আমার একলা আকাশ পর্ব-০৪

0
411

#আমার_একলা_আকাশ🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(Writer)
#৪_পর্ব
,
মেঘ মাহিকে নিয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে মেহরাব এর সামনে এসে বলল।

ওহ আল্লাহ শেষ মেষ তোকে পেলাম,, আমি তো জানিই না তুই কোথায় থাকিস তবুও যে রাস্তায় এভাবে তোর দেখা পেয়ে যাবো এটা ভাবিনি,, তবে ভালোই হয়ছে (হাঁফাতে হাঁফাতে দুহাত হাঁটুর উপর রেখে বলল মেঘ)

মানে,, কি বলছিস কি?? আর এই মেয়ে তোর সাথে এখানে কেনো?? এসব কি আমাকে একটু খুলে বলবি প্লিজ??(মেহরাব)

আচ্ছা বলছি শোন তাহলে।

,,,,আজকে সকালে,,,,,,

আজকে মেঘ সকাল সকাল চলে আসছে হসপিটালে এসেই নিজের ডেস্কে চলে গেলো তারপর চেয়ারে বসার পরপরই কোথা থেকে মাহি দৌড়ে মেঘের ডেস্কে উপর পড়ল।

ভাইয়া প্লিজ আমাকে হেল্প করেন এখানে আপনাকে ছাড়া আমি কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না, তাই আপনার কাছেই এসেছি প্লিজ নিজের বোন মনে করে আমাকে সাহায্য করেন (মাহি কাঁদতে কাঁদতে বলল)

আরে আগে তুমি উঠে দাঁড়াও তো,, আর এভাবে কাঁদছো কেনো?? কি হয়েছে বলো??(মেঘ)

ওরা ওরা আমাকে শর্ক দিবে বলছে,, এর আগেও দুবার দিয়েছে আমার ভীষণ কষ্ট হয়,,মাথার মধ্যে বেথ্যা করে আমি তো ভালো বলেন তবুও এমন কেনো করছে জানি না,, আমার কাকু আর ভাইয়াও যে কোথায় বুঝতে পারছি না,, আব্বু আম্মু মারা যাওয়ার পর কাকু আর আকাশ ভাইয়াই আমাকে দেখেছে, তারপর হঠাৎ কি হলো জানি না, আমি নিজের আশেপাশে অদ্ভুত কিছু ছায়া আর কারো কান্নার আওয়াজ শুনতে পেতাম প্রথম প্রথম ভয় পেলেও কাউকে বলতাম না কেননা কেউ বিশ্বাস করবে না,,, এভাবে প্রতিদিন হতো আমি আর সয্য করতে না পেরে আকাশ ভাই আর কাকুকে বললাম ওনারা বললো এসব কিছুই না আমার মনের ভুল, আমিও তাই ভেবেছিলাম তারপর এর থেকে আরো বেশি হতে লাগলো আমি আবার কাকুকে বললাম, তারপর কাকু কোথা থেকে একজন ডাক্তার আনলো ওনি আমায় দেখো বললো যে আমি নাকি পাগল হয়ে গেছি তাই নিজের আশেপাশে এসব দেখতে পাচ্ছি,, তারপর ওরা আমায় এখানে পাঠিয়ে দিলো, আমি কতবার বললাম যে আমি পাগল নয় কিন্তু কেউ আমার কথা বিশ্বাসই করলো না,,, এখানে এসে প্রথম কদিন ভালো থাকলেও তারপর এনারা আমার সাথে কেমন করা শুরু করলো তা তো আপনি দেখছেনই,, প্রথম প্রথম আকাশ ভাই আর কাকু দেখা করতে আসলেও এখন আর আসে না,, আর এনারা আমার সাথে এমন করে,, প্লিজ আমায় এখান থেকে বেরোতে সাহায্য করুন,, আমি এখানে থাকতে পারবো না এখানে থাকলে সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাবো (কেঁদে বলল মাহি)

