এক্সিডেন্টলি প্রেম পর্ব ১৭

#এক্সিডেন্টলি_প্রেম♥
#পার্ট-১৭♥
#Ayanaa_Jahan(Nusraat)♥

হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে নিঃশব্দে, খানিকটা লুকিয়ে চুরিয়ে ঘরে প্রবেশ করলো অন্বিতা। ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিছানার বদলে খিদে চেপে রাখতে ব্যস্ত নিশান্তকে টেবিলে ঠেস দিয়ে বসে থাকতে দেখে মায়াভরা চোখে তাকালো সে। “ইশশ, পেটে অসম্ভব খিদে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কি নির্মভাবে এই কঠিন যুদ্ধে নেমেছেন উনি!” বাক্যটা আনমনেই আওড়ে নিয়ে আরো কয়েক ধাপ এগোলো। প্লেটটা টেবিলের এর কোণায় রেখে, তার পাশে পানি ভর্তি স্বচ্ছ কাচের গ্লাসটা রাখলো খুবই সাবধানে। নিশান্ত এখনোও টেবিলে মাথা রেখে চুপচাপ ভার ছেড়ে বসে আছে একই ভাবে। যা দেখে কপাল কুঁচকালো অন্বিতা। দ্বিধাভরা চোখে চেয়ে গলা খাঁকারি দিলো প্রস্তুতি স্বরূপ। সামান্য ঝুঁকে স্পষ্ট গলায় ডাকলো,

—- মি. নিশান্ত…এই যে শুনছেন? নিশান্ত…!

পরিপ্রেক্ষিতে কোনো উত্তর না আসায় কপালের ভাঁজটা দৃঢ়তর হয়ে এলো তার। “উনি কি তবে ঘুমিয়ে পড়লেন?” প্রশ্নটা মনের কোণে বাদ্যযন্ত্রের ন্যায় বাজতে শুরু করতেই জিহ্ব দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো অন্বিতা। দ্বিধাদ্বন্দে জট পাকিয়ে কাঁপাকাঁপা হাতে নিশান্তের বাহুতে হাত রাখলো সে। সাথেসাথেই বিদুৎ এর ন্যায় শিহরণ বয়ে গেল তার পুরো বক্ষ জুড়ে। কেঁপে উঠলো অন্বিতা। ঘনঘন দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে অল্প শক্তি প্রয়োগ করে ঝাঁকালো নিশান্তকে। তবু সাড়া এলো না অপর পাশ থেকে। অবচেতন নিশান্তকে দেখে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লো সুক্ষ্মভাবে। অন্বিতা এদিক ওদিক তাকালো। উপর হয়ে টেবিলে ঠেস দিয়ে মাথা রাখায় মুখটা দৃষ্টি গোচর হচ্ছে না নিশান্তের। যার দরুন সন্দিহান ভাব নিয়ে ফ্লোরে ঝুঁকে বসলো অন্বিতা। টেবিলটা গ্লাসের তৈরি হওয়ায় নিচ থেকে ওপরে কিংবা ওপর থেকে নিচে স্পষ্ট এপার-ওপারের দৃশ্য চোখ ফুটে উঠতে পারে নির্দ্বিধায়। যার দরুন নিশান্তের চুপসে যাওয়া মুখটা দেখবার জন্য ফ্লোরে বসে হাতে ও হাটুতে ভর করে তাকে এগোতে হলো খানিক। টেবিলের নিচে নিশান্তের মুখ বরাবর গিয়ে থামলো অন্বিতা। মাথা উঁচু করে চোখ তুলে তাকাতেই ঘুমে কাতর নিশান্তের ফোলা চোখ-মুখ আবিষ্কার করলো সে।

