কথা দিলাম পর্ব -২৮+২৯

‘ কথা দিলাম ‘ 🌸❤️
||পর্ব ~ ২৮||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

সিয়ারার বিষয়টা মনে পরতেই ও উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়। সেটা দেখে দিয়ারা নিজের ব্যাগ নিয়ে গেলে দেবাংশু জিজ্ঞেস করে,

দেবাংশু: (হতাশ হয়ে) তুই যাবি না আমাদের সাথে?

দিয়ারা: আব, আমি জানি না দেবদা। ভিকিদা আমাকে এখনও কিছু জানায়নি।

দেবাংশু: কেন? তুই আজ কাল আধভিকের কথায় উঠছিস বসছিস নাকি? (রেগে)

দিয়ারা: ভিকি দার নামে কোনো বাজে কথা আমি শুনতে চাইছি না দেবদা। প্লিজ! (উল্টো রাগ দেখিয়ে)

দেবাংশু: বাহবা? এতো ভালোবাসা?

দিয়ারা: শ্রদ্ধা বললে বেশি ভালো হবে। আজ অবধি ভিকিদা আমার জন্য যা যা করেছে তার সব কিছুর জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ইভেন আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি সেটাও ভিকিদার জন্যেই। তোমাকে এত ডিটেইলস বলার সময় নেই আমার সো বাই। নেক্সট দিন আমার সামনে কোনো খারাপ কথা বলতে এসো না ভিকিদার নামে, আমি মেনে নেব না।

দিয়ারা নিজের ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো দেবাংশুকে পাশ কাটিয়ে। দেবাংশু অবাক ও বিরক্ত হয়ে বললো,

দেবাংশু: দুই বোন এক গোয়ালের গরু। আধভিকের নামে বাজে কথা বললেই দুটো কথা শুনিয়ে দেবে। ডিসগাস্টিং!

[আমার কিপ্যাডটা একটু প্রবলেম করছে, দেবাংশু নামটা লিখতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। তাই আমি কি দেবাংশু নামটা শুধু দেব লিখে চিহ্নিত করতে পারি? তাহলে খুব সুবিধা হয় আমার। আজকের পর্বে লিখবো না, আপনাদের অসুবিধা না হলে মন্তব্য করবেন তাহলেই লিখবো পরের পর্ব থেকে।]

সিয়ারা রেডি হয়ে বেড়াতেই দেখলো ঘরে কেউ নেই। মনে পড়ে গেলো দিয়ারার আজকে শুট আছে তাই ও চলে যাবে বলেছিল সকাল সকাল। আর বেশি কিছু না ভেবে সিয়ারা নিজের ব্যাগ গোছাতে শুরু করলো।

অন্যদিকে,

দিয়ারা আধভিকের অফিসে এসে দেখলো আধভিক কেবিনে বসে আছে চোখ বন্ধ করে। দিয়ারা প্রশ্ন করলো,

দিয়ারা: আজকে তো আমার একটা ফটোশুট ছিলো ম্যাগাজিনের জন্য। তুমি কি সেটা পোস্টপন করেছো?

আধভিক: হ্যাঁ। যা ফ্ল্যাটে গিয়ে রেডি হয়ে, লাগেজ গুছিয়েনে। আজকে দুপুরের ফ্লাইটে আমরা বাগডোগরা যাচ্ছি।

দিয়ারা: আমি গিয়ে কি করবো ভিকিদা? আমার তো কোনো কাজ নেই ওখানে।

আধভিক এইবার চোখ খুলে দিয়ারার দিকে তাকালে দিয়ারা একটু ঘাবড়ে যায় কারণ আধভিকের চোখজোড়া লাল হয়ে রয়েছে। যদিও এটা নতুন কিছু নয় এবং গতকাল রাতে কি ঘটেছে সেটার পর বিষয়টা অস্বাভাবিক লাগার কথা নয় দিয়ারার কাছে। তবুও কেন জানো সে ভয় পেয়ে গেল।

আধভিক: আমি বলেছি যখন তুই যাবি তখন তুই যাবি। কাজ থাকুক না থাকুক, সেসব জানার প্রয়োজন নেই। ঠিক আছে?

দিয়ারা: ঠিক আছে। বলছি…তোমার কি মাথা যন্ত্রণা করছে?

