সমাধি পর্ব-২৪ ও শেষ

#সমাধি 🙏
#পর্ব —–২৪★ অন্তিম পর্ব★
#সেলিনা_আক্তার_শাহারা
___________________________________
“– রাসেদ অপেক্ষায় রয়েছে তার বাড়ি থেকে এখনও কেউ এলোনা। সবাই কি রাগ করল?, নাকি অনুকে খুজে পাওয়াটা তাদের ভালো লাগেনি? না না যদি এমন হত তাহলে শেফা অন্তত চলে আসতো। এত টুকু বিশ্বাস শেফার প্রতিতো জন্মেছে।

—- রাসেদ কি করে জানবে বাড়িতে কি যুদ্ধু হচ্ছে।
শেফা আর রাসেদের বিয়ে এখন সপ্নের মতই।

কাজী সাহেবের হাতে সময় কম। তাই বার বার উনার তারা।
এর মধ্যে রাসেদ কে ভয়ই পাইয়ে দিলো অনুর অসুস্থতা। মুখ দিয়ে পঁচা রক্ত বের হচ্ছে।
সবাই সেখানে শুধু দেখছে। কিছু করান নেই।বিধাতার সাথে যুদ্ধ চলে না।

বাহিরে এম্বুল্যান্স দেখে এই হাসপাতালের এক কর্মরত এক ডাক্তার তাদের কেবিনে প্রবেশ করল।
– জানতে পারলো রুগী অন্য হাসপাতালে সিফ্ট হবে তাতে উনার বাধা।
” দেখুন মি. রাসেদ হতে পারে এটা সরকারি হাসপাতাল,তবে ভাববেন না এখানের সব ডাক্তাররা হাতুরে চিকিৎসা করছে।
রুগীর কিন্তু বেশ ভালো চিকিৎসা হচ্ছে। আর উনার যা কন্ডিশন তাতে অন্য কোথাও সিফ্ট করাটা……..

“– রাসেদ ডাক্তার কে থামিয়ে দিলো।আর বিনিত স্বরে অনুরুধ করলো। স্যার এটা আপনি বুঝতে পারছেন যে অন্য কোথাও নিয়ে লাভ নেই।তবে এই কথাটাই আমার মন মানতে নারাজ। সারা জীবন আপসোস হবে অনুর ভালো চিকিৎসা হয়নি বিধায় ওর প্রান গেছে।
তাই আমার অনুরুধ আমায় বাধা দিবেন না। একটিবার শেষ চেষ্টা করি। হয়তো আল্লাহতাআলা সব পাল্টে দেবে।হয়তো ওকে ফিরিয়ে দেবে আমাদের মাঝে।
উনার চাইতে বড় ডাক্তার আর কে আছে?? মরা মানুষ কেউ জীবিত করা শুধুই তার হাতেই সম্ভব।

ডাক্তার মাথা নত করে রাসেদের পিঠে হাত রেখে শান্তনা রেখে আবার চুপ চাপ বেরিয়ে গেলো।
মানুষের মনের বিশ্বাসকে নষ্ট করা ঠিক হবে না করুক ওরা শেষ চেষ্টা। তবে যদি এই রুগী সুস্থ হয় তাহলে এটা হবে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ চমৎকার।

——- শেফা সহ বাড়ির সকলে এসেছে।রাসেদের মা মুখে কাপর দিয়ে চাপা কান্না করছে।
আমি যদি জানতাম অনুর এত বড় অসুখ তাহলে কখনো ওকে কষ্ট দিতাম না। রাসেদ তো এবার হয়তো আমায় আরো ঘেন্না করবে।