বেঘোরে ঘুমোবার ফলে নিচের গোলাপি আভায় মোড়ানো ঠোঁটটা অপেক্ষাকৃত বেশিই ফুলে উঠেছে তার। চোখে মুখে স্পষ্ট ক্লান্তির ছাপ। ব্রাউন সিল্কি চুলগুলো এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে রয়েছে তার কপাল জুড়ে। অন্বিতা মোহনীয় চোখে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো নিশান্তের ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমানো মুখখানাকে। মনের মাঝে লুকায়িত ইচ্ছেগুলো প্রাণ ফিরে পেলো আবারও। সুপ্ত ইচ্ছেগুলো স্নায়ুতন্ত্রে বার্তা পাঠালো নিশান্তের এলোমেলো চুলগুলো আরো খানিকটা এলোমেলো করে দেবার। অবাধ্য হাত দুটো মস্তিষ্কের বিরুদ্ধে গিয়ে ছুঁয়ে দিতে চাইতে লাগলো তার খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে খেলানো গাল দুটো। অন্বিতা মাথাটা আরো খানিকটা উঁচু করে যথাসম্ভব কাছাকাছি এলো নিশান্তের। আনমনেই আলতো ভাবে কাচের ওপার থেকে হাত রাখলো তার মুখের ওপর।

ঘুমের মাঝেই ভ্রু কুঁচকালো নিশান্ত। যাতে আবারও মুগ্ধ হলো অন্বিতা। হঠাৎ ঘুমে টুইটুম্বর লাল দীপ্ত চোখ জোড়া পিটপিট করে মেলে তাকাতেই টেবিলের নিচে অন্বিতাকে উদ্বিগ্ন চোখে নিজের দিকে চেয়ে থাকতে দেখে চমকে উঠলো নিশান্ত। এইটুকু সময়ের মাঝে নিজের পেটের খিদের সাথে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চালাতে চালাতে যে কখন অবাধ্য চোখ দুটো বুজে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গিয়েছিলো বুঝতেই পারলো না সে৷ চটজলদি উঠতে গিয়ে ডান হাতটা টেবিলের কোণায় গিয়ে লাগলো তার। সাথেসাথেই চাপা আর্তনাদের বেশে ওষ্ঠদ্বয় কর্তৃক নিসৃত হলো অস্ফুট স্বরে করা ক্রন্দন মিশ্রিত চিৎকার,

— “আহহহ…!”

অন্বিতা হকচকিয়ে উঠলো। নিজের বেহায়াপনায় লজ্জিত হয়ে তৎক্ষণাৎ বেড়িয়ে এলো টেবিলের তল থেকে। ব্যস্ত স্বরে নিশান্তের হাতে দৃষ্টি ফেলে জিজ্ঞেস করলো,

—- একি লাগলো কি করে হাতে? ঠিক আছেন তো আপনি?

নিশান্ত নিজেকে সামলিয়ে ঠোঁট কামড়ে ব্যথা সহ্য করে নিলো। মুখে স্বাভাবিকতা ফুটিয়ে বললো,

—- ব্যস্ত হবেন না আমি ঠিক আছি, আপাতত আপনি বলুন এরকম ইঁদুরের মতো টেবিলের তলায় কি করছিলেন?

অন্বিতা ভয়ার্ত চোখে তাকালো। দ্বিধায় ভারী হয়ে এলো তার বুক। চোখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক চেয়ে আমতা-আমতা করে জবাব দিলো,

—- ইয়ে মানে আপনি জেগে আছেন নাকি ঘুমিয়ে গেছেন তাই দেখার জন্য টেবিলের তলে ঢুকেছিলাম আর কি! আমারটা ছাড়ুন, আপনি আজ হঠাৎ এভাবে ঘুমিয়ে পড়লেন যে? সেদিন তো আমায় সেকেন্ডের মাঝে ঘুমোতে দেখে বকেছিলেন বেশ!

নিশান্ত সন্দেহ ভরা চোখে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকালো। তবু সেই সন্দেহ মনের গহীনে চাপা রেখে প্রকাশ করতে পিছ পা হলো। নিজের এলোমেলো হয়ে যাওয়া চুলগুলোর মাঝে বাম হাত চালিয়ে বললো,

—- ব্যাপারটায় আমি নিজেও অবাক মিস অন্বিতা। শরীর ক্লান্ত হয়তো সেজন্য ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তা আপনার হলো? যেগুলো ম্যাথম্যাটিকাল টার্মস সলভ করতে দিয়েছিলাম হয়েছে সেগুলোর সলিউশন করা?

