#মিস্টার__সিনিয়র
#পর্বসংখ্যা_১১
®ফিহা আহমেদ
“হবু বউ মানে কি বলতে চাইছো তোমরা তাও সবাই একসাথে কিভাবে হবু বউ হলে চৌধুরী বাড়ির? (মিসেস স্বর্ণা আ/শ্চ/র্য হয়ে বললেন)
জিহা ধীরে ধীরে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করলো।মিসেস স্বর্ণা জিহাকে দেখে ই বললো,,,,,
“জিহা এইসব কি আর এই মেয়েগুলো কারা?
“আম্মু ওদের জিজ্ঞেস করো ভালো মতো ওরা কেন এসেছে এখানে”। (জিহা)
তখন প্রথম মেয়েটি বললো,,,,,
“আন্টি জোভান বলেছে ও আমায় বিয়ে করবে”।
ওর কথা শুনে বাকিরা ও বলে উঠলো,,,,,
“আমাকে ও বলেছে বিয়ে করবে”।
মিসেস স্বর্ণার মাথা ঘুরতে শুরু করলো সবার কথা শুনে। তিনি ভালো করেই বুঝতে পারছেন তার ছেলে এদের সাথে টাইম পাস করেছে। মিসেস স্বর্ণাকে চুপ থাকতে দেখে প্রথম মেয়েটি মিসেস স্বর্ণার পায়ে ধরে বলে উঠলো,,,,
“শাশুড়ী আম্মু আমি ভালো রান্না করতে পারি আমায় তোমার বাড়ির বউ করে নেও প্লিজ”।
প্রথম জনকে দেখে দ্বিতীয় জন বলে পায়ে ধরে বলে,,,,
“আমি পুরো বাড়ির রুমগুলো পরিষ্কার করে দিব শাশুড়ী মা আমায় আপনার বাড়ির বউ করে নেন”।
তৃতীয় জন পায়ে ধরে বলে,,,,
“আমি পুরো বাড়ি পরিষ্কার করবো শাশুড়ী মা আমায় করে নেন আপনার বাড়ির বউ”।
চতুর্থ জন পায়ে ধরে বলে,,,,
“থালাবাসন ধুয়ে দিব তারপর আপনার হাত পা মালিশ করে দিব শাশুড়ী আম্মা আমায় বউ করে নেন”।
জিহার মাথা ঘুরতে লাগলো সবার কথা শুনে। মিসেস স্বর্ণার ও একই অবস্থা। মিসেস স্বর্ণা সোফায় বসে পড়লেন।জিহাকে ইশারায় বললেন এক গ্লাস পানি দিতে।
জিহা পানি দেওয়ার আগে চারজন ওঠে চার গ্লাস পানি নিয়ে দাঁড়ালো মিসেস স্বর্ণার সামনে। মিসেস স্বর্ণা হাবার মতো তাকিয়ে আছে সবার দিকে। হঠাৎ মিসেস স্বর্ণা অজ্ঞান হয়ে গেলেন।তখন জিহা ভয় পেয়ে গেল। জিহা মেয়েগুলোকে বললো জোভান ভাইয়া আসলে তোমাদের ডাকা হবে এখন যাও আম্মুর অবস্থা ভালো না। তারা ও ভালো মেয়ের মতো চলে গেল বাড়ি থেকে।
মেয়েগুলো যেতেই জিহা দরজা বন্ধ করে পিছনে তাকাতেই চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল। মিসেস স্বর্ণা পানি খাচ্ছে বসে বসে।জিহার এখন প্রচুর হাসি পাচ্ছে। জিহা আর না পেরে জোরে জোরে হাসতে শুরু করলো। তার মা কি অভিনয়টা ই না করলো।
জিহাকে হাসতে দেখে মিসেস স্বর্ণা রাগী দৃষ্টিতে নিক্ষেপ করলো। জিহা চুপ হয়ে গেল। জিহা মুখে হাত দিয়ে নিজের রুমে দৌঁড়ে চলে গেল। মিসেস স্বর্ণা কিছুক্ষন চুপ থেকে নিজে নিজে বলে উঠলো,,,,
“আজ তুই বাড়ি আয় ফাজিল ছেলে তারপর তোর ব্যবস্থা করছি আমি”।
_____
জিহা দরজা বন্ধ করে মুখ থেকে হাত সরিয়ে জোরে জোরে হাসতে শুরু করলো। জিহা জোভানকে ফোন করে সব বললো। সব শুনে জোভান স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।
“আর জীবনে ও এসব প্রেম-টেম করতে যাব না”। (জোভান বিরক্ত হয়ে বললো)
জোভান নিজের কাজে নিজে ই বিরক্ত।
_____
পরশি রুমে এসে বালিশে মুখ চেপে কান্না করছে। ইয়ানার কাজে পরশি ভীষণ কষ্ট পেয়েছে। তখন ই কেউ পরশির পিঠে হাত রাখলো।পরশি বালিশ থেকে মাথা ওঠাতে ই দেখলো ইয়ানা আর মিসেস শিখা দাঁড়িয়ে আছে। পরশি চোখের পানি মুছে শোয়া থেকে ওঠে বসলো। পরশির এখন এদের দু’জনকে কিছুতেই বিশ্বাস হয় না।পরশি মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে চুপ করে বসে আছে।
ইয়ানা পরশির পাশে বসে পরশির হাতের ওপর হাত রাখলো।পরশি ইয়ানার দিকে তাকালো কিন্তু কিছু বললো না।
