হয়ত সিজন ২ পর্ব শেষ

#ছায়া_হয়ে_মিশে_রব_কল্পনাতে
শেষ পর্ব
.
সারা দেশ আজ প্রতিবাদে উত্তাল। দেশের জনগণ একত্রিত হয়ে মোমবাতি মিছিল করছে, সমাবেশ করছে। টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব #Justicefortapousi হ্যাশট্যাগে ভরে গেছে। আদালত এলাকায় অসংখ্য মানুষ অপেক্ষা করছে ন্যায় বিচারের আশায়। প্রিয়তা নিজের ক্যামেরা পারসনকে সাথে নিয়ে প্রতিটি মুহূর্তের আপডেট জানাচ্ছে স্টুডিওতে থাকা সংবাদ পাঠককে।
.
-” একটু রেস্ট নেই ম্যাম।”
-” আচ্ছা।” বলেই প্রিয়তা বর্ষণদের কাছে এগিয়ে গেল। আজ আদালতে রায় দিবে। সেই জন্যই সকাল থেকে বর্ষণ কিছুই মুখে তুলেনি।
.
-” বর্ষণ ভাই।”
-” কে? ওহ প্রিয়তা। বলো।”
-” কিছু খাবেন?”
-” না। আচ্ছা আপিল বিভাগের রায়ই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে তাইনা?”
-” হুম।”
-” দোষীরা শাস্তি পাবে তো?”
বর্ষণের প্রশ্নের জবাব প্রিয়তা এখন দিতে পারবে না। একটু পর কী হবে তা কেউ জানে না।
.
পাঁচবছর আগে….
হারুনের সাথে বিয়ে করবে না বলে জিদ ধরে বসেছিল প্রিয়তা। আতিয়া খাতুন কিছুতেই মেয়েকে বুঝাতে পারছিলেন না।
.
সেদিন প্রিয়তাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে আসা হারুন ছিল অন্য এক হারুন। অপমানে প্রজ্বলিত হৃদয়ে প্রতিহিংসার আগুন জ্বলছিল ওর অন্তরে। ক্রধে রাতের আঁধারে প্রিয়তাদের বাসায় পাড়ার ছেলেপেলে দিয়ে ইট পাটকেল ছুড়ে মারে ও। আতিয়া খাতুন ছেলে-মেয়ে নিয়ে ডাইনিং টেবিলের নিচে বসে ছিলেন সে সময়। প্রান্ত পুলিশের জরুরি নাম্বারে ফোন করে সাহায্য চায়। প্রিয়তা সেই রাতেই বুঝে গিয়েছিল পাড়ায় থাকা মানে নিজেদের জন্য বিপদ ডেকে আনা। বাধ্য হয়ে পরেরদিন বাসা দেখা শুরু করে। চলতি মাস সহ পরের মাসের অগ্রিম ভাড়া দিতে হয় দুই বাসায়। তবুও জীবন তো বাঁচানো গেল এই ভেবেই ও খুশি ছিল।
ঢাকায় ছয় মাস চাকরি করার পর মা- ভাইকে নিয়ে আসে। প্রান্তর স্কুল ট্রান্সফারে সমস্যা হচ্ছিল বলেই দেরি।
.
-” ধন্যবাদ প্রিয়তা।”
বর্ষণের কথায় প্রিয়তার ধ্যান ভাঙে।
-” ধন্যবাদ কেন?”
-” তুমি না থাকলে এতো মানুষের সাপোর্ট পেতাম না।”
-” উঁহু, আমি নিজের কাজ করেছি।”
-” তাও। তুমি অনেক উপকার করেছ।”
সত্যি প্রিয়তা এই কেসের শুরু থেকে শেষ অবধি ছিল। প্রতিটি ক্লু ধরে ধরে পুলিশকে সাহায্য করেছে। টেলিভিশনে রির্পোট করেছে।
.
