#ভালোবাসার_রঙ_কালো 🖤
#চাঁদনী_নূর_লামিয়া
পর্ব-৩
———————————————–
.
রাতের আকাশ ভীষণ সুন্দর! সব সময় এত সুন্দর, না কি আজ হঠাৎ করে এমন অপরূপ লাগছে বুঝতে পারছি না। মনের মাঝে অচেনা এক অনুভূতি হচ্ছে! মৃদ্যু হাওয়ায় শরীরে অদ্ভূত শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। ডালিয়া গাছটা বাতাসে মৃদ্যু দুলছে। চারদিকে ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে। ফুলের গন্ধে নাকি পরীরা আকৃষ্ট হয়। যদি তাই হয় তবে কী এত ফুলের সৌন্দর্যে মোহগ্রস্ত হয়ে এই নিরব রাতে অপ্সরারা নেমে আসবে এই ছাদে! কথাটা মনে হতেই আমার হুশ হলো। আমি যে এই মূহুর্তে ছাদে দাঁড়িয়ে আছি সেটা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। ভাবনার মায়া কাটিয়ে সাথে সাথেই আমি মিহির ভাইয়ের দিকে তাকালাম। তিনি আমার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে আমার মুখের দিকে চেয়ে আছেন। তার চোখ দুটিতে অজানা এক কাতরতা বিরাজ করছে। কিসের আকাঙ্ক্ষাতে তার চোখ জোড়ায় এত আকুলতা খেলা করছে! তার হাত দুটো আমার খোলা চুলে ছুটে বেড়াচ্ছে। কী থেকে কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। অদৃশ্য কোনো টানে ধীরে ধীরে আমিও তার চোখের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি। মনের গভীর থেকে কেউ বার বার বাধা দিয়ে বলছিল, নিজেকে সামলা আরজু। এই মায়ার জালে নিজেকে জড়াস না। স্বইচ্ছায় এই বিষ পান করিস না! মনের বারংবার সতর্কতার পরেও আমি মিহির ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছি। অজানা এক সুখের আবেশে আমার হৃদয়ে ঝড় ওঠেছে। আমি ধীরে ধীরে মিহির ভাইয়ের প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে পড়ছি। আমার মন তখনো আমাকে এক নাগাড়ে সতর্ক করে চলেছে, এটা যে মরীচিকা আরজু কষ্টের পাহার। এটা এমন অনুভূতি যার যন্ত্রণা অনেক; এই পথে পা বাড়াস নে। মিহির ভাই আমার এতটা কাছে আসার পরেও আমি দূরে সরে যাচ্ছি না। তবে কী আমি তাকে আস্কারা দিচ্ছি! আমার ভাবনাকে ভেদ করে চারদিকের মৌনতাকে শব্দের ঝংকারে আলোড়ন তুলে হঠাৎ করেই মিহির ভাই ডেকে উঠলেন,
” আরজু,
” হু।
” তোমার মুখে এত বড় বড় ব্রণ হলো কীভাবে, রাতে কী ঘুমাও না?
তার কথায় আমি সাথে সাথেই কিছুটা দূরে সরে গেলাম। এই মূহুর্তে তিনি এমন কিছু বলতে পারেন তা আমার ধারণার বাইরে ছিল। হুট করেই আমার আবার রাগ উঠে গেল। যেটা কিছুক্ষণ আগেও কোথায় যেন গায়েব হয়ে গিয়েছিল। আমি রাগী দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাতেই তিনি নিঃশব্দে হাসতে শুরু করলেন।
” এই মেয়ে এমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেন? মুখের এমন দশা করেছো যেন কেউ তোমার সাথে দশ বছর প্রেম করার পর তোমাকে ছেকা দিয়ে চলে গেছে।
তিনি একহাতে পেটে ধরে হাসতে লাগলেন। যেন খুব মজার কিছু বলে ফেলেছেন। তারপর হাসতে হাসতেই বলতে লাগলেন,
” তুমি কালো বলেই তোমার গালের এই পাহার সম বিশাল সাইজের ব্রণ গুলো চোখে পড়ে না।
তার তাচ্ছিল্য আর অপমানে আমার চোখের কোণে পানি জমতে শুরু করেছে। ঝাপসা চোখে মিহির ভাইয়ের হাসি দেখছি আমি। স্পষ্টই বুঝতে পারছি তিনি ইচ্ছে করেই এমন কথা বলে আমাকে অপমান করে তার কথা না শুনার প্রতিশোধ নিচ্ছেন।
আপনিও তো কোনো রূপ কুমার নন। আমার মতোই কালো। মনে মনে ভাবলেও তাকে এই কথাগুলো বললেও মুখে বলতে পারলাম না। তার জ্বালাময়ী কথার চেয়ে তার হাসি আমার হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করছে। নিজের অজান্তেই হুট করে আমার চোখ থেকে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল। আমার চোখে পানি দেখে মিহির ভাই হাসি থামিয়ে অবাক চোখে চেয়ে রইলেন। আমি হাতের উলটো পিঠে আলতো করে চোখের পানি মুছে নিলাম। আর বেশিক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে না থেকে ফিরে হাঁটা শুরু করলাম। বড় বড় পা ফেলে দ্রুত সেখান থেকে চলে আসলাম। সিঁড়ির কিছুটা দূরে রেলিঙের সাথে হেলান দিয়ে শিলা গুটিসুটি হয়ে বসে ঘুমাচ্ছে। ওকে আস্তে করে ডেকে বললাম, ” চলে আয় শিলা। মেয়েটার ঘুম খুব পাতলা। আমার একবার বলার পরই ঘুম থেকে জেগে ওঠল। তারপর হুট করে দাঁড়িয়ে পড়ল। আমি আর কিছু না বলে লিফটের দিকে এগিয়ে গেলাম। মেয়েটাকে নিয়ে আবার সিঁড়ি দিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। বিনা কারণে ওকে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয় না।
.
