স্বামীর অত্যাচার পর্ব ১৪+১৫

#স্বামীর অত্যাচার !
#Part_14+15

শেষে রাতের দিকে নিলয়ের হাত রেসপন্স করছে দেখে তাহিন দৌড়ে গিয়ে আফরিন ডাক দিল…..নিলয় একটুখানি চোখ খুলে আবার চোখ বন্ধ করে নিল……
ডক্টার এসে চেকআপ করে বলল…

-ভয়ের কোনো কারণ নেই……এখন একদম ঠিক আছে… কিছুক্ষণের মধ্যে পুরোপুরি জ্ঞান ফিরে আসবে।।।মাথার আঘাতটা সামান্য তবে হাতের মধ্যে কাঁচের টুকরাটা গভীরে ঢুকার ফলে রক্তক্ষরণ হয়েছে বেশি।।।আগে থেকেই শরীল খুব বেশি দূর্বল প্লাস প্রচন্ড ড্রাক অবস্থায় ছিল…যার কারণে সম্ভবত সেন্স হারিয়ে নিচে পরে গেছে..পরে গিয়ে হয়ত কিছু একটা সাথে লেগে মাথায় আঘাতটা লেগেছে..আর সম্ভবত ফ্লোরে কাঁচ ভাঙা ও ছিল….যেটা হাতের গভীরে ঢুকে গেছে….

আর যতদূর সম্ভব ড্রিংক করা থেকে বিরত রাখবেন…
ড্রাংক অবস্থা ওনি নিজকে কয়েকবার আঘাত ও করতে চেয়েছিলেন মনে হচ্ছে…

গতকাল আমি আফরিন সাহেবকে কথাটা বলেছিলাম……..

গতকাল নিলয়কে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়ার কয়েকঘন্টা পর নিলয়ের ট্রিটমেন্ট শেষ হলে ডাক্তার বের হয় আসতে….তাহিনের মোবাইল তনিমার কল আসে….তাহিন তনিমার সাথে কথা বলার জন্য ফাঁকা জায়গায় চলে যায়….তখন হঠাৎ করে তনিমার মোবাইলে চার্জ চলে যাওয়াতে মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়….আর তাহিন আফরিনের ফোন পাওয়াতে ভেবে নিয়েছিল তনিমার কিছু একটা হয়েছে….

কিন্তু তনিমা আফরিন ফোন পাওয়াতে বার বার ফোন করেছিল…তবে আফরিন এই ব্যাপারে তনিমাকে কিছু জানায় নি….শুধু তাহিনের নাম্বারটা নিয়েছিল….তাহিন ও আর তনিমাকে কিছু বলেনি….শুধু বলেছিল নিলয়ের বাসাতে চলে গেছে…. তনিমা একটু ঘাবরে গেল হঠাৎ তাহিন এভাবে চলে গেছে শুনে…….

তাহিন তনিমার সাথে কথা বলতে অন্যদিকে যেতে…..আফরিন ডক্টরের কাছে গিয়ে……
-নিলয় কেমন আছে এখন ডক্টর ….?ও সুস্থ হয়ে যাবে তো…

-অবস্থা একটু ক্রিটিকাল…ব্লাড লসিং হয়ে অনেক…তার উপর প্রচুর ড্রাংক ও করছেন…..এবার জ্ঞান ফিরলে বাকিটুকু জানতে পারব…..

-ও ঠিক হয়ে উঠবে তো ডক্টর……

-আল্লাহর উপর ভরাসা রাখুন….সব ঠিক হয়ে যাবে।।।

নিলয় এমন কিছুই করতে চাইনি…শুধুমাত্র কিছুটা দিন তাহিনকে সময় দিতে গিয়ে নিজেকে অন্ধকারে মধ্য ডুবিয়ে দিয়েছিল….এছাড়া ও যে নিলয়ের কাছে আর কোনো উপায় ছিল না.তাহিনের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখার মত….না হলে যে বার বার ওর কাছে আর ছুটে যেত… নিজের ক্ষতি করার করে ওর সিপপেতি পাবে এমনটা ভাবে নি….কিন্তু ড্রাংক অবস্থায় নিজের সাথে কি করে ফেলেছিল সেটা ও জানা নেই নিলয়ের..

বড় সড় একটা নিশ্বাস ফেলল তাহিন…তারমানে নিলয় যা করছে মাতাল অবস্থায় করছে…..শুধুমাত্র ওর সামনে না আসার জন্য…..যাতে তাহিন ওর জন্য নিজের কোনো ক্ষতি না করে….. কিছুটা দিন সময় দিলে তারপর হয়ত আস্তে আস্তে সব ঠিক করে ফেলবে ভেবেছিল ……

সকালে সূর্যের আলো ফুঠছে…সূর্যের আলোর সাথে সাথে নিলয় ও আস্তে আস্তে তার চোখ খুলছে…….চারপাশটা ঝাপসা মনে হচ্ছে….
একটু পর সব পরিষ্কার হতে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে উঠল নিলয়…..

তার হাত ধরে পাশে কেউ একজনকে হেলান দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় বসে থাকতে দেখে….দুচোখ ভরে দেখছে তার অপ্সরীকে…..সেই কি সত্যিই এসেছে নাকি স্বপ্ন দেখছে…..না সেই কি করে আসবে নিশ্চয় রোজকার মত আজো স্বপ্ন দেখছে….এরকম কতই না স্বপ দেখেছে এতদিন…আজই হয়ত তাই হবে…নিলয় হাতটা নাড়িয়ে
তাকে একটু ছুতে…..তাহিন নড়ে চড়ে উঠে….চোখ খুলে নিলয়ের দিকে তাকাতে তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়াতে যাবে…..

তখন নিলয় বলল…
-তোমাকে ছুলে এভাবে চলে যাও কেন….?আরেকটু থাক না প্লিজ….

তাহিন বুঝতে পারছে না নিলয় কি বলছে…
-কেন থাকব আরেকটু…..আপনার মত খারাপ একটা মানুষের সাথে থেকে কি হবে…..

চমকে উঠল নিলয়…..সেই যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা।।তার সামনে তার অপ্সরী সত্যি দাঁড়িয়ে আছে…….

