#হৃদয়ের_সম্পর্ক (পর্ব ১২)
#গল্পের_পাখি (শেফা)
·
·
·
গলার ফিনফিনে চেইনটা আঙ্গুলে ঘোরাতে ঘোরাতে রুম থেকে বের হলাম। মাথাটা নিচু করে প্রশান্তির এক চিলতে হাসি ঠোঁটে মাখিয়ে হাটতে হাটতে দরাম্ করে কিসের সাথে যেন বারি খেলাম। তাকিয়ে দেখি আরিয়ান। সে পুরো কালো রঙের কমপ্লিট সুট পরেছে। মনটা একটা কথায় আমাকে জানিয়ে দিলো, মানুষটা আসলেই সুদর্শন। ওর চোখ দুটো আমার সবকিছুতে নির্বিঘ্নে বিচরণ করে বেড়াচ্ছে।
.
ওর চোখের নেশা কাটিয়ে আমাকে বললো,
— চলো তো আমার সাথে, মা কে বলে তোমাকে কিছু দামী দামী অলংকার পরিয়ে দিই। দামী অলংকারের ভীরে তোমার সৌন্দর্যে যদি একটু মলিনতার ছাপ পরে, তাহলে হয়তো সবার কুনজর থেকে তোমাকে রক্ষা করতে পারবো।
— মানে ?
— কি এমন করলে তোমার সৌন্দর্যে একটু খুঁত আঁকতে পারবো আমাকে বলে দাও পাখি ! নাহলে যে সবার কুনজরে তোমাকে হাড়িয়ে ফেলার ভয়টা আমার মনে গেড়ে বসে থাকবে। আমি যে শান্তিতে নিশ্বাসও নিতে পারবো না।
— আ..আমি…..
.
আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে আরিয়ান তার হাতটা আমার গালে রাখলো, তারপর আমার চোখের টানা টানা করে আঁকা কাজল ওর বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে ডলে একটু ছড়িয়ে দিলো। আর বললো
— আমার করা এই খুঁতটাকে আর নিখুঁত করো না প্লিজ।
অতঃপর সে নিচে নেমে গেল।
.
.
এখন বিকাল। অনুষ্ঠান সন্ধ্যায় কিন্তু আমরা সবাই তৈরী। আজ আরিয়ান আর আয়াত দুজনে একই রকম পোশাক পরেছে। কালো রঙের কমপ্লিট সুট। ওদের একসাথে দেখে আমার চোখ জুড়িয়ে গেছে।
.
আন্টি আর আম্মু রান্না ঘরে সব কাজ দেখাশুনা করছে। আংকেল তার ম্যানেজারের সাথে কথা বলছে। আয়াত বাড়ির একজন কাজের লোকের সাথে বাগানে আছে। আরিয়ান কোথায় তা জানি না। হঠাৎ আন্টি দৌড়াতে দৌড়াতে এসে আমার হাতে একই রকম দু’টো স্বর্ণের ব্রুজ দিয়ে বললো,
— এই দু’টো ব্রুজ আরিয়ান আর আয়াতের বুকে লাগিয়ে দাও তো মা, আমি খুব ব্যস্ত।
.
তারপর ধীরে ধীরে চলে গেল। তার ব্যস্ততা সম্পর্কে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তবুও এতো দিনে আমি বিষয়টা মানিয়ে নিয়েছি। প্রথমে গেলাম আয়াতের কাছে। গিয়ে ওর কান্ড দেখে আমি হাসি থামাতে পারছি না।
.
বাগানের এক কোনে কবুতরের একটা ঘর আছে। সেখানে দাড়িয়ে আয়াত কবুতর গুলোর দিকে গম ছিটাচ্ছে আর একটা ছোট লাঠি দিয়ে ওদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। হঠাৎ কোখা থেকে একটা মুরগি বাগানে ঢুকে পরলো। আয়াত কিছু গম ঐ মুরগি টার সামনেও দিল। কিন্তুু মুরগিটা গম না খেয়ে, গমের পাশের জায়গাটায় ঠুকরাতে লাগলো। এটা দেখে আয়াত তো সেই আকারে রেগে গেলো। নাকটা কুঁচকায়ে লাল করে, ঠোঁটটা ফুলিয়ে সামনের দিকে একটু উঁচু করে বাড়ির কাজের লোকটাকে বললো,
— মিঞাভাই, মুলগীটা খাত্তে না কেনু ?
— তা তোহ মুই ঠাহর করতে পারতাছি না ছোডভাই। (মাথা চুলকায়ে)
.