সামিরার দোষ স্বীকারোক্তির পর পুলিশের প্রধান টার্গেট ছিল কামাল আহসান, মিজান ও আসিফ। মিজানকে ধরতে একমাস লেগেছিল। গাজীপুরের এক আত্মীয়ের বাসায় লুকিয়েছিল ও। আর কামাল আহসান এবং আসিফ বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান বর্ডার ক্রস করার সময় আটক হয়। শুরুতে কেউ দোষ স্বীকার করছিল না। কিন্তু পুলিশের কয়েকটা মার খেয়ে মিজান মুখ খুলে। মিজানের দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির কারণে কামাল ও আসিফের অন্তবর্তীকালীন জামিনের কাগজ মঞ্জুর হয়না। এএসপি ওবায়দুল হক নিজে এই কেস হ্যান্ডেল করেন। তাপৌষির জীবনবৃত্তান্ত শুনে তিনি ভীষণ মর্মাহত হন। বাসায় যেয়ে নিজের দুই মেয়েকে তাপৌষি নামক আঠারো বছরের তরুণীর গল্প শোনান। যেই মেয়েটি জীবনের শেষ কিছুদিন খুব দুঃখে কাটিয়েছে। মায়ের মৃত্যু, বাবার দ্বিতীয় বিয়ে, সৎ মা- ভাইয়ের অত্যাচার, ভালোবাসার মানুষটির উদাসীনতা, সেই সাথে সমাজে টিকে থাকার লড়াই; মেয়েটি কষ্ট পেয়েছে, অনেক কষ্ট পেয়েছে। রাজকুমারী থেকে ভিখারিনী হয়েও জীবন চালাতে চেয়েছে। তাও বাঁচতে চেয়েছিল। ভেঙে পড়েনি।
কিন্তু জানোয়ার গুলো ওকে বাঁচতে দেয়নি। মিজান যখন প্রিয়তা হত্যা কাহিনী বর্ণনা করছিল এএসপি ওবায়দুল হকের চোখে তখন পানি চিকচিক করছিল। উনার বড় মেয়েটা প্রিয়তার বয়সী। শুধু এএসপি একা নন সেখানে উপস্থিত সকলের চোখ সেদিন লাল হয়ে উঠেছিল।
আর বর্ষণ?
তাপৌষির মৃত্যু খবর যখন ওর কানে পৌঁছায় ও সেদিন সকাল থেকে রাত অবধি নিজের বিছানায় বসে ছিল। তনয়া বেগম ছেলের কষ্টে কেঁদেছিলেন.. খুব কেঁদেছিলেন। পরম করুণাময়ের নিকট হাত জোর করে শান্তি প্রার্থনা করেছিলেন। নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে এই নিয়মে তা উনি কখনোই জানতেন না। নিষ্পাপ মেয়েটার মৃত্যু, বোনের মৃত্যু, আদরের কলিজার ধনের কষ্টের একমাত্র কারণ যে তনয়া বেগম নিজেই। অসুস্থ হয়ে বিছানাগত হন তিনি। এক বছর পর তিনিও চলে যান এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। এতো মানুষের অপরাধী হয়ে আর কত বাঁচা যায়?
___________________________________________
কামাল আহসান, সামিরা, আসিফ ও মিজানকে যেদিন আদালতে তোলা হয় সেদিনও সারাদেশ এমন উত্তাল ছিল। কারণটা ছিল প্রিয়তা। সংবাদ পত্র থেকে শুরু করে খবরের হেড লাইনে ছিল ” তাপৌষি হত্যার ন্যায় বিচার আশা করছে জনগণ ” কিংবা ” আঠারো বছরের ফুল ফুটে উঠার আগেই কেটে ফেলা হলো ফুল গাছের গোরা”, “মেয়েটিকে বাঁচতে দেওয়া হলো না”। তবে এই সকল হেডলাইনে সাধারণ মানুষ বিশেষ আকর্ষণ দেখায়নি।
” জানোয়ারদের আঘাতে রক্তাক্ত প্রমিকার অপেক্ষায় রেল স্টেশনে অপেক্ষমাণ তরুণ” এই একটি হেড লাইন বাংলাদেশ কাঁপিয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশের প্রতিটি অলিতে গলিতে তাপৌষি বর্ষণের বেদনাময় প্রেম কাহিনীর চর্চা হচ্ছিল। কেঁদেছিল হাজারো মানুষ তাপৌষির জন্য, বর্ষণের জন্য- ওদের অসমাপ্ত প্রেমের জন্য।
প্রতিবাদী মানুষ সেদিনও জেলা জজ আদালতের সামনে রায়ের অপেক্ষা করছিল। প্রত্যেকে হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড।
সবার প্রত্যাশা সফল হয়েছিল। কামাল আহসান, আসিফ ও মিজানকে বিচারক ফাঁসির আদেশ দেন। সেই সাথে সামিরাকে নারী পাচার চক্রের সক্রিয় হোতা এবং সেই সাথে আরও কিছু চার্জে অভিযুক্ত করা হয়। মোট বিশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় ওকে।
এই সময়টায় রৌদ রাজশাহী এসে সব হ্যান্ডেল করে। বর্ষণ তখন পাগলপ্রায় অবস্থা। সারাক্ষণ চুপচাপ থাকা, কান্না কাটি নেই, একা একা কথা বলা এই অভ্যাসগুলো দেখে দিশা সাইক্রাটিস্টের চেম্বারে নিয়ে যায় ভাইকে। বর্ষণের ঢাকার রেস্টুরেন্ট দিশা সামলাচ্ছিল। টানা এক বছর চলে বর্ষণের ট্রিটমেন্ট।
.
