#তাসনিম_তামান্না
#মহব্বত
পর্ব ২_৩
🍁🍁🍁
সকালে স্নিগ্ধ মিষ্টি রোদ মিথিলার চোখ-মুখে পড়তেই মিথিলার চোখ-মুখ কুঁচকে পিটপিট করে চোখ খুললো। মিথিলা আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বসলে চোখ মুখ ডলে উঠে বসলো। এলোমেলো চুলে গুলা হাত খোপা করে ওয়াসরুমে গিয়ে মুখে পানি দিয়ে আয়নায় নিজের প্রতিছবির দিকে তাকালো। কালকের ঘটা প্রতিটা কর্মসূচি চোখের সামনে ভাসতে লাগলো। আরেকবার চোখমুখে পানির ঝাপটা দিতেই কালের রাতের ঘটনাটা মনে পড়লো ‘Welcome to my life Mrs. Fayaz Arham. my queen Be ready for romantic punishment’ ফিসফিসানির কথাটা মনে পড়তেই গা শিউড়ে উঠলো মিথিলার। নিজের ডান কানে হাত দিয়ে ছুয়ে দেখলো নিজে নিজেই বলল ‘কালকে কি কেউ সত্যি আসছিলো? না-কি আমার মনের ভুল? আচ্ছা যদি আমার মনের ভুলই হয়ে থাকে তাহলে ‘ফাইয়াজ আরহাম’ বিরক্তিকর মানুষটারই নাম কেনো শুনলাম? দূর ঔ মানুষটা আমার স্বপ্নে এসেও জ্বালাছে’
মিথিলা জল্পনা কল্পনা করতে করতে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসলো। মিথিলা বিছানায় বসে ফোনটা হাতে নিতেই দরজায় কড়াঘাত শুনে ঘড়ির দিকে তাকালো ৮:৫০ বাজে। দেখলো ফোনের চার্জ ডাউন ফোন চার্জে বসিয়ে দরজা খুলে দেখলো মিথিলার বড়বোন ‘মৌসুমি’ ভ্রু কুচকে মাঝায় হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে। মিথিলা সেটা বিশেষ পাত্তা না দিয়ে টেবিলে বসে ব্রেড বানাতে লাগলো। মিথিলার এমন বিহেভিয়ারে মৌসুমি রেগে বলল ‘আমি এখানে দেখতে পাচ্ছিস না?’
মিথিলা বোনের দিকে একবার তাকিয়ে খাওয়ায় মন দিয়ে বলল ‘হুম’
‘হুম কি হ্যাঁ কাল দরজা বন্ধ করেছিলি কেন? আঙ্কেল আন্টি কি ভাবলো বলতো?’
মৌসুমির সাথে তাল মিলিয়ে মিথিলার মেঝ বোন মৌরি বলল ‘মিথু তোর কি কান্ড জ্ঞান হবে না? এখন বিয়ে হয়ে গেছে এখন তো বুঝতে শেখ’
মিথিলা এবার শান্ত চোখে তাকিয়ে বলল ‘তোমরা আমাকে বুঝেছ আপু? মানছি আমি বলেছিলাম তোমাদের ইচ্ছেতে বিয়ে করবো তাই বলে এমন করবে আমি কখনো আমি ভাবি নাই! একবার তো জানাতে পারতে আমার বিয়ে, কার সাথে সেটাও জানি না হুট করে বিয়ে দিয়ে দিলে। একবার আমার দিকটা ভেবেছ’ বলে তাছিল্য হাসলো মিথিলা
মৌসুমি আর মৌরির মুখ ছোট হয়ে গেলো। মৌরি আমতাআমতা করে বলল ‘দেখ মিথু তোর বিয়ে এমন ভাবে দিবো আমরাও কখনো ভাবি নাই কিন্তু পরিস্থিতির চাপে পড়ে দি….’
