#আলো_থেকে_অন্ধকার
part:-08
Writer:-#Esrat_jahan_Esha
– আচ্ছা ভাবি তোমার ছেলে বন্ধু আছে? এটা আমি কখনো ভাবি নাই। তাহলে কি তুমি এর সাথেই কথা বলতে?
সুমি এখন এত কথা বল না তো কাজে আসছি কাজ করতে দাও।
সুমি মনে মনে অনেক চিন্তা মাথায় আর্ট করে নেয়। ভাবির সাথে এই ছেলের সম্পর্ক কি? এই ছেলের সাথেই কি ভাবির সম্পর্ক ছিল?এর সাথেই কি সেদিন সে কথা বলেছে যা আমি আর মা দেখেছি। আর ভাবিকে এই ছেলে এত সাপোর্ট করছে কেন?
ভাইয়া কি এই ছেলের কথা জানে?
– এই তো আমরা এসে গেছি।
– ওহ্হ এই যায়গা?
– হ্যা।
– আচ্ছা তুহিন এখানে তো ছেলে মেয়ে সবাই আছে। মেয়েদের জন্য আলাদা জায়গা করা হয়নি?
– লিমা কি বল এসব? মেয়েদের জন্য আবার আলাদা হবে কেন?
– ভাবি তাহলে কিভাবে কাজ শিখব আমিতো পারবো না। তুমি সব জেনেশুনে আসবা না ভাবি? (সুমি)
– তাতে কি হয়েছে যে যার মত করে কাজ শিখবে এখানে ছেলে হোক বা মেয়ে। দেখ লিমা তোমার ননদ কে বলো এত বেশি না বুঝতে।
সুমি তো শুনে রাগে সেই আগুন। কি আমি বেশি বুঝি এটা কোনো কথা আমি আর আসব না।
-আচ্ছা তুহিন বাদ দাও তো। আমরা আগে যাই তারপর দেখি কি হয়। আর সুমি তুমি কিছু মনে কর না।
____
– এই দুজন কে এখানে ভর্তি করাতে চাই।
– ওহ্হ তাদের পরিচয় পত্র দেন।সবার ছবি দেন ২ কপি।
– আচ্ছা তোমাদের যা যা আনতে বলেছি আনছ?
– হুমম এনেছি।
– কই দাও আমার কাছে।
আচ্ছা আমি সব কিছু জমা দিয়ে দেই৷ পড়ে সব তারা সিলেক্ট করবে কাকে কাকে নিবে।
– আচ্ছা তাহলে আমরা চলে যাই।
যাবে তো কিন্তু আমার প্লান তো কাজ করাতে হবে। কি চাইলাম আর কি করছ। (তুহিন মনে মনে)
– হুমম যাবে কিন্তু তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।
– হুমম বলো।
– নাহ এখানে নাহ।
– ওহ্হ। আচ্ছা সুমি তুমি একটু দাড়াও আমি আসছি।
সুমি আর চোখে আমাকে দেখছে মুখে কিছুই বলছে না। আমার মনে হয় সুমি আমার উপর একটু সন্দেহ নিয়ে তাকাল। আমি তার ভ্রু ক্ষেপ না করে তুহিন কে নিয়ে একটু আড়ালে গেলাম।
– হুমম বলো।
– আরে তুমি তোমার ননদ কে কেন আনছ? তোমাকে না বলছি তুমি একা আসবা। তুমি ওরে বলতে গেলে কেন।
– আরে কাউকে না বল্লে আমাকে আসতে দিত।
-কে আসতে দিবে না। তোমার স্বামীকে বল্লেই তো আসতে দিত। দুইটা চোখ গরম দিলে কবে আসতে দিত।
– ওহ্হ কিন্তু ওকে তো বলে ফেলেছি এখন কি করব।
– আমি দেখছি।
– তুহিন এখন চলো সুমি সন্দেহ করতে পারে।
-হুম চলো।
-আচ্ছা তোমরা এখন যাও পরবর্তী যা যা লাগে তা আমি ফোনে জানাব।
– ওকে তুহিন ভালো থেক।
আমরা ওখান থেকে চলে আসি বাড়িতে। আসার সময় সুমি আমাকে অনেক প্রশ্ন করে। কিন্তু আমি তেমন কোনো উওর করিনা। পরে বিরক্ত নিয়ে বলি তুমি কি আসলে কাজ শিখতে চাও নাকি????
