#হৃদরোগ
#অহর্নিশা
#পর্ব_সংখ্যা ২
. আমি বাসের মধ্যে কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম টেরই পাইনি, অনু আর স্নেহার ডাকে যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন পাশে তাকিয়ে দেখি সেই সুদর্শন পুরুষটি নেই । আমার পাশের সিট ফাঁকা । আমি যেনো কোনো ঘোরের মধ্যে ছিলাম „„„ একবার ফাঁকা সিটের দিকে তাকাচ্ছি তো একবার ওদের দিকে…
এই এরকম হ্যাবলাকান্তর মতো তাকাচ্ছিস কেনো ভাই ? এই বলে স্নেহা অনুকে দাঁত কেলিয়ে বলল …. এই অনু সু কে একটা ঘা দে তো , দেখবি ঘুমের দাদুও বাপ বাপ করে পালাবে ।
আমি স্নেহার দিকে চোখ গরম করে তাকালাম তারপর কাউকে কিছু না বলে বাস থেকে নেমে পড়লাম। ওরাও আমার পেছনে নামলো । নেমে আমারা হাঁটতে শুরু করলাম, আসলে মোরমাথা থেকে কুড়ি মিনিট হাঁটলেই আমার মামার বাড়ি। ওরা তো বাস থেকে নেমেই বক বক করে যাচ্ছে , আমি শুধু তাদের প্রশ্নে হুঁ হাঁ বলছিলাম। আমি এতই অন্যমনস্ক ছিলাম যে কখন আমি এগিয়ে গেছি খেয়ালই করিনি। কোনো শব্দ কানে না আসায় পাশে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই তারপর পেছনে তাকিয়ে দেখি দুজনে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। আমি নিঃশব্দে তাদের পাশে দাঁড়ালাম…
তোরা আবার সং সেজে দাঁড়িয়ে পড়লি কেনো?বিরক্তি প্রকাশ করে বললাম„
এই তোর কী হয়েছে বলতো ?? তখন দিয়ে আমি আর অনু তোকে লক্ষ করছি..
কিছু হয়নি আমার। মাথাটা একটু ব্যাথা করছে , তোরা তো জানিস আমার বাসে উঠলেই টায়ার্ড লাগে তাছাড়া কিছু না ।
সত্যি কিছু হয়নি তো ? অনু চোখ ছোটো ছোটো করে বলল„„„
না রে ভাই কিছু হয়নি। এবার তো চল…
. আমার বনের জন্মদিন উপলক্ষে এক সপ্তাহ মতো ছিলাম তিনজনেই । আমরা যাওয়ায় মামা , মামি বেশ খুশি হয়েছিলেন। আমার অমূল্য রত্ন দুটোও বেশ খুশি ছিল, শুধু খুশি থাকতে পারিনি আমি। ভালোমতো ঘুমাইনি কতদিন…. আমার নির্ঘুম রাতের কারন তার ওই বাদামি চোখ দুটো । যখনই চোখ বন্ধ করতাম তার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠতো ।
. এই অনুভূতিটা একদম নতুন ছিল আমার কাছে। এই ভালো তো এই খারাপ। তার কথা ভেবে কখন হাসতে ইচ্ছে করতো তো কখন কাঁদতে, কাউকে নিজের মনের কথা না বলতে পেরে কেমন দম বন্ধ লাগছিলো…. পাগল পাগল লাগছিলো নিজেকে। পরে নিজের মস্তিষ্কের সঙ্গে একপ্রকার যুদ্ধ করে ব্যাপারটা জানিয়েছি দুজনকে। আমার কথা শুনে ওরা যেন আকাশ থেকে পড়ল…
অনু হঠাৎ আমার দিকে এগিয়ে এসে নিজের হাতের উল্টোপিঠ ছুঁয়ে বলতে লাগলো…. তোর শরীর খারাপ? নাকি সাত সকালে কিছু খেয়েছিস বলতো ? উল্টোপাল্টা বকছিস„„„
তুই আর ভালোবাসা? তুই না প্রেমট্রেমে বিশ্বাস করিস না ?? হঠাৎ কী হলো ভাই ?? স্নেহা দাঁত কেলিয়ে বলল,,,,
এতক্ষণ ওদের কথা আমি চুপচাপ মাথা নীচু করে শুনছিলাম… যখন আমি ওদের দিকে তাকিয়েছি ওরা আমার অশ্রুসিক্ত চোখ দেখে থমকে গেল , ছুটে এলো আমার কাছে… আমিও সময় ব্যয় না করে জাপটে ধরলাম দুজনকে „„„
আমাকে আর কিছু বলতে হয়নি , আমার নিঃশব্দ অশ্রু বিসর্জন বলে দিয়েছে আমি মিথ্যে কিছু বলিনি
. ” ভালোবাসা ” শব্দটা ছোটো হতে পারে কিন্তু এর গভীরতা অনেক বেশি। হ্যাঁ আমি এখনকার প্রেম ভালোবাসায় বিশ্বাসী নয় । এখনতো সবাই টাইম পাসের জন্য প্রেম করে, যেটা আমার একদম পছন্দ নয় । আমি জীবনে একটাও প্রেম করিনি , এমনকি স্কুলে থাকতে আমার কোনো ছেলে বন্ধুও ছিল না । এখনো অবশ্য ছেলে বন্ধু নেই কিন্তু দু তিনটে ক্রাশ আছে । যদিও এখন আমরা নতুন কলেজে উঠেছি তাই খুব একটা বন্ধু বান্ধব নেই । স্নেহার দু একটা ছেলে বন্ধু হবে কিন্তু অনুর তো অসংখ্য আছে। আমি একটু ইন্ট্রোভার্ট টাইপের, চেনা মানুষ ছাড়া কথা বলতে খুব একটা পছন্দ করি না । কিন্তু আমি ওই মানুষটার সাথে কথা বলার জন্য মরিয়া প্রায় „„
আমি এমন একজন মানুষের প্রেমে পড়েছিলাম যার নাম , পরিচয়, ঠিকানা কিছুই জানতাম না । কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল কোনো একদিন তাকে ঠিক খুঁজে পাবো । হলোও তাই….
একদিন আমরা তিনজনেই অনুর বাড়ি গেছিলাম গ্ৰুপ স্টাডি করতে , সেই দিন…..
চলবে „„
( পরের পর্ব পেতে আমার পেজে ফলো দিয়ে রাখুন , ধন্যবাদ 💜 )