-আপনি খারাপ সেটা জানতাম কিন্তু এতটা খারাপ সেটা জানতাম না..৷ কি ভেবেছেন কি এসব করলে আমি আপনার কাছে ফিরে যাব…কক্ষনো না… না আপনাকে ক্ষমা করব না আপনার জীবনে ফিরে যাব।।।

নিলয় মুচকি হাসছে….তাহিনের কথা শুনে…কথাগুলো বলার সময় আজ যে তার গলাটা ধরে আসছিল…

-আমি তো কিছুই করিনি…..

-হুম সেটা তো দেখতে পাচ্ছি…..নিজে ও একটু ভাল করে দেখুন……

নিলয় হকচকিয়ে চারদিকে খেয়াল করতে আফরিন দরজা নক করে ভিতরে প্রবেশ করল।।।।

-কি করছিস কি? কি ভয়টা মা পাইয়ে দিছিলি…আমরা তো ভেবেছিলাম তুই…

-মরে গেছি তাইতো…..
এতোটা পাগল ভাবলি আমাকে…..আমার কিছু হয়ে গেল আমার অপ্সরী কি হত….ওর অভিমানটা কি করে ভাঙাতাম…আমি তো জাস্ট ওকে একটু সময় দিয়েছিলাম….তারপর যে করে হোক উঠিয়ে নিয়ে আসতাম…আমি ও দেখতাম আমার সামনে নিজকে কি করে শাস্তি দিত …প্রয়োজন হাত পা বেধে আমার সামনে রেখে দিতাম……

তাহিন চোখ বড় বড় নিলয়ের দিকে তাকিয়ে…
-অসভ্য লোকদের যতসব থার্ড ক্লাস মেন্টালিটি….এসব কখনো ভাল কিছু চিন্তা করতে পারে না….

-তোমার জন্য তো হাজারবার অসভ্য হতে রাজি আছি….

তাহিন রাগে রুম থেকে বের হয়ে গেল……
সিরিয়াস মোমেন্ট এমন ফাইজলামি করলে রাগ তো হবে।।।।।

আফরিন নিলয়ের হাতে হাত রেখে….
-এত কিছু যখন ভেবে রেখেছিল তাহলে কেন এমনটা করলি…কেন প্রতি রাতে নিজেকে এভাবে আঘাত করলি……..

-ওকে একটু সময় দেওয়াটা জুরুরি ছিল…কিন্তু আমি যে কিছুতেই ওর দূরে থাকার কথা ভাবতে পারছিলাম না…….শুধু কিছুদিন ওকে ভুলার জন্য নিজকে এই অবস্থায় নিয়ে গেছিলাম…কিন্তু এমন কিছু হবে ভাবতেই পারিনি।।।।

নিজের ক্ষতি করে ওর কোনো সিমপেথি পাব এমনটা আশা করিনি…এমনটা আশা করলে অনেক আগেই করতে পারতাম….
আই জাস্ট লাভ হার……আর আমার ভালবাসে দিয়ে ওকে আমি জয় করে নিব…..

-তুই দেখি এখন পুরোটায় পাগলাটে আশিক হয়ে গেছিস……

-তুই ও হবি যেদিন প্রেমে পরবি……
যা এবার আমার বউটাকে একটু দেখে আই……

-সেটা নিয়ে তুকে চিন্তা করতে হবে না….কোথায় যাবে না….আজ যে করে হোক একেবারে ঘরে ও নিয়ে যাব আর সেই দায়িত্বটা আমার………

-যেতে না চাইলে জোর করবি না….আজ যাক সেটা আমি ও চাই না….

তবে একদিন তো ঠিকিই জয় করে নিয়ে আসবে…আর সেদিন ঘরে পাশাপাশি আমার মনে ও রাজত্ব চালাবে….

বিকালে দিকে নিলয়কে রিলিজ দেওয়া হয়েছে……সব ফরমালিটি পূরণ করে সন্ধ্যার মধ্য নিলয়কে বাসায় নিয়ে আসা হল…….এই বাসায় আর পা রাখা বলে সিধান্ত নিয়েছিল তাহিন…কিন্তু ভাগ্য আবার টেনে নিয়ে এসেছে তাকে….তনিমাকে বলেছিল এই বাসায় চলে এসছে…. আবার হুট করে ওখানে যেতে পারছে না….তাছাড়া আফরিন হাত জোড় করে বলেছিল অত্যন্ত একটা রাতের জন্য হলে ও নিলয়ের পাশে থাকতে……

বিকেক একটু সাড়া দিলে মনটা যেন কিছুতেই সাই দিচ্ছিল না….আজ না হয় মনটাই হেরে গেল বিবেকের কাছে….

যদি এতে তাহিনের কোনো দোষ নেই মন থেকে কোনো স্মৃতি মুছে ফেলে দিলে আবার যে সেই স্মৃতিটাকে পুনরায় ধারণ করা ও যে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়…..

শাওয়ার নিয়ে বিছানার উপর গাঁ এলিয়ে দিয়েছে তাহিন……নিজেকে এখন বেশ হালকা মনে হচ্ছে…গত দুদিন থেকে চোখে মুখে যে ক্লান্তির চাপটা ছিল সেটা এখন অনেকটা কমেছে……..

যদি ও মনের মধ্য কয়েকটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে নিলয়কে নিয়ে….কিন্তু এখন আর এসব প্রশ্নের উত্তর না খুঁজা টায় শ্রেয় মনে করছে……যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সেটা তো আগেই নিয়ে নিয়েছে…..তাহলে যেসব অদ্ভুত প্রশ্ন জমে আছে তার উত্তরগুলে খুঁজে ও তো কোনো লাভ নেই……

শুধুমাত্র বিকেকে বাঁধছিল বলে নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে এই বাড়ীতে আসতে বাধ্য হয়েছে…..এই ছাড়া তো আর কিছুই না…..