আসামীরা জেলা জজ আদালতের রায়কে ধীক্কার জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা টেনে আনে। কিন্তু ফলাফল সেই একই। এরপরও দমে থাকেনি ওরা। হাইকোর্ট বিভাগে মামলা নিষ্পত্তির পর আবার আপিল বিভাগে কেস নিয়ে যায়। জামিনের আবেদন করে। আজ সেই আপিল বিভাগের রায় দেওয়ার কথা।
কিছু নরপিশাচের সাজা প্রাপ্তির দিন আজ। বর্ষণ দেশের সর্বোচ্চ আদালতের উপর ভরসা রেখেছে। সেই সাথে ভরসা রেখেছে দেশের কোটি কোটি মানুষ।
___________________________________________
দিশার ফোন বাজছে। অথৈ ফোন দিয়েছে। একটু পরই শুনানি শুরু হবে। ফোন ধরা এখন উচিত হবে?
-” হ্যালো দিশা কী অবস্থা ওদিকে?”
-” শুনানি শুরু হতে কিছুক্ষণ বাকী। তুই টেনশন নিস না। এই সময় অতিরিক্ত চিন্তা মা ও বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর।”
-” টেনশন আপনা আপনি চলে আসে। কী করবো বল। বর্ষণ ঠিক আছে?”
-” বর্ষণ ভাই বল।”
দিশার কথায় এই দুখের মাঝেও হাসল অথৈ।
-” ভাই হবে তোর। আমি কখনো ভাই মনে করিনি।”
-” এখন রাখি। তোকে ফোন দিয়ে জানাবো। আর টিভি দেখিস না। পেটের টার কথা মাথায় রাখিস। স্ট্রেস নিবি না।”
-” আচ্ছা।”
হ্যাঁ অথৈর বিয়ে হয়েছে দুই বছর হলো। বাপির কথা ও ফেলতে পারেনি। অথৈর বাবা সব শুনে কখনোই অথৈকে বর্ষণের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হননি। অথৈর জেদ প্রথমবার ওর বাপির উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। কোন বাবা’ই চাইবেনা মেয়েকে এমন পাত্রের হাতে তুলে দিতে যে অন্য কাউকে মনে প্রাণে ভালোবেসে পাগলপ্রায়। অথৈর জেদে অসুস্থ হয়ে পড়ে ওর বাপি। বাধ্য হয়েই বাবার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হয় ও। আসলে বলতে গেলে অথৈ কখনো এই তাপৌষির বর্ষণকে চায় নি। ও তো অথৈর বর্ষণ চেয়েছিল। যেই বর্ষণের দুনিয়া হবে অথৈ। কিন্তু তা কী আদৌ আর সম্ভব?
___________________________________________
রৌদ কাঁদছে, কাঁদছে বর্ষণও। সারাদেশের প্রতিটি মানুষ আজ সন্তুষ্ট। তিন নির্দয় আসামীর ফাঁসির রায় কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। প্রিয়তা আদালত এলাকায় উপস্থিত প্রায় প্রতিটি মানুষের মতামত নিচ্ছে। সকলেই আজ খুশি। তাপৌষি ন্যায় বিচার পেয়েছে, এক আঠারো বছরের তরুণী ন্যায় বিচার পেয়েছে।
-” বর্ষণ ভাই আমরা পেরেছি।” প্রিয়তা চিৎকার করে বলল।
বর্ষণ অশ্রু নয়নে মাথা উপর নিচ করল। আসলেই পেরেছে.. তাপৌষি হয়ত আজ খুব খুশি। হঠাৎ বর্ষণের মাথা ঘুরিয়ে উঠল। পড়ে যেতে গেলে প্রিয়তা ওকে ধরে নেয়।
-” সকালে না খেয়ে আসলে তো এমন হবেই। চলুন আগে খাবেন কিছু।”
রৌদ তাকিয়ে আছে বর্ষণ- প্রিয়তার দিকে। প্রিয়তা, এই একটি মাত্র মেয়ে বর্ষণের সাথে সব সময় ছায়া হয়ে মিশে আছে। তাপৌষিকে হারিয়েও বর্ষণ আরেক তাপৌষিকে যেন ফিরে পেয়েছে। প্রিয়তা নামের এই তাপৌষিরও কোন অভিযোগ নেই, বর্ষণকে কাছে পাওয়ার কোন লোভ নেই। শুধু ভালোবেসে পাশে থাকছে।
প্রিয়তা বর্ষণকে আবার তাগাদা দিল,
-” কী হলো চলুন। রৌদ তুমিও আসো।”
-” জি আপু। ”
.
