#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
অন্তিম পর্ব
প্রায় ৬৭ ঘন্টা হয়ে গেছে এখনো তাসফিয়ার সেন্স ফিরেনি। ৩মাসের মেয়ে তাসফিয়া হয়তো তার শেষ সময় গুনতেছে। আর এই দিকে পরি ৩ বার জ্ঞান হারিয়েছে। পরি তাসফিয়ার জন্য পাগলের মতো বিহেভ করতেছে। কোনো মা-ই পারবেনে নিজেকে সামলাতে। পরির এইরকম অবস্থা দেখে ডাক্তার পরিকে ঘুমের ঔষুধ দিয়ে তাসফিয়ার পাশের কেবিনে পরিকে ঘুম পাড়িয়ে রেখছে।
রিফাত কি করবে কিছুই বুঝতেছে না। তার মেয়ের এই অবস্থা আবার পরির পাগলামি। রিফাত অনেক কষ্ট নিজেকে সামলে রেখেছে। কারন এই সময় সবাই ভেঙ্গে পড়লে হবেনা। একজনকে একটু শক্ত থাকতে হবে।
রুকু: ভাইয়াআআআআআআআ
রিফাত: দৌড়ে তাসফিয়ার কেবিনের সামনে গিয়ে কি হয়েছে?
রুকু: তাসফিয়া
রিফাত: তাসফিয়া কি?
রুকু: তাসফিয়া রেসপন্স করতেছে।
রিফাত: কিহহহ সত্যি।
রুকু: হ্যাঁ ভাবিকে নিয়ে আসো তাড়াতাড়ি।
রিফাত: পরি ঘুমাচ্ছে ঘুমাক। আমরা তাসফিয়ার সাথে দেখা করতে পারবো? তাসফিয়ার কি জ্ঞান ফিরছে?
রুকু: না তাসফিয়ার এখন জ্ঞান ফিরেনি ঘুমাচ্ছে তোমারা কিছুক্ষন পর ওর সাথে দেখা করতে পারবা।
রিফাত: ওকে
পরির ঘুম ভাঙ্গলে দেখে একটা ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে হাসতেছে। পরি বাচ্চাটাকে জোরে বুকে জড়িয়ে কান্না করে দিলো। বাচ্চা মেয়েটা আর কেউ না। মেয়েটা তাসফিয়া। পরি তাসফিয়াকে বুকে জড়িয়ে কান্না করতে লাগলো। পরি তাসফিয়ার সারা মুখে কিস করতে লাগলো।
রিফাত: মেয়েকে পেয়ে জামাইকে ভুলে গেছো সব আদর কি মেয়ে একা পাবে। বলে রিফাত পরির আরেকপাশে বসলো।
পরি: তোমরা দুজনই তো আমার শেষ অস্তিত্ত্ব তোমাদের নিয়েই তো আমার পৃথিবী। তোমাদের ছাড়া আমি বাঁচবো কি করে বলে রিফাতের বুকে জড়িয়ে পড়ে পরি। এরকম সময় রুকু কেবিনে ঢুকে।
রুকু: বাহ কি সুন্দর দৃশ্য জামাইয়ের বুকে বউ আর বউয়ের বুকে মেয়ে আমার দেখা বেস্ট দৃশ্য।
পরি লজ্জা পেয়ে সাথে সাথে রিফাতের কাছ থেকে দূরে সরে যায়।
রিফাত: আসার আর সময় পাইলি না শান্তিতে একটু রোমান্সও করতে দিবিনা।
রুকু: এটা আমার হাসপাতাল তোর বেড রুম না।
রিফাত: বেড রুম হলে তোরে ঢুকতেও দিতাম না।
পরি: আহহ দাভাই তুমি কি শুরু করলা। রুকু তুমি ভিতরে আসো। আর তাসফিয়ার জ্ঞান ফিরে কখন?
