#সে_আমার_মানসিক_শান্তি
#পর্ব_১৪
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
চারিদিকে আজানের প্রতিধ্বনি ভেসে আসছে।আব্রাহাম একটা মসজিদের সামনে গাড়ি দাঁড় করালো।গাড়ি থেকে নেমে,অজু করে মসজিদের মধ্যে প্রবেশ করল।নামাজ শেষ করে,নিদিষ্ট গন্তব্যের দিকে,ছুটে চলল।গাড়ির জানালা খোলা থাকায়,ভোরের শীতল হাওয়া আব্রাহামে’র শরীর ছুঁই দিচ্ছে, শীতল হওয়ায় মৃদু কেঁপে উঠলো আব্রাহাম।দূর গাছের ডালে থেকে দু-একটা পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে।আব্রাহাম গাড়ির জানালা বন্ধ করে দিল।প্রায় ত্রিশ মিনিট পরে,গাড়ি’টা কবর স্থানের কাছে থামলো। রাতের আঁধার কেটে গিয়ে,নতুন ভোরের সূচনা হলো,দু-একজন মানুষ’কে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।ভোরের নামাজ শেষ করে-ই তারা হাঁটতে বের হয়।আজকে-ও তার ব্যতিক্রম নয়।আব্রাহাম গাড়ি থেকে নেমে, সোজা কবরের কাছে গিয়ে বসলো।দু-চোখ বেচে অশ্রু কণা গুলো গড়িয়ে পড়ছে।আব্রাহাম দুনিয়ায় কোথাও যখন শান্তি পায় না।তখন কবর স্থানে আসে।কবরের দিকে তাকালে মনে হয়,
দুনিয়ায় সব আয়োজন বৃথা।কবর স্থানে আসলে,
অদ্ভুত এক শান্তি অনুভব করে আব্রাহাম।নির্দিষ্ট কবরের দিকে,পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে।তার দিকে তাকিয়ে,হাজারো অভিযোগ করতে ইচ্ছে করছে।অভিযোগ করলে-ই কি সে,শুনে আবার তার কাছে ফিরে আসবে।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ালো।বেশ কিছুক্ষণ দোয়া-কালমা পড়ে,বাসার উদ্দেশ্যে রওয়া দিল।
ঘড়ির কাঁটার দশ’টা বাজে,চৌধুরী বাড়িতে আড্ডা আনন্দে মেতে উঠেছে সবাই।আব্রাহাম ভরে এসে ঘুমিয়েছে।এখনো উঠে নাই।ড্রয়িং রুমে চিৎকার চেচামেচি শুনে রজনী নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।বাবা-মাকে দেখে,অবাক হয়ে গেল।দ্রুত পায়ে বাবা মায়ের কাছে আসলো।মায়ের কাছে বসে,মাকে জড়িয়ে ধরলো।রজনী’র মা মেয়ে’কে পরম আদুরে ভাবে মেয়েকে নিজের বুকে আগলে নিলেন।
–আপু কেমন আছো?শুধু মায়ের দিকে নজর দিলে হবে। আমরা’ও আছি।আমাদের দিকে একটু নজর দাও।আয়াতে’র কথা শুনে রজনী মাথা তুলে,আয়াতে’র দিকে তাকালো।শান্ত হয়ে বলল।
–তোরা যে,আজকে আসবি!এটা আমাকে জানাসনি তো”?