– হুমম ভাবি শিখতে চাই।
– তাহলে এতো কথা বলো না। আমি যেমন বলব তেমন হবে।
বাড়িতে যেতেই আমার শ্বাশুড়ি প্রশ্ন ছুরে দিল।
– হ্যারে তোরা কোথায় গিয়েছিলি? আমি তোদের ২ জন কে কত খুঁজেছি। এদিকে আলিফ খুব কান্নাকাটি করছে। পড়ে লিমা কে খুজে না পেয়ে তোকে খুঁজি কিন্তু তোদের ২ জনার একজন কেও তো পাচ্ছি না। কিরে কোথায় গিয়েছিলি কথা বল।
– আসলে মা আমি কিছু জানি না তুমি ভাবিকে জিজ্ঞেস কর।
– আচ্ছা মা আমরা বসি তারপর আপনাকে সব বুঝিয়ে বলছি।
তারপর আমি আমার শ্বাশুড়ি কে বল্লাম।
– আসলে মা আমরা চাই একটু হাতের কাজ শিখতে। যাতে নিজেদের জামাকাপর নিজেরা তৈরি করতে পারি।
– তার জন্য কোথায় গিয়ে ছিলে?
– মা ঐ যে সামনে যে ত্রীমোহনীর রাস্তা টা আছে ঐখানে গিয়েছিলাম। ঐখানে আমাদের কাজ শিখানো হবে।
– হুমম কাজ শিখ সেটা তো ভালো কথা।
– হুমম মা তাই তো সুমিকে নিয়ে গেলাম ভাবছি ২ জনেই শিখব।
– এটা তো ভালো কথা তো জায়েদ কে কি বলছ?
– নাহ মা বলি নি বলব পড়ে আগে কয়েক দিন যাই।
মা এখন কাউকে বলার দরকার নেই। পড়ে জানাব আপনি কিছু বইলেন না।
– তবে আমার এটা যেন কেমন ঠিক হয়না তার চেয়ে ঘরে টিচার রাখি। জায়েদ কে বলে একজন মহিলা ট্রেইলার রেখে দেই ।
– উফফ মা আপনি বুঝেন না। এখানে কোনো টাকা লাগবে না বিনা পয়সায় এখানে শিখানো হবে। আর আপনার ছেলের ও এখন হাতে টাকা নাই। ব্যবসার লস হলো সব মিলিয়ে এখন কোনো বার্তি খরচের দরকার নাই। এখানেই শিখব।
– কিন্তু তাও কেমন যেন আমার মন সায় দিচ্ছে না।
– সুমি তুমি মাকে একটু বুঝাও তো।
– মা এত টেনশনের কি আছে কাজটা শিখলে তো ভালোই হয়। আর এখানে শেখার জন্য কোনো টাকা লাগবে না। তুমি রাজি হয়ে যাও মা। আর বাবা কে কিছু বল না। তুমি কি চাও না তোমার মেয়ে স্বাবলম্বী হোক?
– আচ্ছা তোরা যা ভালো বুঝ তাই কর। কিন্তু কোনো যেন ঝামেলা হয় না। আর সুমি অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।
আমি জানি কথাটা আমাকে উদ্দেশ্য করেই বলা হয়েছে। তাই একটু রাগ নিয়ে শ্বাশুড়ির দিকে তাকালাম।
অনেক কষ্টে রাগ কন্ট্রোল করলাম।
– আচ্ছা মা আমি আলিফ কে নিয়ে ঘরে যাই। আর আপনি এগুলো নিয়ে শুধু শুধু টেনশন কইরেন না। আর কাউকে বইলেন না।
– আচ্ছা ঠিক আছে। তবে ঘরে যেন শান্তি বিরাজ থাকে।
আমি আমার ঘরে চলে গেলাম। আলিফ কে খাইয়ে তুহিন কে ফোন দিলাম।
– হ্যালো
– হুমম বলো।
– আমাদের ২ জনেকেই কি এখানে এডড করে দেওয়া যায় না?
