শিমুল ফুল পর্ব -৩২

#শিমুল_ফুল
#৩২
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর

পেশকারার সব কথা রাবেয়ার কর্ণগোচর হয়।বসার ঘরে তার শশুড় আয়েশ করে বসে রাবেয়ার কথা শুনছে।উনিই বউয়ের কথায় পুষ্পকে জ/ব্দ করার জন্যই ভোর সকালে তিতাস মাছের আড়ৎ থেকে ছোট মাছ কিনে এনেছেন।রাবেয়া হাতের কাজ ফুলির কাছে দিয়ে পেশকারার কাছে যায়।পেশকারা ততক্ষণে স্বামীর সাথে বসে হাসাহাসি শুরু করেছে।উনাদের সাথে তার ননদ আছমা আর ভাগনী সুইটিকে দেখে রাবেয়ার মনটা বি/ষিয়ে যায়।সুইটির নি/র্লজ্জতায় তিনি যারপরনাই হতাশ।মেয়ে মানুষ এতো নি/র্লজ্জ হলে কি তাকে আর মেয়ে বলে?শিমুলের পিছনে যেন আঠার মতো লেগে আছে।যে বোঝা কাধে নিতে চায় না তাকে কি জোড় করে কাধে তুলে দেয়া যায়?রাবেয়া মাথা ঘুরিয়ে একবার শিমুলের ঘরের দিকে তাকায়।শিমুল আর পুষ্পর যে সামনে বি/পদ আছে এটা বেশ আঁচ করা যাচ্ছে।উনি আবার রান্নাঘরে ফিরে যান।রাবেয়ার মনটা য/ন্ত্রনায় কা/তর।কাল রাত থেকে পলাশ বাড়ি নেই।সেই যে রা/গ করে গেলো আর ফিরেনি।তিনি রাত তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে বসে ছিলেন,মোবাইলে ফোন দিয়ে মোবাইল বন্ধ পায়।এতো রাত ছিলো বিধায় শিমুলকে ডাকে নি।সিদ্ধান্ত নেয় শিমুল ঘুম থেকে উঠলেই পলাশকে খুঁজতে পাঠাবে।

পলাশ হস/পিটালের বেডে চুপচাপ বসে আছে।তার চোখ নিধির মুখের দিকে স্থির।এমন মিষ্টি একটা মেয়ের সাথে এমন কাজ করতে তার আব্বার বুকটা কাঁ/পলো না?শ/ত্রু ও তো শ/ত্রুর এমন ক্ষ/তি করতে চায় না।শওকত হাওলাদার যানে নিধিকে পলাশ পা/গলের মতো ভালোবাসে তারপরেও নিধিকে আঘা/ত করতে ভাবলো না?এ কেমন বাবা?মানুষ নাকি ছেলেমেয়ের সুখের জন্য দুনিয়া বাজি ধরতে পারে আর উনি কিনা নিজের বড়াই,অ/হং/কার বজায় রাখতে প/শুর মতো আচরন করলো!
নিধি নড়েচড়ে উঠে।আস্তেধীরে চোখ খুলে।পলাশকে দেখে ঠোঁট ফুলিয়ে ফুঁপিয়ে উঠে।ডাগর-চোখের কার্নিশ বেয়ে পানি গড়িয়ে কানের লতি ছুঁয়ে যায়।ফিসফিস করে বলে,
“পলাশ…”