বলো কি তোমার সাথে এতোকিছু হয়ে গেছে। কিন্তু আমি তোমাকে কীভাবে সাহায্য করবো কেউ জানলে আমার চাকরি থাকবে না, আর সব থেকো বড় কথা তোমার সম্যসা হবে (মেঘ)

কিছু হবে না কেউ জানতে পারবে না এখনো তেমন কেউ আসিনি এখন বেরোলে কেউ দেখবে না প্লিজ ভাইয়া (মাহি)

মেঘ কিছু একটা ভেবে,,, ওকে চলো।

,,,৷ বর্তমান,,,,

এই মেয়ে তোকে কি না কি বানিয়ে বলল আর তুই তা বিশ্বাস করে ওকে নিয়ে চলে আসলি তুই বুঝতে পারছিস এতে তোর কতবড় সম্যসা হতে পারে। আরে পাগল কি কখনো বলে যে আমি পাগল(মেহরাব)

এই আপনি আমাকে বার বার পাগল বলবেন না তো আমি মোটেও পাগল নয় (মাহি)

জানি তো আপনি পাগল নয় আপনি পাগলি(মেহরাব)

কিহ???

আরে তোরা থামতো আর মেহরাব ও সত্যি বলছে ও পাগল নয় নিশ্চয়ই ওকে কেউ পাগল বানানোর চেষ্টা করছে (মেঘ)

হ্যাঁ তুই জানিস,,, এতোসব কথা বাদ দিয়ে এখন বল একে নিয়ে কি করবি এখন??(মেহরাব)

বলছি কি যে আমি তো কলোনীর মধ্যে থাকি ওখানে কত লোকজন থাকে এভাবে একটা মেয়েকে বাড়ি তে নিয়ে গেলে মানুষ খারাপ কথা বলবে (মেঘ)

সেটা এই মেয়েকে নিয়ে আসার আগে তোর ভাবা উচিত ছিলো (রেগে বলল মেহরাব)

আরে রাগ করছিস কেনো,, বলছি কি তুই তো ফ্ল্যাটে একাই থাকিস তাই বলছিলাম কি।

এই থাম থাম, তুই যা বলতে চাইছিস সেটা আমি বুঝেছি,, এটা আমি কিছুতেই করতে পারবো না অসম্ভব,, আমাকে ছেড়ে দে আমি এসব ঝামেলার মধ্যে নেই,, একে যেখান থেকে নিয়ে এসেছিস সেখানে দিয়ে আয় (মেহরাব)

আমি ওখানে যাবো না (মাহি)

তো কোথায় যাবেন?? যত্তসব ( মাহিকে ধমক দিয়ে বলল)

মেহরাব এর ধমক শুনে মাহি কাঁদতে লাগল।

আহ মেহরাব কি করছিস মেয়েটার সাথে এমন করছি কেনো,,, আর এমনটা কীভাবে বলতে পারিস ওর জায়গা যদি আমার বোন থাকতো তাহলে কি করতি (মেঘ)

সেটা অন্য বিষয়, আর কদিন পরই মা আর মেঘলা আসবে ওরা এসে যদি এই মেয়েকে এখানে দেখে তাহলে কি ভাববে,, আর সবথেকে বড় কথা হলো আমি এই পাগল কে আমার ফ্ল্যাটে রাখতে পারবো না (মেহরাব)

আন্টিকে তুই বোঝায়ে বললে ওনি নিশ্চয়ই বুঝবে প্লিজ মেহরাব মাহির মুখের দিকে তাকিয়ে একটা বারের জন্য ওকে সাহায্য কর(মেঘ)

