#যদি_জানতে
Part:08 with a extra part
Written by: Shawon
শাহরিয়ারের চোখ লাল হয়ে গেছে,সে আহিনের সামনে গিয়ে বললো….
-“তুমি নিজেকে নিজে কি মনে করো??তোমার যখন যা ইচ্ছে হবে তাই করবে??তোমার ইচ্ছে হলো তো কন্ট্রাকে সাইন করলে আবার এখন ইচ্ছে নেই তুমি ছেড়ে চলে যাচ্ছো।তুমি কি মানুষ!!!”
-“আমি মানুষ না হলে আপনি কি?আপনার মতো তো আমি ঘরে বউ রেখে অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক করছি না!এইজন্যই কি আমি মানুষ না??”
-“তোমার সমস্যা কি বলবে আমাকে?তোমার যদি আমার সম্পর্ক নিয়ে এতই সমস্যা তাহলে তুমি সবটা জেনেও কেন কন্ট্রাক করতে চেয়েছিলে?কেন সেদিন রাতেই চলে যাওনি!!”
-“হুম,আমার সেটাই সবথেকে বড় ভুল হয়েছে।আর সে ভুল শোধরানোর জন্যই আমি এখন এই বাড়ি ছেরে চলে যাচ্ছি।”
-“তোমার এখন এই বাড়ি থেকে কোথাও যাওয়া হবে না।কমপক্ষে ছয় মাস তোমাকে এখানে থাকতে হবে,আর আমাদের মাঝে সবকিছু ঠিক আছে এমন অভিনয় করতে হবে।আর যদি ছয় মাসের ভিতরে বাবা ঠিক হয়ে যায় তাহলে সেটা অন্য কথা।”
-“এক মিনিট!!কি বললেন আপনি?বাবা ঠিক হলে,মানে?কি হয়েছে বাবা’র।”
-“ওনি স্ট্রেক করেছেন,হসপিটালে আছেন।ডক্টর বলেছেন যতদিন ওনি পুরোপুরি সুস্থ না হচ্ছেন ততদিন কোনো কষ্ট না দিতে আর কখনো যদি কষ্ট না দেয়া যায় তাহলে আরো ভালো।”
-“আপনি আমাকে আগে বলেননি কেন?কোন হসপিটালে আছেন ওনি এখন?”
-“সিটি হসপিটালে!!”
আহিন আর এক মুহুর্ত না দাড়িয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে বের হয়ে গেল।এতক্ষণ কাইফা দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছিল আহিন চলে যাবার সাথে সাথে নিজের রুমের দিকে পা বাড়াতে নিলে শাহরিয়ার বলে….
-“আর যা কিছুই হয়ে যাক না কেন,আমি তোমাকেই ভালোবাসি।”
-“এমন ভালোবাসার কোনো দরকার নেই।যেখানে বউয়ের পরিচয় না দিতে পেরে অন্য একটা মেয়ের সাথে বিয়ে হয়ে যায়।”
-“তুমি সবটা জেনেও কেন এমন কথা বলছো।তুমি তো জানো আমাকে ঠিক কতটা প্রেসার দেওয়া হয়েছে,তাছাড়া আব্বু হার্টের রোগী বেশী উত্তেজিত হলেই যে কোনো খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে।তাই আমাকে আমার বাবা-র দিক দেখেই বিয়ে করতে হয়েছে।”
-“তা নাহয় বুঝলাম,কিন্তু আহিন!!!আহিন কি এসব বুঝবে??আহিন এর অতীত টা জেনেও তুমি ওর সাথে এমন কেন করলে?”
-“আমি ভেবেছিলাম ও হয়তো ভালোবাসা জিনিস টা বুঝতে পারবে।ভালেবাসার মানুষটাকে হারানোর ব্যাথা বুঝতে পারবে।”
-“আমার চোখে আমরা দুজন দোষী কারণ বিয়ের পরও আমরা রিলেশনে আছি।আমাদের মাঝে যা ছিলো তা বিয়ের পর না থাকলেও ভালো হতো।”
-“কাইফা তুমি এগুলো কি বলছো?”
