হৃদপূর্ণিমা পর্ব -২৩

#হৃদপূর্ণিমা
লাবিবা_ওয়াহিদ
| পর্ব ২৩ |

রথি অশ্রুসিক্ত নয়নে নাশিদের পানে একপলক তাকিয়ে দ্রুত পা চালিয়ে নাশিদের দিকে ছুটলো। নাশিদ শরীরের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে দেয়াল ঘেঁষে হাঁটছে। নয়ন বারংবার বলেছিলো সে নাশিদকে পৌঁছে দিবে কিন্তু নাশিদ একবারের জন্যেও তার মতামত কর্ণাধারে না নিয়ে সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করেছে। যার ফলস্বরূপ সে হাঁটার শক্তিটাও পাচ্ছে না। এক কর্মচারী তাকে বাসা অবধি পৌঁছে দিয়েছে আর বাড়িতে ঢুকে একাই সিঁড়ি বেয়ে উঠে কোনরকম নিজের রুমের দিকে যেতে অগ্রসর হয়। কিন্তু এই যন্ত্রণা তাকে বারংবার দুর্বল পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। রথি তার নরম হাতজোড়া নাশিদের বাহুতে শক্ত করে ধরে ক্ষীণ কন্ঠে বলে উঠলো,

-‘কী হয়েছে আপনার? একি হাল করেছেন, ঠিকাছেন আপনি?’

নাশিদের দিক থেকে কোনো প্রতিত্ত্যর এলো না। নাশিদের অবিন্যস্ত চাহনি তাকে ক্রমে ক্রমে উত্তেজিত করে তুলেছে।

-‘আমি বাড়ির বাকিদের ডাকছি দাঁড়ান!’

রথি পা বাড়াবে তার পূর্বেই নাশিদ মৃদু স্বরে বলে উঠলো,

-‘নাহ..!”

রথি থেমে যায় এবং পুনরায় নাশিদের দিকে তার ঝাপসা দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। রথি উপায়ন্তর না পেয়ে নাশিদের বাহু ধরে ধীরগতিতে তার রুমে নিয়ে গেলো। নাশিদ বিছানার নিকট আসতেই পায়ে বল না পেয়ে আহত শরীরটা নিয়ে ধপ শব্দে বিছানায় শুয়ে পরলো। হালকা ধূসর রঙের বেডশিটটা রক্তে মাখামাখি। এই মাঝরাত্রে রথি কী করবে কোনোরূপ উপায়ন্তর খুঁজে পায় না সে। তবে তার মস্তিষ্ক এইটুকুনি জানান দিচ্ছে, যা করার তার নিজেরই করতে হবে। রথি দ্রুত লাইট জ্বালিয়ে নাশিদের কাবার্ডসহ, কয়েকটি ড্রয়ারে ফাস্ট এইড বক্স হতবিহ্বল হয়ে একমনে খুঁজে চলেছে। ওদিকে নাশিদ কৈ মাছের ন্যায় ছটফট করছে অনবরত। মিনিটখানেকের মধ্যেই সে ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে নাশিদের সামনে হাজির হয়। তার চোখের কোণ বেয়ে নোনাজল অনবরত পরছেই। তার এই কান্না জানান দিচ্ছে প্রিয়মানুষের বেদনায় সে নিজেও সমানতালে ব্যথিত। রথি তার সকল অস্বস্তিকে দূরে সরিয়ে নাশিদের টেনে উঠায় এবং কোনরকমে বসিয়ে দেয়। নাশিদ বারবার নিজের নিয়ন্ত্রণ হারালেও রথি শক্ত করে নাশিদের এক হাত ধরে রইলো এবং আশ্বাসের ভঙ্গিতে বলে উঠলো,

-‘একটু ধৈর্য ধরুন, পুলিশম্যান। সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ!’