আধভিক: এটা নতুন কিছু নয় আমার জন্য। সয়ে গেছে এইসব ছোটো খাটো যন্ত্রণাগুলো আমার। বড়ো বড়ো আঘাত বুকে নিয়ে এখনও বেঁচে আছি, এগুলো নগণ্য। (তাচ্ছিল্য হেসে)

দিয়ারা বুঝতে পারলো আধভিক গতরাতের কথাই বোঝাতে চেয়েছে। সেও কম কষ্ট পায়নি গতরাতের বিষয়ে তার মানে নিশ্চয় বড়ো কোনো ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যাঁর দরুন দুজনেই কষ্ট পাচ্ছে। দিয়ারা সবটা বলার জন্য বললো,

দিয়ারা: ভিকিদা, আমার তোমাকে কিছু বলার আছে। খুব জরুরী।

আধভিক: আপাতত আমাদের ফ্লাইটটা খুব জরুরী। ওখানে গিয়ে সব শুনবো যা রেডি হয়েনে এখন গিয়ে।

কথাগুলো বলে আধভিক নিজের মুখ দু হাত দিয়ে ঢেকে বসলো। দিয়ারা চেয়েও আর কিছু বলতে পারলো না কারণ সত্যি হাতে সময় কম। তাই সে চটজলদি বেরিয়ে গেলো অফিস থেকে নিজের ফ্ল্যাটের উদ্দ্যেশ্যে।

ইন দম দম এয়ারপোর্ট,

আভাস বাবু, আধভিক এবং দিয়ারা এয়ারপোর্টে পৌঁছে ভিতরে ঢুকতেই দেখলো সিয়ারা এবং দেবাংশু ফরমালিটিস কমপ্লিট করছে। ওরাও সেসব কমপ্লিট করে, বাসে করে নিজেদের প্রাইভেট জেটের কাছে চলে গেলো। ইতিমধ্যে সবাই এসে পরেছে এবং লাগেজও তোলা হয় গেছে।

জেটে বসার পর সিয়ারার হঠাৎ চোখটা আধভিকের দিকে গেলো যে কি না তাঁর বিপরীত দিকের রো তে জানলার কাছে বসে আছে। আধভিকের পাশেই রয়েছেন আভাস বাবু এবং অপরদিকে দিয়ারা। সিয়ারা বোনের দিকে তাকিয়ে থাকলে হঠাৎই দুজনের চোখ পরে যায় এবং দিয়ারা উঠে এসে সিয়ারার মুখোমুখি বসে। দিয়ারা বসতেই দেবাংশু অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

দিয়ারা: (মনে মনে — যাহ বাবা! এর আবার কি হলো?…ওহ, সকালের বলা কথাগুলো মনে হয় গায়ে লেগেছে বাবুর। আমিও দেখি, কতক্ষন এমন ভাবে থাকতে পারেন মশাই।) এই দি?

সিয়ারা কোনো উত্তর না দিয়ে দিয়ারাকে হাত ধরে নিজের সামনের দিকে টেনে নিয়ে কানে কানে বললো,

সিয়ারা: কি হয়েছে তোর ভিকিদার? এভাবে বসে আছে কেন সে?

সিয়ারা প্রথম থেকেই লক্ষ্য করছে আধভিকের চোখ লাল হয়ে রয়েছে। ওর দিকে যে তাকাবে না এটা বুঝতেই পেরেছিলো ও। কিন্তু এতটা চুপচাপ থাকার কারণ বুঝতে পারছে না সিয়ারা। দিয়ারা উত্তর দিতে যাবে তার আগেই দেবাংশু উঠে চলে গেলো ওদের স্পেস দেওয়ার জন্য।

দিয়ারা: এটা তোর কাছে অস্বাভাবিক হলেও আমাদের কাছে খুবই স্বাভাবিক বিষয় দি। এই দু বছরে বেশির ভাগ রাত ভিকিদা না ঘুমিয়ে কাটিয়েছে। যেদিন যেদিন নেশাটা বেশি হয়ে যেত, রাতে ঘুমাতো না তারপরের দিন সকালেই এমন দেখা যেত। নেশা করার পরেও মানুষটার নাকি ঘুম হয় না, ভাবতে পারছিস দি? এক/দু ঘন্টা ঘুমাতো তারপরেই নাকি ঘুম ভেঙে যেতো আর ছটফট করতো।

দিয়ারা থামলো এটুকু বলে। দিদির দিকে তাকিয়ে দেখলো সে আধভিকের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আধভিকের কোনো হেলদোল নেই সে চুপচাপ চোখ বন্ধ করে, পিছন দিকে মাথা এলিয়ে বসে আছে।

দিয়ারা: গতরাতে যা হয়েছে তাতে এমন হওয়াটা…

দিয়ারার কথা শেষ হওয়ার আগে সিয়ারা একটা বাম হাতে দিলো ওর। দিয়ে বললো,

সিয়ারা: এইটা দিয়ে একটু ম্যাসেজ করে দিতে বল ঠিক হয়ে যাবে নিমিষে। যা, দেরী করিস না।