মিথিলা আর কিছু শুনলো না উঠে চলে আসলো রুমে। আফরোজা বেগম রান্নাঘর থেকে তিন মেয়ের কথা শুনছিলেন। ওনার মনেও অপরাধ বোধ কাজ করলো। হঠাৎ করেই ওনার মনে হতে লাগলো এই কাজটা ঠিক হয় নি। কিন্তু নিজের মেয়ে বিপদে শুনে কার মাথা ঠিক থাকবে। তাই তো তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন যদি বিপদ পিছু ছাড়ে।
.
.
মিথিলা কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিল। তখনই আফরোজা বেগম হাসিহাসি মুখে আসলেন কিন্তু মেয়েকে রেডি হতে দেখে ওনার হাসিমুখ চুপসে গিয়ে বলল ‘মিথু আম্মু কোথায় যাচ্ছিস? আজ কোথাও যেতে হবে না?’
মিথিলা এবার রেগে গিয়ে বলল ‘এখন কি আমার পড়াশোনাটাও বন্ধ করে দিবা? তোমাদের সব কথা শুনি বলে ভেবো না একথাটা শুনবো’
আফরোজা বেগম বললেন ‘আরে আমি একথা কখন বললাম? আমি শুধু বললাম আজ কলেজে যাস না তোর শশুড় বাড়ি থেকে আত্মীয় স্বজনরা আসবে কাল তারা আসতে পারেনি। আর আমি তোর ফেন্ডদের ও বাসায় আসতে বলে দিয়েছি’
-মানে কি আমাকে জোর করিয়ে বিয়ে দিলে আর এখন আবার এসব করতে বলছ আমি পারবো না (মিথিলা)
আফরোজা বেগম আদুরী সরে বলল
-এমন করছিস কেন মা? মানছি আমাদের ভুল হয়েছে তাই বলে এমনভাবে রাগ করে থাকবি? আর রাগ করে থাকিস না মা? চল সকালে তো ভালোভাবে খেলিও না। চল আমি খাইয়ে দিবো
মিথিলা নিজের মায়ের আদুরী সরে শুনে গলে গেলো। মা’কে জড়িয়ে ধরে ঠোঁট উল্টে কেঁদে দিলো। আফরোজা বেগম ও পরম যত্নে আগলে নিলেন।
.
.
কিছুক্ষন পর সেতু,সুমু,নাফু,তানু আসলো। মিথিলার মায়ের মুখে বিয়ের কথা শুনে ওরা আকাশ থেকে পড়লো। বিস্তারিত মিথিলার মুখে শুনে সবাই হা করে বসে রইলো।
-সব ক’টার এমন হুট করে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে আমাদের আর এজীবনে বান্ধুবীর বিয়ের দাওয়াত খাওয়া আর হলো না (সুমু)
-ঠিক কইছিস(নাফু)
-যাই হোক তাই হোক তাই বলে তুই ছেলেকে না দেখে বিয়ে করে নিলি ছেলে যদি টাকলু ভুড়িওয়ালা হয় তখন কি করবি?(সেতু)
-তখন বসে বসে চোখের পানি দিয়ে সাগর বানাবে তাহার নাম হবে ‘মিথুমা সাগর’ (তানু)
মিথিলা ওদের কথায় বিরক্ত হয়ে বলল ‘ওফফ এসব আলতুফালতু কথা শুনতে ভালো লাগছে না চুপ করতো’
-হ্যাঁ এখন আমাদের কথা তো তোর শুনতে ভালো লাগবে না এখন অন্য কারোর কথা শুনতে ভালো লাগবে বুঝতেছিস না (নাফু)
-আরে ও তো ওর বরকেই দেখেনি কথা বলবে কেমনে?(সুমু)
-তাই বলছিলাম জীবনে একটা হলেও প্রেম কর। অন্তত ফিউচারে কাজে লাগবে এখন বোঝ ঠেলা (সেতু)