নাশিদ কোনোরকমে চোখ মেলে শূন্য দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো রথির পানে। রথি রক্তাক্ত শার্টের বোতাম এক এক করে খুলে খুবই সাবধানে নাশিদের শরীর থেকে ছাড়ালো। এর মাঝে রথি এক সার্ভেন্টকে ডেকে জলদি গরম পানি আর একটা ছোট কাপড়ের ব্যবস্থা করতে বললো। সার্ভেন্ট রথির আদেশ পেয়ে দ্রুত চলে যায় সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করতে। রথি ঘরে এসে নাশিদকে স্পর্শ করতেই তার সর্বাঙ্গ সিঁথিল হয়ে এলো। জ্বরের তীব্রতায় নাশিদকে স্পর্শ করা যাচ্ছে না। রথি চোখে জল নিয়ে ভাবছে, “হে আল্লাহ, আপনি আমায় এ কোন পরীক্ষায় ফেললেন!?”

সার্ভেন্ট পানি এনে দিতেই রথি দ্রুত কুসুম গরম পানিতে ছোট কাপড়টা ভিঁজিয়ে নাশিদের পিঠ আর পেট থেকে সাবধানে রক্ত মুছতে শুরু করে দেয়। রক্ত মোছার শেষ পর্যায়ে রথির চোখ আটকে যায় নাশিদের শুভ্র নির্মল পিঠে। এখানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য ক্ষতের দাগ। তবে ক্ষতগুলো গভীর নয়। পেটের দিকে দুটো ছুঁরির আঁচড় দৃশ্যমান। এরূপ অবস্থা দেখে রথির চোখ আবারও ঝাপসা হয়ে এলো। দ্রুত ক্ষতস্থানগুলো পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিলো। অতঃপর কাবার্ড থেকে ঢোলা করে একটি ফতুয়া নিয়ে সেটা নাশিদের গায়ে জড়িয়ে দিলো। নাশিদ শুতে গেলে পিঠে ব্যথা ব্যথা অনুভব করে যার ফলে চোখ-মুখ কুচকে ফেলে। রথি দ্রুত নাশিদকে কাত করে শুইয়ে দেয়। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ক্ষতস্থানের তো ব্যবস্থা করা হলো কিন্তু জ্বরের কী করবে? এর তীব্রতা যে মোটেই কমছে না। রথি যাহোক করেই হোক কিছুক্ষণ কপালে জলপট্টি দিলো। যেহেতু নাশিদ কাত হয়ে শুয়েছে সেহেতু রথির হাত দিয়ে কাপড়টা ধরে রাখলো। সারারাত অনেক সেবা করলো নাশিদের। নাশিদ ঘুমের ঘোরে কিছুক্ষণ বাদে বাদেই বিরবির করছিলো অনবরত। রথি তার কর্ণধার নাশিদের মুখের সামনে নিতেই কিছু অস্পষ্ট বচন শুনলো যা শুনে রথি স্তব্ধ!

-‘উনি আমার মা নন! আমার মা নেই। আমিও তোমার মতো এতিম। মায়ের মতো উনি আমার ভালো চাননি, কখনোই চায়নি। সব থাকলেও মায়ের মমতা আমার কাছে নেই, আমি একা! রথ, আমায় ছেড়ে যেও না। তোমায় ছাড়া আমার পৃথিবী থমকে যাবে। আমার মন খারাপের সঙ্গী হিসেবে তোমাকে চাই, রথ। প্লিজ আমায় ছেড়ে যেও না খুব ভয় হয় আমার, তোমায় হারানোর ভয়!’