নিলয় কিছুটা হলে ও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে….আজ তার মায়াপরী তার খুব কাছে আছে….. নিজের রুমে না হোক অত্যন্ত এই বাড়ীতে তো আছে…এতেই অনেক….. যদি ও সেটা মনে থেকে না তবু তো এই বাড়ীতে পা রেখেই আর একবার যখন রেখেই ফেলেছে…তাহলে খুব শ্রীঘ্রই তার মনের ভিতর ও জায়গা করে নিয়ে একেবারে পারমানেন্ট করে……..সেটা আঙুল সোজা করে হোক কিংবা বাঁকা করে…….
LIKE & Follow my page = #Update_কাহিনী
হসপিটাল থেকে আসার পর থেকে মোটেও উপরের দিকে পা রেখেনি তাহিন…না নিলয়ের রুমে না নিজে আগে যে রুমে থাকত সেখানে…..নিচে একটা রুমের বেছে নিল……নিলয় কিছুই বলেনি আজ আর এমন কিছু করছে ওকে বিরক্ত করতে চাইছে না….কাল থেকে মেয়েটার উপর অনেক ধকল গেছে…তাছাড়া আজ কোনো ধরণের সিমপেতি দেখাক সেটা ও চাই চাই না…..

রাত ১১.৪মিনিট হঠাৎ ফুলির ডাকে ওর ঘুম ভাঙল তাহিনের….কখন যে চোখ লেগে এসেছে সেটা খেয়াল করতে পারেনি…..
তড়িঘড়ি করে উঠে বসতে………

ফুলি মুচকি হেসে বলল…..
-হাত মুখ ধুয়ে আসেন….খাবার খাইতে হবো তো…

-আমার ক্ষেতে ইচ্ছে করছে না…তোমারা খেয়ে নাও…

-আপনি ঘুমাচ্ছেন শুনে স্যার ও এখনি খায়নি…..

-ওনি এখনো না খেয়ে বসে আছে মানে….ওনার তো ওষুধ খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে…..
আমাকে এতক্ষণ ডাকলে না কেন?

-স্যার আপনাকে ডাকতে নিষেধ করেছিল তাই….

– ওনি তো এটায় চাই….কি করে নিজেকে আরো অসুস্থ করবে…
যতসব অসভ্য লোক একটা….

বলেই তড়িঘড়ি করে বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘর চলে গেল… নিলয়ের জন্য খাবার বেড়ে ফুলিকে দিয়ে রুমে পাঠিয়ে দিল….একটু পর ফুলি খাবারটা রেখে মুখ ঘোমরা করে নিচে নেমে তাহিনকে বলল…..
-স্যার নাকি খাবে না…..

-কেন?

-তুমি খেয়েছ কিনা সেটা জিজ্ঞেস করতে আমি বলেছি তুমি খাবে না….তাই স্যার ও বলেছে ওনি ও খাবে না….
তাছাড়া স্যার তো নিজ হাতে তেমন একটা খেতে ও পারবেনা….

তাহিন একবার উপরের দিকে পা দিচ্ছে আবার দুকদম পিছিয়ে নিচ্ছে…অনেক ভাবার পর উপরের সিড়ি দিকে পা এগিয়ে দিল….মাত্র একটা দিনের ব্যাপার আজ না হয়….গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেল নিলয়ের রুমের দিকে…..নিলয় বিছানার সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে….আর ঠিক পাশে আফরিন ও বসে আছে….নিলয়কে এই অবস্থায় রেখে আফরিনের আর যাওয়া হয়নি….

-বলছি তো ও খাবে আর সেই দায়িত্বটা আমার…
এবার তুই খেয়ে নে…..আর আমি তো আছি তুকে হেল্প করার জন্য এবার তুকে হেল্প করার দায়িত্বটা ও আমার….

-আরে না থাক….

পা গুলো একটু কাঁপছে তাহিনের অনেকদিন পর আবার এই রুমে প্রবেশ করবে…পুরানে স্মৃতি যত ভুলে থাকার চেষ্টা করছে সেগুলা আবার নতুন করে যেন তাজা হচ্ছে….একদিন ঠিক পাশের রুম থেজে নিলয় মাঝরাতে এই বাড়ী থেকে নিয়ে গেছিল তারপর আর আশা হয়নি…ভেবেছিল আর আসতে ও হবে না..কিন্তু..

যত এসব ভাববে বলে ঠিক করেছে ততই ভাবাচ্ছে
ভাবনার জগত থেকে বের হয়ে রুমের ভিতরে ঢুকে….
আচমকা টেবিলের উপর থেকে প্লেটটা হাতে নিতে নিলয় আর আফরিন দুজনে চমকে উঠল….নিলয় তো হা করেই আছে….আর তাহিন সেই সুযোগে এক চামচ ভাত নিলয়ের মুখে পুরে দিল…..আফরিন মুচকি হেসে রুম থেকে বের হয়ে গেল……

নিলয়ের চোখ বড় বড় করে কোনোমতে মুখের খাবারটা চিবিয়ে নিয়ে…..
-এটা কি করলে সুইটহার্ট……তুমি না খেয়ে আমাকে কেন খাইয়ে দিলে….?

-খুশিতে

-সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি…..কিন্তু এই মুহূর্তে আমার খেতে ইচ্ছে করছে না…..
বরং তুমি খেয়ে নাও…

-আমাকে নিয়ে আপনার এত চিন্তা না করলে চলবে …যদি দুচারদিন না ও খেয়ে থাকি ও না,তবু ও কিছু হবে না আমার….কিন্তু আপনি যে নাটকটা শুরু করছেন এতে যদি আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন সম্পূর্ণ দায়ভারটা কিন্তু আমার উপরেই আসবে……আশেপাশের লোকজন তখন আপনাকে নই আমাকেই নানা কথা শুনাবে….
যেহেতু এখন ও আমাদের ডির্বোস হয়নি…..

কথাটা শুনে রাগটা মাথার উপরে উঠে গেল নিলয়ের….ইচ্ছে করতেছে কষে দুচারটা থাপ্পর মেরে দিতে…..