ওদের কথার মাঝে আফরোজা বেগম আসলে ওনাকে দেখে সবাই ভদ্র মেয়ের মতো চুপ হয়ে গেলো ওনি এসে শাড়ি আর ওয়ামেন্ট দিয়ে বললেন ‘তোমরা মিথুকে সাজিয়ে দাও আর শাড়ি পড়াতে পারোতো তোমরা’
–হ্যাঁ আন্টি আমি পাড়ি আমি পড়িয়ে দিচ্ছি আপনি টেনশন নিয়েন না (সুমু)
-আম্মু মানে কি আমি শাড়ি পরে থাকতে পারবো না জানো তো সেটা তাহলে কেনো বলছ?(মিথিলা)
-একটা দিন-ই তো কষ্ট করে পড়ে নে মা। আর জোর করতাম না যদি না ছেলের নানি আসত (আফরোজা বেগম)
মিথিলা ফোস করে নিশ্বাস নিলো। ওনি চলে গেলে। নাফু বলল ‘যাক বাবা একটা কাজতো পাইলাম’
-আর যে কি কি সহ্য করতে হবে (মিথিলা)
-পিকচার আভি বাকি হে মিথুমিয়া যা-ই হোক ঝুমুকে ভিডিও কল দিয়ে জানা নাহলে পরে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ লাগাবে (তনু)
.
.
মিথিলাকে রেডি করতে করতে ওরা বাইরে থেকে আওয়াজ শুনতে পেলো। মৌসুমি, মৌরি, আফরোজা বেগম কাজের ফাঁকে এসে তাড়া দিয়ে যাচ্ছে। মিথিলার ফেন্ডদের সাথে কাজিনরাও এসে যোগ দিয়েছে। মিথিলার কাজিনরা মিথিলার বরের গুনগান করতে করতে ফ্যানা তুলে ফেলছে। তোর বর অনেক হেন্সাম, তার ওপর কত বড়লোক, ফ্যামিলেও অনেক ভালো, মিথু ভাগ্য করে এমন বর পাছিস না হলে মাথা ঠুকেও পেতি না মিথিলা এগুলা শুনতে শুনতে বিরক্তি নিয়ে বসে আছে।
মিথিলা রেডি হয়ে বসে আছে। বাইরে থেকে কখন ডাক আসবে তার অপেক্ষায়। সেতু মিথিলার কানের কাছে এসে বলল ‘মিথু শোন এদের বননা অনুযায়ী যা শুনলাম তাতে মনে হচ্ছে ছেলে ভুড়িওয়ালা বা টাকলু না হেন্সামই হবে! তুই যদি বিয়ে না মানিস তাহলে আমাকে তোর বররে দিয়ে দিস’
সেতুর কথা শুনে মিথিলা চোখ মোটামোটা করে তাকালো। সেতু মুখ টিপে হাসলো। মিথিলার মন কেমন অস্থির অস্থির করছে। হাতের তালু ঘামছে, মুখে হালকা কৃত্রিমতায় ওপর টিসু দিয়ে বারবার মুচ্ছে। মিথিলাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ও অনেক নার্ভাস। ওরা সবাই মিথিলাকে স্বাভাবিক করার ট্রায় করলো কিন্তু ফলাফল শূন্য।
বাইরে থেকে ডাক আসতেই মিথিলার বড়বোন মৌসুমি আর মেজবোন মৌরি এসে মিথিলাকে নিয়ে গেলো। আর বাকি কাজিন ফেন্ডগুলা পিছন পিছন গেলো। মিথিলা কারোর দিকে তাকালো না চোখ ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে মিথিলার কাজিনরা বরকে আগে থেকে দেখায় তারা স্বাভাবিক ভাবে আছে কিন্তু মিথিলার ফেন্ডদের চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম চোখের সামনে ‘সুপারস্টার মডেল ফাইয়াজ আরহাম’কে দেখে।
#চলবে
#Tasnim_Tamanna
[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।গঠন মূলক কমেন্ট করবেন।]
