মন যাকে চাই পর্ব ১৪ ও শেষ

#মন_যাকে_চায়
#পর্ব_১৪
#সুবর্ণা_আক্তার_জুথি ✍️✍️

“আমি জানি না তোমার ভালোবাসা কার জন্য,
আমি জানি না তুমি কাকে পেলে খুশি?”
“আমি জানি না তোমার মন কাকে চায়?”
“শুধু এটাই জানি আমি শুধু চেয়েছি তোমায়!!”

ইশিতার ছবির দিকে তাকিয়ে অনুরাগ বললো।

গ্যালারি ভর্তি ইশিতার ছবি। সকাল থেকেই ফোন নিয়ে বসে আছে অনুরাগ। ঘুরে ফিরে বারবার ইশিতা কে দেখছে। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এইসব ছবিতে। লুকিয়ে লুকিয়ে ইশিতার অনেক ছবি তুলেছিল অনুরাগ।

“এখন এইগুলো তার একাকিত্বের সঙ্গী।”

আড়ালে দাঁড়িয়ে ছেলেকে পর্যবেক্ষণ করছেন এক অসহায় বাবা। ছেলের কষ্ট দেখে কিছুতেই নিজেকে সামলে রাখতে পারছেন।
“আজকে অনুরাগ কষ্ট পাচ্ছে শুধুমাত্র তার একটা ভুল সিদ্ধান্তের জন্য।”

তিনি যদি সেদিন অনুরাগ কে জোর না করতেন তাহলে আজকে সবকিছু ঠিক থাকতো।
“কিন্তু তিনি তো সবার ভালোই চেয়েছিলেন।”
“একদিকে অনুভব কে ফিরে পাবার আনন্দ আরেক দিকে অনুরাগের কষ্ট।”

অনুভবের জন্য তার খুব চিন্তা হচ্ছে।সব জানলে ছেলেটা খুব কষ্ট পাবে।

রাজীব চৌধুরী এসে অনুরাগের পাশে বসলেন।

অনুরাগের ঘাড়ে ভরসার হাত রেখে বললেন, অনুভব কে সব সত্যি জানিয়ে দিতে।
চমকে উঠলো অনুরাগ সে কিছুতেই অনুভব কে সত্যি কথা বলতে পারবে না। তাছাড়া দিশা যাবার আগে বলে গেছে অনুভব কে যেন মেন্টালি প্রেশার না দেয়া হয়।

“এক্সিডেন্টের ফলে ব্রেনে গুরুত্বর আঘাত পেয়েছে অনুভব তাই তার ব্রেনে চাপ পড়বে এমন কোন কাজ করা যাবে না।”

“বাবা তুমি কি ভুলে গেলে দিশা কি বলেছে?”

আমি কিছুই ভুলিনি তবে আমার মনে হয় অনুভবের সত্যিটা জানা দরকার। আরো, “ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হবার আগে সবকিছু মিটিয়ে নেয়ায় ভালো।”

না বাবা, “আমি নতুন করে আমার ভাইকে ফিরে পেয়েছি,আবার আমার তাকে হারাতে চাই না।”

আমি খুব শীঘ্রই ইশিতা কে ডিভোর্স দিয়ে আমেরিকা চলে যাবো। তারপর তুমি ইশিতার সাথে অনুভবের বিয়ে দিও।

ইশিতা তো আমাকে ভালো বাসে না। ইশিতা আর অনুভব দুজনে দুজনকে ভালোবাসে। আমি ভুল করে ওদের মাঝখানে চলে এসেছিলাম।

আমি অনুভবের খালি জায়গা পূরন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন আর তার দরকার নেই। আমার কাজ শেষ। এবার আমাকে ফিরতে হবে।

–এসব তুই কি বলছিস অনুরাগ?

অনুরাগ এবার তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল,

“আমি এমন একজনকে ভালোবাসে ফেলেছি যাকে চাওয়া টা অন্যায়।
আর ভুলে যাওয়াটাও অসম্ভব।”

রাশেদা বেগম এসে বললো, অনুভব ইশিতার সাথে দেখা করতে যাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে ইশিতা একা সব সামলাতে পারবে না।
তাছাড়া এই অবস্থায় ইশিতার স্ট্রেস না নেয়ায় ভালো। তাই আমি ভাবছি যে করেই হোক অনুভব কে আটকাতে হবে।

কতদিন আটকে রাখবে ফুপু তার চেয়ে বরং যেতে দাও। ইশিতা যথেষ্ট বুদ্ধিমতী।
“ঠিক সব সামলে নিবে।” অনুরাগ বললো।