-“আমি ঠিকই বলছি।কিন্তু আমি পারবো না।আমি পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে,আমি আমার প্রতিটা শ্বাসে তোমার নাম নেই।আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি অনেক!!”
কথাগুলো বলে কাইফা কান্না করে রুমে চলে গেল।শাহরিয়ার ধপ করে সোফায় বসে গেল।
এদিকে আহিন দৌড়ে হসপিটালের ভিতর ঢুকে গেল,কেবিনের ভিতরে ঢুকতেই দেখতে পেল শাহরিয়ারের মা,বাবার হাতের কাছে বসে আছে,আর বাবা ঘুমাচ্ছেন ।আহিন’কে দেখতে পেয়ে শাহরিয়ারে মা বললো…
-“বউমা,তুমি এখানে??”
-“বাবা কেমন আছেন?কি করে হলো এগুলো?আমাকে আগে বলেন নি কেন?
আহিনের চোখ দিয়ে পানি পরছে,কারণ ওর শ্বশুর সত্যি খুব ভালো মানুষ,আহিনকে একদম নিজের মেয়ের মতো করে দেখে।আহিন’কে কান্না করতে দেখে তার শ্বাশুরি বলে….
-“বোকা মেয়ে,তুমি কান্না করছো কেন?তোমার বাবা এখন ঠিক আছে।আর আমরা আজকে সন্ধ্যায়ই বাড়ি ফিরে যাবো।আসলে তুমি কালকে প্রথম জয়েন করলে তো তাই আর কিছু বলতে চায়নি।”
-“আমার কাছে আমার জব কিছু না,আপনি আমাকে আমার জবটা বড় দেখলেন বাবার থেকে?”
-“তেমন কিছুনা,তুমি অযথা টেনশন করবে তাই বলতে চায়নি।
এমন আরো অনেক কথা হলো তাদের মাঝে।কিছুক্ষণ পর আহিন’কে অফিসে পাঠিয়ে দিল তার শ্বাশুড়ি,আহিন যেতে চায়নি তাও জোর করে পাঠিয়েছে।
এদিকে আহিন’কে সকাল থেকে দেখতে না পেয়ে সাদাফের প্রান যায় যায় অবস্থা।তাহলে কি আহিন একদিনের কাজের চাপই কাজ ছেড়ে চলে গেছে।এসব ভাবতে ভাবতে টেনশনে পরে গেল সাদাফ নিজের উপর রাগ সামলাতে না পেরে ল্যাপটপটাকে নিচে ফেলে দেয়।আর তা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।তখনই তার চোখ যায় বাহিরের দিকে।ঘামের মুখটা ওড়না দিয়ে মুছতে মুছতে ভিতরে ঢুকছে,মুখে হাজারো চিন্তার ছাপ।কি এমন হয়েছে যে আহিন’কে এতটা ক্লান্ত দেখাছে এতটা চিন্তিত লাগছে?জানতে সাদাফের মন খুব ইচ্ছে করছে।আহিন কেবিনে গিয়ে বসতেই সাদাফ ল্যান্ডলাইনে কল করে তার কেবিনে আসতে বলে।আহিন নিজের জব নিয়ে চিন্তা করতে করতে কেবিনে গেল।নক করে ভিতরে ঢুকতেই ল্যাপটপের এই অবস্থা দেখে জিজ্ঞেস করে….
-“স্যার,ল্যাপটপের এই অবস্থা কেন?”