শেফা অনুর করুন অবস্থায় বেশ ভয় পেয়ে আছে।অনুর কিছু হলে আমার রাসেদ বাচঁবে তো!!!
রাসেদের কিছু হলে আমিতো….
“- সময় বিলম্বের জন্য নয়। কদর করতে হবে। যদি হয় সময় মাপা। তাহলে তো আরো কদর দরকার।
যাই হক অনুকে তার বৌ বলে একটি বার ডাকার জন্য সেই অধিকার টুকু চাই।
অনুকে উঠিয়ে শাড়ি পরানো মুসকিল তবে শেফা আর মিহা দুজনে মিলে রাসেদের কেনা ঐ নীল শাড়িটা অনুর শরিলে কোন মত পেচিয়ে দিয়েছে।
রাসেদের চোখ জুরালো অনুকে এই শাড়িতে দেখে।
অনুর দুচোখ ভরে এলো এই শাড়ি পরে রাসেদ ভাইকে দেখাতে পেরেছি।
– কাজী বিয়ের কাজ শুরু করল। লেখা লেখি শেষ করে। রাসেদের থেকে তার মত নিয়ে নিলো।
এক দমে রাসেদ কবুল কবুল কবুল বলে চট করে সইটাও সেরে নিলো।
হাসিতো পেয়েছে রাসেদ অনুকে পেতে কত উতলা তবে হাসি কারো মুখ দিয়ে বের হল না।

— অনু রাসেদ কে ইশারায় কাছে ডেকেছে।
আর সবাইকে এক এক করে আরলে লোকাচ্ছে।
তবে কাজী সাহেবের কাজ তো শেষ হয়নি।তাই দাড়িয়ে।

অনু কবুল বল না।

বল না অনু!! মাথায় হাত বুলিয়ে রাসেদের আকুতি অনু ফেলেনি। তাই তার সাথে বিয়ের বাধনে বেঁধেছে অনু। তারা এখন স্বামী স্ত্রী। এখন তাদের এক হওয়া হল।এবার শান্ত রাসেদ ওকে বাধঁতে পেরে।
আলহামদুলিল্লাহ বলে সকলেই খুশি।

———- রাসেদ এখন অনুর মাথার পাশে বসে। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে অনুর সাথে কথা বলছে।
দেখ তোকে আমার বৌ বানিয়েই ছারলাম দেখলি।
তুই এখন আমার বৌ… আর আমিই রাইমার বাবা বাস।
না তোকে আর তুই বলবো না।
” অনু রাসেদকে প্রশ্ন করার আগেই রাসেদ অনুকে জানালো বৌ কে তো তুই বলে না। তাকে ভালোবেসে তুমি ডাকতে হয়। এত টুকু মাথায় ঢুকেনা মনে প্রশ্নের পাহাড় তুললি??
রাসেদ তো অনুর মুখ দেখে মন বুঝে তবে সব চাইতে বড় বুঝার জিনিসটাই বুঝলোনা।

কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা অন্য হাসপাতালে যাবো সেখানে তর আরো ভালো চিকিৎসা হবে।
দেখবি কয়েকদিনের মধ্যেই তোকে আমার ঘরে তুলবো। এখন তো শাড়ি টা পড়তে পারিস নি। তখন সুন্দর করে কুচি দিয়ে আমিই পরিয়ে দিবো।তর আলামারিতে শুধু শাড়ি হবে অন্য কিছু নয়। আমার সামনে শুধু শাড়ি পড়ে থাকবি।

অনু রাসেদকে থামিয়ে দিয়ে তার সাথে কিছু কথা বলতে চায় তাও একলা।
সেই কথা রাসেদ আর অনুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রইলো।

★———- রাইমার সমস্ত ভার রাসেদের কাধে দিলো।রাইমা কোন দিন জেনো নিজেকে এতিম না ভাবে। ওর জানতে হবে না আসল বাবার কথা। সে শুধু জানবে ওর বাবা রাসেদ আহমেদ আর মা অনু।
তুই না বললেও রাইমাকে ওর আসল পরিচয় জানাতাম না ও আমার মেয়ে শুধু আমার। এসব ছার নিজের চিন্তা কর।জলদি ঠিক হয়ে উঠ।আমরা তিন জন ঘুরতে যাবো নীলাচল। যাবিনা??
উওরের বদলি হালকা হাসি অনুর।