অন্বিতা জিহ্বে কামড় দিয়ে মাথা ডানে-বামে নাড়ালো। যার অর্থ “নাহ, এখনো করা হয় নি সবটা।” নিশান্ত হাসলো।! অল্প সময়ে অপূর্ণ ঘুমের দরুন লালবর্ণ ধারণ করা চোখজোড়া চুলকে বললো,

—- তাড়াতাড়ি সলভ করুন, হাতে সময় বেশি নেই। আর মাত্র দু দিন পরই পরীক্ষা ভুলে যাবেন না।

অন্বিতা শুকনো ঢুক গিললো। বরাবরই “পরীক্ষা” নামক ভয়ানক শব্দে কেঁপে উঠে তার বুক। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। “পরীক্ষা” শব্দটা নিয়ে নিজ মনে খানিক নাড়াচাড়া করে নিতেই মাথায় এলো সাথে করে আনা খাবারের কথা। ভাবনা ফেলে হকচকিয়ে উঠলো সে। এক ছুটে টেবিলের ওপরে রাখা খাবারের প্লেটটা থেকে ঢাকনা সরাতে সরাতে বললো,

—- দেখেছেন কি ভোলা মন আমার। সেই কখন আপনার জন্য খাবার এনে রেখেছি অথচ আপনাকে দিতেই ভুলে গিয়েছিলাম!

বলেই হাতে প্লেট উঠে চেয়ার টেনে বসলো সে। চামচে সামান্য আলুভাজি আর ভাত উঠিয়ে নিশান্তের মুখের সামনে ধরে বললো,

—- নিন, হা করুন।

নিশান্ত গোলগোল চোখ করে তাকালো। বিস্ময়ে ভড়কে গিয়ে বললো,

—- একি করছেন মিস অন্বিতা? আপনি আমায় খাইয়ে দিতে খাবার এনেছেন কেনো?

অন্বিতা চোখমুখ কুঁচকে জবাব দিলো,

—- তা কি করবো বলুন? আপনার পেটের মধ্যে যে খিদের ফোয়ারা বইছে তার আওয়াজে তো কান ফেটে যায় যায় অবস্থা হচ্ছিলো আমার। নিজের কান দুটো বাঁচাতেই এই ছোটখাটো প্রচেষ্টা স্রেফ!

নিশান্ত করুন চোখে তাকালো। লজ্জায় কুঁকড়ে এলো তার পুরো শরীর। “ইশশস তবে কি পেটের গুড়গুড় আওয়াজগুলো অন্বিতা শুনতে পেয়েছিলো সব?” প্রশ্নটা নিজ মনে আলোড়নের সৃষ্টি করতেই ঠোঁট কামড়ে ধরলো সে। অন্বিতা চামচ হাতে তাড়া লাগালো, ব্যস্তস্বরে বললো,

—- এতো কি ভাবছেন বলুন তো? দেখুন এখন এতো ভাবাভাবির কাজ নেই। খাবার গুলো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। জলদি জলদি হা করুন…! আপনাকে খাইয়ে দিয়ে আবারও পড়তে বসতে হবে আমায়।

