মিশে_আছি_তোমাতে পর্ব ২২+২৩

#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_22
.
.
.
.
প্রায় দশ দিন পর তিশা সু্স্থ হয় এই দশ তিশা মায়রাকে খুব জ্বালিয়েছে আবিরকে দিয়ে সবসময় আবিরের কোলে উঠে তিশা হাটাচলা করতো আর তা দেখা মায়রা রাগে ফায়ার হতো…… এই দশ দিনে আবিরেরও একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে কোন যেন আবিরের মাঝে মাঝে মাথা ব্যাথা আর মাথা ঘুড়ে…..

আবির অফিসে বসে কাজ করছে এমন সময় মায়রা‌ আবিরের কেবিনে আসে কফি নিয়ে…..

মায়রা : আবির তোমার কফি…..

আবির : এখন আমি কফি খাবো না মায়রা তুমি নিয়ে যাও….

মায়রা : আবির আমি তোমার জন্য এত কষ্ট করে কফিটা করে আনলাম আর তুমি বলছো খাবে না….. তাহলর তো আমার কষ্টটা বিফলে চলে যাবে

আবির : আচ্ছা দাও আমি খাচ্ছি…..

মায়রা : হুম ( খাও আবির খাও না হলে না আমার কাজ হাসিল হবে কি করে আজকেই তো শেষ ডোস এক চুমক খাওয়ার পরেই কাজ শুরু হয়ে যাবে তিশা তোমার সময় শেষ হয়ে আসছে আর আমার সময় শুরু হবে জাস্ট আর কয়েকটদিন)

আবির কফিটা শেষ করার আগেই আবির নিজের মাথা চেপে ধরে ব্যাথার কারনে মায়ার তা দেখে আবিরের কাছে দৌড়ে যায়…..

মায়রা : আবির কি হয়েছে তোমার???

আবির : কেন জানি আজকে মাথা ব্যাথা টা বেড়ে গেছে….

মায়রা : মানে তোমার মাথা ব্যাথা বেড়ে গেছে মানে….

আবির : আমার অনেক দিন ধরেই মাথা ব্যাথা আর মাথাটা ঘুরছে…

মায়রা : কি বলছো আবির তুমি আমাকে কথাটা এখন বলছো…. তোমাকে চলো ডক্টরের কাছে নিয়ে যাই নিরবকে ডাক দিবো

আবির : না না মায়রা ওকে ডাক দিও না ও যদি জানে খুব চিন্তা করবে আমার জন্য….

মায়রা : তাহলে কি করবো???

আবির : তুমি বরং আমাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাও….

মায়রা : তোমাদের ফেমেলি ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবো….

আবির : ফেমেলি ডক্টর না ওনার কাছে যাওয়া যাবে না….

মায়রা : কিন্তু কেন আবির তাহলে তুমি কোন ক্টরের কাছে যাবে…..

আবির খুব কষ্ট করে কথা বলছে….

আবির : আমি জানি আমার কোনো বড় ধরনের অসুখ হয়েছে তাই আমি চাই না ডক্টর আঙ্গেল আমাকে চিন্তিত হোক তাই অন্য কোনো ডক্টরকে দেখাতে হবে……

মায়রা : কিন্তু তাহলে কোন ডক্টরের কাছে যাবো ‌…..

আবির : তোমার কোনো পরিচিত ডক্টর আছে আমাকে তার কাছে নিয়ে যাও….

মায়রা : ( বাহ এতো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি) ঠিক আছে কিন্তু…..

আবির : প্লিজ মায়রা আমি চাই না আমার এই বিষয়টা আর কেউ জানতে পারুক বিশেষ করে তিশা….

মায়রা : ঠিক আছে আবির আর কেউ জানবে না….. তুমি এখন চলো আর বের হওয়ার সময় খুব স্বাভাবিক আচরন করবে কারন কেউ যদি বুঝতে পারে তুমি অসুস্থ তাহলে কান্ডগোল হয়ে যাবে….

আবির : হুমমমম

মায়রা : তুমি রেডি হয়ে নাও আমি ডক্টরকে ফোন করে বলি সব কিছু রেডি করে রাখার জন্য…..

আবির : ওকে….

মায়রা একটু দুরে গিয়ে ডক্টরকে ফোন করে বলে….