রুকু: তাসফিয়ার যখন জ্ঞান ফিরে তখন তুমি ঘুমিয়ে ছিলা ভাবি তাই ভাইয়া তোমায় ডাকতে দেয় নাই।
পরি: দাভাই মুনিয়া এখন কোথায়?
রিফাত: পুলিশ মুনিয়াকে নিয়ে গেছে পুলিশ ওরে এই কাজের যথেষ্ট শাস্তি দিবো তুমি এই বিষয় নিয়ে আর চিন্তা করো না।
পরি: হুম।
রুকু: ভাবি আমার একটা কথা?
পরি: কী?
রুকু: তুমি যে সারাদিন ভাইয়াকে দাভাই দাভাই করো। তাসফিয়া ভাইয়াকে আব্বু বলবে নাকি মামা বলবে।
রুকুর কথায় পরি লজ্জা পেয়ে মাথা নামিয়ে ফেললো।
রিফাত: রুকুর কান টান দিয়ে বললো তুই খুব পেকে গেছিস। বাসায় গিয়ে সবার আগে তোর বিয়ের ব্যবস্থা করবো।
রুকু: বিয়ের কথা শুনে দৌড়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়।
রুকুর দৌড় দেখে রিফাত আর পরি এক সাথে হেসে দেয়।
.
.
.
.
সুখ-দুঃখে দেখতে দেখতে ৫টা বছর চলে যায়। এই ৫ বছরে রিফাত তার দাদিকে হারায়। তবে দাদিকে হারিয়ে সবাথ থেকে পরি বেশি কান্না করে। পরি প্রায় পাগল হয়ে যাচ্ছিল তখন আম্মু পরির কোলে তাসফিয়াকে দিয়ে বলে পরি যদি এরকম করে তাহলে এই মেয়েটার কি হবে। পরি সেইদিন তাসফিয়াকে জড়িয়ে অনেক কান্না করেছিল পরির সাথে তাসফিয়াও কান্না।
বতমানে আসে যাক।
তাসফিয়া: আব্বু আব্বু কই তুমি?
রিফাত: এই তো মামনি এখানে আমি। কি হয়েছে মামনি?
তাসফিয়া: আমার একটা ভাই চাই।
রিফাত: তোমার ভাই আছে না রেদোয়ান (রেদোয়ান রুকু আর রাব্বির একমাত্র ছেলে। রাব্বি পরির হাসবেন্ড রাব্বিই সেই ছেলে যে পরিকে রক্ত দিয়ে বাঁচিয়েছিলো)
তাসফিয়া: আমিও তো আম্মুকে বলেছিলাম আমার তো ভাই আছে রেদোয়ান কিন্তু আম্মু বলছে তোমাকে বলতে আম্মুর পেটে একটা ভাই দিতে।
রিফাত: তাসফিয়াকে একটা চকলেট দিয়ে বললো মামনি তোমার আম্মুকে বলো আব্বু ডাকে।
তাসফিয়া: আচ্ছা আব্বু।
কিছুক্ষণ পর পরি রুমে আসলো।
পরি: কি হয়েছে তাসফিয়া বললো তুমি নাকি আমাকে ডাকো।
রিফাত: তুমি তাসফিয়াকে কি বলছো?
পরি: ঠিকই তো বলছি আমার একটা ছেলে চাই।
রিফাত: তাই আসো তাহলে তোমায় ছেলে বাবু এনে দেই বলে টান দিয়ে পরিকে বিছানায় শুইয়ে দিল।
পরি: এখন না আমার এখন অনেক কাজ আছে।
রিফাত: তোমার তাড়াতাড়ি বেবি চাই তাই এখনি দিতে হবে বলে পরির হামলা শুরু করলো।
(সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এতো দিন সাথে থেকে গল্প পড়ার জন্য। খুব শীঘ্রই নতুন কোনো গল্প নিয়ে হাজির হবো। আশা করি সবাই এভাবেই পাশে থাকবেন।
~~~~~~~সমাপ্ত~~~~~~~~