রাসেদ যে আজ বড্ড খুশি তবে খুশির দিনে অনু চাইছে না বড় কষ্ট টা দিক তাকে।

–” এত কথার গভীরে অনু এবার রাসেদের থেকে মাফ চেয়ে নিলো।
আমায় দেয়া উয়াদা তুমি পূরন করো রাসেদ ভাই।
আর আমায় মাফ করে দিও।আমার এই শেষ সময় টুকু তোমায় দিতে পারলাম না। মুখের অক্সিজেন মাক্স খুলে রাসেদের সাথে কথা বলছে বহু সময়। এবার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। রাসেদ মাক্সটা আবার পরিয়ে দিলেও অবস্থা ভালো না।

রাসেদ ভাই আমার মত মানুষের আশায় আর কত দিন রবে?? তোমাদের এই কষ্ট আর দেখতে পারছিনা।জানিনা কত দিন বাচঁবো, আমি যে আর পারছিনা রাসেদ ভাই।আমার বড্ড কষ্ট হচ্ছে তোমাদের মনে মিছে আশা দেখে।আমি চাইনা আমায় নিয়ে তোমরা কোন মিছে আশা বাঁধো তাই সেই কষ্ট থেকে মুক্তি চাইছি। আমি তোমার ঘরনিতো হলাম তবে তোমার ঘরে আর উঠা হল না।

তুমি কেন বার বার তোমার ইচ্ছে গুলো আমায় জানিয়ে বেঁচে থাকার লোভ জন্মাও..
আমার তো আর তখন মরতে ইচ্ছে হয় না।
আমি যে তোমার সাথে ছাদে বসে তোমার কাঁধে মাথা রেখে একটু আরামে ঘুমাতে চেয়েছিলাম। তবে বিধাতা বড় পাষান রাসেদ ভাই। বড় পাষান,।

আমায় একটু তোমার বুকে জরিয়ে নিবে রাসেদ ভাই?? বড্ড ইচ্ছে করছে তোমায় জরিয়ে ধরতে।
বলার সাথে সাথে রাসেদ অনুকে জরিয়ে ধরে নিয়েছে,, চুপ চুপ এসব বলসি না কিছু হবে না। তোকে কেড়ে নিতে দেবো না দেবোনা। তুই আমার এই বুকেই ঘুমাবি দেখিস।

ঐ ডায়রিটা ঐ ডায়রিটা রাসেদ ভাই তুমি ওটা পড়ো।—

চুপ!! রাসেদ এক মনে অনুর পানে তাকিয়ে , বাজে কথা বলিস না অনু চুপ কর।
sry রাসেদ ভাই।
আমায় ভুলে যেও।আর নতুন অধ্যায়…………….

“- অনুর আর সারা না পেয়ে রাসেদ অনুর মাথাটা বালিশে রেখে দিয়েছে।কথা বলার মাঝে ও চুপ হয়ে গেলো কেন?
কি হল অনু??
এই অনু?? অনু…
রাসেদ একটু ওর দিকে চোখ বুলাতেই নজরে এলো অনুর হাত..
অক্সিজেনের পাইপটা কত শক্ত করে চেপে ধরে আছে যাতে ওর শ্বাসটা বন্ধ হয়।আমায় ছেরে যাবার জন্য বড্ড তারা তর।মুখে বলছিস যেতে চাসনা। আর অন্তরে……….
অনু যে সবার চোখে মিথ্যা আশা দেখার চেয়ে এই রাস্তাই উওম মনে করেছে।

———————————— ★★

—–১৮ বছর ৮ মাস পর পর…

” আব্বু আব্বু করে রাইমা রাসেদের গলা জরিয়ে ধরেছে।সারা দিন বাদ ওর আব্বু বাসায় এসেছে খুশির অন্ত আছে নাকি??