-মানুষে কি বলল সেটা নিয়ে তুমি কেন নাচবে…বরং ওদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিবে আমি ভুল করছি সেটা…..মানুষের তো একটায় স্বাভাব সত্য মিথ্যা না জেনেই দুচার কথা শুনিয়ে দেওয়া…আর সেটা কক্ষনো সমাজ থেকে যাবে ও না…যদি এমনটা হবে বলে তোমার মনে হচ্ছে তাহলে চুপ করে শুনবে কেন….কথার বলার মতো মুখ তো তোমার নিশ্চয় আছে….যে যেমন বলবে তাকেই তেমনি জবাব দিবে..
আর কি ভেবেছে কি তুমি৷ আমি এসব ইচ্ছে করেই করেছি..যদি ইচ্ছে করতাম তাহলে তোমার সামনেই দওয়ালে মাথা টোকে কিংবা হাত কেটে এসব করতে পারতাম তোমার সিমপেতি পাবার জন্য….কিন্তু এমন কোনো ইচ্ছে আমার ছিল না….না লোকের সামনে তোমাকে ছোট করার ইচ্ছায় না তোমার থেকে কোনো সিপমেতি পাবার আশায়……কিন্তু নেশার ঘোরে যে এমন ভুল হয়ে যাবে ভাবিনী….

তোমাকে তো আমি আমার স্টাইলে নিজের করে নিবে এসব করে নই…. তাই ডির্বোসের কথা মাথা থেকে একেবারে ঝেড়ে ফেলে দাও….যত তাড়াতাড়ি ফেলে দিবে ততই ভাল হবে…..

তাহিন নিলয়ের কথা শুনে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে..
-ইচ্ছে করেই করেছেন না অন্য কোনো কারণে সেটা তো আপনি ভালই জানেন…….
নিজের প্রয়োজনে যে আপনি কতটা নিচে নামতে পারেন সেটা তো আমার সচক্ষে দেখা আছে…..
এমন ও তো হতে পারে এসব করার পিছনে নিশ্চয় আপনার কোনো কারণ আছে…কারন ছাড়া তো আপনি আবার কিছু করেন না………যেহেতু এতদিন ধরে আপনার বাবার সব সম্পত্তি গুলা তৌহিদ আহমেদ ভোগ করে আসছিল…যদি ও এখন সেগুলো আপনি ফেরত নিয়ে নিয়েছেন…,কিন্তু এখনো তো আমার নামে যে সম্পত্তিগুলা আছে সেগুলো তো আপনার নামে হয়নি… আর তার জন্য আপনি আমার সাথে এমন নাটক করতেই পারেন…
কারণ তৌহিদ আহমেদ জেলে থেকে বের হয়ে আসলে তখন যেকোনোভাবেই সেগুলো আমার থেকে নিয়ে নিতে চাইবে…তখন আপনাকে আবার ঝামেলায় পড়তে হবে….আর সেটা যাতে না হয় সেজন্য আপনি আমার সাথে এই নাটকটা করছেন…..তাই নয় কি?

-সুইটহার্ট তুমি এমন কেন?যেটা নিয়ে তোমার সিরিয়াসলি ভাবার দরকার সেটা না ভেবে তুমি অযতা উল্টা পাল্টা এক বিষয় নিয়ে সিরিয়াসলি বসে আছ।।।।।
কথাগুলো শুনে নিলয়ের রাগ মাথার উপর উঠে গেলে ও……পরক্ষণেই নিজেকে শান্ত করে নিল…..এমন হাজারো সম্পত্তি নিলয়ের কেনার সামর্থ্য আছে….আর সেটা নিয়ে তুচ্ছ নাটক করার তো কোনো মানেই হয়না..আর তৌহিদ আহমেদের ও তো জেল থেকে বের হওয়ার মত কোনো চান্সিই রাখেনি নিলয়….নিলয় এখন এর উত্তর না দিলে সঠিক সময় আসলে ঠিকিই এর উত্তরটা দিয়ে দিবে ভেবে রেখেছে…

-মোটেও আমি অহেতুক বিষয় নিয়ে ভাবছি না…এটা অহেতুক হলে আপনি এড়িয়ে যে

নিলয় তাহিনকে আর কিছু বলতে না দিয়ে তাহিনের হাত থেকে প্লেটটা নিয়ে নিল….

-আমি খেতে পারব অতটা ও অচল না…..তবে সুস্থ হলে তখন ঠিকিই অচল হয়ে যাব সুইটহার্ট শুধুমাত্র তুমোর হাতে খাওয়ার জন্য…..এখন নিজে গিয়ে খেয়ে নাও….না খেলে কিন্তু অামি অন্য ব্যবস্থা করব……মানে তনিমা আনটিকে ফোন করে তোমার নামে নালিশ করব…..
আর তাতে যদি না খাও তাহলে আমি নিজেই জোর করে খাইয়ে দিব যদি ও একটু কষ্ট হবে তবু তোমার জন্য এইটুকু কষ্ট তো সহ্য করতেই পারি…..

-আমাকে নিয়ে আপনার না ভাবলে চলবে…আমি এবার বেশ বুজতে পারছি সবকিছু …..

-আমার ভাবনা জুড়েই তো শুধু তুমি আছো..তাহলে কি করে ভাবনা না বল….
আমি বিছানা ছেড়ে উঠলে কিন্তু এই খাবার গুলো তোমাকে খাওয়াব….

-তার প্রয়োজন নেই…আমি খেয়ে নিব…..
এটা বলে নিলয়ের হাত থেকে প্লেটটা নিয়ে জোর করে খাইয়ে দিল….তারপর ওষুধ খাইয়ে দিল……

-আপনার জন্য আমি কারো কাছে কোনো কথা শুনতে চাইনা…….আপনি যত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন ততই আমার জন্য ভাল…..
কথাটা বলা মাত্র রুমে থেকে বের হয়ে গেল……

নিজের প্রতি রাগ হচ্ছে এখন নিলয়ের কি করে নেশার ঘোরে এমনটা করতে পারল….তাহলে আজ আর ও কোনো সিমপেতি দেখাতো তো না…..কিন্তু এটা নিয়ে যে আর হায় হায় করে ও কোনো লাভ নেই….যা হবার তা তো হয়ে গেছে…এবার যা করার সেটা সুস্থ মস্তিষ্কে করতে হবে…….