–তোমার বাবা-মা আজকে,আমাদের বাসায় আসবে।এটা তোমার বাবা-মা ও’ জানতো না।আমিই সকালে তোমার বাবা মাকে ডেকে পাঠিয়েছি।তোমাদের সবাই’কে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা জানানোর আছে।সফিউল চৌধুরী’র কথায় পুরো ড্রয়িং রুম স্তব্ধ হয়ে গেল।সবাই আগ্রহ নিয়ে,সফিউল চৌধুরী’র দিকে তাকিয়ে আছে।নিরবতা ভেঙে সফিউল চৌধুরী বলল।
–অনেক মনমালিন্য হয়েছে।আমার আবরার আর রজনী’কে এক করে দিয়ে,আমরা সবাই যেমন এক হয়েছি।তেমনই আব্রাহাম আর আয়াত’কে এক করে দিয়ে,আমাদের সম্পর্ক’টা আরো একটু শক্ত করতে চাই।আপনারা কি বলছেন?সফিউল চৌধুরীর কথায় আয়াতে’র মায়ের অধরের কোণে আচমকা হাসি ফুটে উঠলো।আজাদ শিকদার শান্ত হয়ে বসে আছে।আব্রাহামে’র মায়ের মুখ অটোমেটিক কালো হয়ে গিয়েছে।উনার মুখ দেখেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।সফিউল চৌধুরীর সিদ্ধান্তে তিনি নারাজ।অগ্নি দৃষ্টিতে স্বামীর দিকে তাকিয়ে আছে।আয়াতে’র কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে,এত সহজে আব্রাহাম’কে পেয়ে যাবে।সে,কোনোদিন কল্পনা-ও করতে পারে নাই।সবার ভাবনার মাঝে,আজাদ শিকদার বলল।
–ছেলে-মেয়ে রাজি সেখানে আমরা কি করতে পারি।ওরা দু’জন দু’জনকে ভালোবাসে,না মেনে নিয়ে কথায় যাব।আমরা না মানতে চাইলে-ও আমাদের মানতে হবে।কারন সংসার ওরা করবে।আর ওদের যথেষ্ট বয়স হয়েছে।সঠিক ভুল বোঝার ক্ষমতা হয়েছে।আপনার কাছে মেয়ে দিলে,মেয়ে আমার খারাপ থাকবে না।এটা আমার বিশ্বাস আছে।আজাদ শিকদারের কথায়,
সফিউল চৌধুরী সন্তুষ্ট হয়েছে।তা’ উনার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।সফিউল চৌধুরী হাসি বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারলো না।আব্রাহামে’র মা মুহুর্তের মধ্যে সফিউল চৌধুরীর হাসি কেঁড়ে নিল।ড্রয়িং রুমে,তার কড়া কণ্ঠে ভেসে উঠলো।
–আমি আমার ছেলের সাথে আয়াতে’র বিয়ে কিছুতেই দিব না।আমি আমার ছেলের জন্য মেয়ে ঠিক করে রেখেছি।আয়াতে’র ব্যবহার’টা ও খুব একটা ভালো না।মেয়েটা মুখের ওপরে খুব চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলতে পারে।আমার সাথে সেদিন খুব বাজে ব্যবহার করেছে।তাছাড়া আমি আব্রাহামে’র জন্য আমার বোনের মেয়েকে পছন্দ করে রেখেছি।আব্রাহামে’র বিয়ে তার সাথেই হবে।আব্রাহামে’র মায়ের কথায় সবার মুখে আঁধার ঘনিয়ে এলো।সফিউল চৌধুরী স্ত্রীর দিকে গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে আছে।স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে গর্জন করে উঠলো।
–তোমার সাহস কম না।আমার বাড়িতে থেকে,আমার সিদ্ধান্তে’র ওপরে কথা বলো।তোমাকে এত সাহস কে দিয়েছে।আবরার যখন রজনী’র কথা বলল।তখন এক কথায় রাজি হয়ে গেলে।আমার আব্রাহামে’র বেলায় এত অনিহা কেনো?স্বামীর গর্জনে চুপসে গেলেন সায়েলী চৌধুরী।ভয়ে নিজের দৃষ্টি নত করে দিল।তিনি স্বামীর ব্যবহারে প্রচন্ড অবাক।একরাতের ব্যবধানে স্বামীর এরূপ পরিবর্তন তাকে খুবই ভাবাচ্ছে।আজাদ শিকদার বলল।
–ভাই আপনি চিৎকার করবেন না।আব্রাহাম ভাবির ছেলে, আব্রাহাম’কে নিয়ে ভাবি-ও আশা থাকতে পারে।ভাবির যদি অমত থাকে,তাহলে আমরা আয়াত’কে আপনাদের হাতে তুলে দিতে পারবো না।আমাদের মেয়ে এতটা ফেলনা না।আপনারা সময় নিন।ভেবে দেখুন কি করবেন।তারপরে না হয় আবার আমাদের ডাকবেন।আজাদ শিকদারের কথায় সায়েলী চৌধুরী দৃষ্টি নত করে বলল।
–ক্ষমা করবেন।আমি আসলে এভাবে বলতে চাই নাই।সেদিন আয়াত আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিল।তাই ওর ওপরে রাগ করে এসব কথা বলেছি।