-“তোমার জন্য,ইয়ে মানে তুমি আসতে এত লেইট করলে কেন?তুমি যদি এভাবে প্রতিদিন লেইট করো তাহলে তোমার কাজ করতে হবে না,বাসায় বসে থেকো।”
সাদাফ প্রথমে মুখ ফসকে সত্য টা বলে ফেলেছিল পরে কথা ঘুরানোর জন্য রাগ দেখিয়ে কথাগুলো বললো।আহিন প্রচন্ড ভয় পেয়ে বললো….
-“সরি স্যার,আসলে আমাকে একটু হসপিটালে যেতে হয়েছিল তাই লেইট হয়ে গেছি।আর কখনো এমন হবে না।”
-“হসপিটালে কেন?কি হয়েছে তোমার?”
-“আমার কিছু হয়নি,আমার বাবা স্ট্রোক করেছে।”
-“ওহহ,এখন কেমন আছেন ওনি?”
-“হুম ভালো”
-“আচ্ছা,তোমাকে যে জন্য ডাকা।কাল আমাদের একটা মিটিং আছে,সেখানে তুমি প্রেজেন্টেশন করবে আর প্রেজেন্টেশন ভালো হলে তোমার জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে।তাই একটু ভালোভাবে প্রেজেন্টেশন করার চেষ্টা করবে।”
-“কিন্তু স্যার,আমি তো প্রেজেন্টেশনে নেই।আমি অন্য গ্রুপে আছি।”
-“অফিসের বস কে?”
-“আপনি।”
-“তাহলে এত প্রশ্ন না করে যা বলছি তাই করো,আমি বাকিসব দেখে নিবো।আরেকটা কথা কাল সন্ধ্যা থেকে মিটিং শুরু হবে মিটিং শেষ করে একটা পার্টি আছে ঐটাই যোগদান করতে হবে।বাসা থেকে বলে বের হবে।”
-“স্যার,আমি প্রেজেন্টেশনে থাকতে পারবো কিন্তু পার্টিতে না কারণ বাবা অসুস্থ।”
-“আমি জানি,কিন্তু পার্টিতে তোমাকে থাকতে হবে কারণ অন্য কোম্পানির ক্লাইন্ট থাকবে তাদের সাথে পরিচয় আর কথা বলতে হবে।”
-“ওহহ,ওকে স্যার।এখন আমি যেতে পারি?আসলে কতগুলো ফাইল জমা হয়ে আছে!!”
সাদাফের মন না চায়লেও যাওয়ার অনুমতি দিতে হলো।সাদাফ চেয়ারে বসে আহিনের কেবিনের দিকে তাকিয়ে আছে।আর আহিনের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে,কি অদ্ভুত একজন একজনকে এতটা ভালোবাসে অথচ মুখ ফুটে বলার সাহস করতে পারছে না,করবেই কি করে মাত্র কিছুদিন হলো তাদের দেখা।আহিন যদি উল্টাপাল্টা কিছু ভাবে।এসব নিয়ে ভেবে আর বলার সাহস হয়না।
এদিকে শাহরিয়ারের বাবা’কে বাসায় নিয়ে আসা হলো।কাইফা খুব যত্ন করে ওনার সেবা করছেন।নিজের বাবার আদর কখনো পায়নি সে,তার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তার বাবা আর্মি’র মিশনে গিয়ে মারা যায়।তারপর থেকে কাইফা কে নিজের মেয়ের মতো করে মানুষ করেছে,তাদের পরিবারের সমস্ত দায় ভার তার মামা নিয়ে ছিলো।কাইফাও নিজের মামাকে যথেষ্ট সম্মান আর ভালোবাসে।
সন্ধ্যায় অফিস টাইম শেষে আহিন বের হতে নিলে পিছন থেকে তার বস মিস্টার সাদাফ ডাক দেয়…
-“আহিন!!!”
-“জ্বী,বলুন!!”