আর কথা না বাড়িয়ে দিয়ারা উঠে চলে গেলো। আভাস বাবুর কানে কানে কথাটা বলে হাতে দিল বামটা ওনার। কিছুক্ষণ বাদে আভাস বাবু ধীরে ধীরে বামটা আধভিকের কপালে দিয়ে ম্যাসাজ করে দেন। কিছু মুহুর্ত পর হঠাৎ করেই আধভিক দিয়ারাকে বলে ওঠে,

আধভিক: তোর দিদিকে বলে দিস আমার উপর জানো দয়া না দেখায়। আধভিক রায় চৌধুরীর কাওর দয়ার প্রয়োজন নেই।

আধভিক আভাস বাবুর হাতটা ধরে ওনার দিকে তাকালে উনি হাত নামিয়ে মাথা নিচু করে নেন। আধভিক দিয়ারার দিকে তাকালে দিয়ারা চোখ নামিয়ে নেয়। এরপর জানলার দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয় আধভিক, কারণ সে আড় চোখে খেয়াল করেছে সিয়ারা তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে।

সিয়ারা: (মনে মনে — এতটা অবহেলা, ঘৃণা পাওয়ার মতোও কিছু করিনি আমি আধভিক। একটা সুযোগ তো আমিও ডিসার্ভ করতাম। কিন্তু তুমি আমাকে কোনো সুযোগ দিলে না, একের পর এক দোষারোপ করে গেলে আমায়। ঠিক আছে, তোমায় কিছু না জানিয়ে ছেড়ে চলে গিয়ে ভুল করেছিলাম। সেটার শাস্তি হিসেবেই এসব আমি মাথা পেতে নিলাম।)

সিয়ারা নিজের চোখের কোণে থাকা জলটা আড়াল করে নিয়ে জানলার দিকে তাকালো। অন্যদিকে, আধভিক মনে মনে ভাবছে,

আধভিক: (মনে মনে — কাল যেটা দেখেছি সেগুলো কি সত্যি? নাকি এর পিছনে অন্য কোনো বিষয় আছে? ওরকম ভাবে এক তরফা অ্যাকিউস করা কি ঠিক হলো সিয়ারাকে? উফ! আমি আর কিছু ভাবতেই চাইছি না। কেন ফিরে এলে সিয়ারা? কেন? আমার আর এই অশান্তি ভালো লাগছে না।)

বাগডোগরা পৌঁছানোর পর সেখান থেকে গাড়ি করে সবাই রওনা দিল দার্জিলিংয়ের উদ্দ্যেশ্যে। দার্জিলিংয়ের ফাইভ স্টার হোটেলে পৌঁছানোর পর সিয়ারা নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পরলো। দিয়ারা ফ্রেশ হয়ে সিয়ারার রুমে এসে ওকে ঘুমাতে দেখলে আর কিছু বলে না।

দিয়ারা: (মনে মনে — দেবা দেবী দুজনেই সমান। যদিও ভিকিদার ঘুমানোর যথেষ্ট কারণ আছে। তবে এই মেয়েটা? এই মেয়েটা ঘুমিয়ে পরলো? ধুর, ভেবেছিলাম ভিকিদাকে সবটা বলবো কিন্তু সুযোগই তো পাচ্ছি না। কি যে করি…)

এইসব ভাবতে ভাবতেই দিয়ারা নিজের ঘরের দিকে যাচ্ছিলো তখন কেউ ওর হাতটা পিছন দিয়ে টেনে ধরলো। পিছন ফিরতেই দেখলো দেবাংশু দাঁড়িয়ে আছে।

দিয়ারা: কিছু বলবে?

দেবাংশু: এড়িয়ে চলছিস কেন আমাকে? সকালের ঘটনার জন্য?

দিয়ারা: কোথায় এড়িয়ে চললাম? সুযোগ কোথায় পেলাম তেমন কথা বলার?

দেবাংশু: সত্যি তাই?

দিয়ারা: হ্যাঁ। আমি ঘরে যাচ্ছি, ঘুম পাচ্ছে আমার। তুমিও শুয়ে পরো এতটা জার্নির পর টায়ার্ড নিশ্চই।

দিয়ারা কথাটুকু বলে ঘরে ঢুকে যায় কিন্তু দেবাংশু নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে ঠাঁয়। কিছু মুহুর্ত পরই দিয়ারা আবার বেরিয়ে এসে বলে,

দিয়ারা: নাহ মানে আটকাবেও না? আবার যাবেও না? কি চাইছো টা কি তুমি? (রেগে)

দেবাংশু: তোকে!

দিয়ারা: হম? কি?

দেবাংশু: (আমতা আমতা করে) আব, ইয়ে মানে তোর সাথে কথা বলতে চাইছি। তুই তো কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই চলে গেলি।

দিয়ারা: (একটা ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে) কি বলবে বলো?

