আমার একলা আকাশ পর্ব-০৫

0
406

#আমার_একলা_আকাশ🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(Writer)
#৫_পর্ব
,
বাবা এতো সুন্দর গোছানো রুম ছেলেটা মনে হয় পরিপাটি থাকতে পছন্দ করে এসব ভাবতে ভাবতে মাহি সামনে তাকিতে কিছু একটা দেখে অবাক হয়ে গেলো।
কেননা সামনে টেবিলের উপর মায়ার ছবি রাখা, মাহি আস্তে আস্তে টেবিলের কাছে গেলো গিয়ে ছবিটা হাতে নিলো।

মনে হচ্ছে ছবির এই মেয়েকে আমি কোথাও একটা দেখেছি কিন্তু কোথায়?? ইস মনে পড়ছে না কেনো,,, উফফ এই একটা সম্যসা আমার কিছুই মনে থাকে না শুধু ভুলে যায় (নিজে নিজেই বলল মাহি)

তারপর ছবিটা টেবিলের উপর রেখে রুমের বাইরে চলে গেলো,, বাড়িটা ভালো করে দেখতে।

,,,,হসপিটালে,,,,

সারা হসপিটাল মাথায় তুলে ফেলেছেন আক্কাস চৌধুরী,(মাহির কাকু) মাহিকে পাওয়া যাচ্ছে না শুনেই ওনি , হসপিটালে এসে আজিজ সাহেব এর উপর চেঁচামেচি করছে।

কেমন ডাক্তার আপনি একটা মেয়েকে দেখে রাখতে পারেন না, তার উপর মেয়েটা আবার অসুস্থ (জোরে চিৎকার করে বলল আক্কাস)

স্যার প্লিজ এতো উত্তেজিত হবেন না আমরা ঠিক খুঁজে পেয়ে যাবো (ভয়ে ভয়ে বলল আজিজ)

পেয়ে যাবেন??? কবে?? আমার এখনি এই মহুর্তে চাই আমার ভাতিজিকে (আক্কাস)

ডাক্তার আজিজ এর কেবিনে এমন চেঁচামেচি করছে কে বলতো??(মেহরাব)

আমি কি করে জানবো কেননা তুই ও যেখানে আমিও তো সেখানে তাই না??(মেঘ)

হুম তাও ঠিক।

আক্কাস চৌধুরী আজিজ এর উপর চিৎকার চেঁচামেচি করে কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো।

এই বাপ ছেলের জন্য আমি নির্ঘাত একদিন হার্ট এট্যার্ক করে বসব (নিজে নিজে কথাটা বলে পাশ থেকে এক গ্লাস পানি ঢকঢক করে খেয়ে নিলেন)

মেহরাব আর মেঘ আজিজ এর কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো তখনি আক্কাস কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো, আর আশেপাশে না দেখেই সামনে হাঁটতে লাগল।

মেহরাব সামনে তাকিয়ে আক্কাস কে দেখে ওর চোখ দুটি চকচক করে উঠল,,, পিছন থেকে ডাকতে লাগল।

আংকেল আংকেল (অনেক জোরে)

পিছন থেকে কারো ডাকে দাঁড়িয়ে পড়ল আক্কাস তারপর পিছনে তাকিয়ে মেহরাব কে দেখে তার গলা শুকিয়ে গেলো আস্তে করে একটা শুকনো ঢোক গিলে মুখে হাসি এনে বলল।

ইয়েস??

আমাকে চিনতে পেরেছেন?? আমি মেহরাব (মেহরাব)

ওহ হুমম তুমিই সেই মেহরাব,, তা তুমি এখানে??

আসোলে আংকেল আমি এই হসপিটালের ডাক্তার তা আপনি এখানে কেনো??

মেহরাব এর কথায় আক্কাস ভয় পেয়ে গেলো আমতা আমতা করে বলল। এ,,এমনিতেই কাজ ছিলো।

আংকেল আপনারা কোথায় থাকেন?? ঠিকানাটা দিবেন প্লিজ আমি কথা দিচ্ছি আমি আপনাদের বিরক্ত করবো না শুধু মায়ার কবরটা দেখেই চলে আসবো প্লিজ আংকেল (অনেকটা অনুরোধ করে বলল মেহরাব)

মেহরাব এর কথা শুনে আক্কাস আমতা আমতা করে বলল,,, ক,,কি বলো, ২ বছর হয়ে গেছে তুমি এখনো??