রুমে ফিরে এসে নিঃশব্দে দরজা লাগিয়ে দিলাম। ততক্ষণে শিলা রান্নাঘরের পাশের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়েছে। লিফটে দারোয়ানের সাথে দেখা হয়ে যায়। কেমন করে যেন আমাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে ছিল। কিছু একটা বলতে চাইছিল যেন। আমি জানি সে কী বলবে, তাই আর পাত্তা না দিয়ে চলে এসেছি। হয়তো জিজ্ঞেস করতো এই রাতের বেলা ছাদে কেন গিয়েছিলাম। হুট করে নিজের প্রতি খুব রাগ হচ্ছে। কেন যেচে অপমানিত হতে গেলাম। মিহির ভাই ডাকলেই আমাকে যেতে হবে কেন! তিনি আমার কে হোন ? আমি তার খাই না পরি? আজ যা হলো, তিনি আমার এতটা কাছে আসার পরেও আমি তাকে কোনো বাধা দেইনি! এরপর হয়তো তিনি আমাকে নির্লজ্জও ভাবছেন। তখন কী হয়েছিল আমার? কেন আমি তাকে বাধা দেইনি? কেন ই বা তখন আমার মনের বারণ শুনেনি? হঠাৎ করেই নিজেকে খুব অচেনা লাগছে। এমনটা আমি কিছুতেই করতে পারি না। কীভাবে মিহির ভাইয়ের এতটা কাছে থেকেও চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম! কী করে এতটা নির্লজ্জ হলাম আমি? কিছুক্ষণ আগে ছাদে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা ভেবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। এরপর আমি মিহির ভাইয়ের সাথে নিজ আর কখনো কথা বলবো না। তিনি কথা বললেও হা হু বলে উত্তর দিয়ে তাকে এড়িয়ে যাবো।
.
রান্নাঘরে আম্মাকে সকালের নাস্তা বানাতে সাহায্য করছি। আম্মা একটা একটা করে আটার রুটি গুলো বেলে দিচ্ছে আর আমি চুলায় গরম তাওয়ায় সেগুলো সেঁকে নিচ্ছি।
” নোমানের মা কী করছো?