মায়রা : সবকিছু রেডি করা আছে তো আর মনে থাকে যেন কোনো ভুল যেন না হয় যদি কোনো ভুল হয় তাহলে তো বুঝতেই পারছেন আপনার সাথে কি হবে….. আর আমার আবিরের কোনো সমস্যা হবে না তো…..

ডক্টর : না মেম এটা এই ঔষুধ টা কোনো সমস্যা করবে খাওয়া বন্ধ করে দিলেই এই ঔষুধ কোনো কাজ করে না…..

মায়রা : ওকে তাহলে আমি আসছি

মায়রা আর আবির অফিস থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে….

মায়রা : আবির আমি গাড়ি ড্রাইভ করছি তুমি গাড়ি ড্রাইভ করতে পারবে না….

মায়রা গাড়ি ড্রাইভ করছে আর আবির মাথায় হাত চেপে ধরে বসে আছে….

মায়রা : আবির আর একটু সহ্য করো আমরা প্রায় চলে এসেছি…

হঠাৎ করেই আবিরের ফোনটা ভেজে উঠে আবির ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে তিশা ফোন করেছে আবির ফোনটা রিসিভ করে…..

আবির : হ্যালো!!!!

তিশা : কোথায় আপনি??

আবির : আমি একটু কাজে বের হয়েছি…..

তিশা : বাড়িতে কখন আসবেন???

আবির : ঠিক বলতে পারছি না….

তিশা : একটু তাড়াতাড়ি আসবেন বাড়িতে আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে…..

আবির : সারপ্রাইজ….. কিসের সারপ্রাইজ???

তিশা : আপনি আগে বাড়িতে আসুন তারপর তো তে দেখতেই পাবেন…..

আবির : ঠিক আছে…..

আবিরের গলা ধরে আসছে কথা বলতে….

তিশা : আপনার কি কিছু হয়েছে??

আবির : কই না তো

তিশা : না মানে আপনার গলার আওয়াজটা আজকে একটু অন্যরকম লাগছে……

আবির : আচ্ছা তিশা আমি তোমার সাথে পরে কথা বলবো আমি তো এখন অফিসে……

তিশা : আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে বাড়িতেই দেখে হবে……

আবির : হুম

মায়রা : কি বলছিলো তিশা???

আবির : কিছু না…..

মায়রা : ( তুমি না বললেও আমি জানি যে তিশা তোমাকে আজকে একটা সারপ্রাইজ দেবে অব্যশ আমি এই সারপ্রাইজের কথা শুনেছি তিশার মুখে কারো সাথে কথা বলতে কিন্তু আবির জানু তুমি হয়তো জানো না তোমার জন্য কি অপেক্ষা করছে)

এদিকে তিশা লজ্জায় গাল দুটো লাল হয়ে গেছে কিভাবে আজকে আবিরকে ওর মনের কথাটা বলবে……

আবির ডক্টরের কাছে যায় ডক্টর কিছু টেস্ট করতে বলে আবিরকে…… আবির ডক্টর দেখিয়ে অফিসে ফিরে আসে…….

মায়রা : আবির আমার খুব টেনশন হচ্ছে না জানি কি রিপোর্ট আসে…..

আবির : রিপোর্ট কখন আসবে???

মায়রা : বলেছিলো তো সন্ধ্যায় পাঠাবে……

আবির : রিপোর্ট যাই আসুক না কেন ওটা যে অন্য কারোর হাতে না পারে তাই তুমি প্লিজ ওদেরকে ফোন করে বলে দেও যেন রিপোর্ট অন্য কারোর হাতে যেন দেয়……

মায়রা : চিন্তা কারো না আমি সব সামলে নিবো……

এমন সময় মায়রা কাছে ফোন আসে…… মায়রা ফোনটা রিসিভ করে

মায়রা : হে আমি এখনেই আসছি….

আবির : রিপোর্ট এসে গেছে আমি গিয়ে নিয়ে আসি……

মায়রা নিচ থেকে রিপোর্ট আনতে যায়..

মায়রা : সবকিছু ঠিক আছে তো…..

__জি মেম সবকিছু ঠিক আছে……

মায়রা : ঠিক আছে তুমি এখন যাও

কিছুক্ষন পরেই‌ মায়রা রিপোর্ট নিয়ে আবিরের কেবিনে আসে…

মায়রা : আবির রিপোর্ট….