“সরি বোন আমি ইচ্ছে করে তোকে কষ্ট দেইনি”। (ইয়ানা টলমল চোখে পরশির দিকে তাকিয়ে বললো)
ইয়ানা পরশির কথায় চমকালো।চমকে বললো,,,,
“বুঝলাম না আপু”
“তুই যাকে জেঠী আম্মা ভাবছিস আসলে সে তোর জেঠী আম্মা নয়”। (ইয়ানা)
“কিছু ই বুঝতে পারছি না আপু”। (পরশি আ/শ্চ/র্য হয়ে বললো)
“আমি সব বলছি তুই সবকিছু শুনলে বুঝতে পারবি”। (ইয়ানা)
“ঠিক আছে”৷ (পরশি)
“হ্যাঁ। মিসেস লিমা সিকদার আমার মা বর্তমানে তার বোনের কাছে বন্দী। যিনি আমাদের বাড়ি লিমা সেজে আছে আসলে ওনি আমার খালামনি। আমার আম্মুরা দু’বোন দু’জন যমজ হয়েছিল। দেখতে হুবহু এক।মনে আছে সেদিনের কথা।তোরা সবাই চৌধুরী ভিলাতে গিয়েছিলি জোভানের জন্মদিনে”। (ইয়ানা)
“হ্যাঁ। মনে আছে। কিন্তু আপু জোভান ভাই কি আমায় ভুলে গেছে? (পরশি মন খারাপ করে বললো)
“তোর বাবা-মায়ের এক্সিডেন্ট করিয়েছে আমার খালামনি লিসা।আর সেদিন জোভান ও তোদের গাড়িতে ছিল।লিসা খালামনির টার্গেট ছিল তোর বাবা-মা কিন্তু জোভান ও বিপদে পড়লো । সেদিন এক্সিডেন্টের পর তুই তো বেঁচে গেলি।তোকে দাদী বাড়ি নিয়ে এসেছে। আর জোভান স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছে”।
ইয়ানার কথা শুনে পরশি স্তব্ধ হয়ে গেল।পরশি টলমল চোখে ইয়ানার দিকে তাকালো।
“আমার বাবা-মা কি ক্ষতি করেছে ওনার আর জোভান ভাইয়া যদি সব ভুলে যেত তাহলে ওনার মা-বাবা, বোনকে কিভাবে মনে রাখলো ? (পরশি কান্না করে বললো)
“জোভান সবকিছু ভুলে নি। কিছু কিছু জিনিস মাথা থেকে মুছে গেছে।লিসা খালামনির স্বামী আহির মির্জা তোর বাবার কোম্পানিতে চাকরি করতো।ওনি কোম্পানির সব তথ্য শএু পক্ষকে জানিয়ে দিত।এসব তোর বাবা জানতে পেরে তাকে বের করে দিল কোম্পানি থেকে। তারপর থেকে লিসা খালামনি আমাদের পরিবারকে মারার চেষ্টা করছে”।
“সামান্য চাকরির জন্য ওনি আমার বাবা-মাকে মেরে ফেললো”। (পরশি কান্না করে বললো)
“শুধু চাকরি না অন্য কোনো কারন আছে যেটা আমাদের বের করতে হবে।তুই আমাদের পাশে আছিস কিনা বল? (ইয়ানা)
“ঠিক আছে। কিন্তু আঙ্কেল – আন্টি কেন আমাদের খবর নেয়নি? (পরশি)
“তার ও বিশেষ কোনো কারন আছে।সেটা তো জোভানের মা-বাবা ই বলতে পারবে”। (ইয়ানা)
মিসেস শিখা পরশিকে জড়িয়ে ধরলো। পরশি যেন থমকে গেল মিসেস শিখার কাজে।পরশি ও কাঁপা কাঁপা হাতে মিসেস শিখাকে জড়িয়ে ধরলো।
“মাপ করে দে আমায় দাদুভাই। আমি ইচ্ছে করে এসব করিনি।তোকে মেরে ফেলতে চাইছে তাই আমরা বাধ্য হয়ে তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করতাম।মাপ করে দে আমাদের”। (মিসেস শিখা কান্না করতে করতে বললো)
“দাদী কান্না করো না।তোমরা তো আমায় বাঁচাতে এসব করেছ।আমি তোমাদের অনেক ভালোবাসি”। (পরশি কান্নারত কন্ঠে বললো)
“কিন্তু দাদী তোমরা এসব কি করে জানলে? (পরশি চোখের পানি মুছে বললো)
ইয়ানা কিছু বলতে যাবে তার আগেই মিসেস লিমার(লিসা) ডাক পড়লো।
‘
চলবে…..
_____
(বানানে ভুল-ক্রটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)
‘
(গল্প পড়ে সবাই লাইক – কমেন্ট করবেন। নাইচ,নেক্সট না বলে গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ।পাঠক-পাঠিকাদের ভালো রেসপন্স ফেলে পরবর্তী পর্ব দেওয়া হবে।)
‘
(আজকে সবটা বলে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু প্রচুর মাথা ব্যথা আর জ্বর নিয়ে লিখতে পারলাম না।আশা করি আজকের পর্বটি পড়ে কিছুটা বুঝবেন কাহিনী।)
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]