মেঘ তুই বুঝতে পারছিস না,, এটা অনেক বড় একটা কাজ,, হসপিটাল থেকে এভাবে পেসেন্ট আনলে চাকরি তো যাবেই আবার পুলিশ কেস ও হতে পারে আমাদের পুরো কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে আর সবথেকে বড় কথা এই মেয়ের কাকা ভাই অনেক বড়লোক দেখলি না সেদিন কতবড় গাড়ি নিয়ে এর ভাই আসছিলো,, না ভাই আমি পারবো না (মেহরাব)

হুম আজকে বুঝলাম তুই আমায় কেমন বন্ধু ভাবিস, হুম মনে থাকবে, বন্ধু হয়ে বন্ধুর এই প্রতিদান দিলি (মেঘ)

প্লিজ মেঘ ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করবি না।

হ্যাঁ আমি তো পর তাই তুই এভাবে বলতে পারলি,, আজকে বুঝলাম ওর জায়গা আমার বোন থাকলেও তুই এমন করতি,, মাহি চলো আমি তোমাকে অন্য কোথাও রাকার ব্যবস্হা করছি,, মানুষ তো চিনে নিলাম (এই বলে মেঘ মাহির হাত ধরে নিয়ে চলে যেতে লাগল তখনি মেহরাব বলল)

দাঁড়া,,,ওকে এখানেই রাখ,, ভালোই তো মানুষ ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করতে পারিস ড্রামাবাজ একটা (মেহরাব)

আমি জানতাম ভাই তুই আমার কথা ফেলতে পারবি না (মেহরাব কে জরিয়ে ধরে বলল)

হয়েছে ছাড় আমায়,, আর একে বলো দে ও যেনো আমার কোনো কাজে নাক না গলায় ঘরের এক কোণে থাকবে ও ওর মতো আমি আমার মতো ওকে।

আরে ঠিক আছে ও বোঝে গেছে।

এখন তাহলে হসপিটালে যাওয়া যাক, না জানি এতোক্ষণ ওখানে কি কেয়ামত শুরু হয়েছে কে জানে।

তারপর মাহিকে মেহরাব এর ফ্ল্যাটে রেখে মেঘ আর মেহরাব হসপিটাল এ গেলো।

আপনাকে মাসে মাসে এতো এতো টাকা দিই কি জন্য একটা কাজও ভালো করে করতে পারেন না,,, একটা কথা৷শুনে রাখুন ডাক্তার আজিজ মাহিকে যদি না পাওয়া যায় তবে আপনার চাকরি আমি চান্দের দেশে পাঠাবো সাথে আপনাকেও (রেগে বলল আকাশ)

আরে আপনি এতো রেগে যাচ্ছেন কেনো, আমি দেখছি তো ঠিক খুঁজে পাবো কোথায় আর যাবে (ভয়ে ভয়ে বললো আজিজ)

সেটাই যেনো হয় ওকে খুঁজে না পেলে আপনি নিখোঁজ হয়ে যাবেন,, কথাটা মনে থাকে যেনো (এটা বলে আকাশ চলে গেলো,,,আকাশ যাওয়ার সাথে সাথে আজিজ টেবিলের উপর থেকে গ্লাস টা নিয়ে ঢকঢক করে পুরো পানিটা শেষ করে ফেলল)

এটাই মাহির ভাই দেখেছিস কি রাগি যদি একবার জানতে পারে ও আমাদের কাছে তাহলে একটাকেও আস্ত রাখবে না (মেহরাব)

এ ভাই ভয় দেখাস কেনো এতো (মেঘ)

ভয় কি আমি তো সোজা বলে দেবো সব দোষ তোর (মেহরাব)

কিহ?? তুই কি মীর জাফর রে (ভয়ে ভয়ে বলল মেঘ)

,,,এদিকে মাহি,,,,,

বাবা এতো সুন্দর গোছানো রুম ছেলেটা মনে হয় পরিপাটি থাকতে পছন্দ করে এসব ভাবতে ভাবতে মাহি সামনে তাকিতে কিছু একটা দেখে অবাক হয়ে গেলো।

চলবে,,,,,,,?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here