— ইইইইইইইইইইহ্
আয়াত এমন একটা অদ্ভুত শব্দ বের করে, ওর হাতের লাটিটা দিয়ে মুরগিটার মাথায় ঠাঁস্ করে একটা বারি মারলো। আর মুরগিটাও সাথে সাথে অদ্ভুত ভাবে পাশ ফিরে, সঠিক জায়গায় ঠোকর দিয়ে গম খেতে থাকলো। আয়াত এইবার হাতের লাঠিটা দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে, কোমরে হাত রেখে একটু সুর টেনে বলতে লাগলো,
— পাগল মুলগী একটা হুহ্ (ঠোঁটে বাঁকা হাসি দিয়ে)
তারপর আমার হাসির শব্দ শুনে, দৌড়ে আমার কাছে চলে আসলো। আর বলতে লাগলো,
— মাম্মাম তোমাকে তোহ্ অনেক্ক সুন্দল লাগছে।
— আমার বাবা টা কেও আজ অনেক্ক হ্যান্ডসাম লাগছে। (ওর সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে)
.
আমার কথায় আয়াত মাথা নিচু করে লজ্জা পেতে থাকলো। ওর এ অবস্থা দেখে আমি ওকে টাইট করে জরিয়ে ধরলাম। আমার মন ভরে ওর গালে চুমু আঁকতে লাগলাম। আর সে তার গাল মুছতে মুছতে আমাকে বললো,
— মাম্মাম তোমাল লিপতিক আমার গালে লেগে যাবে।
— বাবা আমি তো লিপস্টিক মুছে ফেলেছিলাম।
— কিন্তু ঠোঁটটা কেমন লেড লেড কালালেল লাগছে। (আমার ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে দেখতে লাগলো)
আমি ওর হাতটা ধরে, সেখানে জোরে একটা চুমু দিয়ে ওকে দেখিয়ে বললাম,
— দেখো বাবা, লিপস্টিক লাগেনি।
ও হাতটা পরখ করে ভ্যাবলা মার্কা হাসি দিতে লাগলো। আমি ওর বুকে ব্রুজটা লাগিয়ে, ওকে কোলে করে নিয়ে বাড়ির ভেতরে যেতে লাগলাম। আর ও আমার কানের দুল নিয়ে খেলতে লাগলো।
.
বাড়ির ভেতরে ঢুকে, ওকে আংকেলের কাছে রেখে আমি গেলাম আরিয়ানকে খুঁজতে। তাকেও ব্রুজটা দিতে হবে।
.
কোথাও আরিয়ানকে দেখতে পারছি না। হাল ছেড়ে দেওয়ার আগে ভাবলাম একবার ওর রুমে দেখে আসি, কোনো কারনে রুমেও যেতে পারে। তার রুমে ঢুকেও আমি ওর দেখা পেলাম না। তবে ওর বারান্দা থেকে খুব মৃদু আওয়াজে গুনগুন করে গান গাওয়ার শব্দ পেলাম। ওর রুমের বারান্দাটা আমার খুব পছন্দের। বারান্দাটা প্রায় আমার রুমের মত বড়, তবে গোল। সিমেন্টের সাচের রেলিং এর উপর কোনো লোহার গ্রিল দেওয়া নাই, ফাঁকা। মাঝে দুটো মোটা মোটা থাম রয়েছে যা একদম নিচ তলার ফ্লোর অবদি গিয়ে থেমেছে। এক দিকে কিছু ঝুলন্ত টবে লতানো ফুল গাছ আর বিপরীত দিকে সাদা রং এর বেতের দোলনা। আয়াত এখানে খেলতে খুব ভালোবাসে।
.
বারান্দায় গিয়ে দেখলাম সে রেলিং এর উপর বসে, মোটা ঐ থামে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে আস্তে আস্তে গান গাচ্ছে,,,,
.
~ কন্যা রে, কন্যা রে,,,,,
বাঁকা চুলেতে খোঁপা, আর বাঁইন্ধো না রে ~
~ ঐ চুলেতে যাদু আছে রে, আমার ঘুম আসে না রাতে,,,,
একলা ঘরে রে~
.
ওর গম্ভীর কণ্ঠেও যে গানটা এতো সুরেলা হতে পারে, আমি যেন তা বিশ্বাসই করতে চাইছি না। ধীরে ধীরে ওর কাছে গেলাম। এই রক্তিম সন্ধ্যায়, বারান্দায় ড্রীম লাইটের মতো ছোট ছোট কয় একটা রঙিন লাইট জ্বলছে। যা সম্পূর্ণ অস্পষ্ট। কিন্তু তবুও আমি যেন স্পষ্ট দেখলাম ওর বন্ধ চোখের কোনাটা কেমন চকচক করছে।
.