–দেখেন ভাবি।আমার মেয়ে অকারনে কাউকে কিছু বলে না।আপনি হয়তো আয়াত’কে এমন কিছু বলেছেন।তার জন্য আয়াত আপনার সাথে বেয়াদবি করতে বাধ্য হয়েছে।বড়দের অসন্মান করবে।এমন শিক্ষা আমি আমার মেয়েকে দেই নাই।
–আপনার মেয়েকে কতদিন-ই বা আপনার কাছে ছিল।বুঝ হওয়া বয়স থেকেই আমার আব্রাহামের কাছে আছে।
–আপনার ছেলে জোর করে আমার মেয়েকে আঁটকে রেখেছিল আমার মেয়ে,কিন্তু আপনার ছেলের কাছে জোর করেছিল না।
–আচ্ছা ভাই আগের কথা বাদ দেন।পুরোনো সবকিছু ভুলে, নতুন করে সবকিছু তৈরি করতে চাই।সায়েলী চৌধুরীর কথা শুনে সফিউল চৌধুরী বলে উঠলো।
–যাক অবশেষে তোমার মাথায় একটু বুদ্ধি হয়েছে।এবার আমরা আসল কথায় আসি?সফিউল চৌধুরীর কথা শুনে, আজাদ শিকদার বলল।
–দেখেন ভাই।কয়দিন আগেই এক মেয়ের বিয়ে দিলাম।এখনই আবার আরেক মেয়ের বিয়ে,বিষয়’টা একটু কঠিন হয়ে যায়।তাই বল ছিলাম কি আমাদের যদি একটু সময় দিতেন।আজাদ শিকদারের কথা শুনে,
সফিউল চৌধুরী হেসে বলল।
–আপনি সময় চাইছেন।আমি আপনাকে একমাস সময় দিব।এর থেকে বেশি সময় দিতে পারবো না।যা করার এই এক মাসের মধ্যে করতে হবে।এর মধ্যে ছেলে-মেয়ে দু’টো স্বাভাবিক হয়ে নিবে।একে অপরকে আরো ভালোভাবে জানবে।সফিউল চৌধুরীর কথায়,আজাদ শিকদার খুশি হয়ে বলল।
–আপনি আমার কথা ভেবে আমাকে এক মাস সময় দিয়েছেন।এটাই আমার কাছে অনেক।তাহলে সব মিলিয়ে কি কথা থাকছে।
–আগামী মাসে আয়াত আর আব্রাহামে’র বিয়ে।সফিউল চৌধুরী’র কথায় সবার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।আয়াতে’র চোখ দিয়ে,দু’ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।নিজের আনন্দ টুকু আব্রাহামে’র সাথে ভাগ করে নিতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু বড়দের সামনে থেকে বেড়িয়ে গেলে,সবাই কি মনে করবে।লজ্জায় এক কোণে চুপ করে বসে রইলো।আয়াত’ই মনে হয় প্রথম মেয়ে,যে তার সামনে তারই বিয়ের কথা বলছে।রজনী আয়াত আর আব্রাহামে’র বিয়ের কথা শুনে,মুখ কালো করে ফেলল।আবরারের চোখে ধরা দিয়েছে তৃপ্তির অশ্রু।এতদিন যে,অপরাধ বোধে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছিলো।আর কিছু দিন পরে,সেই অপরাধ বোধের সমাপ্তি হতে চলেছে।আবরার’ কে দেখে মনে হচ্ছে,
আয়াত আর আব্রাহামে’র বিয়ের কথা শুনে,সবথেকে বেশি খুশি সে হয়েছে।আয়াতে’র পাশে এসে আয়াত’কে লজ্জা দিতে শুরু করল।
–কেমন মেয়ে তুমি লজ্জা সরম নেই।নিজের বিয়ের কথা বসে বসে শুনছো।আমার তো মনে হচ্ছে,আমি আগে বিয়ে করে ভুল করেছি।আগে তোমাকেই বিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিল।
–আগে থেকেই যখন জানতেন।তাহলে আলাদা করলেন কেনো?আমাদের বিয়ে দিয়ে,তারপর না হয় আপনি বিয়ে করতেন।আমাদের রেখে একা একা বিয়ে করে নিলেন, আপনার লজ্জা করল না।আয়াতে’র কথা শুনে আবরার থ মেরে গেল।অবাক নয়নে আয়াতে’র দিকে তাকিয়ে আছে।আবরার গম্ভীর হয়ে বলল।
–সম্পর্কে তোমার বড় ভাসুর হই।সন্মান দিয়ে কথা বলো মেয়ে!আবরারের কথায় আয়াত আর কোনো উত্তর করল না।এখন আবরারের কথায় উত্তর করলে,
প্রয়োজনের তুলনায় সত্যি অনেক বড় বেয়াদবি হয়ে যাবে।আয়াত’কে চুপ থাকতে দেখে আবরার হেসে চলে গেল।রজনী উঠে এসে আয়াতে’র হাত ধরে,তার মাকে উদ্দেশ্য করে বলল।
–আম্মু তোমরা বড়রা কথা বলো।আমি আয়াত’কে নিয়ে আমার রুমে যাই।বলেই আয়াত’কে নিয়ে নিজের রুমে আসলো।নিজের রুমে এসে বলল।
–তুই আব্রাহাম’কে বিয়ে করবি না।বাসায় গিয়ে বাবা’কে বলবি?তুমি আব্রাহাম’কে বিয়ে করতে পারবি না।বোনের কথায় অবাক হয়ে বোনের দিকে তাকায় আয়াত।গম্ভীর হয়ে বলল।
–আমি কেনো বিয়েতে না করবো।তুমি সবকিছু জানার পরে-ও এমন কথা বলছো কেনো?
