোখে তাকিয়ে সায়নী জিজ্ঞাসা করলো-
আরাফ যাচ্ছে?
-মায়েদের কথা ফেলতে পারবে নাকি!
-তুই বলেছিস যেতে?
-হুম। আরাফের মনটাও ফ্রেশ হবে।
.
সায়নী ভ্রু জোড়া কুচকে বললো-
আমার মনে হচ্ছে অন্য মতলব আছে তোর?
-তোমার থেকে কি লুকোবো! আসলে এই সুযোগে মেহেনুবা বা তাসুর সাথে আরাফ ক্লোজ হলেই হয়। উপমার ভুতটা মাথা থেকে নামলেই বাঁচি।
.
সায়নী মৃদু হেসে বললো-
তুই না পারিসও! প্রেম করিস নি কিন্তু টেকনিক সব জানিস।
-সবই বাংলা সিনেমার অবদান আপু।
.
কথাটি বলেই হেসে উঠলো মুনিরা। তার সাথে যোগ দিলো সায়নীও।
.
.
.
-তোমার হাতটা এভাবে ঘামছে কেনো উপমা?
.
আরাফের কথা শুনে উপমা বললো-
তুমি এভাবে ধরে আছো তাই।
-ব্যথা লাগছে না?
-উহু না! ভালো লাগা কাজ করছে। আরো শক্ত করে ধরো।
.
আরাফ তার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো। উপমা মৃদু হেসে বললো-
সুপার গ্লু দিয়ে যদি লাগিয়ে দিতে পারতাম এই দুই হাত!
-তুমি চাইলে পুরো শরীর টাই লাগিয়ে নিতে পারো।
-আসো, লেগে লেগে বসি।
-এই যে এটা রেস্টুরেন্ট! এতোটা লাগা লাগি করলে কিন্তু মানুষের চোখে পড়বে।
-পড়লে পড়ুক! আমার কি।
-এতো সাহস?
-সাহসের কি দেখেছো! আমি চাইলে সবার সামনে তোমাকে…
-থেমে গেলো কেনো! কি?
.
আরাফের মাথায় আলতো করে হাত ছুইয়ে উপমা বললো-
মারতেও পারি।
-ওহ! আমি তো ভেবেছি…
-কি?
-না কিছুনা।
.
মুখ টিপে হেসে চলেছে উপমা। তার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে আরাফ।
.
.
-কি খাবেন আপনি?
.
রোমানের প্রশ্নে ঘোর কাটলো উপমার। এতক্ষণ আরাফের সাথে কাটানো মুহুর্তের কথা ভেবে চলছিলো সে।
হালকা কেশে উপমা জবাব দিলো-
জাস্ট কোল্ড কফি।
.
রোমান হলো উপমার বাবার পছন্দের ছেলে। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সে।
তার সাথেই বিয়ে দিতে চায় বাসার সকলেই। আজ প্রথমবারের মতো উপমা তার সাথে দেখা করতে এসেছে।
.
.
বেশকিছুক্ষণ পর উপমা খেয়াল করলো একই রেস্টুরেন্ট এ দুটো মেয়ে নিয়ে প্রবেশ করছে আরাফ।
তাকে ব্লক করে মেয়েদের নিয়ে রেস্টুরেন্টে আসা হচ্ছে!
ভাবতেই শরীরটা জ্বালা করে উঠলো উপমার।
মেহেনুবাদের নিয়ে আরাফ বসলো উপমার ঠিক পাশেই।
বসার পরেই উপমাকে দেখে যেনো থমকে গেলো আরাফ।
তাকে প্রথম দেখাতেই আরাফ চিনে ফেলেছে৷
আজ উপমা শাড়ি পরেছে! এই প্রথমবার শাড়িতে উপমাকে দেখছে আরাফ।
অন্য মেয়েদের মতো শাড়িতে তাকেও দারুণ মানিয়েছে৷ আরাফের ইচ্ছে করছে উপমাকে কাছে ডেকে এনে সামনে বসিয়ে রেখে বলতে-
আমার সামনে বসো তো। শাড়ি পরিহিতা উপমা কে দেখে মনটা জুড়াই।
.
এদিকে আরাফকে দেখার পর রোমানের সাথে গল্প জুড়ে দিলো উপমা।
মুখে হাসি ফুটিয়ে তার সাথে কথা বলে যাচ্ছে সে।
এমন একটা দৃশ্য যেনো আরাফ সহ্য করতে পারছেনা।
রাগে তার মুখটা লাল হয়ে আছে। শরীরে যেনো কাঁপুনি দিয়ে উঠেছে।
মেহেনুবা তার দিকে তাকিয়ে বললো-
সব ঠিক আছে?
.
শান্ত স্বরে আরাফ বললো-
হু। কি খাবে তোমরা অর্ডার করো।
.
তাসু ডাক দিলো ওয়েটার কে।
.
.
বেশ খানিকক্ষণ সময় অতিবাহিত হবার পরে উপমার ফোনটা বেজে উঠলো। মায়ের ফোন এসেছে তার। এগিয়ে গেলো সে বাইরের দিকে।
আরাফও এগিয়ে গেলো তার পিছুপিছু।
.