আমি ওর কাছে গিয়ে খুব ধীরে ওকে আওয়াজ দিলাম,
— শুনছেন !
.
ও আরো ধীরে ধীরে চোখটা খুলে আমার দিকে তাকালো। ওর চোখের সাদা অংশটা যেন, রক্তজবার কাছে থেকে লাল রং টা কেড়ে নিয়েছে। আমি নিশ্চিত ওর চোখে কোনো ধূলা পরেনি। আমি ব্রুজটা ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে, আস্তে করে বলালাম,,,
— আন্টি এটা আপনাকে দিতে বলেছে।
.
তারপর ও হুট করে আমার সামনে দাড়িয়ে পরলো। যেন উত্তাল সমুদ্রের অশান্ত ঢেউ। আর সেভাবেই আমাকে বললো,
— পরিয়ে দাও।
আমি কাঁপা হাতে ব্রুজটা ওর কোটে লাগিয়ে দিলাম। এক দৌড়ে নিচে নেমে আসতে চাইলাম। কিন্তু এক পা ফেলার আগেই আমার হাত টেনে ধরে ওর বুকে আঁছরে ফেললো।
.
বৃক্ষ যেমন তার শেকর দিয়ে মাটিকে আঁকড়ে ধরে, ঠিক সেভাবে ওর বিক্ষিপ্ত হাত দিয়ে আমাকে আঁকড়ে উঁচু করে ধরলো। আমার কলিজাটা বজ্রপাতের মতো চমকে উঠলো। হৃদপিন্ডের কথাটা না হয় বাদই দিলাম। ফ্লোর থেকে আমার পা কিছু না হলেও সাত আট ইঞ্চি উপরে। নিজের ব্যালেন্স ঠিক রাখার জন্য ওর কাঁধটা শক্ত করে আমার দু’হাত দিয়ে পেচিয়ে নিলাম।
.
তারপর আমার কানের কাছে ওর মুখটা নিয়ে এসে ফিসফিস করে বলতে লাগলো,
— তোমার…. বুকের…. বাম পাশের…. লাল টকটকে…. ধুকপুকানি টা…. আমাকে…. দিয়ে দাও। আমার…. ধুকপুকানি টা…. তোমাকে…. দেখার পর থেকে…. কাজ করা…. বন্ধ করে…. দিয়েছে…. ।
.
আমি রীতিমত কাঁপছি। ওর গালের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি, আমার গালে গোলাপ ফুলের কাটার মতো হিঙ্গছে।
.
কয় এক দন্ড আমাকে ওর হৃদয়ের স্পন্দন গুনতে দিলো। তারপর আমাকে আস্তে আস্তে ওর বুক থেকে নামিয়ে, চুপচাপ বারান্দা থেকে চলে গেলো। কিন্তু আমি আর ওখান থেকে এক বৃন্দু নড়তে পারলাম না। যেন পাহাড়ের মতো জমে গিয়েছি।
.
আসলে আপনি যখন কাউকে কাছে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করবেন, বছরের পর বছর তার স্পর্শ পাওয়ার জন্য সাধনা করবেন, নিজেকে পুড়াতে থাকবেন তার বিহনের দহনে, তখন যদি তাকে হঠাৎ করে কাছে পান অথবা তার স্পর্শ পান তাহলে আপনি খুশি হবেন। আপনার হৃদয় তার স্পর্শে শান্ত হবে। কিন্তু যদি আপনি কোনো এক নির্দিষ্ট মানুষের কাছে আসা, স্পর্শ, তার হৃদয়ের ব্যাকুলতা অনুভব করার কোনো ভাবনা আপনার কল্পনাতেও না আনেন, আর সে যদি হঠাৎ আপনার এতোটা কাছে আসে তখন আপনি অবশ্যই হতবাক হবেন, চমকে যাবেন, আপনার হৃদপিণ্ডের গতি স্তব্ধ হয়ে যাবে। আপনি বরফের মত জমে যাবেন।
.
.
অনুষ্ঠানে এখন প্রায় সবাই উপস্থিত। মিরা এবং ওর পরিবারও এসে হাজির। আংকেল আর দেরী না করে তার সমস্ত সম্পত্তি আরিয়ানের নামের দলিলে সিগনেচার করে দিলেন। এবং অফিসিয়াল ভাবে ওনার ব্যাবসার নতুন অনার হিসেবে আরিয়ানকে ঘোষণা করলেন। তবে আরিয়ান হয়তো ওর নিজের পেশা কেই বেশি প্রাধান্য দিবে।
.