–তোর না সবকিছু মনে নেই।তাহলে তুই কেনো আব্রাহাম’কে বিয়ে করতে যাবি।
–আপু তুমি ভুলে যাচ্ছো।আমি আব্রাহাম’কে জোর করে বিয়ে করছি না।বাবা-মায়ের ইচ্ছাস বিয়ে করছি।যেখানে বাবা মায়ের কোনো সমস্যা নেই।সেখানে তোমার সমস্যা কোথায়?
–আমার সমস্যা আছে।তুই বলতে না পারলে,আমাকে বলে দে!আমি বাবা-মাকে বুঝিয়ে বলবো।
–আমি তো আব্রাহাম’কেই বিয়ে করবো।
–তুই আমার কথা শুনবি না।
–আপু তোমার সমস্যা কি বলো তো’।নাকি বোনের ভালো তোমার সহ্য হচ্ছে না।
–আয়াত তুই আমাকে ভুল বুঝছিস।আমি তোকে বিয়ে করতে না করছি।এর যথেষ্ট কারন আছে।তুই আব্রাহামে’র সম্পর্কে সবকিছু জানিস না।আব্রাহামে’র সম্পর্কে অনেক কিছু জানার আছে।আব্রাহামে’র সবকিছু জানলে,তুই আর আব্রাহাম’কে বিয়ে করতে চাইবি না।
–সে,যেমনই হোক না কেনো?সে,তো আমার-ই আপু।
–আবেগের বশে এ-সব কথা বলছিস।আব্রাহামে’র সত্যি’টা জানলে,আব্রাহামে’র থেকে তোর রুচি উঠে যাবে।
–আব্রাহাম যদি দুই বাচ্চার বাবা’ও হয়ে থাকে।তবু-ও তার ওপরে থেকে আমার রুচি উঠবে না।তাই আমাকে ভুল ভাল বুঝিয়ে লাভ নেই।আমার ভালোবাসা এতটা ঠুনকো না।যে,হালকা বাতাসে ভেঙে যাবে।
–আয়াত তুই কি জানিস আব্রাহাম..রজনীর কথা শেষ হবার আগেই আয়াত রজনী’কে থামিয়ে দিয়ে বলল।
–তুমি যেটা বলতে চাইছো।সেটা আমি জানি।তাই নতুন করে বলার দরকার নেই।এমন কোনো কাজ করো না।যেনো আমি তোমাকে ঘৃণা করতে বাধ্য করি।আয়াতে’র কথা শেষ হবার সাথে আবরার পেছনে থেকে বলল।
–কিভাবে ভালোবাসতে হয়।সেটা ছোট বোনের থেকে শিখো রজনী।আব্রাহাম’কে মাঝে মাঝে আমার প্রচুর হিংসা হয়।আমি কেনো আয়াতে’র মতো একটা মানুষ পেলাম না। আবরারের কথা শুনে,রজনী আবরারের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকালো।আবরার রজনী’র দৃষ্টি উপেক্ষা করে আয়াত’কে উদ্দেশ্য করে বলল।
–আব্রাহাম আজকে বাড়িতে আছে।এখনো ঘুম থেকে উঠে নাই।আয়াত যাও গিয়ে আব্রাহাম’কে ডেকে তুলো।বাড়িতে বড়রা এসেছে।আর ও তাদের সাথে দেখা না কর পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে।আয়াত কোনো কথা বলল না।বোনের সাথে তর্ক করে এমনিতেই মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছে।আব্রাহাম’কে গিয়ে বিরক্ত করলে,একটু শান্তি লাগতে পারে।তাই যেই ভাবা সেই কাজ।আস্তে করে,