আবির : কি এসেছে রিপোর্টে?? সবকিছু ঠিক আছে তো…..

মায়রা রিপোর্ট খুলে দেখে এমন একটা ভাব করে যেন ওর মাথায় আকাশে ভেঙ্গে পড়ে……

মায়রা : আবির…..

আবির : কি এসেছে রিপোর্টে???? দেখি

আবির মায়রার হাত থেকে রিপোর্টটা নিয়ে যা দেখে তাতে আবিরের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়…. আবির ধপ করে সোফাতে বসে পড়ে আবির কি করবে কিছুই বুঝে উঠে পারছে না চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে আবিরের চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে…… মায়রা আবিরের কাছে যায়

মায়রা : আবির প্লিজ তুমি ভেঙ্গে পড়ো না তুমি ভেঙ্গে পড়লে তিশার কি হবে…….

আবির : তিশা আমি তিশাকে কি বলবো মায়রা ওকে আমি কি বলবো….. আমি ওর সাথে সারাটা জীবন কাটাতে চেয়েছিলাম আর খোদা আমার সাথে এমন করলো কেন মায়রা কেন করলো এমন…….

মায়রা আবিরকে জড়িয়ে ধরে…….

মায়রা : আবির সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে প্লিজ একটু ধৈর্য ধরো…

আবির‌ মায়রার কাছ থেকে সরে যায়….

আবির : কিছু ঠিক হবে না….. আমার জন্য তিশার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে নাহ আমি তিশার জীবন নষ্ট হতে দিবো ওকে আমি আমার এই অভিশপ্ত জীবন থেকে সরিয়ে দিবো….

মায়রা : ( আমিও তো সেটাই চাই আবির) আবির তুমি এসব কি বলছো চিকিৎসা করলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে….

আবির : কিছু ঠিক হবে না এটাই আমার লাস্ট স্টেপ…….

আবির হাটু ঘেড়ে বসে কান্না শুরু করে দেয়…….

এইদিকে তিশা অপেক্ষা করছে আবির কখন আসবে…… আবির অফিসে বসে আছে মাথায় হাত দিয়ে

মায়রা : আবির বাড়িতে যাবে না…..

আবির : আমি বাড়িতে গিয়ে কি বলবো……

মায়রা : তারপরও তিশার এই ব্যাপারটা জানার অধিকার আছে আবির…..

আবির : এটা নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না মায়রা আমি তিশাকে আস্তে আস্তে সব খুলে বলবো……

মায়রা : কিন্তু আবির তুমি ভেবে দেখো যখন তিশা এই বিষয়টা জানতে পারবে তখন কি তিশা এটা সহ্য করতে পারবে……

আবির মায়রার কথা শুনে চিন্তায় পড়ে যায়…….

প্রায় রাত সাড়ে এগারোটার দিকে আবির বাড়ি আসে……. আবির নিজের ঘরে ডুকে আবাক হয়ে যায় সারা ঘর ফুলে বরতি চারিদিকে ছোট ছোট মোমবাতি জ্বলছে মোমবাতির আলোতে সারাঘরটা‌ ঊজ্জ্বল হয়ে আছে….. একটু পরেই তিশা আড়াল থেকে বের হয়ে আসে আবির তিশাকে দেখে চমকে উঠে…… তিশাকে মোমবাতির আলো আর চাদের আলোতে আরও বেশি সুন্দর লাগছে তিশা একটা গোলাপি কালারের শাড়ি পড়েছে চোখে ঘন কালো কাজল চুল বাতাসে উড়ছে ঠোটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক মুখে হালকা মেকাপ এই হালকা সাজেই তিশাকে ভীষন সুন্দর লাগছে আবির তিশার দিক দিকে চোখ ফেরাতেই পারছে না….. আবিরের এমন তাকানো দেখে তিশা ভীষন লজ্জা পায়…..

তিশা : এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন??? আমার ভীষন লজ্জা লাগছে…

আবির : এসব কে করেছে???

তিশা : আমি করেছি…… আপনার পছন্দ হয় নি

আবির : পছন্দ হবে না কেন….. কিন্তু এসব হঠাৎ করেছো কেন???