নিশান্ত বিস্ময়ে ঠোঁটজোড়া আলাদা করে “হা” আকার ধারণ করলো আনমনেই। অন্বিতা সুযোগ সন্ধানী রূপে মুচকি হাসলো। ফট করে চামচটা ঢুকিয়ে দিলো নিশান্তের মুখে। নিশান্ত ফুটবলের ন্যায় চোখ বড় বড় করে তাকালো। অন্বিতা ইশারায় ভাতটুকু খেয়ে নিতে বলতেই কাঁপা-কাঁপির চোটে ভুলক্রমে না চিবিয়েই গিলে ফেললো সে। সাথেসাথেই তালুতে আটকে গেলো খাবার। যার দরুন বিষম খেয়ে শুকনো কাশিতে ভেঙ্গে পড়লো অগত্যাই। নিশান্তকে কাশতে দেখে হকচকিয়ে উঠলো অন্বিতা। তৎক্ষণাৎ পানির গ্লাসটা এনে নিশান্তের মুখে তুলে ধরলো সে। নিশান্ত কাশতে কাশতে অন্বিতার এগিয়ে দেওয়া গ্লাসে ঠোঁট লাগালো চটজলদি। চুমকের পর চুমুকে পান করে নিলো গ্লাসের অর্ধেক জল। কাশি নিয়ন্ত্রণে আসতেই ঠোঁট সড়িয়ে নিলো গ্লাস থেকে। অন্বিতার মুখের স্পষ্ট দুঃশ্চিতার ছাপ। নিশান্ত সেই ভয়ে মাখা মুখশ্রীতেই দৃষ্টি ফেললো। চোখাচোখি হতেই কেঁপে উঠলো অন্বিতার বুক। কয়েক সেকেন্ড এক দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে চোখ নামিয়ে নিলো দুজনেই। অন্বিতা উল্টো দিকে ঘুরে নিজেকে স্বাভাবিক অবস্থায় উপস্থাপন করবার চেষ্টা চালালো। নিশান্ত বিস্ময় ফেলে গলায় হাত রেখে নড়ে চড়ে বসলো। অন্বিতা আবারও মুখে জোড় পূর্বক হাসি ফুটিয়ে প্লেট থেকে মাংসের টুকরো ভাতে মিশিয়ে চামচে তুললো। নিশান্তের মুখে তুলে দিতে নিতেই নিশান্ত তা খেয়ে নিলো নির্দ্বিধায়। যা দেখে অন্বিতার অস্বস্তি খানিকটা কমে এলো। এক পর্যায়ে কয়েক স্পুন খাবার পরই দোমনা ভাব ফুটে উঠলো তার চোখেমুখে। খাওয়ায় বিরতি নিয়ে অন্বিতার চোখে চোখ রেখে নিশান্ত বললো,

—- শুধু আমায় খাইয়ে দিলেই হবে? নিজেও যে এখনোও খাননি সেদিকে খেয়াল আছে আপনার? আমার বেলায় ষোল আনা আর নিজের বেলায় লবডঙ্কা! এটা তো ঠিক নয় মোটেই।

অন্বিতা পাত্তা দিলো না। চামচ দিয়ে ভাতগুলো নেড়েচেড়ে আবারও নিশান্তের মুখের সামনে তুলে ধরে বললো,

—- আমার তো আর আপনার মতো পেট গুড়গুড় মার্কা খিদে পায় নি, সো আমার কথা বাদ দিন। আপনি চুপচাপ খান তো বাবা।

নিশান্ত ভ্রু কুঁচকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো৷ প্রতিবাদী সুরে অন্বিতার বিরুদ্ধে বুলি ফুটিয়ে বললো,

—- আম ফুল, আর খেতে পারবো না। এতো গুলো খাবার আনতে বলেছে কে আপনাকে? দেখুন, খাবার অপচয় আমি পছন্দ করিনা কোনো কালেই। দ্যটস হোয়াই ইউ হ্যাভ টু ফিনিস দ্যেস এক্সেস ফুডস মিস অন্বিতা।

অন্বিতা সরু চোখে তাকালো। নিশান্ত যে ইচ্ছে করে তাকে খেতে বাধ্য করতে চাইছে তা বোধগম্য হতে বেশি বেগ পেতে হলো না তার। তবু নাছোড়বান্দা নিশান্ত। অন্বিতার মুখ বাঁকিয়ে “না!” বলা শব্দটি কান পর্যন্ত পৌঁছোলেও তা নির্দ্বিধায় ঝেড়ে ফেলতে ওস্তাদ সে। যার দরুন অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাকি ভাতটুকু খেয়ে সাবাড় করতে হলো অন্বিতাকে। নিশান্ত প্রাপ্তির হাসি হাসলো। আরাম করে চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বললো,