“তাছাড়া আমিও দেখতে চাই আসলে ইশিতা কি চাই?” মনে মনে বলল অনুরাগ।

——————-

অনুভব মায়ের কাছে বসে আছে। এতো দিন পর ছেলেকে পেয়ে কাছছাড়া করতে চাইছে না তাহেরা বেগম।

তাছাড়া তিনি মনে মনে ভয় পাচ্ছে পাছে অনুভব সবসত্যি যেনে যায়। তাহলে খুব কষ্ট পাবে। আবার তিনি অনুরাগের কথা ভেবে ও কষ্ট পাচ্ছেন। অনুরাগ যে ইশিতা কে পাগলের মতো ভালোবাসে।

দু’জনেই তার নিজের সন্তান।কাকে ছেড়ে কার পক্ষ নিবেন।কার কাছে ফিরিয়ে দেবেন তার ভালোবাসা।

নাকি এসবের মধ্যে তার সাজানো সংসার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।

এতো কি ভাবছো মা আমি এখন একদম সুস্থ আছি।আর আমি ইশিতার সাথে দেখা করে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো।

তাহেরা বানু আর অনুভব কে বাধা দিলেন না। এবার সবকিছু ভাগ্যের হাতে তুলে দিলেন।

অনুভব যাবার আগে অনুরাগের সাথে দেখা করে গেছে ফিরে এসে দুভাই মিলে খুব আড্ডা দেবে।

অনুরাগ হেসে সম্মতি জানিয়েছে।

গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে হুট করেই অনুভবের দিশার কথা মনে পড়ছে।
দিশা বারবার করে বলেছে ধীরে গাড়ি ড্রাইভ করতে। “দিশার কথা মনে পড়তেই অনুভবের ঠোঁটে হালকা হাসি দেখা দিলো।”

মেয়েটা বড্ড ভালো। খুব তাড়াতাড়ি মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারে।”মাএ কয়দিনে অনুভবের খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছে দিশা।”

দিশা চলে যাবার পর একবারের জন্যও কল করেনি অনুভব কথাটা মনে পড়তেই খুব খারাপ লাগলো তার।

দিশা আমার জন্য এতো করলো আর আমি একবার কল দিয়ে তার খোঁজ নিতে পারলাম না। দিশা নিশ্চয়ই খুব কষ্ট পেয়েছে।

গাড়ি সাইডে দাড় করিয়ে দিশাকে কল দিলো অনুভব।

“মনমরা হয়ে বসে ছিল দিশা অনুভবের কল আসাতে সে যেন প্রান ফিরে পেলো।”

দিশা ভেবেছিল আপনজনদের পেয়ে অনুভব তাকে ভুলে যাবে।

খুব দ্রুত কল রিসিভ করলো দিশা।

“অনুভব প্রথমে সরি বললো!”
“সরি কেন?”
“তোমাকে কল করতে না পারায়!” আমার উচিত ছিল তোমার খোঁজ নেয়া।

“তুমি কি রাগ করেছ?”
অনুভবের কথা শুনতে খুব ভালো লাগছে দিশার।

“কয় কথা বলছো না কেন?”
“আমি তোমার ওপর রেগে নেই।”
“আচ্ছা শোন দিশা আমার আর ইশিতার বিয়েতে কিন্তু তোমাকে অবশ্যই আসতে হবে।”

দিশা তার কান্না আটকে রাখতে না পেরে পেসেন্ট দেখতে যাবার বাহানায় কল কেটে দিলো।

তারপর কাঁদতে কাঁদতে বলল,

“সত্যি আমার ভাগ্যটাই আজব,
যাকে পাওয়া সম্ভব নয় তাকেই যেন সবচেয়ে বেশি ভালবাসে মন।”

——————–

ইশিতা অনেকক্ষন ধরে পার্কে বসে আছে। দেরি করে আসাটা অনুভবের বরাবরের অভ্যাস।

আগে অপেক্ষা করতে ভালোই লাগতো ইশিতার। কিন্তু এখন সবকিছু বদলে গেছে।মাছ চার পাঁচ মাসের ব্যবধানে সব ওলট পালট হয়ে গেছে।

“মানুষের মন বদলাতে যেখানে কয়েক সেকেন্ড লাগে সেখানে চার পাঁচ মাসে তো আরো কিছু হতে পারে।”

অনুরাগ অনেক আগেই এসেছে কিন্তু ইশিতার সামনে আসেনি।
আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে।

ইশিতা নিজের পেটের ওপর হাত রেখে বলল, তুমি কষ্ট পেওনা সোনা দেখবে খুব তাড়াতাড়ি তোমার আম্মু সব ঠিক করে ফেলবে।

তুমি আম্মু আব্বুর সাথেই থাকবে। তারপর কেঁদে কেঁদে বললো, “কেনো এমন হলো আমার সাথে আমি তো কখনো কাউকে কষ্ট দেয় নি তাহলে আমার সাথে কেন?”