তিশা : আপনি কি সত্যিই বুঝতে পারছেন না আমি এসব কেন করেছে……. আমি এসব করেছি কারন আমি আপনাকে ভালোবাসি আর আপনাকে নিজের করে পেতে চাই ( তিশা নিচের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলে)

আবির তিশার এই ভালোবাসর কথা শুনে প্রায় কান্না করে দেয় কিন্তু আবির নিজের মনকে শক্ত করে ফেলে আবার

তিশা ভেবেছিলো হয়তো এই‌কথা গুলো বলার আবির ওকে এসে জড়িয়ে ধরবে কিন্তু আবির তিশাকে এসে জড়িয়ে ধরে নি……তিশা আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে

তিশা : আপনি খুশি হোন নি আমার বলা কথা গুলো শুনে…..

আবির : তুমি অনেক দেরি করে ফেলেছো তিশা…….

তিশা : মানে…..

আবির : মানে আমি তোমাকে আর ভালোবাসি না তিশা…….

তিশা : কিহ বললেন আপনি আর আমাকে ভলোবাসেন না……

আবির : না বাসি না আমি তোমাকে ভালোবাসি না……

তিশা : তাহলে এত দিন আপনি মিথ্যা কথা বলছিলেন আমার সাথে

আবির : হে……

তিশা : নাহ আমি আপনার কথা বিশ্বাস করি না…..

আবির : তুমি বিশ্বাস কর আর না করো এটাই সত্যি

তিশা আবিরের কলার ধরে কান্না করতে করতে বলে……..

তিশা : কেন কেন?? আপনি এমন করলেন আমার সাথে কি মজা পেয়েছেন আমার সাথে এমন করে কি মজা পেয়েছেন…… মেয়েদের মন নিয়ে খেলা করতে খুব ভালো লাগে না আপনার…….

আবির : তুমি আমার কাছ মুক্তি চেয়েছিলে তাই না আমি তোমাকে মুক্তি দিয়ে দিলাম তুমি চাইলে এখান থকে চলে যেতে পারো……

তিশা : যখন আমি থাকতে চাইতাম না তখন আপনি আমাকে জোরে করে ধরে রাখতেন আর এখন আমি যখন থাকতে চাইছে আপনি আমাকে চলে যেতে বলছেন……

আবির : হে চলে যাওয়া তুমি চলে যাও তাতে তোমারেই ভালো হবে….. আমার সাথে থেকে তুমি তোমার জীবনটা নষ্ট করো না……

তিশার হাত নিজের কালার থেকে ছাড়িয়ে বলে…….

তিশা : নাহ আমি যাবো না আমি বুঝতে পেরেছি ওই ডায়রিয়া নিশ্চয়ই আপনাকে কিছু করেছে তাই না……

আবির : আমাকে কেউ কিছু করে নি…… তুমি আমার জীবন থেকে চলে যাও তিশা চলে যাও

আবির এই কথাটা বলেই ঘর থেকে বের হয়ে যায় কারন আবির আর বেশিক্ষন থাকলে হয়তো হয় দুর্বল হয়ে যাবে…….

তিশা কি করবে কিছু বুঝে উঠতে পারছে না তিশা রাগে‌ বিছানার সব ফুল নিচে ফেলে দেয়…… আর অন্য একজন তিশার এমন অবস্থা দেখে মুখে হাসি ফুটে ওঠে ওই অন্য একজন আর কেউ না মায়রা……..
#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_23
.
.
.

তিশা সারা ঘর এলোমেলো করে মেঝেতে বসে আছে আর ফুফিয়ে কান্না করছে….. আবির দরজার আড়াল থেকে দাড়িয়ে তিশাকে তিশার এমন অবস্থা দেখে আবিরের বুকটা ফেটে যাচ্ছ‌….. আবির তিশার কাছ থেকে যে কথাটা শুনতে চাইত সেই ভালোবাসর কথাটা শুনার পরেই আবির তিশাকে জড়িয়ে ধরতে পারলো না….. আবির তিশার এমন অবস্থা সহ্য না করতে পেরে এখন থেকে চলে যায়….

অন্য দিকে মায়রা দরজা বন্ধ করে খুশিতে নাচতে থাকে….. মায়রার ইচ্ছে যে পূরন হলো আবির তিশাকে নিজে ওর জীবন থেকে চলে যেতে বলেছে….
মায়রা ফোন বের করে একজনকে ফোন করে…..