হুম আংকেল শুধু ২ বছর কেনো ২ যুগ গেলেও আমি মায়াকে ভুলবো না অনেক ভালোবাসি ওকে প্লিজ আংকেল শেষ বারের মতো আমি ওর কাছে যেতে চাই প্লিজ আংকেল।

আক্কাস চোরের মতো এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল আচ্ছা লিখো,, যেই ঠিকানাটা বলতে যাবে তখনি আক্কাস এর ফোনটা বেজে উঠল এতে যেনো আক্কাস অনেক বড় বাঁচা বেঁচে গেলো,,, তারাহুরো করে গাড়িতে উঠতে উঠতে বলল।

পরে বলবো এখন অনেক জুরুরি একটা কল এসেছে (এই বলে তারাতারি করে গাড়িতে উঠে চলে গেলো)

আর মেঘ কিছু না বুঝে ওখানেই বোকার মতো দাঁড়িয়ে ছিলো।

সেদিনকার মতো আজকেও তোমায় শেষ দেখা দেখতে পেলাম না (এই বলে মেহরাব ওখানেই হাঁটু গেরে বসে কাঁদতে লাগল)

মেহরাব কে ওভাবে বসে পড়তে দেখে মেঘ দৌড়ে মেহরাব এর কাছে গেলো তারপর ওকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়ে বলল।

কি হয়েছে মেহরাব?? তুই কি ওনাকে চিনিস?? আর এই মায়া কে??(অবাক আর অনেকটা কৌতুহল নিয়ে জিগাস বরলো)

মেহরাব নিজেকে ঠিক করে চোখের পানি মুছে বলল।

সব বলবো তোকে কিন্তু আজকে নয় অন্যদিন,

আচ্ছা ঠিক আছে,, এখন চল।

,,,,রাতে,,,,,

উফফ কি অন্ধকার অনেক ভয় লাগছে এই কারেন্ট ও যাওয়ার সময় পেলো না (রুমের এক কোনে গুটিসুটি মেরে বসে নিজে নিজেই বলল মাহি)

আজকে মাসের শেষ তাই বেতন পেয়েই একেবারে বাজার করেই বাড়ি ফিরছে মেহেরাব,, একার জন্য একদিন বাজার করলেই অনেকদিন চলে যায়, মাহির কথা মেহরাব এর মাথা থেকে একদম বেরিয়ে গেছে। দুহাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফিরছে মেহেরার তারা নেই তাই হেঁটেই যাচ্ছে,,,

বাসায় ছোট্ট একটা ফ্রিজ আছে তাই একসাথে এতো বাজার করে আনলো,, তাছাড়া বাজার করার সময় ও পাই না, তাই , সামনের সপ্তাহে মা আর বোনকে আনতে হবে।
মেহরাব আকাশের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে হেঁটে চলেছে একটু পর পর আকাশের দিকে তাকাচ্ছে, আকাশ ভরা তারার মেলা,, অনেক সুন্দর জোসনা উঠেছে তাই হাঁটতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
বাসায় এসে বাজারের ব্যাগটা নামিয়ে চাবি দিয়ে দরজাটা খুলে ভিতরে গিয়ে লাইট এর সুইচ এ চাপ দিতেই দেখলো সুইচ দেওয়া।

ওহ তারমানে কারেন্ট নেই। উফফ এই কারেন্ট ও না (এটা বলতে বলতে বাজারের ব্যাগটা রান্না ঘরে রেখে ফোনের আলো জ্বালিয়ে একটা মোমবাতি খুঁজে সেটা ধরিয়ে রুমে গেলো তারপর মোমবাতি টা টেবিলের উপর রেখে বাথরুমে চলে গেলো,, ফ্রেস হলে চলবে না যে গরম তাতে একেবারে গোসল করতে হবে।পাশের আলনা থেকে গামছা নিয়ে মেহরাব গোসল করতে চলে গেলো।

আলো জ্বলা দেখে মাথাটা তুলে সামনে তাকালাম দেখলাম ওই ডাক্তার টা মোমবাতি জ্বালিয়ে টেবিলে রাখছে।টেবিলের এক কোণে ওই ছবিটার পাশেই বসে ছিলাম ওনি আমার সামনে মোমবাতি টা রাখলো৷ তবুও আমায় দেখলো না?? কানা নাকি রে,,,, ওখান থেকে উঠে বিছানায় গিয়ে বসলাম। একটু পর ওনি গামছা দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে রুমে আসলো। (মাহি)

বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম আমার বিছানায় একটা মেয়ে বসা দেখেই রাগ উঠে গেলো,, ফ্ল্যাট এ তো তালা দেওয়া ছিলো তাহলে এ আসলো কীভাবে?? তাই রেগে জিগাস করলাম।

এই কে আপনি আর এখানে কি করছেন??(মেহরাব)

আমি ওনার কথা শুনে হা করে ওনার দিকে তাকিয়ে থাকলাম,, সকালে এখানে আনলো আর এরি মাঝে ভুলে গেলো??(মনে মনে বলল মাহি)

কি হলো কথা বলছেন না কেনো, কে আপনি??

আ,,,আ,, আমি মাহি।

মাহি কোন মাহি??

ওই যে সকালে মেঘ ভাইয়া আমায় নিয়ে আসলো।

ওহ শিট,, এর কথা তো আমার মনেই ছিলো না বেমালুম ভুলে গিছিলাম..
ওকে চিনতে পেরেছি তা এখানে কি করছেন পাশের রুমে যান।

আচ্ছা (এই বলে চলে আসতে গেলাম তখনি ওনি ডাকলো)

এই যে শুনুন।

চলবে,,,,??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here