সবকিছু তো ঠিকই ছিল। সেই কলেজ লাইফ থেকে অনুভব আমার পিছে পড়েছিল। বারবার রিজেক্ট করার পরেও ফিরে আসতো। আমার ইচ্ছে ছিল বাবার পছন্দে বিয়ে করার তাই অনুভবের প্রপোজাল রিজেক্ট করে দিয়েছিলাম।

“কিন্তু সে ছিল নাছোড়বান্দা তিন বছর পর অবশেষে আমি অনুভবের পাগলামীর কাছে হার মানলাম।”
“শুরু হলো আমাদের নতুন করে পথচলা।”

দুই বছর প্রেম করে অনেক কষ্টে দুই পরিবারকে বিয়ের জন্য রাজি করায়।

অবশ্য অনুভবের কাছে আমাদের সম্পর্ক নাকি পাঁচ বছরের কারন অনুভবের মতে আমিও নাকি তাকে আগে থেকেই ভালোবাসি।
কিন্তু আমার তা মনে হয় না। “তবে যেদিন থেকে অনুভব কে ভালো লাগতে শুরু করে সেদিন থেকেই জানি এই চেহারার মানুষটা শুধু মাত্র আমার!”

“কখন যে ভালোলাগা ভালোবাসায় পরিনত হয়েছে বুঝতেই পারিনি।”

সবকিছু ঠিক হবার পর আমাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পাবার আগেই কাল বৈশাখী ঝড়ের মতো সবকিছু তছনছ হয়ে গেল।

আমি শুধু এই চেহারার মানুষটা কে ভালোবাসি তাকে ছাড়া আর কাউকে কোন দিন ভালোবাসতে পারবো না।

একদিন জানতে পারলাম সে আর নেই তবে সেই চেহারা রয়ে গেছে।

অনুরাগের পাগলামি আমাকে অনুভবের কথা মনে করিয়ে দেয়। “না চাইতেও অনুরাগের পাগলামি আমাকে বাধ্য করেছে তাকে ভালোবাসতে।”

কিন্তু যখন আবার নতুন করে শুরু করবো ভাবলাম তখন অতীত আমার সামনে এসে দাঁড়ায়।

আমি এখন অতীত আর বর্তমানের মাঝে ফেঁসে গেছি।
“আমার এখন কি করা উচিত কে বলে দেবে?”

“কি করে বুঝবো আসলে আমার মন কাকে চায়?”

যখন অনুভব কে হারানোর ব্যাথায় নিজেকে শেষ করতে ইচ্ছে হতো তখন অনুরাগ এলো বাঁচার কারণ হয়ে। আর সাথে আমাকে উপহার দিলো আরেকটা নতুন প্রাণ।

অনুরাগ ইশিতার কষ্ট সহ্য করতে পারছেনা। সবকিছু শুনে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে। তাই সিদ্ধান্ত নিলো খুব তাড়াতাড়ি ইশিতা কে এই অবস্থা থেকে মুক্তি দেবে।

অনুরাগ নামে কেউ আর থাকবে না ইশিতার জীবনে।

“আমি তো হারিয়ে যাবো স্মৃতিময় কালো আঁধারে।
তুমি নাহয় ভালো থেকো অন্য কারো শহরে।”

অনুভব কে আসতে দেখে অনুরাগ লুকিয়ে পড়লো। ইশিতা নিজেকে ঠিক করে নিল। অনুভবের শারীরিক অবস্থার কথা সেও জানে।

সরি ইশিতা অনেক দেরি হয়ে গেল।
বাহ্ বেশ ভালো লাগলো।এই প্রথম তুমি দেরি করে এসে কোন বাহানা না দিয়ে সরি বললে।

তুমি খুশি হওনি।
হুম হয়েছি।

অনুভব ইশিতার আরেকটু কাছে এগিয়ে গিয়ে হাত ধরে বসলো। ইশিতা কেঁপে উঠলো।

এটা তো অন্যায় সে এখন অন্য কারো স্ত্রী। তাই হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে একটু সরে বসলো।