সবার চোখের আড়ালে আব্রাহামে’র রুমে প্রবেশ করলো।আব্রাহাম গভীর নিদ্রায় আছন্ন।সামনের চুলগুলো কপালে এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে।আয়াতে’র আব্রাহাম’কে বিরক্ত করতে ইচ্ছে করলো না।কিন্তু আব্রাহামে’র শান্তি ঘুম কেনো জানি আয়াতে’র সহ্য হলো না।টেবিলে থাকা পানির গ্লাসটা হাতে তুলে নিল।কোনোকিছু না ভেবে পানি আব্রাহামে’র মুখে ছুঁড়ে মারলো।আচমকা ঠান্ডা পানি মুখের ওপরে পড়ায় ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো আব্রাহাম।রেগে কিছু বলতে যাবে।তার আগেই আয়াত’কে হাসতে দেখে থেমে গেল।দু-চোখ লাল হয়ে আছে।আয়াত আব্রাহামে’র রাগী মুখের দিকে তাকিয়ে হাসছে।
চলবে…..#সে_আমার_মানসিক_শান্তি
#পর্ব_১৫
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
গভীর ভাবে আয়াত’কে পর্যবেক্ষণ করছে আব্রাহাম।ঘুমের রেশ ভালোভাবে কাটিয়ে,উঠে বসলো।মুখ’টা গম্ভীর করে রেখেছে।ঘুম না হবার দরুনে চোখ দু’টো লাল হয়ে আছে।আয়াত’কে হাসতে দেখে বলল।
–তুমি এখানে কি করছো?তোমার বাবা মা জানে,তুমি এখানে এসেছো?বলল আব্রাহাম।
–হ্যাঁ আমার বাবা মা জানে,উনারা’ও আমার সাথে এসেছেন।তোমার বাবা আমাদের সবাই’কে ডেকেছেন।তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও।আজকে সারাদিন আমাকে নিয়ে ঘুরবে।বলল আয়াত।
–অদ্ভুত মেয়ে তুমি!কিছুদিন আগেই আমাকে চিনতে পারছিলে না।এখন সোজা আমার রুমে এসে,আমাকে বিরক্ত করতে শুরু করে দিয়েছো?
–তোমাকে বিরক্ত করার জন্যই আয়াত,তোমার জীবনে এসেছে।এখন থেকে সারাজীবন তোমাকে,বিরক্ত করবো।ভাবতেই খুশি লাগছে।আয়াত নামের, বিরক্তিকর রমনী!আব্রাহাম নামের শান্তশিষ্ট এক যুবকে বিরক্ত করার জন্য বিয়ে করছে।বলেই হেসে উঠলো।আব্রাহাম সিগ্ধ নয়নে আয়াতে’র দিকে তাকিয়ে আছে।এই মেয়েটা’র হাসি মুখের দিকে,তাকালে’ই তো’ তার সব দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যায়।এই হাসি মাখা মুখখানা’ই সে দিন শেষে দেখতে চেয়েছিল।যার মুখের হাসি তার ভালো থাকার অভ্যাস।সে কি করে এই মেয়ে’টা কষ্ট দিবে।ভাবতেই হৃদস্পন্দনের গতি বেগে বেড়ে গেল।ধীর গতিতে কাঁপছে বুকের ভেতর’টা।কথা গুলো’ও আজ পালিয়ে গিয়েছে।মুখ দিয়ে একটা শব্দ’ও বের হচ্ছে না।আব্রাহাম’কে চিন্তা করতে দেখে বলল।
–কিছু চিন্তা বাকি জীবনে’র জন্য রেখে দেন ডাক্তার সাহেব।আপনাকে ভবিষ্যতে আরো চিন্তা করতে হবে।আপনি কি জানেন,নিচে আপনার আর আমার বিয়ের কথা চলছে। আয়াতের কথা শুনে,আব্রাহামের বুকের মধ্যে ধক করে উঠলো।না চাইতে-ও অপরাধ বোধ তিলে তিলে,শেষ করে দিচ্ছে।নিজেকে বড্ড স্বার্থপর মনে হচ্ছে,শুধুমাত্র নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য,
সে একটা মেয়ের তিলে তিলে গড়ে তোলা স্বপ্ন’কে এক দিনের ব্যবধানে শেষ করে দিবে।নিজের ভাবনা’কে দূর সরিয়ে রেখে বলল।
–তোমার বাবা মা কি নিচে আছে?