রাসেদকে দেখলে আজকাল সকলে ভয় পায়।কি রাগী চেহারা। মুছ টা বাড়িয়েছে বলে তো আরে। কিছুটা সাদা সাদা চুলের হাত ছানি। বয়সতো হচ্ছে।
আর কত।
“-
“- দুধ খেয়েছো??
হ্যা।
কলেজে গিয়েছো নাকি বন্ধু বান্ধব নিয়ে আড্ডায়??
ওহহ হো ,,, তুমি খালি সন্দেহ করো।আব্বু আমি বড় লক্ষী মেয়ে।ঠিক আম্মুর মত।
হ্যা এই কারনেই তো জিজ্ঞেস করছি। কারন তুমি পুরো তোমার মায়েরই মত।
একেক করে মেয়ের সারা দিনের খবর নিচ্ছে আর রাইমা লক্ষী মেয়ের মত তার বাবার কথার জবাব দিচ্ছে।
আব্বু কাল কিন্তু তোমার দোকান যাওয়া চলবে না।

কেন কেন মামনি?
কালকে সবাই মিলে ঘুরতে যাবো বলে।
না মামুনি কালতো জানোই কি… কাল যাওয়া হবেনা।কাল বাড়িতে অনেক মেহমান থাকবে।

– এই যে রাইমার বাবা ও মিথ্যে কথা বলছে ও তো দুধ খায়নি। ঐ দেখো ফুল গাছের গোরায় দুধ ঢেলে খালি গ্লাস নিয়ে হাজির।
” শেফা তো সত্যিটা বলে দিলো।এবার রাইমার খিপ্ত নজর শেফার দিকে।

মেয়ে এত বড় হয়েছে তার পরেও বাচ্চাদের মত কাজ?
ঠিক ওর মায়ের মতই হয়েছে।

রাসেদ শেফার বকুনি থেকে রাইমাকে বাঁচাতে দুজনে হাত ধরে ভো দৌড়।
রাইমা জেতে জেতে শেফাকে বলে গেলো i hate u শেফা মামুনি।
তোমার সাথে আড়ি…

….
-“-কি রাসেদ অনু শেফার বিষয়টা ধোয়াশা মনে হচ্ছে?
অনু তো সেই দিনই সবার থেকে চির বিদায় নিয়েছে।
আল্লাহর মর্জিতে গেলে হয়তো রাসেদ মানতো।তবে নিজ ইচ্ছা কি করে পারলো নিজের শ্বাস রুধ করতে??
যার জন্যে অনু কে কোন দিন মাফ করবোনা, কোন দিন না।
অনুর কোন ছবিই রাসেদ বাড়িতে চায়না। সার্থপর মেয়ে ছিলো অনু। নিজের কষ্ট হচ্ছিল বলে চলে গেলো।একবার আমাদের কথা ভাবলোনা।
একটা পাষানিকে ভালোবেসে ছিলাম।অনু এমনটা না করলে হয়তো আর কিছুদিন ওকে কাছে পেতাম।
ওর সব ভার আমার কাধে দিয়ে নিশ্চিতে সমাধি নিলো।
“-

রোজ কার মত আজও রাসেদ একলা ছাদের কোনায় ডায়রি হাতে। বুকে জরিয়ে রেখেছে নীল শাড়ি। অনুর গন্ধ গায়ে মেখে বসলে মনে হয় ও আমার পাশেই বসে রয়েছে। সারাটা জীবন তুই আমায় একলাই পার করালি।
ডায়রিটার প্রতিটি কোনা রাসেদের পড়া শেষ। ওর ডায়রিটা অনু নেবার পর বহু কথাই এটা তে কলমের কালিতে ফুটিয়েছে।

“- রাসেদ ভাই.
আমি যাবার পর মোটেও কাদঁবে না।
সত্যি সত্যি রাসেদ এক ফোটা জলও ফেলেনি। কেন ফেলবো ঐ বেঈমানটার জন্য জল।একদম না মোটেই না।রাসেদ সুন্দর মত জানাজা পরেছে।কবরে শুইয়ে দিয়েও চোখে একটু পানি এলোনা। সকলে তো ভয় তখনই পেয়েছে।