ঈশিতার কান্ড দেখে অনুভব হো হো করে হেসে উঠলো।
তুমি কি লজ্জা পাচ্ছো ইশিতা। আগে তো এমন করতে না। পাঁচ মাসে তোমার এতো পরিবর্তন।

ইশিতা হকচকিয়ে গেল।
বাড়ি থেকে ভেবে এসেছে অনুভব কে সবকিছু বুঝিয়ে বলবে।
সে নিশ্চয়ই ইশিতা কে বুঝবে।

অনুভব আমি তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই প্লিজ আমার ওপর রাগ করোনা।

হুম বলো। কতদিন তোমার কন্ঠ শুনি না বলো কি বলবে আজকে সারাদিন তোমার সাথে গল্প করবো।

অনুভবকে আসতে দেখে অনুরাগ চলে গেছে। ইশিতা কে অন্য কারো সাথে সে দেখতে পারবে না।

ইশিতা আমতা আমতা করে বলল আমার আর অনুরাগের…………….

কথা শেষ করার আগেই সেন্সলেস হয়ে গেছে ইশিতা।
অনুভব খুব দ্রুত ইশিতা কে গাড়িতে তুলে নিয়ে হসপিটালে চলে গেল।

এখনো ইশিতার জ্ঞান ফেরেনি তবে ডক্টর এসে যা বললো তা শুনে অনুভবের……….


।#মন_যাকে_চায়
#অন্তিম_পর্ব
#সুবর্ণা_আক্তার_জুথি ✍️✍️

ডক্টরের কথা শুনে অনুভব একটু সময় নিয়ে হাসলো। তারপর ইশিতার জ্ঞান ফিরলে তাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসলো।

ফেরার পথে ইশিতা তেমন কোন কথা হয়নি।

“হুট করেই অনুভব বলল, আজকে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে ইশিতা।”

সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে ছিল ইশিতা। অনুভবের কথা শুনে চোখ মেলে দেখলো।
“অনুভবের মুখে রহস্যময় হাসি।”আর চোখ দুটো যেন কান্না লুকানোর চেষ্টা করছে।
বিষয়টা ইশিতা কে বেশ অবাক করলো।

“তুমি ঠিক আছো অনুভব?”
আমি আজকে অনেক খুশি ইশিতা। শুধু মাত্র তোমার জন্য। “আমি তোমার খুশিতে খুশি।”

এবার দেখবে আর কোন কনফিউশন থাকবে না তুমি তোমার মনের কথা খুব সহজেই বুঝতে পারবে।
“তাকেই পাবে তোমার #মন_যাকে_চায়।”

আমি তোমার কথা কিছু বুঝতে পারছি না তবে আমি সত্যিই একটা সিদ্ধান্তে আসতে চাই যেটা আমাদের সবার জন্য ভালো হবে। “আমি জানি তুমি আমার পাশে থাকবে আমাকে সাপোর্ট করবে।”

“অবশ্যই ইশিতা আমি তো সারাজীবন তোমার পাশে থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু………..?”

“কিন্তু কি অনুভব..?”
“না কিছু না।”
তোমাকে এতো চিন্তা করতে হবে না ডক্টর আংকেল বলেছেন তোমার প্রেশার লো। কিসের এতো চিন্তা তোমার?সব ঠিক হয়ে যাবে। এতো ভাবার কিছু নেই।

“আমাদের জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে সবই আল্লাহর হাতে।”

তিনি যা চাইবেন তাই হবে।
আর মানুষের মন বদলাতে বেশি সময় লাগে না।

আর একটা কথা মনে রেখ………….!!!

💙”ভালোবাসা ভালোবাসে শুধুই তাকে
ভালবেসে ভালবাসায় বেধে যে রাখে “💜

ভালোবাসার জন্য মানুষ সব করতে পারে। “আর ভালোবাসায় মানুষকে ভালোবাসতে শেখায়।”
“শুধু পাওয়ার নাম ভালোবাসা নয়।”

অনুভবের কথা শুনে ইশিতার নিজেকে অনেক হালকা লাগছে।

আর কথা বলতে ইচ্ছে করছে না তাই মুচকি হেসে আমার চোখ বন্ধ করে নিল।

আর অনুভব মনে মনে বলল,
“তুমি যদি ভালো থাকো অন্যের ভালোবাসায়
আমি তবে ভালো থাকব তোমার ভালো থাকায়”