#Part_15

পরিচিত একজন ল’ইয়ারের সাথে কথা বলে ডির্বোসের ব্যাপারে সব ঠিক করে নিয়েছে তাহিন…..

এর মধ্য মাঝখানে দুতিনটা দিন কেটে গেল আগামীকাল দিনটার অপেক্ষায়…..আগামীকাল ডির্বোস পেপারটা হাতে পেতে নিলয়কে ডির্বোস দিয়ে একেবারে চলে যাবে এই বাড়ী ছেড়ে….তাছাড়া এই কদিনে নিলয় অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে…..আর কোনো বিবেকবোধ কাজ করবে না….এবার নিশ্চিন্তে চলে যেতে পারবে…..

এদিকে নিলয় বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে….আজ থেকে তার অপ্সরীকে বেশ জ্বালাতে পারবে…হসপিটাল ফিরে এসে সোজা তাহিনের রুমের দিকে যেতে ফুলি বলল তাহিন ছাদেই আছে….নিলয় আর দেরি না করে দ্রুত পায়ে ছাদে চলে গেল….

ছাদের রেলিংয়ের ধারে গা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে তাহিন…পড়ন্ত বিকেলে ছাদের কোনো রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকা তাহিনের রোজকার একটা অভ্যাস……

এই সময়টাতে আকাশ বুকটা যেন বিভিন্ন রঙে সেজে উঠে….সেটা উপভোগ করতেই মনের মধ্য একটা প্রশান্তি লাগে…

হঠাৎ করে পিছন থেকে কারো স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠল তাহিন….বুঝতে বাকি রইল না কে আচমকা ওকে এভাবে জড়িয়ে ধরেছে…..এই দুদিন নিলয় এমন কিছুই করেনি…কিন্তু আজ হঠাৎ এভাবে জড়িয়ে ধরাতে একটু চমকে উঠল…তাহিন নিজেক ছাড়ানোর চেষ্টা করতে নিলয় আরো জোরে চেপে ধরে……

-কি শুরু করেছেন কি?ছাড়ুন বলছি….

-…….

-কি বলছি শুনতে পাচ্ছেন না….

-হুম…
পড়ন্ত বিকেলে তোমার কাঁধে থুতনি রেখে মাতাল হাওয়া চুলের গন্ধ নিয়ে আকাশটাকে এত সুন্দর লাগছে…না জানি রাতের আকাশটা আরো কত সুন্দর দেখাবে……সেটা দেখার জন্য আজ রাতটা আমাদের এখানে স্পেন্ড করা উচিত….চারিদিকে চাঁদের আলো ঝিকিমিকি করবে….মাতাল হাওয়া বয়ে বেড়াবে…
তারা গুনার বৃথা খেলায় মেতে থাকবে তুমি…
সারারাত তোমার কাঁধে নাক ডুবিয়ে চুলের গন্ধে মেতে থাকব আমি…..

-অসময়ে এমন কথা মানায় না…..

-সময়ে যেটা করতে পারিনি সেটা না হয় অসময়ে এসে বললাম….কিছু কাজ হয়ত সময়ের চেয়ে অসময়ে করা ভাল… কারণ সময় থাকলে সময়ের মূল্যটা না বুঝলে ও অসময়ে তার মূল্যটা অনেক গুন বেশি বুঝিয়ে দিয়ে যাই।।

অহয্য লাগছে তাহিনের….নিলয়কে ছাড়াতে না পেরে শেষমেশ হাতে একটা চিমটি বসিয়ে দিল তবু ও নিলয় ছাড়ল না….এবার খুব জোরে দিতে নিলয় ব্যাথা পেয়ে হাতটা একটু আলগা করতে তাহিন সরে দাঁড়িয়ে……

-আর তো কোনো প্রয়োজন নেই এমন নাটক করার…আমি তো ভালই করে জানি আপনি কেন এমনটা করছেন….আর সেটা কালই পেয়ে যাবেন…শুধুমাত্র তার জন্য প্রোপার্টি পেপারটা একটু রেড়ি করে রাখবেন……আর সেই সাথে ডির্বোস পেপারে ও সাইনটা করে দিবেন….আমি ল’ইয়ারের সাথে কথা বলে নিয়েছে কালই ওনি আসবেন….

প্রচন্ড রকমের রাগ উঠে গেল নিলয়ের…পাশ থেকে ফুলের টবটা ছুড়ে ফেলে….

-কতবার বলতে হয় একটা কথা….ভুলে ও মুখ দিয়ে ডির্বোসের কথাটা আনতে বারণ করছিলাম…তবু ও কেন বারবার একিই কথা বলে যাচ্ছ…..খুব শখ ডির্বোস দেওয়ার,না…..আমি ও এর শেষ দেখে ছাড়ব কোন ল’ইয়ার আমাদের ডির্বোস করাই……

-প্রত্যেক কিছুর শুরু আছে যেমন তেমনি এর শেষিই আছে….শুরুটা আপনি করেছেন শেষটা না হয় আমিই করব…..
আর হুম প্রোপার্টি পেপারটা ও অবশ্যই রেড়ি করে রাখবেন…….

-তোমার কি মনে হয় আমি তোমার সাথে নাটক করছি? আর নাটকটা শুধুমাত্র তুচ্চ একটা প্রোপার্টি পাবার আশায়…..সেটা ভাবলে কি করে আরে আমার যা আছে তা দিয়ে আমাদের দশটা বাচ্ছার নাতনাতনিসহ কাটিয়ে দিতে পারবে……. তাহলে সামান্য প্রোপার্টি জন্য কেন এমনটা করব…..?

ভুলে ও ভেবো না এসব আমি তোমার থেকে প্রোপার্টি আশায় করছি…..

-এমনটা তো অস্বাভাবিক কিছু নই….হুম হতে পারে সেটা আপনার কাছে সামান্য কিন্তু তার প্রয়োজনটা আপনার কাছে অনেক বেশি…..আর সেটা কেন আমার চেয়ে তো আপনিই ভাল জানেন….