-“আব,তুমি চায়লে আমি তোমাকে ড্রপ করে দিতে পারি।”
-“ওহ ধন্যবাদ।কিন্তু আমার জন্য আপনাকে এতকিছু করতে হবে না।আমি একাই চলে যেতে পারবো।”
-“এতকিছু কই করলাম?শুধু বাসায় ড্রপ করতে চাচ্ছি অন্যকিছু না।”
-“না থাক,আমি চলে যেতে পারবো।আসি,আল্লাহ হাফেজ।”
সাদাফকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বের হয়ে গেল আহিন।আহিন মনে মনে ভাবতে লাগলো যতটা রাগী দেখায় ততটা রাগী না,একটু ভালোও আছে।
বাসার সবাই ডিনার করতে বসে আছে।শুধুমাত্র শাহরিয়ারের বাবা নেই,ওনাকে বেডেই খাবার খাইয়ে দেওয়া হয়।হঠাৎ করে কলিংবেল বেজে উঠলে আহিন উঠে দরজা খুলে দেয় দরজা খুলে দেখে সামনে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে,যার পরনে সাদা জিন্স,ব্লু শার্ট আর চোখে ব্লু গ্লাস।আহিন কে দেখতে পেয়ে চোখ থেকে চশমা খুলে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতে লাগলো।আহিন ঠিক চিনতে পারলো না মেয়েটাকে তাই সে শাড়ির আঁচল টা আরেকটু ঠিক করে নিলো।মেয়েটা আহিনকে দেখে একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বললো….
-“তারমানে তুমিই সেই আহিন?”
-“জ্বী,আপনাকে ঠিক চিনলাম না!”
-“আমাকে চিনবে কি করে?তোমার স্বামী তো আর আমাকে তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়নি তাই আমিই চলে এসেছি পরিচিত হতে।যায়হোক আমি ফারজু,শাহরিয়ারের গার্লফ্রেন্ড!!!”
মেয়েটির কথা শুনে আহিনের মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো,মেয়েটি এসব কি বলছে।ও যদি শাহরিয়ারের গার্লফ্রেন্ড হয় তাহলে কাইফা কে?তারমানে শাহরিয়ারের দুটে গার্লফ্রেন্ড।আর ওনি কাইফা’র সাথে চিট করছেন?যদি এমনি কিছু হয়ে থাকে তাহলে আমি ওনাকে ছাড়বো না।
Extra part……
আহিনের ভাবনার ছেদ ঘটলো কাইফা’র চিৎকারে,ফারজু বলে চিৎকার করে ওকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।আহিন অবাক হয়ে যায়,তারা একে অপরকে চিনে?ফারজুর নাম শুনে সবাই সদর দরজার কাছে চলে আসে।তারপর ওকে সবাই জড়িয়ে ধরে আর অবাক হয়।ফারজু বলে…
-“এটা কিন্তু ঠিক হলো না!!আমি ভাবীর সাথে একটু মজা করছিলাম আর কাইফা আপু তুমি সবটা নষ্ট করে দিলে।এত জোরে চিৎকার করতে হয় নাকি!!!”
-“তো কি মজা করছিলে শুনি ননদ ভাই বউয়ে?”
শাহরিয়ারের মা’র কথা শুনে আহিন আরো বেশী অবাক হলো।তারমানে এই ফারজু শাহরিয়ারের সেই বোন যে নাকি লন্ডনে থাকে।ফারজু আহিনের সামনে এসে বলে…
-“সরি ভাবী,আসলে আমি এমনই,মজা করতে বেশী পচ্ছন্দ করি।”
-“ইট’স ওকে।”
-“তো হঠাৎ করে বাংলাদেশে,কাউকে কিছু না বলে,কিছু না জানিয়ে?”
শাহরিয়ার এই কথা বললে ফারজু ওর সামনে গিয়ে বলে…
-“তোর সুখের সংসারে আগুন লাগাতে এসেছি।হাহা,তোরা কি মনে করছিস তোরা আমাকে কিছু না জানালে আমি কিছু জানতে পারবো না।তোরা আমাকে পর ভাবলেও আমিতো আর তোদের মতো না।”
-“এসব ডং রাখ,তোকে কোনদিন থেকে পর ভাবলাম?”