চোখ বন্ধ করতেই অনুরাগের কথা মনে পড়লো। দুদিন ধরে তার কোন খবর নেই। ভাইকে ফিরে পেয়ে বৌকে ভুলে গেছে। দুদিন আগে পর্যন্ত কতো পাগলামি করছিল। আর ভাইকে ফিরে পেয়ে একটিবার কল করেনি ইশিতা কে।

“ইশিতার খুব অভিমান হলো মনে মনে ঠিক করলো সেও কথা বলবে না।”
দেখি না কতদিন এভাবে দুরে সরে থাকতে পারে।

ইশিতা কে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে অনুভব সোজা দিশার কাছে চলে গেল।

——————

অনুরাগ ইশিতা কে অন্য কারো সাথে দেখতে পারবে না তাই কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।

তার পাসপোর্ট ভিসা সব রেডি হয়ে গেছে। কারণ অনেক আগেই পাসপোর্ট ভিসা বানাতে দিয়েছিল।সে আজ রাতের ফ্লাইটে চলে যাবে আমেরিকা।

কিন্তু যাবার আগে একবার ইশিতা কে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। কিন্তু না সে আর মায়া বাড়াতে চাই না। দুদিন পর যে অন্যের স্ত্রী হবে তার প্রতি মায়া বাড়িয়ে কি লাভ।

কিন্তু নিজের সন্তানদের মায়া কি করে ভুলবে। খুব ইচ্ছে ছিল নিজের সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করার কিন্তু সেটা এখন আর সম্ভব নয়।

ইশিতা আর অনুভবের সুখের জন্য তাকে সব মায়া কাটিয়ে উঠতে হবে।

রাজীব চৌধুরী আর তাহেরা বেগম তাদের দুই ছেলেকে নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন।

দরজার বাইরে থেকে অনুরাগ শেষ বারের মতো তাদের দেখে নিলো।

তারপর ফুপুকে রান্না ঘরে গিয়ে দেখলো।

কিন্তু দরজার সামনে যেতেই লিজা সামনে এসে দাঁড়ায়। পালিয়ে যাচ্ছো ভাইয়া

অনুরাগ লিজার মুখ চেপে ধরে আড়ালে চলে গেল।
প্রিজ লিজা কাউকে জানাস না। আমি চলে যেতে চাই।

না ভাইয়া আমি এভাবে তোমাকে যেতে দেবো না। আর তুমি কি জন্য যাবে আমার তো মনে হয় ভাবী তোমাকে ভালোবেসে।

তোকে এসব ভাবতে হবে না।মন দিয়ে পড়াশোনা কর।ঈশানের ব্যাপারটা আমি দেখে নেবো। লিজা ভয়ে মাথা নিচু করে নিলো।

আরে ভয়ের কিছু নেই।

“ভালোবাসা ভুল নয়’
তবে ভুল মানুষকে ভালোবাসা ভুল”

ঈশান অনেক ভালো ছেলে। আমি অনেক আগেই তোদের সম্পর্কে জেনে গেছিলাম। আর আমাদের জন্য তোদের অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। তবে কোন টেনশন করিস না।

ইশিতা আর অনুভবের বিয়ে হয়ে যাক। তারপর বাবাকে তোদের কথা জানাবো।

এখন আমি আসি।

“কিন্তু ভাইয়া, অনুভব ভাইয়া কল করে বললো কিছুক্ষণ পরেই বাড়ি ফিরবে আর কি একটা সারপ্রাইজ দেয়ার কথা বলছিলো।”

একটু ভেবে অনুরাগ বললো, আচ্ছা ঠিক আছে আমার ফ্লাইট রাতে। আর এখন তো দুপুর তাই একটু তো ওয়েট করাই যায়।

অনুভব হয়তো তার আর ইশিতার বিয়ের কথা বলবে।

আর আমার চলে যাওয়ার কথা যেন জানতে না পারে। মাথা হেলিয়ে চলে গেল লিজা।

—————

অনুভবের অনুরোধে সবাই উপস্থিত হয়েছে ইশিতার শশুরবাড়িতে।

ইশিতার বাড়ির সবাই এমনকি ইশিতা নিজেও।
ড্রয়িং রুমে বসে আছে আনিসুল হক, আনোয়ারা বেগম, শায়লা হক, ঈশান, ইশিতা, লিজা, অনুরাগ, রাজীব চৌধুরী, তাহেরা চৌধুরী, আর রাশেদা চৌধুরী।

