#সে-কে-ছিলো
সিজন টু
পর্ব ৬শেষ
#সমুদ্রিত সুমি
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষের মুখটা দেখে সবার যেন পুরো পৃথিবী উল্টো গেছে। ভাবনার জগৎ শূন্য লাগছে । ভেঙে গেছে সব রক্তের সম্পর্ক।রনি যখন নিজের মুখ থেকে কালো কাপড় সরিয়ে সবার সামনে দাঁড়ালো, সব বিশ্বাস ভরসা ভেঙে গুড়িয়ে যাচ্ছিলো তখন।নিজের ছেলের এতো বড় অপরাধ যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মিজান। তাই সে মাটিতে বসে পড়লেন। অসহায় হয়ে চেয়ে রইলো রুনা বেগম। তাঁর মেয়ের সাথে অন্যায় কিনা তাদের আপন মানুষগুলো করেছে।এতো কষ্ট কেন তাঁর মেয়েকে দেওয়া হলো। কোন অপরাধের শাস্তি এসব ভেবেই সে রনির কলার চেপে ধরে বললো।
তুই, তুই করেছিস এ-সব। তুই আমার মেয়েকে অপহরন করেছিস।এই তোর বিবেকে বাঁধেনি।এই মনি তো তোর বোন হয়।তুই কি করে ওর সাথে এতো বড় অন্যায় করতে পারলি।এই তোর ভয় হয়নি।আমার তো মনে হচ্ছে দুই বছর আগের ওই ঘটনা সজল বা সিয়াম না তুই ঘটিয়েছিস।
ভাবি আপনি কি বলছেন।
তুমি কোন কথা বলবে না মিজান।আমার ভাবতেই ঘৃণা লাগছে আমি জেনেশুনে আমার মেয়েকে অজগরের গুহায় মানুষ করছিলাম।যাঁরা আমার মেয়েকে খুন করতেও পিছুপা হয়নি।ভাগ্য ভালো বলে আমার মেয়ে বেঁচে আছে। এখন আবার কেন অপহরণ করলি।সম্পত্তির জন্য, নাকি তোর বাবা-র প্রতিশোধ তুই নিচ্ছিস।আমার ভাবতেই বুকটা ভারি হয়ে আসছে রনি।তোকে আমি কম ভালোবেসেছি।কখনো আমি তোকে মনির থেকে কম ভাবিনি আর তুই কিনা।
রুনা বেগম কথা গুলো বলেই কেঁদে দিলেন।এতো কিছু দেখার পর তাঁর আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করছে না।রুনা বেগম থামতেই নিয়াজ এগিয়ে গিয়ে রনির সামনে দাঁড়ালো। তার-ও অনেক প্রশ্নের উত্তর জানা বাকি।সে এগিয়ে গিয়ে বললো।
আমি কিছু বলবো না তোমায়, শুধু বলবো।কেন এগুলো করেছো।কি কারণ তাঁর ।ও তোমার ছোট বোন ছিলো,কি করে পারলে এগুলো করতে। উত্তর দাও রনি উত্তর দাও। অনেক প্রশ্ন করার পরেও রনি কোন ভাবে মুখ খুলেনি।সে চুপ করে সবার পরিস্থিতি দেখছে।কতক্ষন চুপ থেকে বলে উঠলো।
আমার কাছে গল্পের এক অংশ আছে বাকি দুই অংশ আপনার মায়ের কাছে।হঠাৎ রনির মুখে নিজের মায়ের কথা শুনে নিয়াজ যেন চমকে উঠলো।কিন্তু নিজেকে সামলে বললো।
নিজের দোষ ঢাকতে এখন আমার মায়ের নাম নিচ্ছো।