পলাশের দু’চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।ঝাপসা চোখেই নিধির বাম হাতটা শক্ত করে নিজের হাতে পুড়ে নেয় যেন আশ্বাস দিচ্ছে,”ভ/য় পেও না।আমি আছি।”
নিধি আর কিছু বলে না ঘুমের ও/ষুধের প্রভাবে আবার চোখ বন্ধ করে ফেলে।পলাশ নিধির হাতে তার ঠোঁট ছুঁয়িয়ে দেয়।হাতটা গালের সাথে মিশিয়ে ভাবে কালকে যদি আরেকটু দেরী হতো তাহলে কি হতো?পলাশের চোখের পর্দায় কালকের ভ/য়ং/কর চিত্রটা ভেসে উঠে।নিধির উপর পড়ে থাকা বলিষ্ঠ দেহের পুরুষটা নিজের পুরুষত্বের তেজ দেখাতে মরিয়া তখন পলাশ পেছন থেকে ঝাপটে ধরে।হঠাৎ করে কাজে বিগ্ন ঘটানোতে লোকটা পাল্টা আ/ক্রম/ণ করতে পারেনা।কিন্তু পরমূহুর্তেই পলাশের দিকে আ/ক্রম/ণ করে।পলাশ খেয়াল করে দেখে এটা তার আব্বার চ্যালাপেলার একজন,নাম রকিব।এই ছেলেটা নে/শা করার জন্য কয়েকবার পুলি/শের দৌড়ানী খেয়েছে।পলাশ কিছু বুঝে উঠার আগেই রকিব ঘু/ষি দিয়ে পলাশের নাক র/ক্তা/ক্ত করে ফেলে।পলাশ নাকে হাত দিয়ে র/ক্ত দেখে রকিবের দিকে তাকায়।রকিব তার লাল দাঁতগুলো বের করে হাসে।”ভাইজান চাচার আদেশ আমি পালন করতে আইছি,আপনি চইলা যান।”

পলাশের শরীরেও শক্তি কম নেই কিন্তু কখনো মা/রামা/রি করে অভস্ত্য না বিধায় হঠাৎই আ/ক্রম/ণ করতে পারলো না।রকিবের মুখের কথা শুনে তার র/ক্ত টিগবগিয়ে ফুটে উঠে।গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে রকিবের উদোম পেটে লা/থি দেয়।রকিব ছিটকে গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের উপরে পড়ে।নিধি হাত দিয়ে মুখের বাধন খুলে।নিজের অবস্থা দেখে ভ/য়ে ডুকড়ে কেঁদে উঠে।রকিবের আনা ছু/ড়িটা ড্রেসিংটেবিলের কোনায় অবহেলায় পড়ে আছে,রকিব মাথা তুলে ছু/ড়িটা হাতে নেয়।হাতে নিয়ে পলাশের বুকের দিকে সোজা টেনে দেয়।রকিবকে আ/ক্রম/ণ করতে দেখে পলাশ সরে যায় কিন্তু হঠাৎ ধারালো কিছুর আ/ঘাতে পলাশের ডান হাতের বাহু ব্যা/থায় নীল হয়ে জানান দেয় র/ক্তে/র স্রোত।পলাশ তার হাতের ক্ষ/তের দিকে যখন তাকিয়ে আছে তখন রকিব র/ক্তা/ক্ত ছু/রি হাতেই নিধির বিছানার দিকে এগিয়ে যায়।দাঁতে দাঁত চেপে বলে,”তোরে না খাইতে পারলে নাই মা/রতে তো পারমু।”