দেবাংশু: স্যরি! সকালে আমার ওভাবে বলা উচিত হয়নি। আমি অত কিছু না ভেবেই বলে ফেলেছি। (মাথা নিচু করে নিয়ে)

দিয়ারা: (হাসিমুখে) ঠিক আছে। এইবার যাও গিয়ে শুয়ে পরো। কারণ কালকে সকালে তোমাদের বেড়াতে হবে। আমি ঘরে ঘুমাবো আমার কোনো অসুবিধা নেই দেরী করে ঘুমালে।

দেবাংশু: তুই যাবি না আমাদের সাথে? (উত্তেজিত হয়ে)

দিয়ারা একটু অবাক হয়ে তাকালো দেবাংশুর দিকে। সঙ্গে সঙ্গে দেবাংশু কথাটা ঘুরিয়ে বললো,

দেবাংশু: না মানে হোটেলে একা থাকবি? সেটা কি ভালো হবে? তার থেকে আমাদের সাথে গেলে তোর সময় কেটে যাবে। বোর হতে হবে না ঘরে বসে।

দিয়ারা: (মুচকি হেসে) সেটাই তো ভেবেছিলাম আমি তবে আমার ঘুম পূরণ না হলে তো আমি উঠতে পারবো না তখন আমাকে হোটেলে একা একা বোরই হতে হবে। (দুঃখ দুঃখ মুখে করে)

দেবাংশু: না না তুই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পর। অনেক জার্নি হয়েছে আজকে, তুইও টায়ার্ড আর আমিও। গুড নাইট, সকালে দেখা হবে।

দিয়ারা: গুড নাইট! (হাসিমুখে)

দেবাংশু হালকা হেসে দিয়ারার গালটা আলতো করে টেনে দিয়ে চলে গেলো। দিয়ারা নিজের গালে হাত দিল, ঠিক সেই জায়গায় যেখানে দেবাংশু ধরেছিলো। মনে মনে ভাবতে লাগলো,

দিয়ারা: এই ছেলেটা পুরোই পাগল! কিন্তু হঠাৎ এমন ব্যবহার করছে কেন ও? ধুর, আমি বেশি ভাবছি।

দিয়ারা ঘরে গিয়ে শুয়ে পরে তাড়াতাড়ি। এদিকে দেবাংশুও ঘরে এসে নিজে নিজের বলতে থাকে,

দেবাংশু: যতই নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছি ততই লাগাম ছাড়া হয়ে যাচ্ছি দিয়ার সামনে। এমন কেন হচ্ছে আমার সাথে? এমনটা হলে কীভাবে হবে? এরপর থেকে সাবধানে থাকতে হবে।

দেবাংশুও ঘুমিয়ে পরে সুধাংশু বাবুকে ফোন করে। উনি যেহেতু আসেননি তাই চিন্তা করতে পারেন সেই ভেবেই দেবাংশু ফোন করে নিজেদের খবর দিয়ে ওনারও খোঁজ নিয়ে নিলো তারপর ঘুমিয়ে পরলো।

[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]’ কথা দিলাম ‘ 🌸❤️
||পর্ব ~ ২৯||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

পরেরদিন সকালে,

সবাই সকাল সকাল উঠে মিরিখ যাওয়ার উদ্দ্যেশ্যে তৈরী হয়ে নেয়। সিয়ারা রেডি হয়ে নীচে আসতেই সবার প্রথম চোখ যায় আধভিকের দিকে। সে চুপচাপ গাড়িতে হেলান দিয়ে মনের সুখে সিগারেট টানছে। ব্ল্যাক জিন্স, ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট এবং ব্ল্যাক শুজে বেশ হ্যান্ডসাম লাগছে তাঁকে। সিয়ারা তাঁর দিকে তাকিয়েই নীচে নামছিলো এমন সময় আধভিকও ওর দিকে তাকায়।

আধভিকের হঠাৎ মনে হয় কেউ ওকে দেখছে। তাই সাথে সাথে পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে সিয়ারা হোটেল থেকে বেরোচ্ছে। ব্লু ডেনিম জিন্সের সাথে মেরুন হুডি পরেছে সে। টুপিটা মাথায় দেওয়া এবং চুলগুলো ছাড়া, পকেটে হাত গুঁজে রয়েছে। সিয়ারার সাথে চোখে চোখ পড়তেই আধভিক চোখ ফিরিয়ে নিলো। সিয়ারা এসে দাঁড়াতেই আভাস বাবু ওকে ডেকে একটা সাইডে নিয়ে গেলো।

আভাস বাবু: সিয়ারা, আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে।

সিয়ারা: হ.. হ্যাঁ আ..আব, হ্যাঁ স্যার বলুন।

আভাস বাবু: আমার ছেলেকে কি এখনও ভালোবাসো?