#তাসনিম_তামান্না
#মহব্বত
পর্ব-৩
🍁🍁🍁
মিথিলা নিজের হাত চেপে মাথা নিচু করে বসে আছে। হার্টবিট ধুকপুক করছে। ওদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠলো ‘কি গো বউ দেখি তোমার চাঁদ মুখখানা দেখি আমার নাতিনের পছন্দ কেমন’
মিথিলা কথা শুনে বুঝলো এটা তার বরের নানি। পাশ থেকে আবার বলল ‘মিথুপুই তুমি মাথা নিচু করে আছ কেনো এখানে তো আমাদের সবাইকে চিনো এতো লজ্জা পেও না তো’
মিথিলা চমকালো ‘মিথুপুই’ তো একমাত্র ফাইজা বলে ডাকে। মিথিলা আস্তে আস্তে মাথা উঠিয়ে সামনে বসে থাকা মানুষগুলাকে দেখতে। প্রথম সামনে বরাবর তাকাতেই ফাইয়াজকে দেখে চোখ বড়বড় হয়ে যায়। ফাইয়াজ পাশে বসে থাকা একটা হ্যাগলা পাতল ছেলের সাথে খুব সিরিয়াস মুখ নিয়ে কথা বলছিলে এছেলেটাকে মিথিলা চিনে ওটা ফাইয়াজের পিএ।
মিথিলা দেখলো সবাইকে সে চিনে আগের নেয় মাথা নুয়ে নিলো। এখন আগের চেয়ে ঘামছে,হাত অনবরত কাঁপছে। মিথিলার হার্টবিট বহুগুণে বেড়ে গেছে। ফাইয়াজের নানি কয়েকটা প্রশ্ন করলো মিথিলা কাঁপা গলায় সেগুলোর উত্তর দিলো। কথায় কথায় তিনি বললেন কাল আসতে চাইছিল কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে আসতে পারি নাই তারা। মিথিলা জেনো বসে থাকতে পারছে না মাথা ঘুরছে ওট। প্রশ্নরা দল বেধে হানা দিয়েছে। কি হচ্ছে কিছু বুঝতে পারছে না। মিথিলা মৌসুমির হাত ধরলো। মৌসুমি সবাইকে বলে মিথিলাকে রুমে নিয়ে আসলো। মিথিলার সাথে ওর ফেন্ডরাও আসলো কাজিনরা সবাই আপায়ন করতে ব্যাস্ত। মিথিলাকে রেখে ফের বাইরে চলে গেলো।
-এটা কি ছিল? (সুমু)
-ভুল দেখলাম নাকি ভুত দেখলাম ফাইয়াজের ভুত (নাফু)
-এই তোর কাজিনরা একটাবারের জন্য বললও না তোর বর ‘ফাইয়াজ আরহাম’ (তানু)
-হায় মে মার গেয়া সামনা-সামনি মডেলকে দেখলাম ইশ একটা সেল্ফি নিবো (সেতু)
-এই সেতু একদম না এসব করতে গিয়ে না আবার মানসম্মান খাওয়াস (নাফু)
-আরে আমি তো শুনছি ‘ফাইয়াজ আরহাম’ এমনিতেই অনেক ভালো কিন্তু রেগে গেলে ওনার হিতাহিত জ্ঞান শূন্য এরজন্য ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই ভয় পাই এটা নিয়ে একবার নিউজ হইছিল মনে আছে (সুমু)
-হ্যাঁ হ্যাঁ খুব মনে আছে মডেল রাহিকে ওনি সুট করার সময় থাপ্পড় মারছিলাম তাও হাত ধরার জন্য (সেতু)
-হাই হাই তোর কি হবে মিথু (নাফু)
-আব তু গেয়া (তানু)