মিহির ভাইয়ের মা রান্নাঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়ালেন। আগে তিনি আম্মাকে ভাবী বলে ডেকে আপনি করে সম্মোধন করলেও এখন আর তা করেন না। এখন তিনি আম্মাকে নোমানের মা বলে ডাকেন আর তুমি করে বলেন। তার হাবভাব এমন যেন আমরা তার বাড়ির কাজের লোক! এই মহিলার কথাবার্তা আমার একদম পছন্দ না। আমি তার দিকে না তাকিয়ে রুটি সেঁকতে লাগলাম। আম্মা আমাকে বাকি রুটি গুলো বেলে নিয়ে সেঁকে নিতে বলে রান্নার ঘরের দরজার কাছে চলে গেলেন।
” জ্বি ভাবী।
” তোমাকে কিছু কথা বলার ছিল তাই এসেছি।
” জ্বি বলুন।
” তোমার মেয়ে যে রাত বিরাতে ছাদে ঘুরে বেড়ায় সে খবর কী তুমি রাখো? কাল রাতে দারোয়ান আরজুকে লিফটে করে ছাদ থেকে নামতে দেখেছে। নেহায়েতই ছেলেটা ভালো মানুষ তাই আর কাউকে না জানিয়ে আমাকে বলেছে। অন্য দারোয়ান দেখলে তো এতক্ষণে পুরো বিল্ডিংয়ে এই খবর ছড়িয়ে পড়তো। তোমার মেয়ে রাতের বেলা ছাদে কী করতে যাই জিজ্ঞেস করো ওকে।
আন্টি দাঁত কটমট করে কথাগুলো বলে আমার দিকে একবার রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন। আমি ততক্ষণে তার কথা শুনে অবাক হওয়ার শেষ সীমানায় পৌঁছে গেছি। ছোট একটা বিষয়কে তিনি বড় করে কেমন প্যাঁচিয়ে আম্মাকে বলে গেলেন। দারোয়ান নিশ্চয় তাকে এটাও বলেছে যে লিফটে আমি একা ছিলাম না শিলাও আমার সাথে ছিল। কিন্তু আন্টি সেটা না বলে আম্মাকে আমার সম্পর্কে ভুলভাল বলে চলে গেল। তার কথাগুলো শোনামাত্র আম্মা অনেকটা গম্ভীর হয়ে আমার পানে চেয়ে কিছু না বলেই রান্নাঘর থেকে চলে গেল।
আধাঘন্টা পরে আমি নাস্তা বানিয়ে সবার জন্য ট্রেতে করে নাস্তা নিয়ে আব্বা-আম্মার রুমের কাছে যেতেই শুনি আম্মা আব্বাকে বলছে,
” এখানে আর থাকতে ইচ্ছে করে না। তুমি ছোট হলেও কম ভাড়ার মধ্যে কোনো বাসা দেখো। আরজুকে তো বিয়ে দিতে হবে। সারাজীবন বিয়ে না দিয়ে তোমার কাছে মেয়েকে রাখতে পারবে?
কথাগুলো বলার সময় আম্মার কণ্ঠস্বর বারবার কেঁপে উঠছিল। আন্টির কথায় আম্মা অনেক কষ্ট পেয়েছে সেটা স্পষ্ট বুঝতে পারছি। তাঁর অবিবাহিত মেয়ের চরিত্রে কেউ কালিমা লেপে দেওয়ার চেষ্টা করছে সেটা মেনে নিতে পারছে না। মিহির ভাইয়ের মা যে কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে ভীষণ অপছন্দ করেন সেটা আম্মারও খুব ভালো করেই জানা আছে। সেজন্যই তিনি সাধারণ ব্যাপারটাকে এখন ঘোলা করার চেষ্টা করছেন সেটা বুঝতেও আম্মার কষ্ট হচ্ছে না। আর তাই ব্যথিত হয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আব্বাকে এই বাড়ি ছাড়তে বলছে। যদিও আমি জানি শত অপমানের পরেও আম্মা এই বাড়িতেই থাকতে চায়। অন্তত আব্বার উপরে যেন সংসারের চাপ না বাড়ে সেই জন্য। কিন্তু এখন আন্টির ওসব কথা শুনে আম্মা মনে কষ্ট পেয়েছে বলেই চলে এখান থেকে চলে যাওয়ার কথা বলছে। আম্মার কথা শুনে আব্বা ছোট করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,
” আমার মেয়ের গায়ের রঙটাই সবাই দেখে, কিন্তু ও দেখতে যে কত মিষ্টি সেটা কেউ লক্ষ্য করে না। কতজনকে বললাম ভালো একটা পাত্র খুঁজে দিতে। প্রয়োজনে অনেক টাকার যৌতুকও দিবো। কিন্তু সবাই এক কথা বলেই গা বাঁচিয়ে নেয়। বলে আপনার মেয়েটা সবদিকে দিয়েই ঠিক আছে। শুধু একটাই সমস্যা গায়ের রঙটা মাদা। তাই তো পাত্রপক্ষরা ওকে পছন্দ করে না। আর বিয়ে করতেও রাজী হয় না। আজ কালের
ছেলেরা সুন্দর আর ফর্সা মেয়ে বিয়ে করতে চাই। কেউ কেউ তো বলে, বিদেশ থেকে দামী ক্রিম আর লোশন আনিয়ে মেয়েকে দিন। ওসব মেখে গায়ের রঙটা একটু পরিস্কার হলেই বিয়েতে আর সমস্যা হবে না।