হাঁসালে নিয়াজ। তুমি ভুলে গেছো,আমিই তোমাকে এখানের ঠিকানা দিয়েছি। আমিই ওই মেসেজ গুলো পাঠিয়ে তোমায় সাবধান করেছি।তাহলে এটা মনে হলো কেন, নিজের দোষ ঢাকতে এখন আমি তোমার মায়ের নামে মিথ্যা বলছি।এই গল্পের লেখক এবং পরিচালক তোমার মা।আমরা শুধু অভিনয় করেছি,এই যা।আমরা বলছি কেন আমি শুধু। আর সবাই জানেও না তাঁরা কি করছে বা করেছে। নিয়াজের মাথা ঘুরতে শুরু করলো। সে যেন কিছু বুঝে উঠতে পারছে না।তাই চোখ মুখ ডলে পিছন ফিরে নিজের মায়ের দিকে তাকালো।সবার নজর বন্দী এখন নয়ন বেগম। কিন্তু সে, সে কি ভাবছে বা করছে।নিয়াজ কিছু প্রশ্ন করতে চেয়েও যেন পারছে না।তাঁর বিবেক বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ নয়ন বেগম সবাইকে অবাক করে দিয়ে বলতে রইলেন
হ্যা নিয়াজ এই গল্প আমার তৈরি। এই গল্পের পরিচালকও আমি।কিন্তু আসলে কি জানো এই গল্পের মেন অপরাধী হচ্ছে মনির বাবা মতি।হ্যা হ্যা মতি,আর হচ্ছে মিজান।ওদের জন্য আজ আমার এই অবস্থা। কি করে ভুলে যাবো আমার সাথে ঘটা অন্যায় গুলো।কি করে ভুলে যাবো আমার সাথে করা বেঈমানী গুলো।কি করে ভুলে যাবো কারো দেওয়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতি গুলো। তোমার বাবাকে আমি কোন দিনও ভালোবাসিনি।শুধু দায়িত্ব এবং বাবাকে দেওয়া কথা রাখতেই তাঁর সাথে সংসার করা।আমিও মেনে নিয়েছিলাম সব।গুছিয়ে নিয়েছিলাম আমার সংসার।তোমার বাবাকে আমি ভালো না বাসলেও কখনো আমি তাঁকে ঘৃণা করতে পারিনি।কেন তাঁর কোন কারণ আমি জানি না।এভাবে আমার দিন ভালোই কাটছিলো।কিন্তু হঠাৎ বাপের বাড়ি বেড়াতে আসলে দেখা হয়ে যায় মতি ভাইয়ের সাথে সেইবার তোমার বাবা আমার সাথে আসেনি।পুরনো সেই ক্ষত গুলো যেন জেগে উঠলো মতি ভাইকে দেখে।আমি যে তাঁকে ভুলতে পারনি।শুধুমাত্র মিজানের জন্য আমাদের আলাদা হতে হয়েছে।ওর জন্য, ওর ওই মিথ্যা মোহের জন্য আমাদের নিস্পাপ ভালোবাসাকে বলি দিতে হয়েছে। মতি ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম সেও আমাকে ভুলতে পারেনি।আর সে চায় না আমাকে ভুলতে।সেদিনের পর থেকে নতুন করে শুরু হয় আমাদের ভালোবাসা। আস্তে আস্তে আমাদের ভালোবাসা গভীর হতে থাকে।আমরা বুঝতে পারি আমরা কেউ কাউকে ছাড়া বাঁচবো না।তাই আমরা সিদ্ধান্ত নেই আমরা পালিয়ে যাবো,এবং সব ঠিকও করি।কিন্তু মাঝখান থেকে মনির জন্মই যেন আমাদের এক হওয়া থেকে আঁটকে দিলো।যেদিন মনি পৃথিবীতে এলো সেদিন মতি আমায় জানায়।সে পুরুষ একজন নারী পাশে থাকলে নিজেকে কখনোই আঁটকে রাখা সম্ভব নয়।তাই সে নিজেকে আঁটকে রাখতে পারেনি,যাঁর ফলস্বরূপ মনি।তাহলে মনির কি দোষ।দু’জনারি সংসার আছে ভালো হবে যে যাঁর জীবনে ফিরে যাওয়া। আমাদের ভাগ্যে নেই এক হওয়া তাই আর যেন আমি পিছু ফিরে না তাকাই। আরে তাঁর যদি নিজের সন্তানের প্রতি এতোটাই দরদ ছিলো তাহলে আমার সন্তানকে কেন নষ্ট করতে বলেছিলো।