এবার আরিয়ান আর আমাকে সবার মাঝে দাঁড়া করালেন। আন্টি আর আংকেল সবাইকে উদ্দেশ্য করে জানিয়ে দিলেন আমাদের বিয়ের কথা। কথাটা শুনে সবাই খুশি হয়ে হাত তালি দিতে লাগলো। আমার আয়ু সোনা কি বুঝলো না বুঝলো কে জানে, সবার হাত তালি দেওয়া দেখে সেও খুশিতে লাফাতে থাকলো। তার জন্য আমিও খুশি হয়ে গেলাম। তারপর আংকেল আন্টি এসে আমাকে একটা মোটা সাবিত্রী চেইন উপহার দিলো। আর আমাদের অনেক দোয়া করলো। আমার আম্মু এসে আরিয়ান কে একটা দামী হাতঘড়ি উপহার দিলো। আরিয়ান উপহার পেয়ে খুব খুশি হলো এবং সাথে সাথে তার হাত এগিয়ে দিলো। আম্মু নিজের হাতে ওকে ঘড়ি পড়িয়ে দিলো।
.
অতঃপর আমার আয়ু সোনা একগুচ্ছ সাদা আর লাল গোলাপ হাতে গুটি গুটি পায়ে আমাদের সামনে এগিয়ে আসলো। গোলাপ গুলো আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে আমাকে বলতে লাগলো,
— ওয়েলকাম তু আওয়াল হোম মাম্মাম !
আমার বুকের মধ্যে কেমন জানি ভালোবাসার ফোয়ারা চলতে শুরু করলো। আমি না চাইতেও, আমার নিচের ঠোঁট টা হাল্কা উল্টায়ে কাঁপতে লাগলো আর চোখ দুটো ছলছল করতে শুরু করলো। আমি ওর ছোট্ট হাত থেকে গোলাপ গুলো নিলাম। ওকে আদর করে চুমু দেওয়ার আগেই পালিয়ে গেল আমার আম্মুর পিছে। আমি শতভাগ নিশ্চিত, এগুলো ওকে আরিয়ান শিখিয়েছে।
.
সব শেষে আরিয়ান আমার সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসলো। আস্তে করে আমার বাম পা টা ধরে ওর হাঁটুতে রাখলো। পকেট থেকে একটা হোয়াইট গোল্ডের নূপুর বের করে আমার পায়ে পড়িয়ে দিলো। এবং লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে সবার সামনেই আমার পায়ের পাতায় একটা চুমু খেলো।
.
আরিয়ান না তো আমার প্রেম আর না আমার ভালোবাসা। কিন্তু ওর এসব পাগলামি কান্ডে আমি বুঝে গেছি যে, আমি ওর প্রথম ভালোলাগা, প্রথম প্রেম, প্রথম ভালোবাসা। যা ওর হৃদপিণ্ডে রক্তক্ষরণের অগ্নিগিরি হয়ে দপদপ করে প্রস্ফুটিত হচ্ছে।
.
আমি দেখছি ওকে, ওর শীতল চাহনি। আর দেখছি আংকেল আন্টিকে, যারা আপাতত একে অন্যের হাত ধরে শান্তির অতল গহ্বরে তলিয়ে আছে। আর দেখছি আমার আম্মু আর আয়াতকে, আম্মুর চোখে পানি। আর আয়াত, সে আমার আম্মুর হাত ধরে, জীবনের মমতা ভরা সূচনার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। হঠাৎ চোখ গেল মিরার দিকে। আমি কেঁপে উঠলাম। ওর হিংসা মিশ্রিত চোখ, আমাদের সুখের মুহূর্তকে পুড়িয়ে দিতে সক্ষম।
.
রাত আট টার দিকে সব নিমন্ত্রিত অতিথিরা রাতের খাবার খাচ্ছে। আমি উপরে একা একা দাড়িয়ে সবাইকে দেখছি আর ডান পায়ের আঙ্গুল দিয়ে বাম পায়ের নূপুরের উপস্থিতি নিশ্চিত করছি। তখনই একটা টিসু পেপার কে যেন মুঠো করে আমার গায়ে ছুড়ে মারলো। কে মারলো তা বুঝতে পারলাম না কিন্তু খুলে দেখলাম তাতে লেখা, “আয়াতের রুমে এসো”।
.
নিচে তাকিয়ে দেখলাম। আরিয়ান বা আয়াত কাউকেই চোখে পড়লো না। ভাবলাম হয়তো ওরাই আমাকে ডাকছে। আয়াতের রুমে গিয়ে দেখলাম, মিরা আয়াতের টেবিলের সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে। ওর হাতে একটা সফট্ ড্রিংকস্ এর গ্লাস। গোল গোল করে গ্লাসটা ঘুড়িয়ে আপাতত ওতেই মনোনিবেশ করে আছে।
·
·
·
চলবে…………………..