#মনের_গভীরে_তুমি❤
#পর্ব_১১
#M_Marufa_Yasmin
আরাভ আবার শুয়ে পড়ে।টিপ ফ্রেশ হয়ে একটা নীল শাড়ি আর হাত ভরা কাঁচের নীল চুরি পরেছে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভিজে চুল গুলো ঝাড়ছে।আরাভ বিছানা থেকে উঠে এসে টিপ কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে গলায় মুখ গুঁজে দিল।
টিপ আরাভের স্পর্শে কেঁপে ওঠে বলল …
—“কি করছেন ছাড়ুন আমাকে উফফ আপনি না আপনাকে নিয়ে আর পারি না ছাড়ুন ।
আরাভ টিপ কে ছেড়ে দিয়ে বিরক্ত হয়ে বলল
—” উফফ আমার বউকে একটু আদর ও করতে দেবে না নাকি? একটু romance ও করতে দেবে না ।ভালো লাগে না। আমি আমার বউ কে আদর করবো ব্যাস ।
বলেই আবার জড়িয়ে ধরে
—” আপনি পাগল একটা যান ফ্রেশ হয়ে আসুন স্যার, ,,,
আরাভ টিপ কে ছেড়ে দিয়ে বলল, ,
—“কি বললে ?স্যার! ! আমি তোমার স্যার।?
টিপ আমতা আমতা করে বলল …
—“না মানে তো কি বলব?
—” নাম ধরে ডাকবে ।
—“আমি পারব না ।
—” পারবে ।এখন নাম ধরে ডাকো তবেই ছাড়বো।
—” হু আমি পারবো না ।
—” আমি ও ছাড়বো না.।
—” ওকে বলছি ।। আরাভ আমাকে ছাড়ুন প্লিজ।
আরাভ টিপের দিকে তাকিয়ে দেখে টিপ লজ্জায় লাল।আরাভ দুষ্টুমি করে বলল …
—” এই তো আমার বউ ।
—” ইশশশ ছাড়ুন ।
আরাভ শান্ত ভাবে বলল …
—” i love you tip অনেক ভালোবাসি তোমাকে।
তুমি আমার জোছনা রাতের সাথী। অন্ধকারের আলো তুমি তোমাকে ছাড়া জীবনে আমি এক পা ও চলে পারবো না সারাজীবন তোমার হাত ধরে চলতে চাই ।
টিপ ও আরাভ কে জড়িয়ে ধরে নেয়।
—” আমি ও অনেক ভালোবাসি আপনাকে।কোনদিন ছেড়ে যাবেন না তো?
—” কোনোদিন ও না ।
দুজন দুজনকে এই ভাবে কিছুক্ষন জড়িয়ে ধরে থাকল,,,,,
—“সরি সরি সরি আমারা ভুল টাইমে চলে এলাম আমারা কিছু দেখিনি ।
দরজা থেকে আওয়াজটা শুনে টিপ আর আরাভ একে অপরকে ছেড়ে দিয়ে অন্য দিকে মুখ করে বলল …
—” তোরা এখানে কেনো কখন এলি তোরা?
—“এই তো দা এখনি ।
টিপ এখনো অন্য দিকে মুখ করে আছে ।
ইশরা আর আবীর টিপের কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরল ।
টিপ ও ওদের দেখে খুব খুশি হঠাত করেই নিচে থেকে ইমরান চৌধুরী আরাভ আর টিপ কে ডাক দিল।সবাই মিলে নিচে গিয়ে দেখল।একটা ছেলে তার বয়স মেবি চব্বিশ হবে । স্লিকি চুল গায়ের রঙ ফর্স ।চাপ দাড়ি চোখে সানগ্লাস। হিরোর মতো প্রবেশ করল।
আরাভ ইমরান চৌধুরী কে বলল
—“বাবা ডাকলে কেনো?
—” এনি হলেন মইন খান অনেক বড়ো ব্যবসায়িক । আমাদের কম্পানির সাথে কাজ করবেন।
আরাভ বলল….
—” হ্যালো i am Arab chowdhury. And my wife tip chowdhury.
মইন খান বললেন
—” হ্যালো ।হ্যালো মিস চৌধুরী ।
টিপ বলল
—” হ্যালো ।
মইন খান মনে মনে বললেন …..
—“ও তার মানে তুমি বিবাহিত। সে যাই হোক নজর যখন পরেছে তখন তুমি আমার রাতপরি।
আমি তো তোমার জন্যই এত কিছু পড়েছি।তোমার নাম টিপ কিন্তু তুমি আমার রাতপরি।
আরাভ মইন কে ভাবতে দেখে বলল ,,,,,,,,,,
—” হ্যালো মিস্টার মইন ।কি ভাবছেন ?
মইন এর ধ্যান ভাঙ্গে আরাভের কথায় ।
—” না কিছু না ।আমার রুম টা যদি কষ্ট করে দেখিয়ে দিতেন ।
—“of course. চলুন ।
আরাভ মইন কে রুম দেখিয়ে দিল।
দুপুর বেলা, ,,,,,
টিপ রান্না ঘরে রান্না করছে।আরাভ পেছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।
—“কি করছেন কি আপনি ছাড়ুন কেও দেখে ফেলবে আরাভ প্লিজ ছাড়ুন ।
—” না ছাড়বো না ।দেখো না বাইরে কত সুন্দর আবহাওয়া ।বৃষ্টি নামবে ।
—” তো আমি কি করবো?