-“পরই তো ভাবিস নয়তো,এত বড় একটা ঘটনা হলো তাও আমাকে বললো না এমনকি তোর বিয়ে আসতেও বললো না।”
-“তখন তোর এক্সাম চলছিল যদি বলতাম তোর ভাইয়ের বিয়ের কথা তাহলে তুই এক্সাম রেখেই চলে আসতি।তাই বলা হয়নি।”
শাহরিয়ারের মা এসব বলে ফারজুকে নিয়ে ভিতরে চলে আসলো।তারপর ফারজু তার বাবার সাথে দেখা করে ফ্রেশ হতে চলে গেল।ফ্রেশ হয়ে আসলে সবার সাথে ডিনার করতে বসে।আহিন তার দিকে তাকিয়ে আছে,কারণ একটু আগে যে মেয়েটা ওয়েস্ট্রান ড্রেস পরে আছিলো এখন সে একদম বাংলাদেশের সাধারন মেয়ের মতো সেলোয়ার কামিজ পরে আছে।
আহিন আর শাহরিয়ার দুজন দুজনের সামনাসামনি বসেছে,কাইফা শাহরিয়ারের পাশে আর শাহরিয়ারের মা আহিনের পাশে।ফারজু তার বাবার চেয়ারে মানে মাঝের চেয়ারে বসেছে।সে এক পা দিয়ে তার ভাইয়ের পায়ে আরেক পা দিয়ে আহিনের পায়ে স্লাইড করতে লাগলো।আহিন আর শাহরিয়ার একসাথে বিষম খেয়ে উঠে।দুজন দুজনকে চোখ দিয়ে ইশারা করে জিজ্ঞেস করছে,কি হচ্ছে এসব??আহিন ভাবছে শাহরিয়ার এমন করছে,আর শাহরিয়ার ভাবছে আহিন করছে।দুজনে একসাথে নিচে তাকাতেই দেখে ফারজু এমন মজা করছে।দুজনেই জোরে শ্বাস ফেলে,শাহরিয়ার ফারজুর কান টেনে বলে….
-“খুব বাদর হয়েছিস দেখা যাচ্ছে!!দাড়া তোকে বিয়ে দেবার ব্যবস্থা করছি।”
-“ভাইয়া সত্যি!! তাহলে আমি আমার ক্রাশকেদেখিয়ে দেয়??”
-“মা দেখছো,তোমার মেয়ে কিসব বলছে এগুলো।একটু লজ্জা সরম কিছুই নেই।”
-“এ যুগে এত লজ্জা সরম কি হবে?তার যদি এমন কেউ থাকে তাহলে বলবে আমাদের মনের মতো হলে আমরা বিয়ে দিবো নয়তো না।”
-“তাহলে আমারটা কেন শুনতে চাও নি!”
হটাৎ করে শাহরিয়ার এমন একটা কথা বলবে কেউ বুঝতে পারেনি।সবাই চুপ হয়ে গেল,কাইফা পানি আনার কথা বলে কিচেনে চলে গেল।শাহরিয়ার চুপচাপ খাবার টেবিল থেকে উঠে গেল।ফারজু আহিনের দিকে তাকালে আহিন একটা শুকনো হাসি দিয়ে উঠে চলে যায়।ফারজু তার মাকে জিজ্ঞেস করলো….
-“মা,ভাইয়া কি কাউকে পচ্ছন্দ করতো?”
-“হুম,করতো।”
-“কাকে?আর যখন সে কাউকে পচ্ছন্দ করতো তাহলে ভাবীর সাথে বিয়েটা কেন দিলে?”