–হ্যাঁ সবাই আছে।তুমি যাও।গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো।তারপর খেয়ে দু’জন ঘুরতে যাব।
–আমি কোথাও যেতে পারবো না।আমার হসপিটালে যেতে হবে।
–এই একটা হয়েছে ডক্টর সাহেব।সারাদিন খালি হসপিটাল আর রোগী।আরে ভাই ডক্টর ছাড়া,তোমার আরো একটা পরিচয় আছে।তুমি একজন মানুষ।তোমার পরিবার আছে।তাদেরকে-ও সময় দিতে হবে নাকি।তাছাড়া আজকে তোমার দিনে ডিউটি নেই।রাতে আছে।তাহলে এত অজুহাত দেখাচ্ছো কেনো?তুমি কি কোনো ভাবে আমাকে ইগনোর করছো?
–তোমাকে ইগনোর করার মতো দুঃসাহস আমার আছে নাকি। তুমি বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেল।একটু পরে ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় বসলো।আব্রাহাম’কে বসে থাকতে দেখে আয়াত বলল।
–খাবে না?
–নিচে সবাই বসে আছে।এত মানুষের মধ্যে গিয়ে কি করে খাব।তুমি তো ভালো করেই জানো।বেশি মানুষের মধ্যে খেতে আমার খুব অস্বস্তি হয়।তুমি নিচে গিয়ে খাবার এনে দিবে।
–তোমার বাসায় আমি কিভাবে খাবার এনে দিব।আচ্ছা তুমি অপেক্ষা করো।আমি আপুকে গিয়ে বলছি।বলেই আয়াত চলে গেল।
বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে,বস্তির রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে মারিয়া।উত্তপ্ত রোদ মারিয়া’কে বেশ বিরক্ত করে যাচ্ছে।তা’ মারিয়া’র কপালে’র ভাজ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।হাঁটতে হাঁটতে বস্তির ছোট একটা ঘরে এসে পৌঁছালো মারিয়া।আকাশ বিছানায় শুইয়ে শুইয়ে ফোনে স্ক্রল করছিল।মারিয়া বিরক্ত হয়ে,বাজারে ব্যাগ গুলো বিছানার ওপরে রাখলো।তা দেখে আকাশ রেগে বলল।
–বাজার গুলো বিছানায় রাখছো কেনো?বাজার কি বিছানায় রাখার জিনিস নাকি?
–তাহলে তুমি ছেলে মানুষ হয়ে,বউকে দিয়ে বাজার করাও কেনো?বাজার করা কি মেয়েদের কাজ?
–কেনো মেয়ে মানুষ বাজার করলে কি জাত যাবে?
–কাপুরুষ একটা!বউকে দিয়ে চাকরি করাও।বউকে দিয়ে বাজার করাও।সংসারে’র সব কাজ আমি করি?আর তুমি বসে বসে খাও।একটা চাকরির ব্যবস্থা করলে-ও তো পারো।
–মারিয়া আমাকে রাগাবে না কিন্তু,মুখের ভাষা সংযত করে কথা বলো।
–তোমার সাথে আমার আর ভালো ব্যবহার আসে না।তুমি কোনো কাজ করবে না।আমি তোমার সাথে ভালো ব্যবহার করবো।এখন বুঝতে পারছি।বাবা-মায়ের সাথে কেনো তোমার পড়ে না।আজকে একটা শেষ কথা বলে দিচ্ছি।হয় তুমি কাজ করবে,না হলে আমি এই সংসার ছাড়তে বাধ্য হবো।বলেই বাজারের ব্যাগ গুলো হাতে নিয়ে রান্না ঘরে চলে গেল।আকাশ উঠে মারিয়া’র যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
পার্কের গাছের নিচে বসে আছে আয়াত ও আব্রাহাম।পনেরো মিনিট হলো দু’জন এখানে এসে বসে আছে।কেউ একটা কথা ‘ও মুখ দিয়ে বের করে নাই।আয়াত গম্ভীর হয়ে আব্রাহাম’কে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল।