-ভাবতাম তুমি একটা বুদ্ধিমতী মেয়ে এখন তো দেখছি পুরোটায় খালি…লোকটা তার শিক্ষা পাচ্ছে…তাহলে তাকে আর কি শিক্ষা দিব….আমি শিক্ষা দিলে লোকটা জেলে পঁচে মরত না…..একেবারে উপরে চলে যেত।।এমনটা করিনি কারণ আমি চেয়েছিলাম ওনি ওনার ভুলটা একটু হলে উপলব্ধি করুক…একটু হলে পাশ্চাত্যের আগুনে জ্বলুক….আর সেটা এখন হয়ত ওনাকে একটু হলে ও ভাবাচ্ছে।।।।কিন্তু একেবার শেষ করে দিলে সেটা ভাবার সময় পেত না….যদি ও তোমার ধারনা লোকটা কোনোভাবে জেল থেকে বের হয়ে যায়…যদি এমনটা কখনো হবে না….আর যদি হই ও তাহলে আমার যা আছে সেগুলো সহ ওনাকে দিয়ে আমরা থেকে অনেকদূর চলে যাব।। না হয় লোকটাকে স্বস্তির নিশ্বার ফেলার সময় দিব না…. লোকটাকে বউ আর ছেলেকে একটা উচিত শিক্ষা দিয়েছি যাতে ভুলে তোমার দিকে না তাকায়…….

এসব হয়ত তোমার কাছে সত্যি নাও লাগতে পারে কিন্তু এটাই সত্যি…..তোমাকে আমার প্রয়োজন তোমার প্রোপার্টি না…..তোমাকে নিয়ে ভাবা ছাড়া আমি যেন আর কিছুই করতে পারছিনা……

নিলয় হাটু গেরে বসে……

একটি বারের জন্য ও কি ক্ষমা করা যায় না….

-………..

-ক্ষমা না হয় করো না….কিন্তু ভুল শুধরানোর ও কি একটি সুযোগ দেওয়া যায় না….

তাহিন উত্তর না দিয়ে চলে যেতে….হুট করে আফরিন এসে ওর পথ আটকে দাঁড়াল…. হাতে একটা ফাইল দিয়ে ইশারা করে বলল খুলে দেখার জন্য…
মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল তাহিনের ফাইলটা পড়ে দেখে….নিলয়ের যত প্রোপার্টি আছে সব ওর নামে লিখে দিয়েছে……
রাগে ফাইলটা ছুড়ে ফেলে নিলয়কে চিৎকার করে বলল…
LIKE & Follow my page = #Update_কাহিনী
-বাহ আপনার প্লেনটা সত্যিই চমৎকার……সব প্রোপাটি নিজের নামে করিয়ে নিয়ে এখন আমি আপনাকে ডিবোর্স দিতে চাচ্ছি…..ঠিক এই কথটা কোর্টে প্রমাণ করার জন্য আপনি এমনটা করছেন।।।।

নিলয় সামনে এগিয়ে এসে……

-তুমি এক লাইন বেশি বুঝ সেটা জানতাম কিন্তু এতটা বেশি বুঝ সেটা জানতাম না…..

বলেই তাহিনকে কোলে তুলে নিল……

তাহিন নিজকে ছাড়ানোর জন্য নিলয়ের পিঠে কোল ঘুষি বসিয়ে দিচ্ছে তবু ও কাজ হচ্ছে না……

-নামান বলছি…

-জোর করে আটকে রাখার ক্ষমতাটা আমার আছে….তার জন্য এসব করতে হবে না……

আসলে তুমি চাচ্ছটা কি বলো তো….

-আপনার থেকে মুক্তি…
নামান বলছি আমি হাটতে পারব…আমার হাত পা সব ঠিক আছে…..

-সেটা জানি বাট যেটা চাইচ সেটা জীবনে ও হবে না…..

তাহিনকে রুমে নিয়ে বিছানার উপর বসিয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল নিলয়।।।
.

.

.
রাতে কোনোমতে খাবারাটা খেয়ে রুমে চলে গেল তাহিন….না খেলে নিলয় এবার একটা কান্ড শুরু করে দিবে…তাই চেয়ে চুপচাপ খেয়ে নেওয়াটাই ভাল লাগছে…

তাহিন রুমের দরজা বন্ধ করে নিলয় দরজাটা টেলে ভিতরে ঢুকে বলল…..

-এবার বন্ধ করতে পারে….

তাহিন কিছু না বলে চুপচাপ একটা বালিশ নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যেতে…..
-কোথায় যাচ্ছে…….

-ঘুমুতে….

-ঘুমুতে মানে…..?

-এটা আপনার বাড়ী…আপনার যখন এই রুমটা ভাল লেগেছে তাহলে সেটা তো আমার ছেড়ে দেওয়ায় উচিত..

-বুঝতে পেরেছি সুইটহার্ট…মাঝরাতে তোমার কোলে ছড়ার শখ হয়েছে….

-একদম বাজে কথা বলবেন না…..

-আরে তুমিই তো এটাই চাও…. অন্য রুমে ঘুমালে
আমি তোমাকে আবার কোলে করে এখানে নিয়ে আসি…..

-আপনি কিন্তু এবার বাড়াবাড়ি করছেন..

-আমি তো বাড়াবাড়ি করছি না সুইটহার্ট….আমি বাড়াবাড়ি করলে কি হতে পারে সেটাই তো তুমি ভালই জান..

তাহিন বালিশটা নিয়ে ফ্লোরে শুয়ে পরল…

-এটা কি হল?

-এই রুমে থাকছি তার মানে এই না যে
আপনার পাশে থাকব….

নিলয় দরজা বন্ধ করে….
-তুমি আমার পাশে থাকতে নাই পার কিন্তু আমি তো পারি…

নিলয় ধপ করে ফ্লোরে শুয়ে পরতে…..
তাহিন বিছানার উপর উঠে গেল….

-সারারাত কি এভাবে বিছানায় বদলা বদলি করব….

-প্রয়োজন হলে তাই হবে…

-ওকে

-অসহ্য লাগছে আমার আপনি যদি এমনটা করেন আমি কিন্তু এই ঘর না এই বাড়ী ছাড়তে বাধ্য হব এখন..