প্রিয় পুরুষের এমন অবস্থা সাথে এই ভ/য়ং/কর লোকের বিশ্রী কথায় নিধি কুকড়ে যায়,পলাশ বলে আ/র্তনাদ করে উঠে।পলাশ ততক্ষণে রকিবের কোমড় পিছন থেকে টেনে ধরেছে।রকিব সোজা হলে পলাশ ধস্তাধস্তি করে ছু/রিটা রকিবের হাত থেকে তার হাতে নিয়ে নেয়।একটুও দেরী না করে রকিবের পেটে আঘাত করে।রকিব আর্তনাদ করে উঠে পলাশের দিকে তাকিয়ে একছুটে বেরিয়ে যায়।পলাশ তাড়া করেও নাগাল পায় না।সে নিধির কাছে ফিরে এসে দেখে নিধি অ/জ্ঞান হয়ে গেছে,গায়ের জামা ছিড়ে ছি/ন্নভিন্ন করা।পলাশ পানি এনে নিধির চোখে মুখে পানি দেয়।নিধির জ্ঞান ফিরেনা,রাত তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া জানায় যে নিধির কোনো ক্ষ/তি হয়নি।আর একটু দেরী হলেই সর্ব/নাশ হতো,অতিরিক্ত ভ/য়ের কারনেই অজ্ঞান হয়ে গেছে,আর ভ/য়টা মনে আ/ঘাত করে রোগীকে স্বরণ করিয়ে দিচ্ছে যে এখনো বি/পদ আছে তাইতো জ্ঞান ফিরতে দেরী হয়েছে।ডাক্তার পলাশের পরিচিত।উনি একটা ঘুমের ইঞ্জে/কশন দিয়েছেন কিছু ওষুধ হাতের শিরায় স্যালাইনের মাধ্যমে দিচ্ছে।পলাশ শওকত হাওলাদারকে ছাড়বে না।এবার বোঝাপড়া হবে।কিভাবে এমন নি/কৃষ্ট কাজ করলো?

পুষ্প বাহিরে টিউবওয়েল পাড়ে মাছ কাটতে বসে।রাবেয়া আরেকটা বটি এনে নিজেও বসে।এতোগুলো মাছ একা কাটা সম্ভব না।পুষ্প শাশুড়ীকে দেখে মিষ্টি করে হাসে।রাবেয়া মাছ কাটতে কাটতে বল,
“পুষ্প তোমাকে একটা কথা বলি?”

পুষ্প রাবেয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
“জ্বী আম্মা বলেন।”

রাবেয়া পুষ্পর দিকে একপলক তাকায়।
“সুইটি যে শিমুলকে পছন্দ করে,সবাই সুইটিকে বিয়ে করাতে চেয়েছিলো সে কথা জানো?”

শাশুড়ীর মুখে এমন কথা শুনে পুষ্প বললো,
“জ্বী।উনি বলেছে।”

“সবাই পরিকল্পনা করছে তোমাকে এই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে সুইটি নিজে শিমুলের বউ হবে।”

পুষ্প চোখ বড়ো বড়ো করে তার শাশুড়ীকে দেখে।রাবেয়া মাছ কাটতে কাটতেই বলে,
“তাই উনারা তোমার সাথে এমন জ/ঘন্য ব্যবহার করছে।”

পুষ্প বুঝতে পারেনা তার কি করা উচিত।
“আমি এখন কি করবো আম্মা?”

“মেনে নিবে মানিয়ে যাবে,চুপ থাকবে তাহলেই সংসারে শান্তি আসবে এই চিন্তা মাথা থেকে ফেলে দাও।এই আমাকে দেখো চুপ থেকে জীবনের এতোগুলো বছর এই বাড়িতে কাটিয়ে দিলাম অথচ কারো কাছে আমার বিন্দমাত্র দাম নেই।আমার সাথে সবাই যা করেছে আমি চাইনা তোমার সাথেও তা হোক।কেউ কটু কথা বললে প্রতিবাদ করবে,অবশ্যই বেয়াদবি করে না শালীন ভাষায় সুন্দর করে বুঝিয়ে দিবে কোনটা সঠিক কোনটা ভুল।তুমি নরম থাকলে আ/ঘাত পাবেই।তোমাকে শক্ত হতে হবে।কথায় আছেনা শক্তের ভক্ত নরমের যম।এই কথাটা আসলেই সঠিক।আমার সাথে যা হয়েছে তা আবার তোমার সাথে হতে পারেনা।আমার শাশুড়ী যা করছেন এটা যদি আমি করতাম তাহলেও মানা যেতো কিন্তু উনি দাদী-শাশুড়ি হয়ে এই কাজগুলো করছে।আমি চাই তুমি শক্ত থাকবে।প্রতিবাদ করে নিজের স্থান দেখিয়ে দিবে।ভয় পাবেনা আমি তোমার সাথে আছি।”