সবাই অপেক্ষার প্রহর গুনছে।

ইশিতা আর অনুরাগের কয়েকবার চোখাচোখি হয়েছে কিন্তু কেউ কারো সাথে কোন কথা বলেনি।

সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অনুভব আসলো।

আমি সবাইকে একটা কথা বলতে চাই। আমি আপনাদের অনেক মিথ্যা কথা বলেছি তার পিছনে অবশ্য একটা কারন ছিল।

কিন্তু আমি আর কোন মিথ্যা কথা বলতে চাই না। এবার আমি সবাইকে সব সত্যি জানিয়ে দেবো।

সত্যি বলার কথা শুনে ইশিতা আর অনুরাগ একে অপরের দিকে তাকালো।

আরে রিল্যাক্স ইশিতা। একদম টেনশন করবে না।”এই অবস্থায় এতো হাইপার হওয়া একদম ঠিক নয়।”

প্রথমত, আমার বেশ বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছিল ঠিক। কিন্তু আমি খাদে পড়ে যায়নি। “আমি একটা গাছের ডালে ঝুলে ছিলাম।”
আর গাড়িটা খাদে পড়ে যায়।

পাহাড়িরা আমাকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী হসপিটালে ভর্তি করে। সেখানে দিশা আমার চিকিৎসা করে।আর আমি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।

“প্রায় এক সপ্তাহ পর আমি পুরো সুস্থ হয়ে উঠি।”

তারপর দিশার সাথে বাড়িতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিই। তোমাদের কিছু জানায়নি কারণ ভেবেছিলাম সবাই কে সারপ্রাইজ দেবো।

“কিন্তু বাড়ি এসে আমি নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে যায়।”

দারোয়ানের কাছ থেকে জানতে পারলাম ইশিতা আর আমার নাকি বিয়ে হয়ে গেছে। আসলে দারোয়ান হয়তো আমাকে চিনতে পারে নি।

তারপর বুঝতে পারলাম সে অনুরাগ আর ইশিতার বিয়ের কথা বলছে।

আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।
তাই কাউকে কিছু না বলে বাইরে থেকে চলে যায়।

দিশা আমাকে অনেক বোঝানোর পর কিছুদিন পর আবার আমি এসেছিলাম।

কিন্তু সেই বার এসে জানতে পারলাম ইশিতা আর অনুরাগ হানিমুনে গেছে। কিন্তু কোথায় গেছে দারোয়ান বলতে পারেনি।

“আমি ইশিতা আর অনুরাগের মাঝে এসে তাদের এই সুন্দর সম্পর্ক ভাঙতে চাই নি।”

তাই ফিরে যায়। কিন্তু কোথায় যাবো কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

তখন আমার পথপ্রদর্শক হয়ে এলো দিশা।চলে গেলাম তার সাথে।
সেখানে গিয়ে একটা এনজিও তে যোগ দেয়। কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখি নিজেকে।

আমার একাকীত্বের সঙ্গী ছিল দিশা।

“আমি মন খারাপ করলে মুহূর্তেই আমার মন ভালো করে দিত।”

ধীরে ধীরে আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠলাম।

অনুভব একটু থামল। দিশা এসে অনুভবের পাশে দাঁড়ালো। তাকে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল।

দিশার হাত ধরে অনুভব আবার বলা শুরু করলো।

“তারপর একদিন বুঝতে পারলাম আমার কাছে সম্পর্কটা বন্ধুত্বের হলেও দিশার কাছে তার চেয়ে বেশি কিছু।”

দিশা এবার অনুভবের দিকে অবাক হয়ে তাকালো। অনুভব ইশারায় তাকে আশ্বস্ত করলো।

দিশা অনেক ভালো মেয়ে।সে একটু একটু করে আমার মনে জায়গা করে নিয়েছে।

আমিও দিশার প্রতি দুর্বল হতে শুরু করি।

তারপর একদিন দিশাকে প্রপোজ করি আর ও হ্যা বলে।

আরো কিছুদিন যাওয়ার পর আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। তাই আবার একদিন দিশাকে নিয়ে বাড়িতে আসি।

কিন্তু সেদিন এসে যা শুনলাম তাতে বুজলাম এভাবে আসা যাবে না।

কারণ আমি সেদিন জানতে পারি। ইশিতা প্রেগন্যান্ট আর সবাই জেনে গেছে অনুরাগের সত্যিটা। অনুরাগ ইশিতা কে ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু ইশিতা অনুরাগ কে ডিভোর্স দিতে চাইছে।

আমার মাথায় তখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, “ইশিতা কি এখনও আমাকে ভালোবাসে নাকি অনুরাগ কে ভালোবাসে?”