বলে তাহিন চোখ বন্ধ করে শুয়ে পরল….
মাঝরাতে ঘুমের মধ্যেই পিঠঠা কেমন যেন ভিজা ভিজা মনে হতে…ঘুম ভেঙে গেলে একটু নড়ে চড়ে উঠতে চেয়ে উঠতে পারল না…কেউ যেন ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে পিঠের সাথে মুখ গুজে টুুপ টুপ করে চোখের পানি ফেলছে…তাহিন বেশ বুঝতে পেরেছে মানুষটা কে…কিন্তু এভাবে কান্না কারণটা কি?

তাহিন এবার পাশ ফিরতে চেয়ে পারল না… নিলয় আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেে….নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে……তাহিন এবার বলে উঠল….

-আপনি কি কাঁদতেছেন?
-…………..

-কি হয়েছ বলবেন তো…
-…….
-ওপপ আমাকে একটু ছাড়ুন তো…

নিলয় আরো শক্ত চেপে ধরে….
-আমি আপনাকে নিচে গিয়ে ঘুমাতে বলিনাই…
একটু ছাড়তে বলছি……..

নিলয় তাহিনকে ছেড়ে দিতে…তাহিন নিলয়ের দিকল মুখ করে শুতে…..নিলয় ওকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে মুখ গুজে দিল……

বিশ্বাসই করতে পারছেনা তাহিন…নিলয় সত্যিই কান্না করতেছে….তাও এমন নিংশব্দে যাতে ও বুঝতে না পারে…আজ পর্যন্ত নিলয়কে কখনো কান্না করতে দেখেনি তাহিন…..প্রয়োজনে ও কখনো কেঁদেছে কিনা সেটা নিয়ে ও বেশ সন্দেহ আছে তাহিনের….এমন হার্টলেস মানুষের চোখ দিয়ে অতি সহজে পানি বের হওয়া যেন অস্বাভাবিক……দুমড়ে মুচড়ে উঠল তাহিনের বুকটা…

-কি হয়েছে আপনার…এভাবে কাঁদছেন কেন…..?

-এমনিতে ইচ্ছে হলো তাই….

-আপনার মত হার্টলেস মানুষেরা এমনি এমনি কান্না করতে পারে না….

-হুম পারে।। যখন ওরা নাটক করে তখন ঠিকই পারে….

-আপনি কিন্তু….দেখুন এভাবে কাঁদবেন না…আমার কিন্তু ভাল লাগছেনা….

-একবার ও ক্ষমা করা যায় না…
-…………
-হার্টলেস না হয় আমিই ছিলাম কিন্তু তুমি তো হার্টলেস ছিলে না….

-সেটা তো আপনি হতে বাধ্য করেছেন….

না আমায় কখনো বিশ্বাস করছেন….না এখন আমি আপনাকে বিশ্বাস করতে পারছি….

-সেটা আমার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল….আর সেই ভুলটাকে শুধরে নেওয়ার জন্য একটুখানি না হয় বিশ্বাস করে দেখ…আমার জন্য না হলে অত্যন্ত সম্পর্কে টিকিয়ে রাখার জন্য…..

-বিশ্বাস”’বিশ্বাসের জোরে একটা সম্পর্ক মজবুত হয়…..আর সেখানে আমাদের সম্পর্কটার মধ্যে বিশ্বাসের ভিত্তিটায় কখনোই ছিল না,না এখন আছে…..আর সেই সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার চেয়ে না রাখাটায় ভাল……..

– শতভাগ আস্থা থাকার পর কোন সম্পর্কটা ভেঙে যাচ্ছে না বলতে তো.. প্রতিনিয়ত এমন হাজারো সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে শত ভাগ বিশ্বাস থাকার পর ও…..আমাদের সম্পর্কেটা না হয় অবিশ্বাস মধ্যে গড়ে উঠবে…তোমার এই অবিশ্বাসটা আমাকে প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দিবে…তোমাকে বিশ্বাস করার না কথাটা….আমি ও চাই না তুমি আমাকে অন্ধের মত বিশ্বাস কর……
#LIKE & Follow my page = #Update_কাহিনী
তবু প্লিজ আমাকে ছেড়ে দূরে যাওয়ার কথা ভেবে না….
পারব না আমি সেটা সহ্য করতে….

-সবসময় তো আপনার থেকে দূরে ছিলাম…তখন তো কাছে টানার জন্য এমনটা করেননি…?কাছে গেলে তো দূরে সরিয়ে দিতেন….এখন ও ঠিক পারবেন…..

-ভুলেই করেই ফেলেছি…..কিন্তু এখন আর পারব না সেই ভুলটা করতে…..তোমার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে….

-……..

-প্রতিনিয়ত আপনার অবহেলা অত্যচার আমি কিভাবে সহ্য করে গেছি……এমন না যে আপনার প্রতি আমার কোনো ভালবাসা ছিল না….ছিল,আপনাকে নিয়ে আমি হাজারো স্বপ্ন বুনেছি….তবে সেটা সময়ের সাথে হারিয়ে গেছে…..মন ও পাল্টে গেছে??…তাহলে আপনি কেন পারবেন না…….

-তুমি আমার আত্মার সাথে মিশে গেছে….চাইলে ও তোমাকে আলাদা করতে পারব না…ভুলে যাওয়া তো দূরের কথা……
মন কখনো পাল্টাে যায় না….শুধুমাত্র পরিস্থিতি সেই মানুষটাকে পাল্টে দে….না তুমি আমাকে ভুলে যেতে পারব….না আমি তোমাকে ভুলে যেতে দিব…..

-কি মনে করিয়ে দিবেন….প্রতিনিয়ত আপনার করা অত্যাচারগুলো কথা…এই ছাড়া তো মনে করিয়ে দেওয়ার মত আর কোনো স্মৃতি নেই ….

-কেন পুরানো কথাগুলো বারবার টেনে আনছ……?এখন বাদ দাও না ওসব কথা….যা করেছি ভুল করেই তো করেছি…..

-কি করব পুরানো স্মৃতি গুলো মাথার এমন ভাবে জেকে বসে গেছে চাইলে ভুলতে পারছিনা….