-“তোর বাবা ঐ মেয়েটার নামটাও জানতে চায়নি,বিয়ে তো দূরে থাক।ওনার কাছে আহিন কেই সবসময় পারফেক্ট মনে হতো।”
ফারজুর মা এই বলে উঠে চলে গেলেন।ফারজু চুপচাপ কিছু একটা ভাবতে লাগলো।ভাবা শেষ হলে টেবিল থেকে চলে যায়।
আহিনকে সারাবাড়ি খুঁজে কোথাও পেল না ফারজু।ছাদে এসে দেখলো,আহিন চুপচাপ আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।ফারজু তার পাশে এসে দারিয়ে জিজ্ঞেস করে…..
-“এই মেঘে ঢাকা আকাশে কি দেখছো?”
ফারজুর কথা শুনে আহিনের ভাবনা জগতের ছেদ ঘটে।পাশে ফারজু দেখে জিজ্ঞেস করে…
-“তুমি!!তুমি এখানে কি করছো?”
-“তোমাকেই খুঁজতে এসেছিলাম।”
-“আমাকে!কিন্তু কেন?কোনো দরকার?”
-“কেন?কোনো দরকার ছাড়া বুঝি আসতে পারবো না!”
-“এমা,আমি একথা কখন বললাম।আচ্ছা যায়হোক তে বলো কেন খুজতে ছিলে?”
-“তার আগে বলো,এত রাতে একা ছাদে আকাশের দিকে তাকিয়ে কি দেখছিলে তাও আবার এই মেঘে ঢাকা আকাশের দিকে?”
আহিন ফারজুর প্রশ্নের কি উত্তর দিবে বুঝতে পারছিল না,তাই বললো….
-“আসলে বাবা মার কথা খুব মনে পরছিল,ওদের কথা মনে হতেই মন খারাপ হয়ে গেল তাই একটু খোলা হাওয়া খেতে এসেছিলাম।”
-“ওহ আচ্ছা!!ভাবী,তোমার আর ভাইয়া মাঝে সবকিছু ঠিক আছে তো?তোমরা সুখে আছো তো?”
ফারজুর প্রশ্ন শুনে আহিন তার মুখের দিকে তাকায়।হটাৎ করে এমন প্রশ্ন কেন করলো সে বুঝতে পারলো না।তাহলে কি ও কোনো ভাবে আমাদের সন্দেহ করছে।
-“কি হলে ভাবী?কিছু বলছো না কেন?”
-“তুমি হটাৎ করে এমন প্রশ্ন কেন করছো।আমরা তো একদম ঠিক আছি।”
একটা মিথ্যে হাসি দিয়ে কথাটা বললো।ফারজুও একটু হেঁসে বললো…
-“আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তোমাদের মাঝে সম্পর্ক টিক নেই,ভাইয়া যেমন আপসেট দেখাচ্ছে তুমিও ঠিক তেমনি আপসেট দেখা যাচ্ছে।যায়হোক যখন বলতে চাচ্ছো না তাহলে বলো না।কিন্তু যখন বলতে ইচ্ছে হবে তখন বলো,হোক না হোক কোনো হেল্প করতে পারবো।হেল্প না করতে পারলেও একটা মানসিক স্বান্তনা দিতে পারবো।এখন নিচে চলো নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে।”
-“হুম।”
আহিন আর কিছু বললো না চুপচাপ ফারজুর সাথে নিচে চলে আসলো।রুমে এসে দেখে শাহরিয়ার বেডে বসে কাজ করছে।তাই সে বেড থেকে বালিশ আর কাথা নিয়ে সোফায় চলে আসে।চোখ বন্ধ করে রাখতে রাখতেই ঘুমিয়ে পরে।
শাহরিয়ার একবার বলতে চায়ছিল আহিনকে বিছানায় ঘুমাতে কিন্তু বললে না।কারণ সে রুমে এসে আহিনের সাথে কোনো কথা বলবে না,আহিনের ইচ্ছে মতো আহিনকে চলতে দিবে।সেও নিজের কাজ শেষ করে ঘুমিয়ে গেল।
#চলবে