রথি বিছানায় বসে নাশিদের মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে আবেগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠলো,

-‘কোথাও যাবো না আপনাকে ছেড়ে পুলিশম্যান। আপনি যে আমার নিঃশ্বাসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গেছেন। আপনি ছাড়া আপনার এই রথও অঁচল। জলদি সুস্থ হয়ে যান পুলিশম্যান, আপনাকে এই অবস্থায় মানায় না।’

পরমুহূর্তেই নাশিদের বাকি কথায় তার টনক নড়লো। সে স্তম্বিত হয়ে কিছুক্ষণ একমনে ভাবলো। ‘মহিলা’ বলে কাকে উদ্দেশ্য করলো? মনিকাকে? নাশিদ রথির কোলে পুনরায় ঘুমিয়ে পরলো। রথিও একসময় নাশিদের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতেই ঘুমিয়ে গেলো দেয়ালে পিঠ লাগিয়ে।
নাশিদের রুম ক্রস করে যাওয়ার সময় ভাবী নাশিদের রুমের দরজা খোলা অবস্থায় পেলো। ভাবী হালকা উঁকি দিতেই শক খেলো। ড্রিম লাইটের আবছা আলোয় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে রথির কোলে মাথা রেখে নাশিদ ঘুম। ভাবী বিড়ম্বনা না করে দ্রুত চলে গেলো। তার অবশ্যই জানতে হবে রথি এবং নাশিদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি না! সম্পর্ক না থাকলে দুজন এভাবে ঘনিষ্ঠতার সাথে ঘুমিয়ে কেন? এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাবীর মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে!

ভোরের দিকে পাখিদের কিঁচিরমিচিরের শব্দে নাশিদের ঘুমটা আকষ্মিক ভেঙ্গে যায়। পিটপিট করে তাকিয়ে যেই পিঠ বিছানায় দিবে তখনই পিঠে জ্বালা অনুভূত হলো না। কিঞ্চিৎ শব্দ করে ধীরে ধীরে উঠে বসলো। তার শরীর কেমন ঘাম দিয়েছে। নাশিদ চারদিকে অবিন্যস্ত দৃষ্টিতে চোখ বুলিয়ে নেয়। পিছে কারো অস্তিত্ব টের পেয়ে নাশিদ ঘাড় ঘুরিয়ে পিছে ফিরে তাকালো। রথি এলোমেলোভাবে ঘুমিয়ে আছে। তার মাথা দেয়ালে ঠেকানো। গতরাতের অস্পষ্ট স্মৃতি একে একে তার অক্ষিকাচে ভেসে উঠলো। তবে ঘুমিয়ে যাওয়ার পর আর কিছুই মনে নেই। এর মানে কী দীর্ঘ রাত রথি নাশিদের সেবা করেছে। নাশিদ এবার পূর্ণ দৃষ্টিতে রথির দিকে তাকালো। এই দৃষ্টিতে পবিত্রতা বিদ্যমান, সঙ্গে একরাশ মুগ্ধতা। রথি নামক মেয়েটি যে কি না নাশিদের স্ত্রী সে আবারও নাশিদকে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয়, এই স্ত্রী ব্যতীত নাশিদ তার জীবনে কিছুই না। রথি-ই তার উত্তম সহধর্মিণী।

হ্যাঁ, তার এই রথি-ই তার হৃদপূর্ণিমা, যে কিনা তার হৃদয়ের পূর্ণিমা হয়ে তার জীবনে এসেছে। যেই পূর্ণিমা এই দুনিয়াকে অগ্রাহ্য করে নাশিদকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে গেছে। নাশিদ শব্দ না করে রথিকে সাবধানে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজের ওষ্ঠ্য-জোড়া আলতো রথির কপালে ছুঁইয়ে দেয়। অতঃপর ধীরে-সুস্থে উঠে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো।

রথিও হুট করে ঘুম ভেঙ্গে যায়। সে আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো নাশিদের বিছানায় সে ঘুমিয়ে আছে। রথি ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো।

-‘প..পুলিশম্যান কোথায়?’