– ডায়রিতে লিখেছে রাসেদ ভাই তুমি আমায় ভুলে শেফা আপুকে বিয়ে করে সুখি হও।
তবে এই কাথাটা রাসেদ রাখলোনা। তর সব ইচ্ছা পূর্ন হবে শুধু এটা বাদে।
ঘরের সব ছবি পুরিয়ে দিলেও ওর মানিব্যাগে ছোট্ট একটা ছবি সে রেখেছে।সকলের সামনে না কাদঁলেও আরালে এসে কেঁদেছে।
আজ অনু চলে যাবার ১৮ বছর পার হয়েছে। রাসেদ একলা জীবন পার করল।আর শেফা!!
সেও রাসেদের মতই একা বড্ড একা।
রাসেদ যদি অনুকে ভালোবেসে ওর সৃতি নিয়ে বাঁচতে পারে। তাহলে আমি ওকে সামনে পেয়ে চোখের দেখায় বাঁচতে পারব না কেন???

শেফাকে বিয়ে করার কথা রাসেদ কে বলার সাহস ওর পরিবারের হয়নি।তবে রাসেদ বহুবার শেফার জন্য বিয়ে এনেও ব্যার্থ। সে এ বাড়ি ছেরে যাবেনা। রাইমা ওর মেয়ে ওকে ছেরে যাবেনা। রাসেদের পায়ে পরে অনুরুধ করেছে জেনো ওকে বাড়ি ছারা না করে।

এখন রাসেদ আর শেফার একলা জীবন পার। শেফা রাসেদের মা বাবার জত্ন আর রাইমার দায়িত্ব।রাসেদকে দেখেশুনা, এই তার জীবন।

রাইমার জন্যে অনেক জায়গা থেকে বিয়ের সমন্ধ আসছে।তবে রাসেদের শর্তে কেউ রাজী নয়।
শর্ত ঘর জামাই থাকা।
অনুকে হারিয়ে রাইমাকে ঘিরেই তার সব। এখন রাইমা না থাকলে রাসেদের শ্বাসটাও বন্ধ হবে। তাই ঘর জামাই চাই…… তবে শুনা যাচ্ছে ওর পছন্দের কেউ রয়েছে।আর এমন হলে রাসেদ কোন বাধা দেবেনা। কারন ভালোবাসা হারানোর বেদনা সে জানে।
তপু তার মা এখানে থাকেনা।
কষ্ট হয় রাসেদকে দেখলে।তবে রাইমাকে দেখতে আসা বন্ধ হয়নি। তপুতো এখন সংসারি মানুষ।
ওকে নিয়েও জেতে চেয়েছিলো।তবে অনুর শেষ আবদার ছিলো রাইমা জেনো রাসেদের ছত্রছায়ায় মানুষ হয়।
আর রাসেদও রাইমাকে ছারতে নারাজ ছিলো।সোজা কথা বলেছিলো রাসেদ। রাইমাকে যে নিতে আসবে তার লাশ পরবে বাড়িতে।

“রাসেদের মা বাবার বয়স অনেক হল।ঘর বন্দী হল।ঘর থেকে অন্যের সাহায্য ছারা চলা ফেরা পুরো পুরি বন্ধ।

—- আব্বু!!
রাইমার ডাক পরতেই রাসেদ চোখের পানি ও ডায়রিটা লুকিয়ে নিলো।রাইমার চাপা কান্না টা আর বারাতে চায়না। মা হারা মেয়েটা আজও মায়ের অপূর্ণতায় ভুগছে। তার উপরে আমায় একলা দেখলে ওর কষ্টটা বাড়ে। বার বার বিধাতার কাছে জানতে চায়। আমার আম্মুকে কেড়ে নিয়ে আমার আব্বু আর আমাকে একলা করে দিলে.কেন…… আম্মুর মুখটাও যে ধুয়াশা লাগে। বার বার আব্বুর মানিব্যাগটায় মায়ের মুখ খুজে বেরাতে হয়।