সিয়ারা চুপ করে যায় আভাস বাবুর প্রশ্নে। মুহুর্তে দু চোখে জল ভরে ওঠে। আভাস বাবু সিয়ারাকে নীচে তাকিয়ে দেখে বুঝতে পারে। সিয়ারার গাল গড়িয়ে জল পরলে সিয়ারা সাথে সাথে চোখের জলটা মুছে নেয় আর বলে,

সিয়ারা: আমি আপনার ছেলেকে বরাবর ভালোবেসে এসেছি, ভালোবাসি আর আগামী দিনেও ভালোবাসবো। আমার জীবনে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে শুধু আধভিকই থাকবে স্যার।

আভাস বাবু: তাহলে কেন চলে গেছিলে তুমি? তুমি জানো আমার ছেলেটা কত কষ্ট পেয়েছে? ইভেন এখনও পাচ্ছে?

সিয়ারা: হ্যাঁ স্যার। সব কষ্ট আপনার ছেলেই পেয়েছে। এতোটাই কষ্টে রয়েছে সে যে নিজের ভালোবাসা কে অপমান করতেও দুবার ভাবছে না। বিশ্বাস করার কথা তো ছেড়েই দিলাম। এতটা কষ্ট পেয়েছে সে যে একটাবার আমাকে খুঁজে দেখার চেষ্টা করেনি, ফিরে আসার পর জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করেনি কেন আমি চলে গেছিলাম।

আভাস বাবু: দেখো আমার মনে হয় খুব বড়ো একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে তোমাদের মধ্যে।

সিয়ারা: সেটা বোঝার ক্ষমতা আপনার ছেলের নেই স্যার। সে আমার ফিরে আসায় খুশি নয়। আমি অনেক চেষ্টা করেছি সব ভুল বোঝাবুঝি দূর করার কিন্তু সে চায়নি। তাই আমি ঠিক করেছি আপনার ছেলেকে আর কোনোভাবে ডিস্টার্ব করবো না।

আভাস বাবু: দেখো এভাবে হাল ছেড়ো না। তুমি হাল ছেড়ে দিলে কীভাবে হবে?

সিয়ারা: (হাত জোড় করে) ক্ষমা করবেন স্যার। আমি আর কোনরকম চেষ্টা করতে চাই না। একটা সম্পর্ক ঠিক করতে গেলে দুজনের ইচ্ছার প্রয়োজন হয় তাহলেই অপরজনের চেষ্টা সাফল্য পায়। ইচ্ছা না থাকলে হাল ধরে থেকেও কোনো লাভ হয় না। ধরে নিন না আপনার ছেলে যাকে ভালোবেসে ছিলো সে একজন বিশ্বাসঘাতক ছিলো। মরে গেছে সে, আর ফিরবে না।

আভাস বাবু: এসব কথা বলতে নেই মা। আমি বুঝতে পারছি তুমিও কষ্ট পেয়েছো। আসলে আমার মনে হয় শুধু আমরা তোমাকে ভুল বুঝছি তা নয়, তুমিও ভুল বুঝছো। আমাদের সবটা নিয়ে কথা বলা উচিত। এইভাবে চলে গেলে কি সমস্যার সমাধান হয়?

সিয়ারা: আমার আর কোনো সমাধান চাই না আংকেল। আমার মুক্তি চাই, সব কিছু! সব কিছুর থেকে মুক্তি চাই। হাঁপিয়ে উঠেছি আমি। জানি না হয়তো শেষবারের জন্য আপনাকে এই ডাকটা ডেকে নিলাম। শুধু এটুকু বলবো, আপনার ছেলে আমাকে যেভাবে ভালোবেসেছে, সেভাবে ভালো না বাসলেও তাঁর থেকে কম ভালোবাসিনি আমি। আফসোস, ও আমাকে বুঝলো না।

সিয়ারা চলে যায় গাড়ির কাছে। এদিকে আধভিক দূর থেকে সিয়ারাকে আভাস বাবুর সাথে কথা বলতে দেখে। আভাস বাবু মনে মনে কিছু কথা ভেবে নিয়ে সবার সামনে গিয়ে আধভিককে ডাকেন।

আভাস বাবু: ভিকি?

আধভিক: বলো ড্যাড।

আভাস বাবু: তুমি আর সিয়ারা আগে চলে যাও স্পটে। ওখানে ডিরেক্টর তোমাদের অপেক্ষা করছে।

আধভিক: (অবাক হয়ে) আমরা দুজন কেন?