মায়রা : হ্যালো!!! তোমার কাজ এখন শেষ তাই তুমি যত তাড়াতাড়ি পরো এই শহর ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাও কারন আমি চাই না তোমার জন্য আমার প্লেন নষ্ট হয়ে যাক আর তুমি তোমার টাকা সময় মতো পেয়ে যাবে….

মায়রা ফোনটা কেটে দিয়ে‌ একটা হাসি দেয়….

মায়রা : তিশা বেবি এখন তুমি কি করবা সব চেয়ে শেষ হয়ে গেলো আবির যে তোমাকে আর ভালোবাসে না……এখন আবির শুধু আমাকে ভালোবাসবে….

মায়রা এই কথাটা বলেই জোরে জোরে হাসতে থাকে…..

অন্য দিকে আবির ছাদের উপরে বসে একের পর এক সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে…..

আবির : আই‌এম সরি জান আই‌এম সরি আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও আমি জানি আজকে আমার জন্য তুমি খুব কষ্ট পেয়েছো কিন্তু আমার যে কিছু করার নেই আমি চাই না আমার জন্য তোমার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাক তার জন্য যে তোমাকে আমার থেকে দুরে টেলে দিতে হবে জানি এটা করতে আমার খুব কষ্ট হবে কিন্তু তারপরএ আমি এই কাজটা করবো তোমার ভালোর জন্য তোমার জীবনটা আমি সুন্দর করে সাজিয়ে রেখে যাবো সুন্দর করে….

আবির ছাদ থেকে নেমে ঘরে গিয়ে দেখে তিশা কান্না করতে করতে মেঝেতেই ঘুমিয়ে পড়ে….. আবির বিছানার চাদে চেইন্জ করে দিয়ে তিশাকে বিছানাতে শুয়েই দেয় আবির তিশার দিকে এক নজরে তাকিয়ে থাকে আবির কিছুক্ষন তিশার দিকে তাকিয়ে তিশার কাছ থেকে চলে আসতে চাইলে তিশার চুলের সাথে আবিরের ঘড়িটা আটকে যায় আবির অনেক চেষ্টা করে কিন্তু তিশার চুল থেকে নিজের ঘড়িটা খুলতে পারে না তাই না তাই বাধ্য হয়ে আবির হাত থেকে ঘড়িটা খুলে তিশার কাছেই রেখে দেয়….. আবির চলে যাবার আগে তিশার কপালে ভালোবাসর পরশ একে দিয়ে বলে….

আবির : সরি জান পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো…..

আবির এই কথা বলে চলে যায় ঘর থেকে নিচে গিয়ে কিছু কাজের লোককে পাঠায় ঘরটা পরিস্কার করার জন্য আবির সাথে এটাও বলে দেয় যেন তিশার ঘুম যেন ভাঙ্গে তাই আস্তে আস্তে কাজ করার জন্য……ড্রায়িং রুমের সোফাতেই আবির শুয়ে পড়ে….. মায়রা উপর থেকে সব কিছু থেকে একটা হাসি দেয়……

ভোরে নিরব লন্ডন থেকে ফিরেছে দেশে অফিসের কাজ শেষ করে কিন্তু এয়ারর্পোটে আবিরকে দেখতে না পেয়ে নিরভ একটু কষ্ট পায় কথা ছিলো নিরবকে নিতে আবির আসবে….

নিরব : ভাইয়া কোথায়???

সোহেল : আসলে স্যারকে ফোন করছি কিন্তু ফোন ধরছে না….

নিরব : কি ফোন ধরছে না মানে…. আমি প্লেনে ছিলাম তার জন্য ভাইয়াকে ফোন করতে পারি নি কিন্তু ভাইয়া ফো ধরছে না….

সোহেল : আচ্ছা আগে বাড়ি চলুন….

নিরব : হুম….

তিশা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে ও বিছানাতে শুয়ে আছে…..

তিশা : আমি তো নিচে ছিলাম বিছানাতে আনলো কে…..