—” কি আবার করবে এই রোমান্টিক আবহাওয়ায আমার সাথে romance করবে ।
—” ছাড়ুন তো অনেক কাজ আছে।
—“চুপ করো তুমি ।
বলেই টিপ কে কোলে তুলে নিয়ে ছাদে যেতে লাগে ।
—” নামান আমাকে পড়ে যাবো তো ।
—” পরতে দেবো না তোমাকে ।
—“ছাদে কেনো আনলেন ভিজে যাবো তো ।
—” ভিজতেই তো এলাম।দুজনে ভিজবো ।
বলেই আরাভ টিপ কে নিজের কাছে টেনে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে দেয়।টিপ ও বাঁধা দেয় না।আরাভ কে জড়িয়ে থাকে ।কিছুক্ষণ পর আরাভ টিপ কে ছেড়ে দিল।টিপ লজ্জায় আরাভের দিকে তাকাতে পারছে না।আরাভ নিচে গিয়ে তার গিটার টা নিয়ে এলো।টিপ দেখে বলল
—” আবার গিটার কেনো?
—” গান করব।
—“কি গান?
—” এই দিকে এসো ।আমার কাঁদে মাথা দাও ।
রিমঝিম এ ধারাতে চায় মন হারাতে
রিমঝিম এ ধারাতে চায় মন হারাতে
এই ভালোবাসাতে আমাকে ভাসাতে..
এলো মেঘ যে এলো ঘিরে
বৃষ্টি সুরে সুরে সোনায় রাগিনী,
মনে স্বপ্ন এলোমেলো
এই কি শুরু হলো প্রেমের কাহিনী
রিমঝিম এ ধারাতে চায় মন হারাতে,
রিমঝিম এ ধারাতে চায় মন হারাতে।
আগে কত বৃষ্টি যে দেখেছি শ্রাবণে
জাগেনি তো এতো আশা,
ভালোবাসা এ মনে (x2)
সে বৃষ্টি ভেজা পায়ে
সামনে এলে হায় ফোটে কামিনী,
আজ ভিজতে ভালো লাগে
শূণ্য মনে জাগে প্রেমের কাহিনী (x2)
রিমঝিম এ ধারাতে চায় মন হারাতে,
রিমঝিম এ ধারাতে চায় মন হারাতে।
শ্রাবণের বুকে প্রেম
কবিতা যে লিখে যায়,
হৃদয়ের মরু পথে
জলছবি থেকে যায় (x2)
জানি সেই তো ছিল আগে ঘুমে,
অনুভবে স্বপ্নচারিনী
আজ রাগে-অনুরাগে লেখে
বৃষ্টি দাগে প্রেমের কাহিনী (x2)
রিমঝিম এ ধারাতে চায় মন হারাতে,
রিমঝিম এ ধারাতে চায় মন হারাতে।
পুরো গানটা আরাভ টিপের দিকে তাকিয়ে গাইল ।
টিপ ভেঙচি দিয়ে বলল …
—” আমি তো জানতাম না আমার ব্রহ্মদ্রত্য এত রোমান্টিক ।
আরাভ গিটার রেখে টিপ এর কোমর ধরে কিছুটা নিজের কাছে এনে বলল
—” এখনো তো কিছুই জানো না দেখো আর কি কি করি .
—” ইশশশ সখ কতো ।
—“কি জেনো পোরা পোরা গন্ধ আসছে ।
—“তাই তো ।আল্লাহ গেসে তো মাংস বসিয়ে ছিলাম। আমি তো গ্যাস বন্ধ করিনি যাহহহ।
দুজনে ছুটে যায় নিচে। সিঁড়িতে নেমে দেখে রান্না ঘরে সবাই দাঁড়িয়ে ইমরান চৌধুরী ইশরাত চৌধুরী আবির ইশমা কেয়া মইন খান সবাই গন্ধ পেয়ে ছুটে চলে এসেছে মাংস তো দেখা যাচ্ছে না পুরে কয়লা হয়ে গিয়েছে । টিপ আর আরাভ এক সাথে বলল, ,,,,
—” কি হয়েছে?
সবাই ওদের দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকালো ।
ইশরা কোমরে হাত দিয়ে বলল
—” এতক্ষন কোথায় ছিলে তোমরা?
দুজনে আমতা আমতা করে বলল ….
—” আমরা মানে এই মানে ।
ইমরান চৌধুরী ওদের অবস্থা দেখে ইশরাত চৌধুরী কে ইশারা করলেন চলে যেতে।দুজনে চলে যায়।
কেয়া ও চলে যায়।ইশরা ওদের ক্লাস নিচ্ছে এবার ।
—” তোদের এই অবস্থা কেনো?
আবির বলল
—” ইশরা ছেড়ে দাও না চলো আমাদের পড়া আছে অনেক ।
—” তুমি বললে তাই ছাড়লাম না হলে ।
আরাভ ভেঙচি কেটে বলল
—” বাবা ও বলল তাই?
ইশরা ছুটে চলে যায়।আবির ও মাথা চুলকে চলে যায়।আরাভ দেখে কেও নেয় আর এই সুযোগে আবার টিপ কে জড়িয়ে ধরে ।
—” অনেক হয়েছে এবার ছাড়ুন ।
—” তুমি রুমে চলো আগে ফ্রেশ হবে ঠান্ডা লেগে যাবে ।না হলে ।
—” কিন্তু রান্না?
—” রান্না সারভেন্টরা করে নেবে তুমি চলো।
আরাভ আর টিপ রুমে চলে যায়।এদিকে মইন খান ওদের ভালোবাসা দেখে রাগে দেওয়ালে নিজের হাত মারে ।
—” তোমাদের এই ভালোবাসা বেশিদিন থাকবে না ।
*
*
*
*
বাকি
(