তাঁর সন্তান, সন্তান ছিলো আর আমার।সেদিন তাঁকে বলেছিলাম,তাহলে তুমি আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখিয়ে আমার দ্বিতীয় সন্তানকে কেন খুন করতে বললে।তখন সে বললো।সে বুঝতে পারেনি সন্তান কি,এখন সে বুঝতে পারছে তাই তাঁর অন্যায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইছে।আমি সেদিন নির্বাক ছিলাম।কিছুই বলতে পারিনি।তাই সেদিন চুপচাপ চলে এসেছিলাম।আমিও মেনে নিয়েছিলাম সব কিছু ভাগ্য বলে।কিন্তু মিজান,মিজান কি করলো।আমাকে না পাওয়ার প্রতিশোধটা নিলো আমার জীবন নষ্ট করে।আমি যখন সব ভুলে নিজেকে অতীত থেকে গুটিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাইলাম। তখন মিজান আমার স্বামীকে বলে দিলো আমি কিনা বিয়ের পর আবার নতুন করে আমার প্রাক্তনের সাথে সম্পর্ক চালিয়ে গেছি।আর সেই প্রাক্তনের সন্তান আমার গর্ভে ধারণ করেছি,লোক জানাজানির ভয়ে নাকি সেই বাচ্চা নষ্টও করেছি।নিজের নামে এমন নোংরা মিথ্যা আমি কি করে মেনে নিতাম বল তো নিয়াজ।হ্যা এটা ঠিক আমি একটা অন্যায় করতে গিয়েছিলাম,কিন্তু সেই অন্যায় থেকে তো ফিরে এসেছিলাম। তাহলে কেন আমাকে শাস্তি পেতে হলো। আর কি শাস্তি পেয়েছি জানিস।অকালে বিধবার তকমা। হ্যা বিধবার তকমা। তোর বাবা এই মিথ্যা গুলো সত্যি ভেবে আমাকে ভুল বোঝে।আমি তাঁকে সব সত্যি বললেও সে আমার কথা বিশ্বাস করেনি। তাঁকে অনেক বুঝিয়েও আমি সত্যিটা বিশ্বাস করাতে পারেনি, আর তখন নয়না আমার গর্ভে এক মাসের,তখন তোর বাবা নয়না কেও অস্বীকার করে। আমি তাঁকে অনেক বুঝিয়েও যখন বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না,তখন রাক করে বলেছিলাম হ্যা আমার গর্ভের সন্তান মতির,আর কিছু বলতে পারনি,তাঁর আগেই তোর বাবা স্টোক করে।আর আমাকে তোকে নয়না কে একা এই কঠিন দুনিয়ায় রেখে চলে যায়।তাই আমিও প্রতিশোধ নিতে চেয়েছি।আমিও সুখ পেতে চেয়েছি তাদের কষ্ট দিয়ে যাঁদের জন্য আমি কষ্টে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়েছি।আমি ভেবেছিলাম মনিকে ধর্ষণ করালে মনি সারাজীবন কষ্ট পাবে।আর সেই ধর্ষণটা যদি রনিকে দিয়ে করাতে পারি তাহলে তো কোন কথাই নেই।তাই রনিকে টাকার লোভ দেখাই।কারণ তখন রনির টাকার প্রয়োজন ছিলো।কারণ ওর প্রমিকার বিয়ে অন্য কোথাও ঠিক করেছিলো তাঁর বাবা।ওকে ওর প্রেমিকাকে নিয়ে পালাতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন।কিন্তু ওর কাছে এতো টাকা নেই।ওর বাবার কাছে চাইলেও সে দিতো না।