–তুমি আর আগের মতো নেই আব্রাহাম।কেমন জানি হয়ে গিয়েছো।আমার সাথে বসে থাকতে বিরক্ত লাগছে?আয়াতে’র কথা শুনে শান্ত দৃষ্টিতে আয়াতে’র দিকে তাকালো আব্রাহাম।আব্রাহাম’কে তাকিয়ে থাকতে দেখে,আয়াত মলিন হাসলো।আয়াতে’র মলিন মুখখানা দেখে,আব্রাহামে’র ভেতরে ঝড় বয়ে যাচ্ছে।নিজেকে যথেষ্ট শান্ত রাখার চেষ্টা করছে।নিরবতা ভেঙে আয়াত আবার বলে উঠলো।
–জানো আব্রাহাম মানুষ যেটা খুব সহজে পেয়ে যায়।সেটার মূল্য’ও কমে যায়।সেটা প্রতি আর আগ্রহ থাকে না।ওরা ভাবে,না চাইতে-ও পেয়ে গিয়েছি।মূল্যায়ন করে আর কি হবে।মূল্য দিলে-ও আমার থাকবে।না দিলে-ও আমার থাকবে।তাদের অবহেলা পেতে পেতে,মানুষ’টা কখন যে,তাকে মন থেকে তুলে দেয়।আস্তে আস্তে তার থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করে,সেটা অবহেলা করতে করতে মানুষ’টা বুঝতে পারে না।যখন কাছের মানুষ গুলো দূরে সরে যায়।তখন মানুষ’টার গুরুত্ব।মানুষ’টার উপস্থিতি।মানুষ’টার প্রয়োজন,তার জীবনে কতটুকু।সেটা হারিয়ে যাবার পরে, উপলব্ধি করতে পারে।হারিয়ে যাবার পরে,উপলব্ধি করে,কোনো লাভ নেই।কারন একবার যে,জিনিস হারিয়ে যায়।তা বারবার ফিরে আসে না।পাওয়ার আগে আর হারনোর পরে,সবাই মূল্য’টা বুঝে।তখন বুঝে লাভ নেই।কারন তার জীবন থেকে যতটুকু হারানোর দরকার ছিল।তা হারিয়ে গিয়েছে।যার ভাগ্য খুব ভালো।সে’ একমাত্র হারানো জিনিস খুঁজে পায়।সবাই কিন্তু হারানো জিনিস খুঁজে পায় না।যদি কখনো হারানো জিনিস খুঁজে পাও।তাহলে তার মূল্যায়ন করতে শিখো আব্রাহাম।
–কথা গুলো আমাকে বললে?বলেই আয়াতে’র দিকে তাকালো।আয়াতে’র দু-চোখ বেয়ে অশ্রুকণা গুলো গড়িয়ে পড়ছে।যে মেয়ে’টা সামান্য ব্যথা পেলে,চিৎকার করে পুরো হসপিটাল মাথায় তুলে ফেলতো।সেই মেয়ে’টা এত কষ্ট মনের মধ্যে চেপে রেখে,এতটা শক্ত হয়ে কথা গুলো বলছে কি করে? বিষয়’টা খুব করে ভাবাচ্ছে।আব্রাহাম তার মাকে দেখতো।তার মা তার বাবার ছোট ছোট করায় রাগ করতো।কথায় কথায় কান্না করতো।কিন্তু যখন জীবনের কঠিন সময় চলে এলো।তখন তার মাকে হেসে পার করে দিতে দেখছে।আসলে মেয়েরা কথায় কথায় কান্না করে,প্রিয় মানুষটা’র ওপরে অকারনে রাগ করে,কাছের মানুষ গুলোর সাথে অভিমান করে,কিন্তু যখন জীবনের কঠিন সময় আসে।কথায় কথায় কান্না করা মেয়েটা’ও জীবনে’র কঠিন সময়’টাকে হেসে পারে দেয়।আয়াত আগের ন্যায় শক্ত হয়ে বসে আছে।এক হাতে চোখের পানি মুছে,শান্ত গলায় বলল।
–না তোমাকে বলি নাই।এখানে পুকুর আছে।গাছপালা আছে।সবুজ ঘাস আছে।আমি তাদের বলছি।এখানে আমার কথা শোনার মতো,তাদের ছাড়া আর কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।
–আয়াত তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।আমি কেনো এমন করছি।সেটা তুমি যদি জানতে,তাহলে আমাকে এমন কথা কখনো শোনাতে না।
–তুমি কখনো আমাকে জানিয়েছো।আমার ছোট ছোট সমস্যা’র কথা গুলো’ও আমি তোমাকে জানিয়েছি।একটা কথা কি জানো।তুমি আসলে আমাকে কোনোদিন ভালোই বাসো নাই।যদি আমাকে ভালোবাসতে তাহলে,কখনো আমার থেকে কোনো কিছু আড়াল করতে না।
–তুমি আমার ওপরে এভাবে রেগে যাচ্ছো কেনো?