পুষ্প হা করে তার শাশুড়ীর কথাগুলো শুনে।রাবেয়া পুষ্পর দিকে তাকিয়ে বললো,
“কি ভাবছো আমি শাশুড়ী হয়ে কিভাবে এসব শিখিয়ে দিচ্ছি?শিখাচ্ছি কারণ তুমি আমার কাছে আমার ছেলের-বউ না তুমি আমার মেয়ে।আমি চাইনা আমার মেয়ে কারো কথায় ক/ষ্ট পেয়ে লুকিয়ে কাঁদুক।”

পুষ্পর চোখ বেয়ে পানি পড়ে।মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে এমন ভালো শাশুড়ী তার কপালে রাখার জন্য।

শিমুল ঘুম থেকে উঠে।বাহিরে এসে পুষ্পর কাছে দাঁড়ায়।রাবেয়া ছেলেকে দেখে ইশারায় পাশে বসতে বলে।শিমুল কাছে আসলে পলাশের ব্যাপারে সব সংক্ষিপ্ত আকারে বলে।শিমুল অবাক হয়ে বলে,
“এতোকিছু ঘটে গেছে আর তুমি আমাকে এতোক্ষণে জানাচ্ছো?”

রাবেয়া ছেলের মুখের দিকে তাকায়।
“রাতেই জানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু এতোরাত বলে ডাকিনি।”

“এতোরাত তো কি হয়েছে ডাকা যায় না।আমার ভাই এতো বি/পদে আর আমি কিনা বাড়িতে বসে আছি?”

শিমুল দ্রুত পায়ে রুমে যায়।পলাশ তার যে উপকার করেছে এটা শোধ করার মতো না।আর আজকে পলাশই কিনা বি/পদে পড়ে আছে।শিমুল তিয়াসকে ফোন করে কাপড় বদলে হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে পড়ে।

সকাল আটটার দিকে নিধির ঘুম ভাঙে।পলাশ নিধির কপালে হাত ছুঁয়িয়ে বলে,
“কেমন লাগছে নিধি?”

নিধি মাথা নেড়ে বললো,
“ভালো।”

“কিছু খাবে?বলো এনে দেই।”

নিধি কিছুক্ষণ পলাশের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
“আমার যে ছেলেটার সাথে বিয়ে ঠিক হয় পারিবারিক সমস্যার কারনে উনি হঠাৎ করেই না করে দেয়।আব্বা ভীষন ভে/ঙে পড়ে।আমি অবশ্য খুশী ছিলাম।কিন্তু আমার খুশী বেশিক্ষণ টিকলো না।তোমার আব্বা উনার এক সহযোগীর সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে দেয়।কৌশলে আব্বাকে ট্রান্সফার করে অন্য জেলায় পাঠায়।বিয়ে ঠিক হবার পরে আব্বা জানতে পারে লোকটা ইয়া/বার সাথে যুক্ত।আশেপাশের এলাকায় উনিই ইয়া/বা সাপ্লাই দেয়।আব্বা বিয়ে দেবেনা নাকোচ করে দেয়।এটা শুনে তোমার আব্বা স/ন্ত্রা/স নিয়ে আমাদের বাসায় যায়।আমার আব্বা আম্মা তো ভ/য়ে শেষ।আব্বা সাহস করে জানায় উনি মেয়ে বিয়ে দিবেনা।তোমার আব্বা আমার আম্মা আব্বাকে অনেক হু/মকি দেয়।কিন্তু তাও যখন রাজী হচ্ছিলো না তখন উনি হু/মকি দিয়ে বলে,
‘নিধি যদি ফের পলাশের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাহলে তিনি উনাদের মেরে ফেলতে একবারো ভাববেন না।’
আমার আম্মা আব্বার জীবনের সংকট দেখে আমি রাজী হয়ে জানাই আর কখনোই কথা বলার চেষ্টা করবো না।উনি দলবল নিয়ে আবার চলে আসে।কিন্তু আমি তো তোমাকে ভুলতে পারিনা।অর্ধ পা/গল হয়ে গিয়েছিলাম।বাবা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেকে সামলে নেই।কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন আব্বা অফিস থেকে আসার পথে রাস্তায় এক্সি/ডেন্ট করে মা/রা যায়।আমি আর আম্মা অসহায় হয়ে পড়ি।আব্বার কথা ভেবে আম্মা সারাদিন কাঁদতো।একদিন সকালে উঠে দেখি আম্মা ঘুমেই চলে গেছে।এই এতো-বড়ো দুনিয়ায় আমি একা হয়ে পড়ি।কিভাবে কি করবো যখন রাস্তা পাচ্ছিলাম না তখনি আমার নানা উনার কাছে আমাকে নিয়ে যায়।উনার কাছ থেকেই লেখাপড়া শেষ করি।তুমি মনে বাসা বেধে থাকলেও আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার অপেক্ষায় ছিলাম।এখন তো আব্বা আম্মাও নেই কাউকে হা/রানোর ভ/য় নেই তাই তোমার সানিধ্যে এসেছিলাম তোমাকে দেখবো বলে।ভেবেছিলাম বিয়ে করে ফেলেছো কিন্তু আমাকে ভুল প্রমানিত করে তুমিও আমার মতোই আশায় আছো।কিন্তু তোমার আব্বা তো আমাকে ছাড়লেন না,ঠিক আমাকে ছিড়ে খাওয়ার জন্য কুকুর পাঠিয়ে দিলেন।উনি আসলে আমাকে বাঁ/চতে দিবে না।”