এই প্রশ্নের উত্তর আমি খুব তাড়াতাড়ি জেনে যায় অবশ্য এই বিষয়ে দিশা আমাকে সাহায্য করেছে কারণ, “মেয়েদের মনের কথা মেয়েরা ভালো বুঝতে পারবে।”

অবশেষে জানলাম ইশিতা অনুরাগ কে ভালোবাসে কিন্তু সেটা বলতে পারছেনা।

তাই আমি মিথ্যে গল্প সাজিয়ে দিশার সাথে এসে উপস্থিত হয়। আসলে আমি ইশিতার মুখ থেকে সত্যিটা বের করতে চেয়েছিলাম আর আমি সেটা পেরেছি।

অনুভবের কথা গুলো সবার মাথার উপর দিয়ে গেল।কেউ কিছু বুঝতে পারছেনা। “কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা?”

“লিজা বললো ভাবী কি বলেছে সে অনুরাগ ভাইয়া কে ভালোবাসে?”

হুম বলেছে তবে তখন হয়তো ওর জ্ঞান ছিল না।ইশিতার অস্পষ্ট কথা গুলো আমি শুনেছি।

অনুরাগ ইশিতার দিকে তাকালো। ইশিতা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।

“ভাইয়া সেটা না হয় বুঝলাম কিন্তু দিশা আপুর এভাবে বৌ সেজে আসার কারণ কি?”

কারণ আমরা একটু আগে কাজী অফিস থেকে বিয়ে করে এসেছি। ইচ্ছে ছিল সবাইকে জানিয়ে ধুমধাম করে বিয়ে করার। কিন্তু আমি তোমাদের উপর ভীষণ রাগ করেছি।

“কারণ তোমরা সবাই আমার থেকে সত্যি লুকিয়ে রাখতে চেয়েছ।”

আর ইশিতা তুমি অন্তত আমাকে সত্যি বলতে পারতে।

ইশিতা আমতা আমতা করে বলল আমি আসলে…….

থাক আর কিছু বলতে হবে না।

আশা করছি সবার কাছে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে।

তারপর অনুরাগ কে উদ্দেশ্য করে বলল, “এই যে দেবদাস আমেরিকা চলে যাবার সিদ্ধান্ত মাথা থেকে এবার ঝেড়ে ফেলো।”

ইশিতা সামলে রেখো ও কিন্তু তোমাকে রেখে পালানোর চিন্তা করছে।

ইশিতা অনুরাগের দিকে তাকিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে ছাদে চলে গেল।

অনুরাগ তার পেছনে পেছনে ছুটতে ছুটতে বললো আরে আমি কিছু করিনি………. “ইশিতা আমার কথা একবার শোন।”

ঈশান বললো আজকে অনুরাগ ভাইয়া শেষ।
ঈশানের কথা শুনে সবাই হাসতে শুরু করলো।

অনুভব বললো আমি দিশা কে নিয়ে চলে যাচ্ছি।

তাহেরা বেগম বাধা দিয়ে বলল নতুন বৌ নিয়ে কোথাও যাওয়া হবে না।

তুমি চিন্তা করো না মা আমি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো। “ততদিনে তুমি আর বাবা মিলে আনিসুল আংকেল আর খালা মনিকে রাজি করাও লিজা আর ঈশানের বিয়ে দেবার জন্য।”

লিজা দৌড়ে পালিয়ে গেল। ঈশান মাথা চুলকাতে চুলকাতে চলে গেল।

অনুভব দিশার হাতটা আরো শক্ত করে ধরলো তারপর বেরিয়ে গেল অজানার উদ্দেশ্যে।

—————-

“আরে ইশিতা দাঁড়াও !”
“কেন দাঁড়াব আমি?”
“তুমি এখানে কেন এসেছো যাও না যাও তোমার মিস ওয়ার্ল্ড মিস ডায়নার কাছে।”

“হুম তাই তো করব ভেবেছিলাম এখানে তো কেউ আমাকে ভালোবাসে না।”
তাই ডায়নার কাছে ফিরে যাওয়া বেটার হবে।

“সবাই তো শুধু মুখের কথা শুনতে চাই কিন্তু মনের কথা কেউ বুঝতে পারেনা।”

অনুরাগ ইশিতার কোমর জড়িয়ে ধরে বললো তাহলে বুঝিয়ে দাও।

তার আগে কথা দাও কোনদিন আমাকে ছেড়ে যাবার কথা ভাববে না।
কথা দিলাম টকিং মেশিন।

“কি বললে?”
ইশিতার কানে ফিসফিস করে বলল,

“চুপি চুপি একটা কথা বলতে চাই
তুমি আমার সেই #মন_যাকে_চায় ”