—- দ্যটস লাইক আ গুড গার্ল! এখন যান, হাত ধুয়ে এসে বাদবাকি ম্যাথগুলোর সলিউশন করুন। এক্সামে এই কয়টা টাইপ থেকে যেকোনো একটা ম্যাথ আসবে শিওর থাকবেন।

অন্বিতা ঠোঁট কুঁচকে সম্মতি সূচক মাথা নাড়িয়ে প্লেট আর গ্লাস হাতে উঠিয়ে হাটা ধরলো কিচেনের উদ্দেশ্যে। নিশান্ত পলকহীন চোখে কয়েক সেকেন্ড স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো সেই পানে। পর মুহুর্তে চোখ ফিরিয়ে কপালে সুক্ষ্ম চিন্তার ভাঁজ ফেললো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও কেনো যেনো তার চোখ দুটো ঘুরেফিরে সেই অন্বিতাতেই গিয়ে আটকে যায়, যার দরুণ নিজেই নিজের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে নিশান্ত। যতোবার অন্বিতার থেকে নিজেকে দূরে সড়িয়ে রাখতে চাইছে ততই যেনো আরো তীব্রভাবে মায়ায় জড়িয়ে পড়ছে সে তার। নিশান্ত গহীন ভাবনায় ডুব দিতে চেয়ে বা হাতে কপালে স্লাইড করতে শুরু করলো, তবে ভাবনার অতল গহীনে হারাবার পূর্বেই বাঁধা দিলো কেউ। অসময়ে আর্তনাদ করে উঠা ফোনের আওয়াজে চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটে উঠলো তার। এক রাশ অলসতায় কাতর হয়ে বা হাতেই ফোনটা রিসিভ করে কে কল করেছে না দেখেই কানে ধরলো সে। ওপাশ থেকে কোনো গম্ভীর কন্ঠস্বরে দৃঢ়তার সহিত কেউ বললো,

—- আসসালামু আলাইকুম, রাইয়ান আহমেদ নিশান্ত বলছেন?

—- ওয়ালাইকুম আসসালাম! জ্বি, বলছি, আপনি কে বলছেন?

ওপাশ থেকে হাল্কা উত্তেজনায় দম ফেললো লোকটি। ব্যস্তস্বরে বলে উঠলো,

—- আমি নওগাঁ থেকে রবিউল হোসেন বলছি, আপনার জন্য সুখবর আছে মি. নিশান্ত, আপনি এতোদিন যেই মেয়েটিকে খুঁজছিলেন তাকে পাওয়া গেছে। আমি আপনাকে ঠিকানা টেক্সট করে জানিয়ে দিচ্ছি, চলে আসবেন দ্রুত!

উপরোক্ত বাক্যটা শ্রবণগোচর হতেই চমকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো নিশান্ত। উত্তেজনায় থরথর করে কেঁপে চলেছে তার পুরো শরীর। বিশ্বাস কর‍তে কষ্ট হচ্ছে ভীষণ। চোখ দুটো কেমন যেনো ভরে আসতে চাইছে তার। পরিপ্রেক্ষিতে জবাব দেওয়ার মতো বুলি ফুটিয়ে উঠতে পারছে না সে কোনোমতেই। তবে কি এতোদিনের দৃঢ় লক্ষ্যটা পূর্ণ হলো? খুঁজে পেলো কি সে তার ছোট্টবেলার সঙ্গিনীকে, তার খেলার সাথী, তার প্রেয়সীকে? যার সাথে দেওয়া-নেওয়া হয়েছিলো নিজেদের মন। ছোট্ট ছোট্ট হাতদুটো এক করে মুচকি হেসে করা হয়েছিলো কিছু শপথ, কিছু অঙ্গীকার যা আজো কানে বেজে ওঠে ঝংকারের ন্যায় নিশান্তের।
.
.
.
চলবে…………………💕

( ছোট হওয়ায় দুঃখিত, কেমন হচ্ছে জানাবেন অবশ্যই নয়তো লেখার উৎসাহ হারিয়ে যায়।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here