মিথিলা থম মেরে বসে আছে। মিথিলা ভালো করেই ফাইয়াজকে চিনে। মিথিলা বাবা রাফিক আর ফাইয়াজে বাবা মারুফ ভালো বন্ধু হওয়ায় যাতায়াত ও হয় এবাড়ি ওবাড়ি। মাঝে কয়েকদিন দুবাড়ির দেখাই হতো না। মিথিলা যেদিন ফাইয়াজদের বাড়ি গিয়েছিলো। সেদিন ফাইজা স্কুলে ছিল। তাই মা আর আন্টির গল্পের মাঝে বোর হচ্ছিল তখন ফাইয়াজের মা ই বলছিল বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখতে। মিথিলা ঘুরতে ঘুরতে ফাইয়াজের রুমে গিয়ে দেখতে থাকে ফাইয়াজের ছবি রুমে দেখে মিথিলা প্রথমে ভেবেছিল ফাইজার রুম হয়ত ওর মতোই মডেল ফাইয়াজ আরহামকে ভালো লাগে তাই সারা রুমে ছবি লাগিয়ে রাখছে। সবটা কুটিয়ে কুটিয়ে দেখতে থাকে। তখনি পিছন থেকে ধমক শুননে চমকে পিছনে তাকায় পিছনে ফিরে হা করে তাকিয়ে থাকে ফাইয়াজের দিকে।
-‘এই মেয়ে হা করে তাকিয়ে আছ কেনো আর এই রুমে কি করো জানো না কারোর রুমে আসার আগে তার কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে আসতে হয় না হলে সেটাকে ব্যাড মেনারস বলে’
মিথিলা ফাইয়াজের ধমকে ভয় পেয়ে যায় থেমে থেমে বলে
-স সরি ভাইয়া
ওনি রেগে বলেছিল ‘আউট’
মিথিলা একদৌড়ে বেরিয়ে মায়ের পাশে বসেছিল তারপর থেকে মাঝে দেখা হতো ওদের শুধু কথা হতো ‘ভালো আছেন’ তার উত্তর হত ‘হ্যাঁ’ একবারও মিথিলা কেমন আছে শুনতো না কেনো জানি না মিথিলার খুব খারাপ লাগতো। তারপর থেকে মিথিলা ওবাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দেয়। বাহানা দেখায় পড়াশোনার। মিথিলা মনে করতো ফাইয়াজ তাকে সহ্য করতে পারে না তাই দূরে দূরে থাকত। মিথিলা ফাস্ট টাইম ফাইয়াজের ওপর ফিদা হয়ে গেছিলো ফাইয়াজের পারসোনালিটি, এটিটিউড, নিল চোখের মনির জন্য টিভিতে দেখে মনে করতো ফাইয়াজ লেন্স লাগিয়েছে কিন্তু সামনা-সামনি দেখে ওর ভুল ধারণাটা ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু ব্যবহার দেখে মিথিলা ফাইয়াজকে মনে মনে গালি দিয়ে ধুয়ে দিত।
.
.
খাওয়াদাওয়ার পর্ব শেষ হতে হতে দুপুর ৩:৩০ বেজে গেলো। কলেজ টাইম শেষ হতেই সেতু,সুমুর বাসা থেকে অনবরত কল আসতেছে তাই ওরা চলে যেতে চাইছিলো কিন্তু মিথিলার আম্মু না খাইয়ে আসতে দিলো না ওরা খেয়ে চলে গেছে কিছুক্ষণ আগে। মিথিলা রুমে একা জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে আর প্রশ্নের উত্তর খোঁজর বৃথ্য প্রয়াস চালাছে কিন্তু ফলাফল শূন্য। মিথিলা নিজ মনে ভাবছে ‘আচ্ছা ওনি কি আমার আর ওনার বিয়েটা মেনে নিয়েছে? নাকি আমার মতো ওনাকেও জোর করে বিয়েতে বসিয়ে দিয়েছে? কিন্তু ওনাকে কে জোর করবে ওনি তো অনেক রাগী? আমি জানি ওনি আমাকে একবিন্দু সহ্য করতে পারে না? যদি কথায় কথায় চড় মেরে দেয় তখন?