তিশা চুলে হাত দিতেই দেখে আবিরের ঘড়ি তিশার বুঝতে বাকি রইলো কে ওকে বিছানাতে এনেছে…..তিশা তাকিয়ে দেখে ঘরটা গুছানো

তিশা : কেন আমার সাথে এমন করছেন কেন??? আপনি যদি আমাকে ভালো নাই বাসেন তাহলে আমাকে নিয়ে এত চিন্তা করেন কেন আপনি কি দোষ করেছি যে আপনি আমাকে বারবার শাস্তি দিচ্ছেন……. কিন্তু আমিও এর শেষ দেখে ছাড়বো যে মানুষটা গতবকাল পর্যন্ত আমাকে ভালোবাসার কথা বলে আমার কানের পোকা নাড়িয়ে ফেলতে সেই মানুষটা আর কয়েকটা ঘন্টার মধ্যে কি এমন ঘটলো যে আমাকে ভালোই বাসে না…. ওই মায়রা নিশ্চয়ই কিছু করেছে ওকে তো আমি দেখে নিবো….কিন্তু ওনি কোথায় ঘরে তো নিয়ে তাহলে কোথায় গেলো…..

তিশা নিচে গিয়ে দেখে আবির সোফাতে শুয়ে আছে…..

তিশা : ওনি এখানে ঘুমিয়ে ছিলেন সারারাত আমাকে কি এতটাই ঘৃনা করেন ওনি যে আমার সাথে এক ঘরে থাকতে পারেন না ( মনে মনে বলে তিশা কথা গুলো)

তিশা এক পা এক পা করে আবিরের দিকে এগিয়ে যায় আবিরের কাছে গিয়ে আবিরকে সাথে সাথে কলিং বেল বেজে ওঠে….. কলিং বেলের শব্দ আবির ঘুম থেকে উঠে পড়ে আবির চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে তিশা….. আবির তিশার মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে…..

আবির : ( এক দিনে কান্না করে মেয়েটা চেহারার কি হাল করেছে না জানি বাকি দিনগুলো তে ও কি করবে….. খোদা তুমি কেন আমাকে এত বড় একটা পরীক্ষার মধ্যে ফেললে কেন???)

আবার কলিং বেল বেজে ওঠে কলিং বেলে শব্দে আবির ভাবনার জগত থেকে ফিরে আসে আবির সোফা থেকে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে দেখে নিরব…….

নিরব : ভাইয়া তোমার কি হয়েছে??? আমাকে এয়ারর্পোট থেকে আনতে গেলে না…..

আবির : ( আমাকে আমার ছোট ভাইটাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে এটা আমি কি করে সহ্য করবো কি করে আমি না হয় সহ্য করে নিবো কিন্তু নিরব নিরব কি করে সহ্য করবে কি করে)

নিরব : ভাইয়া কি হলো কোথায় হারিয়ে গেলে……

আবির : সরি ভাই আমার আর এমন ভুল হবে না এবার থেকে তকে আমি সবসময় এয়ারর্পোট থেকে নিয়ে আসবো……

নিরব : প্রমিজ করছো তো……

আবির : হুমমম…. এবার তুই ফ্রেস হয়ে নে

নিরব : হুমমমমম

নিরব চলে যায় তিশা আবিরের পাশে এসে দাড়াতেই আবির তিশাকে না দেখার ভান করে চলে যায় তাতে তিশার খুব হয় কিন্তু তার থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছে আবির…. আবির কোনো দিন ভাবতেও পারে নি যে তিশাকে এভাবে কষ্ট দিতে হবে……

তিশা : ওনি আমার সাথে কেন এরকম করছে কেন???

এমন সময় মায়রা আসে তিশার কাছে…..

মায়রা : কি হলো আবির ইকনোর করছে তোমাকে এটা তো হওয়ারেই ছিলো….

তিশা : মানে……

মায়রা : আসল কি বলতো তিশা আবির তোমাকে দেখে মোহে পড়ে গিয়েছিলো আবিরের মতো এত বড় লোক ছেলে তোমাকে কি করে ভালোবাসতে পারে বলো এটা জাস্ট মোহ ছিলো তোমার প্রতি কোনো ভালোবাসা না বুঝলে….. আর এখন তোমার প্রতি যে মোহটা ছিলো সেটা কেটে গেছে তাই এখন তোমাকে ওর জীবন থেকে ছুড়ু ফেলে দিবে ঠিক যেমন অকেজো জিনিস ছুড়ে ফেলে দেয় তারমতো……

তিশা : আমি তোমার কথা বিশ্বাস করি না বুঝলে আর তুমি কি করে জানলে যে ওনি আমাকে ইকনোর করছে তার মানে এর পিছনে নিশ্চয়ই তোমার কোনো হাত আছে……

মায়রা : হাত আছে কি নেই সেটা তোমাকে বলার কোনো রুচি নেই আমার বুঝলে…..