আভাস বাবু: তুমি অনেক হেল্প করবে আর সিয়ারা মানে আমাদের হিরোইনের সিন আগে রয়েছে। তাই উনি তোমাদের আগে ডেকেছেন। উনি এবং ওনার টিম সব কিছু অ্যারেঞ্জ করতে শুরু করে দিয়েছেন। তোমরা যেতে যেতে সব কমপ্লিট হয়ে যাবে। পৌঁছতে না পৌঁছতেই জানো শুট শুরু করে দেওয়া হয়। ঠিক আছে? আমরা তোমাদের পিছনে থাকবো, কিছুক্ষণ পরে বেড়াবো।

আধভিক বাঁধা দিতে গেলে আভাস বাবু থামিয়ে দেন আর ইশারা করেন যাওয়ার জন্য। আধভিক অতিরিক্ত পরিমাণে রেগে যায় আর সিয়ারার দিকে তাকায়। সিয়ারা নির্বাক হয়ে ওদের দুজনের কথপোকথন শুনছিল এতক্ষণ ধরে। আধভিকের দৃষ্টি ওর উপর পরতেই ও চোখ নামিয়ে নিলো। আধভিক চোয়াল শক্ত করে, রেগে মেগে গাড়িতে গিয়ে বসলে আভাস বাবু সিয়ারার কাছে গিয়ে বলেন,

আভাস বাবু: আমি খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারছি এই ভুল বোঝাবুঝির জন্য তোমরা দুজনেই ভীষণ কষ্ট পাচ্ছো। আর সব বুঝেও আমি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারিনা। আমার তরফ থেকে একটা চেষ্টা আমি করলাম। আমার ছেলেটা বড্ড অবুঝ সিয়া মা, তুমি তো এটা আমার থেকে ভালো জানো বলো?

সিয়ারা চোখে জল নিয়ে হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়লো।

আভাস বাবু: ও কিছুতেই মানতে পারছে না আজ অবধি যে তুমি সব জানার পরেও ওকে একা ফেলে চলে গেছো। এক একটা রাতে চিৎকার করে কাঁদতো ও তোমার নামই নিয়ে। শুধু এটাই বলত যে কেন এভাবে ছেড়ে গেলে। এই বিষয়টাই ওর মাথা থেকে বেরোচ্ছে না বলে সবটা এতটা জটিল। ও হয়তো না বুঝে তোমাকে কথা শোনাচ্ছে কিন্তু তাতে ও যে কম কষ্ট পাচ্ছে তা নয়। পার্টির দিন রাতেও যে কিছু হয়েছে সেটা আমি বুঝতে পেরেছি।

সিয়ারা: আমাকে কিছু বলার সুযোগই দিচ্ছে না আংকেল। আপনার ডিসিশনে ও যে একদম খুশি না এটা খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারছি আমি।

আভাস বাবু: ও ভীষণ পরিমাণ ফ্রাস্টেটেড হয়ে আছে। কি করা উচিত বুঝে উঠতে পারছে না। না তোমাকে কাছে টেনে নিতে পারছে আর না তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারছে। ফেলে আসা অতীতটা মনে করতে চাইছে না তোমার কথা শুনে এদিকে প্রত্যেক রাতে ওইসব কথা মনে করে নিজেকে কষ্ট দিচ্ছে। কি বলবো বলো? এইভাবে চলতে থাকলে ও নিজে কষ্ট পেয়ে পেয়ে নিজের জীবনটা শেষ তো করবেই, তোমাকেও কষ্ট দিয়ে, তোমার জীবনটা শেষ করবে। যাও, একবার শেষ চেষ্টা করে দেখো। এরপর যা হবে তা নিয়তি হিসেবে ধরে নেবে।

সিয়ারা চোখের জল মুছে হ্যাঁ বোধক মাথা নেড়ে এগিয়ে যায় গাড়ির দিকে এবং গাড়িতে উঠে বসে। গাড়িতে উঠতেই দেখে আধভিক গাড়িতে নেই, এদিকে ড্রাইভারও গাড়িতে নেই। কিছুক্ষণের মধ্যেই আধভিক এসে গাড়িতে উঠে বসে তবে সিয়ারার দিকে না তাকিয়ে জানলার দিকে তাকিয়ে থাকে। সিয়ারাও কিছু বলে না আর। ড্রাইভার এসে গাড়ি স্টার্ট করে বেরিয়ে পরে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। কিছুক্ষণ পর সিয়ারা আধভিকের দিকে তাকাতেই দেখে আধভিক ঘুমাচ্ছে। অনেক সকালে ওঠায় সিয়ারাও সিটে মাথা এলাতেই ঘুমিয়ে পরে।