মিথিলা ভাবনার সুতা ছিড়লো দরজা বন্ধ করার শব্দে। দরজার দিকে তাকাতেই মিথিলার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম ফাইয়াজকে দেখে। ফাইয়াজ একবার মিথিলার দিকে তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। মিথিলা ভেবে পাচ্ছে না ও কি রুমে থাকবে নাকি চলে যাবে? চলে গেলে কোথায় যাবে এখন সবরুম বুক একমাত্র ছাঁদ ফাঁকা। মিথিলা ছাঁদে যাওয়ার জন্য দরজা খুলে বাইরে আসতে গেলে ওয়াসরুমে দরজা খট করে খুলে যায়। মিথিলা ওভাবে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো ফাইয়াজ তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে মিথিলার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো। ওনি গম্ভীর কণ্ঠে বলল
-ওখানে দাড়িয়ে আছো কেনো? (ফাইয়াজ)
মিথিলা কি বলবে ভেবে পেলো না। মনে মনে ভয় পেলো। থেমে থেমে বলল
– কো থা ও না
ফাইয়াজ তোয়ালেটা স্টাডি টেবিলে চেয়ারে রেখে আয়নায় চুল ঠিক করতে করতে বলল
-দূরে দাড়িয়ে আছো কেনো? কথা আছে বসো। (ফাইয়াজ)
মিথিলা মনে মনে বলল ‘আমার সাথে আপনার আবার কি কথা?’ কিন্তু মুখে কিছু না বলে বিছানার একপাশে বসলো মিথিলার নিজের রুমেই নিজেকে কেমন অচেনা লাগছে। মিথিলা বসতেই ফাইয়াজ বলতে শুরু করলো ‘বিয়ের অনুষ্ঠান হবে তোমার ইয়ার চেজ্ঞ এক্সামের পর সো মন দিয়ে এস্টাডি করো পড়াশোনায় ঢিলেমি আমি টলারেড করবো না মাইন্ড ইট বুঝলে মথায় ভালো করে ডুকিয়ে নাও’
মিথিলা অবাক হয়ে বলল ‘আপনি এ বিয়ে মানেন?’
ফাইয়াজ চুল থেকে হাত সরিয়ে মিথিলার দিকে তাকিয়ে বলল ‘মানি না কিন্তু মানতে তো হবেই বিয়েটা তো হয়ে গেছে তাই এখন আর কিছুই করা যাবে আর আমি চাইছি না তোমার বা আমার জন্য দুপরিবারের বনন্ডিংটা নষ্ট হোক তাই মানিয়ে নেওয়ায়টাই শ্রেয় মনে করছি’
ফাইয়াজের কথাটা মিথিলার কাছে যুক্তিপূর্ণ মনে হলো। কিন্তু তার পরক্ষণে বলে উঠলো ‘কিন্তু আপনি তো আমাকে স….’
এইটুকু বলে মিথিলা থেমে গেলো। ফাইয়াজ বলল ‘কি?আমি তোমাকে কি?’
-না না কিছু না (মিথিলা)
ফাইয়াজ আর কিছু বলতে যাবে তার আগে। দরজার ওপাশ থেকে হাসাহাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিথিলার কাজিনরা হাসাহাসি করে বলল ‘ভাইয়া রুমের মধ্যে এখন থেকে শুরু করে দিলেন সারারাত তো এখনো পড়ে আছে। কালকের মতো আজ চলে যেতে দিচ্ছি না মনে রেখেন’
মিথিলা ওদের কথা কানে আসতেই মিথিলার মেদযুক্ত মুখ রক্তিম আভার ছড়িয়ে পড়লো। ফাইয়াজ সেটা দেখে নিভৃতে হাসলো। ফাইয়াজ দরজা খুলে দিতেই ওরা রুমে এসে আরো পচাতে লাগলো।
#চলবে
#Tasnim_Tamanna
[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গঠন মূলক কমেন্ট করবেন। রি-চেক করি নাই ]