অনুরাগ ইশিতার কপালে ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিলো।

“তারপর দুজনে দুজনে জড়িয়ে ধরে বললো ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।”

————-

অনুভব দিশার হাত ধরে রাস্তায় হাঁটছে।

দিশা এবার থেমে গেল। আর বললো সেই কখন থেকে আমাকে চুপ করিয়ে রেখেছ। এরকম করে থাকলে তো আমি বোবা হয়ে যাবো।

আর কতো প্রশ্ন আমার মাথায় গিজগিজ করছে। সেগুলোর উত্তর না জানতে পারলে আমি শান্তি পাবো না।

“অনুভব এবার অন্তত বলো এভাবে হুট করে আমাকে বিয়ে করার কারন কি?”

“অনুভব এবার বাঁকা হেসে বললো’ কেনো ভালোবাসো না আমাকে??”

দিশা বেশ লজ্জা পেলো। ইশ্ অনুভব কি করে জানলো মিনমিনে স্বরে বলল।

“অনুভব দিশার কানের কাছে ফিসফিস করে বলল অনুভব সব জানে।”

দিশা এবার দুহাত নিজের কোমরে রেখে দাঁড়িয়ে বললো, “ও আচ্ছা তাহলে এতোক্ষণ যে বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলে আসলে তার কারণ কি?”

কোন কারণ নেই সবাই কে একটু চিন্তা মুক্ত করলাম। সবার মনের দ্বিধা দ্বন্দ্ব দুর করে দিলাম।

আর ভালোবাসার মানুষ গুলোকে এক করে দিয়েছি।

“তাই বলে এভাবে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে আমাকে বললে আমি কি তোমাকে না করতাম!!” লজ্জায় রাঙা হয়ে বললো দিশা।

“ও তাই নাকি তাহলে এখন আমি যা করবো তার কোন কিছুতেই তুমি বাঁধা দেবে না তাইতো?”

“অনুভবের চোখে মুখে দুষ্টুমির হাসি দেখে দিশা দৌড়ে পালাল।”অনুভব তার পিছু পিছু ছুটলো।

–এই বউ আমাকে রেখে কোথায় পালিয়ে যাচ্ছো।

অনুভব একটু থামল তারপর মনে করলো।ইশিতার প্রেগন্যান্সির খবর শুনে অনুভব দিশার কাছে গেছিল।
আর আড়ালে দাঁড়িয়ে নার্স আর দিশার কথা শুনেছে।

দিশা তাকে কতটা ভালোবাসে। তাকে বাঁচানোর জন্য দিশা নিজের জমানো সব টাকা খরচ করে ফেলেছে।

আর সবচেয়ে বড় কথা “অনুভব যদি রাগ করে তার সাথে আর যোগাযোগ না করে তাই সে অনুভবকে নিজের মনের কথা বলেনি।”

ইশিতা আর অনুরাগ কে মিলানোর জন্য অনুভব এই পথ বেছে নিয়েছে।সে হয়তো এখন দিশাকে ভালোবাসেনা। কিন্তু একদিন ভালোবাসাতে পারে।

অনুভব আবার দিশার পিছনে ছুটতে শুরু করলো।

একবছর পর।।।।।

ইশিতা আর অনুরাগ খুব সুখে আছে। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ তাদের ছোট্ট সংসার। তাদের সংসারে দুজন নতুন অতিথি এসেছে ইহান আর অহনা তাদের জমজ বাচ্চা।

ইশিতা আর অনুরাগ দুই পিচ্চি কে নিয়ে ব্যস্ত থাকে সবসময়। খুব দুষ্টু ওরা। অনুরাগের মতে বাচ্চারা ইশিতার মতো দুষ্টু হয়েছে। ইশিতা বলবে অনুরাগের মতো হয়েছে। সারাদিন খুনসুটিতে মেতে থাকে দুজনে।

দিনশেষে তারা সুখী দম্পতি।

ঈশান আর লিজার বিয়ে হয়েছে দুমাস আগে। তাঁরা হানিমুনে গেছে।

অনুভব আর দিশার সম্পর্ক আগের চেয়ে আরো গভীর হয়েছে। দিশা নিজের ভালোবাসা দিয়ে অনুভবের মন জয় করার চেষ্টা করছে। একদিন হয়তো সফল হবে।

অবশেষে সবাই সুখে শান্তিতে আছে।

#সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here