নিধি থামে।জোরে জোরে শ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে।চোখের পানিতে গাল ভিজে যাচ্ছে।পলাশ হতভম্ব হয়ে বসে আছে।তার অগোচরে তার আব্বা এতো কাহিনী ঘটিয়ে ফেলেছে?অথচ সে জানেই না?আবারো নিজের উপর নিজের রাগ হয়।নিধির ভেজা মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
“বিয়ে করবে আমায়?”

নিধি চোখ খুলে পলাশকে দেখে।দুর্বল হাতে পলাশের চুলে হাত রেখে বললো,
“মেয়েদের সবচেয়ে দামী জিনিস হলো তার সম্মান।তোমার কাছে আসার অপ/রাধে যদি তোমার আব্বা আমার সম্মান ছিনিয়ে নিতে একবার না ভাবে যদি বিয়ে করি তাহলে জ/বাই করতে সেকেন্ডও ভাববে না।”

পলাশ আজকে যদি চুপ থাকে তাহলে নিধিকে সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলবে।নিধির হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় পুড়ে বললো,
“হেটে যেতে পারবে?নাকি কোলে করে নিবো?”

নিধি অবাক হয়ে বললো,
“কোথায়?”

“কাজী অফিসে।”

“আমি কি বলেছি বিয়ে করবো?”

“না।”

“তাহলে?”

পলাশ নিধির হাতের উল্টোপিঠে চুমু দিয়ে বললো,
“আজকে সব আমার কথায় হবে।আর পু/ড়/তে চাই না।এখন থেকে যে বাধা হয়ে আসবে তাকেই পু/ড়িয়ে দেবো।”