আব্বা আম্মা দুজনেই চুপ হয়ে গেছেন। তাদের চাপা দীর্ঘশ্বাস গুলো আমার বুকে এসে বিঁধছে। মাঝে মাঝে খুব অভিমান হয়। কালো হয়ে জন্মানোর অভিশাপে অপমান আর মানসিক কষ্ট সইতে সইতে এখন আমি ক্লান্ত। আর কত সহ্য করবো? আব্বার এমন দুঃসময়েও আমি তাঁর কাঁধে বোঝা হয়ে পড়ে আছি। মেয়ে হয়ে তাদের দুঃখের পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছি। ছেলে হলেও তো আমার গায়ের কালো রঙের জন্য কোনো সমস্যা হতো না। আব্বা ঠিক এতদিনে আমার বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলতেন। কারণ ছেলেদের সব রঙেই প্রাচুর্যতা! এসব নিয়ে তাদের এত বেশি ভুগতে হয় না। ঠিক যেমন মিহির ভাই; তার গায়ের রঙ কালো হওয়া সত্ত্বেও ফর্সা আর সুন্দরী মেয়েরা তাকে বিয়ে করতে চায়। এই বিল্ডিংয়ের দুই তালায় ডাক্তার সাহেবের মেয়ে আফরিন দেখতে খুব সুন্দর। যেমন ফর্সা গায়ের রঙ তেমন সুন্দর চেহারা। সেই মেয়ে মিহির ভাইকে পছন্দ করে আর বিয়েও করতে চাই। এই কথা আফরিন নিজে আমাকে বলেছে। মিহির ভাই ব্যবসা করে অনেক সম্পত্তি করেছেন। এই ফ্ল্যাট ছাড়াও তার নিজের আরও দুটি ফ্ল্যাট আছে এই শহরে। একে এত টাকা পয়সা তার উপরে আবার বড় ব্যবসায়ী। সুন্দরী মেয়েরা তো তাকে চোখের পলকে বিয়ে করতে রাজী হয়ে যাবে। আর এই নিয়ে তার মায়ের অহংকারের শেষ নেই। মূলত এই কারণেই তিনি তার ছেলের গায়ের রঙ কালো হওয়ার পরেও আমার পিছনে পড়ে থাকেন। আমাকে কটুকথা শোনাতে তার মুখে একটুও বাধে না।
” আপু এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? আমার আজ সকালেই প্র্যাক্টিসে যেতে হবে জলদি নাস্তা দাও।
নোমান আমার হাত থেকে নাস্তার ট্রে টা নিয়ে রুমের ভেতরে ঢুকে গেল। ওকে দেখে আব্বা আম্মা দুজনেই নিজেদের চোখ মুছতে লাগলেন। আমি বুঝতে পারলাম তারা এতক্ষণ নিরবে কাঁদছিলেন। আমি ভেতরে যেতেই আব্বা জোর করে হেসে বললেন,
” আরজু তোকে একটা কথা বলার ছিল।
আমি মুচকি হাসতেই আব্বা আমার সম্মতি পেয়ে নোমানকে বললেন,
” নোমান, তুই আরজুর রুমে গিয়ে নাস্তা খা। তোর আপুর সাথে কিছু কথা বলবো আমি।
আব্বার কথায় নোমান মাথা নেড়ে সায় জানিয়ে ট্রে থেকে একটা নাস্তার প্লেট নিয়ে চলে গেলে আব্বা আমার হাত ধরে খাটে তাঁর পাশে বসালেন। তারপর কিছু একটা বলতে গিয়েও কী ভেবে যেন উসখুস করতে লাগলেন।
” কী বলবে আব্বা?
আব্বা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বললেন,
” তোর জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। ছেলের ছোট একটা মুদির দোকান আছে। নিজেদের বাড়ি নেই ভাড়া থাকে।
আব্বাকে দ্বিধাগ্রস্ত দেখে শান্ত ভঙ্গিতে বললাম,
” তোমার পছন্দ হলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
আমার কথা শুনে আব্বা চমকে তাকালেন! আম্মারও একই চাহনি।
” ভাগ্যের উপরে কারোর জোর নেই। আর তাছাড়া যার সাথে আমার জোড়া লেখা আছে তার সাথেই বিয়ে হবে। আমার জন্য অনেক পাত্রই তো দেখলে কিন্তু কেউই তো আমাকে পছন্দ করেনি। আমার বিয়ে হয়ে গেলে ছোট একটা বাসা ভাড়া নিয়ে আম্মা আর নোমানকে নিয়ে এখান থেকে চলে যেতে পারবে। যেটা এখন আমার জন্য চেয়েও করতে পারছো না। তাই তোমার আর আম্মার পছন্দ হলে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না।
আব্বা আম্মা দুজনেই অবাক চোখে তাকিয়ে আছেন। যে কথা মা-বাবা হিসেবে তাদের আমাকে বুঝিয়ে বলার দরকার ছিল, উলটো আমি তাদেরকে সেই কথা বলে সান্ত্বনা দিচ্ছি! আমার অজান্তেই বুক ছিড়ে একটি দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসলো। সময় আর পরিস্থিতি দুটোই মানুষকে তার অবস্থান পরিবর্তনে বাধ্য করতে দ্বিধা করে না!
.
#চলবে …
.