মেয়ে বাবার মন বুঝে। আব্বু তুমি আবার আম্মুর জন্য কাঁদছো!!
— না না কই না তো।
” মায়ের শাড়িটা এখনও জরিয়ে আছো চোখ এখনও ভিজে তবু মিথ্যা বলছো???
— রাসেদ দমে গেছে।মেয়ের সামনে মিথ্যা অজুহাত আর চলবে না।
তোমার মা বড্ড পাষান ছিলো রাইমা। মুখে বলতো রাসেদ ভাই তোমায় বড্ড ভালোবাসি। আর নমুনা এই দিলো…
মা তুমি আছো বলেই আমি।নয়তো ঐ দিনই তোমার আম্মুর সাথে আমিও পারি জমাতাম।

” রাসেদের হাতটা ধরে রাইমা ওকে কোথাও নিয়ে জেতে চাইছে।
চলো আব্বু।
-কোথায়??

সমাধিতে………
আম্মুর সমাধির কাছে একটু বসবো।
আম্মুর কথা মনে পড়ছে বড্ড।

– কাল না আম্মুর মৃত্যু বার্ষিকি??
রাসেদ মুচকি হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়েই বললো প্রতিবারের মত এবারও বাড়ি ভর্তি এতিম আসবে। দোয়া করতে।
অনুর জন্য।
“——

অনুর কবরের পাশে বসে রাসেদ আর রাইমা। একটু আরালে দাড়িয়ে শেফাও শেখানে।

কি ভালেবাসা ছিলো অনু তোমাদের। তুমি নেই দেখেও রাসেদের মনে একটু ভালোবাসার কমতি হয়নি।

এভাবেই হয়তো আমারও সমাধি উঠবে।তবে আমার সমাধির পাশে দাড়িয়ে কান্নার কেউ রবে না।

বাবা মেয়ে অনুর সমাধির পাশে আকুল ভাবে চেয়ে।
কতটা বছর হল অনু।তর মুখটা দেখিনা। কবে আমার ডাক পরবে রে?? ডাক পরার আগে মেয়েটাকে একটা শক্ত হাতে তুলে দিতে চাই। যে হাত কখনো ছারবেনা।
আকরে ধরে রাখবে ওকে।

একবার উপরে আসি তখন জিজ্ঞেস করব। কেন এমনটা করলি কেন??
আমায় ছেরে যাবার এত তারা ছিলো তর।
কেন এমনটা করলি?? ছাদে আমার পাশে কেউ বসেনা। আমায় কেউ রাসেদ ভাই বলে ডাকেনা অনু।
আমি বড় একলা রে বড় একলা। আমায় একলা করে জেতে তর কষ্ট হল না। ★ দেখিস তর সমাধির পাশেই আমার একটা সমাধি তৈরি করে রাখব। তর সাথে ঘুমাবো আরামে।
তখন দুজন বসে বসে আড্ডা দিবো।আর মেয়ের সংসার দেখবো।
আমি জলদি আসব অনু জলদি আসব…..
প্রমিস- আর তুই জানিস তর রাসেদ ভাই প্রমিস ভাঙেনা। বড্ড পাকা কথার লোক।
তর রাসেদ ভাই তার অনুর কাছেই আসবে।আমাদের সমাধি হলেও আমাদের পবিত্র ভালোবাসার সমাধি হবে না।
রাসেদ শুধু অনুরই রবে।তর একটা কথা রাখতে পারিনি বলে রাগ করিসনা। আমার ভালোবাসা আমার অনু……………


সমাপ্ত★
ভুল ত্রুটি মাফ করবেন……….
আর হ্যা এবার বকা বকিও করতে পারেন।।
কারন তো জানাই🥴🥴🥴🥴🥴🥴🥴💔💔💔💔💔

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here