তাই আমি ওকে একজন অচেনা মানুষ হয়ে ফোন করে বলি একটি মেয়েকে যদি ও ধর্ষণ করতে পারে তাহলে আমি ওকে টাকা দিবো।প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজি হয়।কারণ না ও, ওই মেয়ের মুখ দেখবে না ওর মুখ কেউ দেখবে।আমি লোক দিয়ে মনিকে অপহরন করাই।বাকিটা তোরা তো জানিস।পরে জানাজানি হলে রনি বুঝে যায় ওরদারা কতো বড় অন্যায় আমি করিয়েছি।আমি যখন ওকে ব্ল্যাকমেল করি। তখন আমি কে ও যেনে যায়,তাই আমাকে বলে সব কিছু সবাইকে জানিয়ে দিবে।সাথে সব কিছু সিয়াম এবং সজলের কাছে বলে দেয়।তাই আমি প্ল্যান করে ওদের দুই ভাইকে খুন করি লোক দিয়ে।আর রনিকেও মারতে চাই,কিন্তু যে গুলিটা রনির উদ্দেশ্যে ছোঁড়া হয়েছিলো সেটা মনির লাগে,ভাবলাম যাক যাঁর জন্য ছোঁড়া তাঁর না লাগলে কি হয়েছে শত্রুর গায়েই তো লেগেছে। কিন্তু মনি বেঁচে যায়।তখন আমি রনির বউ নিরাকে গুম করে দেই।আমার পরিকল্পনা ছিলো মনিকে ধর্ষণ করিয়ে রনিকে দোষী বানানো,কিন্তু তুই ওকে বিয়ে করে আমার কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালি। তবুও ভাবলাম রনিকে দোষী বানাবো এক জালে দুই পাখিকেই জব্দ করবো।কিন্তু মনি তোকে ধর্ষক ভাবতে লাগল। তাই সব কিছু সাজিয়ে তোকে নির্দোষ করে দোষী বানালাম,সজল এবং সিয়ামকে। কিন্তু তবুও যেন সেই সুখটান অনুভব করছিলাম না যেটা পাবার জন্য আমার এতো আয়োজন। তাই ভাবলাম মনির সন্তানকে কেঁড়ে নিয়ে সেই কষ্ট মনিকে দেবো যে কষ্ট মতি ভাই আমাকে দিয়েছে।তাই আমার এতো আয়োজন।
পিনপতন নীরবতা সবার মাঝে। এমন কিছু শোনার জন্য কেউ তৈরি ছিলো না।তৈরি ছিলো না নিয়াজ বা নয়নাও।তাই তারা-ও চুপ করে রইলো। নিরবতা ভেঙে নিয়াজ বলে উঠলো।
মা তোমার সাথে যা হয়েছে তা অন্যয়া,কিন্তু মনি, মনি কি করেছিলো। যাঁর জন্য এতো কিছু। মা তুমি ভুলে গেছো মনির গর্ভের সন্তান আমারও।তাই ওই সন্তানের কিছু হলে মনির মতো আমারও কষ্ট হতো।সে তুমিই ছিলে যে কিনা আমার ভালোবাসার কাছে অপরাধী বানিয়েছে।সে তুমিই ছিলে সে কিনা একজন মা মেয়ের মাঝে ভুলবোঝাবুঝি সৃষ্টি করেছিলে।সে তুমিই ছিলে যে কিনা দু’জন নিরীহ মানুষকে খুন করিয়েছে। তুমিই সে যে কিনা প্রতিশোধের আগুনে এতোটা জ্বলছিলে যে তুমি আপন পর,ভালো খারাপ সব ভুলো গেছো। তোমার চোখে আমি কোথাও অনুশোচনা দেখতে পাচ্ছি না।আমি এখনো তোমার চোখে প্রতিশোধের আগুন দেখছি।মা লোকটা তো মরে গেছে। তাঁর অন্যায়ের শাস্তি লোকটা কবরেই পাচ্ছে। তুমি এমনটা না করলেও পারতে।তুমি এমনটা না করলেও পারতে মা। কথা গুলো বলেই নিয়াজ হুইলচেয়ার অচেতন হয়ে পড়ে থাকা মনিকে বলতে রইলো।