–আমি তোমার থেকে আগের মতো ভালোবাসা পাচ্ছি না আব্রাহাম।আগে তোমার প্রতিটি কথায় ভালোবাসা খুঁজে পেতাম।তোমার প্রতিটি কথায় ভালোবাসার ছোঁয়া লেগে থাকতো।তোমার কথা গুলো আমাকে শান্তি দিত।এখন ভালোবাসা তো’ দূর মানসিক শান্তিই খুঁজে পাই না।তুমি আমার থেকে কেমন জানি,পালিয়ে পালিয়ে বেড়াও।তোমার চোখ দু’টো যখনই আমাকে দেখে,তখনই আমার থেকে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে।এমন ভাব করো।আমার থেকে দূরে থাকতে পারলে ভালো থাকবে।এখনো সময় আছে।বিয়ে’টা ভেঙে দিতে পারো।কারন যার কাছে মন বসবে না।তার সাথে তুমি কিভাবে সংসার করবে।
–আয়াত এমন কিছুই না।তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।তুমি যদি আমাকে বলো,তোমাকে পেতে হলে,আমাকে পুরো পৃথিবী ছাড়তে হবে,তাহলে তোমার জন্য আমি পুরো পৃথিবী ছেড়ে দিব।তবু-ও আমার তোমাকেই লাগবে।
–আমি তোমাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলছি।তাই তোমার কাছে গুরুত্বহীন হয়ে গিয়েছি।তুমি আমার সাথে যেমন’টা করছো।আমি’ও তোমার সাথে কিছুদিন তেমন করি।দেখি তোমার সহ্য ক্ষমতা কেমন।আমার নিজের প্রতি নিজের খুব রাগ হচ্ছে,একটা ছেলের জন্য নিজেকে কতটা নিচে নামিয়ে ফেলছি।সে,আমাকে গুরুত্ব দিতে চায় না।আর আমি জোর করে,তার থেকে গুরুত্ব আদায় করতে নেমেছি।আমি জীবনে কত ছেলেকে ইগনোর করেছি।আমার জন্য হাজার হাজার না হলে-ও কিছু সংখ্যক ছেলে,পাগল ছিল।আমি তাদের গুরুত্ব না দিয়ে,তোমাকে গুরুত্ব দিয়েছি।আর তুমি আমাকে গুরুত্বহীন বানিয়ে দিলে,আসলে দিনশেষে আমরা সবাই কারো না কারো কাছে বাঁধা।সে যতই অবহেলা করুন না কেনো।আমরা তার থেকে ভালোবাসা পাবার জন্য আকুল হয়ে উঠি।
–আয়াত আমি যদি কখনো তোমার সাথে বেইমানী করি।তাহলে তুমি কি আমাকে ভালোবাসবে।নাকি ঘৃণা করবে?
–যাকে ভালোবাসা যায়।তাকে কখনো ঘৃণা করা যায় না।ভালোবাতে পারবো কি না জানিনা।তবে মন থেকে বের হয়ে যাবে।ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাস উঠে যাবে।আর কখনো কাউকে বিশ্বাস করতে পারবো না।সবার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিব।চার দেওয়ালে’র আবদ্ধ ঘরে নিজেকে বন্দী করে ফেলব।কারন এই শহরের মানুষ গুলো,সাপের চেয়ে’ও বেশি বিষাক্ত।গিরগিটি বিলুপ্তের কারন কি জানো?আমার মনে হয় মানুষের বহু রুপ দেখে,গিরগিটি’ও ভয়ে পালিয়েছে।মানুষ গিরগিটি’র থেকে-ও বেশি রঙ বদলায়।আয়াতে’র কথা শুনে, আব্রাহাম মাথা নিচু করে ফেলল।চোখ দু’টো লাল হয়ে উঠেছে ইতিমধ্যে।ভেতরে হাহাকার পড়ে গিয়েছে।
আবরার গাড়ি চালিয়ে হসপিটালের দিকে যাচ্ছিলো।ফুলের দোকানের সামনে চেনা মুখ দেখে দ্রুত গাড়ি থেকে নামলো।হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে,রাস্তা আশেপাশে না দেখে,রাস্তার মাঝখানে দিয়ে দৌড়ে দিল।উদ্দেশ্য মানুষ’টার কাছে পৌঁছনো।সবাই আবরার’কে কথা শোনাচ্ছে,কেউ কেউ পাগল বলে উপাধি দিচ্ছে,একবার একটা গাড়ির সামনে বেঁধে’ও গিয়েছিল।তবু-ও হাল ছাড়ে নাই।দৌড়ের গতি কামিয়ে দিয়ে ধীর গতিতে মানুষ’টার কাছে যাওয়া’র চেষ্টা করছে।দু-চোখ ভরে এসেছে আবরারে’র।এবার আব্রাহামে’র কষ্ট কিছু’টা কমবে।মানুষ’টার কাছে পৌঁছনোর আগেই একটা গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে গেল আবরার।
চলবে…..
(