মায়রা কথাটা বলে এখান থেকে বের হয়ে যায়…… তিশাও দৌড়ে ঘরে গিয়র দেখে আবির রেডি হচ্ছে….

তিশা : আপনি এতো সকালে কোথায় যাচ্ছেন???

আবির কোনো কথা বলছে না….

তিশা : কি হলো আমার কথা আপনি শুনতে পাচ্ছেন না…… এত সকালে আপনি কোথায় যাচ্ছেন????

আবির : যেখানেই যাই না কেন তোমাকে বলার কোনো ইচ্ছে নেই আমার আর তোমার যদি কমন সেন্স থাকতো তাহলে বুঝতে পারতে যে আমি কোথায় যাচ্ছি…..

তিশা : আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন????

আবির : প্লিজ তিশা আামকে বিরক্ত করো না……

আবির ঘর থেকে বের হতে যাবে সাথে সাথে তিশা বলে ওঠে…..

তিশা : আপনি নাস্তা করবেন না…..

আবির : নাহ……

আবির এই কথাটা বলেই ঘর থেকে চলে যায়….. আবির যে আর সহ্য করতে পাচ্ছে না এই কষ্ট তিশার এত কাছে থেকেও তিশার কাছে যেতে পারছে না আবির তার জন্য আমি না পেরে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়…..
আবির অফিসে বসে আছে দু হাত দিয়ে মাথায় ধরে এমম সময় মায়রা আবিরের কেবিনে আসে……

মায়রা : আবির তুমি ঠিক আছো‌…..

আবির : হে আমি ঠিক আছে…..

মায়রা : আবির আমাকে কিছু দিনের জন্য লন্ডনে যেতে হবে তাই এখন তোমাকেই সবকিছু সামলাতে হবে…..

আবির : ঠিক আছে……

মায়রা : আর তিশার ব্যাপারে কি ভেবেছো আবির????

আবির : এখনো কিছু ভাবি নি……

মায়রা : ঠিক আছে আবির আমি এখন আসি তবে সবসময় মনে রেখো তিশাকে কিন্তু তোমার ইকনোত করে চলতে হবে যাতে ও তোমাক ঘৃনা করে তোমার জীবন থেকে চলে যেতে পারে আর তাতেই তিশার ভালো হবে……

আবির : কি করে আমি ওকে ইকনোর করবো মায়রা কি করে??? ওর ওই চেহারাটা দেখলেই আমি হারিয়ে যাই ওর মাঝে তাহলে কি করে আমি ওকে ইকনোর করবো আমি আর পারছি না মায়রা……

মায়রা : আবির তোমাকে শক্ত থাকতে হবে অন্তত তিশার ভালোর জন্য…..

আবির : হুমমমমম

মায়রা : আবির আমি এখন আসি আমার দেরি হয়ে গেছে…..

তিশা আবিরকে ফোন করে সারা দিনে অনেক বার কিন্তু আবির তিশার ফোন এক বারও ধরে নি……

তিশা : এত বড়ো সাহস সারাদিনে একবারও ফোন ধরলো না পমার….. ওই ডায়রিয়া চলে যাওয়ার পরেও কি জাদু করে রেখে গেল যে আমাকে এখন দুচোখেও দেখতে পারে না আগে তো কত ভালোবাসতো তখন আমি ওনাকে ইকনোর করতাম আর এখন আমি ওনাকে ভালোবাসি আর ওনি আমাকে করছে প্রতিশোধ নিচ্ছে নাকি সে আমার সাথে মানলাম আমি ভুল করেছি তাই ভুল বুঝেছি তা বলে এভাবে আমাকে ইকনোর করবে ….. আজকে তো আমাকে জবাব দিতেই হবে না হলে খবর আছে ওই আবির রহমানে….. কি পেয়েছে টাকি আমাকে খেলার পুতুল যে ইচ্ছে হলে রাখলো আর ইচ্ছে না হলেই ছুড়ে ফেলে দিলো……

#চলবে

আগামী পার্টে গল্প শেষ হয়ে যাবে……ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ
#চলবে

কেউ চিন্তা করবেন না আমি তিশা আর আবিরের মিল করিয়ে দিবো……আর সরি লেইট করে দেওয়ার জন্য

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here