.
উপমা মায়ের সাথে কথা বলা শেষ করে পেছনে তাকিয়ে আরাফ কে দেখতে পেলো।
তবে সে চমকালো না।
আরাফের দিকে তাকিয়ে বললো-
তুমি এখানে?
-তুমি এখানে কেনো? আর ছেলেটি কে?
-ওর সাথেই আমার বিয়ে সামনে।
.
কথাটি শুনেই যেনো আরাফের বুকে ব্যথা অনুভব হলো।
তার ভালোবাসা অন্য কারো হয়ে যাবে যেনো মানতেই পারছেনা সে।
আরেকটা বার কি চেষ্টা করে দেখবে সে, উপমার ভুল ভাঙাতে?
.
আর না ভেবে উপমার উদ্দেশ্যে আরাফ বললো-
আমাকে ভালোবাসো তুমি?
.
কোনো সংকোচ ছাড়াই উপমা জবাব দিলো-
বাসি।
-তাহলে কেনো এমন করছো তুমি! কি করলে বিশ্বাস করবে, তুমি সুখে থাকবে আমার সাথে?
-এখন আর কিছু করার নেই আরাফ। তুমি আসতে পারো।
-আমি তোমাকে দেখে ঠিক থাকতে পারছিনা উপমা।
-দূরেই থাকো তবে।
-কিছুই কি করার নেই?
-সব তো বেঠিক হয়ে গেলো।
-আমার আম্মুদের কাছে তোমার একটা সরিতেই কিন্তু সব ঠিক হতে পারে। বলবে? আমিও বলবো তোমার ফ্যামিলি কে। একটা বছর এক সাথে সময় কাটিয়েছি আমরা। এতোদিনে একটুও কি আমায় বুঝলেনা তুমি? বিশ্বাস করো ভালো থাকবো আমরা।
.
আরাফের কথার জবাব না দিয়ে উপমা তাকিয়ে রইলো নিচের দিকে।
.
.
.
সায়নী ও মুনিরার সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে মিশিকা।
আড্ডার এক পর্যায়ে মিশিকার উদ্দেশ্যে মুনিরা বললো-
আচ্ছা আপু? আপনি তো অনেক আগে থেকেই বলতেন, সায়নী আপুর ছেলের সাথে আপনার মেয়ের বিয়ে দিবেন। এখন যখন বাচ্চারা বড় হয়ে গেলো এই বিষয়ে আর কিছু বলেন না কেনো? আরাফ কে পছন্দ না আপনার?
.
মুনিরার হঠাৎ এমন প্রশ্নে চমকে গেলো সায়নী।
তবে মিশিকা কিছু না ভেবেই মৃদু হেসে বললো-
আরাফ কে আমার অনেক বেশি পছন্দ। তবে বড় মেয়ের জন্য ডাক্তার আশা করেছিলাম। নিজে ডাক্তার তো।
-ডাক্তার হতে হবে বলে তো কথা নেই তাইনা? আরাফের মতো ছেলে কিন্তু লাখে একটা পাওয়া যাবে।
-অন্তত দুই মায়ের প্রতি সম্মান দেখেই তা বুঝেছি আমি। সত্যি বলতে মেহেনুবার বিয়ে ঠিক হবার পর তাসুর সাথে আরাফ কে নিয়ে ভেবেছি আমরা।
-এখন তো দেখলেনই, ডাক্তার হলেই ভালো মানুষ হয়না। আর মেহেনুবা যেহেতু বড় ওর জন্যই আগে দেখা উচিত নয় কি এখন?
.
সায়নীর দিকে তাকিয়ে মিশিকা জিজ্ঞাসা করলো-
মেহেনুবা কে তোদের পছন্দ?
-হুম। তবে আমি মুনিরাকে এসব বলতে বলিনি। তোদের মেয়ের জন্য তোরাই ভালো বুঝিস।
-তাহলে মুনিরা তোর চেয়ে ভালো। সে যে আমাকে এসব কথা বলেছে আমি খুশিই হয়েছি। কেননা আরাফের চেয়ে ভালো ছেলে মেহেনুবার জন্য হতেই পারেনা।
.
অবাক চোখে তাকিয়ে সায়নী বললো-
সত্যি?
-হুম সত্যি। তবে হ্যাঁ বাচ্চা দুজনের মতামতই কিন্তু নিতে হবে।
.
সায়নী ও মুনিরা একইসাথে জবাব দিলো-
অবশ্যই।
.
মিশিকার কাছে আশ্বাস পেয়ে মুনিরার মনে আশা জন্মালো।
মেহেনুবার মতো একটা মেয়েই যে আরাফের যোগ্য তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এখন ভালোই ভালোই সবটা হয়ে গেলেই হয়।
.
এদিকে খুশির সাথে চিন্তায় পড়ে গেলো সায়নী।
মেহেনুবা ও আরাফ একে অপরকে পছন্দ করবে তো?
.
.
.
আরাফ কোনো জবাব না পেয়ে হতাশ হয়ে চলে যাচ্ছে। তবে দাঁড়িয়ে পড়লো সে উপমার ডাকে।
উপমা বললো-
আমি সরি বলতে রাজি আছি।
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here