-প্লিজ এসব ভুলে যাও না……সবকিছু আবার নতুন করে শুরু কর না….

-আপনাকে আমার বিশ্বাস ভালবাসা এসব কিছুর অজর্ন করার জন্য কোনো প্রমান দিতে হবে না…..বরং আপনি অন্য কাউকে নিয়ে ভালো থাকুন……যে আপনাকে বিশ্বাস করবে ভালবাসতে পারবে…..

-আমার প্রয়োজন তোমাকে অন্য কাউকে না….অন্য কাউকে দিয়ে আমি কি করব…তোমার মত করে কেউ আমাকে ভালবাসতে পারবে না…আমার ভাল থাকা তোমাতে……

প্রমান তো দিতেই হবে আমি তোমাকে কথাটা ভালবাসি……কারণ বিশ্বাস তো করবেনা তার জন্য হলে ও তো দেখাতে হবে…..আমার ভালবাসা দিয়ে আমি ঠিক সম্পর্কটাকে টেনে নিয়ে যেতে পারব…..

-একতরফা ভালবাসা দিয়ে কখনো একটা সম্পর্ক টিকে থাকতে পারে না……

-কে বলেছে পারেনা…সেটা না হয় নিজ চোখে দেখে নিবে…….এমন না যে তুমি আমাকে ভালবাস না…ভাল তো ঠিকই বাস….না বাসলে এতকিছুর পর রাতদিন আমার কাছে পড়ে থাকতে না….চাইলে তো আমাকে মৃত্যুর মুখে রেখে চলে যেতে পারতে….তখন কিন্তু চলে যাওয়ার অপশনটা তোমার কাছে ছিল…..কিন্তু তা না করে জোর করে আমাকে সুস্থ করার দায়িত্বটা কেন নিয়েছিলে..?যতই বলনা কেন বিবেকবোধ তোমাকে এসব করতে বাধ্য করছে…কিসের বিবেকবোধ….?বিবেকবোধ তখন এটাই বলবে যে আমার সাথে এত কিছু করছে তাকে মৃত্যুর মুখে রেখে যাওয়া উচিত…তাহলে যাওনি কেন?তখন না হয় ভালবাসতে…কিন্তু ঔদিন তো চাইলে চলে যেতে পারতে….তবু ও কেন যাওনি?এভাবে সুস্থ করে না তুলে মৃত্যুর মুখে ছেড়ে দিতে… তাহলে সৃষ্টি হতো তোমার প্রতি কোনো ভালবাসা….না থাকত বিরক্ত করার মত কেউ…

-কি বলছেন এসব….কিভাবে রেখে যেতাম…..আমার জন্য তো হলো সব তাহলে কি করে যেতাম বলেন….এভাবে রেখে যেতে যে কারো কষ্ট হত সেটাই স্বাভাবিক….

-ভাল না বাসলে কি করে হত….কক্ষনো হতো না?

-এত কথা না বলে ঘুমান তো….আমার কিন্তু ঘুম আসছে……

-না যতক্ষণ না তুমি আমার থেকে আলাদা হওয়ার কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিচ্ছে না …ততক্ষণে পর্যন্ত আমি ঘুমাতে পারব না…

-সেটা পরে দেখা যাবে….এখন এসব কথা বলার সময় না…..

-এখন না কখন বলব…তুমিই তো কাল সকালে তো তুমি ল’ইয়ারকে আসতে বলেছে…..দেখো তুমি এক্ষুনি ফোন করে বারণ করে দাও না আসতে না হলে কিন্তু ওই ল’ইয়াকে কি করব নিজে ও জানি না….

-সেটা ল’ইয়ার আসলে তখন দেখা নিব…..

-আমার ঘুম আসছে…এবার একটু চুপ করেন….না হলে জীবনে শেষ হবে না সারারাত শুধু তর্ক বিতর্ক চলতে থাকবে……

বলেই তাহিন নিলয়ের থেকে একটু দূরে গিয়ে চোখ বন্ধ শুয়ে পরল…..

বেশ ভাবাচ্ছে তাহিনকে….,নিলয় কি সত্যি ওর ভুল শুধরে নিতে চাইছে? নাকি এখনো অন্য কোনো প্রয়োজন আছে এসব করার পিছনে….কিন্তু এমন তো কোনো প্রয়োজন ও দেখতে পাচ্ছে না….তাহলে….?
কি করবে এখনো বুঝতে পারছেনা তাহিন….একটা বার কি এটা নিয়ে ভেবে দেখা উচিত….বড্ড দুটানায় পড়ে গেছে…নিলয় ওর কাছে এসে জড়িয়ে ধরেছে।। হাতটা সরাতে চেয়ে ও যেন সরাতে পারছেনা।।তবু ও জোর করে সরিয়ে দিল……বারবার সরিয়ে দেওয়ার পর ও নিলয় জড়িয়ে ধরছে…তাহিন আর সরাতে চেয়ে যেন সরাতে পারছেনা…….কিন্তু নিলয়ের দেওয়া আঘাতগুলা ও যে এত সহজে ভুলতে পারবেনা……যতই কিছুই বলুক না কেন…..

পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভেঙে গেল তাহিনের….আড়মোড়া ভাঙে উঠে বসতেই যেন চমকে উঠল নিলয়কে বিছানায় না দেখে…..

সকাল ৫.১০ মি. এত সকাল সকাল নিলয়কে কক্ষনো বিছানা ছেড়ে উঠতে দেখে নি তাহিন… জগিংয়ে বের হলে সাতটার পরই বের হত….তাহলে আজ হঠাৎ উঠে কোথায় গেল ল’ইয়ারের বাড়ীতে চলে গেল না তো….নিলয়কে কোনো বিশ্বাস নেই…..গেলে ও যেতে পারে….কিন্তু কোন ল’ইয়ারের সাথে কথা বলেছি ডির্বোসের ব্যাপারে সেটা তো জানে না….তাহলে….?

এত কিছু না ভেবে ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেশ হশে নিচে যেতে অবাক হয়ে গেল তাহিন…….

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here