রথি চারপাশে চোখ বুলিয়ে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াতেই ওয়াশরুম থেকে শব্দ আসলো। এর মানে নাশিদ ওয়াশরুমে গেছে। রথি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। বেডশিটের দিকে চোখ যেতেই দেখলো রক্তগুলো শুকিয়ে গেছে। রথি বেডশিট তুলে রুমের বাইরে নিয়ে আসলো। অতঃপর রুমে এসে দেখলো নাশিদ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে গেছে। রথি উদ্বীগ্ন হয়ে নাশিদের দিকে ছুটলো। নাশিদের কপালে হাত রেখে তাপমাত্রা চেক করে বুঝলো জ্বর ছেড়ে গেছে। ভাগ্যিস তখন সার্ভেন্টের কথামতো একটা ওষুধ খাইয়ে দিয়েছিলো। নাশিদ মুগ্ধ হয়ে রথির কর্মকান্ড লক্ষ্য করছে। রথি এবার বিচলিত হয়ে প্রশ্ন করলো,

-‘আপনি ঠিক আছেন তো? আপনার এ অবস্থা হলো কী করে পুলিশম্যান?’

-‘আলহামদুলিল্লাহ ঠিক আছি রথ! চিন্তা করিও না আমায় নিয়ে। আর গতকাল একটা ভয়ানক মিশন ছিলো আমাদের। আমার কোনো প্রটেকশন ব্যবহার করিনি বিধায় ক্রিমিনালরা সুযোগ পেয়েছে। বাট নাও আই এম ওকে।’

-‘গতকাল রাতে তো ঠিকমতো দাঁড়াতেই পারছিলেন না, আবার এখন বলেন আই এম ওকে? ফাইজলামি পাইসেন?’

নাশিদ নিঃশব্দে হাসলো। অতঃপর দুই হাত দুই দুই কাঁধে ঝুলিয়ে রথির সামনে ঝুঁকে নির্লিপ্ত কণ্ঠে বলে উঠলো,

-‘আমার এরকম একটা বউ থাকলে আর কী লাগে বলো? তোমার ওই নরম হাতের জাদু আর আল্লাহ’র দয়ায় আমি অনেকটা সুস্থ।’

-‘আমি এতসব শুনছি না। খাবার আনছি, খেয়ে মেডিসিন নিবেন।’

-‘এই ভোরে? কে জেগে আছে?’

-‘কেন আমি! আমি রাঁধবো আপনার জন্য। বলুন কী খাবেন?’

নাশিদ মুচকি হেসে বলে, ‘তোমার যা ইচ্ছে তাই বানিয়ে আনো!’

রথি কিছু না বলে চলে গেলো। বেডশিট বাইরেই পরে রইলো। নাশিদ ঠোঁটজোড়া কিঞ্চিৎ বাঁকা করে রথিকে নিয়ে এক আকাশ-সম স্বপ্ন বুনতে ব্যস্ত। নাশিদ হেলান দিতে গিয়েও পারলো না। কতোকগুলো লারকির উপর পরেছিলো সে, যার কারণে এমন বেহাল অবস্থা। কিছু সময় অপেক্ষা করার পর রথি কিছু বানিয়ে আনলো। বেশি কিছু না শুধুই নুডুলস। নুডুলস ব্যতীত হাতের কাছে রথি কিছুই পায়নি।

নাশিদের সামনে নুডুলসের বাটিটা রেখে রথি বলে উঠলো,

-‘ফটাফট খাওয়া শুরু করুন, রাত থেকে না খেয়ে আছেন আপনি!’

-‘তুমি খাইয়ে দাও!’

নাশিদের আবদার রথি ফেলতে পারলো না। রথি নাশিদের সামনে বসে নাশিদকে খাইয়ে দিতে লাগলো। নাশিদ তৃষ্ণার্ত দৃষ্টিতে একমনে রথিকেই দেখে চলেছে। পুরো খাওয়াটা সে রথিকে দেখেই শেষ করলো। নাশিদের ঘোর লাগা দৃষ্টি রথিকে বিব্রত করলেও সে কোনোরূপ অভিব্যক্তি প্রকাশ করলো না। খাওয়া শেষ হতেই নাশিদের দেখিয়ে দেয়া ওষুধগুলো নাশিদকে খাইয়ে দিয়ে রথি নাফিসার ঘরে চলে গেলো। নাশিদ বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে আপনমনে মনে উঠলো,

-‘কবে তোমায় সম্পূর্ণভাবে নিজের কাছে রাখবো রথ? আমি যে চেয়েও তোমায় আপন করতে পারছি না। পরিস্থিতি আমায় হাতকড়া পরিয়ে রেখেছে!’