দুই ঘন্টা পর,

ইতিমধ্যেই ওরা মিরিখ যাওয়ার রাস্তায় প্রবেশ করেছে। ড্রাইভার গাড়ি বেশ জোরেই চালাচ্ছে। সকাল হওয়ায় বেশি গাড়ি না থাকার দরুন। সিয়ারার ঘুম ভাঙতেই সিয়ারা দেখে আধভিক জানলার বাইরে তাকিয়ে আছে। আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে, চারিদিকে সাদা কুয়াশা ছেয়ে রয়েছে। ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে সাথে। বেশ মনোরম পরিবেশ, তবে মনে হচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশ ভেঙে বৃষ্টি আসবে। সিয়ারা আধভিকের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ভেবে নেয় ছোট্টো করে কীভাবে সবটা বুঝিয়ে বলবে আধভিককে। এরপর দম নিয়ে বলার চেষ্টা করে,

সিয়ারা: আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই। আজকে…

আধভিক: হ্যাঁ আমিও শুনতে চাই যে, তুমি কীভাবে আমার ড্যাডকেও হাত করে নিয়েছো? এতো ট্যালেন্ট আছে তোমার মধ্যে জানতাম না তো?

সিয়ারা: মানে? কি বলছো এসব? আমি কেন আংকেল কে…

আধভিক: আমার কাছে আসার জন্য আবার কেন? নাহ সিয়ারা তুমি কি বুঝতে পারছো না আমি তোমাকে কোনো মতেই আর নিজের জীবনে চাই না?

সিয়ারা: মন থেকে বলছো তো তুমি এই কথাগুলো?(করুণ দৃষ্টি নিয়ে)

আধভিক: এতদিন বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম এখন মুখে ভেঙে বলছি। তাতেও তুমি যদি না বোঝো তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই। আমি তো শুধু ভাবছি তুমি কেন ফিরে এলে? তুমি আসার পর থেকেই এসব অশান্তির শুরু। আমি একটু শান্তি চাই সিয়ারা, শান্তি চাই। আমি তো বুঝতে পারছি না তুমি কেন আমার পিছনে পরে আছো, টাকার জন্য? কত টাকা চাই তোমার বলো। আমি তোমাকে দেবো বাট প্লিজ আমার পিছন ছাড়ো তুমি। হাত জোড় করছি! তোমার মত মেয়ের সাথে থাকার ইচ্ছা আর আমার নেই।

আধভিক এটুকু বলেই জানলার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো। সিয়ারা হাত দিয়ে মুখ চাঁপা দিয়ে জানলার দিকে তাকালো। সে এখন চিৎকার করে কাঁদতে চাইছে। কিন্তু পারছে না যার জন্য দম বন্ধ লাগছে ওর। আধভিকের কথাগুলো ছুরির মতো আঘাত করছে ওর বুকে। মনে হচ্ছে এক্ষুনি হয়তো প্রাণটা বেরিয়ে যাবে। হঠাৎই ওদের গাড়ি থেমে যায়। গাড়ি থামতেই সাথে সাথে আধভিক নেমে পরে। সেই দেখে সামনে তাকাতেই সিয়ারা দেখে একটা অন্য গাড়ি ওদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। সিয়ারাও গাড়ি থেকে নামতেই দেখে কিছু গুন্ডা আধভিককে ঘিরে ধরেছে। সিয়ারা আধভিকের পাশে দাঁড়িয়ে,

সিয়ারা: (ভয় পেয়ে) আধভিক! এরা কারা?

আধভিক: তুমি কেন ভয় পাচ্ছো সিয়ারা? তোমার তো ভয় পাওয়ার কথা নয়? তোমার তো এদেরকে চেনার কথা।

সিয়ারা: মানে? আমি কীভাবে ওদের চিনবো? (অবাক হয়ে)

আধভিক: ওহ প্লিজ আর এইসব নাটক করো না আমার সামনে। আগেই নাটক করেছো এখনও নাটক করছো। এতটা বোকা মনে করো তুমি আমাকে? আমি জাস্ট ভাবতে পারছি না, টাকার লোভে তুমি এতদূর চলে গেলে? যে আমাকে মানাতে না পেরে শেষমেশ গুন্ডা ভাড়া করে আমাকে মানাতে চাইছো?

সিয়ারা: আধভিক!!(জোরে)

আধভিক: সেম অন ইউ সিয়ারা, জাস্ট সেম অন ইউ! তোমার কত টাকা লাগবে বলো আমি এক্ষুনি দিয়ে দিচ্ছি। এসব নাটক করে লাভ নেই। এটা রিয়েল লাইফ, রিল লাইফ না যে নিজেই ভাড়া করা গুন্ডা এনে, নিজেই তাঁদের হাত থেকে আমাকে বাঁচিয়ে তুমি মহান সেজে নেবে।

সিয়ারা: যা মাথায় আসছে তাই বলে যাচ্ছো তুমি? মাথা খারাপ হয়ে গেছে পুরো তোমার। আমি এসব কিচ্ছু করিনি। আমি চিনিও না এনাদের। বিশ্বাস করো আমাকে। (রেগে)

আধভিক: তোমাকে বিশ্বাস করবো?