মনি উঠো,চোখ তুলে তাকিয়ে দেখো তোমার সাথে করা অন্যয়ায় গুলো অন্য কেউ নয়।তোমার আমার আপন মানুষগুলো করেছে।মনি তাকিয়ে দেখো তোমার থেকে তোমার সন্তান কেঁড়ে নিতে চাইছে এক মা।এক মা আরেক মায়ের থেকে তাঁর সন্তান কেঁড়ে নিতে চেয়েছে। চোখ খুলে তাকাও দেখো এই নিষ্ঠুর দুনিয়াকে আর দুনিয়ার মানুষকে।কিন্তু না মনি চোখ খুললো না,মনি তাকিয়ে দেখলো না তাঁর সাথে কে করেছে অন্যায়।
ভাইয়া——
হঠাৎ নয়নার চিৎকারে নিয়াজ পিছনে তাকালেই মনির পায়ের দিকে ইশারা করলো নয়না ।নিয়াজ মনির পায়ের দিকে তাকালেই দেখতে পেলো।মনির পা বেয়ে ঝড়ে পরছে তাজা রক্ত।নিয়াজের বোধগম্য হলো না,কি হচ্ছে বা কি হতে যাচ্ছে। মনি বলেই চিৎকার দিলো।
নিয়াজ এখন কাউকে কিছু বলার সময় নেই,তুমি ওকে হাসপাতালে নিয়ে চলো।আমার মেয়েটাকে আর ওর সন্তানকে বাঁচাও নিয়াজ।
হ্যা ভাইয়া যাঁরা এই অন্যায় করেছে তাঁদের শাস্তি দিতে গিয়ে ভাবির কোন ক্ষতি করিস না।
নিয়াজ মনিকে কোলে তুলে গাড়িতে উঠলো।তারাতাড়ি গাড়ি স্টাট দিয়ে ছুটতে রইলো হাসপাতালে দিকে। স্পীড বাড়িয়ে সাই সাই বেগে ছুটছে গাড়ি। হাসপাতালে নিতেই ইমারজেন্সি O.T তে নেওয়া হলো মনিকে।দীর্ঘ এক ঘন্টা পর সবাই উপস্থিত হলো সেখানে।নিয়াজ সবাইকে দেখেও না দেখার ভান করে বসে রইলো।নয়না ভাইয়ের পাশে বসে ভাইয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করলো।প্রায় আড়াই ঘন্টা পর অপারেশন থিয়েটার থেকে একজন নার্স বেরিয়ে আসলো।নার্সকে দেখে যেন নিয়াজ বাতাসের বেগে ছুটে গেলো তাঁর কাছে।
নার্স আমার স্ত্রী, আমার মনি কেমন আছে। আমার বেবি।
সরি মিস্টার নিয়াজ, আপনার বেবিকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।আপনার স্ত্রীর অবস্থাও খারাপ। আপনার স্ত্রীকে এক নাগাড়ে কেউ কম পাওয়ারী ঘুমের ঔষধ খাইয়েছে,যাঁর জন্য আপনার বাচ্চাটা আরো দু’দিন আগেই মা-রা গেছে। আর আপনার স্ত্রীর অতিরিক্ত বিল্ডিং হচ্ছে। বলা যাচ্ছে না কি হবে।উপর আল্লাহকে ডাকুন।
নিয়াজ চুপচাপ নয়ন বেগমের কাছে গেলেন।
মা আমার সন্তান বেঁচে নেই আর মনিও বাঁচবে কিনা জানি না।তুমি খুশি তো।দোয়া করো তোমার প্রতিশোধ যেন পূর্ণ হয়।তুমি সফল মা তুমি সফল।তুমি মনির থেকে মনির সন্তান কেঁড়ে নিতে সক্ষম হয়েছো।মনির খুব জানার ইচ্ছে ছিলো।সে-কে-ছিলো।আল্লাহর কাছে প্রার্থণা ওর যেন জানা না হয়,ওর সাথে অন্যায় করা মানুষ,সে-কে-ছিলো।যদি ও জানে ওই মানুষটা তুমি, তাহলে হয়তো ওর সন্তান হারানোর কষ্টের থেকে দিগুণ কষ্ট হবে। তাঁর থেকে ও না-হয় চোখ বুঝেই থাকুক।
সমাপ্তি