– দুজন কেন? তুমি একলাই আসো এত ননদ টনদ এর চিন্তা করা লাগবে না।
– আরে নাহ তুমি বুঝার চেষ্টা কর। ওরে না নিয়ে গেলে আমি আসতে পারব না। আমাকে ঘর থেকে বেড় হতে হলে আমাকে সুমিকে নেওয়া দরকার।
– আচ্ছা দেখি কি করা যায়।
_______
উফফ কি ভাবছি আর কি হচ্ছে। কোথায় ভাবলাম লিমাকে আসতে আসতে নিজের কাছে এনে ফেলব। এখন সব গন্ডগোল পাকিয়ে দিল সুমি।
কি করা যায়,,,
মাথা চুলকাচ্ছে আর ভাবছে তুহিন সুমি সুমি সুমি। তুহিন কিছু একটা ভাব কি করা যায়। তোর প্লান কোনো ভাবে নষ্ট করা যাবে না।
অনেক খুন ভাবনার পর তুহিন। আরে তুহিন তোর তো কপাল খুলে গেছে। এতো মেঘ না চাইতে জল একটার সাথে আর একটা ফ্রি। এতে তো আমারি লাভ আমি দুজন কেই কব্জা করতে পারব।
তুহিন ওর মাথায় অন্য প্ল্যান ছক করে যাতে তার সব দিকেই লাভ।
________
সুমি মা সুমি,,,,
– হুমম মা বল।
– মা বলছিলাম কি তুই তোর ভাবির সাথে এভাবে মিশিস না। তোর ভাবির মতলব ভালো না তুই তার সাথে যাস না।
– না মা ভাবি অনেক ভালো হয়ে গেছে। আর শোনো মা আমি তো কোনো খারাপ কাজে যাচ্ছি না। আমি তো হাতের কাজ শিখব আর তাও ফ্রী তে। সুতরাং আমারি লাভ হবে। আর ঘরে সারাদিন শুয়ে বসে থাকি হাতের কাজ শিখলে তো আর কোনো সমস্যা নাই আরো ভালো হবে ঘরে বসে পর্দার সাথে ঘরে বসে কাজ করতে পারব
– সব বুঝলাম। দেখ তুই কাজ শিখতে চাস এটা অনেক ভালো কথা। আর তুই তোর রেহানা ভাবির কাছেও শিখতে পার। ওত দূর গিয়ে শেখার কি আছে৷ তোর ভাই বাবা শুনলে কি মনে করবে?
– মা বাদ দাও কিছু হবে না। আর কারো ঘরে গিয়ে শিখা লাগবে না। রেহানা ভাবির কাছে শিখলে ৩-৪হাজার টাকা লাগবে। আর ঐখানে ফ্রীতে শিখব।সাথে সার্টিফিকেট দিবে। তুমি এত টেনশন কর না।
আমার রাতে একটুও ঘুম হয় না সারারাত এপাশ ওপাশ করছি। চোখ বন্ধ করলেই দেখি আমি সেলাইয়ের কাজ করছি। মাথায় নানা রকম স্বপ্ন ঘুরাফিরা করছি।
সকাল সকাল আমি সুমি ঘরে গেলাম। গিয়ে সুমি কে বল্লাম,,,,,,,,,
চলবে,,,,,,,,,,,
(আসসালামু আলাইকুম,,,,, আজকের পার্ট টা ছোট হইছে তার জন্য দুঃখিত। ঝামেলায় আছি তাই একটু দেরি হচ্ছে। ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। )