টিভি স্ক্রীনে ভাসছে দুটি মুখ। বর্ষণ ও প্রিয়তা। অথৈ সোফায় হেলান দিয়ে বসল। ও বর্ষণকে প্রিয়তা, তাপোষির মতো ভালোবাসেনি হয়ত। একজন বর্ষণের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ওর জীবন থেকে সরে গিয়েছিল আরেকজন ওকে ভালোবেসে ওর প্রতিটি নড়বড়ে পদক্ষেপ সামলিয়েছে, ভালোবাসেনা জেনেও পাওয়ার আশা না রেখে বন্ধুত্ব গড়েছে। প্রিয়তা – তাপোষি এই দুটো নাম বর্ষণের জীবনে আছে। অথৈ তো প্রথম থেকেই বাতিলের খাতায়।
___________________________________________
-” কোথায় যাচ্ছ ভাইয়া?”
রৌদের প্রশ্নে বর্ষণ ফিরে তাকাল। প্রিয়তা রৌদকে কিছু না বলে বর্ষণকে বলল,
-” আমি ড্রাইভ করে নিয়ে যাব। আপনি একা যেতে পারবেন না।”
__________________________________________
মিজানকে নিয়েই পুলিশ তাপৌষির লাশ উদ্ধার করে। পোস্টমর্টেম করা হয়। কবর দেওয়া হয় তাপৌষির মা’য়ের কবরের পাশে। প্রেয়সীর লাশ বর্ষণ কখনো স্বচক্ষে দেখেনি। তবে কবর জিয়ারত করতে কয়েক হাজারবার এসেছে ও।
.
বর্ষণ এখন দাঁড়িয়ে আছে তাপৌষির কবরের সামনে। নতুন করে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে কবরে। দূরে গাড়ির দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বর্ষণকে লক্ষ করছে প্রিয়তা। তাপৌষিকে ও কখনোই হিংসা করেনি। বরং এই অবেলায় ঝরে যাওয়া প্রাণটার সাথে ও কোন এক যোগসূত্র খুঁজে পায়। সেই যোগসূত্রের নাম বর্ষণ।
তাপৌষি বর্ষণের অতীত হয়েও
বর্তমানে জাগ্রত। প্রিয়তা ছায়া হয়ে পাশে থাকলেও ছায়া হয়ে কল্পনায় মিশে আছে তাপৌষি….শুধুই তাপৌষি।
.
বর্ষণ আজ চুপচাপ। কোন কথায় মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না। ও জানে তাপৌষি আজ খুশি হয়েছে অনেক। দোষীরা যে কর্মফল পেয়েছে।
-” অভিনন্দন তাপৌষি।” বলে বর্ষণ তাপৌষির কবর জিয়ারত করল।
চলে আসার সময় পিছু ফিরে একবার তাকাল। তাপৌষির হাসি হাসি মুখ ওর সামনে প্রতিফলিত হলো। আবার মরুভূমির মরিচিকার মতো হাওয়ায় মিশে গেল তাপৌষি; হারিয়ে গেল তাপৌষি।
” একদিন আমিও হারিয়ে যাব,
যেমন হারিয়ে গিয়েছ তুমি।
তোমার হারানোতে কেঁদেছি আমি,
আফসোস আমার হারানোতে
কাঁদতে পারবে না তুমি।”
.
সমাপ্ত
[ এই সাতটা পর্বে আমি শুধু মাত্র #হয়ত গল্পে ছাড়া পাওয়া বিষয়গুলোকে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি। প্রিয়তা চরিত্রটা পড়ে আপনারা ওকে গল্পে আনার আসল কারণটুকু বুঝতে পেরেছেন আশা করছি। তবুও কারও কোন মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে দিতে পারেন। রিভিউ দিতে পারেন যেকোনো গ্রুপ, পেজে। তবে প্লিজ কেউ গল্প কপি করে কোন পেজে/ গ্রুপে দিয়েননা। এটা অর্ডার নয়..রিকোয়েস্ট। আমার নাম দিয়েও দিয়েন না।]
.
[ ধন্যবাদ সকলকে এত মনোযোগ দিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here