______________________________

রথি হসপিটালে কেবিনের বাইরে চুপ করে বসে আছে। তার দৃষ্টি স্থির। তার সামনের কেবিনে তার মাকে চেকআপ করানো হচ্ছে। সাইফ বোনের পাশে বসে আছে। ক্ষমা চাওয়ার মুখ তার নেই। মার্জান অদূরে তাতানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নাশিদ ডক্টরের সাথে আলোচনা করছে। এই অসুস্থ অবস্থায় রথির মায়ের কথা শুনে রথির সাথেই চলে এসেছে। সাইফ তার বোনের এই চুপ থাকাটা মেনে নিতে পারছে না। সাইফ বোনের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কাতর কন্ঠে বলে উঠলো,

-‘আমায় ক্ষমা করে দে বোন! আমি সত্যি জানতাম না মার্জান এই অঘটন ঘটিয়ে এসেছে। তুই আমায় আর মাকে ক্ষমা করে দে। মা যেদিন তাতানের মুখে তোর ঘটনা শুনেছে সেই থেকে দিন-রাত কেঁদেই কাটিয়েছে। কেঁদেকেটে এমন অবস্থা করেছে যে ভোরবেলা মা…’ সাইফ আর বলতে পারলো না হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলো। রথির চোখে জল নেই, সে যেন পাথরে রূপান্তরিত হয়েছে৷ মায়ের এমন একটা খবর সে একদমই আশা করেনি।

অদূরে মার্জান কাঁদছে অনবরত। সাইফ গতরাতেই বলেছে তাকে তালাক দিবে আর ভোরবেলা এমন অঘটন ঘটে গেলো। সে এখন কোথায় যাবে, কী করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। পাপের শাস্তি বুঝি এভাবেই চক্রাকারে ফিরে আসে? রথি উত্তর দিচ্ছে না দেখে সাইফ রথির পাশ থেকে উঠে দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। তখনই ডক্টর কেবিন থেকে বেরিয়ে আসলো। নাশিদ দ্রুত ডক্টরের কাছে এসে বললো,

-‘ডক্টর..’

-‘শি ইজ আউট অফ ডেঞ্জার। উনি এখন ঘুমোচ্ছেন। ঘুম থেকে উঠলে আপনারা একে একে দেখা করতে পারবেন। তবে আমি পূর্বের ন্যায় আবারও বলছি, ওনাকে কষ্ট এবং মানসিক চাপ থেকে বিরত রাখবেন। আজ উনি স্ট্রোক করেছেন। এ কোনো ভালো লক্ষণ নয়। ওনাকে যথেষ্ট সময় দিন।’

-‘থ্যাংকিউ ডক্টর!’

ডক্টর মাথা নাড়িয়ে সেই স্থান প্রস্থান করলেন। অতঃপর নাশিদ রথির পাশে বসে রথির কাঁধে আলতো হাত রেখে ক্ষীণ কন্ঠে বললো,

-‘সব ঠিক আছে। ট্রেস নিও না!’

রথি আলতো করে নাশিদের কাঁধে মাথা রাখলো। সাথে সাথেই তার চোখ বেয়ে নোনাজল গড়িয়ে পরলো। ওদের একসাথে সাইফ এবং মার্জান উভয়ই খেয়াল করলো কিন্তু কেউ-ই কোনোরূপ অভিব্যক্তি প্রকাশ করলো না। হয়তো দুজনেই বুঝলো, এই অচেনা ছেলেটি রথির ভরসার কেন্দ্রস্থল!

~চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here