সিয়ারা: আমি পুলিশে ইনফর্ম করছি।

__এসব আপনি কি বলছেন ম্যাডাম? আপনিই তো আমাদের বলেছিলেন এসব করতে। আপনিই তো বলেছিলেন আপনাদের অ্যাটাক করে আপনার সাথে যে থাকবে তাঁকে আটক করতে। আপনি ওনাকে আমাদের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবেন। এখন আপনিই পুলিশ ডাকছেন?

সিয়ারা জানো আকাশ থেকে পরলো এসব কথা শুনে। গুন্ডাগুলোর কথা শুনে আধভিক এক পা পিছিয়ে গেলে সিয়ারা আধভিককে বলে,

সিয়ারা: ওদের আমি চিনি না আধভিক, বিশ্বাস করো আমার কথা। আমি সত্যি এসব কিছু জানি না।

আধভিক অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলে গুন্ডাগুলোর মধ্যে একজন বলে ওঠে,

__ম্যাডামকে নিয়ে আসো আমাদের সাথে। কথা বলতে হবে ওনার সাথে।

গুন্ডাগুলোর মধ্যে একজন এসে সিয়ারার হাত ধরতেই আধভিক সিয়ারার দিকে তাকিয়ে নিজের হাত মুঠ করে নেয়। সিয়ারা বার বার আধভিককে অনুরোধ করতে থাকে ওর কথা বিশ্বাস করার জন্য যে ও এসব করেনি। কিন্তু আধভিক ওর কোনো কথা শোনেনা। তাই সিয়ারা গুন্ডাটার হাত থেকে নিজের হাতটা ঝাড়া মেরে ছাড়িয়ে দিয়ে এসে আধভিকের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,

সিয়ারা: আমি তোমাকে দুবছর আগে নিজের ইচ্ছায় ছেড়ে যাইনি আধভিক। বাধ্য হয়েছিলাম তোমাকে ছেড়ে যেতে। সেটাই তোমাকে বলার চেষ্টা করছিলাম এতদিন ধরে, যেদিন থেকে জানতে পেরেছি তুমি আমার বোনকে বিয়ে করোনি। কিন্তু তুমি আমার একটা কথা শুনলে না, আজও তুমি আমার কথার বিশ্বাস করলে না। এই ভালোবেসেছো আমাকে? যেখানে কোনো বিশ্বাসই নেই। দুবছর আগেও বিশ্বাস রাখোনি ভুল বুঝেছো আমাকে আর আজও বিশ্বাস করলে না আমায়। অনেক পস্তাতে হবে তোমাকে এরজন্য আধভিক, অনেক! এরপরে তুমি আর চেয়েও আমাকে পাবে না। চেয়েও না! আজ থেকে আমি তোমার জন্য মৃত। নিজের ভালোবাসার মানুষের চোখে ঘৃণার পাত্রী হয়ে বেঁচে থাকার থেকে মরে যাওয়া অনেক ভালো। তাও যদি ঘৃণা করার মতো কাজ করতাম মেনে নিতাম কিন্তু আমি ভুল করেছি, ঘৃণা করার মতো কোনো কাজ করিনি। তোমাকে যতটুকু জানানোর জানিয়ে দিয়েছি, তাই এবার মরে গেলেও আক্ষেপ থাকবে না। আর আমিও মরে যেতেই চাই!

গুন্ডাটা সিয়ারার কথার মাঝেই সমানে চেষ্টা করছিলো সিয়ারাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার কিন্তু পারেনি। সিয়ারার কথা শেষ হতেই সে খুব সহজেই ওকে টেনে নিয়ে যেতে পারলো। গুন্ডাটার এটাই মনে হলো যে, সিয়ারা হয়তো নিজে থেকেই যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে গেল। জানো, নিজেকে বাঁচানোর জন্য হাল ছেড়ে দিলো। তবে সিয়ারা এখনও একভাবে আধভিকের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। ধীরে ধীরে সিয়ারাকে একটা গাড়ির দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে গুন্ডাটা। এদিকে আধভিকের বুকের ভিতর উথাল পাথাল শুরু হয়ে গেছে সিয়ারার কথাগুলো শুনে কিন্তু তবুও সে কিছু করছে না কেন?

ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে ইতি মধ্যে। ধীরে ধীরে সিয়ারার কান্না ভেজা মুখটা বিলীন হয়ে বৃষ্টির জ্বলে ভিজে যাচ্ছে। আধভিকের শ্বাস ঘন হতে শুরু হয়েছে। এমন সময়……

[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here