শিমুল আর তিয়াস ব্যস্ত পায়ে পলাশের কাছে এসে দাঁড়ায়।নিধির দিকে তাকিয়ে আলতো হাসে।শিমুলকে দেখে পলাশ হাসে।সে জানতো তার ভাই তাকে ঠিক খুঁজে বের করে নিবে।
“নে চাবি।নিধির বাসায় বিয়ের ব্যবস্থা কর।কিছুক্ষণ পরে আমি আর নিধি আসছি।”
শিমুল চুপচাপ চাবি নিয়ে বেরিয়ে আসে।তার ভাই বিয়ে করবে!সে আর তিয়াস যতো দ্রুত সম্ভব বিয়ের আয়োজন করে।বিকাল চারটা নাগাদ পলাশ আর নিধির বিয়ে হয়।পলাশ শিমুলকে বলে তার প্রয়োজনীয় সব কিছু এই বাসায় পাঠিয়ে দিতে,ওই বাসায় আর যাবেনা।শিমুল চলে গেলে পলাশ নিধির রুমে আসে।শিমুল আর তিয়াস এই অল্প সময়েই বাসাটা গুছিয়ে ফেলেছে,এমনকি বিছানায় ফুলের সমাহার দেখা যাচ্ছে।এই বিপদের মাঝেও ছেলেগুলো বাসর ঘর নিয়ে কতো সিরিয়াস!পলাশ বাসর ঘরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।নিধি ড্রেসিংটেবিলের সামনে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার হাতে কালকের ছিড়া জামাটা পলাশের দিকে এগিয়ে বললো,
“এই ছেড়া জামাটা বদলে দিয়েছে কে?”

পলাশ হাত দিয়ে মাথা চুলকে বললো,
“কে আবার?আমি।”

নিধি বুকে হাত দিয়ে বললো,
“তুমি!”

“হ্যাঁ।”

নিধি আস্তে করে বললো,
“সব দেখে নিয়েছো?”

পলাশ এগিয়ে আসে।নিধি দিকে তাকিয়ে বলে,
“তখন তো হারিয়ে ফেলার ভ/য়ে কাঁদছিলাম এসব খেয়াল করার সময় ছিলো নাকি?তবে আজকে ভালো করে দেখে নিবো।”

পলাশের কথায় নিধি আতৎকে উঠে।
“মানে?”

পলাশ নিধির কোমড়ে নিজের দু’হাত দিয়ে আঁকড়ে কাছে টেনে বললো,
“বিছানার দিকে তাকাও।”

নিধি বিছানার দিকে তাকায় না।সে তো দেখেছেই শিমুল ভাই তাদের বাসর সাজিয়েছে।নিধি তার দু’হাত দিয়ে পলাশের গলা আঁকড়ে ধরে।
“বিছানা দেখেছি।”

“আমার ভাই এতো কষ্ট করে বাসর ঘর সাজিয়েছে আমি বড়ো ভাই হয়ে কিভাবে তার অবমূল্যায়ন করি?ভাবছি কাজে লাগাবো।”

লজ্জায় নিধির নাকটা কেঁপে ওঠে।আস্তে করে বললো,
“তুমি না শিক্ষক মানুষ।শিক্ষকদের ভদ্র হতে হয়।”

“আজকে অ/ভদ্র হয়েই নাহয় ক্লাস নিবো।কি তুমি ক্লাস করবে তো?”

নিধি পলাশের চোখের দিকে তাকায়।লজ্জামাখা হাসি দিয়ে পলাশকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।পলাশ নিধির কানে ফিসফিস করে বললো,
“আজকে যদি একটুও অভদ্র না হই তাহলে এই জীবন বৃথা।”

পলাশ মাথা নিচু করে নিধির কানের লতিতে ভেজা স্পর্শ দিয়ে ফিসফিস করে বললো,
“নিধি..”

নিধি মাথা তুলে পলাশের দিকে তাকায়।পলাশ নিধির কানে ফিসফিস করে বললো,
“আজকে আমি মা/তাল হয়ে গেলে কি তুমি মাইন্ড করবে?”

চলবে…..
❝আমার সুস্থতার খবর নিতে যারা মেসেজ করেছেন তাদের ধন্যবাদ,আসলে সবার মেসেজ দেখি কিন্তু রিপ্লাই করতে পারিনি।সরি।❞

আমার গল্পের গ্রুপ ঝুমুরে’র গল্পের রাজ্য – Kingdom Of Jhumur’s Story �� জয়েন হোন সবাই।

❝লাইক কমেন্ট করতে ভুলবেন না।❞

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here